#মেঘের_উল্টোপিঠ,০৬,০৭
#সাদিয়া_মেহরুজ_দোলা
[পর্ব-০৬]
রাতের কুচকুচে কালো আকাশ আজ মেঘলাটে। হালকা কমলাটে বর্ণের ধারণ করেছে আকাশের রঙ! ঝড়ো পরিবেশের হিম শীতল বায়ু এসে শরীরে কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। খানিকক্ষণ বাদে বজ্রপাতের শব্দে পূর্ব নড়েচড়ে উঠলেন! নেত্রযুগল উন্মুক্ত করে সর্বপ্রথম আমার পানে দৃষ্টি দিতেই চোখাচোখি হয় আমাদের।
পূর্ব সোফা থেকে উঠে আসেন দ্রুত পায়ে! আমার পাশে ব্যাবধান বজায় রেখে বসে বললেন,
‘ হাতে কি ব্যাথা করছে?’
পূর্বের এরূপ প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে হুট করেই আমার রাগ তরতর করে বেড়ে গেলো। নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে চেঁচিয়ে বলি,
‘ আঘাত দিয়ে জিজ্ঞেস করছেন ব্যাথা করছে কিনা? আপনি কি আমার সাথে মজা করছেন? ‘
পূর্ব চটপট দৃষ্টি আশপাশে নিক্ষেপ করলেন। আমতা আমতা করে কিছু বলতে নিয়েও থেমে গেলেন তিনি। তার এই নিশ্চুপতা! মুখশ্রীতে বজায়মান ডোন্ট কেয়ার ভাব! সবকিছুই যেনো আমার রাগটাকে ক্রমশ তুমুল করে তুলছে। অপরাধী চিন্তাস্বরূপ ইচ্ছে করছে এই পূর্ব মানবটাকে গলা চেপে হত্যা করতে। নিজের চিন্তাধারায় ঘৃণা জন্ম হলো। ধাতস্থ হয়ে নিম্ন কন্ঠে বলি,
‘ আপনি এখানে কি করছেন? কি চাই? আমার রুমে ঢোকার অনুমতি কে দিলো আপনাকে?’
পূর্ব তপ্তশ্বাস ফেলে বললেন, ‘ বউয়ের রুমে ঢুকতে আদও কোনো স্বামীর অনুমতি লাগে নাকি?’
সিরিয়াস মোমেন্টে পূর্বের এরূপ প্রতিত্তুরে বিরক্ত লাগলো। প্রচন্ড বিরক্ত! অতঃপর ঝাঁঝালো সুরে কিছু বলতে নিবো তৎক্ষনাৎ পূর্ব শীতল কন্ঠে বললেন,
‘ আমি তোমায় ইচ্ছে করে আঘাত করিনি দোল! ট্রাস্ট মি! তুমি তোমার সামনের সিটের মেয়ে দু’জনের কথোপকথন শুনোনি? তখনি কোনো স্টেপ না নিলে অনেক ভুগতে হতো আমাদের দু’জনকেই। এন্ড আই এগ্রি! এভাবে সবার সামনে তোমাকে আঘাত করা ঠিক হয়নি। রুলসে পড়েনা এত বড় মেয়েকে আঘাত করার। বাট এট দ্যাট মোমেন্ট আমার রাগ চেপে বসেছিলো। রাগে মানুষ তার হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে আমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে! তখন কোনো স্টেপ না নিলে সমলাচোনা হতো। দেখা যেতো আমার চাকরি চলে গিয়েছে সাথে তোমার স্টুডেন্টশিপও! এত কষ্ট করে এই পর্যন্ত পড়াশোনা করে আসছো কলেজ থেকে বহিস্কার করলে খারাপ লাগবেনা?’
আমি তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে সন্দিহান কন্ঠে বলি,
‘ বহিস্কার করবে কেনো? এতোটা নরমাল ব্যাপারে কেও বহিস্কার করে নাকি?’
