#শুধু_তুমি_চাও_যদি 🥀
#পর্ব – ০৬
#লেখনীতে – Aloñe Asha [ছদ্ম নাম]
#Kazi_Meherin_Nesa
আজ আদি নিজের টিমের সাথে মেডিকেল ক্যাম্পে এসেছে, শহর থেকে অনেকটা দূরে একটা গ্রামে..যথারীতি দিয়াও এসেছে ওর সঙ্গে..এসেই সবাই নিজেদের কাজে ব্যস্ত হয়ে গেছিলো, প্রথমদিনই অনেক মানুষজন এসেছে, আগেই মাইকিং করা হয়েছিল কিনা গ্রামে..বিনা পয়সায় চিকিৎসা পাবার আশায় তাই দুর থেকে বাচ্চা বুড়ো সহ অনেকেই ছুটে এসেছেন..দিয়াও আর আদিকে বিরক্ত করেনি, নিজে নিজেই আশপাশ দিয়ে একটু ঘুরাঘুরি করেছে..রাতে থাকার জন্যে একটা বড় বাড়ি ভাড়া করেছে ওরা দুদিনের জন্য..সেখানেই থাকবে সবাই, একজন মহিলাকে ঠিক করা হয়েছে উনি রান্না করে সময়মতো খাবার দিয়ে যাবেন ওদের..সারাদিনের ব্যস্ততা শেষে সবে একটু ফুরসৎ মিললো সবার, বেশ ক্লান্ত সবাই.. ওখানে পাশেই একটা মসজিদ আছে, তো ছেলেরা গিয়ে মাগরিবের নামাজ পড়ে নেয় সেখানে..নামাজ আদায় শেষে ফিরে এসে আদি দেখে দিয়া রুমে নেই, কোথায় গেলো মেয়েটা?আবার কোথাও ঘুরতে চলে গেলো না তো? ততক্ষণে মায়ের ফোন ও চলে এসেছে, বৌমার সাথে কথা বলতে চাইছিলেন কিন্তু ম্যাডাম তো ঘরে নেই তাই আদি নিজেই কথা বলে ফোন রেখে দিলো.. জ্যাকেটটা গায়ে জড়িয়ে নেয় আদি, শহরে কিছুটা সহ্য করা গেলেও গ্রামের হাড় কাপানো ঠান্ডা সহ্য করা কিছুটা কষ্টের..জ্যাকেট পড়ে আদি বাইরে আসে দিয়াকে খুঁজতে.. একটু এগোতেই দেখে দিয়া একটু একটু করে হেঁটে আসছে..
দিয়া — তুমি এলে কখন?
আদিত্য — অনেকক্ষণ আগেই এসেছি কিন্তু তুমি কোথায় ছিলে?
দিয়া — এই একটু পাশের ঘরগুলোতে ঘুরে এলাম.. ওই তোমার টিমমেটদের সাথে কথা বলছিলাম, পরিচিত হতে গেছিলাম আর কি
আদিত্য — তোমার হঠাৎ ওদের সাথে পরিচিত হবার কি দরকার আছে বুঝলাম না (ভ্রু কুচকে)
দিয়া কিছুটা সন্দেহের সুরে বলে..
দিয়া — অবশ্যই দরকার আছে, খোঁজ নিতে গেছিলাম হসপিটালে কি কি করো তুমি, কে কে তোমাকে লাইন মারে এইসব..
আদিত্য — এই ওরা তোমাকে এইসব বলেছে নাকি?
আদি কয়েক মুহূর্তের জন্য কিছুটা অবাক হয়ে যায়, আবার দিয়াকে কেউ কিছু উল্টোপাল্টা বলে দেয়নি তো ওর নামে? ছোটো ছোটো চোখ করে প্রশ্নোত্তক দৃষ্টিতে দিয়াকে দেখছিল আদি, ওর এই চাউনি দেখে হেসে দেয় দিয়া..
দিয়া — এতো সিরিয়াস হতে হবে না, কেউ তোমার বদনাম করেনি.. চিন্তা নেই, তোমার ব্যাপারে সব পজিটিভ কথাই শুনলাম..ভালো লাগলো শুনে যে কোনো মেয়ের চক্কর নেই তোমার
দিয়া আদির সামনে থেকে যেতে যাচ্ছিলো তখন আদি আবার দু হাত ভাঁজ করে দাড়িয়ে যায় দিয়ার সামনে..
আদিত্য — তুমি সন্দেহ করো আমাকে?
