সৃজা
পর্বঃ৪,৫
লেখিকাঃআরুনীয়া চৌধুরী।
পর্বঃ৪
কারণ একজন স্ত্রীই পারে তার স্বামীর সাথে মানিয়ে নিতে যেটা অন্যরা পারেনা।স্বামীর কাছে বাইরের মেয়ে তুচ্ছ কিন্তু স্ত্রী অমূল্য।স্ত্রী মনের মতো হলে স্বামী সাত সাগর পাড়ি দিতেও দ্বিধা করেনা।এতোদিন আমার ছেলের বাজে অভ্যাস থাকলেও তোমার কারণে তার পরিবর্তন হবে এটা আমি আশা করি।আমি অন্যান্য টিপিক্যাল বাঙালী শাশুড়ীদের মতো নই,যারা বউদের নিন্দা করবে ছেলের কাছে।আমি আধুনিক শাশুড়ী যে ছেলের সাথে বউয়ের মিল থাকাতেই সুখী হয়।আমাকে বা তোমার শ্বশুরকে শেষ বয়সে তোমাদের দেখতে হবেনা,আমি সে আশা করিও না।কিন্তু সন্তানের সুখ আমার কাম্য।আশা করি বুঝতে পেরেছো।আর চৌধুরী বাড়ির বৌ হিসেবে তোমারও কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে,এগুলো আমাকে দেখে ধীরে ধীরে রপ্ত করতে পারবে আশা করি।স্মার্ট হওয়ার চেষ্টা করবে,কষ্ট হলেও তোমায় পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে।আমার ম্যাট্রিক দেয়ার পর বিয়ে হয়েছিল এরপর এখানে এসে মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি।সন্তান এবং পরিবার একসাথে সামলেছি।সে অনুযায়ী তুমি অনেক ম্যাচিউর।
এতক্ষণ চুপ করে শাশুড়ী মায়ের কথা শুনছিলাম।ভিতর থেকে শ্রদ্ধা জাগ্রত হলো তার প্রতি।আমার ভাগ্যে এ ও বুঝি ছিলো।এতো ভালো শাশুড়ী!পড়াশোনা করতে পারবো শুনে অজান্তেই মনটা ভালো হয়ে গেলো।উৎফুল্ল মনে শাশুড়ীর সব কথায় মাথা নাড়াচ্ছিলাম।উনি বোধহয় সন্তুষ্ট হলেন।
সারাদিন এ ঘর ও ঘর করে আর টিউলিপের সাথে খেলা করে কেটে গেলো।সারাদিনে উনি একবারো কল করেনি।আমি ফোনটা একটু পরপর চেক করেছি।এখন সাফওয়ানের আসার সময় হয়ে গেছে।আমি থ্রি পিছটা পাল্টে একটা পিংক কালার শাড়ি পরলাম।চোখে একটু কাজল দিলাম।আমার মনের অজান্তেই তাকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছি।
সাফওয়ান আসলো রাত ১১টায়।তার জন্য অপেক্ষা করতে করতে খাবার টেবিলের উপর মাথা দিয়েই ঘুমিয়ে গেছি।এ বাড়ির নিয়ম ৯টার মধ্যে খাওয়া শেষ করে ১০টার মধ্যে সব কাজ শেষ করে ঘুমানো।সাফওয়ান নাকি জরুরী মিটিংয়ে আটকে গেছে।তাই শাশুড়ীর অনুমতি নিয়ে তার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।ঘুম ভাঙলো কারো হাতের আর্দ্র ছোঁয়ায়।আমার গাল ভিজিয়ে দিচ্ছে কেউ।ধরফরিয়ে উঠে বসলাম।সাফওয়ান সরে গিয়ে চেয়ারে বসে ভাত বাড়লো।উনি অফিস থেকে এসে ফ্রেশ হয়ে খেতে এসেছেন।আর আমি মরার মতো ঘুমাচ্ছিলাম।ওনাকে খাবার দিয়ে আমিও খেয়ে নিলাম।
সবকিছু গুছিয়ে এসে দেখি উনি এখনো ল্যাপটপ নিয়ে খটখট আওয়াজ করে দ্রুত কোনো কাজ করছেন।আমি বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম।ঘুম আসছেনা লাইটের আলোতে তাই এপাশ ওপাশ করছি।কিছুক্ষণ পর সাফওয়ান লাইটটা অফ করে দিলো হয়তো বুঝতে পেরেছে আমার অসুবিধা হচ্ছে।কিন্তু উনি তখনও কাজ করছে।আমি ঘুমিয়ে গেলাম।
সকাল ৬টায় ঘুম ভেঙে গেলো।সাফওয়ান আমার শাড়ির আচল আকড়ে ঘুমাচ্ছে দেখে অবাক হলাম।আস্তে করে তার হাত থেকে আচলটা সরাতেই তার কাছে ধরা দিতে হলো।বুঝলাম এখনো উঠার সময় হয়নি আমার।
গোসল করতে এসে নাভীর পাশে তিলটাকে এই প্রথম এতো গভীরভাবে দেখলাম।সাফওয়ান এই তিলটাতে অসংখ্যবার অধর ছুইয়েছে।তার নাকি এই তিলটা অনেক পছন্দের।ভেজা তোয়ালেটা বারান্দায় দিয়ে আমি নিচে গেলাম।সাফওয়ান এখনো ঘুমাচ্ছে।আজ অফিস নেই নাকী??
