হিংস্র ভ্যাম্পায়ার_২,পর্ব-3

হিংস্র ভ্যাম্পায়ার_২,পর্ব-3
লেখিকাঃফারু ইসলাম

__” নূর মুচকি হেঁসে এরিকের দিকে তাকিয়ে হাই বলতে গিয়েও থেমে গেলো। তার সামনে দাঁড়ানো ভয়ংকর চোখ ধাঁধানো সুন্দর একটি ছেলে। যার সৌন্দর্য সাথে হয়তো কোনো কিছু তুলনা হয় না! আচ্ছা এতো ভয়ংকর সুন্দর বুঝি কোনো মানুষ হয়! কিন্তু ছেলেটির চমৎকার চোখ দুটি তার খুবই চেনা লাগছে।”

___” এরিক নূরের মুখের দিকে তাকিয়ে হ্যান্ডশেকের জন্য হাত বাড়িয়েই দিলো। নূর এখনো অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে এরিকের চোখের দিকে।”

___” কিছুই হয়নি সেই নূর কে চিনেও না এমন একটা ভাব নিয়ে এরিক তার পুরুষালী চমৎকার দৃঢ় কন্ঠে হাত বাড়িয়েই নূর কে হাই বললো।”

___” নূর আরো অবাক হয়ে দম ধরে গেলো চমৎকার সেই চোখ চমৎকার সেই দৃঢ় ঝংকারময় কন্ঠ! সেই হতবিহ্বল হয়ে এরিকের দিকে তাকিয়ে কাঁপা কাঁপা মৃদুস্বরে মুখে বললো ‘ হাই!”

___” এরিক কপাল কুঁচকে নূরের দিকে তাকালো। হেনা পরিস্থিতি বুঝতে পেরে বললো ‘ আসলে ঔ পরিচিত মানুষ ছাড়া কারও সাথে হাত মিলাই না।”

___” এরিক স্পষ্ট বাংলা ভাষায় মুখ বিকৃত করে বললো ‘ ও টিপিক্যাল বাঙালী।”

___” নূরের যেনো শরীর জ্বালা দিয়ে উঠলো কীভাবে তাকে মুখ বিকৃত করে অপমান করলো ছেলেটি!”

___” এরিকের মুখ বিকৃত দেখে হেনা মুচকি হেঁসে উঠলো।”

___” ড্রেক প্রশ্ন চোখে বললো ‘ এরিক তুমি কি হেনা আর নূরকে বাসায় পৌঁছে দিবে?”

___” এরিক তার পকেটে হাত দিয়ে শান্ত স্বরে বললো ‘ আমি তো শুধু হেনা পিক করতে এসেছি তার কাজিনকে না।”

___” নূর হতবুদ্ধি হয়ে এরিকের দিকে তাকালো কীভাবে অপমান করছে লোকটা থাকে নূরের চোখ পানিতে ছলছল করে উঠলো। আজকাল অল্প কথা তে কেন যেনো তার চোখের পানি চলে আসে।”

___” এরিক দৃষ্টি আগের মতো শান্ত রেখে নূরের চোখের দিকে তাকিয়ে রইলো দীর্ঘক্ষণ।”

___” হেনা খুশিতে গদগদ হয়ে গেলো এরিকের মত ছেলে তাকে ছাড়া আর কিছু বুঝে ওহো সেই কত ভাগ্যবতী!”

___” নূর দৃঢ় কন্ঠে ড্রেককে উদ্দেশ্য করে বললো ‘ আমি ড্রেকের সাথে যাবো। তুমি কি আমাকে নিয়ে যাবে ড্রেক?”

___” ড্রেক মাত্রাতিরিক্ত খুশি হয়ে বললো ‘ অবশ্যই! আমি তোমাকে ড্রপ করে দিবো।”

___” নূর আরো একবার এরিকের শক্ত মুখের দিকে তাকিয়ে ড্রেকের সাথে গাড়িতে উঠে গেলো।”

___” এরিক দাঁতের উপর দাঁত চেপে চোয়াল শক্ত করে দাঁড়িয়ে রইলো। সেই বারন করেছে দেখে ড্রেকের সাথে যেতে হবে! এই মেয়ের উচিত ছিল জোর করে হলেও নিজের বোনের সাথে যাওয়া।”

