#অনুভূতিটা_ছিল_ভালোবাসার
#পর্ব_০৬,০৭
#মেহরাজ_হোসেন_রনি
পর্ব_০৬
এই বলে আমি রুমে চলে গেলাম।।রুমে যাওয়ার কিছু সময় পর দরজা লাগানোর শব্দ হল।।
তাই আমি পিছনে তাকিয়ে দেখি জারা দরজা লাগিয়ে আমার দিকে আগুন চোখে তাকিয়ে আছে।।
আমি শুধু আল্লাহ নাম নিতাছি।।আমি জানি আজকে আমার কপালে মাইর আছে।।
তারপর আর কি জারা আমাকে ইচ্ছামত মাইর দিলো।।মাইরের সময় শুধু বলেছিল কোনো মেয়ের সাথে কথা বলবি বল।।আর বলবি কথা।।
রাতে আর খাবার খেতে যেতে পারলাম না।।কিন্তু রাতে ঘুমটা ভাল হয়েছিল মাইর খেয়ে।।
সকালে জেরিনের ডাকে ঘুম থেকে উঠলাম।। জেরিন বলল ভাইয়া আমরা কিছুক্ষণ পরে চলে যাব।।
আমি বললাম জেরি কিছুক্ষণ অপেক্ষা কর আমি আসছি।।
তারপর ফ্রেশ হয়ে এসে জেরিনের হাতে দুইটা বক্স দিলাম।।আর বললাম এইখানে একটা তোর জন্য।।
জেরিন শুধু হেসে বলল ধন্যবাদ ভাইয়া।।আর শুন আমি আরেকটা বক্স জারা আপুকে দিয়ে দিব।।এবার খুশি।।
আমি শুধু হেসে বললাম হুম।।
তারপর জেরিন আমার রুম থেকে চলে গেল।।
কিছুসময় পর জারা আর জেরিন বাসায় চলে গেল।।
কিন্তু জারা যাওয়ার সময় আমার ফোনে মেসেজ দিয়ে গেছে।।
মেসেজ এ লেখা ছিল- মেয়েদের সাথে কথা কম বলবি আর যত পারবি মেয়েদের থেকে দূরে থাকবি।।
আমি শুরু ভাবতাছি একটা মেয়ে আমাকে কতটা ভালবাসে।।
আমি জারার এই সব পাগলামির কথা চিন্তা করে হাসতেছি।।
আর আমার হাসি দেখে লামিয়া বলল আপনি এইভাবে একা একা হাসেন কেনো।।
আমি বললাম তেমন কিছু না।।।
তারপর আমি নাস্তা করে তুহিনের সাথে দেখা করতে চলে গেলাম।।
গিয়ে দেখি রাফিও আছে।। তারপর আমি ওদের যে কাজে জন্য এনেছি তা বুঝিয়ে বললাম।। তুহিন তো আমার উপর সেই পরিমানে রেগে আছে।।তুহিনকে ভালভাবে বুঝালাম।।।
তারপর তুহিন বলল আচ্ছা ঠিক আছে।।আমি তোর সাথে থাকবো।।
তুহিন চলে যাওয়ার পর আমি রাফিকে দিলাম মাইর।।
-রাজ আমাকে মারছিস কেনো।।
-তুই কবে বলবি তুই মিমকে পছন্দ করিস।।
-যদি মিম রাজি না হয় তখন কি হবে??
