ইহান ভাই,পর্ব-১
সাদিয়া
“বাবার জুয়া খেলার প্রতি নেশা ছিল প্রচুর। তার পাশাপাশি মদের নেশাও প্রবল ভাবে ছিল। আমি যখন মায়ের গর্ভে ৪ মাসের তখন তিনি আমার মায়ের পেটে লাথি মারে। মায়ের নাকি অনেক রক্ত গিয়েছিল। কিন্তু আমি কিভাবে বাঁচলাম তা আল্লাহ ছাড়া কেউ বলতে পারবে না। ২ দিন টানা রক্ত গিয়েছিল। সব আল্লাহর ইচ্ছা। আমি মেয়ে হয়ে কেন জন্ম নিয়েছি ছেলে কেন হয়নি তাই বলে বাবা নাকি সদ্য গর্ভে থেকে বের হওয়া আমার মায়ের যৌনাঙ্গে লাথি মেরেছিল দুইবার। বড় হয়ে যখন বুঝতে শিখেছি মায়ের মুখে এসব কথার মানে তখন বাবা নামে নরপশু কে শুধু ঘৃণা করতে শিখেছি। মনে একটা ইচ্ছা আছে এই মানুষ নামে অমানুষটা কে সামনে যদি কোনো দিন দেখে ফেলি নিজ হাতে খুন করে মনের জ্বালাটা একটু নিভাব।
এই লোকটা কে নিয়ে কেন এত কথা বলছি জানি না। আজ তাকে নিয়ে এইটুক কথায় আসল কলমে। আমায় ডায়রিতে লোকটা কে নিয়ে এই প্রথম আর শেষ লেখা। ঘৃণিত একজন বাবা নাকম নরপশু।”
লেখা থামিয়ে মিহু দম নিল। শূন্যে তাকিয়ে কিছু ভাবছে। আবার ডায়েরির পাতায় নজর দিয়ে কলম ডাবিয়ে দিল।
“মা কে আজ বড্ড মিস করছি। শুধু গায়ের গন্ধটা যদি নিতে পারতাম। একটা বার যদি জড়িয়ে ধরতে পারতাম। আহ কি কপাল নিয়ে এলাম দুনিয়াতে। বাবা নামক লোকটা থেকেও নিখোঁজ। আর মায়ের ভালোবাসা পেয়েও আল্লাহ আমার থেকে কেড়ে নিল। একেবারে এতিম বানিয়ে দিল আল্লাহ আমায়। তবুও মুখে আমার হাসি রাখতে হয়। নয়তো চাচ্চু রাগ করে কষ্ট পান। মামুনিও বকাঝকা করে। এই বাড়িতে আমার আদরের অভাব হয় না।”
হুট করে মিহু লেখা থামিয়ে দিল। মনটা খট করে যেন নড়ে উঠল।
“জানি না আমার ভালো থাকা হয়ে উঠবে কি না। কারণ ইহান ভাই আসছে। ১০ টা বছর পর আবার বাড়ি ফিরছে সে। তার বাড়ি ফিরার সাথে সাথে আমার ভালো থাকাও যেন বিদায় নিবে। যদিও জানি না এখনো সে আগের মতো আছে কি না। নাকি একটু ভালো হয়েছে। হলে হতেও পারে। মানুষ তো আর সবসময় এক থাকে না। কিন্তু ইহান ভাই আমার সাথে কেন যেন…!”
মিহুর লেখা শেষ করার আগেই তার চাচির ডাক পরল। মিহু গলা ছেড়ে “আসছি” বলে ডায়েরি উল্টেই দৌড় দিল।
“চাচি ডাকছিলে?”
“যা দেখ ভাবি তোকে ডেকেছিল। তাড়াতাড়ি যা।”
“আচ্ছা।”
মিহু রেহেলা বেগমের কাছে দৌড়ে গেল।
“মামুনি তুমি নাকি ডাকছিলে?”