কফি এনে দেখি ঘড়িতে ৯টা বাজে, এবার ডাকলাম তাকে।উনি আধো চোখে আমাকে ইশারা করলো, কী??অফিসে যাবেননা??উনি এবার উঠে বসলেন আমাকে তার কোলে বসিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলেন তারপর ঘুমজড়ানো কণ্ঠে বললেন “না কয়েকদিন অফিসে যাবোনা,বাসায় থাকবো আর তোমাকে দেখবো।গতকাল দেরী করে আসার কারণ আগামী এক সপ্তাহের জরুরী কাজ ফিনিশ করেছি”।
আজ চারদিন হলো উনি বাসায় আছেন।বেশিরভাগ সময় ওনার চোখের সামনে থাকতে হয়েছে।ওনার শৈশবের বিভিন্ন কথা আমাকে বলেছেন।এর মধ্যে শাশুড়ীমা আমাকে প্রাইভেট ভার্সিটিতে ভর্তির কথা বললেন কিন্তু আমি নাকচ করে বললাম পাবলিকে আগে চেষ্টা করে দেখবো যদি না হয় তাহলে তারা যা বলবে সেটাই হবে।উনি শুনে খুশিই হলেন মনে হয়,বললেন ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য হোম টিউটর রাখবেন।আজ টীচার আসার কথা ছিল কিন্তু উনি বললেন আর দুদিন পর আসতে।কিছুটা মন খারাপ হলেও কিছু বললাম না।
আজ সকালে সাফওয়ানের অফিস থেকে তার পার্সোনাল সেক্রেটারী লীলী এসেছে।মেয়েটা খুবই মডার্ণ পোশাক পরে আছে। বাসার অফিস রুমে আলোচনা করছে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে, দেখে এটাই মনে হলো।নাস্তা খাওয়ার জন্য তাদের ডাকতে গিয়ে যা শুনলাম তাতে আমার কান গরম হয়ে উঠলো। অপমানে আর লজ্জায় আমি ঘরে এসে দরজা বন্ধ করে দিলাম।দৌড়ে আসার সময় শাশুড়ীমা হয়তো দেখলেন। ওই বিশ্রী শব্দগুলো আমার কানে এখনো বাজছে,রাগে আমি ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করলাম।ভুলেই গেলাম কোথায় আছি।শুধু সজোরে ঘরের প্রত্যেকটা জিনিস ভাঙছি আর এলোমেলো করছি।আমার রাগ এভাবেই ঘরের জিনিসপত্রের উপর পরে সবসময়। বাইরে থেকে শাশুড়ীমা দরজা ধাক্কাচ্ছে আর ডাকছে। কিছুক্ষন পর সাফওয়ানের উদ্বিগ্ন স্বর শুনতে পেলাম। কিন্তু আমি নিজের মাঝে নেই যেনো।কতক্ষণ পর সাফওয়ান লক ভেঙে ঘরে ঢুকে আমাকে পেছন থেকে তার সর্বশক্তি দিয়ে পেঁচিয়ে ধরলো।কিছুক্ষণ ছুটানোর চেষ্টা করে একসময় শান্ত হয়ে সাফওয়ানের বুকেই নেতিয়ে পরলাম।শাশুড়ীমা ছেলেকে বললেন ওকে অন্য রুমে নিয়ে যাও।রুমটা পরিষ্কার করতে হবে।
বিকেলে ঘুম ভাঙার পর দেখলাম সাফওয়ান সোফায় বসে টি-টেবিলে পাগুলো রেখে একের পর এক সিগারেটে সুখটান দিচ্ছে আর আমার দিকে চোখগুলো লাল করে তাকিয়ে আছে,মনে হচ্ছে উনি খুবই রাগান্বিত।সিগারেটের ধোঁয়া কুন্ডলী পাকিয়ে বাতায়ন দিয়ে পলায়ন করছে।হয়তো ওরাও সাফওয়ানের রাগকে ভয় পায়।সে ধীর পায়ে এসে আমার পাশে বসলো।
আমার রাগটা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো।তার চোখে চোখ রেখে বললাম”আপনি এখানে কেনো?যান আপনার পার্সোনাল সেক্রেটারীর কাছে যান।ওহ্ হো আপনাদের রাসলীলায় আমি বেঘাত ঘটিয়েছি তাই না?ঠিক আছে আমি চলে যাবো এখান থেকে।তারপর যত ইচ্ছা..”
