হৃদয়ের_প্রতিশ্রুতি🌸,পর্বঃ৭,৮

হৃদয়ের_প্রতিশ্রুতি🌸,পর্বঃ৭,৮
লেখিকাঃআদিলা
পর্বঃ৭

আমির হাতের বাধন আরও শক্ত হয়ে আসে।ইয়ামিনার অস্থিরতা যেন একটু একটু করে বেড়ে চলচ্ছে । আমিরের হাতের রক্ত ইয়ামিনার গলা ঘাড় পেটে রক্তের দাগ শুকিয়ে গেছে।
অ..অ..আপনার হাত অনেকক্ষানি কেটে গেছে আপনি ব..ব..বসুন আ…….
আমির জরিয়ে ধরা অবস্থাতে বলে… জানো আজও আমি সহজ আজও আমার মনটা সরল আজও আমার ভালাবাসা অবুঝ…. আজও আমি নিষ্পাপ কিন্তু কি যেন নেই কে যেন নেই কিছু একটার অভাব অনুভূতি অ.. অ..অনুভব করছি আমার অনুভুতিতে একটা অভাব আছে একটা বড় কষ্ট আছে একটা বড় পাথর আছে আমি ফিল করতে পারি আমি বলতে পারি না।। আমি আমি বুঝাতে পারি না।। আমি শুনতে পাই না। আজ আমি আমার আমিকে খুজে পায় না। আজ আমি আমার আমিকে বুঝাতে পারি না। আমি….. কতটুকু ভালবাসি আমার আ…আমি কে শোনাতে পারি না যে আমি একজনকে ভালবাসি ওহ আমি তো ভালবাসতাম। ওতো আমাকে কখনও ভালইবাসেই নি। শুধু আমার সাথে ভালবাসার অভিনয় করেছে। বিশ্বাস করো সেদিন নিজের সব কিছু ত্যাগ করে ওকে বাচিয়ে ছিলাম। নিজের বাচা মরা চিন্তাটুকু করিনি।।

সেদিন……..

আমির বুঝতে পারছিলনা কি করবে গাড়ির ব্রেক হটাৎ করেই কাজ করচ্ছে না কিছুতেই ব্রেক করা যাচ্ছে না। তার মধ্যে ড্রিংক করার কারনে আমিরের মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। আমিরের চোখ জোড়া ক্রমশ বন্ধ হয়ে আসচ্ছে। কিন্তু চোখ কিছুইতেই সে বন্ধ করতে চায় না ইশিতার যদি কিছু হয়ে যায়।আমির সামনের দিকে তাকিয়ে ইশিতার দিকে তাকায় একটু ঘাবড়ে যায়। ইশিতা কান্না করতে করতে চিল্লিয়ে বার বার বলচ্ছে গাড়ি থামাতে। ওদিক দিয়ে একটা গাড়ি অনবরত তেড়ে আসচ্ছে। আমির শেষ বারের মত অসহাত দৃষ্টিতে ইশিতার দিকে তাকায়। নিজের সিট বেল্টা খুলে ইশিতাকে নিজের বাহুতে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।

বিধস্ত অবস্থায় গাড়িটি ছিটকে একপাশে পড়ে আছে। গাড়ির এক সাইডের অংশ খন্ড খন্ড রাস্তায় ছড়িয়ে আছে। আমির শেষ বারের মত ইশিতার দিকে আধো আধো তাকিয়ে অস্পষ্ট কণ্ঠে বলে….আমি থাকতে তোমার কিছু হবেনা ইশু।।তারপর আমিরের আর কিছুই মনে নেই।।

আমিরের হাতের বাধন কিছুটা আলগা হতে ইয়ামিনা আমিরের মুখ দুহাত দিয়ে আকড়ে ধরে… আপনি একটু বসুন আমি আসচ্ছি ইয়ামিনা আমিরকে ছেড়ে রুম থেকে বের হয়ে যায়।আমির ইয়ামিনার যাওয়ার পথে চেয়ে আছে। কিছুক্ষন পর ইয়ামিয়া রুমে এসে আমিরের পাশে বসে। হাতে তার ফাস্ট এড বক্স।আমির এখনো ইয়ামিনার দিকে চেয়ে আছে। ইয়ামিনা আমিরের হাতটা নিজের কাছে নিয়ে বেন্ডিজ করে দেয়। আমিরকে ধরে হুইল চেয়ারে বসিয়ে রুমে নিয়ে যায়। ধরে বেডে শুয়ে দেয়।

