কোথাও_কেউ_নেই
হুমায়ুন আহমেদ
২১.
জাহানারা গা ধুয়ে ছাদে গিয়ে বসেছে।
ক’দিন ধরেই অসহ্য গরম। গা ধুয়ে ছাদে বসে থাকলে কিছুক্ষণ ভাল লাগে তারপর আবার শরীর ঘামতে থাকে। ইচ্ছে করে বিরাট কোনো দিঘিতে ডুবিয়ে বসে থাকতে। পদ্মদিঘি–যার জলে টাটকা পদ্মের গন্ধ।
আজ ছাদে বসে থাকতে ভাল লাগছে না। বাতাস একেবারেই নেই। অনেক দূরের আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। লোক দেখানো বিদ্যুৎ। বৃষ্টি বাতাস হবে না। জাহানারা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলল! ছাদে বসে থাকার কোনো অর্থ হয় না। এরচে বসার ঘরে ফ্যানের নিচে বসে থাকা ভাল। বাতাস খানিকটা লাগবে।
বড় আপা।
জাহানারা চমকে তাকাল। মীরা উঠে এসেছে। সে তার স্বভাবমত পা টিপে টিপে এসে কানের কাছে চেঁচিয়েছে। বড় আপা।
চমকে দিয়েছি আপা?
হুঁ। খুব খারাপ অভ্যাস মীরা। মানুষকে চমকে দিয়ে তোর লাভটা কি হয়? কেন এ রকম করিস?
আর করব না। নিচে যাও আপা। তোমার কাছে একজন ভদ্রলোক এসেছেন।
আমার কাছে এত রাতে?
রাত তো বেশি হয়নি আপা। মোটে নটা একুশ। ভদ্রলোক আসার সঙ্গে সঙ্গে ঘড়ি দেখলাম।
কে সে?
জানি না কে? খুব ভীতু ভীতু চেহারা। আমাকে আপনি আপনি করে কথা বলল। এটা কি মিস জাহানারার বাসা? উনি কি আছেন? তাকে দয়া করে বলবেন মামুন সাহেব এসেছেন। নিজেকে চমৎকার করে সাহেব বলল। আমি আর একটু হলে হেসে ফেলেছিলাম।
জাহানারা বিস্মিত হয়ে নিচে নেমে এল। এত রাতে হুঁট করে বাসায় উপস্থিত হবার কোন মানে হয়? তার সঙ্গে এমন কোন ঘনিষ্ঠতা নিশ্চয়ই নেই।
মামুনের মুখে অপ্রস্তুত একটা ভঙ্গি। এত রাতে উপস্থিত হবার কারণে সে নিজেও যে লজ্জিত তা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে। কাজটা যে ভাল হয়নি চলে যেতে পারলে সে বাঁচে এই ভাবটা স্পষ্ট। জাহানারার একটু মায়াই লাগল।
আরে আপনি।
অসময়ে এসে পড়েছি। খুবই লজ্জিত। এত রাত হয়েছে বুঝতে পারিনি।
দাঁড়িয়ে আছেন কেন বসুন। রাত এমন কিছু বেশি হয়নি।
আগেও কয়েকবার এসেছি আপনার সঙ্গে দেখা হয়নি। একবার অবশ্যি বাসাতেও এসেছিলাম।
কই আমাকে তো কেই কিছু বলেনি।
না মানে আপনাকে বলবার কথাও নয়। আমি রাস্তা থেকে চলে গেছি।
কি আশ্চর্য কেন?
সেবাব ও রাত হয়ে গিয়েছিল। ভাবলাম। এত রাতে বিরক্ত করা।
আপনার বান্ধবী কেমন আছেন?
প্রশ্নটা করে জাহানারা নিজেই খানিকটা অপ্রস্তুত হয়ে গেল। হঠাৎ করে বান্ধবীর প্রসঙ্গ নিয়ে আসার কোনোই কারণ নেই। কিংবা কে জানে হয়ত কারণ আছে। হয়ত তার অবচেতন মনে এই প্রসঙ্গটা আছে!
