আমি_তোমার_গল্প_হবো,পর্ব: ১০,১১
জাহান আরা
পর্ব: ১০
বন্যার মৃত্যুর কথা শুনতে শুনতে শবনমের চোখে জল চলে এলো।
ইশশ,কি কষ্ট এই ছেলেটার!
শবনম মনে মনে বললো,”আমি ভালোবেসে তোমার মনের সব জ্বালা দূর করে দিবো।”
প্রলয় আর শবনম বাসায় ফিরলো দুপুরে।রাহেলা বানু ততক্ষণে মেয়ের শোক কিছুটা সামলে নিয়েছেন।
শ্রাবণীর সাথে বসে কথা বলছেন।
প্রলয় বাসায় ঢুকেই একটা ব্যাগ শ্রাবণীর দিকে ছুঁড়ে মেরে বললো,”শাড়ি পরে ভাইরে একটা সালাম দিয়ে যা তো পিচ্চি”
শ্রাবণীর মন খারাপ হয়ে গেলো।প্রলয় ভাই কখনো বুঝতেই চায় না কেনো জানি শ্রাবণী এখন আর পিচ্চি নেই,বড় হয়েছে।বিশ্ববিদ্যালয় যায় এখন শ্রাবণী।
মাঝে মাঝে শ্রাবণীর মনে হয় প্রলয় ভাই সব জানে,সব বুঝে তবুও ভান করে না বুঝার।
আবার মাঝে মাঝে মনে হয় প্রলয় ভাই তাকে বোনের চোখে দেখে।
শ্রাবণী জানে শ্রাবণী ভুল করেছে প্রলয় ভাই কে এরকম ভালোবেসে কিন্তু এ ও জানে ভুল না করেছে বলেই সেটা ভালোবাসা।
ভালোবাসা সব সময়,সব যুগেই ভুল ছিলো সবার জন্য।
শবনম রুমে যেতেই শ্রাবণী জিজ্ঞেস করলো,”উনি কে খালা?”
রাহেলা বানু জবাব দিলেন,”ও তো শবনম,অশ্রু বিন্দুর টিচার।”
শ্রাবণীর মনে হলো সে যেনো ভারমুক্ত হলো কথাটা শুনে।প্রলয় ভাই বিয়ে করে নি এর চাইতে খুশির খবর আর কি হতে পারে শ্রাবণীর জন্য।
খুশির চোটে খালার গালে একটা চুমু খেলো শ্রাবণী।
তারপর খালার রুমে চলে গেলো শাড়ি পরতে।
জলপাই রঙের একটা জামদানি শাড়ি আর আরেকটা লাল রঙের জামদানি।
শ্রাবণী জলপাই রঙের জামদানি শাড়িটি পরলো।
চুল ছেড়ে দিয়ে ঠোঁটে লিপস্টিক লাগিয়ে রুম থেকে বের হলো।
দুপুরে শীত কিছুটা কম।শবনম ঠিক করলো আজকে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গোসল করবে।
যেই ভাবা সেই কাজ।
শাওয়ার ছেড়ে শবনম ভিজতে লাগলো।
ঠান্ডায় দাঁতে দাঁত লেগে যাচ্ছে কিন্তু শবনমের সেদিকে খেয়াল নেই।
মন মতো ভেজার পর শবনম গোসল সেরে বের হলো।
ভেজা চুল পিঠের উপর ছড়িয়ে দিয়ে শবনম আয়নার সামনে বসে চোখে গাঢ় করে কাজল দিলো।কপালে নীল টিপ।
শবনম বুঝে গেছে প্রলয় সাজগোজ পছন্দ করে না।
হাফ সিল্কের আকাশীরং শাড়িটি পারলো শবনম।
তারপর রুম থেকে বের হলো।
ক্ষিধে পেয়েছে ভীষণ শবনমের।
শবনম গিয়ে প্রলয়ের পাশের চেয়ারে বসলো। শ্রাবণী বসেছে প্রলয়ের বিপরীতে।
খাবার টেবিলে বসে শ্রাবণী তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে শবনমের দিকে।
এই মেয়েটা এতো সুন্দর কেনো?
