স্বামী,০৪
Ariyan Shaiquat
জাহান হাসছিলো আর আমি দেখছিলাম। কেনো জানিনা আমি নিজেকে আর আটকাতে পারলাম না তাকে একটা কিসস করে বসলাম। জাহান অবাক হিয়ে কেমন করে যেনো আমার দিকে তাকিয়ে আছে৷
আমি লজ্জা পেলাম খুব। কিন্তু ওতো আমার বিয়ে করা বউ। আমি ওকে ভালোবাসলে আমার কোনো ক্ষতি নেই। উলটো সাওয়াব হবে। – আচ্ছা, এতোদিন এগুলা কইছিলো?
আমি চুপ করে মাথা নিচু করে বাসার বাইরে এসে পরলাম। জাহান ওভাবেই আছে। মনে হচ্ছিলো ও ভয়ে বরফ হয়ে গেছে। একটুও নরচর করছে না।
কোন রকমে সেদিন বিকেল পার করলাম। সন্ধ্যায় বাসায় আসলাম। এসে দেখি আমার রুমে তালা মারা। আমি গিয়ে আম্মুকে জিজ্ঞেস করতে লাগলাম,
— আমার রুমে তালা কেন? আর জাহান কই?
— জাহান তার বাবার বাসায় গেছে। দেখলাম ওর মন খারাপ। তাই যতক্ষন পর্যন্ত জাহান না আসবে তুই তোর রুমে ঢুকতে পারবি না।
এটা এই প্রথম ছিলো না। আমি কোনো দোষ করলেই আম্মু এমন করতেন। আমাকে রুমের বাইরে রেখে দরজা আটকায় দিতেন। আর আমি অসোহায়ের মতো ডাইনিং রুমে রাত কাটাতাম।
রাতে খাওয়ার পরে আমি মুঝ গোমড়া করে বসে আছি। ভাবছিলাম জাহানের সাথে আজকে থেকে প্রেম শুরু করবো। কিন্তু মেয়েটা চলে গেলো আমাকে একা রেখে।😧
না, ওর সাথে ওমন করা মানে কিসস করাটা ঠিক হয় নাই। পার্মিশন ছাড়া, আর হয়তো ও এখনো আমাকে স্বামী হিসেবে মানতে পারে নাই।
এসব ভেবে মন খারাপ হচ্ছিলো। আমি বারান্দ থেকে দেখতে পেলাম, আম্মু আমার রুমের দরজা খুলে দিলো। আমি ভাবলাম হয়তো মা একটু সদয় হয়েছে তাই খুলে দিছে। তার পরে আমার দিকে তাকুয়ে একটা মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেলো আম্মু।
আসতে করে বারান্দা থেকে রুমে গেলাম। তখন রাত প্রায় ১১ টা হবে। রুমে লাইট অফ সব অন্ধকার। কিন্তু কেমন যেনো একটা মাতাল করা ঘ্রান কাজ করছে।
আমি রুমে ঢুকে দরজা আটকিয়ে দিলাম৷ লাইটের সুইচ আমার খাটের সাথে ছিলো। যতই খাটের দিকে যাচ্ছিলাম ততই তীব্র হচ্ছিলো ঘ্রান। আমি লাইট টা অন করতেই ভুত দেখার মতো ভয় পেয়ে গেলাম।
আমার রুম ছিলো সব ঠিক ছিলো। কিন্তু যা হয়েছিলো সব হয়েছিলো আমার খাটের সাথে।
আমার খাট টা সাজানো হয়েছে। আর তার মাঝে জাহান কালটুক টুকে বউ সেজে বসে আছে। হ্যা কাল টুক টুকে। কালো একটা শারী পরেছে। আর খাটে আমার প্রিয়ো। কালো গোলাপ ছড়ানো আছে।
এই বেপারটা বুঝতে আমার পাক্কা ২ মিনিট সময় লেগেছিলো। আমি বেপারটা বুঝতেই দৌড়ে ওয়াশ রুমে চলে গেলাম৷ যথা সম্ভব ফ্রেশ হয়ে নিলাম। তার পরে জাহানের কাছে চলে এলাম।
এসে ঘুমটার নিচ দিয়ে উঁকি দিচ্ছিলাম। কেননা আমার লাইফে এখন যা যা হচ্ছে, সেই অনু যায়ী যদি এটা জাহান না হয় তাহলে?
