হিংস্র ভ্যাম্পায়ার_২,পর্ব-৪

হিংস্র ভ্যাম্পায়ার_২,পর্ব-৪
লেখিকাঃফারু ইসলাম

___”নূরের পিছনে ফিরে যেনো কলিজায় পানি এলো সেই দারুন করে হেঁসে উৎসাহ সাথে বলে উঠলো ‘ ড্রেক!”
__”ড্রেক নূরের দিকে তাকিয়ে একটুখানি হেঁসে তার পাশে এসে দাঁড়িয়ে বললো ‘ ওকে শিক্ষা তুমি দিতে হবে না ওহ শিক্ষা গ্রহণ করার জন্যই ভার্সিটি তে ভর্তি হয়েছে।”
__”ড্রেকে দেখে এন তোতলাতে তোতলাতে বললো ‘ওহ ড্রেক! ও তোমার সাথে? আগে বলবে তো।”
___”ড্রেক মুচকি হেঁসে মাথা নেড়ে নূর কে বললো ‘ চলো আই থিংক লেকচার শুরু হয়ে গিয়েছে।”
___” নূর মিষ্টি করে হেঁসে ড্রেকের সাথে সিঁড়ি দিয়ে যেতে ধরলো। এরিক রাগে ফুঁসছে কেন গেলো নূর ড্রেকের সাথে! একা গেলে কি হতো?”
__”এনের দলের একটা সুন্দরী মেয়ে দাঁত কিড়মিড় করে বলে বললো ‘ড্রেকের সাথে ঐ এশিয়ান মেয়েটি ওর কি হয় খবর নাও, আমি ড্রেকের সাথে কোন মেয়ে কে সহ্য করতে ইচ্ছুক না।”
___” এন আশ্বাসভরা গলায় বললো ‘ ওকে মেলিন ডোন্ট ওয়ারি তোমাকে সব খবর দিবো আমি।”
__” নূর কৃতজ্ঞতা গলায় ড্রেকে উদ্দেশ্য করে বললো ‘ তোমাকে অনেক ধন্যবাদ ড্রেক।”
__”ড্রেক লাজুক হেঁসে বললো ‘ আমি তোমার বন্ধু আর বন্ধু কে হেল্প করলে ধন্যবাদ বলতে নেই।”
___”নূর হেঁসে মাথা দুলালো।”
__”নূর ড্রেকের সাথে ক্লাস রুমের জন্য এগিয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ নূর খেয়াল করলো তাদের পাশে দ্রুত কেউ একজন চলে গেলো।”
__”নূর সামনে তাকিয়ে দেখে এরিক গটগট করে হেঁটে গিয়ে হেনার পাশে গিয়ে দাঁড়ালো।”
___”তুমি কি কালকে এরিকের কথায় কষ্ট পেয়েছিলে? ড্রেক বলে উঠলো।”
__”নূর চট করে ড্রেকের দিকে তাকালো। ড্রেক এরিক আর হেনাদের দলবলের দিকে তাকিয়ে আছে। নূর কিছু বললো না চুপ করে রইলো। ড্রেক আর প্রশ্ন করলো না নূরকে। ড্রেক আর নূর হেনাদের দলের কাছে গেলো। হেনা কিছু উগ্র বন্ধু নূরের ড্রেস দেখে মুখ চিপে হাসলো। সবাই নূরকে হাই দিলো আর অভিনন্দন জানালো তাদের ক্লাসমেট হওয়ার জন্য।কিন্তু এরিক এক দৃষ্টিতে নূরের দিকে তাকিয়ে আছে যা নূরের দৃষ্টি এড়ালো না।”
___” নূর এরিকের দিকে আঁড়চোখে তাকিয়ে তার গায়ের ওরনা ঠিক করতে লাগলো আর বিড়বিড় করে বললো ‘ কথায় আছে না ভয়ংকর সুন্দর ছেলেদের নজর ও ভয়ংকর হয়। কেমনে করে তাকিয়ে থাকে এতো গুলো মেয়ে সাথে দাঁড়িয়ে আছে, তাও মনে হয় মেয়ে দেখেনি বলে আবারও আঁড়চোখে এরিকের দিকে তাকালো।”
___” এরিক নূরের মনে কথা শুনতে পেয়ে এক পেশে হেঁসে অন্য দিকে তাকালো। নূর অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে এরিকের দিকে, অন্য দিকে কেন তাকালো? ওর মনের কথা বুঝলো নাকি?”
