পলাশ_ফুলের_বসন্ত,পর্ব-১৪,১৫

পলাশ_ফুলের_বসন্ত,পর্ব-১৪,১৫
কলমে- দেবিকা_সাহা
পর্ব-১৪

না না এসব হতে দিলে একদম চলবে না।মায়ের সাথে কথা বলতেই হবে। মামার বাড়ির আবদার নাকি!! যখন খুশি তখন আমায় কষ্ট দেবে।আবার যখন ইচ্ছে তখন নিজের মতো করে রূপ বদলাবে।ভাবখানা এমন যেনো কিছুই হয়নি।কিন্তু তা বললে তো আর চলবে না।হয়েছে তো অনেক কিছুই। আর আমি এসব কিছুতেই মেনে নেবো না।মাকেই বা কি বলি,, কোন আক্কেলে সে রান্নাঘরের দায়িত্ব আকাশের হাতে তুলে দিলো!! মা তো দায়িত্ব দিয়েই খালাশ।সে তো আর জানে না যে তার রান্নাঘরের এখন কি অবস্থা। জানতে পারলে দায়িত্ব দেওয়া বেড়িয়ে যেতো।।

মনে মনে আকাশের নামে কয়েক ঘটি বেশি জল খেয়েই পৌষালি ছুটলো তার মায়ের কাছে এক অভিধান ভরা অভিযোগ নিয়ে।

মা তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
— হ্যাঁ সে তো শুনবোই।আমাদেরও অনেক কথা আছে তোর সাথে। আগে আমাদের কথা গুলো শুনে নে।তারপর নাহয় তোর কথা শুনছি।
শোন তোদের বিয়ের ডেট-টা ঠিক হয়ে গেছে মোটামুটি। আমরা আমাদের মতো একটা ভালো দিন দেখেছি।এবার তোদের টাইম সিডিউলটাও দেখে নিতে হবে।কোন সময়টা তোরা দুজনেই অফিস ছুটি নিতে পারবি।সবটা দেখে শুনে ফাইনাল ডেট-টা ফিক্সড করতে হবে।আর শোন বিয়ের তারিখটা কিন্তু এগিয়েছে।তারিখটা কিন্তু আর বেশি পিছোতে বললেও আমরা শুনছি না।তোরা শুধু তোদের সুবিধামতো একটু আগে পড়ে করতে পারিস তারিখটা।

— হ্যাঁ গো পৌষালি এবার আমরা দুই মা-ই কিন্তু খুব এক্সাইটেড আমাদের ছেলেমেয়েদের বিয়েটাকে নিয়ে।তাই আর কোনো কথা শুনছি না।এখন শুধু যা শুনবো সবটা যেনো বিয়ের প্ল্যান রিলেটেড-ই হয়।

— মা তোমরা একদম চিন্তা কোরো না।আমার আর পৌষালি কারোর কোনো প্রবলেম নেই।তোমরা মন দিয়ে আমাদের বিয়ের প্ল্যানিংটা শুরু করতে পারো।
কি পৌষালি তাই তো??

হে ভগবান,, আজ আমি কার মুখ দেখে ঘুম থেকে উঠেছিলাম ঠাকুর!! কি সব একটার পর একটা হয়ে যাচ্ছে সকাল থেকে। আর সবশেষে এই বিয়েটা নিয়ে কথা বলাটা বাকি ছিলো।এখন সেটাও হয়ে গেলো। একেবারে ষোলো কলা পূর্ণ হলো।
আর এই ছেলেটাকে দেখো!! কে বলবে দুদিন আগে উনি মহান উদ্দেশ্যে আমার সাথে কথা বার্তা একেবারে বন্ধ করে দিয়েছিলেন। আর এখন দুদিন যেতে না যেতেই বিয়ে করবে বলে আনন্দে লাফাচ্ছেন।বুঝি না বাপু,, কে যে কি চায়।আগে জানতাম মেয়েদের নাকি প্রচুর মুড সুইং হয়।কিন্তু আজ দেখলাম ছেলেদেরও কিভাবে মুড সুইং হয়।এখন এক কথা।পরমুহূর্তেই আরেকটা কথা।অদ্ভুত।।

— কি রে পৌষালি,, তুই চুপ করে গেলি কেনো হঠাৎ করে?আকাশকে দেকে একটু শিখতে তো পারিস।কি সুন্দর আমাদের চিন্তাটাকে কমিয়ে দিলো। আর তুই?? সেই কখন থেকে চুপচাপ থ হয়ে দাঁড়িয়ে আছিস।যেনো মনে হচ্ছে হঠাৎ করে অদ্ভুত কিছু শুনলি।যেটা আগে কোনদিন শুনিসনি।