পূর্ব দীর্ঘ নিঃশ্বাস টানলেন। তার চেহারা বিমূঢ় হয়ে আছে! রাশভারী কন্ঠে প্রতুত্তরে বললেন,
‘ তুমি নিউ ব্যাচের স্টুডেন্ট! এখনি অনেক কিছু সম্পর্কে তোমার ধারণা আসেনি অথবা জানোনা।ক্লাস করতে থাকো বুঝতে পারবে! তবে এর দায়ভার কিছুটা আমার। তোমার নয়! ‘
তার কথায় রহস্যে ভরপুর। কিন্তু এখন প্রশ্ন করলে উত্তর পাবোনা নিশ্চিত। আর না প্রশ্ন করার মতো অবস্থাতে আমি আছি! কাল মেডিকেলে যাবো কিভাবে কে জানে? মেডিকেলে পা রাখার পর-পরই নিশ্চিত সবার কটু কথার শিকার হতে হবে। দাঁতে দাঁত চেপে কান্না দমন করে লম্বা শ্বাস ফেলে কড়া কন্ঠে বলি,
‘ আপনি প্লিজ যাবেন? আপনার সাথে কথা বলার মতো ইচ্ছেটা আমার এই মূর্হতে নেই! আপনি আমায় অন্যকোনো শাস্তি তো দিতে পারতেন। কান ধরে দাঁড়াতে বললেও বেটার ছিলো। কিন্তু স্কেল দিয়ে মারা! আমাকে কি আপনার ক্লাস নাইন টেনের স্টুডেন্ট মনে হয়? ক্লাস নাইন – টেনেও তো এখন কাওকে এভাবে মারা হয়না! আর আপনি কি করলেন মেরে রক্তাক্ত করে ফেললেন? ‘
পূর্ব নিশ্চুপ! আহত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। কিন্তু তার এই দৃষ্টি দেখে আমার মায়া হলোনা। কষ্ট কাজ করলো না। বরঞ্চ তাকে চার পাঁচটা থাপ্পড় বসিয়ে দিতে ইচ্ছে করলো! তবে এই কাজটা করলাম না।তাহলে পূর্ব আর আমার মাঝে পার্থক্য কোথায় থাকলো? সে রাগের বসে যা করলো আমিও আবার উল্টো রাগের বসে তাই করবো নাকি?
পূর্বের মুখশ্রীর পানে সচেতন দৃষ্টিতে তাকাতেই খেয়াল হলো তিনি কিছু আমায় বলতে চাচ্ছেন কিন্তু পারছেন না বলতে! কোথাও বাঁধা প্রদান করা হয়েছে। হাসফাস করছেন কেনো?
পূর্ব কন্ঠের খাদ নামিয়ে বললেন,
‘ তোমার হাতে যে তুলোর মতো তুলতুলে তা আমি জানতাম নাকি? এতো তুলতুলে কারো হাত হয়? এতো আস্তে আঘাত করতেই চামড়া ফেটে রক্ত পড়া শুরু করলো।’
আমি বিষ্ফোরিত চাহনি দিয়ে বলি, ‘ জানলে কি করতেন? আর আপনি যদি জানতেন আমার হাত নরম না তাহলে কি জোরে আঘাত করতেন?’
প্রতুত্তর আসলো না! তার মৌনতা পালন আমার সহ্য হলোনা। তিক্ততা নিয়ে বলি,
‘ আপনি এখানে এখনো কি করছেন? যান প্লিজ! গেট আউট! আপনার চেহারা দেখলেও আমার রাগ লাগছে প্রচন্ড। ‘
পূর্ব আরো কিছু বলতে চাইছিলেন কিন্তু আমি হাত দিয়ে ইশারার মাধ্যমে ‘ না ‘ বলতেই তিনি উঠে চলে যান। তার হাতের ক্ষতস্থান থেকে রক্ত পড়ছিলো।একবার ইচ্ছে হলো পিছন থেকে ডেকে বলবো ‘ হাতে আঘাত কি করে পেলেন?’ কিন্তু বলা হলো না। রাগের কাছে হেরে গেলাম তবে? পূর্ব দরজার কাছে দাঁড়িয়ে পিছন ফিরলেন। গাম্ভীর্যপূর্ণ মু্খশ্রী! নিভৃতে থাকা কিছু কথা বলার জন্য আনচান করছেন। আমার পানে পূর্ণ দৃষ্টি দিয়ে রাশভারী কন্ঠে বললেন,
‘ আমি আমার ভুলের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী! মাফ করা না করা তোমার ব্যাপার। যদিও তোমার মাফ পাওয়া আমার ক্ষেত্রে ডাজেন্ট ম্যাটার! ফাইনালি আই ওয়ান্টু সে ( Say), ডির্ভোসের কথা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলো। তুমি মুক্তি পাচ্ছো না ফায়াজ আবরার পূর্বের কাছ থেকে! মাইন্ড ইট! ‘
শুনশান নীরবতা! আমি ভ্যাবাচেকা খেয়ে তাকিয়ে আছি দরজার দিকটায়। আঘাত করলো তারপর আবার থ্রেট? মেরে ফেলার থ্রেট দিলে গ্রহণ করতে পারতাম এটলিষ্ট তার ব্যাক্তিক্ত্ব হিসেবে। কিন্তু এটা কেমন থ্রেট ছিলো? এই মানব আদও পূর্ব? মাই গড! গিরগিটির মতো রূপ পাল্টায় কেনো বারংবার তিনি?
