গল্প :- Accounting Teacher,পর্ব :-৩১,৩২,৩৩
লেখা :- Ritu Rosni
Part 31
-: রাত্রি তো রাত্রির শশুড় বাড়িতে চলে গেছে আর ঋতু ও ঋতুর শশুড় বাড়িতে😊
—কি বলছো মা তুমি এসব??কিছুই তো বুঝতেছি না😒
—–সব ঋতুর মাথার উপর দিয়ে চলে যাচ্ছে।
তবে এটা ভেবে খুশি লাগছে যে অবশেষে ওর জল্লাদ #Accounting_Teacher কেই Husband হিসেবে পেলো।
অন্য কারোর সাথে আর বিয়ে হয়নি😊খুশিতে তো লুঙ্গি ড্যান্স💃💃💃💃দিতে ইচ্ছা করছে।কিন্তু সামনে তো মুরুব্বি রা সবাই আছে কি ভাববে তাই আর দেয়া হলো না।
কিন্তু একটা জিনিস মাথায় আসছে না এতকিছু হলো কি করে?? ☺
শুভ্রের আম্মু:ওয়েট আমি তোদের পুরো ব্যাপার টা ক্লিয়ার করে বুঝিয়ে দিচ্ছি[নুপুর ঋতুকে অনেক বার বলছে ওর বাবা মা,অভি কে জানাতে যে ওর এ বিয়েতে কোনো মত নেই,
ও তোকে ভালোবাসে।কিন্তু ঋতু ওর বাবা মায়ের সম্মানের কথা ভেবে জানায় নি।নিজে সব কষ্ট মেনে নিয়ে নকল হাসি এনে মুখে বিয়ের পিড়িতে বসেছিল।চোখের সামনে নিজের বেস্টুর কষ্ট সহ্য হচ্ছিল না তাই ঋতুর ওয়াদা ভুলে নুপু অভিকে সব টা জানায়,জানায় তোরা দুজন দুজনকে কতোটা ভালোবাসিস।ঋতুর ডাইরি টা অভিকে দিলে ও ঋতুর বাবা মাকে সব টা জানায়।কারণ অভি জানতো ঋতুর সাথে অভির বিয়ে টা হলে ৪ টা জীবন তীলে তীলে নষ্ট হতো।
কখনোই ঋতুর মনে জায়গা করে নিতে পারতো না।
অভি ঋতুর বাবা মাকে সব বুঝিয়ে রাজি করায়।তোরা হয়তো দুজনে কেউই কবুল বলার সময় নাম শুনিস নি।
তাই বিষয় টা বুঝতে পারিস নি।আর তোদের দুজনকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য এভাবে গ্রামে আনার নাটক করা হলো।]
—-সবই তো বুঝলাম কিন্তু রাত্রি??(শুভ্র)
—রাত্রি???ও রাফি নামের একজনকে ভালোবাসতো।
তোর আঙ্কেল আন্টি রাফির বাবা মায়ের সাথে কথা বলে ওদের দুজনের বিয়ে দিয়ে দিছে।
—আর অভি কোথায়????(শুভ্র)
—অভি আজকে রাত ১০ টার ফ্লাইটে Australia চলে যাচ্ছে।আর যাওয়ার সময় এই চিঠি টা ঋতু কে দিয়ে গেছে।
—কাঁপা কাঁপা হাতে চিঠি টা নিলাম।
.
