#স্বামীর_অধিকার
#পর্ব_০৩,০৪
#writter_সোহানুর_রহমান_সোহান
পর্ব_০৩
বাসর রাতের মতো গোলাপের পাপড়িগুলোও সোহানের হাত থেকে পড়ে গেলো।হইতো এই রাতটা তার ভাগ্যে লেখা ছিলোনা।রক্তমাখা শরীর আর কাটা হাত নিয়ে তার দাড়াতেও অসুবিধা হচ্ছিলো।ছাদে উঠার চেষ্টা করছে কিন্তু সে অনেক ক্লান্ত।তবুও উঠার চেষ্টা করছে আর হোচট খেয়ে পড়ছে।কিন্তু কোনোকিছু সোহানের কাছে অসম্ভবের কিছু নেই।ছাদে উঠেই সোজা দোলনার উপর শুয়ে পড়লো।পকেট থেকে রুমাল বের করে হাত বাধার চেষ্টা করতে লাগলো কিন্তু হাতগুলোর উপর এতোটা অত্যাচার হয়েছে যে তার হাতগুলো দিয়ে কিছুই করানো গেলোনা।শেষমেষ রুমালটা হাতের উপর রেখে দিতে বাধ্য হলো।উপরে তাকিয়ে আকাশের গতিবিধি লক্ষ্য করতে লাগলো।তার ভাবনাটা একদম ভুল ছিলো হইতো নিশি তাকে চিনতে পারেনি।কিন্তু সে তো তাকে অনেক ভালোবাসে কি করে ভুলবে সে নিশিকে।সোহানের চোখদুটো ভিজে যাচ্ছে।হইতো সে কিছু একটা চিৎকার দিয়ে বলার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না।চোখের পানিগুলো টলমল করে ঝড়ছে।ভালোবাসাটা যখন অভিশাপ হয়ে দাড়ায় তখনি সেই অভাগা লোকটি টের সেই মুহূর্তগুলো কেমন।চোখদুটো লাল হয়ে যাচ্ছে।না পারছে নিজেকে মানিয়ে নিতে আর না পারছে নিজেকে আঘার করতে।পাশ থেকে স্যাভলনের কৌটা খুলে
হাতের উপর ঢেলে নিলো।হইতো সেটাই ঠিক ছিলো যখন বিয়ের ঠিক কিছুক্ষন আগে নিশি বলেছিলো,,
— সোহান আমি তোকে ভালোবাসি ঠিকই কিন্তু তুই জানিস অভি আমার সব।অভির সাথে আমার সৃতি অনেক পুরনো ভাবে জড়িয়ে রয়েছে।আমাদের ৩ বছরের রিলেশনশিপটা তুই কিন্তু এভাবে নষ্ট করতে পারিস না।
কিন্তু সে নিশিকে তবুও জোর করে বিয়ে করেছে।শেষবারেও বিয়ের মন্চে বসে যখন কাদোকাদো মুখে নিশি বলেছিলো,,
— সোহান এখনো সময় আছে তুই বিয়েটা বন্ধ করে দে।(কাদো কাদো হয়ে)
তবুও সে তখনো নিশির কথাগুলো শোনেনি।নাকি এর পিছনে কোনো একটা রহস্য রয়েছে?নাকি সোহান নিশিকে নিজের করার জন্য জোরবশত বিয়ে করেছে।
.
হাতটা কোনরকমে পেচিয়ে ছাদের একপাশে গিয়ে নিশ্চুপ হয়ে রয়েছে।মুখটা একদম শুকিয়ে গিয়েছে।চোখ থেকে তখনো পানি ঝড়ছে।নিরবে গুনগুন করে কেদে যাচ্ছে সোহান।শীতের তাপে থরথর করে কেপেই যাচ্ছে।দুর থেকে ভেসে কিছু একটার আওয়াজ,,
আমি এমন একটা তুমি চাই,.