“কত কাজ বলতো। আর একটু পরই আমার ছেলেটা চলে আসবে। আর তুই কোথায় গিয়ে বসে আছিস?”
“আমায় কিছু করতে হবে?”
“তুই ইহানের ঘর টা পরিষ্কার করে সুন্দর করে ঘুছিয়ে রাখ গিয়ে।”
“আমি?”
“হ্যাঁ। তাড়াতাড়ি কর মা। আর সুন্দর করে ঘুছিয়ে রাখিস কিন্তু ও আগের মতোই পরিষ্কার ঘুছানো না দেখলে রেগে যায়। যা মা যা।”
হাতে বক্স নিয়ে রেহেলা বেগম চলে গেলেন বিড়বিড় করে। মিহু ঠোঁট উল্টে দম নিল।
“আকাশ সমান কাজ দিয়ে দিল। এই কাজ টা বাদে বাড়ির সব কাজ দিলেও ভালো হতো। ১০ বছরে যেই ঘরের ছায়াও দেখিনি আজ সে ঘরেই নাকি ঢুকতে হবে। তার জিনিস পত্র ঘুছাতে হবে। আল্লাহ! আসতে না আসতেই খারাপ দিন শুরু হলো বলে আমার।”
মনে মনে কতশত কথা বলে মিহু এগিয়ে গেল ইহানের ঘরের দিকে। হাতে একটা ঝাড়ু, কোমরে ওড়না পেচানো। ঠিক যেন কারো সাথে ঝগড়া করতে যাচ্ছে। সামনের চুল গুলি সরিয়ে মিহু দরজায় একটা লাথি দিয়ে খুলল। মুখে তার পৈশাচিক হাসি। কি জানি কি এক বড় কাজ করে খুশি হয়ে উঠেছে সে। ঘরে ঢুকতেই সবার আগে যা চোখের সামনে পড়ে তা হলো ইহানের বড় করে টানানো একটা ছবি। ঠিক বিছানার উপরে লটকে আছে। এটা যে ১৩ বছরের ইহানের ছবি তা না। এটা বান্দরের মতো তুলা প্রায় বছর খানেক আগের ছবি। গায়ে কুত্তার জিহ্বার মতো কালো কি একটা পরনে। এদিক ওদিক ঝুলছে। চোখে কালো চশমা, মুখে ৩২ দাঁতের হাসি। মিহু ছবির দিকে তাকিয়ে মুখ ভেংচি কাটল। আবার মনে মনে বলল
“মানুষ যেমনি হোক চেহারা ফেলে দেওয়ার মতো না। যে কোনো মেয়ে গলায় ঝুলে যাবে। যে স্বভাব না জানি কত মেয়ের..”
মিহু মাথা ঝেড়ে চিন্তা বাদ দিয়ে ছবির দিকে এগিয়ে গেল। মুখে শয়তানি বাঁকা হাসি তুলে তাকাল ইহানের দিকে। ছবির উপর লেগে থাকা ময়লা ঝাড়ু দিয়ে খুব সুন্দর করে তুলছে মিহু। মনে মনে কত আনন্দ হচ্ছে তার। গুনগুন করছে আর মনের স্বাদ মিটাচ্ছে। স্বপ্না ও ঘরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মিহুকে চিৎকার করে বলল,
“আরে করছিস কি মিহু?”
মিহু ভয় পেয়ে গেল। আচমকা এমন গর্জনে ভয় পাওয়ারই কথা। তার চেয়ে বড় কথা উনার গলা শুলনেই মিহু ভয় পেয়ে যায়।
“কি হলো কাকি?”
“এভাবে কেউ ছবি পরিষ্কার করে? তুই কিনা ইহান বাবার ছবি..”
“….
“হাত দিয়ে সুন্দর করে পরিষ্কার কর। আমি যদি একটু পর এসে আবার দেখি এমন তাহলে দেখিস কি হয়?”