___” হেনা কাঁধ ঝাঁকিয়ে বললো ‘ এরিক চলো আমরাও যাই।”

___” এরিক ড্রেকের চলে যাওয়া গাড়ির দিকে একনজর তাকিয়ে হেনা কে উদ্দেশ্য করে বললো ‘ ওকে চলো।”

___” পুরো গাড়িতে নূর বাইরে দিকে তাকিয়ে চোখের পানি ফেললো কেন তাকে এইভাবে অপমান করলো মানুষটা! কে সেই!”

___” ড্রেক অনেক বার নূর কে দেখার চেষ্টা করলো কিন্তু ফলাফল শূন্য নূর এক দৃষ্টিতে বাইরে তাকিয়ে রইলো।”

___” দু’জনের গাড়ী হেনাদের বাসার সামনে থামলো। হেনা এরিকে কে নিয়ে আগেই ভিতরে ডুকে গেলো। ড্রেক জানালো তার মা তাকে কল দিচ্ছে তাকে এখনই বিদায় নিতে হবে নূর মুচকি হেঁসে বিদায় দিলো ড্রেকে।”

___” হেনা আর এরিক বাসায় এসে দেখলো হেনার ছোট ভাই রাফি এসেছে ট্যুর থেকে। মিসেস ফিউ কে সেই তার কিনাকাটা দেখাচ্ছে।”

___” মিসেস ফিউ এরিকে দেখে খুশিতে আধমরা হয়ে গেলো, সেই এটা সেটা খাবার রেডি করতে লাগলো যা তার প্রতিবারে কাজ। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় এরিক কোনো কিছু মুখে না দিয়ে চলে যায় তারপরেও মিসেস ফিউ হার মানতে রাজি না।”

___” হেই রাফি! রাফির গাল টেনে বলে উঠলো হেনা।”

___” রাফি গাল ভেংচি কেটে বললো ‘ নূর আপু কোথায়?”

___” হেনা ঠোঁট বাঁকিয়ে বললো ‘ আপনার নূর আপু পিছনে।”

___” হেনা গিয়ে তার বাবার সামনের সোফায় পায়ের উপরে পা উঠিয়ে বসলো যার ফলস্বরূপ তার শরীরে অধিক অংশ দৃশ্যমান। এরিক গিয়ে সোফায় বসে সোহান সাহেবের সাথে গল্প করতে লাগলো সব কথা সোহান সাহেব বলছে এরিক শুধু হা হু করছে।
কারণ তার নজর একটি মানুষের দিকে স্থির। না চাইতেও সেই নূর থেকে তার নজর ফিরাইতে পাচ্ছেনা।”

___” রাফি নূর কে দেখে খুশিতে নূর আপু বলে চিৎকার দিয়ে উঠলো। নূর হাঁটু গেড়ল বসে রাফি কে জড়িয়ে ধরলো।”

___” রাফি আদুরী গলায় নূরের গালে চুম্মু খেয়ে বললো ‘ নূর আপু তুমি অনেক বেশী বিউটিফুল হয়ে গেছো!”

___” নূর রাফির গুলুমুলু গালে চুম্মু খেয়ে বললো ‘ ও রিয়েলি মাই কিউট পান্ডা!”

___” রাফি নূরের সাথে গল্পের আসর জমিয়ে বললো ‘ ইউ নো নূর আপু যখন শুনলাম তুমি এসেছো আমি আমার ট্যুর দুই দিন করে চলে আসলাম।”

___” নূর মিষ্টি করে হেঁসে রাফির নাক টেনে দিলো।”

___” আঁড়চোখে রাফি আর নূরের খুনসুটি দেখছে এরিক। আচ্ছা এতো কেন দেখতে ইচ্ছে করছে তার মেয়েটিকে কি আছে ওর মধ্যে!”

___” মিসেস ফিউ এরিক কে ডিনার করে যাওয়ার জন্য জোরাজুরি করতে লাগলো। এরিক কোনো পথ না পেয়ে বললো ‘ ওকে কিন্তু আমার সাথে সবাইকে খেতে হবে।”