— হ্যাঁ মা তুমি ঠিকই বলেছো।তোমার আকাশের থেকে আমার কতো কিছু শেখার আছে।এতো কিছু যে আমি কাউন্ট করেও কমপ্লিট করতে পারবো না।আসলে মহান মানুষ তো!! কিন্তু মুশকিলটা কি বলোতো মা,,আমি স্টুডেন্ট হিসেবে একটু খারাপ। তাই চাইলেও আমি ওনার মতো মহানুভবতা শিখতে পারবো না। এটা আমারই ব্যর্থতা।কি আর করি বলো।সব মানুষেরই কিছু নিজস্ব সীমা পরিসীমা আছে।আর ধরে নাও এটাই আমার পরিসীমা।

পৌষালি যে কথাগুলো আকাশকে শুনিয়ে শুনিয়ে বললো,,সেটা বুঝতে আকশের একটুও সমস্যা হলো না।

আচ্ছা!! এই ব্যপার!! মায়েদের সামনে আমাকে এমনি ভাবে কথা শোনানো তো! আমিও দেখছি এরপর কে বাঁচায় আপনাকে ম্যাডামজি।

কথাগুলো ভাবতে ভাবতেই পৌষালির দিকে একটা অদ্ভুত তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো আকাশ।
আকাশের এই দৃষ্টি অবশ্য পৌষালির চোখ এড়াইনি।ও এরপর খানিকটা ইচ্ছে করেই আকাশের এই দৃষ্টিকে পাত্তা না দিয়ে ওকে শুনিয়ে শুনিয়েই কয়েকটা কথা সাজিয়ে বললো–

— আচ্ছা মা,,তোমরাও না কি যে করো।
— কেনো রে আমরা আবার কি করলাম??
— কি করলে সেটা আবার জিজ্ঞেস করছো? আরে আকাশের তো অফিসের কাজে ব্যাঙ্গালোর যাওয়ার কথা কয়েকদিনের মধ্যে।এরমধ্যেই তোমাদের এই বিয়ের তারিখটা নিয়ে আলোচনায় না বসলেই হচ্ছিলো না? আরে ছেলেটা তো একটা ইম্পর্ট্যান্ট কাজের জন্যই যাচ্ছে বলো। এরমধ্যে এসব নিয়ে ওকে ব্যতিব্যস্ত করা কি উঁচিত হবে? তোমরাই বলো।হাজার হোক কাজটার প্রায়োরিটি কিন্তু সবার আগে।

কথাটা বলতে না বলতেই পৌষালি লক্ষ করলো ওর মা আর আন্টির মুখটাতেও একটা চিন্তার ছাপ পড়েছে।ওদিকে আকাশও বেশ ভ্যাবাচ্যাকা মুখে তাকিয়ে আছে।

যাক ওষুধে কাজ হয়েছে তাহলে। কথাটা ভাবতেই মুখে একটা হাসির রেখা খেলে গেলো পৌষালির।
কথাগুলো বলেই একটু শান্তিতে জল খাচ্ছিলো মেয়েটা।

— আরে এটা কোনো সমস্যাই নয়।আসলে আমি আমার ট্রান্সফারটা একটু পিছিয়েছি বুঝলে।মানে ট্রান্সফারটার খুব একটা দরকার নেই।আর নিতান্তই যদি যেতে হয় তবে বিয়ে করে তোমাকে নিয়ে একেবারে যাবো।

কথাটা শুনেই পৌষালি বেশ জোরেই একটা বিষম খেলো।

কি ম্যাডাম কেমন দিলাম? খুব ভাবছিলেন না যে আমাকে অপদস্ত করবেন!! উহু সেটি আর হচ্ছে না।
কথাগুলো মনে মনে ভাবলেও মুখে কিছু বললো না ছেলেটা।

— কি?? কি বললেন আপনি??
— কেনো ভুল তো কিছু বললাম নাকি? কই আমার তো তা মনে হচ্ছে না।