মুনার কথা বলছেন?
জি।
ওর কোন খবর পাচ্ছি না। বাসায় তালা। দু’দিন গিয়ে ঘুরে এসেছি। কোথায় গেছে তাও কেউ জানি না।
অফিসে যান। অফিসে গেলেই নিশ্চয়ই খোঁজ পাবেন। অফিসে গিয়েছিলেন?
জি না।
মামুনের মন একটু খারাপ হল। অফিসের কথা তার মনে আসেনি।
চা খান।
জি না চা খাব না। আজ উঠি।
এসেই উঠবেন কেন? বসুন্ন গল্পটল্প করুন। আপত্তি না থাকলে রাতে আমাদের সঙ্গে খান।
মামুন কিছু বলল না। জড়সড় হয়ে বসে রইল। তার ভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছে খাওয়ার ব্যাপারে তার কোনো আপত্তি নেই। অথচ খাবার কথাটা জাহানারা নিতান্তই ভদ্রতা করে বলেছে। ঘরে আয়োজন খুবই সানান্য। দুপুরের তরকারির অবশিষ্ট দিয়ে রাতে চালানোর কথা। জাহানারা একবার ভাবল বলবে থাক আপনার খাওয়ার দরকার নেই মেনু খুব খারাপ। অন্য এক’দিন এসে খেয়ে যাবেন। কিন্তু এ জাতীয় কোন কথা বলাও সম্ভব নয়। একটু আগে খেতে বলে পরমুহূর্তে না বলা যায় না। জাহানারা তাকে বসিয়ে রেখে রান্নাঘরে চলে গেল।
অসহ্য গরমে রান্নাঘরে ঢোকা মানে নরকে প্রবেশ করা। নতুন কিছুই তৈরি করাও ঝামেলা। কয়েকটা শুকনো বেগুন ছাড়া কিছুই নেই। মা ভাল থাকলে এই নিয়েই কিছু-একটা করে ফেলতেন। মার শরীর দু’দিন থেকে খুব খারাপ। হাঁপানীর টান উঠেছে। ঘর অন্ধকার করে পড়ে আছেন।
রান্নাঘরে জাহানারার সামনে মুখ নিচু করে মীরা বসে আছে। সে একটু পর পর ফিক করে হেসে ফেলছে এবং সেই হাসি গোপন করবার জন্যে প্ৰাণপণ চেষ্টা করছেন। জাহানারা বিরক্ত হয়ে বলল, হাসছিস কেন?
মীরা বলল, ঐ লোকটা কে আপা?
কেউ না। একজন চেনা লোক।
মীরা আবার হেসে ফেলল। জাহানারা ঝাঁঝাল গলায় বলল, গ্রামে যখন পোস্টিং হয়েছিল তখন এই ভদ্রলোক অনেক সাহায্য করেছেন। এখানে বেড়াতে এসে আমার সঙ্গে দেখা করতে এলেন। ভদ্রতা করে খেতে বলেছি তাতেই রাজি হয়ে আমাকে বিপদে ফেলেছেন–এর মধ্যে হাসির কি আছে?
তুমি কৈফিয়ত দিচ্ছ কেন আপা?
কৈফিয়ত দিচ্ছি না। কৈফিয়ত দেবার কি আছে? তুই এখানে বসে না থেকে ভদ্রলোকের সঙ্গে গল্প কর। একা একা বসে আছেন।
আমি বরং লায়লা আপাদের বাসা থেকে এক বাটি তরকারি নিয়ে আসি?
কিছু আনতে হবে না।
মীরা তার আপার কথা শুনল না। পাশের বাসা থেকে তরকারি নিয়ে এল। সে ভেবেছিল আপা রাগ করবে। রাগ করল না। মুখ দেখে মনে হল খুশিই হয়েছে। মীরা চলে গেল বসার ঘরে। মামুন হাসিমুখে বলল, এস খুকি? কি নাম তোমার? মীরা বিরক্ত হল। লোকটা এখন আবার তুমি করে বলছে।
আমার নাম মীরা।
দু’বোন তোমরা?