‘মায়পরী আমি জানি তুমি এখন আমার লেখা চিঠি টা পড়ছো।
কিন্তু জানো কি মায়াপরী,তুমি যখন এই চিঠি টা হাতে পাবে তখন আমি তোমার থেকে মাইল কে মাইল😒যোজন যোজন দুরে।
জানো মায়াপরী,তোমার সাথে চলতে ফিরতে কখন যে তোমার পাগলামি গুলোর প্রেমে পড়ে গেছি নিজেও জানি না।
তুমি যখন খিলখিলিয়ে হেসে উঠতে তখন আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো চেয়ে থাকতাম।
মনে হতো নিজের জীবনের বিনিময়ে হলেও সারাজীবন এই হাসি টা ধরে রাখবো।কখনো কোনো কালো ছায়া কে পড়তে দিবো না তোমার গায়ে।
কিন্তু বুঝতে পারিনি,নিজেই তোমার জীবনের একটা কালো ছায়া হবো।
কি কপাল আমার,ভেবেছিলাম একেবারে সবাইকে রাজি করিয়ে তোমায় আমার মনের কথা,আমার হৃদয় রাজ্যে তোমায় নিয়ে কল্পনার জগৎে কল্পরানী বানাবো।
তাই সেদিন তোমার কাছে যখন ছুটে যাচ্ছিলাম ঠিক তখনি একটা ব্রেকফেল হওয়া কার এসে ধাক্কা দিয়ে চলে যায় তোমায়।জানো মায়াপরী,সেদিন হয়তো শারীরিক ভাবে আহত তুমি হয়েছিলে কিন্তু আমার যেনো মনে হচ্ছিলো পৃথিবীতে আমার অক্সিজেন টাই শূন্য হয়ে গেছে।মনে হচ্ছিল আমার কলিজা টা কে কেউ জোর করে টেনে হিচরে নিয়ে যাচ্ছে আমার থেকে।পাগলের মতো ছুটে গিয়েছিলাম তোমার কাছে।
মনে হচ্ছিল কেউ ছুড়ি দিয়ে কেউ আমার বুকটাকে ক্ষত বিক্ষত করছিল।
সারা হাসপাতালের লোকজন কান্না করছিল আমার কান্না দেখে।
এর পরে তুমি সুস্থ হলে তোমার বাবা আমার কথা জানায় তোমাকে,আমাদের বিয়ের কথা চলছে সেটা জানায়।
তুমি তখন হ্যাঁ বলেছিলে।আমি ভেবে নিয়েছিলাম তুমিও আমায় ভালোবাসো।
তারপরে আমাদের বিয়ের ডেট ফিক্সড করে বাসা থেকে।
কিন্তু বিয়ের ডেট যতোই এগিয়ে আসছিল তুমি ততোই কেনো যেনো পাল্টে যাচ্ছিলে।সব সময় কেমন যেনো উদাস মনে বসে থাকতে।মনে হতো যেনো সমস্ত রাজ্যের চিন্তা তোমার মধ্যে।
কিছু জিজ্ঞাসা করলে এড়িয়ে যেতে।আমার মনে হতো তুমি কিছু লুকাচ্ছো।ভেতরে ভেতরে কোনো কিছু নিয়ে তিলে তিলে কষ্ট পাচ্ছো।কিন্তু কাউকে বলতে পারছো না।
সেদিন শপিংমলে শুভ্র যখন ঐ মেয়েটিকে জরিয়ে ধরেছিল তখন আমি দেখেছি তোমার চোখে পানি।কিছু হারানোর বেদনা।সেদিন ও তুমি এড়িয়ে গেছো।
আমি সেদিন স্পষ্ট তোমার চোখে শুভ্রের জন্য ভালোবাসা কে দেখেছি।
মায়পরী তোমার বোকারাম কে কি সেলফিশ মনে হয়??
একটাবার বলেই দেখতে,,আমি তো চেয়েছি তুমি সুখী হও,হোক না সেটা অন্যের কাছে।
তোমায় আমি এভাবে চোখের সামনে কষ্ট পেতে দেখতে পারছিলাম না।তোমার ফ্রেন্ড নুপুরকে বললে ও বলতে চায়না।
পরে অনেক রিকুয়েস্টেরর পরে জানায় তুমি শুভ্রকে ভালোবাসো।
আর শুভ্রও তোমাকে।তোমার ওপর রাগ করেই শুভ্র অন্য কাউকে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।
মায়াপরী,ভালোবাসলেই যে তাকে পেতে হবে এমন তো নয়।দূর থেকেও ভালোবাসা যায়।আমি নাহয় দূর থেকেই আমার মায়াপরীকে ভালোবেসে যাবো।
উহু,মায়পরী তুমি আমার কথা শুনে কাঁদছো??তুমি তো জানোই আমি বোকা,কি বলে ফেলি।
কষ্ট পেলে ক্ষমা করে দিও।
মায়াপরী!!ও মায়াপরী একটা কথা রাখবে প্লিজজজ😭😭একটা বার আমায় তোমার মুখে বোকারাম বলে ডাকবা??
