স্নেহের অবজেক্ট,Part : 2
Write : Sabbir Ahmed
-মেয়ে মানুষ এমন কেন? এখন কত সুন্দর করে মিথ্যা বলবে, আমার দুদিন এর জন্য বাসা ছাড়া হতে হবে (রাসিফ)
,,
রাসিফ ইয়াশার পিছু ছুটলো। খালার কাছে যাওয়ার আগেই ধরে ফেলল ইয়াশাকে।
-দেখ এমনি একটা বলবি না ভালো হবে না (রাসিফ)
-তাহলে টাকা দে (ইয়াশা)
-আচ্ছা দিবো তবুও কিছু বলিস না৷ অসময়ে বাসা থেকে বের করে দিবে আমাকে
-নাহহ আমি এমন করে বলব, তোর গলায় আমাকে ঝুলিয়ে দিবে
-তোর মতো চুন্নির থেকে একশ হাত দূরে থাকবো
-আরেহহ তোর মতো বাঁদর এর গলায় আমিও ঝুলবো না বেমানান লাগবে, আমি তো মুক্ত
-এই এই টাকা পাইছোস এবার আমার চোখের সামনে থেকে দূর হ
-ওকে যাচ্ছি, কিছু প্রয়োজন হলে আবার জ্বালাতে আসবো
-রক্ষা করো আল্লাহ
,,
রাসিফ দুপুরের খাওয়া শেষ করে বাসা থেকে বের হয়, খেলাধুলা আর আড্ডা দিয় কখন যে বাসায় ফিরবে তার কোনো ঠিক ঠিকানা নেই..
-খালাম্মা রাসিফ আসবে কখন?(ইয়াশা)
-ওর আসার ঠিক নেই
-রাত তো অনেক হলো
-প্রতিদিন তো এমনি করে
-খালু কিছু বলে না
-কি আর বলবে, ছেলের বাঁদরামি তার ভালো লাগে
-তাই বলে এতো?
-হুমম এতই, তুই রাসিফ এর কথা বাদ দে। রাত অনেক হয়েছে চল খেয়ে নিবি
-হুমমম
,,
রাসিফের মা ইয়াশা খেতে দিয়েছে। ইয়াশা টেবিলে বসে খাচ্ছে।
-তুমি খাবে না? (ইয়াশা)
-না তুই খেয়ে নে। তোর খালু আসলে খাবো
-খালু কি আরও দেড়ি করে আসবে??
-হ্যাঁ আরি দেড়ি হবে
-ওহহহ
-তুই খা আমি একটু উপরের ঘরে যাচ্ছি। তার যা যা লাগে নিয়ে খাবি
-আমাকে বলতে হবে না তুমি যাও..
,,
ইয়াশা তখনও খাচ্ছে সেই মুহুর্তে রাসিফ বাসায় আসলো। ইয়াশা কে দেখেই সে বলল..
-সব সময় খাই খাই, যখনই তোর সাথে দেখা হচ্ছে তখনই দেখি যে কিছু না কিছু খাচ্ছিস (রাসিফ)
-আরে নবাব আসছে যে, বসেন বসেন একসাথে খাই (ইয়াশা)
-আমি যে কথাটা বললাম সেটার জবাব দিবি না
-আরে সব কথার জবাব দিতে হয় না। বসেন খেয়ে নিন
-মা কই?
-খালা উপরের রুমে গেছে
-ওহহহ,
-তোর সাথে অনেক কথা আছে
-কি কথা??
-একটা হেল্প করতে হবে
-বল
-এভাবে না সিরিয়াসলি বল হেল্প টা করবি
-আরে পাগলা কি হেল্প করবো সেটা তো বলবি
-আমার বিয়ে তো প্রায় অর্ধেক হয়েই গেছে মানে কথাবার্তা সব ঠিকঠাক। ছেলে দেখতে আসা এটা শুধু শো অফ। আমি চাই না এই বিয়ে টা হোক
-কেনো বর পছন্দ না?
-উহুমমম
-কেনো?
-বরের ছাদে মাল নেই
-মানে!
