এলাকার বড় আপু,পার্ট:২
লেখক: Osman
👉আমাকে দেখে ছেলেগুলো চলে যায় আর মেয়ে গুলো আমার দিকে বাঁকা চোখে তাকায়। তারাও চলে যায়। আমি সাদের এক কোনায় দাঁড়িয়ে আছি। একটু পর আরো দুইটি মেয়ে আসলো। আমি দেখেয় চিনতে পারলাম তাদের মধ্যে একজন বড় আপু দেখেয় মেজাজ বিগড়ে যায়। বড় আপু আমাকে দেখে বলল।
বড় আপু: তুই এখানে। তর কি লজ্জা সরম কিছূই নাই।
👉আমি কিছু বললাম না। কারন এখন আমার মুখ থেকে সোজা কথা বের হবে না।ওলটা পাল্টা বললে আবার ঝামেলা। তার সাথে যে মেয়েটা আসছে সে বলল
মেয়ে: তর সাথে কিছু হয়েছে। আর ওরা আমাদের বাসায় নতুন ওঠেছে। অনেক ভালো ফ্যামিলি। সবার সাথে ভদ্র ভাবে কথা বলে। আর ওর বড় বোনের সাথে তো আমার ফ্রেন্ডশিপ হয়ে গেছে।
বড় আপু: ভালো না ছাই। পুরা একটা ফালতু।
সকালে আচ্ছা মতো ধোলায় দিছি।
মেয়ে: কিহ তুই তাকে মারছত? ছেলেটা অনেক ভালো।
👉আমি হেঁটে তাদের কাছে গেলাম। গিয়ে মেয়েটাকে বললাম।
আমি: আপু আমাকে সাপোর্ট করার জন্য থ্যাংকস।
আসলেই আপনার বান্ধবী অনেক ভালো। এমন মেয়ে আমি আর দেখিনি । বড় আপু আপনি সব সময় সুস্থ থাকেন ভালো থাকেন। আপনার মতো মেয়েই দেশে প্রয়োজন।
বড় আপু: হইছে আর বলতে হবে না তুই যা।
আমি: আপনার সাথে একটু কথা ছিলো।
মেয়েটাকে দেখিয়ে বললাম
মেয়ে: কি কথা?
আমি: আপু আপনার নামটা কি?
মেয়ে: জোৎস্না আক্তার।
আমি: অনেক সুন্দর নাম। আপনি যেমন আপনার নামটা ও সেরকম। আসলেও আপনি আপু অনেক সুন্দরী।
👉আসলে একটুও সুন্দরী না বড় আপুর থেকে অর্ধেকও না। বড় আপুর যাতে ভিতরে ভিতরে জলে হয় সে জন্য বলতাছি।
জোৎস্না: থ্যাংকস এই প্রথম আমার নামের কেউ প্রসংসা করলো।
আমি: আপু আমি চাই আজকের এই মুহূর্তটি স্মরনীয় হয়ে থাক সে জন্য আপনার আমার ছোট্ট একটা সেলফি।
👉আমি আড় চোখে তাকিয়ে দেখি বড় আপুর মুখ লাল হয়ে রয়েছে। আমি মোবাইল বের করে জোৎস্নার সাথে সেলফি নিলাম। নিয়ে চলে আসলাম। এখানে এটা বড় আপুর জন্য এটা খুবই লজ্জাকর বিষয় কারণ বড় আপুর সামনে তার থেকে অসুন্দরী মেয়েকে প্রসংসা করলাম। সেলফি তোলার সময় বড় আপুকে বাদ দিলাম। কি লজ্জা কর একটা বিষয়। বড় আপু কিছু হলেও বুঝবে। দেখলাম আমার আপু আসলো। আমার কাছে এসে বলল
আপু: তুই বিকাল বেলা সাদে কি করস? যা নিচে যা।
আমি: সাদে কি আসতে পারবো না?