খুব শুনতে ইচ্ছে করছে।
আমি কোনো মহৎ ব্যক্তি নই,চোখের সামনে তোমায় অন্য কারো পাশে সহ্য করবো।
হয়তো তখন স্বার্থপর হয়ে কিছু করে ফেলতাম।
তাই তোমার থেকে অনেেেেেেেেেেকককক দুরে চলে এসেছি।😒
শুভ্র অনেক ভালো ছেলে,তোমায় অনেক ভালোবাসে।রাণী করে রাখবে তোমায়।😊
ওকে কখনো কষ্ট দিয়ো মায়াপরী।ভালোবাসা হারানোর যন্ত্রণা খুব কঠিন গো।
তোমাদের নতুন জীবনের জন্য অনেেককক শুভেচ্ছা আর ভালোবাসা রইলো।
ভালো থেকো।
.
ইতি তোমার বোকারাম।
চিঠি টা ঋতু পড়ছিলো এতক্ষণ আর চোখ বেয়ে পানি পড়ে গাল ভিজে যাচ্ছিল।
মানুষটা আমায় এতো ভালোবাসে??আমার সুখের জন্য নিজের ভালোবাসা টাকে সেক্রিফাইজ করে দিলো??
ভালোবাসার অপর নাম ত্যাগ।খুব কষ্ট হচ্ছে অভি ভাইয়ার জন্য।মানুষটা আমায় সারাজীবন নিস্বার্থ ভাবে ভালোবেসে গেছে আর আমি বুঝতেই পারিনি।
.
.
পর্ব :- ৩২
.
.
-: ভালোবাসার অপর নাম ত্যাগ।খুব কষ্ট হচ্ছে অভি ভাইয়ার জন্য।মানুষটা আমায় সারাজীবন নিস্বার্থ ভাবে ভালোবেসে গেছে আর আমি বুঝতেই পারিনি।😰😰
,
সকাল বেলা,,,,,,,
গোসল করে আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুল আঁচড়াচ্ছিলাম।
যদিও এতো সকালে ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস আমার কোনো কালেই ছিলো না।কিন্তু এখন আমি পরের বাড়িতে এসেছি।
বিয়ের আগের সেই নবাবি স্বভাবগুলো পাল্টাতে হবে।
আমি এখন কারো বউ,কারো বউমা,কারো ভাবী।
আমার এখন অনেক দায়িত্ব।
মানুষ একদিনেই তার অভ্যাস গুলোকে পরিবর্তন করতে পারে না।আস্তে আস্তে সময়ের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে হয়।
,
ঘুমিয়ে ছিলাম হঠাৎ মুখে পানির ছিটায় ঘুম ভেঙ্গে গেলো।
চোখ খুলে দেখলাম ঋতু গোসল করে এসে আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুল আঁচড়াচ্ছে।
চুল দিয়ে টপ টপ করে পানি চুইয়ে পড়ছে।
সবে গোসল করেছে দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
নীল শাড়িতে,হাতে কাচেঁর চুড়ি বাজছে রিনিঝিনি যার আওয়াজেে এক মাদকতা আছে😍
,😱চোখে মোটা করে কাজল দেওয়া দেখতে যেনো স্বর্গীয় পরী থেকে কোনো অংশে কম না।
ভেজা চুলের পানি পিট বেয়ে ভিজে যাচ্ছে।
আস্তে আস্তে ওর কাছে গিয়ে ওর চুলে নাক ডুবিয়ে দিলাম।
চুল দিয়ে এক মাতাল করা ঘ্রাণ বের হচ্ছে।চুলের ঘ্রাণে মাতাল করে দিচ্ছে।😍একদম নেশা লেগে যাচ্ছে।
,
গোসল করে ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে চুল আঁচড়াচ্ছিলাম
হঠাৎ ঘারে কারো হাতের ছোঁয়া পেলাম।