দু’বোন এক ভাই। ভাই গেছে নানার বাড়ি বেড়াতে।
কি পড় তুমি?
ইউনিভার্সিটিতে পড়ি। সেকেন্ড ইয়ার। সাবজেক্ট হচ্ছে ফিলসফি।
কি সর্বনাশ। আমি ভেবেছিলাম। এইটি নাইনে বোধ হয় পড়; আগে টের পেলে খুকি বলতাম না। তোমার আপা কোথায়?
রান্নাঘরে। খেতে রাজি হয়ে আপনি আমাদের বিপদে ফেলেছেন। ঘরে খাবার কিছু নেই। পাশের বাড়ি থেকে বাটিতে তরকারি। আনতে হল।
সে কি!
অবশ্যি ওরাও মাঝে মাঝে নিয়ে যায়। এটা কোন ব্যাপার না। শোধবোধ হয়ে যায়।
মামুন এই চমৎকার চেহারার ফুটফুটে মেয়েটির প্রতি গাঢ় মমতা বোধ করল। কি সুন্দর মুখে মুখে কথা বলছে। জাহানারা এ রকম নয়। কথা সে প্রায় বলেই না।
আপনি নাকি আপাকে অনেক সাহায্য-টাহায্য করেছেন। কি সাহায্য করেছেন?
আমি তো কোনো সাহায্য করিনি। উল্টো উনি আমাকে সাহায্য করেছেন। ব্যাংকের একটা লোনের ব্যাপারে খুব সাহায্য করেছেন।
উনি কিন্তু আপনার কথা আমাকে একবারও বলেননি।
আমার কথা কি বলবেন? আমার সম্পর্কে বলার তো কিছু নেই। আমি বরং উনার সম্পর্কে অনেক কিছু বলতে পারি।
বলুন শুনি।
মামুন হেসে ফেলল। মীরা কৌতূহলী চোখে তাকিয়ে আছে। অপরিচয়ের সংকোচ বলে কিছুই তার মধ্যে নেই। মামুনের মনে হল এই মেয়েটি তার বোনের কিছুই পায়নি। তার মধ্যে প্রবল। কেমন অবলীলায় পা নাচাচ্ছে। .
মীরা বলল, চুপ করে আছেন কেন? আপার কথা বলুন।
তোমার আপা একা একা শ্মশানে ঘুরত। খুব পছন্দ করত।
সে কি?
হ্যাঁ, গ্রামের লোকজনের ধারণা … তোমার আপার সঙ্গে জ্বীন আছে।
কি বলছেন এসব?
সত্যি কথাই বলছি। কেউ অদ্ভুত কিছু করলেই গ্রামের লোকজন মনে করে তার সঙ্গে জ্বীন আছে। অদ্ভুত কাণ্ডটা সে করছে না। জ্বীন তাকে দিয়ে করাচ্ছে।
আপনি কি কখনো জ্বীন দেখেছেন?
না। তবে জ্বীন নামানোর একটা আসরে ছিলাম।
ঐ গল্পটা বলুন।
অনেক লম্বা ব্যাপার–আরেক’দিন না হয় বলব।
আপনি আবার কবে আসবেন তার কি কোনো ঠিক আছে? আজই বলুন।
গল্প শুরু করা গেল না। জাহানারা শাড়ির আঁচলে ঘাম মুছতে মুছতে বসার ঘরে ঢুকাল। ক্লান্ত গলায় বলল, খাবার নিয়ে আয় মীরা। রান্না হয়ে গেছে।
একটু পরে আনি আপা? উনি একটা জ্বীনের গল্প মাত্র শুরু করেছেন।
জাহানারা বিরক্ত গলায় বলল, গল্প আরেক’দিন হবে। রাত হয়ে যাচ্ছে না? ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে। ঝড়-বৃষ্টি হলে উনি থেকে যাবেন। অসুবিধা কি? ভাইয়ার ঘর তো খালিই আছে।
অকারণে বকবক কারিস না তো।
মীরা উঠে গেল। মামুন বলল, আপনার বোনটিকে চমৎকার লাগল। একেবারে বালিকা স্বভাব। ইউনিভার্সিটিতে সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে, বিশ্বাস হয় না।
ইউনিভার্সিটিতে পড়ে আপনাকে কে বলেছে? ও এইবার মাত্র ক্লাস টেনে উঠেছে। ওর কথাটাও বিশ্বাস করবেন না।
মামুন হেসে ফেলল। প্রথম বারেরমত জাহানারার মনে হল এই লোকটার হাসিটা তো বেশ সুন্দর। সহজ হাসি। সব মানুষ সরল ভঙ্গিতে হাসতে পারে না। মনের মধ্যে কুটিলতা তাদের হাসির মধ্যেও অদৃশ্য ভাবে ছায়া ফেলে।
মামুন বলল, আমি হুঁট করে আসায় আপনি কি আমার ওপর রাগ করেছেন?