— এই তোরা আবার এই নিয়ে ঝগড়া শুরু করলি নাকি রে? তবে এটা শুনে বেশ নিশ্চিন্ত হলাম জানিস তো,,যে আকাশের ট্রান্সফারটা পিছিয়ে গেছে।সত্যি হাফ ছেড়ে বাঁচলাম যেনো।
চলুন দিদি আমরা এবার একটু রান্নাঘরের দিকে যাই।দেখি কি অবস্থা ওখানের।লাঞ্চের-ও তো সময় হয়ে গেলো।
— হ্যাঁ হ্যাঁ দিদি চলুন।আমার সুপুত্তুর তো আবার কি না কি স্পেশাল রেসিপি বানিয়েছে।তা গিয়ে দেখি সেটা রান্না হয়েছে নাকি অন্যকিছু।।

— এটা কি হলো?
— যা দেখলে তাই।
— আমি কি দেখতে চেয়েছিলাম কিছু?
— আমি তো দেখাতে চেয়েছিলাম।

অদ্ভুত তো।আপনার সাথে মুখে মুখে তর্ক মানেই সময় নষ্ট। আপনি যান,, গিয়ে কি রান্না করেছেন দেখুন।আমি ঘরে চললাম।

রাগ যে তোমার মিষ্টি
রাগ যে তোমার মিষ্টি আরো, অনুরাগের চেয়ে
সাধ করে তাই তোমায় রাগাই ওগো সোনার মেয়ে।।

আকাশের সুমধুর কন্ঠস্বরে এরকম একটা গান যে ওকেই ডেডিকেট করে গাওয়া হয়েছে,,সেটা আর একটুও বুঝতে অসুবিধা হলো না পৌষালির।
তবে এর উওরে আর কিছু না কথা না বাড়িয়ে আকাশের দিকে একটু বড়ো বড়ো চোখে তাকিয়ে দ্রুত ওখান থেকে বেড়িয়ে চুপচাপ ড্রয়িং রুমের সোফাটাতে বসলো মেয়েটা।

ওদিকে পৌষালির এরকম রূপ দেখে নিজের হাসিকে আর চাইলেও কন্ট্রোল করতে পারছে না আকাশ।।
খুব না?? এখন দেখোই না আর কি কি হয়।।

চলবে

#পলাশ_ফুলের_বসন্ত ( পর্ব-১৫ )
#কলমে – #দেবিকা_সাহা

আকাশের সুমধুর কন্ঠস্বরে এরকম একটা গান যে ওকেই ডেডিকেট করে গাওয়া হয়েছে,,সেটা আর একটুও বুঝতে অসুবিধা হলো না পৌষালির।
তবে এর উওরে আর কিছু না কথা না বাড়িয়ে আকাশের দিকে একটু বড়ো বড়ো চোখে তাকিয়ে দ্রুত ওখান থেকে বেড়িয়ে চুপচাপ ড্রয়িং রুমের সোফাটাতে বসলো মেয়েটা।

ওদিকে পৌষালির এরকম রূপ দেখে নিজের হাসিকে আর চাইলেও কন্ট্রোল করতে পারছে না আকাশ।।
খুব না?? এখন দেখোই না আর কি কি হয়।।

কিছুক্ষন পর খানিকটা নিজের সাথে সময় কাটানোর জন্য নিজের ঘরেই চলে গেলো মেয়েটা।

আচ্ছা সকাল বেলা আমার এলার্ম ক্লকটা বাজলো না কেনো? হ্যাঁ তাই তো।এই চিন্তাটা তো আমার মাথা থেকে একদম বেড়িয়ে গেছিলো।না না ব্যপারটা নিয়ে ভাবতে হচ্ছে তো।না সকালবেলা এলার্ম ক্লকটা গড়বড় করার কথা ছিলো না একদম।আমার দিব্যি মনে আছে। তবে? তবে আর কি!! ভুতে এসে তো আর বন্ধ করবে না।কেউ না কেউ তো নিশ্চিত রয়েছে এর পিছনে। তবে এরকম কে-ই বা করতে যাবে? নাকি সত্যি সত্যি ভুত!!! উফফ আমিও না,, যা তা বকছি।।

— হ্যাঁ ভুত-ই তো।তবে সেই ভুতটা খানিকটা মানুষেরই মতো।মানুষের সাথে তার খুব বন্ধুত্ব।আবার জানো তো সেই ভুত যদি একবার কারো ঘাড়ে চাপে তাহলে আর সেই মানুষটার ঘাড় থেকে নামে না।

একে তো ওর ঘরে আকাশের এরকম বিনা নোটিশে আগমন।আর তার উপর আবার এসে এসব ভুলভাল বকা।আর এইসব কিছুই পৌষালির রাগের আগুনে যেন ঘৃতাহুতির কাজ করছে।