এমন একটা তুমি চাই,,
যে তুমিতে তুমি ছাড়া অন্য কেহ নাই,,
সুরটার সাথে সাথে সোহানের ভাবনা আর ভালোবাসাটা বাতাসে মিলিয়ে যেতে থাকলো।রাতটা গভির হতে থাকলো আর ছায়াগুলো হাতছানি দিতে থাকলো।রাতটা কাটার সাথে সাথেই আবার শুরু হবে সোহানের সাথে নতুন কিছু কাহীনি।
কিন্তু এখনো আমরা এদের পরিচয় সম্পর্কে কিছুই জানতে পারিনি।চলুন জেনে আসি এদের পরিচয়।
নিশি নামটা যেমন ফাকা ফাকা ঠিক মেয়েটাও তেমনি একা।দেখতে একদম পরির মতো।যেমন মায়াবী ঠিক ততোতাই আবেগী।যার কারনে হইতো সোহানের এমন অবস্থা।
আর অভি হলো এই গল্পের সব।যার পুরোটাই নিশির সাথে জড়িয়ে রয়েছে আর সোহান হলো অভির বন্ধু আর সেখান থেকে এদের তিনজনের বন্ধুত্ব যদিও এখানে অনেক রহস্য যেটা পরে দেখতে পাওয়া যাবে।সোহান হলো এই শহরের সবচেয়ে গন্যমান্য পরিবারের ছেলে।দেখতে পুরোই সুন্দর কিন্তু মেজাজটা শুধু নম্র নয় কারন বড় পরিবারের ছেলেরা কখনো ভালো হয়না।
.
রাতটা ধীরে ধীরে কেটে গিয়ে সকালে পরিনত হলো।অভিশাপের রাতটা কাটতেই সকালে নিশির চিৎকারে পুরো বাড়িতে রহরহ পরিবেশ সৃষ্টি হলো।কিছুক্ষনের ভিতরই পুরো বাড়ির সবাই ছাদে উপস্থিত হয়ে গেলো।কেউ বলছে তোমরা দাড়িয়ে আছো কেন তারাতারি ওকে উঠাও।আবার কেঊ বলছে তারাতারি এম্বুলেস্ন ডাকো।নিলা এসে দেখে সোহান ছাদের এককোনে পড়ে রয়েছে আর তার পাশেই বসে আছে নিশি।নিশি সোহানের কাছে বসে কাদছে।ভাইয়ের কাছে গিয়ে নিলা বসতেই নিশি অভিনয়ের সুরে বলতে লাগলো,,
— কাল সারারাত বাসায় ফিরেনি।রাতে অনেকবার ফোন দিয়েছি কিন্তু আমার ফোন উঠাইনি।
সারারাত অনেক চেষ্টা করেও কোনো যোগাযোগ করতে পারিনি।সকালে যখন ছাদে এলাম তখনি দেখি ছাদে এভাবে পড়ে রয়েছে।
সবাই সোহানকে তাড়াতাড়ি করে হসপিতালের দিকে নিয়ে যেতে থাকলো।গাড়িতে সোহানকে যখন নিশি উঠিয়ে দিলো ঠিক তখনি মনের মধ্যে একটা হাসি দিয়ে সোহানের হাতটা চেপে ধরে মনে মনে বলতে লাগলো,,
— দোয়া করি তুই যেন পঙ্গু হয়ে বেচে ফিরিস।নাহলে তোর সাথে প্রতিশোধের খেলাটা কখন জমবে?
