শেষটা_ছিলো_অন্যরকম,শেষ পার্ট
লেখক_সাব্বির আহাম্মেদ
মায়ান আর বর্ণ সিড়ি বেয়ে নিচে নামতেই দেখে
মেঝেতে রাবেয়া বেগম পড়ে আছে, তা দেখে বর্ণের পা মাটি থেকে সরে গেছে বর্ণ মা বলে বিকট চিৎকার দিয়ে তার মাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেদে বলে মা তুমার কি হলো । এই মা, মা কি হয়েছে তুমার চোখ খুলো মা,
– মায়ান হাত চেক করে দেখে হাতটা ঠান্ডা হয়ে আছে ফুফুর হাসপাতালে নিতে হলো না, তার আগেই ওনি ওপারে চলে গেলো, ফুফু কাউকে না জানিয়ে চলে গেলো !!
– কালো অধার ছেয়ে গেলো বর্ণের মনে,
বর্ণ এক বেলা খেলে দুই বেলা খেতো না, ফুফু চলে যাওয়াতে বর্ণ খুব ভেঙ্গে পড়েছে ।
– এই অবস্থায় বর্ণকে একা ফেলে কোথায় গেলো না মায়ান,
কিন্তুু সমাজের নিয়ম তো আর সেটা দেখে না, তারা কানাঘুষা শুরু করে দেয়, অবিবাহিত ছেলে মেয়ে এক বাসায় থাকছে এই নিয়ে নানান লোক নানান কথা বলছে, মায়ান এই কথাগুলো শুনে না শুনার ভান করতো..
কেটে গেলো কয়েকটা দিন,
একদিন হঠৎা বাসায় বর্ণের আত্বীয়স্বজন হানা দেয়, তারা বসে নানান কথা বলছে, কেউ কেউ তো মায়ানকে বাজে কথা বলে অপমান করছে, তার মধ্যে একজন হলো বর্ণের দূর সম্পর্কের কাকা সে এটা নিয়ে খুব বাড়াবাড়ি করছে,
বর্ণের কাকা বর্ণকে ডাক দিলো, বর্ণ এসে চেয়ারে বসে বললো কি হয়েছে কাকা কেনো সমস্যা.
বর্ণের কাকা বললেন দেখো মা, তুমি হলে আমাদের মেয়ে, তুমার মা মারা গেছে তুমি এমনিতেই শোকে কাতর, কোন দিক দিয়ে কি হচ্ছে কিছুই টের পাচ্ছে না বা বুজতাছো না,
-তবে এই ছেলেটা তো এখন এই বাসায় থাকাটা ঠিক হচ্ছে না আমার কথা কি তুমি বুজতে পারছো,
বর্ণঃ হুম কাকা আপনি ঠিক বলছেন, সে তো আমার কেউ না, যদি সে আমার হাজবেন্ড হতো তাহলে
তাহলে তো তাকে আমারাই আদর যত্ন করে রাখতাম ( বর্ণের মুখ থেকে কথা কেড়ে নিয়ে বললো ওনি..)
মায়ান বর্ণে কথায় প্রচন্ড অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে, বর্ণ কি বলছে এইগুলো, তার খুব কষ্ট হচ্ছে, বর্ণ চেয়ার থেকে উঠে মায়ানের সামনে আসলো,
মায়ান হাত গুটিয়ে মনে মনে ভাবছে এই বুজি বর্ণে তাকে এই বাসা থেকে চলে যেতে বলবে, কিন্তু না বর্ণ সবাইকে অবাক করে দিয়ে মায়ানের হাত ধরে বললো চলো..
মায়ান: কোথায়
বর্ণঃ কাজি অফিসে বিয়ে করবো এখনি,
মায়ান তো হতভম্ব বর্ণের কথা শুনে, তবে মনে মনে সে খুব খুশি যাক অবশেষে ভালোবাসার মানুষটিকে সে নিজের করে পাচ্ছে, রিক্সা উঠে বর্ণ মায়ানের হাতটা খুব শক্ত করে ধরে আছে..
– তবে কেনো রকমের আয়োজন ছাড়া আমার আর বর্ণ বিয়েটা হয়ে গেলো, বাদ্যযন্ত লাইটিং,অতিথি আপ্যায়ান তো দূরে থাক, বিয়ের যে একটা রাত থেকে সেটাও আমাদের হলো না,
কেটে গেলো আরো কয়েকটা দিন
প্রতিদিনের মতো আজও বড় সোফা শুয়ে আছে বর্ণ আমি তার কাছে গিয়ে তার মাথায় হাত বুলাতে সে উঠে গেলো
আমি বললো তুমি এখানে শুয়ে আছে কেনো রুমে চলো
বর্ণঃ না তুমি গিয়ে শুয়ে যাও, আর শুনো আমারা তো বিয়েটা করছি মানুষের কথার থেকে বাচার জন্য তাই না, না হলো তো আমরা এই বিয়েটা করতাম না এই সময়ে , মায়ান বর্ণের কথা শুনে অবাক হওয়ার সাথে সাথে তার মনটা খারাপ হয়ে গেলো, সে বর্ণের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে রইলো..