“আচ্ছা।”
স্বপ্না চলে গেল। বার কয়েক মিহু মুখ মুচড়াল। বিড়বিড় করে বলতে লাগল “ও স্বপ্না ও স্বপ্নারে তুই ভারি পাজিরে। তোর গলা শুনলে আমার ভেতরটা কাইপা উঠে রে। হুমহুমহু হুমুহুমুমুরে..”
—-
বাড়িতে হৈ হোল্লো শুরু হয়ে গেছে। বাড়ির ছেলে বাড়ি ফিরছে পড়া শেষে। সবার মাঝে আনন্দ যেন ধরছে না। প্রতিটা মানুষের মুখে হাসি। ইহান কে তার বাবা আর দুই চাচ্চু মিলে আনতে গেছে। রাস্তায় আছে। এখনি চলে আসবে বলে। বাড়ির সবাই দরজায় দাঁড়িয়ে আছে। রেহেলা বেগম পারলে গেইট পেরিয়ে রাস্তায় এসে দাঁড়ায়। উনার ভেতরের আনন্দ টা যদি কেউ দেখত!
গাড়ি যেই না গেইট দিয়ে এলো ওমনি রেহেলা বেগম দৌড়ে বেড়িয়ে পরেছেন। সাথে বাকি সবাই। ইহান গাড়ি থেকে নামতেই তিনি কেঁদে ছেলেকে জড়িয়ে ধরেছেন। কে বলবে এটা উনার ছেলে? কত বড় হয়েছে। গলা উঁচু করে মুখ দেখতে হয়। কি সুন্দর চওড়া বুক কাঁধ হয়েছে তার। চেহারায় কি সৌন্দর্য। রেহেলা বেগম ছেলের বুকে পড়ে কেঁদে উঠলেন। ইহান মা কে শক্ত করে ধরেছে দুই হাতে। আম্মু আম্মু ডাকছে। রেহেলা কথা বলতে পারছেন না। তিনি কেঁদেই এক করে দিচ্ছেন। ইহানের বাবা আফজাল সাহেব বললেন “ছেলে কে ঘরে ঢুকার সুযোগ দিবে রেহা।” স্বামীর কথায় হুশ ফিরে উনার। চোখ মুছে ছেলের বুক থেকে মাথা তুলে। ইহান মায়ের কপালে চুমু দিতেই রেহেলার চোখের পানি আবার পড়তে শুরু করেছে। ছেলের চোখ মুখে পারলে শতশত চুমু দিয়ে দেয়।
“ভাবি ছেলেটা তো আগে ঘরে ঢুকুক পরে আদর করবেন যত খুশি।” বললেন মিতুন সাহেব।
পপি তখন বলে উঠলেন “এত বছর পর বুকের ধন বুকে ফিরেছে মন তো ব্যাকুল হবেই। তুমি এত কথা বলো না তো।”
সবাই কে থামিয়ে রেহেলা বেগম ইহান কে নিয়ে ভেতরে ঢুকল। স্বপ্না মুখে তেমন কিছু বললেন নি তবে ইহান কে তিনি বেশ ভালোই বাসেন। এত বছর পর ফিরায় তিনিও খুশি। রেহেলা পপির থেকে তিনি একটু বেশিই খুশি। মনের ইচ্ছা বোধ হয় এত দিনে পূরণের পথে।
ইহান কে তার মা ঠান্ডা এক গ্লাস শরবত দিয়েছেন। ভেতর থেকে ইহান আহহ বলে শব্দ তুলল।
“আম্মু কি বলব এত দিন সফট ড্রিংক কোক আজেবাজে খেয়ে মুখ পেট নষ্টের পথে ছিল। এবার দেশি লেবুর টকমিষ্টি শরবতে স্বাদ দৌড়ে ফিরে এসেছে।” তার কথা শুনে রেহেলার সাথে সবাই হেসে উঠেছে। আফজাল সাহেব ছেলে কে বললেন “দেখো তো ইহান সবাই কে চিনতে পারছো কি না।”
“কি যে বলো না আব্বু চিন্তে পারব না কেন?”
