গল্পঃ #বিয়াইন_সাহেবের_প্যারা,পর্বঃ ০৭
লেখকঃ #Sazzad_KR
.
ইরাঃ আমাকে কষ্ট দিতে ভালো লাগে তাই না..।।
আমিঃ তোমাকে আবার কষ্ট দিতে যাব কেন এবং তার আগে বলো তুমি এত রেগে আছো কেন…???
তারপর ইরা যেটা বলল সেটা শুনে আমি অবাক
ইরাঃ তুই কিছু বুঝিস না তাই না আমি তোকে……?????
।
।
।
।
ইরাঃ তুই কিছু বুঝিস না তাই না আমি তোকে কত ভালো (বলতে গিয়ে থেমে গেল)
আমিঃ কি হলো বলতে গিয়ে থেমে গেল কেন..??
ইরাঃ না তেমন কিছু না তার আগে বলো তুমি ওই মেয়েটার সাথে কাজি অফিসে কি করলে হুম..?? (কলার ধরে থেকে)
আমিঃ সেটা পরে বলব তার আগে বলো তুমি কান্না করছো কেন এবং আমার কলার ধরে আছো কেন..???
ইরাঃ কিছু কিছু বিষয় বুঝে নিতে হয় এখন বলো মেয়েটার সাথে কাজি অফিসে কি করছিলে (কলার ছেড়ে দিয়ে)
সব কিছু খুলে বললাম।
ইরাঃ আচ্ছা আজকে যা করার করেছো এরপর থেকে যেন আর কোন মেয়ের সাথে তোমাকে না দেখি দেখলে খবর আছে.।
আমিঃ তুমি কে যে তোমার কথা আমাকে শুনতে হবে..??
ইরাঃ এখন তোমার কেউ না তবে হতে চাই।
আমিঃ মানে..?
ইরাঃ বুঝে নাও
বলে দৌড়ে রুম থেকে চলে গেল। আমি বুঝি না মাঝে মাঝে এই মেয়ের মাথা কি হয়।
থেকে থেকে এমন ব্যবহার করে যেটা দেখলে অবাক হয়ে যায়৷ ঘড়ির দিকে তাকালাম দুপুর হতে চলেছে এদিকে আমার অনেক ক্ষুদা পেয়েছে।
এখুনি কিছু খাবার খাওয়া লাগবে নাহলে হবে না। তাই ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমে ঢুকলাম।
“”””” অপরদিকে ইরা””””””
রুমে থেকে বের হয়ে সোজা ভাবীর কাছে কিচেনে চলে এসে হাপাতে লাগল! ইরাকে হাঁপাতে দেখে ভাবী বলল
ভাবীঃ এভাবে হাপাচ্ছিস কেন..??
ইরাঃ আর বলো না তোমার দেবর এর রুম থেকে দৌড়ে চলে এসেছি!
ভাবীঃ কেন?? কি কারণে ওর রুম থেকে দৌড়ে এলি..??
ইরাঃ আসলে রাগের মাথায় নিজের মনের কথা বলে ফেলতে চলেছিলাম সেটা পরে বুঝতে পেরে সেখান থেকে চলে এলাম।
ভাবীঃ নিজের মনের কথা ওকে বলতে পারলি না কেন..??
ইরাঃ আগে তুমি সবাইকে রাজী করাও তারপর বলব..।।
ভাবীঃ সবাই আগে থেকেই রাজি আছে.।
ইরাঃ সবাই আগে থেকে রাজী আছে মানে (অবাক হয়ে)
ভাবীঃ আমার বিয়ের সময় আব্বু তোর বিয়েটা সাজ্জাদের সাথে ঠিক করে দেয় সেটা আমি জানতাম না।। কালকে রাতে তোর দুলাভাইকে তোর কথা বলার পর আমাকে বলেছে যে তোদের বিয়ে আগে থেকেই ঠিক করা আছে।।
ইরাঃ আপু তুমি আমাকে কি খবর শুনালে বলতো (খুশিতে জড়িয়ে ধরে)
ভাবীঃ হয়েছে এখন আমাকে ছেড়ে দে এবং যা সাজ্জাদকে পটানোর কাজে লেগে থাক..??
ইরাঃ পটাবো কেন ও তো এখন থেকে আমারি কয়েকদিন পর তো বিয়ে করে ফেলব.?
ভাবীঃ এত সহজে না! তোর দুলাভাই আমাকে বলেছে আগে সাজ্জাদকে পটাবি তারপর বিয়ে তার আগে কোনো বিয়ে হবে না
ইরাঃ তুমি এইসব কথা বলছো নাকি হুম
ভাবীঃ আমার কিছুই করার নেই বুঝতে পেরেছিস.?
