#প্রেম_ফাল্গুন
#পর্ব_২৭,২৮
#নিশাত_জাহান_নিশি
মে মাসের ৩১ তারিখ আজ। লিলির রেজাল্ট পাবলিশ হবে বেলা ১১ টায়। দুঃশ্চিন্তায়, উদ্বিগ্নতায়, আতঙ্ককতায় গত একদিন পূর্ব থেকেই লিলির ঘুম, নিদ্রা, খাওয়া, দাওয়া, বাড়ির সমস্ত কাজ একেবারে উচ্ছন্নে গেছে।
চারিদিকে ফজরের আযান পড়তেই লিলি ঘুম ভেঙ্গে উঠে ফ্রেশ হয়ে প্রথমে ধীরে, সুস্থে, একান্ত মনে ফজরের নামাযটা আদায় করে নিলো। মোনাজাতে ভালো একটা রেজাল্টের আশায় কিছুক্ষন ফুঁফিয়ে কাঁদল। নামায শেষে তজবিহ্ হাতে নিয়ে লিলি রুম থেকে বের হয়ে বাড়ির আঙ্গিনা জুড়ে কিছুক্ষন পায়চারী করল। সকাল সাতটা বাজতেই লিলি রুমে প্রবেশ করে ববির পাশ ঘেঁষে শুয়ে পড়ল। বিছানায় কারো অবাধে নড়াচড়ার অনুভূতি পেয়ে ববি পিটপিটে চোখে পাশ ফিরে তাকালো। লিলি কাত হয়ে শুয়ে চোখের পাতার সমস্ত শক্তি দিয়ে চোখ জোড়া বুজে আছে৷ যাকে বলে, জিমম খিঁচে থাকা। ববি কপাল কুঁচকে ঘুম জড়ানো স্বরে লিলিকে উদ্দেশ্য করে বলল,,
“ঘুমোও নি তুমি? এইভাবে জিম খিঁচে আছো কেনো?”
লিলি ফট করে চোখ জোড়া খুলে গোমড়া মুখে বলল,,
“ভয়ে, টেনশানে ঘুম আসছে না ববি। বুকের ভেতরটা কিছুক্ষণ পর পর মোচড় দিয়ে উঠছে, বমি বমি ভাব হচ্ছে, মাথাটা যন্ত্রণায় ফেঁটে যাচ্ছে, শরীরটা ঢকঢক করে কাঁপছে, কোনো কিছুতেই শান্তি পাচ্ছি না ববি। ভীষণ অস্বস্তি লাগছে।”
ববি কিছু সময় মৌণ থেকে পরমুহূর্তে কিছুটা ম্লান হেসে লিলিকে তার বুকে টেনে এনে মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,,
“রেজাল্টের পূর্বমুহূর্তে ভয়, উদ্বিগ্নতা এবং টেনশানে থাকাটা নিতান্তই স্বাভাবিক। এতে তোমার কোনো দোষ দিচ্ছি না আমি। তবে, তার মানে এটা ও না যে, এতোটা ঘাবড়ে যেতে হবে! মানসিকভাবে নিজেকে অসুস্থ করে তুলতে হবে, ডিপ্রেশানে হুমড়ি খেয়ে পড়তে হবে, শারীরিকভাবে দু্র্বল হয়ে পড়তে হবে। নিজেকে শক্ত রাখতে হবে তো নাকি? “ধৈর্য্যে মেওয়া ফলে।” প্রবাদটা জানা আছে নিশ্চয়ই?
লিলি গলা জড়ানো স্বরে বলল,,
“ববি আপনি হয়তো বুঝতে পারছেন না, এই রেজাল্টের উপরই কিন্তুু ফিউচারে আমার সমস্ত স্বপ্ন, আশা, ভরসা, ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা, সম্ভাবনা সব ডিপেন্ড করছে, সব। অর্থের যোগান দিয়ে হয়তো আপনি আমার স্বপ্ন পূরণে পাশে থাকতে পারবেন। তবে আমার সফলতা এনে দিতে পারবে একমাএ আমার ভালো পড়াশোনা, আমার রেজাল্ট, আমার ট্যালেন্ট, আমার টার্গেট। আপনিই বলুন না ববি? আমার রেজাল্ট যদি ভালো না হয়, তবে এতো হাজার হাজার টাকা ছিটিয়ে আদৌ কি কোনো লাভ হবে?”
ববি প্রশ্নবিদ্ধ চোখে লিলির দিকে তাকিয়ে বেশ সিরিয়াস হয়ে বলল,,
“আচ্ছা এর আগে আমার একটা কোয়েশ্চেনের আনসার দাও। তোমার নিজের প্রতি কনফিডেন্স আছে তো লিলি?”