সবাই যখন চিন্তাই আহামরি অবস্থা ঠিক তখনি নিশি তার রুমে চলে গেলো।বুঝতে বাকি রইলো না যে,কালকে রাতে তার কথাতেই সোহানের উপর আক্রমন করা হয়েছিলো।রুমে গিয়ে ছুরিটা ধুয়ে রেখে দিলো।লাল শাড়িটা সবার আড়ালে পুড়িয়ে দিলো।ফ্রেশ হয়ে এসে তার মনে পড়লো সে বাসা থেকে শাড়ি আনতে ভুলে গিয়েছে।তাহলে এখন কি পড়বো?এটা ভাবতেই সোহানের আলমারির দিকে নজর যেতেই দৌড়ে গিয়ে আলমারিটা খুলে ফেললো।কিন্তু সেখানে তেমন কিছুই না পেয়ে একটু নিচে নজর যেতেই খেয়াল হলো সেখানে একটা নীল রঙের শাড়ি রয়েছে।শাড়িটা কিভাবে এলো এটা না ভেবেই শাড়িটা পড়ে আয়নার সামনে বসে পড়লো।নিশিকে বেশ শান্ত দেখাচ্ছে।সোহানের প্রতি তার একটু কেমন যেন লাগছিলো।রাতে ওমন আচরন করাটা তার ঠিক হয়নি।হাজার হোক এখন সেতো তার বর।
কিন্তু নিশি ঠিক করে নিয়েছে, বর হিসেবে সে কখনোই সোহানকে মেনে নিবে না।ভাবনার ভিতর ডুবে থাকতেই হটাৎ পিছন থেকে কে যেন তাকে ভাবী বলে ডেকে উঠলো।পিছনে তাকিয়ে দেখে নিলা এসেছে।সাথে সাথেই আবার কান্নার অভিনয়টা শুরু করে দিলো।নিলা পাশে এসে শান্তনা দিয়ে।দুজনেই হসপিতালের উদ্দেশ্য রওনা দিয়ে দিলো।কিন্তু নিশিকে হসপিতালে যাওয়ার জন্য খুব আগ্রহী মনে হচ্ছে নাকি সেখানেও কিছু একটা করতে চলেছে সে?
গাড়ি থেকে নেমে সোজা হসপিতালের ভিতর চলে গেলো দুজনেই।দুজনেই সোজা সোহানের কেবিনের দিকে যেতে লাগলো।নিশি ভাবছে যদি সোহান তার প্রতিশোধ নিতে চাই তাহলে কি হবে?রাতে নেশার ঘরে সে একটু বেশীই খারাপ আচরন করে ফেলেছি।জানিনা সোহানের সামনে গেলে ও আমাকে কি বলবে?
খুব সাবধানে রুমের ভিতর ঢুকে যেতেই খেয়াল করলো সোহান হেলান দিয়ে বসে রয়েছে।হাত ব্যান্ডেস আর পাটা ব্যান্ডেজ করা রয়েছে।সোহানের সামনে যেতেই চোখ নিচু করে নিলো।
এতক্ষন সোহান যার অপেক্ষা করছিলো সে সামনে হাজির দেখেই এক পলক তাকিয়ে নিলো।রাতে তো একটি বারের মতোও দেখতে পাইনি।তাকিয়ে দেখে তার নীল শাড়িটাই পড়ে এসেছে।দেখতে একদম তার মায়াবী রাজকন্যার মতোন হয়েছে।নিশি যতই তার দিকে এগোচ্ছিলো সে ঠিক ততোই তার দিকে মুগ্ধ হয়ে
তাকাতে থাকলো।রাতের সবকিছু এক নিমিষেই তার মন থেকে মুছে গেলো।কিন্তু নিশি কি এখানে তার জন্যই এসেছে নাকি এই হসপিতালে অভি সাথে দেখা করতে এসেছে?তাহলে কি এই হসপিতালেই অভি,,,
.
চলবে,,
#স্বামীর_অধিকার
.
#পর্ব_০৪
.
#writter_সোহানুর_রহমান_সোহান
.
কিন্তু নিশি কি এইখানে তার জন্যই এসেছে নাকি সে হসপিতালে অভির সাথে দেখা করতে এসেছে?
