হৃদপিন্ড পর্ব-২৪

হৃদপিন্ড পর্ব-২৪
#জান্নাতুল নাঈমা

মুসকান ফুঁপিয়ে কেঁদেই চলেছে ইমনের কথা তাঁর কানে পৌঁছিয়েও পৌঁছায় নি বা অভিমানের পাল্লা বেশীই ভারী হয়ে গেছে।
ইমন এক দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। সাতপাঁচ ভাবার আর সময় নিলো না সে। আর যাই হোক তাঁর মুগ্ধময়ীকে ভালোবাসা, আদরের অভাবে ভুগতে দেবে না সে।
এছাড়া মুসকান তো টাকা -পয়সা ভালো কাপড় ভালো খাবাড়ের পাগল নয়। সে শুধু আদর ভালোবাসার জন্য পাগলামি করছে। পরপুরুষের কাছেও নয় তাঁর স্বামীর কাছে এটাতো তাঁর অপরাধ নয়। আমি একটু বেশীই চিন্তা করছি বোধহয় ওর ভালো করতে গিয়ে ওর ক্ষতিই করে ফেলছি যা মানসিকভাবে ভীষণ আঘাত করছে ওকে।
মাথাটা কেমন করে ওঠলো তাঁর। শরীর জুরে উষ্ণ হাওয়া বয়ে গেলো। মুসকানের ফুঁপানির শব্দ কানে ভাসতেই মোহময় দৃষ্টি তে চেয়ে রইলো কতোক্ষন।
ঘোর লাগা গলায় বললো “যার জন্য তুমি এভাবে ভেঙে পড়ছো তাঁর থেকেও হাজার গুন দিতে প্রস্তুত আমি”
আজকের পর থেকে তোমার চাওয়ার মাএার ওপর আমার ভালোবাসা নির্ভর করবে না। আমার ভালোবাসা নির্ভর করবে আমার আমার দেওয়ার ওপর।
একহাতে মুসকানকে জাগালো ইমন একদম নিজের কোলের ওপর বসাতেই মুসকান চমকে ওঠলো।
কান্না থেমে গেছে তাঁর আচমকাই এমন কিছু হয়ে যাবে ভাবতে পারেনি। অবাক নয়নে চেয়ে রইলো সে।
ইমনও তাঁর মোহময় দৃষ্টি তে চেয়ে আছে।
হঠাৎ ই কোমড়টাকে একহাতে শক্ত করে চেপে নিজের খুব কাছে নিয়ে এলো। মুসকানের বুকের ভিতর হঠাৎই শীতলতায় ভরে গেলো। হৃদস্পন্দন বেড়ে গেলো দ্বিগুণ ভাবে। একহাতে চুলের মুঠোয় শক্ত করে চেপে কপালে কপাল ঠেকিয়ে ঘোর লাগা গলায় বললো যেখানে সবার কাছে তোমার প্রাউড ফিল করার কথা সেখানে তুমি মাথা নিচু করে কেনো থাকো মুসকান,,,
কেনো বুঝোনা কিছু মানুষ তোমার মতো হতে পারেনা, তোমার জায়গায় আসতে পারেনা বলেই হিংসে থেকে অনেক রকমের কথা বলে।
“ইমন চৌধুরীর মতো সুপুরুষের অর্ধাঙ্গিনী হওয়ার ভাগ্য নিয়ে সবাই জন্মায় না কিন্তু অধিকাংশ মেয়েই তাঁর অর্ধাঙ্গিনী হওয়ার স্বপ্ন দেখে”
তোমায় ওদের বলতে হবে না তোমার স্বামী কেমন।তোমার স্বামীর ভালোবাসার গভীরতা কেমন।
কিন্তু আজকের পর তুমি নিজেই অনুভব করতে পারবে তোমার বন্ধুদের ভাষায় বুড়ো জামাই তাই তো। এই বুড়ো জামাই তোমায় যা দিতে পারে আর পারবে ওদের কম বয়সি, যুবক জামাই ও তা দিতে পারবেনা।
ইমনের ভারী নিশ্বাস মুসকানের মুখে পড়তেই তাঁর শ্বাস ভারী হয়ে এলো। শরীর টা অবশ হয়ে আসছে কেমন, অতিরিক্ত কান্নার ফলে চোখ দুটোও বুজে আসছে। মুখ দিয়ে একটা আওয়াজ ও বেরুলো না তাঁর। ভয় হতে লাগলো কথা না বলাতে বোধ হয় ইমন রেগে যায় কিন্তু ইমন তো আজ রাগবে না। সে তাঁর গভীর ভালোবাসায় মত্ত করে রাখবে তাকে।
সুখের ডুব ডাগরে ডুবিয়ে মারবে তাঁকে। তা কি সে টের পাচ্ছে,,,
ঘাড়ে ঠোঁট ছুয়াতেই কেঁপে ওঠলো মুসকান।
ইমন আরো গভীর ভাবে নিজের সাথে জরিয়ে নিলো। মুসকান আধো চোখে এক পলক ইমনকে দেখেই চোখ বুজে ফেললো।
ইমনের এই অস্থিরতার রূপ, দেখার সাহস তাঁর হলো না।
আগুনে ঘি ঢেলে দিলে যেমন আগুন হুট করে ফুঁসে ওঠে ইমনেরও সেই অবস্থা। আজ মুসকান শত বাঁধা দিলেও ইমনকে আটকাতে পারবে না।
গলায় অজস্র চুমুতে ভরিয়ে দিচ্ছে ইমন। প্রত্যেকটা স্পর্শেই কেঁপে কেঁপে ওঠছে মুসকান।গলা থেকে মুখ ওঠিয়ে ঠোঁট জোরা আঁকড়ে ধরলো।