লিলি অল্প সময় ভেবে পুনরায় শান্ত চোখে ববির দিকে তাকিয়ে বলল,,
“অবশ্যই আছে।”
“ব্যাস হয়ে গেলো। কনফিডেন্স আছে মানেই তুমি তোমার স্বপ্ন পূরণের দারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়ে আছো। গুনে গুনে তিন কদম বাড়ালেই সফলতা তোমার বদ্ধ দরজায় ঠকঠক করে কড়া নাঁড়বে। তোমার পড়াশোনা, তোমার এম্বিশান, তোমার রেজাল্ট, তোমার টার্গেট, তোমার ট্যালেন্ট, তোমার উচ্চাকাঙ্ক্ষা সব নিশ্চিত।”
ববিকে শক্ত করে ঝাপটে ধরে লিলি করুন আবদারের স্বরে বলল,,
“আজ আপনি সাইটে যাবেন না প্লিজ ববি। সারাদিনটা আমার পাশে থাকবেন। আজকের দিনটাতে আমি আপনাকে খুব করে পাশে চাইছি। আপনি পাশে থাকলে হয়তো আমার কনফিডেন্স দ্বিগুন হারে বাড়বে।”
“ওকে ফাইন, তাই হবে। ববি সারাক্ষণ আজ লিলির পাশেই থাকবে। ফর দ্যা গড সেইক লিলি, এখন একটু ঘুমাও। সারা রাতে তো চোখের পাতা এক করো নি, ছটফট ছটফট করেছ। এখন একটু ঘুমানোর চেষ্টা করো প্লিজ। রিলিফ লাগবে।”
লিলি আহ্লাদী স্বরে বলল,,
“তাহলে চুলে বিলি কেটে দিন!”
ববি মুচকি হেসে লিলির চুলে বিলি কেটে দিলো। ক্ষনিকের মধ্যে লিলি গভীর ঘুমে তলিয়ে পড়ল। লিলিকে ঘুম পাড়াতে গিয়ে ববি নিজে ও এক পর্যায়ে ঘুমিয়ে পড়ল।
সকাল ১০ঃ৫৫ মিনিট।
জিনিয়া আহমেদ, সাহেরা খাতুন এবং ববি তিনজনই রুমের এদিক সেদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে আছে। লিলি হাঁটুর উপর কপাল ঠেকিয়ে আড়ষ্ট ভাব নিয়ে বেডের উপর বসে আছে। ডেস্কের উপর সকালের নাশতা ট্রে প্লেইট চাঁপা পড়ে আছে। লিলি কিছুতেই মুখে কিছু তুলছে না। ভয়ে, উদ্বিগ্নতায়, টেনশানে শুধু চোখের জল ছাড়ছে। ববি স্টাডি টেবিলে নিশ্চুপ হয়ে বসে লিলির রেজিস্ট্রেশন কার্ড হাতে নিয়ে ফোনে স্ক্রলিং করছে। ১১ টা বাজতেই রেজাল্ট চেইক করবে।
সাহেরা খাতুন দরজার এক পাশে দাঁড়িয়ে আড়চোখে লিলির দিকে তাকিয়ে খড়তড় স্বরে বললেন,,
“ন্যাকামো টা একটু বেশিই হয়ে যাচ্ছে না? এস. এস. সি পরীক্ষা আমরা ও দিয়েছি, রেজাল্ট আমরা ও পেয়েছি। কই আমরা তো এই মেয়ের মতো এতো ঢং, এতো ন্যাকামো করি নি! খাওয়া, দাওয়া বন্ধ করে এভাবে নাকের জলে, চোখের জলে বুক ভাসাই নি!”
জিনিয়া আহমেদ তিক্ত স্বরে বললেন,,
“ছাড়ো না সাহেরা। এখন এসব বলে কোনো লাভ আছে বলো? দেখছ মেয়েটা এমনিতেই খুব টেনশানে আছে, মাঝখানে তুমি ঢুকে আরো বেশি টেনশান বাড়াচ্ছ, মন খারাপ করে দিচ্ছ।”
সাহেরা খাতুন তেড়ে এসে লিলির মুখোমুখি বসে ডেস্কের উপর থেকে নাশতার প্লেইটটা হাতে নিয়ে লিলিকে উদ্দেশ্য করে ক্ষীণ স্বরে বললেন,,
“এই মেয়ে মুখ তুলো। আমার দিকে তাকাও।”
লিলি নাক টেনে কেঁদে সাহেরা খাতুনের দিকে তাকালো। তৎক্ষনাৎ সাহেরা খাতুন জোর করে লিলির মুখে আস্ত একটা ওমলেট পুড়ে দিলো। লিলি ওমলেট মুখে নিয়ে নাক, মুখ কুঁচকে আধো স্বরে বলল,,
“কি করলেন আম্মু? জোর করে খাওয়ালেন কেনো?”
