হৃদপিন্ড পর্ব-২

হৃদপিন্ড পর্ব-২
#জান্নাতুল নাঈমা

জ্ঞান ফিরতেই মেয়েটা পিটপিট করে চোখ খুললো।
চারদিকে আলোর ঝলকানিতে তাকাতে বেশ কষ্ট হচ্ছিল। পরোক্ষনেই ধড়ফরিয়ে ওঠে বসলো ভয় ভয় চোখে আশে পাশে তাকালো। কোথায় আছে বুঝার চেষ্টা করতেই সামনের দরজা খুলে এক পুরুষ লোক বেরিয়ে এলো। পুরুষ লোকটাকে দেখে ভয়ে আঁতকে ওঠলো,,,মনে মনে হাজারো ভাবনা ভাবতে লাগলো।
আমারে ওই লোকটা সত্যি বেঁইচা দিলো, কিন্তু লোকটা তো মেলা ভয়ংকর তাইলে এতো সুন্দর পোলার কাছে বেঁইচা দিলো ক্যান।
তাইলে কি এইটাই ঢাকার পোলা,,,
কি জানি একটা গান শুনছিলাম,,, ওওও মনে পড়ছে ঢাকার পোলা,,,ঢাকার পোলা,,, ঢাকার পোলা ভেরী ভেরী ইসমাট। মানে হইলো ঢাকার পোলা খুব সুন্দর।
ইতি খালা তো তাই কইছিলো।

ইমন বিছানায় তাকাতেই দেখতে পেলো মেয়েটা ওঠে পড়েছে। তাই সামনে এগিয়ে দুহাতে তুড়ি বাজালো।
ভাবনার অবসান ঘটিয়ে মেয়েটা চমকে ওঠলো।
ভয়ে ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে আশে পাশে তাকালো বিছানার পাশের ছোট্র টেবিলে রাখা ছুড়ি টা দেখতে পেয়েই চট করে ওঠে ছুড়িটা নিয়ে ইমনের বুক বরাবর আঘাত করলো।
কয়েক সেকেন্ডের ভিতরে মেয়েটা এমন কান্ড ঘটিয়ে ফেলবে তা ভাবার বাইরে ছিলো।
বুকের বা পাশে হাত রেখে ইমন রাগি দৃষ্টি তে তাকিয়ে এক ধমক দিলো,,,,
হোপপপ,,,পাগল নাকি,মাথা খারাপ নাকি।
বুক দিয়ে গলগলিয়ে রক্ত পড়তে শুরু করলো।
ইমন বুকে চেপে ধরে ফোন খুঁজতে লাগলো।
মেয়েটা কে নিয়ে তার মাথা ব্যাথা নেই। কারন ইমনের ইচ্ছের বিরুদ্ধে মেয়েটা বাসার বাইরে এক পা ও রাখতে পারবেনা।
মেয়েটা রক্তাক্ত বুক দেখে ভয়ে দিলো ভো দোড়।
রুম ছেড়ে বেরিয়ে মেয়েটা পড়ে গেলো বিপাকে।
হায় আল্লাহ গো এইডা আমি কনে আইলাম। আমার মাথা এমনে ঘুরে ক্যান,,,
এইডা কি কোন রাজপ্রাসাদ,,,
কোন দিক দিয়া বাইর হমু আমি।
আশে পাশে তাকাতেই সিঁড়ি দেখে সেদিকে দিলো এক দোড়,,, সিঁড়ি ধরে ধরে আস্তে আস্তে নামতে থাকলো।
নিচ থেকে একটা মেয়ে বলে ওঠলো এই মেয়ে তোমার সেন্স ফিরেছে,,, কোথায় যাচ্ছো।
একি হাতে ছুঁড়ি কেনো, আর রক্তই বা কেনো।
মেয়েটা ভয়ে ভয়ে বললো আপাগো বাঁচান আমারে, বাঁচান আমারে যে বেঁইচা দিছে আপা। বলেই মেয়েটাকে জাবটে ধরলো।
মেয়েটা বললো হোয়াট ইজ দিস, এসব কি আচরন বা এসব কি ভাষা এই মেয়ে ছাড়ো, ছাড়ো বলছি।