আরে ওসব না। যদি ভুত পেত্নি হিয় তাহলে কি হবে। যেই সুন্দর সুন্দর গল্প লিখছি এক সময়। যদি কোনো জ্বীন পরি কেউ পড়ে ফেলে যা কিছু হতে পারে।
তাই উকি দিয়েছিলাম। দেখলাম জাহান লজ্জা পেয়েছে। আমি মুখটা সরিয়ে নিয়ে জাহানের ঘুমটা খুলে দিলাম, সাথে সাথে সে বললো,
— সরো এখান থেকে ৪ ঘন্টা ধরে বসে আছি এভাবে। কই কোন বাল ওতো আসে নাই। এখন আসছো কেনো?
— আরে আমি কি জানতাম নাকি? আর কি বকা ঝকা শুরু করেছো?
— কতো সুন্দর করে সাজাইছি ঘরটা। আর তুমি আমার সব মুড নষ্ট করে দিছো। যাও নিচে ঘুমাও।
যা সালায় এটাতো একেবারে গল্পের মতো হয়ে গেলো? এটাকি আমার জ্বীবন নাকি গল্প বুঝতাছি না।
আমি জাহানকে আবার বুঝাতে যাবো তখনি সে বললো,
— আর একটা কথাও না যাও নিচে ঘুমাও।
কি আর করার, বউ যেহেতু সুতরানহ আদেশ মানতেই হবে। আমি কি সুন্দর করে রেডি হলাম। আজকে সব কিছু করবো কিন্তু কই কি? সব ভেস্তে গেলো।
আমি নিচে চলে আসলাম। ভালো লাগছে না এপাস ওপাস করছি। এখন যদি প্রথম বাসর রাত হতো আর আমি জাহানের বেপারে না জানতাম তাহলে হয়তো জাহানকে রেখে আমি বাইরে চলে যেতাম।
কিন্তু এইবারে ঘটনা আলাদা। জাহানকে রেখে চলে গেলে সে অনেক বেশি কষ্ট পাবে। এখন আমি আস্তে আস্তে করে আমার ভালোবাসা দিয়ে তার রাগ গোস্বা অভিমান সব জব্দ করবো। এক কথায় তার অতীত তাকে ভুলিয়ে দেবো। আর দোষিকে Tuuut Tuuuut Tuuuut [ সাস্পেন্স বারানোর জন্যে লিখলাম এই Tuut।]
ঘুম আসছে না। তাই ল্যাপ্টপ নিয়ে বসলাম। বিয়ের পরে আজকে প্রথম। আমি কানে হেডফোন লাগিয়ে একটু ঢুকলাম FB তে।
ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম গল্পের রিকুয়েষ্ট দিয়ে ভরে গেছে। ছোট্ট করে একটা পোষ্ট দিলাম, “আগামী কাল থেকে গল্প দেয়া হবে।”
হঠাৎ করে জাহান চিৎকার দিয়ে উঠলো,
— এই তুমিইই তাহলে “নিস্তব্ধ লেখক”????
— হ্যা তো?
— আরে আমিতো তোমার কত্তো বড় ফ্যান আর ম্যাঙ্গানিজ ও ছিলো।
[ এখানে কোনো ছেলের নাম ব্যাবহার করার ইচ্ছা হচ্ছে না। তাই যেই মৌলটি আমার একেবারেই পছন্দ না সেটির নাম দিলাম]
— মানে মেঙ্গানিজ কে?
জাহান সাথে সাথে চুপ হয়ে গেলো। আমার বুঝতে বাকি রইলো না এটাই সেই ছেলে যে আমার জাহানের উপরে ধর্ষিতা নামক দাগ লাগিয়েছে।
আমি আস্তে করে আমার গ্রুপে একটা মেসেজ দিলাম ” মেঙ্গানিজ নাম ” আর জাহানকে বললাম,
— আচ্ছা ঐ সব বাদ দাও কিন্তু তুমি আমার ফ্যান মানে বুঝলাম না। কবে থেকে কেমনে কি?………………………
To be Continue……