— এই এই এই।এরম ভাবে তাকিয়ে আছো কেনো গো? যেনো মনে হচ্ছে আমাকে এক্ষুনি ভস্ম করে দেবে।

— হয়েছে? আপনার কথা কি শেষ হয়েছে?
— শেষ হতে যাবে কেনো খামোখা? এই তো জাস্ট শুরু হলো।
— অসাধারণ। তাহলে আপনি বলতে থাকুন আপনার যা যা বলার আছে।আমি বরং আসি।
— আসি মানে?? তুমি চলে গেলে আমি কথাটা বলবো কারি সাথে?
— কেনো?? এই ঘরে চেয়ার,টেবিল,দেওয়াল, ঘড়ি সবই আছে।এমনকি ওই যে জানলাটা দেখছেন,,সেটা খুললে রকমারি গাছও দেখতে পাবেন।আপনি চাইলে ওদের সাথেও কথা বলতে পারেন।আর কি বলুন তো,,ওইসব ভুতের গল্প গাছেদের সাথেই করতে হয়।আফটার অল এগাছ সেগাছ ঘিড়েই তো তাদের আস্তানা।তাইনা?? যত্তসব।

— দেখো তুমি কিন্তু খামোখাই রেগে যাচ্ছো।আমি তো তোমার প্রশ্নেরই উত্তর দিতে এসেছি এই ঘরে।
— এই দাঁড়ান দাঁড়ান। আমি আবার আপনাকে কি প্রশ্ন করলাম? আর কখনই বা করলাম?

— কেনো ওই তো এলার্ম ক্লকের রহস্য উদ্ধার করতে ব্যকুল হয়েছিলে। তাই তো বললাম।আসলে সকাল বেলা আমিই এসে তোমার এলার্ম ক্লকের টাইমটা পিছিয়ে দিয়েছি।বেশি না,, অল্প এ-একটু পিছিয়ে দিয়েছি।ওই দু-তিন ঘন্টা আর কি!!

আকাশের মুখে এই কথাটা শুনে পৌষালির তো একেবারে চোখ যেনো মাথায় উঠলো।
— কিহ্?? আপনি? আপনার সাহস তো কম নয়।কোন সাহসে আপনি আমার ঘরে এসে এরকম করেন? জানেন আজ শুধুমাত্র আপনার জন্যই আমার ঘুম থেকে উঠতে এতোটা দেরি হলো।আর ঠিক সেই কারনে আমি অফিস যেতে পারলাম না।আপনি এরকম বাচ্চাদের মতো কেনো করলেন? আই কান্ট বিলিভ দিস।

কথাটা বলেই আর এক মিনিটও ওখানে না দাঁড়িয়ে পৌষালি ঘরটাকে ফাঁকা করে বেড়িয়ে যেতে যাচ্ছিলো।কিন্তু সেটা আর পারলো না।ঠিক সেই মুহূর্তে কোনো একটা বাঁধন যেনো ওকে আটকে দিলো।হ্যাঁ আটকে দিলো খুব শক্ত করে।

— ওই কাজটা না করলে যে তোমাকে আজকে আমার কাছে আটকে রাখতে পারতাম না পৌষালি।
তুমি যে সত্যিই আমার থেকে মুখ ঘুড়িয়ে রয়েছে।আমি এখানে আসছি শুনলে তুমি এখানে থাকতে না এটা আমি নিশ্চিত ছিলাম।তাই তো এই কাজটা করতে হলো।আর রইলো ছেলেমানুষির কথা?? কি বলোতো,, কিছু কিছু ছেলেমানুষি না থাকলে জীবনটা বড্ড একঘেয়ে হয়ে যায়।আর একঘেয়ে জীবনে বাঁচার আশাটাই থাকে না।তাইতো ছেলেমানুষিটাই আমাদের জীবনের রসদ আর ভরসা বলতে পারো।থাকুক না যত্ন সহকারে কিছু কিছু ছেলেমানুষি বড়ো হওয়ার ফাঁকেও।।

পৌষালি একভাবে নিষ্পলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে।আজ কতোদিন পর আকাশের কথাগুলো শুনে মনে হলো আবার যেনো পুরোনো সেই আকাশকে চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছে না।যেই আকাশ ছিলো ওর কাছে বাঁচার মতো করে বাঁচতে শেখার অনুপ্রেরণা।
কিন্তু পরক্ষনেই আকাশের বিগত দিনের ব্যবহারগুলোর কথা মনে পড়তেই পৌষালি ওর চোখদুটো সড়িয়ে নিলো আকাশের দিক থেকে।