-তাড়াতাড়ি বলে দে না হলে মিমকে আর পাবি না কিন্তু।।
– রাজ তুই সাহায্য করে দে।।
-আচ্ছা তাহলে রাকিব আর রিয়ার ঝামেলা শেষ হোক তারপর আমি তুহিন আর মিমের সাথে তোর বিষয়ে।।
-রাজ একটা কথা বলি।।
-বল কি কথা।।
-তুই রাকিবের সাহায্য কেনো করছিস।।
আমি বললাম রিয়ার কারনে।।মেয়েটা গতকাল রাতে আমাকে ফোন করে অনেক কান্নাকাটি করেছে।।আর বলেছে রাকিবকে না পেলে নাকি আত্মহত্যা করবে।।
তাই আমরা রিয়ার গায়ে হলুদে রিয়াকে কিডন্যাপ করব।।
রাফি হেসে বলল মামা মজা হবে অনেক।।
আমি বললাম যদি ধরা খাই তাহলে কিন্তু মজা মাইরে পরিণত হবে।।
তারপর আমি বাসায় এসে পরলাম।।
বাসায় এসে দেখলাম তানিয়া ভাবির আব্বু এসেছে।। তার সাথে কথা বলে বুজলাম লামিয়া চলে যাবে।।
আমি মনে মনে কিছুটা খুশি হলাম।।যাক বাবা বাচা গেল।।
তারপর তানিয়া ভাবির আব্বু আর লামিয়া চলে গেল।।
কিছুদিন পর আমি ভার্সিটিতে ভর্তি হলাম।।বন্ধুরা সবাই এই ভার্সিটিতে পড়াশুনা করে আর জারাও।।
ভার্সিটিতে গেলে জারার সাথে দেখা হয়।।কিন্তু আমি জারার সাথে কথা বলি না।।জেরিনের সাথে প্রতিদিন দেখা হয়। মিমের সাথেও দেখা হয়।।
কারন ভার্সিটির পাশেই ওদের কলেজ।।
আমি তুহিন রাফি আর রাকিব এখন একসাথে আড্ডা দেই।।রাকিব আর আগের মত নেই।।
ভার্সিটি থেকে বাসার দিকে যাচ্ছি এমন সময় কেউ আমাকে ভাইয়া বলে ডাক দিল।।তাই আমি পিছনে তাকিয়ে দেখি রিয়া।।
তাই আমি দারিয়ে গেলাম।।
রিয়া আমার সামনে এসে বলল ভাইয়া আপনি কিছু করেন।।আমার বিয়ের কিন্তু বেশিদিন বাকি নেই।।
আমি বললাম তুমি এই বিষয় নিয়ে চিন্তা করো না।।আমি সব ঠিক করে দিব আর শুনো।।
– জি ভাইয়া বলেন।।
– রাকিবের সাথে কি কিছু হয়েছে।।
– হুম ভাইয়া।।রাকিব আমার বিয়ের কথা শুনে আমার সাথে রাগ করে কথা বলে না।।
এই কথা বলে রিয়া কেঁদে দেয়।।
আমি বললাম তুমি এখন বাসায় যাও আমি সব কিছু ঠিক করে দেব।।
তারপর রিয়া চলে গেল।।
আজ ভার্সিটি গিয়ে দেখলাম রাকিবের মন খারাপ।।কারনটা হল আজ রিয়ার গায়ে হলুদ।।
বিষয়টা জানার পরও আমি রাকিবকে বললাম
-কিরে মন খারাপ কেনো।।
– না তেমন কিছু না।আচ্ছা শুন আজকে আর আমি ক্লাস করবো না।।
এই বলে রাকিব চলে গেল।।
তারপর আমি তুহিন আর রাফিকে ফোন করে আসতে বললাম।।এখন শুধু রাত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম।।
To be continue…..
#অনুভূতিটা_ছিল_ভালোবাসার
#পর্ব_০৭
#মেহরাজ_হোসেন_রনি
তারপর আমি তুহিন আর রাফিকে ফোন করে আসতে বললাম।।এখন শুধু রাত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম।।
রাত হওয়ার পর আমরা তিনজন রিয়ার গায়ে হলুদে রিয়ার বাসায় গেলাম।। আমি তো শুরু তাকিয়ে আছি।।এই আমি কোথায় আসলাম।।সব জায়গাতে শুধু মেয়ে আর মেয়ে।।শুধু তাকিয়ে থাকতে মন চায়।।
আমার এই অবস্থা দেখে তুহিন আমাকে বলল
-রাজ আমার কাছে কিন্তু জারার ফোন নাম্বার আছে।।
– হুম তো।কি হয়েছে।।
– জারাকে ফোন করে বলে দেই তুই এইখানে এসে মেয়েদের দিকে তাকিয়ে আছিস।।
– তুহিন আমাকে কি তোর বাজে ছেলে মনে হয়।।
– আরে না। তোকে বাজে ছেলে মনে হবে কেনো।।তুই তো শালা একটা শয়তান।।আমার বোন তোকে কত পছন্দ করে আর তুই শুধু জারাকে নিয়ে পরে আছিস।।
তুহিনের এই কথা শুনে রাফি বাকা চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।।
তাই আমি তুহিনকে বললাম আচ্ছা এই কথা বাদ দে।।যে কাজে এসেছি সে আগে করি তার পর না হয় মিমের বিষয় নিয়ে কথা বলল।।
আমার কথা শুনে তুহিন আর কিছু বলল না।।
কিছুসময় পর একটা মেয়ে এসে রাফিকে বলল আপনি কি রাজ??
রাফি বলল আমি রাজ না।।আমারকে দেখিয়ে বলল এ হল রাজ।।মেয়েটি বলল
-আপনি আমার সাথে আসেন।।
-কেনো??