শ্রাবণীর বুকের ভিতর ধক করে জ্বলে উঠলো যেনো।
প্রলয় যদি শবনমের প্রেমে পড়ে যায়!
হাতের কাছে আগুনের মতো রূপসী থাকলে পুরুষের হাত তো পুড়বেই যদি সে মহাপুরুষ না হয়।
প্রলয় কি মহাপুরুষ?
কান্না দলা পাকিয়ে শ্রাবণীর গলার কাছে এসে আটকে রইলো।
শ্রাবণী বুঝতে পেরেছে খুব দ্রুত প্রলয় কে বলে দিতে হবে সে প্রলয় কে ভালোবাসে,ভীষণ রকম ভালোবাসে।
প্রলয় খাবার মাঝে এক বার শবনমের দিকে তাকালো।
তারপর বাম হাত দিয়ে শবনমের কপালের টিপ খুলে ফেললো।
পুরো ব্যাপার টা শ্রাবণী লক্ষ্য করলো।
কিন্তু কিছুই করার নেই শ্রাবণীর।
খাওয়ার পর শবনমের উদ্দেশ্যে প্রলয় বললো,”ইসলামে মেয়েদের কপালে টিপ পরার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আছে জানো তুমি?
হজরত ইব্রাহিমকে (আ.) আগুনে পুড়িয়ে মারার জন্য নমরুদ যখন একটি ১৮ মাইলের বিশাল অগ্নিকুণ্ড নির্মাণ করে তখন সেটি এত বড় ও ভয়াবহ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, কোনো মানুষের পক্ষে হজরত ইব্রাহিমকে (আ.) সেখানে নিয়ে নিক্ষেপ করা সম্ভব হলো না।
নমরুদের নির্দেশে একটি চরকা বানানো হলো। যার মাধ্যমে হজরত ইব্রাহিমকে (আ.) ছুড়ে আগুনে নিক্ষেপ করা যায়। আল্লাহ তায়ালার কুদরতি নির্দেশে রহমতের ফেরেশতারা চরকার একপাশে ভর করে থাকায় সেটি ঘুরানো যাচ্ছিল না। তখন শয়তান নমরুদকে কুবুদ্ধি দিল- কিছু নগ্ন মেয়ে (পতিতা) এনে চরকার সামনে বসিয়ে দিতে।কারণ এমন জঘন্য পরিবেশে ফেরেশতারা থাকতে পারেন না।
নমরুদ তাই করল। তখন ফেরেশতারা চরকা ছেড়ে চলে গেল,আর হজরত ইব্রাহিমকে (আ.) আগুনে নিক্ষেপ করা সম্ভব হলো। এই ঘটনার পরবর্তী সময়ে ওই মেয়েগুলোকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়া হলো এবং তাদের মাথায় তিলক পরানো হলো। যেটা বর্তমানে আমাদের কাছে টিপ নামে পরিচিত।
মুসলিম মেয়েদের জন্য এজন্য টিপ পরা জায়েজ না।”
শবনম অবাক হলো,ভীষণ রকমের অবাক হলো প্রলয়ের কথা শুনে।
কিছু না বলে নিজের রুমে চলে গেলো।
সাহস করে আজকে মা’কে ফোন দিবে বলে সিদ্ধান্ত নিলো।মা’কে ফোন দিয়ে বলবে সেদিন এভাবে চলে না আসলে আজকে এরকম একজন চমৎকার মানুষের খোঁজ পেতো না শবনম।
দুইবার রিং হবার পর তিনবারের সময় শবনমের মা ফোন রিসিভ করলো।
এক অদ্ভুত রকমের জড়তা শবনম কে পেয়ে বসলো।ভয়ে,লজ্জায়,অনুতাপে কথা বলতে পারছে না।
মা মেয়ের এই অদ্ভুত মৌনতার পিছনে জমে থাকা কষ্ট কেউ জানে না।
দুজনের কেউই জানে না অপরজন ও যে তার মতো নিরবে অশ্রু বিসর্জন দিচ্ছে।
শবনম ফোন কেটে দিলো।
কিছুক্ষণ পর আবার কল দিলো।
এবার আর চুপ না থেকে মা’কে জিজ্ঞেস করলো,”কেমন আছো মা?”