ইয়ামিনা শুধু একবার আমিরের দিকে তাকিয়ে বলে…. আপনার ঘুমের প্রয়োজন । ঘুমিয়ে নিন।
আমির শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে। কখন যে ঘুমিয়ে গেছে খেয়ালি নেই।

___________________🌸🌸
হটাৎ পায়ের কারো ছোয়া পেয়ে আমির আচমকা উঠে বসে। ইয়ামিনা আমিরের পায়ের কাছে বসে পা মালিশ করে দিচ্ছে।
তুমি এখানে আমির একটু অবাক হয় । আর একি পায়ে হাত দিচ্ছো কেন? প্লিজ উঠে বসো।

কে বলেছে পায়ে হাত দিয়েছি। আমি তো মলম লাগিয়ে দিচ্ছিলাম আপনার পায়ে।

এখন উঠে বসো।

ইয়ামিনা কিছু বলতে যাবে তার আগে আরুশির কন্ঠ পেয়ে দুজনে দরজার দিকে তাকায়…..ভাইয়া ভাবি খেতে আসো ভাবি তোমাদের ডাকচ্ছে।

ইয়ামিনা আরশির দিকে তাকিয়ে বলে…. তুমি যাও আসছি আমরা।

খাওয়ার টেবিলে সবাই বসে আছে। ইয়ামিনা সবাই খাবার বেড়ে দিচ্ছে।কিন্তু বিপত্তি হচ্ছে আমিরের দুহাতে ব্যান্ডেজ করা।এদিক ওদিক বার বার আমির তাকাচ্ছে।

হটাৎ আরুশি বলে উঠে….একি ভাই তোমার হাতে ব্যান্ডেজ কেন। এইভাবে কিভাবে কেটেছে। এতক্ষনে জাফরা আর জাবির আমিরের হাতের দিকে তাকায়।
জাফরা ভাবি অস্থির হয়ে বলে…এমা তোমার তো দেখি হাত অনেক খানি কেটেছে। কিভাবে কাটল।

জাবির এক বার তাকিয়ে খাওয়া মনোযোগ দেয়।
তেমন কিছুনা গ্লাস হাত থেকে পরে গিয়েছিল তাই কেটে গেছে। আমি পরে খাব আমার রুমে খাবার পাঠিয়ে দিও।
আমির চলে যেতে নিলে ইয়ামিনা আমিরের হাত শক্ত করে ধরে…..কিছুনা বলে প্লেটে খাবার বেড়ে আমিরকে খাওয়াতে শুরু করে…
কি হলো হা করুন..
আমির অবাক দৃষ্টিতে ইয়ামিনার দিকে তাকিয়ে আছে। আমির হা করতেই ইয়ামিনা আমিরের মুখে খাবার দিচ্ছে। আরুশি জাফরা একের উপরের দিকে চাওয়া চাওয়ি করে মিট মিট করে হাসচ্ছে।

ইয়ামিনা খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমিরকে রুমে নিয়ে আসে।রুমে আসতে আমির রুহানকে ডাক দেয়।
রুহানকে ডাকচ্ছেন কেন?
আমি শাওয়ার নিব।ওর সাহায্য লাগবে।
কেন রুহান আপনার বউ নাকি।
আমির একটু চমকায়। বউ হতে যাবে কেন?

আমি তো আছি এসব করার জন্য। তো রুহানকে কেন ডাকচ্ছেন। আপনি পারমিশন দিন বা না দিন আমি আমার দায়িত্ব পালন করে যাব। তার জন্য আপনার কাছ থেকে পারমিশন নিতে হবে না।
আমিরকে ওয়াশরুমে শাওয়ারের কাছে নিয়ে যেয়ে ঝর্ণা ছেড়ে দেয় ইয়ামিনা। আমির বসে ইয়ামিনার দিকে তাকিয়ে আছে।ঝর্নার পানি আমিরের সাড়া শরীরে বেয়ে পরচ্ছে।ইয়ামিনা আমিরের দিকে একটু ঝুকে আমিরের মাথায় দুহাত দিয়ে আস্তে আস্তে সেম্পু করে দিচ্ছে। আমির চোখ বুঝে নেয় এতদিন পর যেন আমিরের অন্য রকম শান্তি কাজ করচ্ছে। সেটা কি ইয়ামিনার কারনে কিন্তু কেন?
ঝর্নার পানিতে ইয়ামিনার শাড়ি ভিজে পেট থেকে শাড়ি অনেকক্ষানি সরে যায়। সাদা পেটে বিন্দু বিন্দু পানি জমে গড়িয়ে পরচ্ছে। আমির চোখ খুলতে ইয়ামিনার পেটের দিকে চোখ পরে ঠোঁট ছুই ছুই অবস্থা। আমির মুখটা অন্য পাশে করে নেয়।

তুমি যাও বাকিটা আমি পারবো।আমার শেষ হলে আমি তোমাকে ডেকে দিব।
ইয়ামিনা কিছুটা সরে আসে.. আমি বাহিরে আছি কিছু প্রয়োজন হলে আমাকে ডেকে দিয়েন।

.
.
.
চলবে……..