উত্তরে তিনি মুচকি হাসি দিলেন।
কেউ একজন বলে উঠল
“তুমি চিনতে পারো নি। চিনলে কি একবার ডাকতে না?” ইহান তাকিয়ে দেখতে পেল তার ছোট্ট কিউট বোন কে।
“আরে আমার তিতুন সোনা যে। ওরে বাবা রে আয় এদিকে আয়।”
মুখ ফুলিয়ে দিয়ে বলল “না। আসব না।”
“রাগ করলি?”
“….
“রাগ করলে তোর ভাগের চকলেট কি আমি দিহান কে দিয়ে দিবো?”
“না একদম না।”
তিতুনের চিৎকারে সবাই হেসে উঠল। বোন কে জড়িয়ে ধরে আদর করল।
ইহান সবাই কে একে একে জিজ্ঞেস করল। স্বপ্নার দিকে তাকিয়ে বলল “কাকি কেমন আছো তুমি?”
“ভালো আছি বাবা তুমি কেমন আছো?”
“এই তো।”
“দেখো না তুমি আসবে দেখে একটু আগ পর্যন্ত তিশা কত উত্তেজিত ছিল। এখন তোমায় দেখে কেমন চুপ আছে।”
ইহান পাশ ফিরে তাকাল। দেখতে শুনতে মিষ্টি একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। একে ছবিতে যতটা না কিউট লেগেছে বাস্তবে আরো ভালো দেখতে। মুচকি হেসে ইহান কিছু বলতে যাবে তার আগে তিশা বলল
“কেমন আছো?”
“ভালো। তুমি?”
“ভালো আছি।” বলে মিষ্টি একটা হাসি দিল। ইহান হা করে তাকিয়ে ছিল তখন।
রেহেলা পপি স্বপ্না তিন জা। রেহেলা আফজাল সাহেবের স্ত্রী। তারপর পপি মিতুন সাহেবের আর সবার ছোট স্বপ্না রফিক সাহেবের স্ত্রী। রেহেলার দুই সন্তান ইহান আর তিতুন। ওদিকে পপির সবার থেকে ছোট একটা ছেলে আছে। নাম দিহান। বিয়ের ১৭ বছরের উনার ছেলে জন্মেছে। তারপর স্বপ্নার দুই ছেলে মেয়ে। একজন তিতাস আর তিশা।
আফজাল সাহেব বললেন “সবার সাথে পরিচয় হলো তো ইহান? সবাই এখানে আছে?”
সবাই একে অন্যের মুখ চাওয়াচাওয়ি করে দেখতে লাগল। স্বপ্না জবাব দিলেন
“সবাই আছে ভাই জান।”
তিনি দেখে বললেন না তিতাস আর মিহু তো নেই এখানে। মিহু নাম টা বলতেই ইহান ভ্রু কুঁচকাল। অনেক দিন পর মিহু কে মনে পরল। বিদেশ থাকতে বছরে প্রায় প্রায় মনে হতো আবার ভুলে যেত। ছোটবেলার অনেক কথাই মনে হলো তার। ইহান একটু নড়ে চড়ে বসল।
“তিতাস তো অফিসে কিন্তু মিহু গেলো কোথায়? মিহু মিহু?”
রেহেলা বলে উঠলেন “এমন সময় মিহু আবার কোথায় চলে গেল?”