ওপাশ থেকে ফোঁপানি ছাড়া কোনো শব্দ এলো না।
শবনম কেঁদে দিলো।
শবনমের কান্না থামার পর শবনমের মা বললো,”আমাকে ক্ষমা করে দিস,আমি অনেক বড় ভুল করতে যাচ্ছিলাম রে শবনম। ৫লক্ষ টাকার জন্য তোকে বিয়ে দিতে চেয়েছি ওরকম একটা লোকের সাথে।তুই চলে যাওয়ার পর জানতে পারি ওই লোকটা এভাবে বিয়ে করে মেয়েদেরকে দিয়ে পতিতাবৃত্তি করায়।”
শবনম মা’কে বললো,”এভাবে চলে না আসলে আমি জানতাম না মা পৃথিবীতে কতো ভালো মানুষ ও আছে।তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও।”
চলবে….???
#আমি_তোমার_গল্প_হবো
পর্ব: ১১
জাহান আরা
৬ মাস পর……
টানা চারদিন প্রলয়ের রুমের দরজা বন্ধ।শবনমের অস্থিরতা বেড়েই চলেছে যেনো।কি হয়েছে মানুষটার?
একবার ও কেনো বের হচ্ছে না রুম থেকে।রাহেলা বানু মাঝেমাঝে দরজার সামনে গিয়ে ডাকেন প্রলয়,প্রলয় করে।
কিন্তু প্রলয় দরজা খোলা না।
রাহেলা বানু আগেও দেখেছেন ছেলের এরকম অভ্যাস তাই আর বেশি অস্থির হন নি।তবুও মনের মধ্যে একটা খুতখুত রয়ে গেছে।
কেনো এরকম করে প্রলয়?
শবনম এই চারদিন খাওয়া দাওয়া করতে পারে নি ঠিক মতো।
সোফায় বসে প্রলয়ের রুমের দিকে তাকিয়ে আছে শবনম। রাহেলা বানু স্কুলে গিয়েছেন নাতনীদের নিয়ে।
শবনম অপলক তাকিয়ে দেখছে দরজাটা।
হঠাৎ করেই দরজা খুলে প্রলয় বের হয়ে এলো।
শবনমের দেহে যেনো প্রাণ ফিরে এলো।
ইচ্ছে করছে এক ছুটে গিয়ে প্রলয় কে জড়িয়ে ধরে।
প্রলয় ধপ করে সোফায় বসে পড়লো।শবনমের দিকে ঘোলা দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,”এক কাপ চা খাওয়াবে?”
বিনা তর্কে শবনম উঠে গেলো।চা এনে প্রলয়ের সামনে রাখলো।
চা খেয়ে প্রলয় কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে পড়ে রইলো।
তারপর শবনমের দিকে তাকিয়ে বললো,”আমি যদি তোমাকে একটা রিকুয়েস্ট করি,তুমি কি রাখবে?”
শবনম বলে ফেললো,”আপনি আমাকে বিষ খেতে বললে আমি তাও খাবো,আপনার এক কথায় আমি প্রাণ বাজি রাখতে রাজি।বলেন আপনি।”
প্রলয় চোখ বন্ধ করে ভ্রু কুঁচকে ফেললো। তারপর বললো,”শ্রাবণকে মনে আছে তোমার?”
শ্রাবণ!
শবনমের মনে পড়ে গেলো শ্রাবণের কথা।লম্বা,ফর্সা সেই ছেলেটা।যে সারাক্ষণ হাসিখুশি থাকে।শবনমের জীবন যার কারনে বদলে গেছে।
মাথা নেড়ে সায় দিলো শবনম।
“শ্রাবণের সাথে যদি আমি তোমার বিয়ের ব্যবস্থা করি?”
মুহুর্তেই শবনমের মনে হলো তার মাথায় যেনো আকাশ ভেঙে পড়েছে।
কি বললো প্রলয় এটা?