___________________________
পাঁচদিন গেলাম না মেডিকেলে! কিন্তু আজ না গিয়ে নিস্তার নেই। সামনে এক্সাম! এখনকার ক্লাস গুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ। মিস করলে ক্ষতি হবে অনেক। ভীতি নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে হসপিটালে পা রাখি। আজ নিশ্চিত স্টুডেন্টদের কটু কথার শিকার হতে হবে। ৯ মাস ধরে ক্লাস করছি। মোটামুটি তাদের ব্যাবহার সম্পর্কে আমার ধারণা আছে। তুচ্ছ ব্যাপারকে তারা বিশাল বড় কাহিনি তে রূপান্তর করতে বেশ পটু!
কিয়ৎক্ষন পর আমার ধারণা আস্তে ধীরে ভুল প্রমাণিত হতে শুরু করলো। আমি তো ভেবেছিলাম হসপিটালে পা রাখতেই সিনিয়র ব্যাচ, জুনিয়র ব্যাচ এসে কটু কথার ঝুলি খুলে বসবে কিন্তু একি? সবাই আমায় দেখে দূর থেকে মৃদু হেঁসে ‘ হাই! হ্যালো ‘ দিচ্ছে! ক্লাসমেট’রা এসে জিজ্ঞেস করছে এতদিন আসিনি কেনো? কিন্তু কেও সেদিনের কথা তুলছে না। কেমন ভীতিকর দৃষ্টি দিচ্ছে আমায় দেখে! আজব তো!
করিডরে পৌঁছাতেই অরিন, নীরব, আদ্রাফ এসে দাঁড়ালো আমার সম্মুখে। ওদের মধ্যে হতে সর্বপ্রথম মুখ খুললো নীরব! খেঁকিয়ে উঠে বলল,
‘ পড়ালেখা তো সব পারোস না? এতদিন আসিস নাই কেন? ক্লাস বাংক দিয়া নিজেরে রবীন্দ্রনাথ প্রমাণ করতে চাস? রবি ঠাকুরের ভুতে ধরসে তোরে? ‘
নীরবকে থামিয়ে আদ্রাফ বলল, ‘ তোরে কি পূর্ব স্যার প্রশ্ন দিয়া দিবে ভাবতেছিস? ভুলে যা ওসব! স্যার তোর হ্যাজবেন্ড হলেও ঐসব আকাম -কুকাম করবে না। ‘
অরিন নিজের বক্তব্য পেশ করতে নিবে তৎক্ষনাৎ তাকে থামিয়ে দিয়ে আমি সন্দিহান কন্ঠে বলি,
‘ কলেজের কাহিনি কি? সবাই এতো চুপ কেনো? আমায় এতো সম্মান দিচ্ছে কেনো? ‘
আমার প্রশ্নের জবাবে অরিন বলল, ‘ স্যারের বউ তুই! তোরে সম্মান দিবে নাতো রাস্তার কুকুরকে দিবে নাকি? ‘
‘ আজাইরা কথা বলিস কেনো অরিন? আমার কথার মানে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছিস তুই। আমি বলতে চেয়েছি তারা আমাকে কটু কথা শোনালো না!খোঁচা মারলো না! এই বাই এনি চান্স ওদের সৃতিশক্তি চলে গেলো নাকি?’
অরিন, নীরব, আদ্রাফ তিনজনই ঠোঁট চেপে হাসলো। যেনো আমি তাদের কৌতুক বলেছি। শব্দ করে হাসা মানা তাই নিঃশব্দে হাসছে! চোখ গরম করে কিছু বলতে নিবো তখনই হুট করে আদ্রাফ বলল,
‘ পোলাপান’স ভালো হয়ে গেছে। বুঝিস না?ওদের এই ভালো হয়ে যাওয়াটদ নিয়ে তারিফ না করে সন্দেহ করছিস? নট ফেয়ার দোল! ভালো হয়ে যা!’