আর বলতে পারলাম না সাফওয়ান একটা চড় মারলো আমাকে।আমি কপোলে হাত দিয়ে ডুকরে কেঁদে উঠলাম।গাল থেকে হাতটা জোর করে ছাড়িয়ে আঘাতের জায়গায় তিনি ঠোঁট ছোঁয়াচ্ছেন।
ধীর কণ্ঠে বললেন “যেকোনো বিষয় পুরোটা জানতে হয় মিসেস, তারপর রিয়েক্ট করতে হয়।তুমিতো অর্ধকথা শুনেই সব ভাঙচুর করলে।বিয়ের আগে তার সাথে আমার শারীরিক সম্পর্ক ছিল এটা সত্যি, কিন্তু আজ তার সাথে আমার কিছুই হয়নি।সে তার শরীর দেখিয়ে আমায় জোর করতে চেয়েছিল।তার ধারণা,নাহয় সে চাকরি হারাবে।”
“আপনি মেয়েদের এভাবে চাকরি দিতেন?”ঘৃণিত চোখে বললো সৃজা।
সাফওয়ান কিছুটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো।বললো “এরকম কিছু না,চাকরি দেয়ার বিভিন্ন প্রসেস আছে,শুধু আমার পার্সোনাল সেক্রেটারী আমি চুজ করি।”সৃজা
পর্বঃ৪
লেখিকাঃআরুনীয়া চৌধুরী।
কারণ একজন স্ত্রীই পারে তার স্বামীর সাথে মানিয়ে নিতে যেটা পতিতারা পারেনা।স্বামীর কাছে বাইরের মেয়ে তুচ্ছ কিন্তু স্ত্রী অমূল্য।স্ত্রী মনের মতো হলে স্বামী সাত সাগর পাড়ি দিতেও দ্বিধা করেনা।এতোদিন আমার ছেলের বাজে অভ্যাস থাকলেও তোমার কারণে তার পরিবর্তন হবে এটা আমি আশা করি।আমি অন্যান্য টিপিক্যাল বাঙালী শাশুড়ীদের মতো নই,যারা বউদের নিন্দা করবে ছেলের কাছে।আমি আধুনিক শাশুড়ী যে ছেলের সাথে বউয়ের মিল থাকাতেই সুখী হয়।আমাকে বা তোমার শ্বশুরকে শেষ বয়সে তোমাদের দেখতে হবেনা,আমি সে আশা করিও না।কিন্তু সন্তানের সুখ আমার কাম্য।আশা করি বুঝতে পেরেছো।আর চৌধুরী বাড়ির বৌ হিসেবে তোমারও কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে,এগুলো আমাকে দেখে ধীরে ধীরে রপ্ত করতে পারবে আশা করি।স্মার্ট হওয়ার চেষ্টা করবে,কষ্ট হলেও তোমায় পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে।আমার ম্যাট্রিক দেয়ার পর বিয়ে হয়েছিল এরপর এখানে এসে মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি।সন্তান এবং পরিবার একসাথে সামলেছি।সে অনুযায়ী তুমি অনেক ম্যাচিউর।
এতক্ষণ চুপ করে শাশুড়ী মায়ের কথা শুনছিলাম।ভিতর থেকে শ্রদ্ধা জাগ্রত হলো তার প্রতি।আমার ভাগ্যে এ ও বুঝি ছিলো।এতো ভালো শাশুড়ী!পড়াশোনা করতে পারবো শুনে অজান্তেই মনটা ভালো হয়ে গেলো।উৎফুল্ল মনে শাশুড়ীর সব কথায় মাথা নাড়াচ্ছিলাম।উনি বোধহয় সন্তুষ্ট হলেন।
সারাদিন এ ঘর ও ঘর করে আর টিউলিপের সাথে খেলা করে কেটে গেলো।সারাদিনে উনি একবারো কল করেনি।আমি ফোনটা একটু পরপর চেক করেছি।এখন সাফওয়ানের আসার সময় হয়ে গেছে।আমি থ্রি পিছটা পাল্টে একটা পিংক কালার শাড়ি পরলাম।চোখে একটু কাজল দিলাম।আমার মনের অজান্তেই তাকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছি।