কেমন হয়েছে জানাবেন। ভুল গুলো ক্ষমার দৃষ্টিত্র দেখবেন।।।🌸

🌸#হৃদয়ের_প্রতিশ্রুতি🌸

#লেখিকাঃআদিলা
#পর্বঃ৮
_____________________🌸
ইয়ামিনা বারান্দায় দাড়িয়ে আছে। ভরা মেঘলা আকাশ। বৃষ্টি নেই তার পরও আকাশটা মেঘলা হয়ে ঘলাটে হয়ে আছে। নীল নীল আভা যেন মেঘে আড়ালে ঢাকা পড়েছে৷ আকাশের দিকে চেয়ে আছে ইয়ামিনা। অতীতটা যদি বর্তমান হতো খুব বেশি খারাপ হয়ে যেত দিহানজি। আজ যে আপনাকে খুব বেশি মনে পরচ্ছে।খুব বেশি কাছে পেতে ইচ্ছে করচ্ছে।এরকম একটি দিনে আপনি আমার জন্যে বলে ইয়ামিনা ঢুকরে কেদে দেয়……

ইয়ামিনা নিজের চুল ঠিক করতে করতে সামনের মানুষটার দিকে বেশ রাগভাব নিয়ে তাকায়।।
আপনি কি সব সময় লেটে আসার ডিগ্রি নিয়ে রেখেছেন । একদিন যদি সময় মত আসতেন তাহলে তো আমি ধন্যই হতাম।

দিহান টেডি ফেশ করে ইয়ামিনার গাল টেনে দিয়ে বলে… ইয়ুমনি আজকের এই স্পেশাল দিনটাকে স্পেশাল করার জন্যই একটু লেট হয়েছে।

কি এমন দরকারি তলব করেছেন জনাব আমাকেও একটু বলেন…

এই নাও দিহান ইয়ামিনার হাতে একটা বক্স দেয়।খুলে দেখ…..

একটু বিরক্তিভাব ফুটে উঠেছে ইয়ামিনার মুখে।।।কি এটা যার জন্য আপনার সাত সমুদ্র সাতরে যেতে হয়েছে…..

খুলেই দেখ না….

ইয়ামিনা বক্স খুলতে যেন ঠোঁট জোড়া প্রস্তুত হয়ে আছে… কাচের চুড়ি। তাও আবার এতগুলা। ইয়ামিনার খুশিতে লাফাতে ইচ্ছে করচ্ছে।ইয়ামিনার সবচেয়ে প্রিয় জিনিসটা কাচের চুড়ি। তার কারন ইয়ামিনার নিজেরই জানা নেই।

আপনার জন্য কয়েকটা গলির দোকান আওরাতে আওরাতে এই চুড়ি গুলা নিয়ে এসেছি।
এখন বলেন সাত সমুদ্র সাতরে কি আমার লাভ হলো বলে দিহান মুচকি হাসি দেয়।

আপনি এত্ত এত্ত গুলা কিউট।আপনি জানেন না এগুলা আমার কত পছন্দের৷ থেংক্স এত স্পেশাল গিফট দেওয়ার জন্য।
দিহান ইয়ামিনার হাত ধরে কাছে নিয়ে আসে। দাও পরিয়ে দেই….
ইয়ামিনা অপলক ভাবে তাকিয়ে ছিল সেদিন…

আমার মাথাটা প্রচুত ধরে আছে এক কাপ কফি হবে…হটাৎ এমন কথা ইয়ামিন চমকে পিছনে তাকায়। কান্নাটা আড়াল করে নেয় সেটা আমির ভাল করে বুঝতে পেরেছে…

ইয়ামিনার সেদিনের কথা মনে পড়ে যায়। আপনি খাবেন!!
আমির হাল্কা হেসে বলে…চিন্তা করো না ফেলবো না
এবার সত্যি কফিটা মাথা ব্যাথার জন্য ভীষণ দরকার।

মলিন একটা হাসি দিয়ে আচ্ছা বলে ইয়ামিনা চলে যেতে নিলে হটাৎ খেয়াল করে আমিরের চুল থেকে টপ টপ পানি পরচ্ছে। টিশার্টটা আধো ভেজা হয়ে আছে… ইয়ামিনা রুম থেকে টাওয়ালটা নিয়ে আমিরের পাশে দাড়ায়….