হটাৎ নিশির মা নিশিকে ডেকে সোহানের পাশে বসিয়ে দিলো।বসার ইচ্ছা না থাকতেও মা বাবাকে পাশে দেখে বসে পড়লো।সোহানের পাশে বসলেই নিশির ভিতরটা কেমন যেন করে।এটা শুধু এক্ষুনি নয় বরং অনেক আগে থেকেই সে সোহানের পাশে বসলেই নিজেকে কোথাই যেন হারিয়ে নেই।সবাই পুরো ঘটনা জানতে চাইলে নিশি খুব ভয় পেয়ে যাই।কিন্তু সোহান সবকিছু এড়িয়ে যেয়ে,,
— রাতে অফিসে দ্রুত একটা কাজের জন্য যেতে হয়।আসার পথে হটাৎ একটা গাড়ির সাথে ধাক্কা লাগতেই এমন অবস্থা হয়।
— সোহান এই দিনেও কি তোমাকে কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হবে?
— ততোটা আঘাত লাগেনি দু এক দিনের ভিতর ঠিক হয়ে যাবো।
কথাটা শুনে নিশি কপাল থেকে ঘামটা শাড়ির আচল দিয়ে মুছে নিলো।রুমে ঢুকেই ডাক্তার বললো,,
— আপনারা স্যারকে আজকেই নিয়ে যেতে পারেন।তবে আজকে পুরোদিন রেষ্ট নিলে তিনি একদম সুস্থ হয়ে যাবে।কালকে নিয়ে গেলে ভালো হবে।
সবাই ডাক্তারের কথা শুনে ভরসা পেলো।ডাক্তার সবাইকে কিছুক্ষনে জন্য বাইরে পাঠিয়ে দিলো।ডাক্তার শুভ সাহেব সোহানের পাশে গিয়ে বসলো,,
— সোহান আমি কিন্তু বুঝতে পেরেছি এসবের পিছনে তোর বউ এর হাত রয়েছে, তাহলে মিথ্যা কেন বললি?
কথাটা বলতেই ওদিকে নিশি সুযোগ পেয়েই চারদিকে রুমগুলো ভালো করে খুজতে লাগলো।আর এদিকে,,
— শুভ এতোদিন ধরে যাকে ভালোবেসেছি তাকে কি একটা ভুলের জন্য শাস্তি দিতে হবে?
— তাহলে দেরী কেন করছিছ?নিশিকে সব ঘটনা খুলে বললেই তো সবকিছু মিটে যায়।
— ভালোবাসার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে বলে এমন হাল করেছে তাহলে ভাব মেয়েটা কতোটা আবেগী?তবে একসময় বুঝতে পারবে।
— কিন্তু অভি এই হ..?
— সেটা নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না।তুই শুধু ওই লোকগুলোর বর্তমান খবরটা জানা।
— শহরে নতুন এসেছে।তাই একটু বাড়াবাড়ি করতেছে।তোর নাম শুনেছে কিন্তু কখনো দেখেনি বিধাই বুঝতে পারেনি।
— ঠিক আছে এখন তুই এখান থেকে যা।আমাকে একা থাকতে দে।
— চশমাটা অনেক সুন্দরভাবে মানিয়ে নিয়েছিছ।
কথাটা শেষ হতেই দুজনের মুখে একটা অদ্ভুত হাসি ফুটে উঠলো।শুভ রুম থেকে বের হয়ে গেলো অন্যদিকে নিশি সব কেবিনগুলো ভালো করে দেখতে লাগলো।কিন্তু কোনো রুমেই সে দেখতে না পেয়ে সরাসরি অপারেশন রুমে চলে এলো।দৌড়ে অপারেশন রুমে যেতেই থমকে দাড়ালো সে,,
মনে হচ্ছিলো তার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে।