সাফওয়ান আসলো রাত ১১টায়।তার জন্য অপেক্ষা করতে করতে খাবার টেবিলের উপর মাথা দিয়েই ঘুমিয়ে গেছি।এ বাড়ির নিয়ম ৯টার মধ্যে খাওয়া শেষ করে ১০টার মধ্যে সব কাজ শেষ করে ঘুমানো।সাফওয়ান নাকি জরুরী মিটিংয়ে আটকে গেছে।তাই শাশুড়ীর অনুমতি নিয়ে তার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।ঘুম ভাঙলো কারো হাতের আর্দ্র ছোঁয়ায়।আমার গাল ভিজিয়ে দিচ্ছে কেউ।ধরফরিয়ে উঠে বসলাম।সাফওয়ান সরে গিয়ে চেয়ারে বসে ভাত বাড়লো।উনি অফিস থেকে এসে ফ্রেশ হয়ে খেতে এসেছেন।আর আমি মরার মতো ঘুমাচ্ছিলাম।ওনাকে খাবার দিয়ে আমিও খেয়ে নিলাম।
সবকিছু গুছিয়ে এসে দেখি উনি এখনো ল্যাপটপ নিয়ে খটখট আওয়াজ করে দ্রুত কোনো কাজ করছেন।আমি বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম।ঘুম আসছেনা লাইটের আলোতে তাই এপাশ ওপাশ করছি।কিছুক্ষণ পর সাফওয়ান লাইটটা অফ করে দিলো হয়তো বুঝতে পেরেছে আমার অসুবিধা হচ্ছে।কিন্তু উনি তখনও কাজ করছে।আমি ঘুমিয়ে গেলাম।
সকাল ৬টায় ঘুম ভেঙে গেলো।সাফওয়ান আমার শাড়ির আচল আকড়ে ঘুমাচ্ছে দেখে অবাক হলাম।আস্তে করে তার হাত থেকে আচলটা সরাতেই তার কাছে ধরা দিতে হলো।বুঝলাম এখনো উঠার সময় হয়নি আমার।
গোসল করতে এসে নাভীর পাশে তিলটাকে এই প্রথম এতো গভীরভাবে দেখলাম।সাফওয়ান এই তিলটাতে অসংখ্যবার অধর ছুইয়েছে।তার নাকি এই তিলটা অনেক পছন্দের।ভেজা তোয়ালেটা বারান্দায় দিয়ে আমি নিচে গেলাম।সাফওয়ান এখনো ঘুমাচ্ছে।আজ অফিস নেই নাকী??
কফি এনে দেখি ঘড়িতে ৯টা বাজে, এবার ডাকলাম তাকে।উনি আধো চোখে আমাকে ইশারা করলো, কী??অফিসে যাবেননা??উনি এবার উঠে বসলেন আমাকে তার কোলে বসিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলেন তারপর ঘুমজড়ানো কণ্ঠে বললেন “না কয়েকদিন অফিসে যাবোনা,বাসায় থাকবো আর তোমাকে দেখবো।গতকাল দেরী করে আসার কারণ আগামী এক সপ্তাহের জরুরী কাজ ফিনিশ করেছি”।
আজ চারদিন হলো উনি বাসায় আছেন।বেশিরভাগ সময় ওনার চোখের সামনে থাকতে হয়েছে।ওনার শৈশবের বিভিন্ন কথা আমাকে বলেছেন।এর মধ্যে শাশুড়ীমা আমাকে প্রাইভেট ভার্সিটিতে ভর্তির কথা বললেন কিন্তু আমি নাকচ করে বললাম পাবলিকে আগে চেষ্টা করে দেখবো যদি না হয় তাহলে তারা যা বলবে সেটাই হবে।উনি শুনে খুশিই হলেন মনে হয়,বললেন ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য হোম টিউটর রাখবেন।আজ টীচার আসার কথা ছিল কিন্তু উনি বললেন আর দুদিন পর আসতে।কিছুটা মন খারাপ হলেও কিছু বললাম না।