___” সবাই এক সাথে খেতে বসলো। নূর মাথায় গোমটা দিয়ে খেতে বসলো তা দেখে রাফি বলে উঠলো ‘ আপু তুমি যখন গোমটা দিয়ে খেতে বসো আমার খুবই ভালো লাগে।”

___” নূর সুন্দর করে হাসলো সেই কথার প্রেক্ষিতে।”

___” এরিক নূরের দিকে ত্যাড়া চোখে তাকিয়ে একপেশে হেঁসে বিড়বিড় করে বললো ‘ হুহ গেমটা(গোমটা) শী ইজ নট মাই টাইপ! আমি শুধু শুধু ওকে নিয়ে চিন্তা করছি।”

___” ম্যাম আপনার নামে কল এসেছে উনি আপনাকে ভিডিও কলে যেতে বলছে হেনাদের বাসায় কাজের ছেলে ভিন এসে বললো।”

___” নূর মাথা তুলে স্বাভাবিক গলায় বললো ‘ কে ফোন করেছে?”

___ভিন স্পষ্ট আমেরিকান ভাষায় বললো ‘ উনি উনার নাম নীল বলেছিলো।”

___নূর অসাধারণ ভাবে হেঁসে বললো ‘ নীল!”

___” এরিক নূরের দিকে তাকিয়ে দেখলো তার চোখ মুখে উল্লাস ভরে উঠেছে। এরিক আশ্চর্য হয়ে তাকিয়ে আছে নূরের হাসির দিকে। অদ্ভুত! সেই কি এমন চমৎকার হাসি আর কারও দেখেছে! না তো!”

___” এরিক কে বিষ্ময় করে দিয়ে নূর ছুটে সিঁড়ি বেয়ে চলে গেলো খাওয়ার ফেলে।”

___” মিসেস ফিউ মুচকি হেঁসে বললো ‘আমার মনে হয় কি হেনা নূর আর নীলের মধ্যে কিছু চলছে দেখলি তো কেমন ছুটে গেলো!”

___” মম আমাকে এ সবজি টা দাও তো হেনা এমন একটা ভাব করলো যেনো নূর আর নীলের ব্যাপারে সেই কথা শুনতে মোটেও ইচ্ছুক না।”

___” এরিকের হঠাৎ কেন যেনো মেজাজ চট করে গরম হয়ে গেলো। এরিক তার চমৎকার দামি হাত ঘড়ি দিকে তাকিয়ে বললো ‘ আমাকে যেতে হবে এখন হেনা।”

___” হেনা বাঁজ পড়া শব্দের মত চমকে উঠে বললো ‘ তুমি কি বলছো এরিক! তুমি তো এক চামচ খাওয়ার ও মুখে দাও নি!”

___” মি. সোহান তদারকি গলায় বললো ‘ হেই এরিক খেয়ে যাও তুমি।”

___” এরিক নূরের চলে যাওয়া সিঁড়ি দিকে তাকিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বললো ‘ আমার একটা কাজ পড়ে গেছে আমি থাকতে পারবো না।”

” সেই আর কেউকে কিছু না বলতে দিয়ে তড়িঘড়ি করে বের হয়ে গেলো। তার পিছনে বডিগার্ডের মত হেনাও দৌড়ে বের হয়ে গেলো। মিসেস ফিউ বোকার মত একবার এরিকের বের হওয়া দিকে তাকালো আরেক বার স্বামী দিকে তাকালো।

