প্রেম_ফাল্গুন #সূচনা_পর্ব

#প্রেম_ফাল্গুন
#সূচনা_পর্ব
#Nishat_Jahan_Raat (ছদ্মনাম)

ঘাঁড়ে কোনো পুরুষের স্পর্শ পেতেই লিলি ভীষণ কেঁপে তড়িঘড়ি করে পিছু ফিরে তাকালো। ঘটনার আকস্মিকতায় অতি অপরিচিত মুখটাকে দেখে লিলি পূর্ণ শঙ্কাগ্রস্ত হয়ে খানিক পিছিয়ে জোরে চেঁচিয়ে বলল,,

“কেকেকে আপনি?”

ঝিরিঝিরি বৃষ্টিতে “ববি” ঠিক চোখ মেলে সামনের দিকে তাকাতে পারছে না। বার বার চোখের পাতা এক হয়ে যাচ্ছে। কপালে লেপ্টে থাকা চুলগুলোকে হাত দিয়ে সরিয়ে ববি ঘোলা ঘোলা চোখে লিলির দিকে তাকালো। আঠারো বছরের একটা যুবতি মেয়েকে লাল টুকটুকে বউ ভেসে চোখের সামনে দেখে ববির ক্রোধিত চোখ দুটো ম্লান হয়ে এলো। চোখে, মুখে এক অদ্ভুত উন্মাদনা কাজ করতে লাগল। দু চোখে আসক্তি নিয়ে ববি লিলির দিকে তাকিয়ে বলল,,

“এতো রাতে এই ঝুম বৃষ্টির মধ্যে একা একটা মেয়ে এখানে কি করছেন? ভেজাক্ত অবস্থায় তো ছেলেদের মনে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছেন।”

অল্প সময় থেমে ববি আবার পিছনের চুল গুলো টেনে হালকা হেসে বলল,,

“আমি অবশ্য ঐ চোখে আপনার দিকে তাকাই নি। তা ও, আপনার জন্য এলাকার ছেলেদের সাথে কথা কাটি করতে হলো। আচ্ছা, আপনি কি বিয়ের আসর ছেড়ে পালিয়েছেন? টুকটুকে পুতুল বৌ সেজে আছেন, তাই বললাম!”

লিলি ভয়ার্ত দৃষ্টিতে এদিক সেদিক তাকিয়ে দেখল তাকে পিছু করা ছেলে গুলো আর নেই। আর এদিকে ববি একের পর এক প্রশ্ন করেই যাচ্ছে। তার জিগ্যাসার যেনো কোনো অন্ত নেই। ক্রন্দনরত অবস্থায় আতঙ্কে জর্জরিত হয়ে লিলি সুঠাম দেহধারী আর গৌরবর্ণের আদলে দাঁড়িয়ে থাকা ববির পা ধরে কেঁদে নাক টেনে বলল,,

“ভাইয়া প্লিজ আমাকে বাঁচান। আমি গ্রাম থেকে পালিয়ে এসেছি। তা ও আবার বিয়ের আসর ছেড়ে।”

ঘটনার আকস্মিকতায় ববি সম্পূর্ণ বেকুব হয়ে হতভম্ব দৃষ্টিতে পায়ে ধরে বসে থাকা লিলিকে উদ্দেশ্য করে দাঁত কিড়মিড়িয়ে নিজেই নিজের মনে আওড়িয়ে বলল,,,

“রাবিশ৷ এ আমার পা ধরল কেনো? কোন মহা ঝামেলায় ফেঁসে গেলাম আমি! এজন্যই মেয়েদের চোখ ধাঁধানো রূপে মজতে নেই। হুট হাট করে গাঁয়ে এসে পড়ে। আসছিলাম তো এই মেয়েকে ধমকাতে। ভোলাভোলা মুখ দেখে স্বয়ং আমিই ভড়কে গেলাম এর রূপে?”

লিলি একই ভাবে ববির পা ধরে বসে আছে। আর হেচকি তুলে কাঁদছে। ববি তার মনের ভ্রম ভেঙ্গে লিলির দিকে দৃষ্টিপাত করে বজ্রকন্ঠে বলল,,

“পা ছাড়ুন আপনি। পা ধরেছেন কেনো?”