সাহেরা খাতুন ঝগড়ুটে ভাব নিয়ে বললেন,
“না খেলে একটু পরেই সেন্সলেস হয়ে পড়বে বুঝলে? তখন তো আমার ছেলেরই তোমাকে নিয়ে টানাটানি করতে হবে। বাঁধবে আরো এক্সট্রা ভেজাল। তাছাড়া, আমি জানি তুমি খুব ভালো রেজাল্ট করবে। তাই এভাবে না খেয়ে, শরীরকে কষ্ট দিয়ে, মুখ ফুলিয়ে বসে থাকার কোনো মানেই হয় না।”
তন্মধ্যেই ববি ফোনের দিকে তাকিয়ে বড় একটা স্বস্তির শ্বাস ছেড়ে চোখ জোড়া কিছুক্ষণ বুজে রেখে মাইন্ডকে শান্ত করে স্টাডি টেবিল থেকেই লিলিকে উদ্দেশ্য করে ম্লান স্বরে বলল,,
“নিশ্চিন্তে খাও লিলি৷ মনটা শান্ত করো। A+ তুমি পেয়ে গেছো!”
চিবানো ভুলে লিলি হতভম্ব হয়ে ববির দিকে তাকালো। জিনিয়া আহমেদ ভীষণ খুশি হয়ে বললেন,,
“ইসস কি যে খুশি লাগছে না। আমি এক্ষনি খায়রুলকে বলছি মিষ্টি নিয়ে আসতে।”
জিনিয়া আহমেদ প্রস্থান নিলেন। সাহেরা খাতুন ক্ষীণ হেসে কিছু বলার পূর্বেই লিলি খুশিতে চোখের জল ছেড়ে সাহেরা খাতুনকে ঝাপটে ধরে কান্নাজড়িত স্বরে বলল,,
“দেখলেন তো আম্মু। মায়েরা যাই বলেন তাই সন্তানদের জীবনে ফলে যায়! আপনি একটু আগেই বলেছিলেন আমার খুব ভালো রেজাল্ট হবে, দেখলেন তো আপনার কথা কতোটা মিলে গেলো? আপনার মেয়ে কতোটা ভালো রেজাল্ট করল?”
সাহেরা খাতুন চোখের কোটরে জল নিয়ে লিলিকে ঝাপটে ধরতে গিয়ে ও থেমে গেলেন। ক্ষনিকের মধ্যে লিলিকে ছেড়ে উনি দ্রুত পায়ে রুম থেকে প্রস্থান নিলেন। ববি রুমের দরজা আটকে লিলির মুখোমুখি বসে বাঁকা হেসে লিলির অশ্রুসিক্ত চোখে তাকিয়ে বলল,,
“রেজাল্ট বের করে দিলাম টেক্স দিবে না?”
লিলি চোখের জল মুছে উৎসুক স্বরে বলল,,
“আগে বলুন না? আমি সত্যিই A+ পেয়েছি তো?”
ববি ভ্রু উঁচিয়ে বলল,,
“কেনো? নিজের কনফিডেন্সের উপর কোনো ডাউট আছে?”
“কোনো চান্স ই নেই। তবু ও মন মানছে না ববি। প্লিজ আরো একবার চেইক করে বলুন না।”
“তিনবার চেইক করেছি ওকে? বার বার একই রেজাল্ট এসেছে! A+ পেয়েছ তুমি। A +.”
উচ্ছাসে বিভোর হয়ে লিলি ববিকে খুব শক্ত করে ঝাপটে ধরে কাঁদো কাঁদো স্বরে বলল,,
“আমি পেরেছি ববি। নিজের সমস্ত মেধা কাজে লাগিয়ে লাইফের একটা টার্নিং পয়েন্টে এসে দাঁড়াতে পেরেছি। আরো তিন ধাপ এগিয়ে যেতে হবে আমাকে। আমি জানি ববি, আপনি পাশে থাকলে আমি খুব অনায়াসেই সেই তিন ধাপে এগিয়ে যেতে পারব। কিছু একটা এচিভ করতে পারব।”
লিলিকে বুকে নিয়ে ববি দীর্ঘ একটা শ্বাস ছেড়ে বলল,,
“সব হবে লিলি। সব। আমি ও এই ফাঁকে মাস্টার্সটা কমপ্লিট করে নেই। মাস্টার্সের পর পরই ভালো একটা জব খুঁজে নিবো। তখন তোমার পড়াশোনার সমস্ত খরচ আমি নিজেই বহন করতে পারব। তোমার স্বপ্ন, আশা, ভরসা, টার্গেট, প্রত্যাশা সব পূরণ করব, সব। তোমার স্বপ্ন পূরণের প্রত্যেকটা ধাপে আমি তোমার পাশে থাকব লিলি। বেস্ট গাইডার এন্ড বেস্ট হাজবেন্ড হিসেবে।”
লিলি মৃদ্যু হাসল। লিলিকে বুক থেকে উঠিয়ে ববি বাঁকা হেসে লিলির থুতনী চেঁপে ধরে নেশাক্ত চোখে লিলির ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে বলল,,
“টেক্স চাই আমার। এক্ষনি, এই মুহূর্তে!”