___” নূর নীলের হাত ধরার অভ্যাসগত কারণে তড়িঘড়ি করে ড্রেকের হাত ধরে বললো ‘ড্রেক চলো ক্লাস শুরু হয়ে যাবে।”
___” ড্রেক অবাক হয়ে নূরের দিকে তাকালো।
___” নূর ভ্রু নাচিয়ে বললো ‘ কি হলো চলে এইভাবে তাকিয়ে আছো কেন?”
__”ড্রেক একবার নূরের দিকে তাকালো আরেক বার তার হাতের দিকে। নূর বুঝতে পেরে চট করে হাত ছেড়ে কাচুমাচু গলায় বললো ‘ আমি দুঃখিত আমি বুঝতে পারিনি বলে সবাই মুখের দিকে তাকিয়ে ছুটে ক্লাসে ডুকে গেলো।”
___”এরিক দাঁতে দাঁত চেপে দাঁড়িয়ে আছে তার কপালের রগ দাঁড়িয়ে গেছে।”
___”নূর ড্রেকের হাত ধরা কারও চোখে না পড়লোও এরিকের চোখের পুরোটাই পড়েছে। ড্রেক নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেঁসে ক্লাসে ডুকে গেলো।”
___” এরিকের রাগে যেনো শরীর ফেটে যাচ্ছে। আচ্ছা এতো কেন তার খারাপ লাগছে, নূরকে অন্যের হাত ধরতে দেখে? এইগুলো তো খুবই নরমাল তাদের দেশে তাহলে! আর নূরের সাথে তার শুধু দু’বার মাত্র দেখা তাহলে এতো কেন অধিকার বোদ আসছে ওর জন্য!”
___” আস্তে আস্তে সবাই ক্লাসে ডুকে গেলো। নূর কয়েকটা ইন্ডিয়ান ছেলেমেয়ে সাথে পরিচিত হয়েছে। ড্রেক নূরের সাথে বসতে গিয়েও পারলো না। কারন একটা ইন্ডিয়ান মেয়ে তার সাথে আগে বসেছে।”
__”এরিক নূরের দিকে তাকাতে তাকাতে হেনা সাথে গিয়ে বসলো। নূর কিছু ইন্ডিয়ান ছেলে মেয়ে সাথে কি নিয়ে হাসাহাসি করছে। তাদের কি কি কথার মাঝখানে নূর হেঁসে তার সমস্ত মুখমন্ডল হাত দিয়ে ডেকে ফেলেছে,আহা! কি যে চমৎকার দৃশ্য!”
___” এরিক মুহুর্তে ঠোঁট বাঁকিয়ে হেঁসে বললো ‘ নূর রহমান তোমার এই হাসিতে আজ আমি যতই মুগ্ধ হই না কেনো আজকের যা যা করলে তার শাস্তি তোমাকে ভোগ করতে হবে। কালকে আমার সাথে হাত মিলাতে তোমার ব্যাঙালী ভাব দেখালে কিন্তু আজ! ড্রেকের হাত ধরে টানা হিঁচড়ে করছে এটার ফল তুমি পাবে।”
___” একটুপর তাদের ক্লাসে প্রফেসর আসলো সেই সবাইকে হ্যালো বলে তার পরিচয় দিয়ে বললো ‘ আমি ওম ওলসন।”
___”নূর অবাক হয়ে প্রফেসর টার দিকে তাকালো ওম ওলচন এটা তো ড্রেকের বাবার নাম বললো।”
___” প্রফেসর ওলচন বললো ‘ আমি তোমাদের আবার পরিচয় দিয়েছি কারন তোমাদের মধ্যে অনেক নিউ কামার আছে। তোমাদের মধ্যে নূর রেহমান (রহমান)কে!”