না। রাগ করব কেন?
বিরক্ত যে হয়েছেন এটা বুঝতে পারছি। তবু যেতে ইচ্ছা করছে না।
জাহানারা কি বলবে ভেবে পেল না।
মীরা এসে বলল, ভাত দেয়া হয়েছে।
জাহানারার মা হাসিনা বিছানায় শুয়ে থাকলেও কোথায় কি হচ্ছে সব বুঝতে পারেন। আজ তার হাঁপানীর টান উঠেছে। শ্বাস নেবার কষ্টের সঙ্গে যোগ হয়েছে। গরমের কষ্ট। সন্ধ্যাবেলায় আধাকপালী মাথার যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। তবু এর মধ্যেও টের পেলেন অপরিচিত একজন যুবকের জন্যে এ বাড়িতে রান্নাবান্না হচ্ছে। তিনি বুঝতে পারছেন যুবক জাহানারার পরিচিত। অফিস করা মেয়েদের অনেক পরিচিত পুরুষ থাকে। এটা স্বীকার না করে উপায় নেই। কিন্তু তাই বলে তারা রাতে ভাত খাবার জন্যে থেকে যাবে কেন? তারা কি জানে না। একজন অবিবাহিতা মেয়ের কাছে রাত-বিরাতে যেতে নেই। মেয়ে বা মেয়ের আত্মীয়-স্বজন কিছু মনে না করলেও আশপাশে লোকজন আছে না? কেউ যতি হঠাৎ করে একটা কথা বলে ফেলে তখন? মানুষের মুখেই জয় আবার মানুষের মুখেই ক্ষয়। মেয়ের নামে বদনাম বের হতে সময় লাগে না। কেউ একটা কথা বললে দশজন সেই কথাটা দশ রকম করে একশজনকে বলবে।
হাসিনা বিছানায় উঠে বসে বেড সুইচে বাতি জ্বালালেন। এটা তার সংকেত। বাতি জ্বালানো মানে তিনি চান কেউ আসুক তার ঘরে। অন্ধকার ঘরের অর্থ হচ্ছে তিনি কারোর সঙ্গ কামনা করছেন না।
মীরা ঘরে ঢুকল। হাসিনা বললেন, কে এসেছে? মীরা গম্ভীর গলায় বলল, আপার বন্ধু।
আপার বন্ধু আবার কে?
আছে একজন। এতদিন আপা কাউকে বলেনি বলে আমরা জানতে পারিনি। এখন জানলাম। তুই কি বলছিস?