লিলি মায়াভরা চোখে খুব কেঁদে ববির দিকে তাকিয়ে বলল,,

“প্লিজ ভাইয়া আমার সাহায্য করুন। আমি খুব অসহায় হয়ে আপনার পা ধরেছি। আর আপনিই আমার শেষ ভরসা।”

লিলির মায়াভরা চোখের দিকে তাকিয়ে ববির রাগে রক্তিম মুখটা মিইয়ে গেলো। লিলির বুক ফাঁটা আকুতি যেনো ববির বুকে ধারালো আলপিন হয়ে বিঁধলো। নরম স্বরে ববি লিলির দিকে তাকিয়ে বলল,,

“এখানে আপনি কার কাছে এসেছেন?”

“এই শহরেই আমার চাচার বাড়ি। কখনো আসি নি আমি এই অচেনা শহরে। তবে চাচার বাড়ির ঠিকানাটা আমি জানি। কেউ আমাকে সেই ঠিকানা অনুযায়ী চাচার বাড়ির সন্ধান দিচ্ছে না। উল্টে খারাপ চোখে আমাকে দেখছে। ভুলভাল পথে দেখিয়ে দিচ্ছে। এই করে করে বিকেল থেকে মধ্যরাত ঘনিয়ে এলো। অথচ আমি এখনো অব্দি চাচার বাড়ি পৌঁছাতে পারলাম না। এই শহরের মানুষ গুলো খুব খারাপ৷ কেউ কারো উপকারে আসে না৷ ”

ববি খানিক পিছিয়ে এসে লিলির থেকে কিছুটা দূরে সরে রুষ্ট হয়ে বলল,,

“পা না ধরলে ও আমি আপনাকে আপনার ঠিকানা অব্দি পৌঁছে দিতাম! পায়ে ধরে কি প্রমাণ করতে চাইছেন আপনি? আপনি খুব অসহায়?”

লিলি বসা থেকে উঠে ববির সামনে হাত জোর করে কেঁদে বলল,,,

“অনুগ্রহ করে আমার চাচার বাড়ি পৌঁছে দিন প্লিজ। এই মুহূর্তে আমিই পৃথিবীর ভীষণ অসহায় ব্যক্তি। বিশ্বাস করুন আমার মাথা কাজ করছে না। খুব অস্থির অস্থির লাগছে। অন্ধকারে দম বন্ধ হয়ে আসছে। লোকজনের লোভাতুর চাহনী আমাকে ভৎস করে দিচ্ছে। এতো বড় শহরের অলোক ধাঁধায় আমি হারিয়ে যাচ্ছি। ছোট্ট একটা গ্রামের মেয়ে আমি, শহরের চাকচিক্যতা আর জাকজমকে আমার মাথা ঘুড়ে আসছে। প্লিজ কৃপা করুন আমার উপর প্লিজ।”

ববি ভীষণ বেহিসাবি হয়ে পিছনের চুল গুলো টেনে উদ্বিগ্ন স্বরে লিলিকে বলল,,

“প্লিজ শান্ত হোন আপনি। আর ঠিকানা টা দিন।”

লিলি গলা ধরা স্বরে বেশ তাড়াহুড়ো করে বলল,,

“ঝাউতলা, চেয়ারম্যান বাড়ির বিপরীত পাশের স্বপ্নছায়া মন্জ্ঞিল।”

ববি ভ্রু যুগল ঈষৎ কুঁচকে বলল,,

“সিউর? এটাই আপনার চাচার বাড়ির ঠিকানা?”

“হুম সিউর। প্লিজ আমাকে এই ঠিকানায় পৌঁছে দিন।”

“আশ্চর্যের বিষয় কি জানেন? ঠিকানার ধাঁরে কাছে এসেই আপনি ঠিকানা খুঁজছেন!”

“তার মানে আমার চাচার বাড়ি আশেপাশেই কোথাও?”