অতঃপর টেনেটুনে, ঠেলেঠুলে আমার করা প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই ক্লাসে ঢুকে বইয়ে মুখ ডুবিয়ে দেয় তিনজন। পুরো ঘটনার মধ্যে এটা নিশ্চিত হলাম এরা কিছু তো আমার থেকে লুকাচ্ছে। একেকটার চেহারা তাই বলছে! স্যার এসে পড়ায় আর কিছু জিজ্ঞেস করা হয়ে উঠলো না।
_____________________
শীতল বৃষ্টির কণার ওপর দিয়ে হেঁটে হেঁটে রাস্তার পাশে দাঁড়াই! তুমুল বৃষ্টির কারণে মনে হচ্ছেনা আজ রিকশা পাবো। বাসা থেকে গাড়িও আসবে না। ভাইয়া গাড়ি নিয়ে এখন এদিক – সেদিক বন্ধু মহল নিয়ে ট্যুর দিচ্ছে। ঢাকার বাহিরে! একরাশ বিরক্তি তিক্ত করে তুললো অন্তরালে! বৃষ্টির ঠান্ডা পানির মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকার ধৈর্যশক্তি ক্ষনে ক্ষনে লোপ পেয়ে আসছে।
অতঃপর শুনশান, জনমানবহীন রোডে আগমন ঘটে ধূসর রঙের এক গাড়ির! গাড়িটা ঠিক আমার সম্মুখে এসে ব্রেক কষে। হকচকিয়ে দু’কদম পিছে সরে গেলাম। আরেকটু হলেই কর্দমাক্ত পানি এসে লেগে যেতো ড্রেসে। কড়া দৃষ্টিতে গাড়ির পানে অবলোকন করতেই গাড়ি থেকে নেমে আসলেন অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যাক্তি ‘ পূর্ব ‘! ছাতা নিয়ে হেঁটে এসে আমার পাশে দাঁড়ালেন। পূর্ণ দৃষ্টি তার আমাতে দিয়ে রাশভারী কন্ঠে বললেন,
‘ গাড়িতে উঠো! আমি তোমায় বাসায় পৌঁছে দিচ্ছি।’
তার কথার প্রতিত্তুরে সটান বলি, ‘ না! আমি আপনার গাড়িতে যাবোনা। আপনি চলে যান। রিকশা করে বাসায় যাবো আমি। ‘
পূর্ব খানিক তাচ্ছিল্যের সুরে বললেন, ‘ এই বৃষ্টির মধ্যে রিকশা পাবে তুমি?’
‘ সেটা আমার ব্যাপার। আপনার কি?কিছুনা! সো, যান এখান থেকে। ‘
পূর্ব বিড়বিড় করে বললেন, ‘ আমারই তো সব! এই আস্ত তুমিটাই আমার। সম্পূর্ণ আমার! ‘
পূর্বের কথা কানে আসলো না। সেদিকে খেয়ালও দিলাম না। যা বলার বলুক! তাতে আমার কি?হুহ্!
গলা ঝেড়ে তিনি ফের বললেন,
‘ বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছো সামনে যে এক্সাম তার খেয়াল আছে? জ্বরে পড়লে তো অতো জলদি সুস্থও হওনা। এখনো তো অসুস্থ! এই এক্সামে খারাপ করলে ফলাফল কি হবে তা নিশ্চয়ই জানো।’
চিন্তিত হয়ে নতজানু হই! তার কথা সত্যি। এক্সাম সামনে এখন আরো অসুস্থ হয়ে পড়লে বিরাট সমস্যা। তাকে কিছু না বলে ত্রস্ত পায়ে সামনে এগিয়ে গিয়ে গাড়ির ফ্রন্টসিটে বসে পড়ি। সিটবেল্ট লাগানোর পর পূর্বের আগমন ঘটে। গাড়ি স্টার্ট দেয়ার পর কিয়ৎক্ষন পর তিনি তার রুমাল এগিয়ে দিয়ে বললেন,
‘ কপালের কাছের চুল ভিজে চুপসে আছে। মুছে নাও। সমস্যা হতে পারে। ‘
কোনোরূপ বাক্য অপচয় না করে নিঃশব্দে রুমাল হাতে নিয়ে কপালের কাছের সিক্ত কেশে শুষ্কতা প্রদানের প্রয়াসে আলত করে মুছে নিলাম। ক্ষনিক বাদে হটাৎ করেই আমাদের গাড়ির সামনে অপর এক গাড়ি আড়াআড়ি ভাবে এসে পড়ায় পূর্ব বেশ জোরে ব্রেক করলেন গাড়ি। মাথা সামনের দিকে সজোরে আঘাত হানার পূর্বেই পূর্ব আমার কাঁধ ধরে নিজের বক্ষপিঞ্জরের সাথে শক্তভাবে আঁকড়ে নিলেন। মাথা তুলে চটপট দৃষ্টি তার মুখশ্রীতে দেয়ার পরই দৃশ্যমান হলো আমার তার চঞ্চল নেত্র! কাঁপা ওষ্ঠাধর! অদ্ভুতুরে, ভীতিকর দৃষ্টি। তার এরূপ আচরণের নির্দিষ্ট কারণ খুঁজে না পেয়ে চটজলদি কাচ ভেদে সামনে অবলোকন করি। তৎক্ষনাৎ দৃশ্যমান হলো নেত্র সম্মুখে..
চলবে…
#মেঘের_উল্টোপিঠ
#সাদিয়া_মেহরুজ_দোলা
[পর্ব-০৭].