কি কিছু বলবে…

মাথা তো ধরবে। আমাকে ডাকেন নি কেন?

প্রয়োজন পরে নি।আমার কাছে দাও আমি মুছে নিতে পারব হাত বাড়িয়ে দেয় আমির টাওয়ালের জন্য…
ইয়ামিনা কিছু না বলে আমিরের পিছনে দাড়িয়ে আমিরের মাথা মুছে দেয়।আমির চুপ হয়ে বসে আছে।
আমি কফি নিয়ে আসচ্ছি।
বেশকিছুক্ষন পর ইয়ামিনা কফি হাতে বারান্দায় যায়। আমির ফোনে কথা বলচ্ছে আর অন্য হাত দিয়ে লেপ্টপে কাজ করচ্ছে। বাতাসের সাথে সাথে আমিরে ছোট ছোট সিল্কি চুল গুলো পাল্লা দিয়ে এদিক সেদিক ছুটে চলচ্ছে।
ইয়ামিনাকে দেখে আমির ফোনটা রেখে কফি হাতে নেয়। এক চুমুক দিয়ে ইয়ামিনার দিকে তাকায়।এর আগে এত ভাল কফি আমির কখন খেয়েছে বলে আমির মনে করতে পারচ্ছে না। মেয়েটার চোখে কি যেন আছে আমির চেয়েও না গভীর ভাবে তাকাতে পারে না। একটা ঘোরে পরে যায়।
বসো।
ইয়ামিনা আমিরের কথা শুনে বসে পরে…

থেংক্স কফিটার খুব প্রয়োজন ছিল।

ইয়ামিনা ছোট করে একটা হাসি দেয়।

কোন ইয়ারে তুমি?
ইয়ামিনা এমন কথায় আমিরের দিকে তাকায়। চোখ সরিয়ে বলে… ভার্সিটির ফাস্ট ইয়ার।।
কি নিয়ে পরচ্ছো…
আর্সের সাব্জেক্ট নিয়ে। ইচ্ছে সাইন্সের সাবজেক্ট নিয়ে পড়া। কিছু নাম্বারের জন্য চান্স পাইনি।
আপনি কোন ভার্সিটিতে পড়ালেখা করছেন।
আমির কফির মগে চুমুক দিয়ে বলে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি।
নামটা শুনে ইয়ামিনা আর চোখে তাকায়।।

কথা বলতে বলতে আমিরের হটাৎ হাচ্চি আসাতে শরীরের ঝাকুনিতে কফিটা হাত থেকে পরে মুখ কিছুটা লাগে আর টিশার্টে অনেক্ষানি পরে যায়।
আমির একটার পর একটা হাচ্চি দিয়েই চলচ্ছে।। হাচ্চি দিতে দিতে অবস্থা খারাপ।

ইয়ামিনা এতক্ষন স্বাভাবিক থাকলে আমিরের এই অবস্থায় কিছুটা আওয়াজ করে হেসে দেয়।
হাসির শব্দে আমির ইয়ামিনার দিকে তাকায়। মুহুর্তে মধ্যে আমিরের চোখ দুটো শীথল হয়ে আসে। ইয়ামিনাকে কখনও হাসতে দেখে নি সে। এক অন্য রকম ঘোড়ে চলে গেছে। এই মেয়েটা যদি সারাদিন তার সামনে বসে বসে হাসত। তাহলে চোখ দুটোর সাথে মনটাও শীথল হয়ে যেত।

বাড়ির বাগানে যাবেন?

হটাৎ ইয়ামিনার কথায় আমিরে ধ্যান ভাঙে। ইয়ামিনার দিকে এমন ভাবে তাকায় যেন ইয়ামিনা আমিরের অসহায়ত্বের মজা নিচ্ছে।

কি হলো যাবেন। বিশ্বাস রাখতে পারেন ফেলবোনা আপনাকে। শুধু শক্ত করে ধরে রাখবেন….