___” তার নেলপলিশ নষ্ট করে সেই রান্না করলো কিন্তু এরিক প্রতি বারে মত উধাও হয়ে গেলো!”

___” রাফি মুচকি হেঁসে খাওয়ায় মনোযোগী হলো।”

____” এরিক গটগট করে গাড়ি দিকে এগিয়ে গেলো তার কেন যেনো শরীরের আগুন জ্বলছে রাগে।”

___” হেনা দৌড়ে এসে এরিকের পিছনে থেকে জড়িয়ে ধরে কাতর স্বরে বললো ‘ এরিক কি হয়েছে তোমার হঠাৎ কেন এমন ব্যবহার করছো? তুমি প্লীজ এমন করো না আমার কষ্ট হয়।”
___”এরিক তার চোখ বন্ধ করে মেজাজ শান্ত করার চেষ্টা চালালো। তার হেনা সাথে রাগ দেখালে হবে না তার মেইন লক্ষ্য তে পৌঁছাতে হেনা তাকে সাহায্যে করবে, এরিক পিছনে ফিরে হেনার মুখের দিকে তাকালো হেনা কান্না করছে এরিক শান্ত গলায় বললো ‘ আই এম স্যরি হেনা তুমি জানো আমার মুডের কোনো ঠিক নেই। আমাকে সত্যি একটা কাজে যেতে হবে প্লীজ সুইটহার্ট।”
___” হেনা লুতুপুতু গলায় তার ঠোঁট দেখিয়ে বললো’ ওকে দেন ইউ ক্যান গো বাট এখানে কিস করে যেতে হবে।”
___” এরিক দুষ্ট হেঁসে বললো ‘ হোয়াই নট সুইটহার্ট!”
___” হেনার ঠোঁটে তার ঠোঁট বসালো। প্রতি দিন হেনার চুম্মু এরিক অন্য সব মেয়েদের চুম্মুর মত ইনজয় করে কিন্তু আজ কেন যেনো জঘন্য রকমের বিরক্তি লাগছে। হেনা তার এক হাত উঁচু হিল জুতা পরেও এরিকে পা তালু খাঁড়া করে চুম্মু গেলো। হেনা চোখ বন্ধ করে এরিকে চুম্মু খাচ্ছে। এরিকের হঠাৎ হেনাদের বাসার দোতালা বারান্দায় তার চোখ আটকি গেলো। নূরের মুখে সেই ভুবন ভুলানো চমৎকার হাসি, সেই ফোন হাতে কারও সাথে ভিডিও তে
কথা বলছে। কলে বার বার মাথা না বোধক দুলিয়ে কোন কিছুতে না না করছে। এরিক চট করে হেনা কে ছেড়ে দিয়ে গাড়ি তে উঠে শাঁ করে চলে গেলো। হেনা ভোঁতা মুখ করে তাকিয়ে ছিলো এরিকের চলে যাওয়ার দিকে।”
__” নূর জিদ্দি গলায় বললো ‘ নো নো নীল হবে না তুই বল আগে কখন আসবি?”
___” নীল হতাশ গলায় বললো ‘ আমার আসতে এখনোও অনেক সময় লাগবে জানটা দীর্ঘ ১ মাসের মতো।”
___” নূর চমকে বললো ‘১ মাস!”
___” নীল মাথা দুলালো।”
___”নূর ঠোঁটউলটিয়ে বললো ‘ চলে আস না দয়া করে আমি একা কি করবো? ”
___নীল মন খারাপ সুরে বললো ‘ দেখ নূর একদম এই কিউট ফেইস বানাবি না আমার খারাপ লাগে আমি আসতে পারলে অবশ্যই আসতাম।”
___” নূর কাঁদো গলায় বললো ‘ আমি একা একা কি করবো?”
___” ও মেরি জান ডোন্ট ওয়ারি ফুফু তোকে হেনার ভার্সিটি তে ভর্তি করে দিবে আজই আমাদের বললো ‘ নীল বলে উল্লাস কন্ঠে বলে উঠলো।”
___” নূর ভাবলেশহীন ভঙ্গিতে বললো ‘ হুম তাহলে হয়তো একটু সময় যাবে।”