লিলি অস্পষ্ট স্বরে বলল,,
“কি বলুন?”
ববি ঘোর লাগা স্বরে বলল,,
“কিস অন মাই লিপস।”
লিলি লজ্জায় মুর্ছা গেলো। ববির থেকে থুতনীটা ছাড়িয়ে লিলি এক ছুটে বিছানা থেকে নামতেই ববি হিংস্রভাবে লিলিকে বেডের কার্ণিশে চেঁপে ধরল। লিলি চঞ্চলা চোখে ববির দিকে তাকিয়ে আছে। ববি চোখে, মুখে এক রাশ বিরক্তি নিয়ে বলল,,
“প্রবলেম কি হুম? নিজে থেকে আমার ঠোঁটে চুমো খেতে প্রবলেম কি হুম?”
লিলি ভয়ে কুঁকিয়ে বলল,,
“ছাছাছাড়ুন। মামামুকে কল করতে হবে। বাবাবাড়িতে কল করতে হবে।”
“কোথাও কল করতে দিবো না ওকে? যতক্ষণ না আমি আমার কোয়েশ্চেনের আনসার পাচ্ছি।”
লিলি খানিক রাগান্বিত হয়ে কপাল কুঁচকে বলল,,
“কোনো কোয়েশ্চেনের আনসার দিতে পারব না আপনাকে বুঝেছেন? ছাড়ুন বলছি হাতটা।”
ববি প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হয়ে লিলির হাত দুটো খুব শক্ত করে চেঁপে ধরে বলল,,
“ছাড়ছি না কিছুতেই। আনসার করে দেন ছাড়া পাবে।”
লিলি বেশ বুজতে পেরেছে এমনি এমনি ববির হাত থেকে নিজেকে ছাড়ানো আজ কিছুতেই সম্ভব হবে না। ববির জেদের কাছে আজ তাকে হার মানতেই হবে। লাজ, লজ্জাকে বিসর্জন দিতে হবে। তাই কোনো রকম দেরি না করে লিলি চোখ জোড়া বুজে ববির ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো। ববি চোখ জোড়া প্রকান্ড করে লিলির দিকে তাকিয়ে আছে। পরমুহূর্তে বাঁকা হেসে ববি লিলির ঠোঁট জোড়া তীব্রভাবে আঁকড়ে ধরল।
,
,
বিকেল ৪ টা। ববি জুবায়ের আহমেদের বাড়ি থেকে এই মাএ বের হলো। মিষ্টি নিয়ে একটু আগেই ববি জুবায়ের আহমেদের বাড়িতে ঢুকেছিলো৷ লিলির দুর্দান্ত রেজাল্টে জুবায়ের আহমেদ ভীষণ খুশি। সোনিয়া আহমেদ লোক দেখানো খুশি হলে ও ভেতরে ভেতরে হিংসেয় ফুসফুস করছেন।
মিষ্টি হাতে নিয়ে ববি এবার হেমার শ্বশুড় বাড়ির দিকে রওনা হলো। হেমাদের দু তলার কলিং বেল চাপতেই আয়রা সদর দরজা খুলে দিলো। ববিকে দেখা মাএই আয়রা খুশিতে ফেঁটে পড়ল। উচ্ছ্বাসিত হয়ে আয়রা ববির ডান হাতটা চেঁপে ধরে উচ্চ স্বরে হেসে বলল,,
“আমি বিশ্বাস করতে পারছি না ববি। তুমি এসেছ!”
ববি এক ঝটকায় আয়রার হাতটা ছাড়িয়ে তিক্ত স্বরে বলল,,
“যখন তখন অকারণে আমার হাত ধরাটা আমার মোটে ও পছন্দ না আয়রা। নেক্সট টাইম আমার থেকে যথেষ্ট দূরত্ব বজায় রাখবে। এভাবে হুট হাট করে হাত ধরবে না প্লিজ।”
আয়রা রাগে গজগজ করে বলল,,
“আমার ছোঁয়া খুব বিরক্ত লাগে না? লিলির ছোঁয়া খুব ভাল্লাগে?”
“লিলি আমার ওয়াইফ আয়রা। অবশ্যই পর- নারীর ছোঁয়ার চেয়ে লিলির ছোঁয়া আমার প্রত্যাশিতভাবেই ভালো লাগবে।”
আয়রাকে পাশ কাটিয়ে ববি ড্রইং রুমে পা রাখতেই আফনান হুমড়ি খেয়ে ববির সামনে এসে দাঁড়ালো। এক গাল হেসে ববি আফনানের কাঁধে হাত রেখে বলল,,
“হেই আফনান। হোয়া’টস আপ?”