ইরাঃ আচ্ছা তুমি চিন্তা করো না দেখো আমি কি করি। এখন থেকে আমি ওর সকল কাজ করব তুমি কিছুই করবে না কেমন.।
ভাবীঃ তুই যা ভালো বুঝিস.। এখন সাজ্জাদকে গিয়ে ডেকে নিয়ে আয়।
এদিকে আমি…….!!!!!!!
ফ্রেশ হয়ে নিচে যাচ্ছিলাম তখন দেখি ইরা আমার কাছে এলো এসে বলল।
ইরাঃ আপু (ভাবী) তোমাকে ডাকছে..!!
আমিঃ সেটা ডাকুক তার আগে গিয়ে বলো আমাকে খাবার দিতে অনেক ক্ষুদা পেয়েছে.।
ইরাঃ তুমি ভাবীর কাছে গিয়ে শুনে বলে এসো চলো.।
আমি কিছু না বলে ভাবীর কাছে গিয়ে বললাম
আমিঃ ভাবী আমাকে ডাকছিলে কেন..??
ভাবীঃ সকালে তো ভালোভাবে নাস্তা করলি না তাই তোর জন্য খাবার রান্না করেছি! তাড়াতাড়ি করে খাবার গুলো খেয়ে নে৷
আমিঃ হুম আমি গিয়ে টেবিলে বসছি তুমি খাবার নিয়ে এসো.।
তারপর আর কিছু না বলে খাবার টেবিলে গিয়ে বসলাম। তখন ইরা ওর হাতে করে খাবার নিয়ে এলো৷
খাবার গুলো নিয়ে এসে আমার সামনে রাখল এবং একে একে খাবার গুলো দিতে রাখল।
খাবার গুলো খেয়ে আমি আমার রুমে চলে এলাম।
রুমে এসে ঘুমিয়ে গেলাম। কারণ আজকে ঘুম অনেক কম হয়ে গেছে।
ঘুম ভাংল নরম কিছুর স্পর্শে। আমি ঘুম খেলে মাথার কাছে তাকালাম! কারণ স্পর্শ আমার মাথায় অনুভব করেছি।
মাথার কাছে তাকিয়ে দেখি ইরা বসে থেকে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
একি ইরা এখানে কেন কি কাজে এসেছে এটা নিয়ে আমার মনে একটা প্রশ্ন জাগল।
শুয়া থেকে ওঠে বসতে বসতে ইরাকে বললাম
আমিঃ তুমি আমার রুমে কি করছো..??
ইরাঃ এমনি তোমাকে দেখতে এসেছিলাম কিন্তু এসে দেখি তুমি ঘুমাচ্ছো.।
আমিঃ কি মনে করে আমাকে দেখতে এসেছিলে হুম.??
ইরাঃ এমনি এসেছিলাম কেন তোমাকে দেখা যাবে না নাকি..??
আমিঃ আমিতো সেটা বলিনি যে আমাকে দেখা যাবে না অবশ্যই দেখা যাবে।
ইরাঃ তাহলে আর কথা বলো না কেমন এখন তুমি রেডি হয়ে নাও।
আমিঃ কেন.????
ইরাঃ আমাকে নিয়ে বাইরে ঘুরতে যাবে তাই এবং আমি যে পাঞ্জাবী দিয়েছি সেটা পড়বে কিন্তু..!!
আমিঃ ঠিক আছে তুমি যাও আমি রেডি হয়ে আসছি.।
ইরা চলে যাওয়ার পর আমি ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বের হলাম। তারপর আলমারী থেকে ইরার দেওয়া পাঞ্জাবী বের করে পড়ে নিলাম।
রেডি হয়ে নিচে এসে ইরার জন্য অপেক্ষা করছি তখন ভাবী আমার কাছে এসে বলল।
ভাবীঃ ইরাকে বাইরে নিয়ে যাচ্ছিস ভালো কথা তবে তাড়াতাড়ি করে বাসায় ফিরে আসিস.!!
আমিঃ ঠিক আছে আসব আসার সময় তোমার জন্য কি নিয়ে আসব একটু বলো..??
ভাবীঃ আমার জন্য তোর যেটা ভালো লাগে সেটাই নিয়ে আসিস।
আমিঃ ঠিক আছে তুমি গিয়ে দেখতো ইরা রেডি হয়েছে কিনা..??
ভাবীঃ ঠিক আছে তুই থাক আমি গিয়ে দেখে আসছি ইরা রেডি হয়েছে কিনা..!!