আপু: দেখতাছত না এখানে মেয়েরা বিকালে সাদে আসে? যা নিচে যা।
আমি: যাচ্ছি যাচ্ছি।
👉আমি চলে আসলাম। আমার আর বড় বোনের বয়স ২ বছরের ডেফারেন্ট। ভাবলাম এলাকায় আসলাম একটা নাই বন্ধু জোগাড় করতে হবে। আগামীকাল ভার্সিটি আছে । প্রতিদিনের মতো রাতরা কেটে গেলো কিভাবে যে রাত কাটে সিনগেলরা ভালো করেয় জানে । আজকে ভার্সিটি গেলাম ভার্সিটি শেষ হতে বিকাল হয়ে গেলো । হেঁটে হেঁটে আসছি এলাকায় ঢুকে গেলাম।সন্ধ্যা ছুঁই ছুঁই একটা মেয়ের উপর আমার চোখ আটকে গেলো। দেখি বড় আপুর সাথে দুইটা মেয়ে একটা ছেলে তারা বসে বসে সিগারেট খাচ্ছে। আমি ভাবলাম এই মেয়েটা কেনো যে আমার সামনে পড়ে। ভাবলাম আসলেই মেয়েটার অনেক পাওয়ার এলাকায়। জীবনের প্রথম দেখলাম কোনো মেয়ে এলাকার লিডার। না এই মেয়ের বেকগ্রাউন্ড সম্পর্কে জানতে হবে কিভাবে সে এই অবস্থায় আসলো। মেয়েটিকে দেখে আফসোস হচ্ছে । মেয়েটার শেষ পরিণতি অনেক খারাপ হতে যাচ্ছে। যাইহোক আমি মেয়েটাকে পাস কাটিয়ে চলে যাচ্ছি। আমাকে চিনে ফেলল ডাক দিলো।
বড় আপু: ঐ ছেলে এদিকে আয়।
আমি কাছে গেলাম।
আমি: জী বলেন।
বড় আপু: তর নাম কি।
আমি: মুরাদ।
বড় আপু: সিগারেট খাস?
👉আমি চিন্তায় পরে গেলাম। আমি স্মোক করি মাঝে মাঝে। বড় আপুর হাতে বেনসন সিগারেট যেটা আমার প্রিয় সিগারেট লোভ সামলাতে পারছিনা।
নাহ এখানে কোনো ভাবেই খাওয়া যাবে না যদি আব্বার কানে যায় আমি স্মোক করছি আবার এলাকার গুন্ডি মেয়ের সাথে। তাহলে আর রক্ষা নাই।
তারচেয়ে ভালো না করে দেই।
আমি: না করি না।
বড় আপু: নে আজকে কর।
আমি: না।
ছেলে: আরে বেটা নে । আপু তার নিজের মুখের সিগারেট দিতে চাচ্ছে নে। এমন সৌভাগ্য কয় জনের হয়।
আমি: না আমি যাই।
👉আমি চলে আসলাম। সিগারেটের গন্ধে আমার মাথা ঘুরাচ্ছে তাড়াতাড়ি এক দোকানে গিয়ে বেনসন সিগারেট ধরিয়ে খাইলাম মাথাটা ঠান্ডা হলো। আমি বাসায় গেলাম। বাসায় গিয়ে খাওয়া দাওয়া করে দিলাম এক ঘুম। পরদিন ভার্সিটিতে গেলাম। আসার সময় এক ছেলেকে ধরলাম। ছেলেটাকে আগে বড় আপুর সাথে দেখেছি।
আমি বললাম
আমি: কেমন আছো ভাই?
ছেলে: ভালো। কিছু বলবেন?
আমি: না তেমন কিছু না। তোমার নাম কি?
ছেলে: আমি সাজিদ।
আমি: আমাকেতই চিনই।
সাজিদ: হুম চিনিতো কিছু বলবেন? না বললে আমি যাই।
আমি: স্মোক করো ?
সাজিদ: হুম।
আমি: চলো ।
👉আমি আর সাজিদ এক দোকানে গেলাম। গিয়ে দুজন সিগারেট নিলাম। তারপর আমি জিজ্ঞেস করলাম।
আমি: তুমি কি এই এলাকার স্থানীয়?
সাজিদ: হুম।
আমি: বড় আপু তোমার কি হয়?
সাজিদ: কিছু না এলাকার বড় বোন সম্মান করি।
আমি: তার ফ্যামিলি সম্পর্কে একটু বলবা?