আফনান উচ্চ হেসে ববিকে ঝাপটে ধরে বলল,,
“ফাইন। তোমার অবস্থা নাই বা জিগ্যেস করলাম। কজ আই নো, আজ তুমি ভাবীর খুশিতে কতোটা খুশি।”
অমনি আয়রা পেছন থেকে তেড়ে এসে দুজনের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে প্রশ্নবিদ্ধ চোখে বলল,,
“ভাবীর খুশি মানে? কিসের খুশি?”
ববি কিছু বলার পূর্বেই আফনান বলে উঠল,,
“আরে আজ এস.এস.সি পরীক্ষার রেজাল্ট পাবলিশ হলো না? ভাবী A+ পেয়েছেন। বুঝেছিস?”
আয়রা হঠাৎ অট্ট হেসে বলল,,
“বউ A+ পেয়েছে বলে ববি এতো খুশি? আমি তো ভেবেছিলাম বউ আবার প্রেগনেন্ট হলো না তো!”
ববি খুব সাবলীল স্বরেই বলল,,
“বাবা হওয়ার বয়স আমার পাড় হয়ে যাচ্ছে না আয়রা। তোমাকে অন্তত এই বিষয়টা নিয়ে ভাবতে হবে না। নেক্সট টাইম এসব বিপত্তিকর কথা আমাকে না বললেই খুশি হবো।”
প্রসঙ্গ পাল্টে ববি ম্লান হেসে প্রশ্নবিদ্ধ চোখে আফনানকে বলল,,
“আপু কোথায় আফনান?”
“ভাইয়া এবং ভাবী তো ক্লিনিকে গেছে। এইতো একটু আগেই বের হলো!”
ববি কিছুটা ব্যতিব্যস্ত হয়ে বলল,,
“হঠাৎ ক্লিনিকে কেনো? আপুর শরীর ঠিক আছে তো?”
“একদম ফিট৷ হয়তো পার্সোনাল কোনো কারণে গেছে!”
মিষ্টির প্যাকেট দুটো ডাইনিং টেবিলের উপর রেখে ববি পিছু ফিরে আফনানকে উদ্দেশ্য করে বলল,,
“আজ তাহলে আসি আফনান। তুমি একদিন আসো না আমাদের বাড়িতে।”
আয়রা দুজনের কথার মাঝখানে ঢুকে হুট করে ববিকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠল,,
“একদিন তো আমাদের সবাইকে ইনভাইট করতে পারো ববি। খেয়ে, দেয়ে তোমাদের বাড়িটা একটু ঘুড়ে আসতাম।”
ববি ইতস্ততবোধ করে বলল,,
“ইনভিটিশানের কি দরকার আয়রা? তোমরা তো যেকোনো সময় ই যেতে পারো। সত্যি বলছি, আমরা সবাই খুব খুশি হবো।”
“ওকে। তবে আগামী শুক্রবার আমরা সবাই তোমাদের বাড়িতে যাচ্ছি কেমন? বাড়ি ফিরেই মামু, মামানী এবং আন্টিকে বলে দিও! আর হ্যাঁ, স্পেশালি তোমার ওয়াইফকে বলে দিও!”
ববি কিছু বলার পূর্বেই আয়রাকে উদ্দেশ্য করে আফনান বলে উঠল,,
“আগামী সপ্তাহেই তোকে ছেলে পক্ষ দেখতে আসছে আয়রা। উল্টো ববির পরিবার এই বাড়িতে আসবে। ববিদের বাড়িতে আমাদের যাওয়ার কোনো স্কোপই নেই।”
আয়রা চোয়াল শক্ত করে বলল,,
“পই পই করে বলেছি তোদের, আমি ছেলে পক্ষের সামনে কিছুতেই বসব না। এরপরে ও কেনো তোরা আমাকে প্রেশার ক্রিয়েট করছিস বল তো? কিছুতেই আমি এখন বিয়ে করব না, কিছুতেই না।”
আয়রা জেদ দেখিয়ে প্রস্থান নিলো৷ ববি জিগ্যাসু দৃষ্টিতে ববির দিকে তাকিয়ে বলল,,
“সত্যিই আয়রাকে দেখতে আসবে?”
আফনান ম্লান হেসে বলল,,
“হুম ববি। বাট, আয়রাকে কিছুতেই রাজী করানো যাচ্ছে না। খুব রিয়েক্ট করছে খুব।”
“আই থিংক আফনান, আয়নাকে কিছুটা সময় দেওয়া উচিত। মাএ তো একটা বিচ্ছেদ থেকে উঠল। নিজেকে স্বাভাবিক করতে অন্তত ৫/৬ মাস সময় তো লাগবেই!”