তিতুন বলল “মিহু আপু কে অনেকক্ষণ আগে ঘরে যেতে দেখলাম গুনগুন করে। জিজ্ঞেস করলাম সবাই নিচে তুমি ঘরে যাচ্ছো কেন? সে বলল সবার নিচে কাজ আছে আর আমার উপরে। আমি পড়তে বসব বুঝলি। তারপর তো আর দেখি নি।”
ইহান ঠোঁট উল্টে দিল। মনে মনে বলল “মেয়ের সাহস কত। মানুষ এত এমনিতেই বিদেশ ফেরা কাউকে দেখতে আসে। তাও এত দিন পর ফিরার পরও একবার এলো না। এই মেয়ে কে তো মজা দেখাতেই হয়। আমাকে ইগনোর করা?”
রেহেলা বেগম বললেন “যাকে সারাদিন বকে বকে পড়তে বসাতে পারি না সে কিনা নিজ থেকে পড়তে বসেছে? হয়তো একা একা ঘরে বসে ফোন টিপছে।”
আফজাল সাহেব মিহু কে ডাকতে শুরু করলেন। মিহু ঘর বন্ধ করে ফোনে ভিডিও দেখছিল। চাচ্চু ডাকছে এখন নিচে যেতেই হবে তার। কোনো বাহানা কাজ করবে না এখানে। না চাইতেও মিহু ওড়না ঠিক করে বিছানা থেকে নামল। ইহানের কথা ভেবে ঠোঁটজোড়া এক করে রাগের বহিঃপ্রকাশ করল। তারপর চেহারা স্বাভাবিক করে দরজা খুলল।
ইহানের চোখ উপরে। রাগে শরীর জ্বলছে তার। কোনো মেয়ে তাকে পাত্তা না দিলে ভীষণ ভাবে রেগে যায় সে। এমন আজ পর্যন্ত হয়নি। তার কথা আর ঠোঁটের হাসিতে মেয়েরা এমনিতেই গলে যায়। আর সেখানে কি না.. দুইতলা থেকে একটা মেয়ে আসছে। মেয়ে কিনা অন্য কিছু সে সঠিক বলতে পারবে না। মুখের একটা পাশ দেখা যাচ্ছে। কঠিন মুখের ভাব। দূর থেকেই বুঝা যাচ্ছে চোখ টানা টানা। সিঁড়ির কাছে আসতেই ইহান মুখ দেখতে পেল। বুকে ধক করে বারি খেয়েছে সাথে সাথে। সাদা একটা জামা রঙিন ওড়না আর পায়জামা। সামনে পাম করে বাঁধা চুল গুলি প্রান্স বেণি করা। সেই কালো কেশের বেণি কোমর ছাড়িয়ে দুল খাচ্ছে। চিকনচাকন বডিতে মেয়ে টা কে অপরূপ লাগছে। চোখের বর্ণনা কোনো সাহিত্যিক ছাড়া মনে হয়ে দিতেই পারবে না। এই চোখের বর্ণনা দিতে হলে তাকে উপন্যাসের বই নিয়ে বসতে হবে। গভীর কালো একটা দিঘী যেন। চিকন চাকন লাল আভা যুক্ত ঠোঁট গুলির দিকে ঘন্টার পর ঘন্টা তাকিয়ে থাকা যাবে। সব মিলিয়ে এই মেয়ে কে দেখতে অসাধারণ। রূপকথার রাজকন্যাদের বর্ণনা করা সহজ কিন্তু এই মেয়ের বর্ণনা করা ইহানের পক্ষে অসম্ভব। বিদেশে ওয়েস্টার্ন ড্রেসের মেয়েদের সাথে এর কোনো তুলনাই হয়না। বাগানে শতশত ফুলের মেলার মাঝে এই একটা অন্যরকম ভিন্ন আর আকর্ষণীয় ফুল সে। যাকে দেখার প্রবলতা কমার নয়। ইহান স্তম্ভিত। নিষ্পলক ভঙ্গিতে তাকিয়ে রয়েছে মোহনীয় মেয়ের দিকে। বুকে ধকধক আওয়াজ হচ্ছে।
চলবে♥