ইমন উপর থেকে বললো সায়রী,,, অখিল আসছে।
অখিল এলেই রুমে চলে আয়।
সায়রী উপরে তাকিয়ে ইমনকে দেখে বললো একি তোর কি হয়েছে??
ইমন কোন উত্তর না দিয়ে রুমে চলে গেলো ।
মেয়েটা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলো।
সায়রী মেয়েটার দিকে চেয়ে বললো হ্যালো,,, কি সমস্যা।
মেয়েটা কাঁদো কাঁদো হয়ে বললো ঐ লোকটা আমার সাথে খারাপ কিছু করবো।
সায়রী অবাক হয়ে ধমকে ওঠলো।
কিহ! মাথা খারাপ হয়ে গেছে, এইটুকুনি পিচ্চি মেয়ে। কার সম্পর্কে কি বলছো, তুমি চেনো ওকে??
মেয়ে টা মাথা নাড়িয়ে না বললো।
সায়রী বললো কাল রাতে তো এক চড়েই জ্ঞান হারিয়েছো আজ যদি না হতে চাও তো চুপচাপ থাকো।
মেয়ে টা চমকে ওঠলো। কাল রাতের কথা ভুলেই গেছিলো। ওতোগুলো পুরুষলোকের ভীড় থেকে পালিয়ে রাস্তায় তো এই লোকটার সাথেই ধাক্কা খেলো। সব মনে পড়তেই আঁতকে ওঠলো ভয়ে।
মেয়েটা সায়রীর পায়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠলো।
আপা আমারে বাঁচান,,, আমারে বাড়ি দিয়া আসেন।
আমি বাড়ি যামু।
সায়রী ভ্রু কুঁচকে মেয়েটাকে ওঠিয়ে জিগ্যাস করলো বাড়ি কোথায় তোমার???
টাংগাইলে,,,
সায়রী অবাক হয়ে বললো কিহ!তাহলে এখানে কি করে তুমি। কার সাথে ঢাকায় এসেছো। রাত করে রাস্তায় ই বা কি করছিলে।
মেয়েটা সায়রী কে সব খুলে বললো।
এদিকে অখিল এসে কলিং বেল বাজালো। সায়রী দরজা খুলে অখিল কে নিয়ে উপরে গেলো।
যাওয়ার আগে মেয়েটার দিকে চেয়ে বললো ভয় পেওনা এখানে তোমার কিছু হবেনা। আমরা সবাই আছি, আর ঐ লোকটাও খারাপ লোক নয়, ঐ লোকটা খুবই ভালো একজন মানুষ তুমি এখানে বোসো আসছি আমি।
অখিল বললো কিরে কি ব্যাপার এতো সকালে ডাকলো যে কার কি হয়েছে, আর মেয়েটাই বা কে।
সায়রী যেতে যেতে মেয়েটার ব্যাপারে বললো।

মেয়েটা নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে ভয় পেলো। রক্ত শুকিয়ে হাতে আঠার মতো লেগে আছে,,,
আশে পাশে তাকালো টিউবওয়েল খোঁজার জন্য, কিন্তু পেলো না, আর না পেলো কোন মানুষ।
ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলো রান্না ঘরের দিকে। নিচে ছোট বালতি আর মগ দেখতে পেলো বালতি থেকে পানি মগে নিয়ে হাতটা ধুয়ে ফেললো।
পুরো রান্না ঘরে চোখ বুলালো। সব জিনিস ওপরে কেনো ভাবতে লাগলো। কিছু জিনিস দেখে চিনতেও পারলোনা। ভাবতে লাগলো – আমগো বাড়ি তো সব নিচে রাঁনদে এনু আবার গ্যাস উপরে ক্যা,,,
থাইকগা অত ভাইবা কাম নাই, আপাটা ভালা আছে, আপারেই কমু আমারে বাড়ি নিয়া যাইতে।
তয় আব্বা যদি আমারে বাইর কইরা দেয়,তাইলে কই যামু,,, খালাগো বাইত যামু তাইলে ভাবতে ভাবতে রান্নাঘর ছেড়ে পুরো ড্রয়িং রুম ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলো।

