অনুভূতিটা_ছিল_ভালোবাসার #পর্ব_১২,১৩

#অনুভূতিটা_ছিল_ভালোবাসার
#পর্ব_১২,১৩
#মেহরাজ_হোসেন_রনি
পর্ব_১২

রাফি বলল এখন এই সব বলে কি লাভ।।রিয়ার তো বিয়ে হয়ে গেছে।।তাহলে এখন আর মনে রেখে কি করবি।।
রাকিব কিছুই বলল না।।চুপ করে বসে কান্না করছে।।

আমি ভাবিকে কল করলাম।।

-হ্যা ভাই বল।।

-ভাবি রিয়া কি এখন তোমার সাথে আছে।।

-হ্যা আছে।।এই নে কথা বল।।।

————-

-জি ভাইয়া বলেন।।

-রিয়া তোমার বয়ফ্রেন্ড তো কান্না করতে করতে নাজেহাল অবস্থা।।

-তাহলে ওকে দেন কথা বলি।।

-আচ্ছা রাকিবের সাথে কথা বল।।কিন্তু তুমি কোথায় আছো সেটা রাকিবকে বল না।।

-আচ্ছা ভাইয়া।।

রাকিব এই নে।কে জানি তোর সাথে কথা বলবে।।
রাজ আমার এখন কারো সাথে কথা বলতে ভাল লাগছে না।।।

রাকিবের কানে ফোনটা নিয়ে ধরলাম।।

-রাকিব তুমি নাকি আমার জন্য কান্না করেছ।।

-রিয়া তুমি।।

কথাটা বলে রাকিব ফোনটা নিয়ে আমাদের থেকে দূরে গিয়ে কথা বলতে গেল।।।
আমরা রাকিবের এই অবস্থা দেখে হাসা হাসি করছি।।

রাফি বলল দেখছিস শালা কি ভাবে কান্না করছে রিয়ার জন্য।।।

-হুম।কারন রাকিবের অনুভূতিটা আমার মত।।

তুহিন বলল রাজ তাহলে তুই বলতে চাচ্ছিস অনুভূতিটা ভালবাসার।।

-না ঠিক এটা না।

-তাহলে কি হবে।।

-কিছুটা এইরকম #অনুভূতিটা_ছিল_ভালোবাসার।।

-এইরকম কেনো রাজ??

-কারন আমার গত দুই বছরের অনুভূতিটা ঠিক এইরকম ছিল তাই।।

আমরা কথা বলছি এমন সময় রাকিব এসে আমাকে জরিয়ে ধরলো।।আমি কিছুটা অবাক হয়েছি।।আমার থেকে বেশি অবাক তুহিন আর রাফি হয়েছে।।

-রাকিব তুই ঠিক আছিস তো।।

-রাজ আমাকে ক্ষমা করে দে।।

-কেন কি হয়েছে বল??

-আমি তোর আর জারা কথা জারার মার কাছে বলেছিলাম।।।

-হুম সেটা আমি আগেই জানি।।

রাকিব আমাকে ছেড়ে দিয়ে বলল তুই জানতিস।।

-হ্যা আমি আগেই সব জানতাম।।

-তুই কি এখনো আমাকে ক্ষমা করিস নাই।।

-তুই তো কোনো অন্যায় কিছু করিস নি।।একটা ভুল করেছিলি সেটার জন্য আমি তোর উপর কিছুটা রাগ হয়েছিল।।

আর এইদিকে রাফির মাথায় কিছুই ঢুকছে না।।

তুহিনকে বলল রাকিব কি করেছিল।।যার কারনে রাজের কাছে ক্ষমা চাচ্ছে।।।

তুহিন রাফিকে সব বুঝিয়ে বলল।।তুহিনের কথা শুনে রাফি রেগে আগুন হয়ে আছে।।।

রাফি রেগে বলল তাহলে রাজ কেনো রাকিবকে সাহায্য করলো।।

তুহিন বলল কারণ রাজ তার কাছের মানুষকে আগলে রাখতে জানে।।যেমন তুই আর আমি সেই রকম রাকিবও বুঝছিস।।।

তুহিনের কথা শুনে রাফি হেসে দিল।।রাফিও জানে রাজ কেমন তাই রাফি আর রাগ করল না।।।

আর এই দিকে আমি রাকিবের কান্ড দেখে মনে মনে হাসতেছি।।আমি জানতাম রাকিব রিয়াকে অনেক ভালোবাসে তাই রাকিবকে না বলেই রিয়াকে বিয়ের আগের দিনে আমরা নিয়ে আসি।।

তারপর আমরা চারজন অনেক আড্ডা দিলাম।।রাকিব আজ অনেক খুশি তার ভালবাসার মানুষের জন্য।।
রাকিব বলেছিল রাতে ওদের বাসায় খেয়ে যেতে।।আমরা বলেছিলাম পরে একদিন খেয়ে যাব।।।
রাতে যখন ঘুমাতে যাবো তখন হঠাৎ কেউ কল দিল।।।
ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি জারা কল করেছে।।

-হ্যা জারা বল।

-ভাইয়া আমি জেরিন।।

-হ্যা জেরি বল কি জন্য কল দিয়েছিস??