___” নূর উঠে দাঁড়িয়ে হাসিমুখে বললো ‘ প্রফেসর আমি নূর রহমান।”
___”প্রফেসর ওম ওলচন সুন্দর করে হেঁসে বললো ‘ ওহ্,তুমি!তুমি তো একদমি নতুন তোমার কথা আমাকে মি. সোহেন (সোহান) বলেছিলো।”
___” নূর সুন্দর করে হেঁসে মাথা দুলালো।”
___” প্রফেসর ওম ওলচন বললো ‘ তাহলে তো তোমাকে সব নোট কালেক্ট করতে হবে।”
___” নূর ওম ওলচনের দিকে তাকিয়ে রইলো।”
___” প্রফেসর ওম ওলচন বললো ‘ এখানে তুমি যে যে বিষয় পেয়েছো ও সব বিষয় মাত্র কয়েকজন পেয়েছে তোমাকে তাদের থেকে নোট নিতে হবে।”
___” প্রফেসর ওম ওলচন চারিদিকে নজর বুলিয়ে হঠাৎ ডেকে উঠলো’ এরিক!”
___” এরিক মাথা কাঁত করে বললো ‘ ইয়ায় প্রফেসর!”
___”প্রফেসর ওম ওলচন নূরকে উদ্দেশ্য করে বললো ‘ মিস রেহমান (রহমান) তুমি এরিকের সাথে গিয়ে বসে ওর থেকে নোট কালেক্ট করে নাও ওর কাছে সব পাবে।’
[কারন এরিক কোনো দিন ভার্সিটি লেকচার মিস দিতো না কারন এটা তাকে তার শিকার ধরার জন্য করতে হতো]
___” নূর অবাক হয়ে একবার ওম ওলচনের দিকে তাকালো আরেক বার এরিকের দিকে।”
___” এরিক কাঁধ ঝাঁকিয়ে বললো ‘ আই এম স্যরি প্রফেসর ওলচন আমি যার তার সাথে বসি না আমার একটা ক্লাস আছে।”
___” সারা ক্লাস জুড়ে হাসির রল পড়লো শুধুমাত্র এশিয়ান কিছু ছেলেমেয়ে ড্রেক জেন আর এভি বাদে।”
___” এভি আর জেন অবাক হয়ে এরিকের দিকে তাকালো হ্যাঁ এরিক খুবই বেপরোয়া কিন্তু তারা তো দেখলো এরিক সকালে মেয়েটির দিকে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে ছিলো কিন্তু এখন!”
___”নূর যেনো বোবা হয়ে গেলো এতো বড় অপমানে সেই হতবিহ্বল হয়ে এরিকের দিকে তাকিয়ে রইলো।”
___” এরিক শান্ত দৃষ্টিতে ওম ওলচনের দিকে তাকিয়ে আছে।এরিকের পাশে বসে হেনা মিটমিট করে আসছে।”
___” হঠাৎ ড্রেক পিছন থেকে বলে উঠলো ‘ ড্যাড আমি নীর(নূর) কে নোট দিবো।”
___” ওম ওলচন হচকিয়ে বললো ‘তুমি এসেছো আমি তো দেখলামি না তোমাকে।”
___” ড্রেক হাসার চেষ্টা করে বললো ‘ হুম আমি পিছনে ছিলাম।”
___” প্রফেসর ওলচন উজ্জ্বল হেঁসে বললো ‘ ওকে মাই সান তুমি মিস রেহমান (রহমান) কে নোট গুলো সব জায়গা থেকে কালেক্ট করে দিও।”
___” ওম ওলচন চাইলেও এরিকে কিছু বলতে পারেনা কারন এরিকের পরিবার এই শহরের অনেক ধনী। সারা ক্লাস এখানো তাকে নিয়ে হাসছে নূর মাথা নিচু এরিকে পাশ কাটিয়ে ড্রেকের দিকে এগিয়ে গেলো। তার চোখ থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে যা এরিকের চোখে এড়ালো না।”