বর্ণ মায়ানকে আর কিছু না বলে বললো আচ্ছা ঠিক যাও তুমি গিয়ে শুয়ে পড়ো ( বর্ণ.)
মায়ান কোনো কথা না বলে উঠে চলে গেলো, আর পিছন ফিরে দেখলো বর্ণ সেই আগের জায়গার ঘুটিসুটি মেরে ঘুমিয়ে গেছে .
– মায়ান ছাদে এসে উদাস মনে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে, আকাশের তারা গুণার ব্যর্থ চেষ্টা করছে, আর মনে মনে ভাবছে তাহলে এই বিয়েটা ছিলো লোক দেখানো, বর্ণের আমার মতো একটা কেয়ারটেকার ছেলের দরকার ছিলো তাহলে,
এরিই মধ্যে আমার আর বর্ণের বিয়ের দু মাস হয়ে গেলো, এই দুমাসে আমাদের সম্পর্কটা বিয়ের আগের মতোই ছিলো, দুজন দুজন রুমে থাকতাম
ফুফু মারা যাওয়ার পর থেকে
সেই বদমেজাজি দুরন্ত চন্ধল মেয়েটা আজ চুপচাপ হয়ে গেছে, এমতা অবস্থায় তাকে আর কি বলবে মায়ান,মনের কষ্ট মনে চাপা পড়ে থাক ।
ছাদ থেকে নেমে দোকানে গেলো মায়ান
দোকান থেকে একটা সিগারেট কিনে আগুন ধরিয়ে একটান দিতেই কাশ লাগতে লাগলো সে, দোকানদার মামা এটা দেখে বললো মামা নতুন নাকি..
মায়ান শুধু – হুম বললো , একটান দেওয়ার পর পর টান গুলো এখন ভালো লাগছে তার প্রত্যেকটা টানে মনের যত কষ্ট আছে সব হাওয়ায় উড়ে যাচ্ছে মনে, তবে তার চোখটা খুব লাল হয়ে গেছে । ইচ্ছে করছে খুব জোরে চিৎকার করে কাদতে ,
আজকে সকালে উঠে মায়ান দেখলো বর্ণের রুমটা ফুল দিয়ে সাজানো, যেকেউ দেখলে বলবে আজকে কারো বাসর রাত হয়েছে, এই বাসায় বাসর রাত হয়ে গেলো অথচ আমি তার কিছুই জানি না,
রুমটাতে ডুকে মায়ান খাটের সামনে দাড়ালো, বেশ ভালো করে সাজানো হয়েছে, আর এইদিকে বর্ণে পার্লারে গিয়েছে বউ সাজার জন্য, অথচ আমাকে জানানের প্রয়োজন মনে করলো না । মায়ানের এই কথা গুলো ভাবতেই তার হ্দয়টা প্রচন্ড নাড়া দিয়ে উঠলো, সে আর রুমে থাকতে পারলো না এক মূহর্ত
– রুম থেকে বের হতেই মায়ান চমকে গেলো সামনে বর্ণকে দেখতে পারলো সেজে গুজে দাড়িয়েছে পুরো অন্সপরীর মতো লাগছে তাকে, কালো শাড়িতে খুব মানিয়েছে বর্ণকে
– মায়ান কিছু না বলে মাথাটা নিচু করে বর্ণের পাশ কাটিয়ে চলে যেতে লাগলো তা দেখে বর্ণ বললো, কি হলো এটা, মায়ান ঘুরে বর্ণের দিকে তাকালো বর্ণ মায়ানের দিকে তাকিয়ে বললো কোথায় যাচ্ছেন আপনি,
মায়ান অনেক কষ্টে এইবার মুখটা খুলে বললো তুমি রুমে যাও বরকে রিসিভ করতে হবে না, মায়ানের কথা শুনে বর্ণ খুব রেগে যায়, সে মায়ানের কালার ধরে বলে আরেকটা কথা বললে তুমায় খেয়ে ফেলবো আমি, বেশি সেয়ানি গীরি দেখাচ্ছো নাকি, মায়ান বর্ণের হাতে হালকা কামড় দিয়ে বর্ণকে জড়িয়ে ধরলো, বর্ণও মায়ানকে খুব জড়িয়ে ধরলো,
ছোট্ট ঘরটাতে খানিকটা অন্ধকার,
মায়ানের কলারটি ধরলো বর্ণ
মায়ান বললো কি চাই
অপর পাশ থেকে বর্ণ, তুমার ওই দুই ঠোটগুলোতে আমার ঠাই চাই এই বলে
বর্ণ মায়ানের কলারটা ধরে রুমে দিকে নিয়ে যেতে লাগলো,
মায়ান অনেক কষ্টে বর্ণের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে
তার পাঠক- পাঠিকাদের উদ্দেশ্য বললো
কি শেষটা ছিলো অন্যরকম না
এরপর মায়ান আর বর্ণের নতুন যুগ শুরু হলো সেইগুলো আমরা না জানলেও চলবে হি হি হি.
সমাপ্ত