পূর্ব কাঁধের কাছটায় তার হাতের বাঁধন শক্ত করলেন আরেকটু। সেদিকে আমার ধ্যান না দিয়ে সামনে তার দৃষ্টি অনুসরণ করে তাকাতেই আড়াআড়ি ভাবে থাকা কালো গাড়িটা ছাড়া আর কোনোকিছুই দৃশ্যমান হলো। পূর্ব মানবের ভয় পাওয়ার কারণটা ঠিক মতোন খুঁজে পেলাম না আমি! শেষে নিজের অবস্থান অনুভব করতেই লজ্জায় নুইয়ে পড়ি। চটপট তার হাত কাঁধ হতে হেঁচকা টানে সরিয়ে নিজের সিটে পিঠ এলিয়ে বসে মাথা নিচু করে। ইশ! এতো লজ্জা লাগছে কেনো? লজ্জায় রীতিমতো হাত – পা কাঁপা কাঁপি শুরু হয়ে গিয়েছে।
আমার স্পর্শে পূর্বের হুঁশ ফিরলো। সে সামনের থেকে তার দৃষ্টিপাত সরিয়ে আমাতে তাকালেন। উদ্বিগ্ন দৃষ্টিপাত তার! অস্থিরতা মিশ্রিত! উদ্বেগ নিয়ে বললেন,
‘ ঠিক আছো তুমি? কোথায় লাগেনি তো? ব্যথা পেয়েছো কোথাও? আর ইউ ওকে না? স্পিক আপ দোল! ‘
পূর্বের চঞ্চল নেত্রযুগল। ভীতির কারণটা যে এটাই তা স্পষ্টত প্রমান করছে তার তুমুল অস্থিরতা। সে আমার হাত টেনে ধরলেন। ঘুরিয়ে, ফিরিয়ে সুক্ষ্ম চাহনি নিক্ষেপ করে দেখতে থাকলেন কোথায় আঘাত লেগেছে কিনা! আমি তার অস্থিরতা, ভীতি দেখে হতভম্ব হয়ে পড়লাম। আমায় নিয়ে এমন আচরণ করার মানে কি? তবে আমার ছোট ছোট সন্দেহ গুলো কি সত্যি? পূর্বের অস্থিরতা কমাতে আশ্বস্ত কন্ঠে বলি,
‘ আমি একদম ঠিক আছি। আপনি এতো অস্থির হচ্ছে কেনো?’
পূর্ব জবাব দিলেন না। পূর্ণ দৃষ্টিতে সচেতন চাহনি দিয়ে আমায় ফের অবলোকন করে তিনি সিটে বসে ঘন ঘন শ্বাস নিলেন নেত্র যুগল বন্ধ করে। তাকে এই মূর্হতে দেখে মনে হচ্ছে তিনি কোনো শ্বাসকষ্টের রোগী। পরবর্তীতে যখন পূর্ব চোখ খুললেন তখন তার চোখের সাদাটে অংশ ছিলো রক্তিম বর্ণের। চোয়াল শক্ত করে সামনে তাকালেন। পরিশেষে সেকেন্ডর মধ্যে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন। সামনে থাকা গাড়িটার দরজাও তখন খুলে একজন ব্যাক্তির পদচারণ ঘটেছে। তবে সেই ব্যাক্তিকে দেখা হয়নি আমার। তার মুখশ্রী সামনের দিকে। পূর্ব সেদিকে গিয়ে আশপাশ না দেখে থাপ্পড় লাগিয়ে দিলেন লোকটার গাল বরাবর!
আমি হকচকিয়ে গাড়ি থেকে নেমে পড়লাম। পূর্বের পাশে দাঁড়ানোর পরই ব্যাক্তিটি পূর্বের পানে দৃষ্টি দেয়। সবথেকে অবাক করা ব্যাপার লোকটি হাসছে! পূর্বের মুখশ্রীতে দৃষ্টিপাত নিক্ষেপ করার পর নজরে এলো সে নেত্র যুগল বড় বড় করে তাকিয়ে আছেন। বিষ্ময় নিয়ে বললেন,
‘ আয়াফ তুই? ‘
আয়াফ নামক লোকটির হাসি চওড়া হলো। অদ্ভুত হাসি! সে কর্কশ কন্ঠে বলল,
‘ পাঁচ বছর আগে শেষ দেখার সময় থাপ্পড় মেরেছিলি। আজ আবার যখন এতো সময় বাদে দেখা হলো তখন আবার থাপ্পড়! বাহ! ব্যাপারটা চমৎকার! ‘
পূর্বের মুখশ্রীতে রাশভারী ছাপটা পূর্ণরূপে ছেপে গেলো। চোয়াল শক্ত করে সে তাকিয়ে আছেন আয়াফের দিকে। আয়াফ কুটিল হেঁসে বলল,
‘ ভালো আছিস? আমাকে মনে আছো তো?