ঠিকই বলছি মা। খুব শিগগিরই এ বাড়িতে বিয়ে লেগে যাবে। হলুদ বাট, মেন্দি বাট বাট ফুলের মউ।
হাসিনা কাতর গলায় বললেন, জাহানারাকে ডেকে আন তো।
মীরা আপা পাশে বসতে বসতে বলল, এখন ডাকা যাবে না। ওরা দু’জন সুখ-দুঃখের কথা বলছে।
হাসিনা অদ্ভুত চোখে তাকিয়ে রইলেন। জাহানারার মত মেয়ে নিজে একটা ছেলেকে পছন্দ করেছে, আলাদা একটা ঘরে বসে গল্পগুজব করছে এই ব্যাপারটা তার বিশ্বাস হচ্ছে না। এখন যদি ইলেকট্রিসিটি চলে যায়? ইলেকট্রিসিটি চলে গেলে অবস্থাটা কি হবে? ঢাকা শহরের ইলেকট্রিসিটির কি কোন ঠিক আছে? হাসিনার প্রায় দম বন্ধ হয়ে আসছে। হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে আসছে। ইচ্ছা করছে উঠে বসার ঘরে চলে যান এবং কঠিন গলায় বলেন। এই ছেলে, তুমি কেমন ভদ্রলোক বল তো এত রাত পর্যন্ত…হাসিনা আর ভাবতে পারলেন না। ভাবা সম্ভবও নয়। দিনকাল পাল্টে গেছে। কিছু বলতে ইচ্ছা করলেও বলা যায় না।
জাহানারা ঘরে ঢুকে শান্ত গলায় বলল, মা উনি আপনার সঙ্গে দেখা করবেন।
হাসিনা তীক্ষ্ণ চোখে তাকালেন। এই ঘরের বাম্ব চল্লিশ পাওয়ারের। পরিষ্কার কিছু দেখা যায় না।
উনার নাম মামুন। গ্রামে যখন পোস্টিং ছিল তখন আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন।
মামুন এগিয়ে এসে পা ছুঁয়ে সালাম করল। হাসিনা তাকিয়ে আছেন তীক্ষ্ণ চোখে। ছেলেটা লম্বা আছে একটা ভাল দিক। তবে বয়স বেশি। জাহানারার চেয়ে সাত আট-বছরের বড় তো হবেই আরো বেশিও হতে পারে। গায়ের রঙ ময়লা। পুরুষ মানুষের গায্যের রঙ ময়লা হলে যায় আসে। না। সভ্য ভদ্র বলেও মনে হচ্ছে পা ছুঁয়ে সালাম করল। কেউ করে না। নিজের ছেলেমেয়েরাই করে না তো অন্য মানুষ করবে। ছেলেটিকে তিনি তুমি বলবেন না। আপনি বলবেন ভেবে পেলেন না।
মামুন বলল, আপনার শরীর কেমন?
বাবা আমি ভাল। তুমি বস।
আমি এখন যাই অন্য আরেক’দিন এসে আপনার খোঁজ নেব।
এই ভদ্রতাটুকু হাসিনার ভাল লাগল। আবার আসব বলেনি বলেছে আবার এসে আপনার খোঁজ নেব। ছেলেটা মন্দ হবে না। বিয়েশাদী অবশ্যি পুরোটাই ভাগা। কিছুই বলা যায় না।
হাসিনা আগ্রহ নিয়ে বললেন, বস একটু বাস। বলেই মনে হল এতটা আগ্রহ দেখানো কি ভাল? মোটেই ভাল না। বসতে চাইলে বসবে। বসতে না চাইলে বসবে না।
মামুন বসল না। সঙ্গে সঙ্গে বিদায় নিল। যাবার আগে আরেকবার পা ছুঁয়ে সালাম করলে হাসিনার ভাল লাগত। করল না। পুরানো দিনের মত আদব-কায়দা কি আর এখন আছে? নেই। ভাল ভাল জিনিস কিছুই থাকবে না।
মামুন ঘর থেকে বেরুবার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ঝমোঝমিয়ে বৃষ্টি নামল। মুষলধারে বৃষ্টি। জাহানারার কেন যেন বার বার মনে হচ্ছিল আধভেজা হয়ে মামুন এক্ষুণি ফিরে আসবে। লেডিস ছাতা একটা ঘরে আছে তা নিয়ে দেয়া যাবে। কিংবা থেকেও তো যেতে পারে। অসুবিধা কি?
মামুন অবশ্যি ফিরল না।
চলবে..