আজ সকালে সাফওয়ানের অফিস থেকে তার পার্সোনাল সেক্রেটারী লীলী এসেছে।মেয়েটা খুবই মডার্ণ পোশাক পরে আছে। বাসার অফিস রুমে আলোচনা করছে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে, দেখে এটাই মনে হলো।নাস্তা খাওয়ার জন্য তাদের ডাকতে গিয়ে যা শুনলাম তাতে আমার কান গরম হয়ে উঠলো। অপমানে আর লজ্জায় আমি ঘরে এসে দরজা বন্ধ করে দিলাম।দৌড়ে আসার সময় শাশুড়ীমা হয়তো দেখলেন। ওই বিশ্রী শব্দগুলো আমার কানে এখনো বাজছে,রাগে আমি ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করলাম।ভুলেই গেলাম কোথায় আছি।শুধু সজোরে ঘরের প্রত্যেকটা জিনিস ভাঙছি আর এলোমেলো করছি।আমার রাগ এভাবেই ঘরের জিনিসপত্রের উপর পরে সবসময়। বাইরে থেকে শাশুড়ীমা দরজা ধাক্কাচ্ছে আর ডাকছে। কিছুক্ষন পর সাফওয়ানের উদ্বিগ্ন স্বর শুনতে পেলাম। কিন্তু আমি নিজের মাঝে নেই যেনো।কতক্ষণ পর সাফওয়ান লক ভেঙে ঘরে ঢুকে আমাকে পেছন থেকে তার সর্বশক্তি দিয়ে পেঁচিয়ে ধরলো।কিছুক্ষণ ছুটানোর চেষ্টা করে একসময় শান্ত হয়ে সাফওয়ানের বুকেই নেতিয়ে পরলাম।শাশুড়ীমা ছেলেকে বললেন ওকে অন্য রুমে নিয়ে যাও।রুমটা পরিষ্কার করতে হবে।
বিকেলে ঘুম ভাঙার পর দেখলাম সাফওয়ান সোফায় বসে টি-টেবিলে পাগুলো রেখে একের পর এক সিগারেটে সুখটান দিচ্ছে আর আমার দিকে চোখগুলো লাল করে তাকিয়ে আছে,মনে হচ্ছে উনি খুবই রাগান্বিত।সিগারেটের ধোঁয়া কুন্ডলী পাকিয়ে বাতায়ন দিয়ে পলায়ন করছে।হয়তো ওরাও সাফওয়ানের রাগকে ভয় পায়।সে ধীর পায়ে এসে আমার পাশে বসলো।
আমার রাগটা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো।তার চোখে চোখ রেখে বললাম”আপনি এখানে কেনো?যান আপনার পার্সোনাল সেক্রেটারীর কাছে যান।ওহ্ হো আপনাদের রাসলীলায় আমি বেঘাত ঘটিয়েছি তাই না?ঠিক আছে আমি চলে যাবো এখান থেকে।তারপর যত ইচ্ছা..”
আর বলতে পারলাম না সাফওয়ান একটা চড় মারলো আমাকে।আমি কপোলে হাত দিয়ে ডুকরে কেঁদে উঠলাম।গাল থেকে হাতটা জোর করে ছাড়িয়ে আঘাতের জায়গায় তিনি ঠোঁট ছোঁয়াচ্ছেন।
ধীর কণ্ঠে বললেন “যেকোনো বিষয় পুরোটা জানতে হয় মিসেস, তারপর রিয়েক্ট করতে হয়।তুমিতো অর্ধকথা শুনেই সব ভাঙচুর করলে।বিয়ের আগে তার সাথে আমার শারীরিক সম্পর্ক ছিল এটা সত্যি, কিন্তু আজ তার সাথে আমার কিছুই হয়নি।সে তার শরীর দেখিয়ে আমায় জোর করতে চেয়েছিল।তার ধারণা,নাহয় সে চাকরি হারাবে।”
“আপনি মেয়েদের এভাবে চাকরি দিতেন?”ঘৃণিত চোখে বললো সৃজা।
সাফওয়ান কিছুটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো।বললো “এরকম কিছু না,চাকরি দেয়ার বিভিন্ন প্রসেস আছে,শুধু আমার পার্সোনাল সেক্রেটারী আমি চুজ করি।”
চলবে…..
#সৃজা
পর্বঃ৫
লেখিকাঃআরুনীয়া চৌধুরী।
“আপনি নিজে মেয়ে সেক্রেটারি ঠিক করেছেন, আপনার জন্য।দেশে কি পুরুষ মানুষের অভাব ছিল।” অনেকটা ক্রোধ নিয়েই কথাটা বললো সৃজা।
“আচ্ছা ঠিক আছে ওকে আর চাকরিতে রাখবোনা।ওকে ফায়ার করে দিবো।এরপর শুধু ছেলে সেক্রেটারি রাখবো।এইযে তোমার হাত ছুয়ে প্রমিজ করছি।এবার ঠিক আছে??”