___”দম ধরে বসে আছে এরিক তার এতো কেনো লাগছে এই মেয়ের চোখের পানি!”
___” হেনা এরিকে বিভিন্ন কথা বলছে আর এরিক আঁড়চোখে নূর কে দেখছে
___” নূরকে ড্রেক বিভিন্ন নোট দেখিয়ে দিচ্ছে নূর নিঃশব্দে নোটের দিকে তাকিয়ে রইলো।
___”ক্লাস শেষ হলো সবাই নূরের দিকে তাকিয়ে মুখ টিপে হেঁসে চলে গেলো।”
___”ড্রে-ড্রেক আমার একটু লাইব্রেরি কাজ আছে বলে নূর ছুটে রুম থেকে চলে গেলো।”
___”নীর,নীর (নূর) আমার কথা শুনো ড্রেক পিছনে থেকে ডাকতে ডাকতে বের হয়ে গেলো।
___”ড্রেক কি হয়েছে? এনা বলে উঠলো।”
___” নীর-নীর অনেক কষ্ট পেয়েছে ঐ হঠাৎ লাইব্রেরি দিকে ছুটে চলে গেলো আমার ওকে সান্ত্বনা দেওয়া উচিত ড্রেক দুশ্চিন্তা গলায় বলে উঠলো।”
___” এনা বললো ‘ ড্রেক আই থিংক তোমার ওকে কিছুক্ষণ একা ছেড়ে দেওয়া উচিত এরিক এটা আজ ঠিক করেনি। ঐ এশিয়ান মেয়ে এরিকের বুঝা উচিত ছিল ওদের মন অনেক কাতর হয়ে থাকে।”
___” তুমি ঠিক বলছো ওকে একটু একা থাকতে দেওয়া উচিত ড্রেক দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বললো।”
___” এনা আর ড্রেকের আলোচনা শুনে কেউ একজন ছুটে লাইব্রেরি দিকে চলে গেলো। লাইব্রেরি লাস্ট কর্নারে মুখে হাত দিয়ে হু হু কান্না করছে নূর। পুরো টা ক্লাস সেই ঠোঁট কামড়িয়ে বসে ছিল আর পারছে না।”
___”কেউ একজন পিছন থেকে স্পষ্ট ভাবে ডেকে উঠলো ‘নূর।”
___”নূর হঠাৎ পিছনে মানুষটির বুকে ঝাঁপিয়ে পড়লো। এরিক এমন আচমকা জড়িয়ে ধরা নামক আক্রমণে তাল সামলাতে না পেরে বইয়ের আলমারি ধরে নিজেকে ঠেকালো। নূর এরিকের বুকে পড়ে হেঁচকি তুলে কাঁদছে শব্দ যাতে না হয় সেই জন্য এরিকের বুকের মধ্যে কামড়ে ধরে আছে।”
___”এরিকের বুক জ্বলছে তাও তার মুখে প্রশান্তির মুচকি হাসি। এরিক তার এক হাত নূরের কোমড়ে আলতো করে রাখলো সাথে সাথে নূর কেঁপে উঠলো।”
___” নূর কাঁদতে কাঁদতে বিড়বিড় করে বললো ‘ আমার এখানে একদমই মন বসছে না নীল এখানে মানুষ খুব খারাপ নীল খুব।”
___” আমি নীল না। আমি এরিক গ্লোবাল এরিক তার চোখ মুখ শক্ত করে বলে উঠলো।”
___” নূর চট করে তার মাথা তুলে এরিকে দেখে যেনো বৈদ্যুতিক শক খেলো সেই দু’কদম পিছিয়ে যাওয়ার আগে এরিক নূরের কোমর চেপে ওকে আবারও টান দিলো ওর বুকে।”
___” নূরের দু’হাত এরিকের বুকে এসে ঠেকলো চোখ মুখ কান্না জন্য লালচে হয়ে আছে পুতুলের মত লাগছে তাকে। এরিক মোহনীয় দৃষ্টিতে নূর কে দেখছে।”