সায়রী বললো কিরে এসব কি করে হলো,,,
অখিল বললো কিরে একেবারে হৃদপিণ্ডে আঘাত করলো কে???
ইমন চোখ রাঙাতেই অখিল হোহো করে হেসে ফাস্ট এইড বক্স বের করে প্রয়োজনীয় ট্রিটমেন্ট করলো।
সায়রী বললো কিরে কি করে হলো,,,
আর বলিস না কি অদ্ভুত এক মেয়ে রে বাবা দুদুবার এট্যাক করেছে আমাকে।সাহস দেখে আমি অবাক হয়ে যাই মেয়েটাকে নিয়ে আয় এখানে কানের নিচে কয়টা লাগাই, পুচকে মেয়ে সে কিনা আমাকে ছুঁড়ির আঘাত করে।
সায়রী এক ঢোক গিলে বললো ওয়েট ওয়েট।
আসলে হয়েছে কি বলতো মেয়ে টা কে ওর বাবা বিক্রি করে দিয়েছে। আর মেয়েটা খুব বাজে পরিস্থিতির স্বীকার হয়েছিলো সেখান থেকেই পালিয়ে এসেছে। বাচ্চা মেয়ে তো ওর মধ্যে একটা ভয় কাজ করছে, ভয় থেকেই ও এমনটা করছে।
আমার সাথেও অদ্ভুত আচরন করেছে আমি ওকে জিগ্যাস করতেই সব জানতে পারলাম।
অখিল বললো বলিস কি,,, নিজের বাবা এমন কাজ করেছে??
ইমন বললো দুনিয়াটা বড়ই আজব বুঝলি,,,
কারো মা পাষন্ড হয় তো কারো বাবা পাষন্ড হয়।
আরে যদি এমনই করবি তো দুনিয়া তে কেনো এই নিষ্পাপ প্রানগুলোর জন্ম দিস।
সায়রী অবস্থা বেগতিক দেখে বললো ইমন,,,হাইপার হোসনা ভাই বরং মেয়েটাকে নিয়ে এখন কি করবি সেটা ভাব।
ইমন বললো ভাবাভাবির কিছু নেই মেয়েটাকে জাষ্ট আমার সামনে নিয়ে আয়।
সায়রী ভয়ে এক ঢোক গিলে বললো ভাই মেয়েটা কিন্তু একে বারেই বাচ্চা,,, বুঝতে পারেনি রে।
ইমন চোখ গরম করে বললো যেটা বলেছি সেটা কর তুই।
অখিল বললো দোস্ত আমার তো যেতে হবে। বাসায় গিয়ে আবার হসপিটাল যেতে হবে।
ইমন বললো যা তুই,,,
অখিল সায়রীর ভয়ার্ত মুখ দেখে মুখ চিপে হেসে বেরিয়ে গেলো।
ইমন বললো সায়রী তোর মেয়ে ঘুম থেকে ওঠার আগে আমার কাজটা করে মেয়ের খাবাড় রেডী কর।
সায়রী বললো হুম যাচ্ছি।

মেয়েটা রুমে আসতেই ইমন সোফায় পায়ের উপর পা তুলে বোসলো। পা থেকে মাথা অবদি চোখ বুলিয়ে দেখলো।উজ্জ্বল শ্যামবর্ন,,, লম্বা পাঁচফুট তিন হবে,,, ডাগর ডাগর চোখ, জোরা ভ্রু চুলগুলো কেমন উষ্কখুষ্ক, দেখেই বুঝা যাচ্ছে একদম গরীব ঘরের অবহেলিত সন্তান।
ভয়ে কেমন কুকঁড়িয়ে যাচ্ছে মেয়েটা,,,

ইমন এক ধমক দিয়ে বললো এই মেয়ে সমস্যা কি,,,
মানুষ খুন করে জেলের ভাত খাওয়ার শখ হয়েছে নাকি।
মেয়েটা কেঁপে ওঠলো, ভয়ে ভয়ে ইমনের দিকে তাকালো। সায়রী কাঁধে হাত রাখতেই কিছুটা ভরসা পেয়ে বললো আমারে মাফ কইরা দেন,
ইমন মেয়েটার এমন অসহায় কথা আর ভয়ার্ত মুখ দেখে কি যেনো একটা ভেবে বললো।
বয়স কতো,,,
মেয়েটা ভয়ে ভয়ে বললো চৌদ্দ,,,
ইমন রাগে কটমট করতে করতে বললো চৌদ্দ বছরের এক পুচকে মেয়ে ঊনত্রিশ বছরের একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ মানুষ কে দু-দুবার এট্যাক করতে আসো সাহস তো কম নয়,,,
মেয়েটা চমকে গেলো ভয়ে কাঁপতে লাগলো।
সায়রী বললো ইমন ছেড়ে দে না, বলছিতো বাচ্চা মেয়ে।
ইমন কঠোর চোখে তাকালো বললো,তুই এখান থেকে যা। তোর এখানে কি কাজ।
সায়রী এক ঢোক গিললো।
ইমন ধমকে বললো কি হলো যা।
সায়রী চলে যেতে নিতেই মেয়েটা সায়রীর পা আঁকড়ে ধরলো। আপাগো আমারে ছাইড়া যাইয়েন না। আমার ভুল হইয়া গেছে আমারে মাফ করেন।
ইমন বাঁকা হেসে সায়রী কে ইশারা করতেই সায়রী বেরিয়ে গেলো।
মেয়েটা কাঁপতে কাঁপতে ওঠে দাঁড়ালো।
ইমন বললো কানে ধরো,,,
মেয়েটা অবাক হয়ে তাকালো।
ইমন বললো ইয়েস কানে ধরে দশবার ওঠবোস করো। তাহলেই মাফ করবো নয়তো বলেই ইমন ওঠতে নিলো। মেয়েটা ভয় পেয়ে বললো ধরতাছি,ধরতাছি।
কানে ধরে দশবার ওঠবোস করলো।
ইমন মনে মনে বেশ আনন্দ পেলো। বহু বছর পর তার মন টা হালকা লাগছে। এই পুচকে মেয়েটার জন্যই এমন টা হলো।
বুকের বা পাশে প্রচন্ড ব্যাথা করছে,,, ব্যাথাটা যে আঘাতের বেশ বুঝতে পারলো।
মনে মনে ভাবলো তুমি তো যে সে মেয়ে না, অবশ্যই তোমার মধ্যে কিছু একটা আছে, নয়তো ইমন চৌধুরীর গায়ে আঘাত করো কি করে?
হৃদপিণ্ডে আঘাত করেছো এতো সহজে তো তোমায় ছাড়ছিনা।
পরোক্ষনেই ভাবলো চৌদ্দ বছর বয়সি মেয়েটার মধ্যে কি এমন থাকবে,এতোগুলো বছরে এতো এতো সুন্দরী মেয়ে যার নজর কাঁড়তে পারেনি তার নজর কিনা এই মেয়ে কাঁড়তে চাইছে।
নাহ যতো দ্রুত মেয়েটাকে তার ঠিকানায় পৌঁছে দিতে হবে৷
নয়তো লোকে আমাকে পাগল বলবে। বুরো বয়সে ভিমরতী ভেবেই বাঁকা হাসলো ইমন।