স্পর্শ টা চিনতে ভুল হয়নি এটা আমার জল্লাদ ডেভিল বর টারই ছোঁয়া।আমি যেনো ঠান্ডায় জমে যাচ্ছি😉
,
—চুলে নাক ডুবিয়ে ঘাড়ে মুখে নাক ঘোষলাম😍
আস্তে করে ঋতুকে আমার দিকে ঘুরিয়ে ঘাড়ে গলায়💋💋 চুমুতে 💋💋ভরিয়ে দিচ্ছিলাম।
আমি যেনো একটা ঘোরের মাঝে হারিয়ে গেছি।
কি যে করছি নিজেও জানিনা।
পাল্লা দিয়ে হার্টবিট যেনো দৌড়াচ্ছে
ঋতু খামচি দিয়ে আমার শার্ট আকড়ে ধরে রেখেছে।
ওর খামচিতে শুভ্রের হাত দিয়ে যে রক্ত ঝড়ছে সেদিকে শুভ্রের কোনো খেয়াল নেই।
ঋতুর খামচিতে যেনো শুভ্রকে পাগল করে তুলছে।
উন্মাদ হয়ে গেছে শুভ্র😍😍
আস্তে আস্তে ঠোঁট নিচে নেমে এলো,,দুজনের চার ঠোঁট💋💋 এক করে দিছে,,
দুজনেরই নিঃশ্বাস যেনো ভাড়ী হয়ে আসছে আস্তে আস্তে।
দম বন্ধ হবার উপক্রম😍😍
হঠাৎ কি মনে হয়ে যেনো শুভ্র ঋতুকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে সোজা বাথরুমে চলে গেলো।
ঘটনাস্থলে ঋতু পুরাই থ😱😱কি থেকে কি হয়ে গেলো কিছুই বুঝতেছে না ঋতু।
নিজেই তো এসে,,,,,,,,,,,,,,,,,
আবার কি হলো হঠাৎ ধাক্কা দিয়ে ঐভাবে চলেই বা গেলো কেনো?????😒
,
এতক্ষণ যেনো শুভ্র ঘোরের মাঝে ছিলো।ঋতুর নেশায় ডুবে গিয়েছিল।😍😍ডুবেছিল ঋতুর ভালোবাসার অতল সাগরে।
হঠাৎ চোখের সামনে নিজের ইগো টা ভেসে উঠলো।
ঋতুর অবহেলা গুলো চোখের সামনে কড়া নেড়ে জানান দিলো শুভ্রের কষ্টপূর্ণ দিন রাত প্রতিটি মুহূর্তকে মনে করিয়ে দিলো।
নাহহহহহ আমি এতক্ষণ কি করছিলাম এসব???☺আমি ওর কাছে কখনোই ধরা দিবো না।
আমি ওকে বুঝাতে চাই ইগনর,অবহেলা টা কি জিনিস😰
আমি আমার কষ্টের প্রতিটা মুহূর্তকে ওকে দিয়ে উপলব্ধি করাতে চাই।
কিন্তু আমি চাইলেও ওর সামনে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারবো না।
আমি কেনো কোনো পুরুষই পারবে না।যত বড়ই বাঘ হোক না কেনো প্রতিটা পুরুষই বউয়ের কাছে ভেজা বিড়াল😊😊
আমিই বা তার ব্যতিক্রম হবো কেনো।
ওদের মধ্যে আল্লাহ তা’আলা এক বিশেষ গুন দিয়েছে।😍😍
আমি জানি আমার এহেন ব্যবহারে তুমি অনেক কষ্ট পেয়েছ তবে আমার কষ্টেরর কাছে এটা খুবি নগন্য।😒
.
উনার এই ব্যবহার টা আমায় খুব কষ্ট দিচ্ছে।অনেক কষ্টে নিজেকে সংযোত রেখেছি।
আমার কোনো দোষ তো দেখছি না😰নিজেই কাছে ডেকে নিলো আবার কেনোই বা দূরে ছুড়ে ফেলে দিলো।
আমি কি পুতুল নাকি যে ছুড়ে ফেলে দিবে।😭😭
চোখ দিয়ে নোনা পানি ঝড়ছে।
চোখের পানি মুছে,কাপড় ঠিক করে নিচে গেলাম।দেখি সবাই কি করছে।
দেখলাম আন্টি কিচেনে,,,
—কিরে ঋতু!!তুই এতো সকালে উঠেছিস??