“মানে আপনি এখনো ওকে তাড়াননি?আপনার ফোন কোথায়?” কথাটা একটু রেগেই বললো।
“আমার ফোন দিয়ে কি করবে তুমি?”বলতে বলতে ফোনটা বের করে সৃজার হাতে দিলো।
“আপনি এখন ওকে ফোন দিয়ে বলবেন।কাল থেকে ওর চাকরিতে আসা লাগবেনা।এখন মানে এখন।”
অন্যকেউ হলে হয়তো সাফওয়ানকে আদেশ করা মানুষটা আস্ত থাকতো না।কিন্তু বউ বলে কথা।তাই বিষয়গুলো হজম করে নিচ্ছে।আর যাই হোক সে সৃজাকে হারাতে চায়না।
আচ্ছা ঠিক আছে বলছি।সৃজার সামনে বসেই কল করলো
“হ্যালো ম্যানেজার সাহেব মিস.লিলিকে কাল থেকে আর অফিসে দেখতে চাইনা।ওকে আগামী মাসের স্যালারি সহ বিদেয় করে দিন।আর কোনো প্রকার ঝামেলা জেনো না করে দেখবেন।”
ও পাশ থেকে কি বললো সৃজা শুনেনি কিন্তু ওর মন তাতেও শান্ত হলো না।
সৃজার হাতগুলো আলতো করে ধরে বললো
“চলো এবার রুমে চলো।”
“আমি যাবো না।আমি আজ এই রুমেই থাকবো।”সাফওয়ানের থেকে হাতগুলো ছাড়াতে ছাড়াতে বললো।
“এই রুমে থাকবে কেনো?”
সাফওয়ানের দিকে কান্নারত চোখে তাকিয়ে শান্ত গলায় সৃজা বললো
“আজ যেটা ছিলো সেটা আমি এখনো ভুলতে পারছিনা বিশ্বাস করুন।জানিনা আপনার সাথে সংসার করলে আরো কতকিছু আমাকে দেখতে হবে,ভবিষ্যতে শুনতে হবে।নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে তো তার জন্য।”শেষের কথাটা অনেকটা ব্যঙ্গ করেই বললো।
সাফওয়ান বুঝলো আপাতত ওকে একা ছাড়া উচিত ।তাই কিছু না বলে চলে গেলো।
সৃজা কতক্ষণ সাফওয়ানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।তারপরই দরজাটা বন্ধ করে ওখানেই বসে কান্না শুরু করলো।কতক্ষণ নিজের চুলগুলো টানলো।ওর মন আজ এতো অশান্ত কেনো ও নিজেও বুঝতে পারছেনা।ঠিক কত মেয়ের সাথে ওর স্বামীর সম্পর্ক ছিলো।সেগুলো কল্পনা করেই ওর কান্নার বেগ আরো বৃদ্ধি পেলো।
সকাল হতেই সূর্যের তীক্ষ্ণ আলো সৃজার মুখে পরলো।ধীরে ধীরে চোখগুলো খুলে বোঝার চেষ্টা করলো ও কোথায়।মস্তিষ্ক সচল হতেই কালকের ঘটনাটা মনে পরলো।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো ৬টা বাজে।উঠে ফ্রেশ হতে গেলো।শাড়িটাও বদলানো দরকার।
অনেকটা স্বাভাবিকভাবেই সাফওয়ানের রুমে ঢুকলো সৃজা।সাফওয়ান এখনো ঘুমাচ্ছে।দরজা খোলাই ছিলো।হয়তো আশা করেছিলো সৃজা রাতে এই রুমে ঠিকই চলে আসবে।সারারাত জেগে ভোরের দিকে একটু ঘুমিয়েছে।সৃজার রুমের সামনে গিয়েও বারবার ফিরে এসেছে।দোষটা তো ওর নিজের তাই নিজেকে আটকে রেখেছে।অতীতে করা তার ভুল কাজগুলোই তাকে শাস্তি দিচ্ছে।
কাবার্ড খুলে নিজের শাড়িগুলো লাগেজে ভরলো।কাবার্ড বন্ধ করার শব্দে সাফওয়ানের ঘুম হালকা হয়ে গেলো।ঘুমোঘুমো চোখে সৃজাকে দেখে খুশি হলো।পরপরই ওর হাতে লাগেজ দেখে অবাক হলো।চকিত হয়ে বিছানা থেকে নেমে বললো ” কোথায় যাচ্ছো তুমি?”বলতে বলতে সৃজার আরো কাছে আসলো।
সাফওয়ানের ঘুমে জড়ানো মুখটার দিকে এক নিমেষ তাকিয়ে বললো
“আমরা এখন থেকে আলাদা রুমে থাকবো।আমি গতকাল অনেক ভেবেছি। নিজেকে বেধে রাখতে পারলেও মনটাকে বাঁধতে পারছিনা বিশ্বাস করুন।”করুণভাবে বলেই লাগেজটা হাত থেকে ছেড়ে দিয়ে দু হাতে মুখ ঢেকে কেঁদে দিলো সৃজা।
সৃজার উত্তর শুনে কিছুটা দমে গেলেও।পরক্ষণেই কান্নারত ফোলা ফোলা চোখমুখ দেখে নিজেকে আজ প্রথমবারের মতো নীচ মনে হলো সাফওয়ানের।নিশ্চয় সারারাত মেয়েটা কেঁদেছে।কিছুক্ষণ তাকিয়ে সৃজাকে পরখ করলো সে।
নিজেকে ধাতস্থ করে হাতটা এগিয়ে নিয়ে চোখের জলটা মুছে দিলো সৃজার।তারপর বললো
“তুমি আলাদা রুমে থাকতে চাও ঠিক আছে।ধীরে ধীরে আমাদের মধ্যে সবকিছু নরমাল হয়ে যাবে।কিন্তু আমরাতো এক রুমে থেকেও সব স্বাভাবিক করতে পারি তাইনা??আর তুমি অন্য রুমে থাকলে আমি একা কিভাবে থাকবো??