___” নূর হঠাৎ চিন্তিত গলায় বললো ‘ আচ্ছা নীল মা কোন সমস্যা করছে?”
__” নীল ঘাবড়ে গিয়ে বললো ‘না-না তো।”
___” ও তাহলে তো ভালোই নূর বলে উঠলো।”
___” নীল মুচকি হেঁসে বললো ‘ ওকে মাই জান আমি এখন ঘুমাবো। নূর মুচকি হেসে নীল কে বিদায় দিলো। ল্যাপটপ বন্ধ করে গম্ভীর হয়ে বসে আছে নীল সেই কীভাবে নূর কে বলবে! তার মা নামের সেই জঘন্য মহিলা টা আলরেডি তাদের তিন বার পুলিশের ধমকি দিয়ে গেছে নূর কোথায় তা বলার জন্য। এই দিক টা একটু ঠিক করার জন্য নীল কে থাকতে হবে না হলে মিসেস রিমি বুঝে ফেলতে সময় লাগবে না।”
___” রাতে মিসেস ফিউ এসে নূর কে জানালো কাল থেকে তাকে হেনার ভার্সিটি যেতে মি. সোহান সব কিছু ঠিক করে দিয়েছে। নূর কম্বল গায়ে দিয়ে গুটিশুটি মেরে শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগলো নূর।কেমন হবে এই ভিনদেশের ভর্সিটির লাইফ! কালকে থেকে শুরু হবে তার নিউ লাইফ জার্নি।”
___” মিসেস ফিউ তার চুল আঁচড়াতে আঁচড়াতে মি. সোহান কে বললো ‘ আমি তোমাকে আগেও না করেছি আজকেও করছি হেনা সাথে যে এরিকের বিয়ে ঠিক হয়ে আছে এটা রাফি সামনে আর নূরের সামনে ভুলেও বলবে না।”
___” মি. প্রশ্ন স্বরে বললো ‘ কথা তো বুঝলাম! কিন্তু রাফি কে বললে কি হয়েছে? ও তো হেনার আপন ভাই।”
__” মিসেস ফিউ গর্জে উঠে বললো ‘ এতো বড় ব্যবসা সামলাও এটা দেখো না। তোমার ছেলে নূর আপু নূর আপু করে মুখে ফেনা তুলে ও শুনলে পটপট করে সব বলে দিবে নূরের কাছে।”
___” ওহ! এই বার বুঝলাম মি. সোহান কফি তে চুমুক দিতে দিতে বললো।”
___” মিসেস বিরক্ত সুরে বললো ‘ নূরকে বললে সেই সাথে বাংলাদেশ কথা প্রচার করবে আর ওরা সবাই চেচামেচিকরবে কেন একটি শেতাঙ্গ কাছে বিয়ে দিচ্ছি। ”
___” মি. সোহান কাঁধ ঝাঁকিয়ে বললো’ আচ্ছা বাবা বলবো না কিছু তুমি একদমই চিন্তা করো না নূর আর রাফি কে কিছুই বলবো না যতদিন না ওদের আংটি বদল হচ্ছে। মিসেস ফিউ স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলো উনি কোনো ভাবে এরিকের মত কোটি পতি ছেলে হারাতে চাই না।”
___” সকালে নূর তার সব জামা চেইক করছে কোনটা পড়ে আজ যাওয়া যায়। হ্যাঁ! পেয়ে গেছে সেই তার সবচাইতে প্রিয় কালার। রেডি হয়ে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামছে নূর তার পিছনে হেনা।”
___” মাই গড নূর আপু ইউ আর লুকিং ওয়াও রাফি হেঁসে উঠে বললো। ধন্যবাদ আমার কিউট পান্ডা নূর মিষ্টি করে হেঁসে জবাব দিলো।”
___” আর আমাকে?’ হেনা বলে উঠলো।
___” রাফি বললো ‘ তোমাকেও লাগছে ঠিকঠাক বাট নূর আপু চমৎকার লাগছে।”
__” হেনা বিষ্ময় গলায় বললো ‘ নূরের থেকে তো আমার ড্রেস দামি তাহলে!”
__” রাফি হাসি মুখে বললো ‘তুমি তো অন্য সব আমেরিকান দের মত ড্রেস পরো তাই তোমাকে আমার আলাদা লাগে না কিন্তু নূর আপু বাঙালী রয়ে গেছে তাই আমার ভালো লাগছে।”
__” নূর আজ খুবই চমৎকার একটা ফুল সাদা একটা ড্রেস পরেছে, সাথে জিন্স পরেছে। তার সাথে মাল্টি কালারে একটা ওরনা নিয়েছে গোলা সাথে পেঁচিয়ে, পায়ে চমৎকার নকশির কারু কাজে এক জোড়া নাগরা পরেছে। আর ঘাড়ে চমৎকার একটা ব্যাগ নিয়েছে বাচ্চা দের মত করে। নূর সব সময় হালকা সাজ দিতে পছন্দ করে তাই আজও তার অনিয়ম হয় নি সেই আজও চমৎকার ভাবে হালকা সাজ দিয়েছে।”
___” হেনা একটা হলুদ বাবলি ওয়েস্টার্ন ড্রেস পরেছে, তার সাথে উঁচু করো পাহাড়ে সমান করে চুল খোঁপা করেছে মুখে চোখ ঝলসে দেওয়ার মত মেকআপ,হাতে চমৎকার হলুদ হ্যান্ড ব্যাগ তাকে দেখে মনে হবে সেই ভার্সিটি না কোনে পার্টিতে যাচ্ছে।”
___” হেনা আর নূর মিসেস ফিউ আর রাফি কে বিদায় দিয়ে ভার্সিটি জন্য রওনা হলো। হেনা পুরো গাড়িতে তার মেক-আপ ঠিক করতে ব্যস্ত ছিলো। গাড়ি এসে বিশাল বড় একটা ভার্সিটি সামনে থামলো। নূর গাড়ি থেকে নেমে যেনো পাথর হয়ে গেলো গাড়ি চলে গেলো হেনা তার বন্ধুদের কাছে ছুটে চলে গেলো।”
___” কিন্তু নূর এখানো পাথরের ন্যায় দাঁড়িয়ে আছে। তার মনে হচ্ছে সেই কোনো দুর্গে এসে পড়েছে। এতো চমৎকার সব ভবন ঠিক যেন কালো সাদা মিক্স করা পোড়ামাটির তৈরী একেকটি বিশাল ভিলা সব কারুকাজ করা।বড় একটা চত্বর ঘিরে সব ভবনগুলো ছড়িয়ে পড়েছে। একটা স্বর্গরাজ্য যেন পেল নূর এইবার দেশ ছেড়ে আসার জন্য আপসোস হচ্ছে না তার।নূর টুকুর টুকুর পায়ে চারিদিকে হতবিষ্ময় হয়ে দেখতে থাকলো।”
___” একটুপর খুবই দামি কয়েকশত হাজার ডলারের একেকটা একেক রকমের তিনটি গাড়ি এসে ভার্সিটি তে থামলো। সাথে সাথে ভার্সিটি মেয়েরা তাদের চুল মেকআপ ড্রেস ঠিক মত আছে কি না তা ঠিক করতে ব্যস্ত হতে থাকলো।”
___” প্রথম গাড়ি থেকে নামলো এরিক গ্লোবাল। ২য় গাড়ি থেকে নামলো জেন আর এভি নামক এক প্রেমিক জোড়া।৩য় গাড়ি থেকে নামলো রিন রেন নামক একি চেহেরায় দুটি চমৎকার ছেলে।”
___” রিন রেন গাড়ি থেকে নেমে ডানে বামে তাকিয়ে এরিকে উদ্দেশ্য করে বললো ‘এরিক তোমার সুইটহার্ট নামক বডিগার্ড টা কে যে দেখছি না বলে দুজনে মিলে হট্ট হাসিতে ফেটে পড়লো।”