মেয়েটার দিকে তাকাতেই দেখতে পেলো মেয়েরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছে ওঠবোস করতে,হাঁপাচ্ছে কেমন, মুখটাও বেশ শুকনো লাগছে। এমনিতেই পাটকাঠির মতো দেখতে নিশ্চয়ই পেটে কিছু পড়েনি কাল থেকে। হঠাৎ ই মেয়েটা ঢলে পড়লো।
ইমন চমকে ওঠলো কাছে গিয়ে মেয়েটাকে ধরলো গালে হালকা থাপ্পর দিয়ে বললো এই মেয়ে কি হলো,,,
মেয়েটা শুধু চোখ টেনে তোলার চেষ্টা করলো।
ইমন বললো এই তোমার নাম কি,,, খিদে পেয়েছে তোমার।
মেয়েটা ভাঙা আওয়াজে বললো মুসকাননন,,,
নাম শুনতেই অচেনা এক অনুভূতি তে হৃদয় শীতল হয়ে গেলো তার।
মেয়েটা বুকের মাঝেই জ্ঞান হারালো।
ঘনকালো চোখের পাপড়ির দিকে তাকালো ইমন।
মেয়েটা কে এতো কাছের কেনো মনে হচ্ছে,,,
এক দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মুসকান কে কোলে তুলে নিলো।
বিছানায় শুইয়িয়ে দিয়ে সায়রীকে মেসেজ করে কিছু খাবাড় পাঠাতে বললো।

টাংগাইলের এক বন্ধুকে ফোন করে মুসকানের সব বিবরন দিয়ে পরিবারের খোঁজ করতে বললো।
ফোন রেখে মুসকানের মুখের দিকে চেয়ে বললো -মাঝরাতে ঝড়ের মতো এই মেয়েটা কেনো এলো,,,
এসব যা হচ্ছে সব কিছুর পেছনে কি কোন কারন আছে,,,
আমার এই নিঃস্বসঙ্গ জীবনে ঝড়ের মতো কি চলে এলো,,,
নাহ কি ভাবছি এসব, আমার নীতির বাইরে আমি যেতে পারিনা।
আমার নিয়ম আমি ভাঙতে পারিনা।
পরোক্ষনেই ভাবলো একবার নিয়ম ভেঙে দেখলে কেমন হয়,,,
আবারো ভাবলো অসম্ভব এটা কোনদিনও সম্ভব নয়।