-ভাইয়া কালকে আমাদের ঘুরতে নিয়ে যাবে।।।

-কেনো কাল কোনো বিশেষ দিন।।

-না ভাইয়া।।এমনেই ঘুরতে যেতে মন চাচ্ছে।।চল না ভাইয়া প্লিজ।।

-আচ্ছা ঠিক আছে।।।কখন যাবি??

-১০টার দিকে।।আচ্ছা ভাইয়া আপুর সাথে কথা বল।।

-হুম দে জারাকে।।

-কি করছিস রাজ??

-তেমন কিছু না।।তুই কি করছিস??

-কি আর করবো বল।।আমার বরের কথা চিন্তা করছিলাম।।।

-তুই জেরিনের সামনে এইসব কথা কেনো বলছিস??

-আরে জেরিন তো টিভি দেখছে।।আমাদের কথা ও শুনতে পাবে না।।

-বুঝলাম।।তা তোর বরের বিষয় কি ভাবলি।।

-আমি আমার বরকে কিভাবে আদর করব সেটা নিয়েই ভাবছিলাম।।

আরো অনেক কিছু নিয়ে রাতে জারার সাথে কথা হল।।
সকালে জারার ডাকে ঘুম থেকে উঠলাম।।
কিন্তু জারা এত রেগে আছে কেনো??

To be continue…..

#অনুভূতিটা_ছিল_ভালোবাসার
#পর্ব_১৩
#মেহরাজ_হোসেন_রনি

আরো অনেক কিছু নিয়ে জারার সাথে কথা হল।।
সকালে জারাত ডাকে ঘুম থেকে উঠলাম।।
কিন্তু জারা এত রেগে আছে কেনো??

-জারা কেউ কি তোকে কিছু বলেছে।।

-না।।

-তাহলে কি হয়েছে আমাকে বল।।

-আগে বল মিমকে তুই কেনো ডেকেছিস।।

-আরে আমি কেনো মিমকে ডাকতে যাব??

-তাহলে মিম এত সকালে এই বাসায় কি করছে??
এই বলে জারা রাগ করে আমার রুম থেকে চলে গেল।।

নাহ আমার মাথায় কিছুই ডুকছে না।।কিছুসময় পর জেরিন আমার রুমে আসলো।।

-ভাইয়া মিমও এসে পরেছে এবার চল আমরা ঘুরতে যাই।।

-মিম কি আমাদের সাথে যাবে নাকি??

-হ্যা।কেন ভাইয়া??

-আচ্ছা এই ঘুরতে যাওয়ার আইডিয়াটা কার ছিল।।

-কার আবার আমার।।

-সত্যি করে বল।।
“যদি আমি জানতে পারি তাহলে কিন্তু তোর খবর আছে” রাগী গলায় বললাম।

-ভাইয়া তুমি রাগ করো না।।মিম আমাকে বলছিল তোমাকে সাথে নিয়ে ঘুরতে গেলে আমাকে এক বক্স আইস ক্রিম দিবে।তাই আমি রাজি হয়েছিলাম।।

জেরিনের কথা শুনে আমিই বোকা হয়ে গেলাম।।
কি দিন কাল আসল ঘুরতে যাওয়ার জন্য নাকি ঘুষ দিতে হয়।। আমার তো জেরিনের কথা শুনেই মাথা ঘুরচ্ছে।।।
না মাথা কাজ করছে না।।তুহিনকে কল দিয়ে রাফিকে নিয়ে আসতে বললাম।।
আধা ঘণ্টার মধ্যে তুহিন আর রাফি এসে হাজির।।

তুহিন আর রাফি আসতেই রাফিকে আলাদা নিয়ে বললাম

-তুই কি আজ রিয়াকে প্রপোজ করতে পারবি??

-কেন?হঠাৎ এই কথা কেন?