-টাকলু
-সমস্যা কি মাথা তে আছে নাকি?
-উহুমম আমার পছন্দ না
-তো আমাকে বলে কি হবে? খালা খালু কে বল তারাই না করে দিবে
-নিজে নিজে অনেক বিয়ে ভেঙেছি, এবার আর আমার কথা শুনবে না বিয়ে দিবেই
-হুমম বুঝালাম
-কিছু একটা কর না
-তাতে আমার লাভ??
-আমি তোর হয়ে যাবো
,,
কথাটা শুনে রাসিফ ভাত চিবানো বন্ধ করে বলল..
-ফ্রিতে দিলেও নিবো না (রাসিফ)
-আচ্ছা আমি তো কথার কথা বললাম, তুই যা বলবি তাই করবো (ইয়াশা)
-বাহহ তুই এত ভালো হইলি কেমন করে? আমি এত অপমান করে কথা বলছি তবুও আমার উপর রাগ করতেছিস না
-হুমমম
-এত পরিবর্তন কেমনে?
-জানি না
-মেয়েরা এমনি, নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য যেকোনো রূপ নিতে পারে
-শুধু মেয়েরা না সবাই। বাদ দে এসব এখন বল ভাঙতে পারবি কি না?
-এটা কোনো ব্যাপার বা তবে রিস্ক আছে অনেক। আমি যা বলব তাই করতে হবে
-হ্যাঁ করবো
-তার আগে কিছু প্রশ্ন করি
-কর
-বিয়ে ভাঙার কারণ কি? কোথাও এ্যাফেয়ার আছে??
-ধুরর ওসব নেই
-তাহলে ভাঙার কারণ কি?
-বললাম তো বর পছন্দ না
-সত্যি তো?
-হ্যাঁ সত্যি
-আমিও তাহলে রাজি, আমি যা চাইবো তাই দিবি ওকে?
-ওকে, বাট এমন কিছু চাইবি না যা আমার দেওয়ার সাধ্যের বাইরে
-না না তোর সাধ্যের মধ্যেই চাইবো
-হুমমম ঠিক আছে গুড নাইট
-খাওয়া শেষ
-হ্যাঁ শেষ তো
-এই শোন শোন
-সময় নেই শোনার, খালা খালু আসুক আমি সব ঠিক করে দিবো
-হুহহহ একটা কথা বলেও শান্তি নেই। পাগলা কে বলে তো আরও ভয় লাগছে না জানি কি করে ফেলে আবার। যাই করুক না কেনো বিয়ে টা যেন ভাঙে
,,
পরদিন সকাল বেলা…
রাসিফের ঘুম ভাঙানোর জন্য ইয়াশা রাসিফের রুমে যায়। রাসিফ কে বাজারে পাঠাবে কিছু কাঁচাবাজার করার জন্য৷ ইয়াশা ডাক শুরু করলো। রাসিফ উমম উমম শব্দ ছাড়া আর কিছুই করলো না। চোখ খুলে দেখলো না কে ডাকছে।
,,
ইয়াশার রাগ হয়, তবে সে একদম রাগ কান্ট্রোলে রাখছে, কারণ বিয়ে ভাঙার একমাত্র হাতিয়ার। ইয়াশা রাসিফ এর পাশে বিছানার উপর বসে রাসিফ এর মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলল…
-এই উঠো না, খালা ডাকছে (ইয়াশা)
-যা আসতেছি (রাসিফ)
-তুই যেগে আছিস!!
-হুমম তবে চোখ খুলি নি
-উঠ এখন
-তুই আমাকে তুমি করে বললি কেনো?
-তোকে উঠানোর জন্য
-নেক্সট টাইম এমন কাজ করবি না
-কেনো?
-এভাবে এসে ডাকলে বউ ভেবে উল্টা পাল্টা কিছু করে ফেলবো
-এই শয়তান এই কি বলিস এগুলা?