পূর্ব রাশভারী কন্ঠে বললেন, ‘ তোর মতো লোককে কেও ভুলতে পারে? হাহ্! তোকে ভুললেও তোর কুকর্ম সর্বদা আমার ব্রেনে থাকে। ‘
আয়াফ ফের কুটিল হাসলো। ঘাড় কাত করে সে আমাতে দৃষ্টিপাত নিক্ষেপ করতেই পূর্ব আমার হাতের কব্জি শক্ত করে ধরে নিজের পিছে নিয়ে গেলেন। তার এহেন কান্ডে আমি বিমূঢ় হয়ে রইলাম।তাদের মাঝে আসলে হচ্ছেটা কি? বোঝা মুশকিল! আয়াফ কাঙ্খিত ঘটনা দেখে বাঁকা হেঁসে বললেন,
‘ কে এটা? বউ নাকি? ‘
পূর্ব চিবিয়ে বললেন,
‘ সেটা তোর জানার কোনো মানে হয়না! আর না সে অধিকার তোর আছে। ‘
‘ সেটা সময় হলেই দেখা যাবে। এনিওয়ে বেশ রূপবতী কন্যা পেয়েছিস। হাতিয়ে নিতে টাইম লাগবেনা। ‘
পূর্ব আমার হাত ছেড়ে এক প্রকার তেড়ে গেলেন আয়াফের দিকে। তবে মাঝপথে থেমে আঙুল উঁচু করে শাসিয়ে বললেন,
‘ ডোন্ট ডেয়ার! সবকিছু তে ছাড় দিলেও এই দিকে তোকে ছাড় দিবো চিন্তাও করিস না। হাত বাড়িয়ে দেখ। ভেঙে, কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলবো। ‘
আয়াফ কুটিল হেঁসে বললেন, ‘ সেটা সময় হলেই দেখা যাবে। ‘
পূর্ব উল্টো ঘুরে আমার কাছে এসে হাত চেপে ধরে গাড়ির দিকে হাঁটা শুরু করলেন। আয়াফ তৎক্ষনাৎ উঁচু কন্ঠে চেঁচিয়ে বলল,
‘ যতই সামলে রাখিস পূর্ব! তোর প্রিয় জিনিস গুলো দিনশেষে আমার খাঁচাতেই আঁটকা পড়বে। বি রেডি! আই উইল ব্যাক ভেরি সুন! ‘
পূর্বের চোয়াল শক্ত হয়ে আসলো। গাড়িতে বসা মাত্রই আমি কৌতূহল নিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করি,
‘ ছেলেটা কে ছিলো পূর্ব?’
পূর্ব রাশভারী কন্ঠে প্রতুত্তরে বললেন, ‘ কাজিন! ‘
আমি খানিক অবাক হয়ে বলি, ‘ উনি তাহলে ঐভাবে কথা বলছিলেন কেনো? আর কি কেড়ে নেয়ার কথা বলছিলেন? ‘
‘ কিছুনা। ও পাগল টাইপের! ওর কথায় মাথা ঘামাতে নেই। ‘
পূর্বের কথায় স্বস্তি মিললো না। আয়াফের কথাগুলো কেমন অদ্ভুত ধরনের ছিলো। সেই লোক যে আমায় উদ্দেশ্য করে শেষোক্ত কথাগুলো বলেছে তা আমি পুরোপুরি নিশ্চিত। কিন্তু কথার আগামাথা খুঁজে পেলাম না।
__________________________
ডাইনিং টেবিলে খেতে বসতেই ভাইয়ার দেখা। সে নিজ মনে বসে খাচ্ছেন। আমায় দেখা মাত্রই সে বলল,
‘ বৃষ্টির ভেতরে আসছিস কিভাবে? আমায় ফোন দিয়ে গাড়ি পাঠাতে বলতি। ‘
‘ পূর্বের সাথে এসেছি। আর তুই না ঢাকার বাহিরে ছিলি? আমি কি জানতাম নাকি তুই বাসায়! ‘
ভাইয়া আমার প্রশ্নে কুটিল হেঁসে বলল,
‘ দুইদিন আগে কথা বলো না। এখন পুরা তার গাড়িতে আসছো! বাহ! ‘
ভাইয়ার কথায় জবাব দিতে ইচ্ছে হলোনা। চুপচাপ প্লেটে ভাত বেড়ে খাওয়া শুরু করার কিয়ৎক্ষন পর আম্মু সবজির প্লেট নিয়ে হাজির। আম্মুর চেহারা গাম্ভীর্যপূর্ণ! আমি, ভাইয়া দু’জনই একে অপরের দিকে মুখ চাওয়া – চাওয়ি করলাম। আম্মু গম্ভীর হয় তখনই যখন অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু বলে। ভাইয়া ইশারায় আমায় বলল ‘আম্মুর কি হয়েছে? ‘তা জিজ্ঞেস করতে। গলা ঝেড়ে বললাম,
‘ কিছু বলবে আম্মু? ‘
আম্মু সবজির বাটি আমার পাশে রাখলেন। আয়েশ করে চেয়ারে বসে বললেন,
‘ হ্যা! কাল থেকে পূর্ব সকাল ৬ টায় আমাদের বাসায় আসবে। ‘
আমি, ভাইয়া দু’জন একসাথেই ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করি, ‘ কেনো?’