___” নূর অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে এরিকের চোখের দিকে এতো সুন্দর কেনো এই চোখ দু’টো!”
___”নূর তার শরীর কাচুমাচু করে বললো ‘ ছাড়ুন আমাকে।”
___” এরিক দুষ্ট হেঁসে বললো ‘ এতোক্ষণ তো আমার বুক কামড়ে শেষ করে দিচ্ছিলে এখন লাফালাফি কেন করছো?”
___” প্লীজ ছাড়ুন কি করছেন টা কি আপনি?’ নূর কাঁপা কাঁপা মৃদুস্বরে বলে উঠলো।”
___” এরিক তার হাত আরো শক্ত করে বললো ‘কেনো ছাড়বো কারন বলে? নাহলে ছাড়া পাচ্ছো না।”
___” আপনি আমাকে ছাড়ুন না হলে আমি কিন্তু ল…!নূরের কথা শেষ না হতে এরিক নূরের ঠোঁট তার দখলে নিয়ে নিলো।”
___” নূর বিষ্ময় হয়ে যেনো বাকরুদ্ধ এবং পাথর হয়ে গেলো তারপর ছুটাছুটি করা শুরু করলো। এরিক চুম্মুর ভিতরে নূরের দু’হাত শক্ত করে পিঠে আটকিয়ে ধরলো। অমৃতের মত চুষে নিচ্ছে এরিক নূরের ঠোঁট। নূর বারবার ডানে বামে মাথা করছে এরিক এক হাত দিয়ে নূরের দু’হাত চেপে ধরলো আরেক হাত দিয়ে নূরের মাথা। অনেকক্ষণ পর সেই নূর কে ছাড়লো।”
___” রাগে দুঃখে চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে নূর। এরিক এক পেশে হেঁসে নূরের দিকে তাকিয়ে রইলো।”
___” বিষ দিয়ে বিষ ক্ষয় করলাম কষ্ট যখন আমি দিয়েছি কষ্ট কমানোর ঔষধ ও আমাকে দিতে হবে এরিক দুষ্ট গলায় বললো।”
___” নূর চট করে এরিকের দিকে তাকালো। এরিক নূরের লাল হওয়া নাক একটু টেনে নূর কে হতভম্ব অবস্থা রেখে বের হয়ে গেলো।”
___” নূর সেইখানে দাঁড়িয়ে ঠকঠক করে কাঁপতে থাকলো আচ্ছা এখানে কি ভুমিকম্প হচ্ছে সেই এতো কাঁপছে কেন!”
___”হেই নীর (নূর) তুমি এতো ভিতরে কি করছো তুমি ঠিক আছো? ড্রেক প্রশ্নচোখে বললো।”
___” নূর শান্ত দৃষ্টিতে ড্রেকের দিকে তাকালো তারপর ফিসফিস করে বললো ‘ড্রেক তুমি কি আমাকে ধরে বাইরে নিয়ে যাবে?”
___” ড্রেক হেঁসে বললো ‘ কেনো না!”
___”নূর এইবার বিনা সংকোচে ড্রেকের হাত ধরে বাইরে গেলো। মাঠে পৌঁছাতে পৌঁছাতে নূর অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে গেলো। নূর ড্রেকের হাত ধরে কি কি নিয়ে দু’জনে মিলে হেঁসে হেঁসে আসছে।”
___” দূর থেকে এক জোড়া চোখ তাদের দিকে আগুন চোখে তাকিয়ে আছে তার দৃষ্টি নূর ড্রেকের হাত ধরে এদিকে এগিয়ে আসাতে।”
___” ড্রেক আর নূর হেনাদের দলবলের কাছে এগিয়ে আসলো। নূর এরিকের মুখের দিকে একবারের জন্য তাকালো না নাহলে সেই দেখতো এরিক তাকে ক্রুদ্ধ ভরা চোখে গিলে খাচ্ছে।”
___” জেন আর এভি এসেছে সবাই ওদের অভিনন্দন দিচ্ছে কারন আজ সন্ধ্যায় তাদের আংটি বদল। নূর এভি আর জেন কে মিষ্টি করে হেঁসে অভিনন্দন দিলে।