আর কি দরকার নিচে এলি কেনো???(শুভ্রের মা)
—উফফফহহহহহ!!আন্টি এত প্রশ্ন করো কেনো??
আগে কোনটার উত্তর দিবো???
—কি বললি???????😡😡😡😡😡😡
—আরে তোমার আবার কি হলো??হঠাৎ সাবানা থেকে রিনা খানের লুক নিলে কেনো???
আমি কিন্তু খুব ভয় পাচ্ছি😒😒
—-ভয় পাওয়াচ্ছি দাড়া😡এতো কষ্ট করে বউমা আনলাম কি আন্টি ডাক শোনার জন্য????মা বলবি মা বুঝলি😊(শুভ্রের মা)
—ওহহহহ!!এই ব্যাপার শাশু মা??😂😂😂
তা শাশু মা এই সকাল বেলা আমার শশুড় মশাইয়ের সাথে রোমান্স করা বাদ দিয়ে কিচেনে কি করছো হুমমম😍😍😍
—শয়তান মেয়ে😂😂এত্ত দুষ্টু হয়েছিস না।(শুভ্রের মা)
–হ জানি আমি দুষ্টু।ওরে আমার লজ্জাবতি শাশু মারে।
থাক আপনারে আর লজ্জায় লাল টমেটো হতে হবে না।
দেন আজকে আমিই সবার জন্য নিজ হাতে চা বানাবো।(আমি)
—-চা বানাবি তুই??😡😡আমি থাকতে তোকে কাজ করতে হবে না।তাছাড়া বাড়িতে কাজের লোক আছে কি জন্যে???
—বারে আমি কি তোমাদের জন্য একটু চা ও করতে পারি না😒(ইনোসেন্ট লুক নিয়ে)
—হয়েছে হয়েছে আর ঢং করতে হবে না।
চা টা করে শুভ্র কেও দিয়ে আসিস।
আর শোন কাপড় পাল্টে আলমারিতে শাড়ি রাখা আছে চেন্জ করে নিস।
এটা গ্রাম,তাই সবাই নতুন বউ দেখতে ছুটে আসবে।
—হু
,
আজকে শুভ্রদের বাড়িতে বউভাতের অনুষ্ঠান চলছে।
শহরে আবার বড় করে করবে।শুভ্রদের সব রিলেটিভস রা ঋতু কে দেখে যাচ্ছে আর প্রশংসায় পঞ্চমুখ😍😍
মাঝে মাঝে দু একজন মুরুব্বি ঋতু কে বিভিন্ন ধরনের ঘরোয়া প্রশ্ন ও করছে।
ঋতু শান্ত মেয়ের মতো চুপচাপ সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাচ্ছে।
শুভ্র তো হা😱😱হয়ে আছে ঋতুকে দেখে।
আরেেেে ঋতুর সাজ দেখে না😊😊এই যে শান্ত হয়ে সবার প্রশ্নের জবাব দিচ্ছে আর সবাই প্রশংসায় পপঞ্চমুখ হচ্ছেন।
মাটির মতো মেয়ে নাকি ঋতু,,,
শুভ্র মনে মনে গালি দিচ্ছে,কতো যে শান্ত ভদ্র তা আমিই জানি।
ওর বাইরে এক রুপ আর ভেতরে এক😆😆😆
.
দেখতে দেখতে কেটে গেলো কয়েকটা দিন।😊😊
.
.
পর্ব :- ৩৩
.
.