“আব্বু বুঝতে চাইছে না আসলে। খুব প্রেশার ক্রিয়েট করছে আয়রার উপর। আব্বু ভাবছে, বিয়ের পর হয়তো আয়রা কিছুটা স্বাভাবিক হবে। তোমাকে ভুলতে ও অনেকটা সুবিধে হবে।”
“হয়তো আঙ্কেলের সিদ্ধান্তটা ও ঠিক। তোমাদের যা ভালো মনে হবে তাই করো।”
আফনান বিষন্ন মনে ববির সম্মুখে দাঁড়িয়ে বলল,,
“ঐদিকে মেহের আমাকে ভীষণ প্রেশার দিচ্ছে ববি। যেভাবেই হোক, কিছুদিনের মধ্যে ওর ফ্যামিলিতে বিয়ের প্রপোজাল পাঠাতে। আগামী মাসের মধ্যেই নাকি পাগলিটাকে বিয়ে করতে হবে। একচুয়েলি হয়েছে কি ববি, ওর বাবা ওর বিয়ের জন্য খুব জাকজমকভাবে ছেলে খুঁজছে। তাই মেহের এতো চাপ দিচ্ছে আমাকে।”
“জিজুকে বলে দেখো না কি হয়! তোমার ও তো বিয়ের বয়স হয়েছে তাই না? তুমি মুখে স্বীকার না করলে ও কিন্তু আমি বুঝতে পারি, মেহেরকে তুমি খুব ভালোবাসো। তাই যত দ্রুত সম্ভব জিজুকে বলে মেহেরের পরিবারে বিয়ের প্রস্তাবটা পাঠিয়ে দাও। দেখো না কি হয়!”
আফনান বেশ ভাবুক ভঙ্গি নিয়ে বলল,,
“হুম তাই ভাবছি৷ আগামী তিন মাস পরেই আমাকে আবার কাতার ব্যাক করতে হবে। যা করার এই তিনমাসের মধ্যেই করতে হবে।”
“সব অবস্থায় তোমার পাশে আছি ওকে? যেকোনো দরকারে অবশ্যই আমাকে পাশে পাবে।”
আফনান মৃদ্যু হেসে হ্যাঁ সূচক সম্মতি জানালো। ববি ব্যতিব্যস্ত স্বরে বলল,,
“আফনান, এখন আসছি আসলে। সাইটে কিছু ইম্পর্ট্যান্ট কাজ আছে। খুব ইম্পর্ট্যান্ট।”
“আরে আরে, চা তো খেয়ে যাও৷ আয়রাকে বলছি চা করতে।”
“প্লিজ আফনান ব্যস্ত হয়ো না। ইচ্ছে থাকা সত্ত্বে ও আমি বসতে পারছি না আসলে। খুব ইম্পর্ট্যান্ট কাজ আছে, খুব।”
আফনানের থেকে বিদায় নিয়ে ববি সাইটের উদ্দেশ্যে রওনা হলো।
রাত ১০ টা।
লিলি খুব সেজেগুজে অধীর আগ্রহ নিয়ে খাবার টেবিলে ববির জন্য ওয়েট করছে। কলিং বেল বেজে উঠতেই লিলি ব্যতিব্যস্ত হয়ে এক ছুটে সদর দরজাটা খুলে দিতেই ববির দেখা মিলল। লিলির দিকে তাকাতেই ববি কপাল কুঁচকে বলল,,
“এতো সাজের কারণ?”
লিলি খুব ভাব নিয়ে বলল,,
“বারে! এতো দুর্দান্ত একটা রেজাল্ট করলাম একটু সাজব না?”
“রেজাল্টের সাথে সাজের কি সম্পর্ক?”
“মেয়েরা খুশি হলেই সাজতে পছন্দ করে। আপনি তো ছেলে৷ বুঝবেন কিভাবে বলুন?”
ববি ভাবশূণ্য হয়ে বলল,,
“আমি তো ভেবেছিলাম, আমাকে ইমপ্রেস করার জন্য সেজেছ। নিজের খুশিতে যে সেজেছ বুঝতে পারি নি সেটা।”
লিলিকে পাশ কাটিয়ে ববি ড্রইং রুম পাড় করে রুমে প্রবেশ করল। গাঁয়ের শার্টটা খুলে সোজা ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ল। প্লেইটে খাবার বেড়ে লিলি খাবার ভর্তি প্লেইটসহ রুমে প্রবেশ করল৷ কিছুক্ষণের মধ্যে ববি ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে এলো। ভেজা মুখটা টাওয়াল দিয়ে মুছে ববি আয়নায় লিলির প্রতিবিম্বের দিকে তাকিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ স্বরে বলল,,
“ডিনার ডান?”
“নো। আপনার জন্য ওয়েট করছিলাম।”
“ওয়েট করার কি আছে? ক্ষুধা তো আর আমার জন্য ওয়েট করবে না তাই না?”
“করবে না কেনো? অবশ্যই করবে। করতে বাধ্য।”
প্যান্টের পেছনের পকেট থেকে ছোট একটা জুয়েলারি বক্স বের করে ববি ম্লান হেসে লিলির মুখের সামনে ধরল। লিলি জিগ্যাসু দৃষ্টিতে ববির দিকে তাকিয়ে বলল,,
“কি এটা?”
“খুলেই দেখো না!”