নূর কে দেখে এভি আর জেন এরিকের দিকে তাকিয়ে মুখ চেপে হাসলো। কারন এরিক এক দৃষ্টিতে নূরের দিকে তাকিয়ে আছে তার জেনো কোনো দিকে হুস নেই।”
___” হেনা এভির সাথে ড্রেসআপ নিয়ে কথা বলছে এভি বললো তোমরা সবাই আমন্ত্রিত এবং ড্রেস সিলেক্ট করা হয়েছে সাদা।”
___” এভি একবার এরিকের দিকে তাকিয়ে আবার নূরকে মিষ্টি করে হেঁসে বললো ‘ আমি তোমাকেও আমার আংটি বদলে উপস্থিত দেখতে চাই কিন্তু।”
___” নূর চমৎকার করে হেঁসে বললো ‘ অবশ্যই।”
___”নূরের আসার কথা শুনে এরিক এক পেশে হেঁসে উঠলো যা এভির চোখে এড়ালো না সেইও অজানা এক কারণে মাথা দুলিয়ে মুচকি হাসলো।”
___”রিন রেন কে যে দেখছি না?’ হেনা জিজ্ঞেস করে উঠলো।”
___” জেন বললো ‘ওরা বাসা চলে গিয়েছে।”
___”মি. মারলেন গ্লোবাল একটা বই হাতে বসে আছে। তার সামনে এসে দাঁড়ালো গ্লেন গ্লোবাল, জেনিথা গ্লোবাল, এরিনা গ্লোবাল আর মাই গ্লোবাল। মি. মারলেন চট করে বই টা বন্ধ করে ফেললো।”
___” মাই গ্লোবাল বললো ‘ মারলেন কবে আমাদের সেই সময় টা আসবে যে আমরা আমাদের পাওনা জিনিস ফিরে পাবো?”
___” জেনিথা গ্লোবাল অধৈর্য গলা বললো ‘ আমরা আজ পাঁচ-শত বছর থেকে সেই জিনিস টার জন্য অপেক্ষা করছি কবে এরিক আমাদের তা এনে দিবে? এটা আমাদের বংশীয় জিনিস।
___” মি. মারলেন বিরক্ত স্বরে বললো ‘ তোমরা কেন হৈ চৈ করছো? সব কিছুর একটা সময় আছে এরিক তার কাজ করছে সেই এমনে বসে নেই।”
___” গ্লেন শান্ত কন্ঠে বললো ‘ কবে! আজ পাঁচ শত বছর থেকে তাকে করতে দেখছি কাজের কাজ তো কিছুই হলোনা।”
‘___” মি. মারলেন রাগান্বিত স্বরে বললো ‘ আমার ছেলে তার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই খেলায় নেমেছে তাই তোমাদের ধৈর্য ধরতে হবে।”

মি. এরিন দুঃখিত সুরে বললো ‘ ওহো মারলেন তুমি উত্তেজিত হচ্ছো কেন আমরা শুধু আমাদের বাবার জিনিস ফিরত পেতে চাচ্ছি।”
___” মি. মারলেন আর কোন কথার উত্তর না দিয়ে বই টা হাতে নিয়ে গটগট করে বের হয়ে গেলো। বাইরে এসে তিনি ভয়াতুর নিঃশ্বাস ছাড়লেন তারপর বিড়বিড় করে বললেন ‘ ওহ্ ঈশ্বর! অনেক জোরে বেঁচে গেলাম।”
___”খুবই চমৎকার করে সাজানো হচ্ছে গ্লোবাল মহল। আজ মি. মাই আর জেনিথা গ্লোবালের মেয়ে এভি গ্লোবালের অংটি বদল, গ্লেন গ্লোবাল আর এরিনা গ্লোবালের ছেলে জেন গ্লোবালের সাথে। ___” সন্ধ্যা বেলা এরিক তার পোশাক দ্রুত ঠিক করছে। তাকে হেনা কে আনতে হবে হঠাৎ মুচকি হেঁসে বিড়বিড় করে বললো’ নূরকেও।”
___”এরিক শুধু একটা প্যান্ট পরে আছে তার মাথায় ডুকছে না কি পরবে আজ সেই! হঠাৎ কেউ একজন পিছন থেকে এরিকের চোখ চেপে ধরলো। এরিক দাঁত কিড়মিড় করে তার চোয়াল শক্ত করে বললো ‘কেমিলা আমার চোখ ছাড়ো।”