‘ দোলকে পড়াতে! পরিক্ষার আগ অব্দি পূর্বই দোলকে গাইড করবে। ‘
ভাইয়া ফিক করে হেঁসে দিলো। আমি ভ্যাবাচেকা খেয়ে তাকিয়ে আছি আম্মুর পানে। ভাইয়ার হাসিতে আম্মু বিরক্ত হলো বড্ড! চোখমুখ কুঁচকে তিনি ধমকে বললেন,
‘ হাসছিস কেনো অযথা সায়ান?’
ভাইয়া কোনোমতে হাসি থামিয়ে বলল, ‘ মানে সিরিয়াসলি আম্মু! দোল কি ছোট বাচ্চা? ও এখন একজন মেডিকেল স্টুডেন্ট! ওকে তুমি পড়ানোর জন্য টিচার রেখেছো?ব্যাপারটা হাস্যকর না বলো?’
ভাইয়ার শেষোক্ত কথাটার রেশ ধরে আমি অস্থির হয়ে বলি,
‘ অবশ্যই হাস্যকর।এই আম্মু! কি বলছো এসব?তোমার কি আমায় ক্লাস ফোর – ফাইভের বাচ্চা মনে হয়? পাগল হয়ে গেছো? ‘
‘ আমি একদম ঠিক আছি। সুস্থ মস্তিষ্কে কথাটা বলছি! ক্লাস কতদিন বাদ দিয়েছো মাঝে তার খেয়াল আছে? তুমি পরিক্ষার শেষ হওয়া অব্দি পূর্বের কাছ থেকে গাইড নেবে! এটাই আমার শেষ কথা। সন্ধ্যায় সায়ান তোমায় পূর্বদের বাসায় দিয়ে আসবে। পরিক্ষা শেষ হওয়া অব্দি ওখানেই থাকবে। আমার পূর্বের মায়ের সাথে কথা হয়েছে। তিনিও একমত আমার সাথে। ‘
আমি শুকনো হেঁসে বলি, ‘ যতদিন ক্লাস বাদ দিয়েছি সেই দিনগুলোর নোট অরিনের কাছ থেকে নিয়ে নিলেই তো হয়ে যায়। পূর্বদের বাসায় যাওয়ার কি আছে আম্মু? ‘
আম্মু চেয়ার ছেড়ে উঠে যেতে যেতে গম্ভীর কন্ঠে বললেন,
‘ আমি যা বলেছি তাই শেষ কথা! ব্যাগ গুছিয়ে নাও। ‘
আম্মু চলে যেতেই আমি অসহায় চাহনি দিয়ে ভাইয়ার পানে তাকাই। ভাইয়া ইশারায় হাত নাড়িয়ে জানালেন ‘ এতে তার আর কিছু করার নেই। ‘খাওয়া শেষ করে ভাইয়া চলে যায়! আমি বিষাদ মনে আগত দিনের কথা স্বরন করে নিভৃতে ফিচেল হাসি দেই। বিগত দিনের ঘটনায় নিজেকে ক্লাস ফোর এর বাচ্চা মনে হচ্ছে। আমি যে মেডিকেল স্টুডেন্ট কে বলবে? ইশ! কি এক বিশ্রী ব্যাপার! সব নষ্টের মূল পূর্ব! যেদিন থেকে তার আমার জীবনে প্রবেশ করা। সেদিন হতো সবকিছু উল্টোপাল্টা হচ্ছে। এই লোকের সাথে আমি সংসার করতে পারবো তো?