প্রশ্নটা বাচ্চা বাচ্চা লাগলো সৃজার কাছে।উত্তর দিলো
“আগে যেভাবে থাকতেন সেভাবেই থাকবেন।নাকি বিয়ের আগে অন্যকেউ আপনার সাথে এ রুমে থাকতো??” সাফওয়ানের দিকে তাকিয়ে দৃঢ় গলায় প্রশ্নটা করলো।
সৃজা কিসের ইঙ্গিত করেছে তা বুঝতে বাকি রইলো না সাফওয়ানের। এবার রাগ হলো তার।অনেক হয়েছে।গতকাল থেকে শুধু ওর মন গলানোর চেষ্টাই করছে।কিন্তু মহারাণী তাকে পাত্তাই দিচ্ছে না।শেষে রেগেই বললো ”
“ঠিক আছে তোমার যে রুমে থাকতে ইচ্ছা করে সেই রুমে যাও।”বলেই লাগেজটা একহাতে আরেকহাতে সৃজার হাত ধরে রুম থেকে বের করে দিলো।সৃজার মুখোমুখি দরজাটা লাগিয়ে দিলো।দরজাটা খোলা থাকলে হয়তো দেখতে পেতো তার অর্ধাঙ্গিনী দরজার বাইরে চিৎকার করে কাদঁছে।তবে সে কান্না শুধু তার মন শুনতে পাচ্ছে আর কেউ না।
সময়ের তালে সৃজা অনেকটা স্বাভাবিক হলো।তবে সাফওয়ান এ দুদিন তাকে দেখা দেয়নি।তারা আলাদা রুমে থাকে এটা সৃজার শাশুড়ীমা জানলেও শ্বশুড় জানেনা।হয়তো ওর শাশুড়ী ভাবছে দুদিন পর সব ঠিক হয়ে যাবে।বিকেলে সৃজা বারান্দায় বসে একটা বই পড়ছিলো।আপাতত সব চিন্তা একপাশে রেখে সে ভর্তি পরীক্ষা দেয়ায় মন স্থীর করেছে।এমন সময় কেউ আসলো তার রুমে।সৃজার তাকে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখার ইচ্ছে হচ্ছে না।সৃজার পাশে বসেই বললো
“সাফওয়ান আর তোমার ব্যাপারটা সব জেনেও আমি চুপ আছি কেনো জানো??সৃজা শাশুড়ী মায়ের প্রশ্নের কোনো উত্তর দিলো শুধু বই থেকে মনোযোগ দূর করলো।
“শোনো সৃজা।বাড়ির বউ হিসেবে জেনে রাখা দরকার তোমার শ্বশুরমশাইও ধোয়া তুলসি পাতা ছিলো না।আমি আসার পরই ওনার সব বাজে অভ্যাস ত্যাগ করেছেন।চৌধুরী বাড়ির ছেলেরা আর যা-ই হোক বউকে ভালোবাসতে জানে।বিয়ের পর প্রথম প্রথম আমারও প্রচন্ড রাগ হতো তার প্রতি।কিন্তু কি করার মেয়েদেরতো মুখ বুজে সহ্য করতে হয়।কিন্তু তোমার মতো এতো স্পর্দা আমি দেখাতাম না।আমি শুধু পরিবারের সম্মানের কথা ভেবে এসব মেনে নিচ্ছি।আর ওইদিন যেটা হলো তারপরতো ওই মেয়ের চাকরি তুমি কেড়েই নিয়েছো।তারপরও কেনো আলাদা থাকছো?সাফীর আগে থেকে অনেক পরিবর্তন ঘটেছে।এটা তুমি নিজেও জানো।আবার ওকে কেনো অতীতের দিকে ঠেলে দিচ্ছো।কেউ যদি নতুন করে সব শুরু করতে চায় তবে তাকে আগলে রাখতে শিখো।”
“আপনি নিজেও জীবনে এরকম সময় পার করেছেন।তখন আপনার কেমন লেগেছিলো আম্মা??আমারতো তার থেকে হাজারগুণ বেশি খারাপ লেগেছে।”বলেই দূর আকাশের দিকে তাকালো সৃজা।চোখগুলোতে আবার জল এসে ভর করেছে।