___” এরিক রাগে কটমট করে ওদের দিকে তাকালো। জেন আর এভি মুখ চিপে হাসলো। এরিকের ভয়ংকর দৃষ্টি দেখে রিন রেন হাসার চেষ্টা করে একসাথে বললো আমরা মজা করছিলাম বলে ছুটে একসাথে চলে গেলো।”
___” এরিক নাক ফুলিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে চমকপ্রদ হয়ে গেলো। নূর হাত দিয়ে দিয়ে ভার্সিটি চমৎকার ভাস্কর্য গুলো হাত দিয়ে ধরে ধরে দেখছে। এরিক মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে নূরের দিকে। নূর কে দেখে মনে হচ্ছে কোনো বিখ্যাত বড় আর্টিস্ট সাদা কালো রং দিয়ে একটা ছবি একে রেখেছে।”
___” এরিক তুমি যাবে না আমাদের সাথে জেন বলে উঠলো। জেন আর এভি খেয়াল করলো এরিক দূরে সাদা ড্রেসের একটা মেয়েকে দেখছে। ওরা হেঁসে উঠে এগিয়ে গেলো হয়তো এরিক মেয়েটিকে আজকে রাতের সঙ্গী করবে তার।”
___” হেই ইন্ডিয়ান!’ কেউ একজন ডেকে উঠলো নূর কে। নূর পিছনে ফিরে দেখলে এক দল শেতাঙ্গ তার দিকে তাকিয়ে আছে। সেই খানে অতি উগ্র কয়েকটা আমেরিকান শেতাঙ্গ ছেলেমেয়ে উপর নিচ হয়ে বসে আছে। তাদের অনেকেই হাতে বিয়ারের বোতল।”
___” হেই ইউ তোমাকে ডাকছি? ঐ দলের মধ্যে পোশাকে সবচাইতে উগ্র ছেলে টি আগুলের ইশারায় নূর কে বললো।”
___” নূর তাদের কথাকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে পাশ কেটে চলে যেতে ধরলে ঐ উগ্র ছেলে টি নূরের পথ আটকিয়ে ধরে বললো ‘এতো কিসের নকশা তোমার ইন্ডিয়ান মেয়ে?”
___” আমার পথ ছাড়ুন!’ নূর দৃঢ় কন্ঠে বলে উঠলো।”
___” ছেলেটি টিটকারি সুরে বললো ‘ এতো দাম ইন্ডিয়ানদের!’
___” নূর স্বাভাবিক গলায় বললো ‘ আমি ইন্ডিয়ান না উত্তর পয়েছেন? এইবার যেতে দেন।”
___” দলের মধ্যে একজন উগ্র ছেলেটিকে উদ্দেশ্য করে বললো ‘ এন ও অনেক অহংকার করছে ওকে একটা শিক্ষা উচিত।”
___” এন পৈশাচিক হাসি দিয়ে বললো ‘ সেটা তো অবশ্যই।”
___” নূরের যেনো হাত পা কাঁপছে সেই আঁড়চোখে হেনাকে খুঁজছে আর বিড়বিড় করে বলছে ‘ হেনা কই গেলো তাকে পেলে? প্লীজ হেল্প মী!”
___” নূরের প্রতিটা বিড়বিড় করে বলা কথা এরিক স্পষ্ট শুনছে। এরিক তার হাত মুঠো করে বললো ‘ ব্লাডি বিচ তোমাদের কে তো আমি বলে এগিয়ে আসতে ধরলো।”
___” তো ইন্ডিয়ান তোমাকে কি শিক্ষা দেওয়া উচিত? ‘এন বলে উঠলো।”
___”ওহ ইন্ডিয়ান না ও ব্যাঙলা দেশি (বাংলাদেশি) পিছন থেকে কেউ একজন বলে উঠলো।”
___” নূর পিছনে ফিরে যেনো হচকিয়ে গেলো।”

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here