___”কেমিলা হো হো করে হেঁসে এরিকের সামনে এসে তার অর্ধ নগ্ন বুকে হাত বুলিয়ে বললো ‘ তুমি কীভাবে সবসময় বুঝো এটা আমি!”
___” এরিক চট করে কেমিলার হাত শক্ত করে চেপে ধরলো। কেমিলা আহঃ করে তার হাত ছুটানোর চেষ্টা চালালো।”
____” এরিক ক্রুদ্ধ ভরা গলায় বললো ‘ তোমাকে আমি শতবার বলেছি কেমিলা আমার শরীরে সাথে বেশি ঘেঁষবে না।”
___” কেলিনা নাক ফুলিয়ে বললো ‘ কেনো? হাজার নারী সাথে তুমি রাত কাটাও আর আমি ছুঁয়ে দেখলে দোষ!”
___” এরিক গা-ছাড়া ভাব নিয়ে কেমিলার হাত ছুঁড়ে ফেলে তার পোশাক খুঁজতে খুঁজতে বললো ‘ হ্যাঁ অনেক দোষ।”
___” কেমিলা অসহায় গলায় বললো ‘ তুমি হাজার মেয়ে সাথে থাকো আমার সমস্যা নেই হেনাকে নিজ স্বার্থের জন্য বিয়ে নামক অভিনয় করছো তাও আমার সমস্যা নেই। তুমি শুধু একটা রাত আমাকে দাও? আমি তোমাকে চাই এরিক।”
___”এরিক কেমিলাকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে তার পোশাক পরতে ব্যতি ব্যস্ত হয়ে গেলো।
___” কেমিলার দাঁতে দাঁত চেপে তাকিয়ে আছে এরিকের দিকে তার যেনো শরীর জ্বলে যাচ্ছে এই ছেলেটিট দেমাগ দেখে।”
___এরিক হঠাৎ শান্ত গলায় তার শার্টের বোতম লাগাতে লাগাতে বললো ‘ কেমিলা তুমি এই মূহুর্তে আমার রুম থেকে বিদায় হলে আমি খুশি হবো।”
___”কেমিলা অপমান যেনো বর্ণহীন হয়ে গেলো সেই দ্রুত পায়ে এরিকের দরজা শব্দ করে আটকিয়ে চলে গেলো।”
___”এরিক গাড়ী নিয়ে শাঁ করে হেনা দের বাড়ি সামনে এসে থামলো। বাসার ভিতরে গিয়ে মিসেস ফিউ সাথে এটা সেটা কথা বলতে থাকলো সেই কিন্তু দৃষ্টি তার সিঁড়িতে। মিসেস ফিউ বললো মি. সোহানের কাজ পড়েছে নাহলে তারাও যেতে পারতো।”
___” উঁচু হিলের শব্দে এরিক সিঁড়ি দিকে তাকালো হেনা নামছে সেই বুক খোলা আর্ধ নগ্ন একটা সাদা গাউন পরেছে চোখ ধাধানো সুন্দর মেকআপ দিয়েছে।”
___”এরিক হেনার পিছনের মানুষটিকে দেখে যেনো পাথর বোনে গেলো। হেনা এরিকের দিকে তাকিয়ে নামছে সেই ইশারায় তাকে কেমন লাগছে জিজ্ঞেস করলো।”
___”কিন্তু এরিক নির্লিপ্ত সেই যেনো মূর্তি হয়ে গেলো তার ঠোঁট কি চোখের পলক ও ঝাপ্টা দিতে ভুলে গেলো।”
___” নূর সাদা ঝরি কাপড়ে মেগি হাতা সাথে একটা ধবধবে সাদা আচঁল ছেড়ে শাড়ি পরেছে। মাঝখানে সিঁতি করে চুলে খুবই চমৎকার করে খোঁপা করে তাতে সাদা গোলাপ গুঁজেছে। এক হাত ভর্তি সাদা পাথরের চুড়ি,কানে সাদা দুল,কপালে সাদা পাথরের টিপ মুখে লেগে আছে সেই মিষ্টি হাসি। মুখে চমৎকার সজ্জা আর ঠোঁটে লাল টুকটুকে লিপস্টিক।”
___” এরিক মুগ্ধ হয়ে দেখছে তার নূরকে পাশে যে হেনা তার পছন্দের অর্ধ নগ্ন ড্রেস পরে নামছে তার কোনো হুসই নেই। এরিক! সেই তো ঐ সাধারণ শাড়ি পরা মেয়ের রুপে বাকশক্তি হারালো।”
___” নূর এরিকের দিকে তাকিয়ে হাসছে এরিক অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে নূরের দিকে।”
___”হেই এরিক আমাকে কেমন লাগছে? হেনা সামনে এসে বলে উঠলো এরিক যেনো এইবার হুস আসলো। সেই কিছু বলতে গিয়েও পারছেনা বার বার তার দৃষ্টি থামছে নূরের দিকে।”