-সতর্ক করে দিলাম বুঝলি
,,
রাসিফ উঠে বাইরে গেলো। ইয়াশা সেই জায়গায় থ মেরে বসে আছে, রাসিফ এর কথা গুলো যেন তার মাথার উপর দিয়ে গেলো। তারপর রাসিফ খেয়ে সেই যে বাসার বাইরে গেলো, আবার আসলো দুপুরে, দুপুরে খেয়ে আবার সেই আড্ডায়।
,,
ইয়াশা যে তার সাথে একটু বিয়ে ভাঙা নিয়ে কথা বলবে প্ল্যান করবে ইয়াশাকে সে একটু কথা বলেস্বস্তি দিবে সে সময় টুকুও দেয় না।
,,
তারপরদিন দুপুরের দিকে ইয়াশার বাবা মা চলে আসলো। সেদিন রাসিফ দুপুরেও খেতে আসলো না। সেই আসলো একদম রাতে তাও আবার বাসার সবাই মিলে যখন খেতে বসেছিলো তখন।
,,
খাবার টেবিলে রাসিফ এর বাবা ও ছিলো। খালা খালুকে দেখে রাসিফ নিজের মধ্যে ইনোসেন্ট একটা ভাব আনলো৷ এগিয়ে গিয়ে খালা খালুর খোঁজ খবর নিলো। তারা রাসিফকে একসাথে খেতে বলল।
,,
রাসিফ মানা করলো না তাদের সাথেই বসে গেলো। খেতে খেতে বিয়ে নিয়ে কথা বলছে বড়জনেরা। বিয়ের কথা শুনে রাসিফ মিটিমিটি হাসছে আর খাচ্ছে। হঠাৎ সে বলে উঠলো…
-এই বিয়ে নিয়ে আমার কিছু কথা আছে, যদিও এভাবে কথা বলাটা ঠিক হবে না তবুও বলছি (রাসিফ)
-তোর আবার কি কথা? (বাবা)
-আছে কিছু কথা
-রাসিফ বাবা বল কি বলবি (রাসিফের খালা)
-খালা তুমি কি খেয়াল করেছো ইয়াশা প্রায় সব বিয়ের সমন্ধ মানা করে দিতো
-হ্যাঁ তাই তো করে
-হুমম এর কারণ কি একবারও জানতে চাইছো?
-ওরে কিছু বললে ও বলতো কিছু একটা করবে তারপর বিয়ে
-কিছু একটা আর কি করবে, ও তো অনেক আগেই অনেক কিছু ঘটিয়ে ফেলেছে
-….(ইয়াশা চোখ বড় বড় করে ফেলেছে)
-কি ঘটিয়ে ফেলেছে
-ও আমাকে ভালবাসে আমাদের মাঝে একটা ভালো সম্পর্ক আছে।আমি ওকে মানা করতাম তাই ও সমন্ধ গুলো মানা করে দিতো
,,
খাবার টেবিলের সবাই রাসিফ এর দিকে তাকিয়ে আছে। আর রাসিফ চিল মুড নিয়ে ভাত গেলা শুরু করেছে। এদিকে ইয়াশা তো রেগে আগুন মনে হচ্ছে এখনি রাসিফ কে শেষ করে ফেলবে। টেবিলের সবাই কেমন যেন একটা বিবৃতিকর পরিস্থিতিতে পরে যায়। এমন অবস্থা দেখে রাসিফের বাবা একটু গলা ঝেড়ে বলল…
-এখন খাওয়া শেষ করো এটা নিয়ে পরে কথা হবে
,,
ইয়াশার বাবা-মা মাথা নিচু করে আছে, তারা কি বলবে সেই ভাষা ও খুঁজে পাচ্ছে না৷ রাসিফ তার খাওয়া শেষ করে উঠে যায়। ইয়াশাও কোনো রকম খাওয়া শেষ করে রাসিফ এর পিছু পিছু যায়।
,,
রাসিফ তার রুমে ঢোকার পূর্বেই ইয়াশা তাকে পেছন থেকে ডেকে থামতে বলে।
-কিছু বলবি?? (রাসিফ)
-…(ইয়াশা রাসিফ এর সামনে এসে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে)
-এভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো?
-…(ইয়াশা রাসিফ এর গালে মারলো এক চর)
চলবে