-আপনাকে রিয়া ডাকছে।
-হুম চলেন।।
মেয়েটি আমাদের একটা রুম দেখিয়ে বলল আপনি ভেতরে যান।।
আমি তুহিন আর রাফিকে বাহিরে রেখে ভেতরে গেলাম।।
গিয়া দেখি রিয়া কয়েকজন মেয়ের সাথে বসে আছে।।আমাকে দেখে বলল
-ভাইয়া এখন কি করবেন??
-তোমার কাছে কি বোরখা আছে।।
– আছে ভাইয়া।কিন্তু বোরখা দিয়ে কি করবেন।।
-তুমি সেটা পরে নেও।আর একজনকে বল কারেন্ট সুইচ যেন অফ করে দেয়।।
-আচ্ছা ভাইয়া আমি বলে দিচ্ছি।।কারেন্ট কিছুসময় পর অফ হয়ে যাবে।।আর আপনি অপেক্ষা করেন আমি বোরখা পরে আসতেছি।।
আমি রিয়ার কথা মত দরজার বাহিরে রিয়ার জন্য অপেক্ষা করতে থাকলাম।।
কিছুসময় পর রিয়া বোরখা পরে এসে কাকে জানি ফোন করে কিছু একটা বলল আর সাথেসাথেই কারেন্ট চলে গেল।।
তাই আমি রিয়াকে নিয়ে বাইরে চলে যাব এমন সময় গেটে একজন লোক আমাদের দেখে বলল তোমরা কারা??
লোকটার কথা শুনে রিয়া আমার পিছনে দারিয়ে গেল।।
আমি তখন বললাম আমরা সবাই রিয়ার সাথে দেখা করতে এসেছিলাম।।আমার বউ রিয়ার ফ্রেন্ড।।
লোকটি রিয়ার দিকে তাকিয়ে বলল তুমি রিয়ার ফ্রেন্ড।।
রিয়া শুধু বলল জি।।
লোকটি আমাদের বলল তাহলে এত আগে চলে যাচ্ছিলে কেনো??
আমি বললাম আমাদের কিছু কাজ আছে তাই আমরা রিয়ার সাথে দেখা করে চলে যাচ্ছি।।
লোকটি বলল আচ্ছা ঠিক আছে।।আগামীকাল রিয়ার বিয়েতে কিন্তু আসবে তোমরা।।
আমরা একসাথে বললাম আচ্ছা।।
এই বলে আমরা সবাই রিয়ার বাসা থেকে চলে আসলাম।।বাহিরে আসতেই আমি রিয়াকে বললাম রিয়া লোকটা কে ছিল??
রিয়া নিচের দিকে তাকিয়ে বলল আমার আব্বু।।
আমি বললাম কিন্তু তোমার আব্বুকে দেখে তো মনে হয় না সে সেনাবাহিনীতে আছে।।
আমার এই কথা শুনে তুহিন আর রাফি আমার দিকে ভুত দেখার মত তাকিয়ে আছে।।
রিয়া ওদের দুইজনের এই অবস্থা দেখে বলল আপনাদের আবার কি হয়েছে।।
তুহিন আমাকে বলল রাজ তুই আমাদের আগে বলিস নি কেনো রিয়ার আব্বু সেনাবাহিনীতে আছে??
পাশে থেকে রিয়া বলল কেনো ভাইয়া কিছু কি হয়েছে??
রাফি আর তুহিন আমার দিকে তাকিয়ে বলল না।কিছু হয় নাই।।
তারপর আমরা সবাই আমাদের বাসায় গেলাম।।গিয়ে ভাবিকে সব বলে ম্যানেজ করে আমাদের বাসায় রিয়াকে রাখলাম।।কারন শুধু ভাবিই পারবে বাসার সবাইকে বুঝাতে।।
রিয়াকে বাসায় রেখে তুহিন আর রাফিকে এগিয়ে দেয়ার জন্য নিচে নামতেই ওরা দুইজন আমাকে মারতে শুরু করলো।।আমি বললাম
-মারছিস কেনো?
-শালা তুই আগে বলিস নি কেনো রিয়ার আব্বু সেনাবাহিনীতে কাজ করে??
-আমি যদি আগে বলতাম তাহলে তোরা কি আমার সাথে যেতে চাইতি বল।
এইবার দুইজন মাইর থামিয়ে চুপ করে দারিয়ে থাকলো।।
আমি বললাম আচ্ছা এখন তোরা বাসায় যা আর শুন রিয়ার কথা কাউকে বলবি না ঠিক আছে।।এমন কি জারাকেও না।।
তারপর ওরা দুইজন বাসায় চলে গেল।।
To be continue…..