___” হেনা এরিকে তাড়া দিয়ে বললো ‘ হেই এরিক বলো না কেমন লাগছে আমায়?”
___” এরিক দৃষ্টি নূরের দিকে রেখে দুষ্ট হেঁসে বললো ‘ একটু বেশী আবেদনময়ী।”
___”নূর সটাৎ এরিকের দিকে তাকালো, তার বুঝতে একটুখানি সময় লাগলে না এরিক তাকে উদ্দেশ্য করে কথাটা বলেছে। নূরের চট করে সকালে লাইব্রেরি কথা মনে পরে গেলো সেই শুকনো ঢোক গিললো। সেই দ্রুত পায়ে এরিকে ক্রস করে হুরমুর করে চলে গেলো সামনে।”
___” ওহ্ প্রভু! নীর এটা তুমি! আমি সত্যি চমকপ্রদ হলাম’ ড্রেক এরিকের পিছনে দাঁড়িয়ে হতবুদ্ধি গলায় বলে উঠলো।”
___” নূর খিলখিল করে হেঁসে চোখে মেরে দুষ্ট কন্ঠে বললো ‘ না আমার ভূত।”
___”ড্রেক সেই কথার প্রেক্ষিতে উচ্চ স্বরে হেঁসে বললো ‘ নীর তোমার গায়ে পোশাক টা খুবই দারুন আমি এটার নাম জানতে পারি?”
___” নূর উল্লাস কন্ঠে বললো ‘ অবশ্যই! এটা নাম শাড়ি। আর এটি আমাদের একটি ঐতিহ্যবাহী পোশাক।”
___” ড্রেক অনেক কষ্টে উচ্চারণ করে বললো ‘ কি! স্যাড়ি! ওয়াও সুন্দর নাম।”
___নুূর হাসলো মিষ্টি করে। এরিক সূক্ষ্ম কপাল কুঁচকে তাকিয়ে আছে দু’জনের কথোপকথনের দিকে। সেই এইবার বুঝলো নূর সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় কার দিকে তাকিয়ে হেঁসেছিলো।”
___” মিসেস ফিউ প্রশ্ন চোখে বললো ‘ নূর তুই শাড়ি কেন পরলি? ঐখানে সবাই ওয়েস্টার্ন ড্রেস পরে আসবে।”
___” নূর সুন্দর করে হেঁসে বললো ‘ না ফুফু বাবা আমাকে বলেছিলো দেশের যে প্রান্তে যায় নিজের ঐতিহ্য বহাল রাখতে তাই এর থেকে সুখকর পোশাক আর হয়না।”
___” হেনা ঠোঁট বাঁকিয়ে ফুঁ দিয়ে তার সামনের ছোট চুল গুলো উড়ালো।”
___” হেনা এরিকের হাতের মধ্যে হাত ডুকিয়ে বললো ‘ ওকে এরিক চলো আমরা রওনা হই নূর নাকি ড্রেকের সাথে যাবে।”
___” এরিকের মেজাজ যেনো অগ্নি তে পরিণত হলো। যার জন্য এতো মেহনত সে-ই যাবেনা।”
___” মিসেস ফিউকে সবাই বিদায় দিয়ে গাড়িতে উঠলো।হেনা গাড়িতে হাজার রকমের কথা বলতে লাগলো। আর এরিক! সেই তার চোয়াল শক্ত করে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালাতে লাগলো। তার এক কঠিন ইচ্ছে হচ্ছে এই মুহুর্তে। যা হলো নূরকে টেনে-হিঁচড়ে তার গাড়িতে এনে আদুরী ভাবে কয়েকটা চড়থাপ্পড় মারা।”

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here