কিঞ্চিৎ হাসে দিয়া, আদির কৌতূহলী মনোভাব দেখে ভালো লাগে ওর..এই কৌতূহলী মনোভাবের বিষয়টার উপস্থিতি আগে না থাকলেও এখন আছে..দিয়ার মনে ছোট্ট একটা আশার সঞ্চার হয়, তার মানে কি আদিত্যর মনে পরিবর্তন আসছে?
দিয়া — সন্দেহ না করার কোনো কারণ তো দেখছি না, তুমি তো আমাকে কিছু বলো না তোমার প্রফেশনাল লাইফের ব্যাপারে তাই নিজেরই খোঁজ নিতে হয়..কেনো ভয় পেলে নাকি?
আদি বেশ কনফিডেন্স নিয়ে বললো..
আদিত্য — ভয় পাবার কিছুই নেই কারণ আমার কোনো ব্যাড রেকর্ড নেই!
দিয়া — থাকলেও বা, তুমি তো আর আমাকে বলতে যাবে না..ছেলেরা যেকোনো বিষয় লুকাতে ভালোবাসে
আদিত্য — আমাকে সেরকম মনে হয় তোমার?
দিয়া — আমার তো অনেককিছুই মনে হয়, এই ধরো আজকেই আমি দেখেছি তোমার মেয়ে রোগীদের কতজন তোমার দিকে দেখছিল, নজর দিচ্ছিল তোমার ওপর তো এরকম হসপিটালে তো হতেই পারে!
দিয়ার কথায় হাসে আদি..
আদিত্য — মেয়েটা আমার দিকে দেখছিল সেটা দেখলে? আমি ওকে দেখছিলাম কিনা সেটা দেখলে না?
দিয়া গালে আঙ্গুল দিয়ে চিন্তা করার ভাব দেখায়..
আদিত্য — এতো ভাবার কি আছে? দেখেছো নাকি আমাকে কারো দিকে দেখতে?
দিয়া — নাহ, সেটা তো দেখিনি..! তবে তোমার দিকে নজর দিচ্ছিল সেটা দেখেছি, নেহাত তোমার পেসেন্ট বলে, নাহলে আচ্ছা করে বুঝিয়ে দিতাম
আদিত্য — কি বুঝিয়ে দিতে শুনি?
আদির কৌতূহল বেড়েই চলেছে বুঝে দিয়া দুষ্টু একটা হাসি দেয়..
দিয়া — আমি কি করবো সেটা জানার জন্যে তুমি এত ব্যাকুল হচ্ছ কেনো শুনি? প্রেমে টেমে পড়লে নাকি আবার?
দিয়ার প্রশ্নের কি উত্তর দেবে আদি এবার? নিজেই যেনো নিজের কৌতূহলের জালে ফেঁসে গেলো..সঙ্গে সঙ্গে দেরি না করে দিয়ার প্রেমের প্রশ্নটা নাকচ করে বলে উঠলো
আদিত্য — ফালতু কথা বলো না তো, তোমার মধ্যে প্রেমে পড়ার মতো কোনো ব্যাপার নেই.. গট ইট? আমি তো জাস্ট এমনি জিজ্ঞাসা করছি
দিয়া — সেটা সময় হলেই দেখতে পাবে, যদি কখনো সুযোগ আসে আসে তাহলে হাতেনাতে দেখিয়ে দেবো
আদিত্য — হ্যা, জানা আছে কি করবে.. মেয়েরা ঝগড়া ছাড়া আর কিই বা করতে পারে..!
দিয়া আদির কথার উত্তর দিতে যাচ্ছিল তার আগেই ডাক্তার সিমি আর পলাশ চলে আসে..
সিমি — আরে ম্যাডাম আপনি এখানেই আছেন..! আপনাকেই খুঁজছিলাম, আসলে আমরা ভাবছিলাম আজকে একটু গল্পগুজব করা যাক নাকি?