“হুম। এখান থেকে দশ মিনিট হেঁটে গেলেই আপনার চাচার বাড়ি।”

“এক্ষনি আমাকে নিয়ে চলুন প্লিজ। আমি আপনার কাছে চিরকৃতজ্ঞ হয়ে থাকব।”

প্যান্টের পকেটে দুহাত গুজে ববি সামনের দিকে হাঁটা ধরল। আর পিছু ফিরে লিলির দিকে তাকিয়ে বলল,,

“চলুন। বৃষ্টি খুব বাড়ছে। কখন ঝড়ের তান্ডব শুরু হয় কি জানি।”

লিলি চোখের জল গুলো মুছে হাতে একটা ছোট ব্যাগ নিয়ে ববির পিছু পিছু হাঁটা ধরল। ঠান্ডায় এক প্রকার কাঁপছে লিলি। গাঁয়ে জড়ানো লাল শাড়িটা টেনে সে নিজেকে আরো বেশি করে ঢেকে নিচ্ছে। বৃষ্টির তান্ডব যেনো কিছুতেই কমছে না উল্টে বাড়ছে। গোটা একটা দিন পাড় হয়ে গেলো অথচ লিলির এখনো নাওয়া, খাওয়া হয় নি। শরীরটা অসাড় হয়ে আসছে তার। ঠিক ভাবে হাঁটতে ও পারছে না। ববি পেছন থেকে আড়চোখে লিলির দিকে তাকিয়ে দেখল, লিলি খানিক হেলে দুলে হাঁটছে৷ মনে হচ্ছে এক্ষনি মাথা ঘুড়ে পড়বে। ববি হাঁটা থামিয়ে লিলির পাশাপাশি দাঁড়ালো৷ গাঁ থেকে শার্ট টা খুলে ববি দুজনের মাথার উপর মেলে ধরল। লিলি অস্থির চোখ নিয়ে ববির দিকে তাকাতেই ববি দাম্ভিক স্বরে বলল,,

“গো এহেড। ঝড়ো বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্যই এটা করা।”

লিলি মাথাটা নিচু করে সামনে হাঁটা ধরল। ববি জিগ্যাসু দৃষ্টিতে লিলির দিকে তাকিয়ে বলল,,

“আচ্ছা। আপনি কখনো আপনার চাচার বাড়িতে আসেন নি?”

“না। আসলে চাচা আমাদের সাথে তেমন যোগাযোগ করতে চান না।”

“কেনো? কারন কি?”

“আসলে আমার চাচা উনার শ্বশুড়বাড়িতে ঘর জামাই হয়ে থাকেন তো, তাই হয়তো সাহস করে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে চান না। আর তাছাড়া আমার চাচা আমার বিয়ের খবর ও জানতেন না।”

“আপনার চাচার নাম জুবায়ের হোসেন? রাইট?”

লিলি ম্লান হেসে ববির দিকে তাকিয়ে বলল,,

“জ্বি৷ আপনি কিভাবে জানলেন?”

“কারণ, জুবায়ের চাচার পাশের বাড়িটাই আমাদের!”

“এতোক্ষনে আমি একটা ঠিক মানুষকে খুঁজে পেলাম। ভাবতেই খুব খুশি লাগছে।”

“হুম।”

ববি অল্প সময় থেমে আবার বলল,,

“আচ্ছা, আপনার নামটা জানতে পারি?”

“লিলি খানম।”

“আমি ববি। ববি তাজওয়ার।”

ববির দিকে তাকিয়ে লিলি হালকা হাসল। ববি কিছুটা সংকোচ বোধ করে আবার বলল,,

“আচ্ছা জানতে পারি আপনি কেনো বিয়ের আসর ছেড়ে পালিয়েছেন?”

লিলি কান্না জড়িত কন্ঠে মাথাটা নিচু করে বলল,,

“আমি মাএ এসএসসি পরিক্ষা দিয়েছি। এর মাঝেই বাবা পাগল হয়ে গেছে আমার বিয়ে দিতে। নিম্নবিও পরিবারের মেয়ে বলে মা- বাবা কখন আমাকে বিয়ে দিয়ে নিজেদের দায়ছাড়া করবেন সেই চিন্তায় আছেন। কিন্তু আমি তো এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে করতে চাই না। আমার তো অনেক পড়াশুনা করতে হবে। অনেক বড় হতে হবে। চাকরী বাকরী করতে হবে। মা-বাবাকে একটা সুস্থ, সুন্দর জীবন উপহার দিতে হবে। গ্রামের ঐ নোংরা সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। মেয়ে বলে গ্রামের লোকজনদের যে অবহেলা, অত্যাচার, নিপীড়ন সহ্য করেছি সব পা দিয়ে পিষে দিতে হবে। প্রমাণ করতে হবে মেয়েরা চাইলেই সব পারে, ছেলেদের মতো মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে, ছেলেদের মতো টাকা পয়সা ও রোজগার করতে পারে, মা-বাবাকে সুস্থ, সুন্দর একটা জীবন দিতে পারে, তাদের ইচ্ছে মতো জীবন সঙ্গি বেছে ও নিতে পারে। আর তাই আমি বিয়ের আসর ছেড়ে পালিয়ে এসেছি। চাচার কাছে থেকে, পড়ে অনেক বড় হবো আমি। নিজেকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করেই তবে বাড়ি ফিরব।”