-তুই যদি আজ রিয়াকে প্রপোজ না করিস তাহলে রিয়ার সাথে আমার বিয়ে হয়ে যাবে।।তুই কি সেটা চাচ্ছিস।।

-না না।।আমি আজকেই রিয়াকে বলে দিব আমার মনের কথা।।কিন্তু তুহিন যদি খারাপ কিছু মনে করে।।

-তুই সেটা নিয়ে চিন্তা করিস না।।

-আচ্ছা।।
আমি তুহিনের কাছে গিয়ে বললাম শুন তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে।।

-হুম বল।

-না।এইখানে না।।বাহিরে আয়।।

-আচ্ছা চল।।

——

-হ্যা এবার বল কি এমন কথা যেটা বাহিরে এসে বলতে হবে।।

-তুই কি আমাকে বিশ্বাস করিস।।

-হ্যা নিজের থেকেও বেশি।। হঠাৎ এই কথা কেনো রাজ।।

-আচ্ছা রাফিকে তোর কেমন মনে হয়।।

-মানেটা ঠিক বুঝলাম না।।

-রাফি মিমকে পছন্দ করে।।এখন তুই কি বলিস।।মানে তোর মতামত কি??

তুহিন কিছুসময় দারিয়ে থেকে কিছু না বলে রাফির কাছে গেল।।আমিও সাথে গেল।।

রাফিকে গিয়ে ঠাস করে থাপ্পড় দিল।।কিছুটা আস্তেই দিয়েছিল।।

রাফি কিছু না বলে নিচের দিকে তাকিয়ে থাকলো।কিছুই বলল না।।

রাফিকে বলল তুই কি সত্যি মিমকে পছন্দ করিস।।

রাফি নিচের দিকে তাকিয়েই বলল না।।আমি মিমকে পছন্দ করি না।।মিমকে ভালোবাসি।।

আমরা তিনজনই চুপ করে আছি।।
তুহিন বলল তাহলে তুই আমাকে আগে না বলে রাজকে কেন বললি??

রাফি তুহিনের দিকে তাকিয়ে বলল
-তুই যদি খারাপ কিছু ভাবিস তাই।।

-মিম কি জানে তুই ওকে ভালবাসিস??

-না আমি এখনো মিমকে কিছু বলি নাই।।

-তাহলে কবে বলবি?ওর সাথে তোর বিয়ে হলে??

——–

-শালা এইভাবে তাকিয়ে আছিস কেন??

-তোর বোনকে যদি আমি বিয়ে করি তাহলে তুই আমার শালা হবি বুঝছিস আমি না।।।

আমি ওদের দুইজনের কথা শুনে হেসে দিলাম।।।
রাফি বলল তাহলে আমাকে মারলি কেন??

তুহিন হেসে বলল দেখলাম ছোট বোনের বরকে মারতে কেমন লাগে???

রাফিও কম না।।রাফি গিয়ে তুহিনকে গিয়ে দিল মাইর।।।
ওদের দুইজনের কাহিনী দেখে আমি হেসে খুন।।।

আমার হাসি দেখে বলল রাজ তুই হাসতেছিস কেন??

বললাম আমার মজা লাগছে তাই হাসতেছি??
ওরা এবার নিজেদের মধ্যে না মারামারি করে আমাকে মারা শুরু করলো।।
আমিও কম কিসে।।আমিও দিলাম মাইর।।

তিনজন মারামারি করে আমার রুমের অবস্থা নাজেহাল।।আমরাও প্রায় ক্লান্ত হয়ে গিয়েছি।।

আমি বললাম শুন রাফি আজকে তুই মিমকে তোর মনের কথা বলে দিবি ঠিক আছে।।
তুহিনও আমার কথার সাথে একমত জানালো।।

কিছুসময় পর আমরা সবাই ঘুরতে বের হলাম।।প্রায় ঘণ্টা খানিক পর আমরা পৌঁছে গেলাম।।
জারা আমার সাথেই ছিল।।
কিছুক্ষণ পর আমি মিমের সামনে গিয়ে বললাম মিম তুমি কি জানো আমার আর জারার বিয়ে ঠিক হয়েছে।।।
আমার কথা শুনে মিম একবার আমার দিকে একবার তুহিনের দিকে তাকাচ্ছে।।

তুহিন ইশারায় বলে দিল আমি সত্যি কথা বলছি।।
আমি মিমের চোখের কোনে পানি দেখলাম।।।
মিম আমার সামনে থেকে জারার কাছে গেল।।।

কিছুসময় পর জারা এসে বলল রাজ মিম আমাকে সরি বলেছে কেন??

আমি জারাকে সব বুঝিয়ে বললাম।।জারা বলল তাহলে এখন কি করবি।।

বললাম রাফি মনে হয় আজ মিমকে প্রপোজ করবে।।।

To be continue…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here