কিভাবে পারলো এরকম নিষ্ঠুর একটা কথা বলতে শবনমকে?
একটু কি বুক কাঁপে নি প্রলয়ের?
শবনম কাঁপাকাঁপা গলায় জবাব দিলো,”আমি তো আপনাকে….. ”
কথা শেষ করতে পারে নি শবনম।তার আগেই প্রলয় বলে উঠলো,”আমাকে শ্রাবণী ভালোবাসে,প্রচন্ড ভালোবাসে।আর আমার পক্ষে সম্ভব না কাউকে ভালোবাসা।যদি ভালোবাসতামই তবে আমি শ্রাবণী কে ভালোবাসতাম।এতো ভালোবাসা পায়ে ঠেলা যায় না।
কিন্তু ভালোবাসার উপর আমার বিশ্বাস নেই।
আমি কাউকে নিজের জীবনে আনতে চাই না।”
প্রলয়ের এরকম নিষ্ঠুর কথা শবনমের সহ্য হলো না।মনে হলো পৃথিবীর সবচেয়ে পাষাণ মানুষটা তার সামনে বসে আছে।
কাকে ভালোবাসলো সে?
এরকম একটা নির্দয় মানুষকে?
এই মানুষটাকেই কি-না শবনম ভেবেছে পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো মানুষ!
“তোমার এতোবড় একটা উপকার করেছে যেই ছেলে তার কাছে তো তুমি ঋণী।তার ঋণ পরিশোধ করার জন্য হলেও তো তোমার উচিৎ ওর স্বপ্ন পূর্ণ করা।”
প্রলয় উঠে গেলো শবনমের সামনে থেকে।শবনম নির্বাক হয়ে বসে আছে।
এতোবড় ধাক্কা খাবে শবনম ভাবে নি?
সেদিন বিকেলেই শ্রাবণের বাবা মা এলো প্রলয়দের বাড়ি।বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে।শবনম নির্বাক হয়ে বসে আছে নিজের রুমে।
শবনমের মা শাহেদা ও এসে হাজির।শাহেদা বেগম শবনমকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলেন।
শবনম কিছু বললো না।সমস্ত ভাবাবেগের উর্ধ্বে চলে গেছে যেনো শবনম।
শাহেদা বেগম রাহেলা বানুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন আর বলছেন,”আমার মেয়ের ভাগ্য এতো ভালো হবে আমি ভাবি নি আপা।আল্লাহ আমার মেয়ের ভাগ্যে এতো বড় ঘরের বউ হওয়া রেখেছে আমার ভাবনাতে ছিলো না।
আমি মেয়ের কপালে বুঝি আল্লাহ এতো সুখ রেখেছে।”
রাহেলা বানু শাহেদা বেগম কে জড়িয়ে ধরে বসে আছেন।তার মুখে হাসি।তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শবনমের বিয়ের সব দায়িত্ব তার।সব খরচ তিনি বহন করবেন।
শ্রাবণের বাবা মা এসে রিং পরিয়ে গেলো শবনমকে।
২দিন পর শুক্রবারে বিয়ের দিন ঠিক করা হলো।
এতো দ্রুত এতোকিছু হয়ে যাবে শবনমের ভাবনাতেও ছিলো না।একদিনের মধ্যেই এনগেজমেন্ট হয়ে গেলো!