খাবারের প্লেইটটা ডেস্কের উপর রেখে লিলি খুব উদগ্রীব হয়ে প্যাকেটে মোড়ানো জুয়েলারী বক্সটা হাতে নিয়ে সমস্ত প্যাকেজিং খুলে জুয়েলারি বক্সটা ওপেন করতেই চোখ জোড়া প্রকান্ড করে অবাক দৃষ্টিতে ববির দিকে তাকিয়ে বলল,,
“নূপুর?”
ববি ভাবশূণ্য হয়ে বলল,,
“হুম। কেনো পছন্দ হয় নি?”
বসা থেকে উঠে লিলি খুব উত্তেজিত হয়ে ববিকে ঝাপটে ধরে বলল,,
“হুম। খুব পছন্দ হয়েছে ববি৷ খুব।”
লিলিকে শক্ত করে ঝাপটে ধরে ববি মৃদ্যু হেসে জিগ্যাসু স্বরে বলল,,
“হ্যাপি তো?”
“খুব খুব খুব হ্যাপি। ভাবতেই পারি নি, এতো বড় একটা সারপ্রাইজ আমার জন্য ওয়েট করছে। জাস্ট ভাবতে পারি নি ববি।”
“আমার “পুতুল বউ” এতো দুর্দান্ত একটা রেজাল্ট করেছে, তার হাজবেন্ড হিসেবে তাকে কিছু একটা গিফট করব না আমি বলো?”
লিলি গলা জড়ানো স্বরে বলল,,
“আমাকে দেওয়া আপনার ফার্স্ট গিফট। খুব সামলে রাখব ববি।”
লিলিকে ছেড়ে ববি কপাল কুঁচকে লিলির অশ্রুসিক্ত চোখে তাকিয়ে বলল,,
“কাঁদছ কেনো তুমি?”
লিলি কান্নার মাঝে ও হেসে বলল,,
“উত্তেজনায় ববি। এই প্রথম আমার এচিভমেন্টে কেউ আমাকে কিছু একটা গিফট করল। তা ও আবার সে ব্যক্তিটা আমার হাজবেন্ড। খুশিতে আমি কাঁদব না বলুন?”
ববি অল্প সময় মৌণ থেকে লিলির কপালে চুমো খেয়ে ম্লান স্বরে বলল,,,
“দুটো বছর সময় দাও শুধু৷ জাস্ট দুটো বছর। ঠিকঠাক একটা জব পেয়ে নেই। তখন এমন গিফট রোজ পাবে তুমি। কোনো কিছুর কমতি থাকবে না তোমার। ষোল আনায় ভরিয়ে রাখবে।”
“আমার তো এতো গিফট চাই না ববি। আমার তো শুধু এই ববিটাকেই চাই৷ এই ববিই তো আমার কাছে আল্লাহ্ র দেওয়া সব’চে বেস্ট এন্ড এক্সপেন্সিভ গিফট৷ এই ফুঁটা কপালে যে উপর ওয়ালা এতো বেস্ট কাউকে জীবন সঙ্গি হিসেবে লিখে রেখেছে কে জানত?”
লিলিকে ছেড়ে ববি লিলির ঠোঁটে দীর্ঘ একটা চুমো খেয়ে বলল,,
“আর কিছু বলতে হবে না। জাস্ট শাট আপ। শাট আপ।”
লিলি ম্লান হাসল। আচমকা লিলিকে পাজা কোলে তুলে ববি বিছানায় বসিয়ে দিলো। লিলির হাত থেকে নুপুর গুলো নিয়ে ববি লিলির পায়ের কাছের শাড়িটা আলতো হাতে একটু উপরে তুলে পর পর দুটো নূপুর লিলির দু পায়ে পড়িয়ে দিলো। লিলি মৃদ্যু হেসে নূপুর গুলোর দিকে তাকিয়ে আছে। বাঁকা হেসে ববি লিলির দু পায়ে দীর্ঘ দুটো চুমো খেয়ে দিতেই লিলি লজ্জায় দু হাত দিয়ে মুখটা ঢেকে নিলো। খাবারের প্লেইটটা হাতে নিয়ে ববি লিলির মুখের কাছে লোকমা ধরে বলল,,
“প্লিজ ডোন্ট বি সাই লিলি। হাত সরাও। খাবারটা খাও। লোকমা ধরে বসে আছি তো।”
লিলি মুখ থেকে হাত দুটো সরিয়ে মুখটা হা করে ববির দিকে তাকালো। ববি বাঁকা হেসে লিলির মুখের কাছ থেকে লোকমাটা ক্রস করে নিজের মুখে পুড়ে নিলো। লিলি মুখটা কালো করে এখনো হা করে আছে। ববি সেকেন্ড লোকমাটা ও ক্রস করে নিজে খেয়ে নিলো। লিলি এবার ভীষণ ক্ষিপ্ত হয়ে বিছানায় লম্বা হয়ে শুয়ে পড়তেই ববি লিলির ডান হাতের কনুইটা শক্ত করে ধরে লিলিকে থামিয়ে ব্যতিব্যস্ত স্বরে বলল,,