_______________________________
পূর্বদের বাংলোর সামনে গাড়ি থামিয়ে ভাইয়া আমার পানে দৃষ্টি দিয়ে বলল,
‘ মন খারাপ করতে নেই পিচ্চি। আম্মু তোর ভালোর জন্য এই ডিসিশন নিয়েছে। ভালো মতো পড় যা! অযথা টেনশন নিবি না। ‘
আমি নতজানু হয়ে নিম্নকন্ঠে বলি, ‘ অস্বস্তি হচ্ছে ভাইয়া! ‘
‘ আরে চিল! তোর জামাই এর বাড়িতে আসছিস। জেলে না! যা বের হো। আমার কাজ আছে। ‘
ভাইয়ার থেকে বিদায় নিয়ে গাড়ি থেকে নামতেই নেত্র সম্মুখে দৃশ্যমান হয় পূর্বের আম্মু এবং পূর্বের ভাবীকে। তারা দু’জন আমায় দেখা মাত্রই হাসি মুখে এগিয়ে আসলেন। কাছে এসে পূর্বের আম্মু বললেন,
‘ কেমন আছে আমাদের দোলমনি? ‘
আমি কৃত্রিম হেঁসে বলি, ‘ ভালো মামনি! তুমি কেমন আছো? ‘
‘ ভালো আছি। তোকে দেখা মাত্র একটু বেশিই ভালো আছি। ‘
কথার মধ্যে ফোড়ন কেটে পূর্বের ভাবী বললেন,
‘ দোল তো ভালো থাকবেই মা। এতো হ্যান্ডসাম আর কিউট একটা বর জুটিয়েছে বলে কথা। ‘
পূর্বের আম্মু একগাল আসলেন। তাড়া দিলেন আমায় ভিতরে আসার জন্য। পূর্বের ভাবী তারা আপু এসে আমায় পূর্বের রুমে বসিয়ে দিয়ে বললেন,
‘ ফ্রেশ হয়ে পড়তে বসো তাহলে। তোমার জামাই আবার কড়া আদেশ দিয়েছে তোমার সাথে যেনো কথা না বলে কেও। সামনে তোমার পরিক্ষা তাই! পরিক্ষা শেষে কথা বলবোনে তোমার সাথে। আর পূর্ব সন্ধ্যার পরপরই আসে! অপেক্ষা করো! এসে পড়বে। ‘
তারা আপু মুচকি হাসলেন। আমি কোনোমতে কৃত্রিম হাসি দিলাম। অতঃপর রুমে শুনশান নীরবতা! ব্যাগ থেকে বই বের করে পড়তে বসার খানিক বাদে কারো পদধ্বনির শব্দে অজান্তেই বুকে ধুকপুক আওয়াজ শুরু হয়! বই থেকে মাথা তুলে সামনে দৃষ্টি দিতে নজরে এলো পূর্বের ক্লান্তমাখা মুখশ্রী। কালো শার্ট সাথে সাদা এপ্রোন! এতে যেনো তার সৌন্দর্যের মাত্রা একটু বেশিই বেড়ে গিয়েছে। তিনি ত্রস্ত পায়ে রুমে প্রবেশ করে এপ্রোন খুললেন। এসির পাওয়ার বাড়িয়ে দিয়ে স্থির হয়ে বসলেন সোফায়! তার সকল কার্যক্রম আঁড়চোখে দর্শন করে মৌন রূপে বসে রইলাম!
হুট করেই তিনি রাশভারী কন্ঠে বললেন,
‘ আমায় আঁড়চোখে দেখা বাদ দিয়ে পড়ো! আমি কোথাও ভেগে যাচ্ছি না। দেখার জন্য অনন্তকাল সময় আছে। ‘
বিষ্ফোরিত দৃষ্টিতে পূর্বের পানে তাকাতে সে ঠোঁট বাকিয়ে হাসলেন। তার হাসি দেখা মাত্র মাথা নিচু করে লজ্জায় নতজানু হই। তিনি দেখলো কিভাবে আমায়? ইশশ! কি লজ্জাজনক ঘটনা!
সোফায় আমার এবং তার মধ্যে থাকা ব্যাবধান পূর্ব মিটিয়ে ফেললেন। আমার পাশে এসে কানের কাছে ফিসফিস করে বললেন,
‘ লাজুক রূপে রূপান্তর হয়ে আমায় কি নিভৃতে মেরে ফেলার প্লান করছো? ‘
আমি চমকে তার পানে তাকিয়ে বলি, ‘ মানে? ‘
পূর্ব উত্তর দিলেন না। রাশভারী রূপে রূপান্তর করে নিলেন মুখশ্রী। পরিশেষে ফোন নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়লেন তিনি। না পাওয়া হলো উত্তর! না মিটলো কৌতূহল! তপ্তশ্বাস ফেলে পড়ায় মন দিতেই হুট করে তার ফোন স্ক্রিনে থাকা অনাকাঙ্ক্ষিত ছবিটি দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে রইলাম। আমার স্থিরদৃষ্টি এঁটে রইল তার ফোনস্ক্রিনে। নিভৃতে মনে মনে নিজেকে প্রশ্ন করি, ‘ এটা কি করে সম্ভব? ‘
চলবে…
[ আয়াফকে মনে আছে তো?😉 বলুন তো কে ছিলো সে?]