:- দেখতে দেখতে কেটে গেলো কয়েকটা দিন।😊😊
এ কয়দিনে ঋতু অনেক চেষ্টা করেছে শুভ্রের সাথে কথা বলার কিন্তু শুভ্র সব সময় ইগনর করে চলে গেছে।
বিয়ের ২সপ্তাহ হতে চললো,প্রয়োজন ব্যতিত হু হ্যাঁ ছাড়া কোনো কথা বলে নি শুভ্র।
,
—আর কতো শাস্তি দিবেন উনি আমায়।উনি কি বুঝেন না আমার কষ্ট হয় উনার এই অবহেলা টা আমি সহ্য করতে পারছিনা😰😰খুব কষ্ট হয়।
দেখানোর মতো হলে বুকঁটা চিরে দেখাতাম।😭😭
,
ভার্সিটিতে যাওয়ার সময় শুভ্র,,,,
আম্মু!!আম্মুউউউহহহহহহ
–কিরে কি হয়েছে??(শুভ্রের মা)
—আমি নিচে অপেক্ষা করছি।৫মিনিটের মধ্যে তোমার গুনধোর বউমা কে বলো রেডি হয়ে যেনো নিচে যাই।
বিয়ে করে কি পড়াশুনা লাটে তুলে দিয়েছে????
বলেই হন হন করে নিচে চলে গেলো শুভ্র।
,
আমি দাড়িয়ে সব কিছুই শুনলাম।আমাকে শুনিয়ে শুনিয়েই কথা গুলো বললো।
আচ্ছা,কথাটা কি ও নিজে এসে আমাকে বলতে পারতো না??আমার সাথে কথা বললে কি ওর মুখে ফোসকা পড়ে যাবে নাকি😰😰
😱😱২মিনিট নাই হতে গাড়ির হর্ন বাজানো শুরু করে দিছে।
আমি তো মানুষ নাকি রোবট??😒এতো তাড়াতাড়ি কেমনে হয়??
নিজে তো শার্ট প্যান্ট পড়ে তাও আমার সব কিছু গুছিয়ে দেওয়া লাগে😂😂
যাই দেরি হলে আবার চিল্লাপাড়া শুরু করে দিবে।
,
রেডি হয়ে নিচে গেলাম দেখলাম উনি ড্রাইভিং সীটে বসে আছে।
আমিও গিয়ে বসে পড়লাম।একবারো আমার দিকে তাকানোর প্রয়োজন মনে করলো না হুহহহহহহহহহ😈
,
দেখলাম কালো রঙের একটা থ্রিপিছ পড়ে,চোখে মোটা করে কাজল দিয়ে চুল গুলো ছেড়ে দিয়েছে।
মন খারাপ করে বসে আছে,ও হয়তো ভাবছে আমি ওর পছন্দেরর কালারের থ্রিপিছ পড়েছি,একবারো তাকালো না।মনে মনে হয়তো আমায় গালি ও দিচ্ছে।😂😂
লুকিং গ্লাসে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছি তবে ওকে বুঝতে দেইনি।
চুল গুলো বাতাসে উড়ছে,কিছু এলোমেলো চুল বার বার আছড়ে আমার মুখে এসে পড়ছে।
এই মেয়েটা তো দেখছি আমায় পাগল করে ছাড়বে।চুল দিয়ে এক ধরণের মিষ্টি ঘ্রাণ বের হচ্ছে।আমি লুকিয়ে সেই স্বাদ নিচ্ছি।
এভাবে চলতে থাকলে তো আর আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারবো না,,,,,,
এই মেয়ে,,,আমায় জেলের ঘাণি টানানোর খুব শখ জেগেছে তাই না???চুল ছেড়ে দিতে কে বলেছিলো তোমায়??