তিল তিল পায়ে সে বেডের দিকে এগিয়ে যেতে থাকলো।কেউ একজন বেডের উপর শুয়ে রয়েছে।মুখে অস্কিজেন মাস্ক লাগানো।মুখে পোকা লেগে গিয়েছে।পা ব্যান্ডেস করা রয়েছে।পুরো শরীরে ব্যান্ডেস রয়েছে।দেখে মনে হচ্ছে এই সেই অভি।পাশ থেকে একটা ছেলে বের হয়ে গেলো এই সেই ছেলে যে বাসর রাতে সোহানকে ধাক্কা মেরে দৌড়ে এসেছিলো।নিশির চোখে পানি টলমল করছে।হাউমাউ করে কেদে ফেললো নিশি।জীবনে কখনো কষ্ট পেতে হয়নি তাকে।কিন্তু আজকের কষ্টটা তার একদম সহ্য হচ্ছে না।কাছে গিয়ে অভির হাত ধরে কাদতে থাকলো।অভি নিশির উপস্থিতি টের পেয়ে জেগে উঠলো।হাতটা ধীরে ধীরে নিশির মাথাই রাখতে নিশি অভির দিকে তাকালো।নিশিকে কাদতে দেখে চুপ করে রইলো।তার কথা বলার মতো পরিস্থিতি নেই।হাত দিয়ে ইশারা করতেই নিশি কান্না থামিয়ে ফেললো।ইশারাই অভি জানতে চাইলো যে, তুমি এখানে কিভাবে এলে আর এভাবে কাদছো কেন?অভির কথা শুনে ওখানে হতাশ হয়ে বসে পড়লো।
— অভি আমাদের সব ইচ্ছা ভেঙে গিয়েছে।ওই ওই সোহান আমাকে (ফোফাতে ফোফাতে)
— থেমে গেলে কেন?সোহান তোমাকে কি করেছে?(ইশারাই)
— অভি তুমি না থাকাই সোহান আমাকে জোর করে বিয়ে করে নিয়েছে।অনেক বারন করার পরেও একটুও আমার কথা শুনেনাই।(ফোপাতে ফোপাতে)
বিয়ের কথাটা শুনে অভির মুখে হাসির রেখা ফুটে উঠলো।হইতো অভি এটাই চেয়েছিলো।দীর্ঘ একটা নিষ্শাষ ছেড়ে দিয়ে উপরের দিকে তাকিয়ে রইলো সে।কিন্তু পরক্ষনেই আবার নিশি বলে উঠলো,,
— কিন্তু আমি সোহানকে ছেড়ে দেইনি আর ছেড়ে দেবোনা।অভি জানো আমি সোহানকে অনেক মেরেছি আর ধীরে ধীরে আরো কষ্ট দিবো।(রাগি লুক নিয়ে)
নিশির কথাই অভি থমকে দাড়ালো।সোহানের গায়ে হাত দিয়েছে কথাটা শুনেই অভি রেগে গেলে।তার বন্ধুর গায়ে হাত দিয়েছে,,
— তুমি সোহানকে কেন কষ্ট দিয়েছো?
— ও আমাকে তোমার থেকে কেড়ে নিয়েছে সেজন্য।
— তাহলে গতকাল রাতে তোমাদের বাসর হয়নি?(ইশারাই)
— নাহ সেই রাতে আমি ওকে লোক দিয়ে অনেক পিটিয়েছি।আজ আমি তোমার প্রতিশোধ নিতে পেরে অনেক খুশি।জানো ও এই হসপিতালেই ভর্তি রয়েছে।
কথাটা শুনেই অভি নিশির হাত থেকে তার হাতটা সরিয়ে নিলো।নিশি খেয়াল করলো অভি কেমন যেন নড়াচড়া করতে লাগলো।অভি মুখ থেকে মাস্ক সরাতেই,,
—অভি কি করছো?অসুস্থ হয়ে যাবেতো।
—তুমি শুধু সোহানকেই না বরং আমাকেও কষ্ট দিয়েছো।তুমি ভুলে যাচ্ছো সোহান তোমার স্বামি।(নিষ্ষাস জোড়ে নিয়ে)
—অভি তুমি মুখে মাস্ক পড়ে নাও নাহলে মারা যাবেতো।(কাছে গিয়ে)
—আমার কাছে আসার চেষ্টা করো না।তুমি একটা প্রতারক আমি তোমার মুখ দেখতে চাইনা।
—অভি তুমি এমন করছো কেন?