” সৃজা আমি এরকম পরিস্থিতিতে থাকলেও নিজেকে ঠিক রাখতে পেরেছি।তোমার শ্বশুরের সাথে এখনো সংসার করছি।দুই বাচ্চার মা হয়েছি।সবটাই নিজের বুদ্ধি দিয়ে।নিজের বুদ্ধি কাজে লাগাও।এই সংসার একসময় তোমাকেই সামলাতে হবে তাই মানিয়ে নিতে শেখো।আর হ্যা তোমার শ্বশুর জানার আগেই সাফওয়ানের রুমে চলে যাও।উনি জানতে পারলে ক্ষতিটা তোমারই হবে।সময় থাকতে কদর করতে শেখো সবকিছুর।”
শাশুড়ী চলে গেছে অনেক্ষণ কিন্তু সৃজা আর পড়ায় মন বসাতে পারছেনা।বারবার তার কথাগুলো মনে পরছে।সত্যিই কি সময় সব ক্ষত দূর করে দেয়।
রাতের খাবার খেয়ে সৃজা ঘুমালো।আজ রাত জেগে পড়ার কথা থাকলেও মন সাঁয় দিচ্ছে না।
গভীর রাতে কারো গভীর স্পর্শে হকচকিয়ে উঠলো সে।ডীম লাইটের আলোতে স্পষ্ট দেখতে পেলো সাফওয়ানকে।বাধাঁ পেলেও সৃজার জেগে ওঠায় দ্বীগুন উৎসাহে ওকে জড়িয়ে ধরে অধরে ঠোঁট ছোঁয়াতে চাইছে।সৃজা অবাক হলেও বুঝতে পারছে সাফওয়ানের এরূপ করার কারণটা সে মাতাল।গন্ধে সৃজার বমি আসার উপক্রম।নেশাখোরদের কথা শুনলেও প্রত্যক্ষ কোনো মাতাল দেখা হয়নি জীবনে তার।কিন্তু স্বামীর কল্যানে তাও দেখতে হলো।
সাফওয়ানকে সরানোর চেষ্টা করছে কিন্তু এক চুলও সরাতে পারছেনা।সাফওয়ান মৃদু আওয়াজে কিছু বলছে আর সৃজার শরীরে নানাভাবে স্পর্শ করছে।সাফওয়ানের একদম কাছে হওয়ায় অনেক কথাই সে শুনতে পাচ্ছে
“তুমি বলো আমারতো বউ আছে তাহলে আমি ওই নীলার কাছে কেনো যাবো।এই মেয়েটা আমি বারে গেলেই পিছু লাগে।আজকে আমিও বলে দিয়েছি আমার বউ ওর থেকেও হাজাররর গুণ সুন্দরী।আমার বউকে ছাড়া আর কারো সাথে সেক্স করবোনা বলে দিয়েছি ওকে।তাই এক লাখ টাকা দিয়ে বিদায় করে দিয়েছি নীলাকে। টাকার জন্য ওরা সব করতে পারে শা….”
বাহ লীলী কি কম ছিলো।এখন নীলার কথাও শুনতে হচ্ছে মাতাল হয়ে আবোলতাবোল বকছে সাফওয়ান।বাজে বাজে বকাও দিচ্ছে।বকার শব্দগুলোকে সৃজা ছোট থেকে ঘৃণা করে।তার বাবা কারণে অকারণে বাড়ির কাজের লোক অথবা তার অপছন্দের কাউকে গালাগাল করতো।তাই শৈশব থেকেই এই শব্দগুলোর প্রতি তার ঘেন্না সর্বোচ্চ।
তাকে সরানোর চেষ্টা করলো ও
“এখনি আপনার রুমে যাবেন আপনি।”যথাসম্ভব রেগে কথাটা বললো সৃজা।
বাচ্চাদের মতো ঠোঁট ফুলিয়ে সাফওয়ান বললো
“না যাবোনা।ওই রুমে তো তুমি থাকোনা।এখন থেকে আমি এখানেই থাকবো।আর তোমাকে আদর করবো।”
বলেই সৃজার থুতনি কামড়ে ধরলো।সৃজা ব্যথা পেলো।সাফওয়ানকে ধাক্কা দিয়ে কিছুটা সরালো।তারপর ব্যথার জায়গাটায় হাত রাখলো।সাফওয়ান সেদিকে তাকিয়ে আবার কাছে এসে বললো
“কি হয়েছে জান।খুব ব্যথা করছে।আর করবোনা সরি জান।তোমাকে আস্তে আস্তে আদর করবো। প্রমিজ ব্যথা পাবেনা।”
চলবে……