ভাবী ইরার রুমের দিকে যাবে তখনি দেখলাম ইরা নিচে নামছে। ইরাকে দেখতে একদম পরীর মতো লাগছে। নীল একটা শাড়ি পড়েছে৷ দেখতে দারুণ লাগছে।
আমি ইরার দিকে তাকিয়ে আছি৷ এটা ইরা বুঝতে পেরে আমাকে বলল।
ইরাঃ এভাবে তাকিয়ে না থেকে চল যাওয়া যাক নাহলে রাত হয়ে যাবে..।।
কথাটা শুনে আমার হুশ ফিরল৷ আমি নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম হুম চলো যাওয়া যাক।
তারপর ইরাকে নিয়ে বাসার বাইরে এসে বললাম৷
আমিঃ কোথায় যাবে..??
ইরাঃ এখানে সুন্দর কোন জায়গা আছে সেখানে আমাকে নিয়ে চলো..।।
আমিঃ নদীর পাড়ে যাবে.?
ইরাঃ হুম যাওয়া যায়।
আমিঃ ঠিক আছে তুমি এখানে দাড়াও আমি বাইক নিয়ে আসছি..!!
বলে গ্যারাজ থেকে বাইকটা নিয়ে ইরার সামনে এলাম। ইরা বাইকে ওঠে পড়ল৷ তারপর নদীর পাড়ের দিকে যেতে লাগলাম।
মাঝ রাস্তা আসতেই ইরা এমন একটা কাজ করল যেটার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না। কারণ ইরা আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল।
আমি এইসব একদম পছন্দ না তাই ইরাকে বললাম।
আমিঃ তুমি আমাকে এভাবে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলে কেন.??
ইরাঃ আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই এভাবে জড়িয়ে ধরেছি..!!
আমিঃ আমাকে ছেড়ে দাও আমার বাইক চালাতে অসুবিধা হয়।
ইরাঃ আরে কিছুই হবে না চুপ চাপ বাইক চালানোতে খেয়াল করো তাই হবে।
আমিঃ তোমাকে ছাড়তে বলছি ছাড়ছো না কেন আমার এইসব পছন্দ না.?
ইরাঃ কেন পছন্দ না জানতে পারি…??
আমিঃ আমি বললাম তো এইসব আমার পছন্দ না মানে পছন্দ না কিসের জন্য পছন্দ করিনা এটা কি তোমাকে বলতে হবে।
ইরাঃ না বললে আমি ছাড়ব না
এভাবে অনেকবার ইরাকে ছেড়ে দিতে বললাম। কিন্তু ইরা আমাকে ছাড়বে না। ওর সাথে কথা বলতে বলতে নদীর কাছে চলে এসেছি।
ইরা একটা ফুচকার দোকান দেখিয়ে সেখানে বাইক থামাতে বলল।
আমি ফুচকার দোকানের সামনে বাইক থামানোর পর ইরা বাইক থেকে নেমে আমাকে বলল।
ইরাঃ তুমি বসে আছো কেন তুমিও বাইক থেকে নামো তাড়াতাড়ি.??
আমিঃ এখানে বাইক থামাতে বললে কেন..??
ইরাঃ আমি ফুচকা খাবো সাথে তুমিও খাবে
আমিঃ এটা আগে বললেই হতো।
বলে বাইক থেমে নেমে দু প্লেট ফুচকার অর্ডার দিলাম৷
কিছুক্ষণ পর ফুচকা দিয়ে গেল। আমি ফুচকা খাচ্ছিলাম হঠাৎ করে আমার অনেক ঝাল ধরে গেল।
ইরার দিকে তাকিয়ে দেখলাম ইরা আরামে খাচ্ছে। এদিকে আমার ঝালের জন্য চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগল। আমি ঝাল খেতে পারি না।।
আমার ঝাল ধরেছে এটা ইরা বুঝতে পেরেছে তাই ফুচকার বিলটা দিয়ে। আমাকে পানি খেল আমি পানি খেলাম তবুও আমার ঝাল কম হলো না
আমি কি করব কিছুই বুঝছি না ইরাও কি করবে সেটা বুঝছে না।।। হঠাৎ করে ইরা দেখল পাশে একটা বট গাছে আছে।
ইরা আমাকে সেখানে নিয়ে গেল। তারপর আমাকে বলল।
ইরাঃ তোমার ঝাল লাগছে নাকি..??
আমিঃ প্রচুর ঝাল লাগছে কি করব একটু বলে দাও..??
ইরাঃ ঠিক আছে তুমি চোখ বন্ধ করো।
আমিঃ আমি এখন চোখ বন্ধ করতে পারব না
ইরাঃ দাড়াও।
বলে ইরা আশে পাশে দেখে নিল কেউ আছে কিনা কাউকে না দেখতে পেয়ে ইরা মনে মনে কি ভাবল সেটা জানি না
কিন্তু তারপর ইরার এমন একটা কাজ করবে যেটার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না।
#চলবে