হুইল চেয়ার দিয়ে আমিরকে বাহিরে নিয়ে আসে ইয়ামিনা।আমির বাহিরে এসে লম্বা একটা শ্বাস নেয়। আজ কতদিন পর বাহিরে এসেছে আমির। এক অন্য রকম প্রকৃতিকে অনুভব করচ্ছে সে।আসলেই কি প্রকৃতি এত সুন্দর। চারপাশে বিভিন্ন ফুলের গাছ। তাজা কাচা ফুলের গন্ধে চারপাশটা মৌ মৌ করচ্ছে। আশেপাশে পাখির কিচিরমিচির শব্দ শোনা যাচ্ছে।
ইয়ামিনা সামনে এগিয়ে হাত দুটো ছড়িয়ে প্রকৃতির এই ঘ্রাণটাকে আপন করে পিছন ফিরে আমিরের দিকে তাকায়….

ইয়ামিনা হাতটা বাড়িয়ে দেয় আমিরের দিকে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বলে…ভরসা রাখুন। আর হাতটা দিন।
সেই হাতটাই যে আমিরের অন্ধকারে ডুবে যাওয়ার আলোর পথ ছিল সেদিন হয়তো আমির জানতো না। ইয়ামিনার হাতের উপর হাতরেখে শক্ত করে ধরে। ইয়ামিনা আমিরকে টেনে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়। আমির সব ভোর ইয়ামিনার উপর ছেড়ে দেয়৷ আমির চেষ্টা করছে নিজের পাটাকে যথাসম্ভব চালানোর। ইয়ামিনার কষ্ট হলেও সেটা মুখে প্রকাশ করচ্ছে না।আমিরকে আরও শক্ত করে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়।তাকে যে হার মানলে চলবে না। ডাক্তার বলে দিয়েছিল আমিরকে বেশি বেশি হাটানোর জন্য। বেশকিছুক্ষন আমিরকে ধরে হাটায় ইয়ামিনা।
হটাৎই ঝুম ধরে বৃষ্টি নেমে। বৃষ্টিও যেন এতক্ষন দুজনের প্রতিক্ষায় ছিল। বৃষ্টিতে দুজনে ভিজে একাকার হয়ে গেছে। আমির ইয়ামিনার কোমর ধরে ইয়ামিনার উপর ভোর দিয়ে শরীরটাকে সামনের দিকে নিয়ে আসে। আমিরের চুল বেয়ে বৃষ্টির পানি ইয়ামিনার মুখের উপর পরচ্ছে। ইয়ামিনা আমিরকে শক্ত করে এখন ধরে আছে। ইয়ামিনা এতটাই কাছে ছিল যে আমিরের হৃদয় স্পন্দনের উঠা নামা শব্দটা ইয়ামিনার কানে বারি খাচ্ছে।
হটাৎ আমিরের খেয়াল হয় পুরো বাগানের আশেপাশে গার্ডসরা দাড়িয়ে আছে। আমিরকে দেখে ভয়ে শটান হয়ে দাড়িয়ে থাকলে আর চোখ দিয়ে ঠিকই ইয়ামিনার উপর নজর দিচ্ছে।আমির ইয়ামিনার দিকে তাকাতে মেজাজটা চটে উঠে। আমির ইয়ামিনা আঁচলটা টেনে দিয়ে মাথায় গোমটা দিয়ে দেয়।

আমিরের চোখ দুটো কিছুটা লাল হয়ে আসে।আমাকে চেয়ারে বসিয়ে তুমি ভেতরে যাও। নাও কুইক।

ইয়ামিনা আমিরের এমন কথাতে কিছুটা অবাক হয়। কেন আপনার শরীর খারাপ লাগছে।

মুহুর্তে আমিরের গলার স্বর চেঞ্জ হয়ে আরও ভারি কর্কশ হয়ে আসে। আমি কি বলেছি শুনতে পাও নি যাও বলছি। আর ভেতরে যাওয়া আগ পর্যন্ত যেন গোমটাটা মাথা থেকে না পরে।।

ইয়ামিনা একটু ইতস্তত করে আমিরকে বসিয়ে দিয়ে ভেতরে চলে যায়।
আমিরের পাশ ফিরে তাকাতেই আশেপাশে যত গার্ডস সব গার্ডসরা এসে দাড়িয়ে পরে। আমির রুহান বলে চিৎকার দিতেই রুহান দৌড়ে এসে হাজির হয়।আমির সামনের দিকে তাকিয়ে বলে… নেক্সট টাইম যেন না দেখি। আমিরের কথা গার্ডসদের গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে।
আমিরের দৃষ্টি এখনও সামনের দিকে স্থীর……. আমির আবরার কি আর কি করতে পারে তা নিশ্চয়ই কারো অজানা নয় । আমির রুহানের দিকে ইশারা করতে রুহান আমিরকে ভেতরে নিয়ে যায়।
.
.
.
চলবে……🌸🌸

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here