তবে কি প্রলয় আগে থেকেই সব প্ল্যান করে রেখছিলো।
কাঁদলো না শবনম। কিছুতেই কাঁদবে না।
ভুল মানুষকে ভালোবেসেছে,সেই ভুল মানুষের জন্য নিজের চোখের পানি ফেলবে না শবনম।
রাতে শ্রাবণ ফোন দিলো শবনমকে।
৩ বার ফোন বেজে বেজে থেমে গেলো।শবনম রিসিভ করলো না।
আবার ফোন দিলো শ্রাবণ। শবনম রিসিভ করে চুপ করে রইলো।
শ্রাবণ একদমে বলতে লাগলো,”হ্যালো,হ্যালো।শবনম, শবনম।
কথা বলো শবনম।
আজকে আমার সাথে একটু কথা বলো শবনম। ”
“বলেন।”
“একটু বারান্দায় আসবে শবনম? ”
“কেনো? ”
“আসো না,প্লিইইইইজ……”
ভীষণ বিরক্ত হলো শবনম। তবুও বিরক্তি চেপে রেখে বারান্দায় গেলো।
একটা একটা করে বেলুন উড়ছে বারান্দার সামনে। সবগুলো বেলুনে একটা একটা শব্দ লেখা।বেলুনের ভিতর লাইট জ্বলছে।
শবনম চুপ করে তাকিয়ে দেখছে,সবগুলো বেলুন একসাথ করলে লেখাটা হবে,”শবনম,ভীষণ ভালোবাসি তোমাকে।”
হাসি পেলো শবনমের।
কি বাচ্চামি করছে ছেলেটা!
তারপর পরই একটা সাদা পায়রা উড়ে এলো শবনমের কাছে।পায়রার পায়ে একজোড়া পায়েল বাঁধা,সাথে একটা চিরকুট।
শবনম খুলে হাতে নিলো।চিরকুটে লিখা,”শবনম,
নাকটি যেন ছোট বাঁশি। ওইটুকুন বাঁশিতে কী করে দুটো ফুটো ফুটো হয় জানি নে। নাকের ডগা আবার অল্প অল্প কাঁপছে। গাল দুটি কাবুলেরই পাকা আপেলের মতো লাল টুকটুকে, তবে তাতে এমন একটা শেড রয়েছে যার থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় এটা রুজ দিয়ে তৈরি নয়। চোখ দুটি নীল না সবুজ বুঝতে পারলুম না। পরনে উত্তম কাটের গাউন। জুতো উঁচু হিলের।
আমার লিখা না এটা।সৈয়দ মুজতবা আলী তার বিখ্যাত প্রেমের উপন্যাস শবনমে,শবনমের রূপের বর্ণনা দিয়ে লিখেছেন এটা।আমি শুধু আশ্চর্য হচ্ছি এটা ভেবে যে,উনি কিভাবে জানলেন আমার শবনম এরকম।আমার শবনমের রূপের বর্ণনা এতো বছর আগে তিনি দিয়ে গেলেন কিভাবে তার শবনম উপন্যাসে?
তবে কি,তুমিই ছিলে তুর্কি বংশোদ্ভূত আফগান ধনাঢ্য ও সম্ভ্রান্ত পরিবারের কন্যা আর আমিই তোমার মজনুন?তুমি বলেছিলে, “বাড়িতে থেকো,আমি ফিরবো।”
আমি এতো বছর তো সেই অপেক্ষাতেই ছিলাম।শবনম,এখনো কি তোমার সময় হয় নি বাড়ি ফেরার?
আমার হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা গ্রহণ করে ফিরে আসো শবনম।
আমি চাতক পাখির মতো তাকিয়ে আছি তোমার পানে শবনম।
আর কতো অপেক্ষায় রাখবে?”
শবনম চিঠির পালটা জবাবে লিখলো,”আর বেশিদিন থাকতে হবে না।শীঘ্রই ফিরবো।”
পায়রা উড়ে গেলো চিঠি নিয়ে।শবনমের বুক ছিড়ে একটা দীর্ঘশ্বাস বের হলো।
কোথায় যেনো পড়েছিলো,”তাকে কষ্ট দিও না,যে তোমাকে ভালোবাসে।”
কিছুতেই কষ্ট দিবে না শবনম শ্রাবণকে।
প্রলয় দেখুক কি ভীষণ ভালোবাসা শবনম দিতে পারে কাউকে।
হিংসে হোক প্রলয়ের শবনম আর শ্রাবণের ভালোবাসা দেখে। অনন্ত প্রলয় কে কষ্ট দেয়ার জন্য হলেও শবনম ভালোবাসবে শ্রাবণ কে।
ভীষণ ভালোবাসবে…….
চলবে…..?