ববি খুব মনযোগ দিয়ে লিলির কথা গুলো শুনল। লিলিকে দেখে খুব উচ্চাকাঙ্ক্ষি আর দৃঢ় মনের মনে হচ্ছে তার। তাছাড়া লিলি খুব সাহসী ও বটে। না হয় একা একটা গ্রামের মেয়ে এতো বড় ঝুঁকি নিয়ে বিয়ের আসর ছেড়ে পালিয়ে আসতে পারে না, তা ও আবার এতো রাতে পুরো শহর ঘুড়ে ঘুড়ে তার চাচার বাড়ির সন্ধান করতে পারে না। পৃথিবীতে এমন দৃষ্টিভঙ্গির মেয়ে খুব কমই আছে। যে নিজের মনে জমা সাহস টুকু সন্ঞ্চয় করে নিজেই নিজেকে উত্তমরূপে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে এতদূর আসতে পারে।

ববি মনে মনে হেসে নিজেই নিজেকে বলল,,

“এই মেয়েকে তো আমার চাই ই চাই। এই প্রথম কোনো মেয়েকে দেখে আমি থমকে গেছি। কখনো মুগ্ধ হয়েছি তো কখনো হেসেছি। পাগল পাগল হয়ে তার পিছু পিছু ছুটছি। এই ঝড়ো বৃষ্টির মধ্যে তাকে একটু স্বস্তি দেওয়ার জন্য গাঁ থেকে শার্ট খুলে ছাতা হয়ে দাঁড়িয়েছি। রাগী ভাবটা একদম কমে গেছে আমার। ইচ্ছে করে ও রাগ দেখাতে পারছি না। তার মানে কি দাঁড়ায়? সামথিং সামথিং?”

ববি খুব উৎসুক হয়ে লিলির দিকে তাকিয়ে আবার বলল,,

“আপনার চাচা আপনাকে মেনে নিবেন তো? যদি আপনাকে আবার গ্রামে পাঠিয়ে দেয়?”

“কখনো না। আমার চাচা আমাকে ঠিক আশ্রয় দিবেন। ঠিক বুঝবেন আমায়।”

এর মাঝেই ববি হঠাৎ থেমে গেলো। ঘোলাটে দৃষ্টিতে লিলির দিকে তাকিয়ে বলল,,

“লিলি। আমরা পৌঁছে গেছি। বাঁ পাশের বাড়িটাই আপনার চাচার।”

লিলি খুব হেসে একহাতে শাড়িটা ধরল আর অন্য হাতে ছোট ব্যাগটা নিয়ে দৌঁড়ে বাঁ পাশের বিশাল বাড়িরটার মেইন গেইটে এসে দাঁড়ালো। গেইটের বাঁ পাশে সাদা টাইলসের উপর কালো কালিতে লিখা “স্বপ্ন ছায়া” মন্জ্ঞিল। লিলি পিছু ফিরে নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকা ববির দিকে তাকিয়ে খুব উচ্ছ্বাসিত হয়ে বলল,,

“থ্যাংকস ববি ভাই। আপনাকে দেখেই আমার মনে হয়েছিলো আপনাকে সত্যিই বিশ্বাস করা যায়। তাই তো এই অচেনা শহরে আপনার হাত ধরে এই ঠিকানা অব্দি আসা।”

ববি শার্টটা গাঁয়ে জড়িয়ে মলিন হেসে লিলির দিকে তাকালো। ববির থেকে চোখ ফিরিয়ে লিলি মেইন গেইটে খুব জোরে জোরে টোকা মারছে আর বলছে,,

“কেউ আছো? দরজাটা খুলো প্লিজ।”

অনেক ধাক্কানোর পরে ও কেউ দরজাটা খুলছে না। লিলি গম্ভীর ভাব নিয়ে ববির দিকে তাকালো। লিলির একটু কাছে এগিয়ে এসে ববি কাঁপা কাঁপা চোখে লিলির দিকে তাকিয়ে বলল,,

