তুমি_আমার_অধিকার ( সিজন 2),পার্টঃ2
লেখক_সাব্বির আহাম্মেদ
জিবনে অনেক কিছুর মায়ায় পড়তে হয় আবার সে গুলো কাটিয়ে সামনে চলতে হয় ।
আপনি যদি একটি জায়গায় অনেকদিন যাবত থাকেন আপনি কিন্তু সেই জায়গার মানুষ বা সে জায়গার মায়ায় পড়ে যাবেন,আপনি সেখান থেকে চলে আসতে কষ্ট হবে, এটাই নিয়ম!
নিরার ক্ষেত্রে তেমন হচ্ছে, অনেক দিন যাবত এই কারাগারে থেকে কেমন মায়া মায়া অনুভব করছে সে । বিশেষ করে মৌসুমি নামের মেয়েটাকে ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করছে না তার ।
– নিরা কারাগারে নতুন আসাতে কিছু বুজে উঠতে পারছিলো না ।
তারপর এই মৌসুমি নিরাকে হেল্প করতো, খাবার কোথার থেকে আনে, কাপড় ধোয়া বা গোসলের স্থান কোথায় যা যা নিরা বুজতো না সব বুজিয়ে দিতো ।
মৌসুমির গ্রামের বাসা দিনাজপুর, তার কেসটা হলো, ভালোবাসার মানুষটা তার সাথে প্রতরণা করে আরেকজনকে বিয়ে করেছে । মৌসুমি এটা সহ্য করতে না পেরে রাগে তাকে খুন করেছে । মৌসমুি নিরাকে এমনটি বললো….
– কারাগারের পরিবেশ নিরার মানিয়ে নিতে কষ্ট হলোও আস্তে আস্তে মানিয়ে নিলো সে ।
মানুষ জিবন মানে বুজে, শুধু খোলামেলা স্বাধীনতা ঘুরে বেড়ানো এমন…
কিন্তু কারাগারেও কিন্তু একটা জিবন আছে, যেখানে নিয়মতান্তিক চলে ফেরা করতে হয় ।
রাতে শোয়ার আগে নিরাকে জড়িয়ে ধরে মৌসুমি কাদলো কতক্ষণ । নিরাও মৌসুমিকে জড়িয়ে কিছুক্ষণ কাদলো ।
মৌসুমিঃ আপু তুমি চলে যাব, তুমাকে ছাড়া থাকবো কি করে…?
নিরা চুপ করে বসে আছে মুখ দিয়ে কিছু বললো না…
পরের দিন খুব ভোরে নিরা উঠে পড়লো,
পাশে তাকিয়ে দেখলো মৌসুমি এখনও ঘুমাচ্ছে ….
কারাগারের এক কোণে বসে আছে হ্দয় । হ্দয়কে দেখে নিরা পাশ কাটিয়ে চলে যেতে লাগলো…
হ্দয় নিরাকে দেখে বললো, হাহ বেবি আজকে তো তুমার মুক্তির দিন । তো কে তুমার সুপারিশ করলো কিছু জানতে পারলে ।
নিরাঃ- ওইইই তুমি বেবি বলো কোন সাহসে আমাকে, আর যেইইই করুক তাতে তুমার কি আর নিজে কিভাবে বের হবা সেই চিন্তা করো…??
হ্দয়ঃ- আমার চিন্তা তুমায় করতে হবে না। আমি ঠিক সময়ে বের হয়ে যাবো আর একটা কথা শুনে রাখো আমাদের আবার দেখা হবে..!!
নিরা আর কিছু না বলে সেখান থেকে চলে গেলো…..
কারাগারের কর্মচারি এসে নিরাকে ডেকে নিয়ে গেলো….