দিয়া — আইডিয়া মন্দ না, তবে আমার হ্যা বলাটা সম্পূর্ন আদিত্যর ওপর নির্ভর করছে..অবশ্য ও এসব পছন্দ করে না
আদিত্য — আমি পছন্দ করি না বলে তোমাকে তো বাধা দেইনি, করো তোমরা যা খুশি
পলাশ — না না, আমরা আগেই কিছু করবো না, আপনি হলেন আমাদের সিনিয়র তাই আপনার মতামত জানাটা আমাদের দরকার
আদিত্য — আমি এইসব ব্যাপারে কিছুই বলবো না, আপনারা নিজেদের মতো করে এনজয় করুন, তবে হ্যা একটা কথা মাথায় রাখবেন, আজকের তুলনায় কালকে কিন্তু ডাবল মানুষ হবে, আর আমি চাই সবাই তাদের সমস্যার সঠিক সমাধান পাক
সিমি — অবশ্যই, আমরা পুরো চেষ্টা করবো.. তবে আপনি আপাতত সেসব চিন্তা ভুলে যান..কালকের দিনের ব্যাপার কাল দেখা যাবে
দিয়া — একদম..! তাছাড়া আমি আজকে সারাদিন একা একা ছিলাম, ভালো লাগছিলো না কিছু..সবাই বসে একটু গল্প করি চলুন
সিমি — আচ্ছা, আমরা তাহলে এই বাইরেই আছি, আপনারাও চলে আসুন
পলাশ — আচ্ছা আমি তাহলে একটু ক্রিসপি কিছু আইটেমের বন্দোবস্ত করি? ম্যাডাম আপনার চলবে তো?
দিয়া — জমে যাবে একদম..! আপনি ব্যবস্থা করুন আর হ্যা আজকে খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে কোনো কম্প্রমাইস করার দরকার নেই
আদিত্য — এসব ভাজাপোড়া খাওয়া ভালো না এটা জেনেও যদি খেতে চাও আমার আর বলার নেই কিছু
পলাশ — একদিনের তো ব্যাপার স্যার, তারপর তো আবার সেই নিয়ম কানুন মেনেই খাওয়া দাওয়া করতে হবে..! যাই হোক আমরা নিয়ে আসছি, আপনারা যান
সিমি আর পলাশ কিছু তেলেভাজার ব্যবস্থা করতে চলে আসে, আদিও এই ফাঁকে চলে আসতে যাচ্ছিল তখন দিয়া খপ করে ওর হাত ধরে ফেলে..
দিয়া — আরে আরে, তুমি কোথায় চললে?
আদিত্য — রুমে যাচ্ছি আমি, তুমি যাও ওদের সাথে গল্প করো..আমার মুড নেই একদম
দিয়া — আদিত্য প্লিজ!
আদিত্য — শোনো মা ফোন করেছিলো, তোমার সাথে কথা বলতে চাইছিল কিন্তু তুমি রুমে ছিলে না
দিয়া — আচ্ছা আন্টির সাথে কথা বলে নেবো আমি এখুনি কিন্তু তুমি সবসময় এরকম করো না..কাজের বাইরেও তোমার উচিত সবাইকে সময় দেয়া
আদিত্য — দিয়া আমরা এখানে কাজের জন্যে এসেছি, আড্ডা দিতে বা খাওয়া দাওয়া করতে নয়
দিয়া — হ্যা তো? এখন তো আর কাজ করছো না, এমনি বসে আছো..এই সময়টা কাজে লাগাতে হবে তো..তাছাড়া একটু গল্প করলে নিজের সাথে সাথে ওদেরও ভালো লাগবে, এসো..
আদিত্য — দিয়া শোনো..
আদির কথা পাত্তা দেয়নি দিয়া, টেনে ওকে নিয়ে আসে..আদিও আর বাধা দেয়নি ওকে, কারণ মেয়েটা যখন একটু অধিকার খাটিয়ে কথা বলে ভালোই লাগে ওর..ওরা যে বাড়িতে থাকছে তার সামনে ছোট্ট একটা পুকুর আছে, একটা লম্বা বেঞ্চ ও পাতা আছে.. দিয়া আদিকে নিয়ে সেখানেই বসতে যাচ্ছিলো, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ধ্রুব সেখানে আগে থেকেই বসেছিলো..আসলে ছেলেটা আজকে একরকম পালিয়ে বেড়াচ্ছিল সারাদিন, দিয়ার মুখোমুখি হতে চাইছিল না কিন্তু আর পালাতে পারলো না..দিয়া ওকে দেখেই চিনে ফেলেছে..
দিয়া — এক্সকিউজ মি..
দিয়ার গলার আওয়াজ চিনতে খুব একটা অসুবিধা হয়নি ধ্রুবের, অবাক হয়ে পেছন ফিরে তাকিয়ে উঠে দাড়ায় ও..মেয়েটাকে আজ বলতে গেলে অনেকদিন পরেই দেখছে তবুও সেই প্রথমদিনের মতোই তবুও যেনো অসাধারণ লাগছে ওর কাছে কিন্তু আফোসস এই মেয়েটাকে মনে মনে চেয়েও পেলো না ও..সেদিন হসপিটালে বলা কথার পর থেকে আদির ইচ্ছেই ছিলো না ধ্রুব দিয়ার মুখোমুখি আসুক কিন্তু আজকে দিয়া নিজেও ধ্রুবকে ডাকলো বিধায় আদি কিছু বলতেই পারছে না..