“লিলি। আপনি চাইলে আজ রাতটা আমাদের বাড়িতে কাটাতে পারেন। আসলে খু্ব বৃষ্টি হচ্ছে তো, বৃষ্টির রিমঝিম আওয়াজে হয়তো বাড়ির কেউ আপনার ডাক শুনতে পারছেন না।”

লিলি মন মরা হয়ে বলল,,

“আপনার পরিবার রাগ করবে আপনার সাথে আমাকে দেখলে।”

“কেউ দেখবে না। জানতে ও পারবে না আপনি আমার সাথে ছিলেন।”

“মানে? কিভাবে?”

“পিছনের গেইট দিয়ে আমরা বাড়িতে ঢুকব। কেউ টের ই পাবে না।”

“কিন্তু আমি একা একটা মেয়ে আপনার সাথে থাকব? খুব বাজে দেখায় না?”

“আপনি রুমে থাকবেন আর আমি ব্যালকনিতে। সিম্পল। তাছাড়া আপনি আমাকে আরো একবার বিশ্বাস করে দেখতে পারেন। আশ্বস্ত করছি আমি আপনার বিশ্বাসের পূর্ণ মর্যাদা রাখব।”

লিলি কিছুক্ষন ভেবে বলল,,

“ঠিকাছে চলুন।”

ববি আবার সামনে হাঁটা ধরল। লিলি তার পিছনে পিছনে হাঁটছে। একটা বাড়ি পাড় করে ববি দুই তালা বিশিষ্ট একটা বাড়ির সামনে এসে থেমে গেলো। আচমকাই ববি লিলির হাতটা ধরে বাড়ির পিছনের দিকটায় চলে এলো। পেছনের দিকটায় ছোট একটা গেইট দেখা যাচ্ছে। ধীর পায়ে হেঁটে ববি লিলিকে নিয়ে গেইটের ভেতর ঢুকে পড়ল। আর এক ভৌ দৌঁড়ে এক তলার ডান পাশের রুমটায় দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে পড়ল। রুমে ঢুকেই ববি ভেতর থেকে দরজার খিলটা লাগিয়ে দিলো। রুমের লাইট জ্বালাতেই লিলি তাজ্জব হয়ে পুরো রুমে চোখ বুলিয়ে তাকালো। এতো বড় রুম আর এতো দামী আসবাবপএ লিলি এর আগে কখনো দেখে নি। সারা রুমে আসবাবপএ গিজগিজ করছে। ড্রেসিং টেবিলের আয়নাতে লিলির সম্পূর্ণ অবয়ব দেখা যাচ্ছে। চোখে, মুখে বিস্ময় নিয়ে লিলি ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে এসে দাঁড়ালো। মুখে হাত দিয়ে সে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে আয়নায় নিজেকে দেখছে আর মনে মনে বিড়বিড়িয়ে বলছে,,

“বাপরে! এতো বড় আয়না ও দুনিয়াতে হয়?”

ঐদিকে ববি গাঁয়ের শার্ট টা খুলে বেশ ব্যস্ত ভঙ্গিতে লিলির দিকে তাকিয়ে বলল,,

“এটা আমার রুম। ভীষণ অগোছালো আই নো। তাড়াতাড়ি করে শাড়িটা পাল্টে নিন। বেশিক্ষণ ভেজা শাড়িতে থাকলে ঠান্ডা লেগে যাবে।”

লিলি আয়না দিয়েই ববির প্রতিবিম্বের দিকে তাকিয়ে মুখটা কালো করে বলল,,

“আমি তো এখানে বাড়তি কোনো কাপড় নিয়ে আসি নি। শাড়িটা পাল্টে কি পড়ব?”

“কেনো? আমার শার্ট পড়বেন। আপনার বডির সাইজ অনুযায়ী আমার শার্ট বিশাল হবে।”

“ছিঃ। মেয়ে হয়ে আমি শার্ট পড়ব?”

“কেনো? প্রবলেম কি? আপনি তো আর শার্ট পড়ে বাইরে যাচ্ছেন না। ঘরের ভেতরেই থাকবেন।”

“আপনি তো রুমের ভেতরেই থাকবেন। আপনার সামনে আমি শার্ট পড়ে ঘুড়ব?”

#চলবে….?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here