অফিসারঃ শুনো নিরা মুক্তি পাওয়ার আগে আমাদের কিছু শর্ত আছে আর সেই অনুযায়ী এই কাগজে তুমার সাইন করতে হবে নেও সাইন করে নেও
নিরা কলমটা নিয়ে সাইন করে নিলো।
অফিস থেকে বের হয়ে নিরা কারাগারের বের হওয়ার পথের দিকে রওয়ানা দিলো, আজ তার কাছে এতো খুশি লাগছে সে কাউকে বলে বুজাতে পারবে না, আশে পাশের মানুষজন তার দিকে খুব উৎসুক ভাবে চেয়ে আছে । তাদের ও এইদিন আসবে এই ভেবে ,
– নিরা মনে মনে বলে উঠে কারাগারের ওপাশে বাবা মা, দাড়িয়ে আছে তার জন্য । আজ কতদিন পর তাদের দেখবে সে,
এই খুশিতে দ্রুত পা চালিয়ে সে কারাগারের গেট থেকে বের হলো.. আশে পাশে তাকিয়ে দেখলো কেউ নেই, মানেটা কি আজ আমি মুক্তি পাবো আর মা বাবা জানে না । তারা আমাকে নিতে আসে নি । মূহর্তে নিরার মনটা খারাপ হয়ে গেলো ।
– সে অনেকক্ষণ যাবত ওয়েট করে দেখলো, নাহ তাকে নিতে কেউ আসছে না ।
কারারক্ষীকে জিজ্ঞাসা করাতে সে বললো , গত এক ঘন্টা দু ঘন্টা আগেও এখানে কেউ আসে নি । আর মেম আপনার জন্য কে জেনো একটা কাগজ দিয়ে গেছে । বলেছে আপনি বের হলে আপনার হাতে দিতে…..
নিরা কাগজটা নিয়ে হাটা শুরু করলো…….
বাবা মা, আমাকে নিতে আসলো না । আমি কি এতোটাই খারাপ হয়ে গেলাম তাদের কাছে…
যদি বাবা মা, আমাকে নিতে না আসে তাহলে আমাকে এইখান থেকে কে মু্ক্তি করলো। কে বা সুপারিশ করলো আমার জন্য
নিরা নিলয়ের কথা ভাবলো… কিন্তু সে তো জিবনেও করবে না ।
আচ্ছা নিলয় কি তাহলে অন্তীকে বিয়ে করে ফেলেছে । নিরার এখন এই কথাটা খুব জানতে ইচ্ছে করছে । সে বুজতে পারছে নিলয়ের সাথে সে খুব অন্যায় করছে । কিন্তু আবার ওই অন্তীর জন্য তার রাগ হচ্ছে, এই মেয়েটাকে সে সহ্য করতে পারে না, আর নিলয়ের সাথে যদি তাকে দেখে তাহলে তো সে একটা কিছু করে বসবে ।
আচ্ছা এখন আমি এইগুলো কি ভাবছি, নিলয় আর অন্তীর বিষয়টা পরে ভাবা যাবে..
আগে আমাকে ভাবতে হবে আমাকে এখান থেকে কে মুক্তি করেছে ?? নিরা তাকে দেওয়া কাগজের কথা বেমালুম ভুলে গেছে । আর সেটা তার ভ্যানিটব্যাগের এক কোণে পড়ে আছে ।
সন্ধ্যায় নেমে আসছে .. জোনাকি পোকারা যে যার পজিশনে যাচ্ছে একটু অন্ধকার হলেই তারা চিৎকার চেচামেচি শুরু করে দিবে, আর মানুষের কানের বারোটা বাজাবে, তাদের এই চিৎকার শুমে কুকুরগুলো গানের স্বর তোলে… হা হা হা
পার্কে বসে মশার কামড় খেতে নিরার খুব ভালো লাগছে, ধাপ ধুপ মশা মারাতে একটা আনন্দ পায় সে…
এমন সময় কে জেনে ডাক দিলো তাকে নিরা বলে…
নিরা পিছন ফিরে তাকালো কিন্তু অন্ধকারে তার মুখটা দেখা যাচ্ছে না ।
কে সে আর নিরাকে কেনো ডাক দিলো ??
চলবে
( গল্পটা যেহেতু সিজন 2 চলছে, তাই এখানে নিরার দিকে ফোকাসটা থাকবে বেশি । নিলয় অন্তীর কাহিনিও থাকবে।) কেমন হলো জানাবেন…