সাজিদ কিছু বলছে না। মনে হয় ভাবছে একটু পর বলল।
সাজিদ: তার বাবা এই জেলার প্রশাসক। তার মা তেমন কিছু করে না। বাবার অনেক পাওয়ার পাওয়ার । ছোট বেলা থেকেই আমাদের সবার প্রিয় ছিল বড় আপু। তাই বড় হয়েও আমরা সবাই সম্মান করি।
আমি: ভালো। বড় আপুর বিয়ে হয়েছে?
সাজিদ: না দুইবার বিয়ে ঠিক হয়েছে। পরে কোনো এক ভুল বোঝাবুঝির কারণে বিয়ের দিন বিয়ে ভেঙে যায়। এই আর কী।
আমি: উনি এতো দুঃখ কষ্টের মাঝে নিজেকে ঠিক রাখে কি করে?
সাজিদ: তাতো বলতে পারিনা।
আমি: কোথায় না যাচ্ছি লা।
সাজিদ: ঐ সামনে ।
আমি: যাও । দেখা হয়ে ভালো লাগলো।
👉সাজিদ চলে গেলো। আমি মনে মনে অনেক খুশি কারণ বড় আপুর সম্পর্কে মোটামুটি সব জানা হয়ে গেলো। মেয়েটার বেকগ্রাউন্টতো ভালো। বড় আপু দিন দিন খারাপের দিকে চলে যাচ্ছে । তাকে এই পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে। তার আগে বড় আপুর মন জয় করতে হবে। আমি বাসায় আসলাম এসে বিকালে সাদে গেলাম। সাদের এক কোনায় বসে মোবাইলে গেম খেলছি। একটু পর দেখলাম জোৎস্না আসলো। আমাকে দেখেই আমার কাছে এসে হুমড়ি খেয়ে পড়লো বলল।
জোৎস্না: মুরাদ তোমাকে তো আমি দেখেই না।
আমি: কই আমি তো বাসায় আছি। বড় আপু আসে নাই।
জোৎস্না: না । আমি তো আছি।
মনে মনে ধুর তর সাথে কে কথা বলে।
আমি: ওকে আম্মু ফোন করছে। আমাকে এখন যেতে হবে।
জোৎস্না: আরেকটু থাকো।
আমি: হুম। আম্মুর সাথে দেখা করে আসি।
👉আমি চলে আসলাম। মনে মনে বোরিং একটা মেয়ে। গতকাল তো কথা বলছিলাম বড় আপু কে রাগানোর জন্য। ভাবলাম একটা প্রেম করাই দরকার । সারাটা জীবন সিনগেলই থেকে গেলাম। কিন্তু সিনিয়র মেয়ের সাথে? করলে অন্তত জোৎস্নার সাথে না। আমার একটুও ভালো লাগে না কেমন যেনো। আমি বাসায় এসে রাতরা পড়ালেখা করে কাটিয়ে দিলাম। পরদিন সকালে গেলাম সাদে হাঁটাহাঁটি করতাম। গিয়ে দেখি একটা মেয়ে সাদের কোনায় বসে আছে। আমি ভাবলাম সকাল সকাল সাদে কি করে। নিচে তাকিয়ে দেখি একটা ছেলে। আমি বুঝতে পারলাম ভালোবাসার টানে শীতকে হার মানিয়ে চলে এসেছে। আমি আসায় যে তাদের সমস্যা হয়েছে সেটা আমি ভালো করেই বুঝতে পারছি। আমাকে দেখে মেয়েটাও চলে যায় ছেলেটার। দুজনের মন খারাপ। আমি কিছুক্ষণ সাদে থেকে আমি ও চলে আসলাম। আজকে ভার্সিটিতে গেলাম না। দুপুরের দিকে গেলাম সাদে কাপড় নিয়ে। একই অবস্থা একটা ছেলে মেয়ে। আমাকে দেখে চলে যায়। বিকালে গেলাম গিয়ে দেখি তিনজন। আমি তাদের সমস্যা করলাম। ভাবলাম আর সাদেই যাবো না। যাইহোক দিনটা কেটে গেলো। পরেরদিন মানে আজকে ভার্সিটি যাচ্ছি। রাস্তায় এক কোনায় বেঞ্চে দেখি বসে বসে সিগারেট টানছে। শরীরে শীতের কাপড় নেই। আমি ওভারটেক করে চলে যাচ্ছি আমাকে ডাক দিলো।
চলবে…….