বার বার এসে মুখে পড়ছে,আমার ড্রাইভ করতে সমস্যা হচ্ছে সেটা কি তুমি বুঝতে পারছো না???যত্তসব😡(শুভ্র)
,
😱😱কি বলছেন উনি এসব??আমি উনাকে জেলে পাঠাবো😰আমার সম্পর্কে উনার মনে এমন ধারণা জন্মেছে😭😭
একসময় উনিই আমার চুলে ঘ্রাণ নিতে চাইতো।
আমার চুলের মাঝে বিলীন হতে চাইতো আর আজ😰😰
আমি কি এখন এতোটাই খারাপ হয়ে গেছি😰
বলেই চুল খোপা করে ফেললো ঋতু।
,
দেখলাম ওর চোখে পানি টলমল টলমল করছে।
মনে হচ্ছে এখনি বৃষ্টি নেমে পড়বে।আমার এভাবে রিয়েক্ট করা টা ঠিক হয়নি।কিন্তু কি করবো আমি😰
সব সময় আমার ইগো টা যে চোখের সামনে এসে দাড়ায়।
আমি আর পারছিনা এসব।না পারছি ওরে দূরে সরে দিতে না পারছি আপন করে কাছে টেনে নিতে।
মাঝখানে কোথাও একটা বাধা এসে যাচ্ছে।
,
দেখতে দেখতে গাড়িটা ভার্সিটির গেইট দিয়ে ভেতরে ঢুকে গেলো।পার্কিং করে,,,
তুমি একাই চলে যেও ক্লাস শেষে।
আমার কাজ আছে দেরি হবে যেতে।বলেই অফিসের দিকে চলে গেলো শুভ্র।
,
আমায় দেখে নুপু,কনা,রাজু সবাই ছুটে এলো।
ওদের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম ২ তারিখ থেকে আমাদের ১ম বর্ষের ফাইনাল এক্সাম।কথা টা শুনে মনে হলো আমার মাথায় যেনো বাঁশ পড়লো😱
,
রুটিন তুলে নিয়ে এসে পড়া শুনা শুরু করে দিলাম।
ফেইল করলে মান সম্মানের ব্যাপার।😒সবাই কি বলবে তখন??শুভ্র টিচারের বউ ফেইল করছে😰
এ নিয়ে হাসাহাসি করবে😒আমি চাইনা আমার জন্য উনি কারো কাছে হাসির পাত্র হোক।😊
যে করেই হোক আমায় ফার্স্ট ক্লাস পেতেই হবে😊
,
দেখতে দেখতে পরিক্ষা গুলো শুরু হয়ে গেলো।
আমার সীট পরেছে ৩য় তলার ১০২ নম্বর কক্ষে।
আর সেই রুমে গার্ডে পড়েছে শুভ্র আর নতুন একটা ম্যাডাম😒
,
প্রিপারেশন মোটামুটি ভালোই নিয়ে এসেছিলো ঋতু কিন্তু চোখের সামনে নিজের বরকে অন্য নারীর সাথে হাসাহাসি করা দেখে গা জ্বলে যাচ্ছে ঋতুর।
পারে তো নীলা কে(ম্যাডাম)কেটে কুচি কুচি করে ফেলে।
লেখা বাদ দিয়ে এসব দেখছে আর লুচির মতো ফুঁসছে ঋতু।😡😡
লজ্জা শরম নাই,বেলাজ মাইয়্যা।
শেওড়া গাছের পেত্নি,শাকশুঁটকি,কাইল্লা পেত্নি একটা মন চাচ্ছে কুত্তির চুল কাইট্টা নাড়া করে ছেড়ে দেই।😈লজ্জা করে না অন্যের বরের সাথে এমন হোহোহো করে ক্যালাতে।
আর শুভ্রকে ও বলি হারি,,,😡😡
কই আমার সাথে তো কখনো এমন করে হাসে না।তখন কি মুখটা সুপার গ্লু দিয়ে আটকানো থাকে নাকি😡😡
,
শুভ্র এতক্ষণে খেয়াল করলো,ঋতু লেখা বাদ দিয়ে রাগে ফুঁসছে😂😂
হঠাৎ ঋতুর রাগার কোনো কারণ খুজে পেলো না শুভ্র।
এই মেয়েেেে দাড়াওওওও!!(শুভ্র)
—-জ্বিিিিিি স,,,,স্যারররর কিছু বলবেন???(ওদের বিয়ের কথা শুধু নুপুর জানে তাছাড়া কলেজের কেউ জানে না।তাই স্যার বলেই ডাকছে)
—কখন থেকে দেখছি লেখা বাদ দিয়ে বসে আছো।এটা কি বসে থাকার জায়গা??ঘড়ির কাটা কি তোমার জন্য থেমে থাকবে নাকি??