দিয়া — আপনি তো মিস্টার ধ্রুব তাইনা? আসলে সকালেই দেখেছিলাম কিন্তু আপনি রোগী দেখতে ব্যস্ত ছিলেন তাই আর ডিস্টার্ব করিনি
চমকে উঠে আদি, দিয়া ধ্রুবকে চেনে?.. ধ্রুব শান্ত দৃষ্টিতে দিয়ার দিকে দেখছে, মনটা মুহুর্তের মধ্যেই খারাপ হয়ে আসছে ওর..একসময় এই মেয়েটাকে পছন্দ করেছিলো নিজের জন্যে আর আজ সে চোখের সামনে নিজের বন্ধুর সামনে দাঁড়িয়ে আছে..বিষয়টা মেনে নেওয়া সত্যি কষ্টের..কিন্তু আদি বিষয়টা বুঝতে পারছে না যে দিয়া কিভাবে ধ্রুবকে চেনে?
আদিত্য — ডু ইউ নো হিম দিয়া?
দিয়া — ইয়েস, বলতে গেলে অনেকটা ভালোভাবেই চিনি..আগেও আমাদের দেখা হয়েছে, ধ্রুব..! আপনি আমাকে চিনেছেন তো? (হেসে)
এবার ধ্রুব মুচকি হেসে নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলো, বারবার দিয়ার দিক থেকে চোখ সরিয়ে রাখার ব্যর্থ চেষ্টা করছিল, কিন্তু কিছুতেই দিয়ার দিকে দেখার থেকে থেকে নিজেকে আটকাতে পারছিল না..কি করবে? মেয়েটার প্রতি তো গভীর ভালোলাগা আছে ওর মনে..ধ্রুবের সেই গভির অনুভূতিগুলো ওর চোখে ভেসে উঠছিল যেটা দিয়া না টের পেলেও আদি ঠিকই লক্ষ্য করেছে..একটা ছেলেই তো একটা ছেলের চোখ ভালো পড়তে পারে সেই হিসেবে আদিরও ধ্রুবের চোখে ভেসে ওঠা অজানা অনুভূতির ছাপ বুঝতে খুব একটা কষ্ট হয়নি, ভালো লাগলো না আদির বিষয়টা, দিয়াকে এইভাবে কেনো দেখছে ধ্রুব?..!!
ধ্রুব — অবশ্যই..! তোমাকে আমি চিনবো না এটা হতে পারেনা
দিয়া — অনেকদিন পর দেখা হলো আপনার সাথে..আচ্ছা আপনাকে তো আমাদের বাসার ঠিকানা দিয়েছিলাম, তারপরও এলেন না কেনো?
ধ্রুব — সময় সুযোগ হয়ে ওঠেনি তাই আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি, আর মনে হয় না এখন গিয়ে কোনো লাভ হবে
হতাশ কণ্ঠে কথাটা বলে ধ্রুব, কিন্তু এই কথার মানে বুঝলো না দিয়া..আর ওদের দুজনের থেকে আরো বেশি কনফিউজড আদি যে এখন অব্দি এই রহস্য উদঘাটন করতে পারলো না ধ্রুব আর দিয়া একে অপরকে আগে থেকেই চেনে এটা কিভাবে সম্ভব?
দিয়া — আপনি আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসবেন এতে আবার লাভ লোকসানের কি আছে বুঝলাম না..!!
ধ্রুব — একটা কথা কি জানেন তো মিস..ওহ সরি মিসেস দিয়া..কিছু ব্যাপার থাকে যেগুলো না বুঝলে ক্ষতি নেই, আমার কথাগুলো তেমনি ধরে নিন
দিয়া — আপনি দেখছি একটুও বদলাননি, সেই আগের মতই রহস্যময় কথা বলেন যার আপাদমস্তক কিছুই আমার এই বোকা মাথায় ঢোকে না
ধ্রুব — তুমিও আগের মতোই আছো..! একদম সিম্পল
ধ্রুব আর দিয়া একসাথেই হেসে ওঠে কিন্তু এদিকে দাড়িয়ে নিরব দর্শকের মতো সবটা দেখেও চুপ হয়ে দাড়িয়ে আছে আদি, একটু একটু করে কৌতূহল তো বেড়ে যাচ্ছে ওর..আর না পেরে ও আবার জোর গলায় জিজ্ঞাসা করে..