— ছাড়ুন আমাকে।মা আমায় ডাকছে হয়তো।
— কেউ ডাকছে না তোমায় পৌষালি। এই মুহূর্তে তোমাকে যদি কারোর ডাকে সাড়া দিতেই হয়,,তবে সেটা একমাত্র আমি।আর কেউ নয়।

কথাটা বলে আকাশ পৌষালির চুপচাপ হয়ে যাওয়া থমথমে মুখটার দিকে একবার তাকিয়ে আবার বলতে শুরু করলো–

— আর একটা সুযোগ কি আমায় দেওয়া যায় না পৌষালি? আমি জানি আমি ভুল করেছি। মস্ত বড়ো ভুল করেছি।কিন্তু বিশ্বাস করো আমি….

— আমি কোনো এক্সপ্ল্যানেইশন চাইনি আকাশ।
— তুমি চাওনি ঠিকই।কিন্তু আমি তো দিতে চাচ্ছি।কারন আই নিড টু এক্সপ্লেইন ইউ।
পৌষালি তুমি বিশ্বাস করবে কি না জানি না,, তবে তুমি যতটা আমার ব্যবহারের জন্য কষ্ট পেয়েছো,,,তার থেকে অনেক অনেক বেশি কষ্ট আমি পেয়েছি তোমার সাথে ওরকম ব্যবহার করে।তবে কি জানোতো পৌষালি,,আমরা যা করি সেই প্রত্যেকটা ঘটনার পিছনেই কিছু না কিছু কারন থাকে।মুশকিলটা হচ্ছে আমরা কারনটা না খুঁজে ফলাফলটা নিয়েই মেতে থাকি।।

পৌষালি লক্ষ করলো কথাগুলো বলতে বলতে আকাশের দুচোখ যেনো জলে ভিজে আসছে।

ইতিমধ্যে পৌষালির মা আকাশকে ডাকায় ওর কথাটা আপাতত অসম্পূর্ণই থেকে গেলো।

— এই দেখেছো তো,,, আন্টি ডাকছে।আর ডাকবে না-ই বা কেনো? আমাকে মা আর আন্টি এঘরে পাঠিয়েছিলো তোমাকে ডেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য।উলটে আমিই এখানে এসে গল্প জুড়ে দিয়েছি।আর যদি দেরি করি তাহলে আমি এবার আমার দুই মায়ের থেকেই বকা খাবো।তখন স্বয়ং ভগবানও আমাকে বাঁচাতে পারবেন না।যাই হোক,,আমি এগোচ্ছি।তুমি এসো।

আর হ্যাঁ রাগটা তো আমার উপর। আমার জন্যই নাহয় রাগটা তুলে রেখো।তোমাকে এরকম মুড অফ দেখে তো মায়েরা কষ্ট পাচ্ছে।সেটা ঠিক হবে না পৌষালি।আমার জন্য ওনারা কষ্ট পাবেন,, সেটা একেবারেই ঠিক হবে না।

কথাটা বলে আর এক মিনিটও ওখানে দাঁড়িয়ে না থেকে ঘরটাকে ফাঁকা করে দিয়ে বেড়িয়ে গেলো ছেলেটা।

আচ্ছা আমি কি সত্যিই আকাশকে কষ্ট দিয়ে ফেললাম? আমার অভিমানটা দেখাতে গিয়ে আমি কি ছেলেটাকে একটু বেশিই আঘাত করে ফেললাম? কিন্তু আমি তো তেমনটা চাইনি।আচ্ছা আকাশ কি বলে গেলো যেনো….. ও কোন কারনের কথা বলে গেলো? কি কারন থাকতে পারে? আমাকে আকাশের পাশে দাঁড়াতে হবে।অনেক হয়েছে অভিমান।আর ওর উপর এই অভিমানটা করে যে আমিও ভালো থাকতে পারবো না,,সেটা আমি বেশ জানি।কারনটা আমাকে জানতেই হবে।যে কারনটার জন্যই আমাদের দুজনকেই এভাবে কষ্ট পেতে হলো।।
তবে সেই কারনটা যা বা যে-ই হোক না কেনো,,তার মুখোমুখি আমায় হতেই হবে।।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here