—সরি স্যার😒
,
কোনো রকমে লিখে চলে এলো ঋতু।পুরো ভার্সিটি জুরে কলরোব বইছে শুভ্র নীলা কে নিয়ে😒
(শুভ্র আর নীলা দুজন ফ্রেন্ডস।দুজনি USA থেকে ডিগ্রি নিয়েছে।আর জব টাও একই ভার্সিটিতে।যেগেতু ফ্রেন্ড আর এখন কলিগ।তাই সব সময় ওরা হাসাহাসি,এক সাথে যাওয়া আসা করে।কিন্তু এটা সবাই নেগেটিভ ভেবে নিয়েছে।ধরে নিয়েছে ওদের মধ্যে কোনো রিলেশন চলছে।😆😆)
ঋতুও তাই ভাবছে সবার মতো😊😊
,
—বাহহহহ!!এজন্যই এখন আমায় অবহেলা করে,পুরাতন প্রেমিকা ফিরে এসেছে বলে কথা।এখন তো আর আমাকে প্রয়োজন নেই।😰এখন তো আমি পচে গিয়েছি।
শুভ্রের সাথে কাটানো মোমেন্ট গুলা মনে করছে আর কান্না করছে ঋতু।তাহলে এসবই কি মিথ্যে ছিলো😰😰এ জন্যই আমায় এতো ইগনর করে চলে ও,,
আমাকে পুরো বিষয়টা ক্লিয়ার করে বললেই তো আমি ওদের পথ থেকে আলাদা হয়ে যেতাম।😰😰
হুমমম মুক্তো করে দিয়ে চলে যাবো আমি তোমায় শুভ্র।
,
ঋতু আগের থেকে অনেক পাল্টে গেছে।এখন আর আগের মতো হাসে খেলে না।😒আগের মতো শুভ্রের সাথে কথা বলার জন্য আগ বাড়িয়ে যায় না।
,
শুভ্র ভাবছে,,অনেক হয়েছে আর এভাবে চলতে দেওয়া যায় না।আমাদের সম্পর্কেরর একটা নাম দেয়া উচিৎ।এভাবে আমি ও আর পারছি না ঋতু কে কষ্ট দিতে।
অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলছি।😰আমায় ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।আপন করে নিবো এবার।
আর কখনোই কোনো ভাবে কষ্ট দিবো না আমি জান।
খুউউউবব বেশি ভালোবাসি আমি তোমায়।
খুব বেশি।যতোটা বেশি ভালোবাসলে আর কাউকে বাসা যায় না।
তোমায় কষ্ট দিয়ে যে আমিও ভালো আছি তা না জান।
সত্যিই আমি তোমাকে ছাড়া ভালো নেই।খুব কষ্ট হয়,তোমার চোখে পানি দেখলে।
বুঁকের পাজর ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়।
আগামীকালকেই এক্সাম শেষ।আর আগামীকালকেই তোমার জন্য অনেকককক বড় সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে😊
,
আজকে ফিন্যান্স পরিক্ষা।😒হিসাব বিজ্ঞান কিছুটা পারলেও এই ফিন্যান্স আমি পারি না।সূত্র গুলো কিছুতেই মনে রাখতে পারি না।
প্রশ্ন গুলাও খুব হার্ড হয়েছে।একটাও কমন পড়েনি।আমার সামনের সীটে বসেছে একজন(সোহান)
ক্লাসের ফার্স্ট বয়।ওর থেকে হেল্প চাইলে ও ওর নিজের খাতাটা ছেড়ে দিয়ে দেখাচ্ছে।
আমি ওর সাথে গল্প করছি আর ম্যাথ গুলা তু্লছি।
,
দুজন ভালোই হাসাহাসি করছে আর পরিক্ষা দিচ্ছে।
আজকে গার্ডে আছে লতিফ স্যার।উনি ঘুমাচ্ছে বসে বসে আর সবাই নকল করায় ব্যস্ত।😁😁
ছেলেটা ভালোই হাসাতে পারে।কিছু মুহূর্তেরর জন্য হলেও কষ্ট টা ভুলে গিয়েছিল ঋতু।
কিন্তু……..
.
.
চলবে……………………