আদিত্য — তুমি ওকে কিভাবে চেনো?
দিয়া — তোমার আবার কি হলো? এটা জানার জন্যে এত উদগ্রীব হয়ে উঠলে কেনো হঠাৎ? (ভ্রু কুচকে)
তখনই ধ্রুব বলে ওঠে…
ধ্রুব — একই শহরের মধ্যে যখন আছি তখন দেখা হওয়াটা তো অস্বাভাবিক কিছু না..এমনিতেও ও আমাকে কিভাবে চেনে সেটা তোর জানাটা আমার মনে হয় না গুরুত্বপূর্ন
চোখ গরম করে ধ্রুবের দিকে তাকায় আদি, বিষয়টা এতো সহজভাবে নিতে পারছে না ও..
দিয়া — একদম ঠিক আদিত্য..তাছাড়া এখনি সব কথা বলে ফেলবে নাকি? যে কাজের জন্যে এসেছ সেটাতে মন দাও..এসব কথা পড়েও বলা যাবে
আদি আর বললো না কিছু, দিয়ার সামনে কোনো ঝামেলা করতে চায় না তবে বিষয়টা সম্পর্কে জানতে চায় ও..ধ্রুবের কথা আর দিয়াকে দেখে ওর রিয়াকশন দেখেই আদি বুঝেছে কোনো একটা ব্যাপার আছে যেটা সম্পর্কে ও এখনও অবগত নয়…!! একে অপরের দিকে কঠিন দৃষ্টি ক্ষেপণ করছে ধ্রুব আর আদি তখনই সিমির ডাক পড়ে..৪ টে বড় প্যাকেট হাতে কিছুটা দুর থেকে ডেকে ওঠে দিয়াকে..
সিমি — দিয়া ম্যাডাম..একটু এদিকে আসুন না, দেখুন তো এতে হবে কিনা
দিয়া — হ্যা আসছি ডাক্তার সিমি…! আদিত্য আমি একটু দেখে আসছি..!
আদিত্য — হুমম যাও!
দিয়া সরে আসে ওখান থেকে, ধ্রুব ও আর ওখানে না দাড়িয়ে চলে আসতে যাচ্ছিল তখন..
আদিত্য — দিয়ার সাথে তোর কি সম্পর্ক ধ্রুব..?
দাড়িয়ে যায় ধ্রুব, আদি আর ধ্রুব দুজনেই একে অপরের বিপরীতে মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে..আদির প্রশ্নে ব্যাকুলতা দেখে হাসে ধ্রুব..
ধ্রুব — তোর কি মনে হয়?
আদি ঘুরে ধ্রুবের সামনে এসে দাঁড়ায়, রাগান্বিত কণ্ঠে বলে..
আদিত্য — প্রশ্ন আগে আমি করেছি তাই উত্তরটা আমারই প্রথমে পাওয়া উচিত..কিভাবে চিনিস তোরা একে অপরকে?
মুচকি হাসে ধ্রুব..আদিকে হুট করেই কেমন ফ্রাস্ট্রেটেড লাগছে, বহুদিনের পরিচয়ে এই প্রথমবার আদিকে এভাবে কোনো বিষয়ে প্রশ্ন করতে দেখছে ধ্রুব..!
ধ্রুব — দিয়াকেই জিজ্ঞাসা করে নিস
বরাবরই প্রশ্নের সোজা জবাব শোনার অভ্যাস আদির সেখানে ধ্রুব এরকম বাকা উত্তর দিচ্ছে তাও বিষয়টা দিয়ার, হুট করেই মাথা গরম হয়ে ওঠে আদির.. ও এবার আরো ঝাঁঝালো স্বরে বলে ওঠে..
আদিত্য — আমি তোর মুখ থেকে শুনতে চাই আর হ্যা যা বলবি সত্যি বলবি, একটাও মিথ্যে শুনতে চাইনা আমি
ধ্রুব — উত্তরটা শুনে সহ্য করতে পারবি তো?
এবার কিছুটা থতমত খেয়ে যায় আদি, সহ্য করতে পারবে না মানে? কি এমন বলবে ধ্রুব ওর আর দিয়ার ব্যাপারে যেটা আদির সহ্য করতে কষ্ট হবে? হঠাৎ করেই এক অজানা আশঙ্কায় বুকটা কিঞ্চিৎ কেপে উঠলো আদির…!!
চলবে…!!
[ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন..!!]