রুম ছেড়ে বেরিয়ে গেলো ইমন।

,
সায়রী মুসকান কে কিছু খাবাড় দিলো, মুসকান খুবই তৃপ্তি সহকারে অনেকটা খেয়ে নিলো।
ইমন রুমে আসতেই মুসকান কে ওভাবে খেতে দেখে অবাক হয়ে চেয়ে রইলো।
মনে হচ্ছে কতোদিন পর মেয়েটা একটু ভালো মন্দ খাবাড় পেয়েছে,মুখটা এখন কতোটা প্রফুল্ল লাগছে। এই মেয়েটার পারিবারিক ঘটনা, আসল সমস্যা আমাকে জানতেই হবে।
কেনো জানতে হবে সেটা জানিনা,
সায়রী বললো ইমন আমার ক্লাস আছে সুপ্তিকেও স্কুলে পৌঁছে দিতে হবে আমি যাই।রাগারাগি না করে কিভাবে সমস্যা সমাধান করা যায় সেটা ভাব।
ওকে তুই নিয়ে এসেছিস তাই ওর সব দায়িত্বও এখন তোর।
এতো জ্ঞান না দিয়ে কাজে যা।
মুসকান ভয়ে ভয়ে বললো আপা আমি,,,
সায়রী বললো চিন্তা করোনা এতোটা সময় পার হয়ে গেলো এই লোকটা যখন তোমার ক্ষতি করেনি তো আর করবেওনা। টেনশন মুক্ত থাকো ওনিই তোমাকে তোমার ঠিকানায় পৌঁছে দিবে।
সায়রী চলে গেলো,,,
মুসকান চুপচাপ বসে ছিলো ইমন সোফায় বসে বসে কাগজপএ ঘাটাঘাটি করছে।
হঠাৎ মুসকান বিছানায় তাকিয়ে চমকে ওঠলো।
ভয়ে ভয়ে ইমনের দিকে তাকালো। আবার নিজের পিছন দিকে তাকানোর চেষ্টা করলো।
ইমন কাগজ পএ গুছিয়ে বাইরে যেতে নিয়েও থেমে গেলো।
ভ্রু কুঁচকে বিছানায় তাকালো। মুসকানকে দেখলো কাঁপছে,,,
এই মেয়ের সমস্যা কি সব সময় এতো ভয়ে ভয়ে থাকে কেনো?
নিজের ঠিকানায় পৌঁছে দিব তার আগে তো সময় লাগবে,,,
আচ্ছা মেয়েটার বাবার নামটা জিগ্যাস করি এতে সহজ হবে পৌঁছে দিতে।
ইমন এগিয়ে এসে জিগ্যাস করলো, তোমার বাবার নাম কি?
মুসকানের থেকে চোখ সরিয়ে বিছানায় তাকাতেই চমকে গেলো আবার মুসকানের দিকে তাকালো।
এনি প্রবলেম???
মুসকান ভয় প্লাস লজ্জায় কেমন কুঁকড়িয়ে গেলো।
চোখে মুখে অস্বস্তি স্পষ্ট।
ইমন ধমকে বললো হ্যালো সমস্যা কি,,,
মুসকান ভয়ে ভয়ে বিছানা ছেড়ে ওঠতে নিয়ে ও মাগো বলে পেট চেপে ধরলো।
ইমন মুসকান কে ধরে বললো সমস্যা হলে ওঠতে হবে না এখানেই বসো।
আমি আসছি বলেই বেরিয়ে গেলো।

আল্লাহ গো আমারে তুমি এমন অবস্থায় ক্যান ফেললা। পোলা মাইনসের সামনে ছিঃ ছিঃ।
খালা কইছিলো এমন সময় সাবধানে থাকোন লাগে।
পোলাগোর সামনে এমন কথা কন ও যাবো না।
এইডা হইলো গোপন জিনিস আর লজ্জার জিনিস।
এহন আমি কই যামু, কার কাছে যামু কি করমু। আমার যে মেলা পেট বিশ করতাছে। পেট চেপে কাঁদতে লাগলো মুসকান।
ইমন বেরিয়ে সায়রীর রুমে গিয়ে দেখলো সায়রী বেরিয়ে গেছে। তাই ফোন করে শুনে নিলো।

মুসকানের সামনে গিয়ে একটা প্যাকেট সামনে দিয়ে বললো এটা নাও, তোমার সমস্যা সমাধান এতো ভয়ের কিছু নেই ইট’স কমন ম্যাটার।
মুসকান ভ্রু কুঁচকে তাকালো ইমনের হাতে দিকে।
এইডা কি,,,
মুসকানের প্রশ্ন শুনে ইমন ভড়কে গেলো।
মনে মনে বললো হায় কপাল এটা কি আমার থেকে তো এর ই ভালো জানার কথা ।
এ কোন দেশ থেকে এসেছে,,,
এ আদেও মানুষ তো,,,নাকি দুনিয়াতে ভুল করে চলে আসা কোন এলিয়েন ।

চলবে………
ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here