“আরে আরে, আমি তো জাস্ট মজা করছিলাম। উঠো, হা করো প্লিজ। প্রমিস করছি নেক্সট লোকমা গুলো তোমার মুখেই যাবে।”
লিলি গোমড়া মুখে পুনরায় হা করল। ববি এবার কোনো রকম দুষ্টুমি না করেই পর পর অনেক গুলো লোকমা লিলির মুখে তুলে দিলো। কিছু ক্ষনের মধ্যে দুজন খাবারটা শেষ করে দুজনই দুজনকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়ল। ঘুমোনোর আগ মুহূর্তে ববি লিলিকে বিভিন্নভাবে জ্বালিয়েছে। কিছুক্ষণ সমস্ত মুখে চুমো খেয়েছে তো কিছুক্ষণ তীব্র ভাবে লিলির ঠোঁট জোড়া আঁকড়ে ধরেছে। এসব রোমান্টিক অত্যাচার সহ্য করেই পরমুহূর্তে লিলি গভীর ঘুমে তলিয়ে পড়ল।
এক মাস পর। জুলাই মাসের ১ তারিখ আজ। সাভার সরকারি কলেজে আজ এডমিশন ডেইট লিলির। ভর্তি সংক্রান্ত সকল যাবতীয় খরচ খায়রুল আহমেদ বহন করলেন। সকালের দিকে লিলিকে এডমিশন করে দুপুরের দিকে বাড়ি ফিরেছে ববি। গতকাল ববি একবার নড়াইল গিয়েছিলো। নড়াইল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে লিলির টেসটেমোনিয়াল কালেক্ট করতে। লিলি অবশ্য অনেক বায়না করেছিলো ববির সাথে একবার নড়াইল যেতে। পরিবারের সবার সাথে একবার দেখা করতে, তবে ববি ইচ্ছে করেই লিলিকে সাথে নিয়ে যায় নি। লিলির বাবা আগে থেকেই স্কুল থেকে টেসটেমোনিয়াল কালেক্ট করে রেখেছিলেন। ববি যেতেই উনি টেসটেমোনিয়ালটা ববির হাতে তুলে দিলেন। লিলির মা এবং বাবা অনেক রিকুয়েস্ট করার পরে ও ববি দু ঘন্টার জন্য বসে নি ঐ বাড়িতে। বিকেলে নড়াইল পৌঁছে গভীর রাতেই ঢাকায় ব্যাক করেছে।
গতকাল থেকেই লিলি তুখাড় রেগে আছে ববির উপর। সব কিছুতেই বড্ড রাগ দেখাচ্ছে। ববির আশেপাশে ও ভিড়ছে না ঠিক মতো। এই বিষয়টা নিয়ে ববি খুব বিরক্ত। বিকেলের দিকে বাড়ির সবাই রেডি হয়ে হেমার শ্বশুড় বাড়ি যাওয়ার জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছে। আজ আয়রাকে পাএপক্ষ দেখতে আসবে। সে কারণেই আজ খুব তোড়জোড় করে সবার ঐ বাড়িতে যাওয়া। এছাড়া ও ঐ বাড়িতে যাওয়ার একটা বিশেষ কারণ আছে৷ “হেমা মা হতে চলেছে।” এক মাস চলছে বেবির!”
সেজে গুজে লিলি চুলে খোঁপা বেঁধে আয়নার দিকে তাকাতেই পেছনে রাগান্বিত অবস্থায় ববিকে দেখতে পেলো। ববিকে দেখা মাএই লিলি মুখটা কালো করে রুম থেকে প্রস্থান নিতেই ববি পেছন থেকে লিলির হাতটা শক্ত করে ধরে চোয়াল শক্ত করে বলল,,
“কি হয়েছে তোমার হুম? কি হয়েছে? কেনো এমন ওভার রিয়েক্ট করছ?”
লিলি পিছু ফিরে রাগে গিজগিজ করে বলল,,
“আপনি বুঝেন না না? সবকিছু আপনাকে বুঝিয়ে দিতে হবে?”
লিলির হাতটা ছেড়ে ববি আলমারি এবং কাবার্ড থেকে লিলির সমস্ত শাড়ি কাপড় নামিয়ে একটা সুটকেসে পুড়ছে আর চোয়াল শক্ত করে চেঁচিয়ে বলছে,,
“নড়াইল পাঠিয়ে দিচ্ছি এক্ষনি। সারা জীবন বাপের বাড়িতেই থাকবে। রিফাতকে সেকেন্ড বিয়ে করে ঐখানেই সেটেল্ড হয়ে যাবে। একদম এই বাড়িতে ব্যাক করবে না। একদম না।”
#চলবে…?