—তুমি সোহানকে তোমার বরের মর্যাদা দিবে আর তোমার সবকিছু ওর হাতেই অর্পর্ন করবে।ভেবে নাও এটাই আমার শেষ ইচ্ছা।(বুকে হাত দিয়ে)
নিশি কিছু বলার আগেই অভি নিশিকে রুম থেকে তাড়িয়ে দিলো।ডাক্তারের জন্য সে আর ভিতরে যেতে পারলো না।তবে সে এটুকু জেনেছে অভির হত্যার পিছনে সোহানের কোনো হাত নেই।কিন্তু সে কিভাবে তার সবকিছু সোহানকে বিলিয়ে দিবে?আর কি মুখে সে সোহানের সামনে দাড়াবে।সে অভিকে নাহয় কিছু করেনি কিন্তু আমাকে তো জোর করে বিয়ে করেছে।
কিন্তু অভি কেন আমাকে তাড়িয়ে দিলো?কেনই বা সে তার ভালোবাসাকে নিজের হাতে অন্যকে দিয়ে দিবে?এটা ভাবতেই নিশি অবাক হয়ে যাচ্ছে।
চুপিচুপি সোহানের রুমে এসে দেখে পাশে শুধু নার্স রয়েছে।এখন সে না পারছে সোহানের সামনে থেকে যেতে আর না পারছে তার কাছে বসতে।হটাৎ নার্স,,
—মেডাম আপনি দাড়িয়ে আছেন কেন?ভিতরে আসুন।
—না মানে হ্যা আসছি।(ভয়ে ভয়ে)
পাশে বসেই তার ভিতরে কেমন যেন অস্থিরতা বাড়তে থাকলো।খেয়াল করলো সোহান ঘুমিয়ে রয়েছে।নার্স এর থেকে জানতে পারলো তাকে ঘূমের ওষুধ দেওয়া হয়েছে।তখন নিশি একটু সস্থির নিষ্শাষ ফেললো।
রাতে সবাই সিদ্ধান্ত নিলো নিশিকে সোহানের রুমে রাখা হবে।কথাটা শুনতেই নিশির ভিতরটা কেমন যেন করে উঠলো।যদি একা পেয়ে সোহান তাকে কিছু করে ফেলে?কিন্তু শেষমেষ তাকেই রেখে যাওয়া হলো।রাতে তাদের রুমে একটা নার্স আর তাকে রেখে যাওয়া হলো।নিশি সোহানের পাশে বসে সোহানকে ভালো করে দেখছিলো।কিভাবে সে নিজের মুখে অভির কথাটা উল্লেখ করবে এসব ভাবতে ভাবতে সে সোহানের হাতের উপর ঘুমিয়ে পড়লো।রাতটা ধীরে ধীরে কাটতে থাকলো।মাঝরাত চারদিকে সবকিছু নিশ্চুপ হয়ে রয়েছে।হটাৎ নিশির মনে হলো কে যেন তাকে ধরে রেখেছে।চোখ খুলতেই দেখে সোহান তাকে জোড় করে বেডের উপর শুইয়ে দিয়েই তার শরীরের উপর উঠেই জড়িয়ে ধরেছে।নিশি ভয় পেয়ে চিৎকার করতে লাগলো কিন্তু কেউ কাছে এগিয়ে এলো এলো।নিশির শরির থেকে শাড়িটা খুলে ছুড়ে ফেলে দিলো সোহান।কোমরটা চেপে ধরেই ঠোটটা কামড়ে ধরলো নিশির।শক্ত করে জড়িয়ে ধরেই,,
চলবে