মুসকানকে ওভাবেই কোলে তুলে ঘাড়ে মুখ ডুবিয়েই বিছানার দিকে এগোতে লাগলো। অজান্তেই হাত দুটো শক্ত ভাবে আঁকড়ে ধরে আছে ইমনের পিঠে।
দুজনের হৃদস্পন্দনই আজ একসাথে স্পন্দিত হচ্ছে।
মুসকানকে বিছানায় শুইয়িয়ে ইমন ওঠে গিয়ে লাইট অফ করে দিলো ড্রিম লাইটের আলোতে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে সব কিছু। সেই সাথে মুসকানের শরীরের হালকা কাঁপুনি খুব করে টের পাচ্ছে।
নিজের শার্টটা খুলে ফেললো ইমন বিছানায় যেতেই মুসকান ইমনের দিকে চেয়ে নিচু স্বরে বললো আপনি রাতে খাবেন না??
ইমন সেদিকে পাত্তা না দিয়ে ধীরে ধীরে এগুতে লাগলো। মুসকানের গলা শুকিয়ে এসেছে, ইমনকে তাঁর বড্ড অচেনা লাগছে, এই অস্বাভাবিক রূপ আগে কখনো দেখেনি সে। কেমন অচেনা ভয় এসে আঁকড়ে ধরেছে তাঁকে।
সফটলিভাবে স্পর্শ করলো ইমন কোমড় চেপে ধরে কাঁধে মাথা রেখে একহাতে জামার চেইনে এক টান দিলো মূহুর্তেই আঁতকে ওঠলো মুসকান ভয়, লজ্জা দু’টোই গভীর ভাবে আঘাত করলো তাকে। শক্ত ভাবে জরিয়ে ধরলো ইমনকে। যেনো আর ছাড়বেই না ছাড়লেই লজ্জায় মরন হবে তাঁর ।
ইমন যতো তাঁর স্পর্শ দিচ্ছে মুসকান ততো শক্ত করে জরিয়ে নিচ্ছে। পুরো শরীর প্রবলভাবে কাঁপছে, তাঁর এই কাঁপুনি ইমনকে যেনো দ্বিগুণ পাগল করে দিচ্ছে।
পাগলের মতো চুমু খাচ্ছে গলায়,ঘাড়ে, পিঠে।
পুরো শরীরে হাত বিচরন করছে মুসকানের চোখ দিয়ে সমানে পানি ঝড়ছে। অতি সুখে মরে যেতে ইচ্ছে করছে তাঁর ।
ইমন যেনো আজ তাঁকে সুখে মেরেই ফেলবে।
পিছন দিক ঘুরিয়ে পিঠে অজস্র চুমুতে ভরিয়ে দিচ্ছে।
একহাতে পেট চেপে কখনো ঘাড়ে, কখনো পিঠে ঠোঁট ছোঁয়াচ্ছে। সুখ, ভালো লাগার অসহ্য সীমানায় পৌঁছে গেছে মুসকান। ইমন এবার মুসকানকে ঘুরিয়ে নিলো গলায় মুখ ডুবিয়ে দিলো। মুসকানের চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে ইমনের কপালে ঠেকলো। ইমন এক নজর মুসকানকে দেখে ধীরে ধীরে নিচের দিকে নেমে গেলো নাভীতে ঠোঁট ছোঁয়াতেই মুসকান খামচে ধরলো তাঁর চুল।
মসৃন পেটটায় খুব সফটলি চুমু খেতে লাগলো।
কাঁপতে কাঁপতে এবার বেহুশ হবার অবস্থা তাঁর।
সাপের মতো মোড়ামুড়ি করতে শুরু করলো সে।
যার ফলশ্রুতিতে ইমন গভীর ভাবে মুখ ডুবিয়ে দিলো। এবার সত্যি সত্যিই অতি সুখে সে বেহুশ হয়ে গেলো।
হঠাৎ করে মুসকানের ছটফটানি থেমে যাওয়া। কোন রেসপন্স বা আনাড়িপনা না পেতেই ইমন চোখ তুলে তাকালো। অনুভূতি শূন্য বুঝতেই ওঠে গিয়ে গাল দুটো স্পর্শ করলো। কোন রেসপন্স পেলো না। চোখ দুটো পরখ করতে গিয়েই বুঝলো সে জ্ঞান হারিয়েছে।
যা বুঝে তাজ্জব বনে গেলো সে। মনে মনে বেশ বকলো মুসকান কে। রাগ ও হলো ভীষণ ইচ্ছে হলো মেয়েটাকে চিবিয়ে খেতে এমন একটা মূহুর্তে এসে এমনটা না করলেও পারতো। কপাল বেয়ে ঘাম ঝড়ে পড়লো। অশান্ত মনকে শান্ত করার তীব্র চেষ্টা করতে লাগলো। পুরো শরীর ঘেমে একাকার অবস্থা শীতের মৌসুমে এমন ঘেমে যাওয়া মানেই প্রচন্ড অস্থিরতার ফল।

“অভিযোগ করার বেলায় ষোল আনা।
অথচ আমার আদর সহ্য করার ক্ষমতাই নেই”
“সবেতো সুখের সমুদ্রে পা ডুবিয়েছি মিসেস এখুনি এই অবস্থা যখন সাঁতার কাটবো তখন কি অবস্থা হবে ”
বাঁকা হাসলো ইমন।
কপালে আলতো করে চুমু একে দিয়ে একটু উঁচিয়ে জামার চেইন টা লাগিয়ে দিলো।
রাগের মাথায় খিদে না পেলেও এখন বেশ খিদে পাচ্ছে। মুসকান কে জাগাতে হবে ভেবেই গ্লাস টা নিয়ে কিছুটা পানি চোখে মুখে ছিটিয়ে দিলো।
হালকা আওয়াজ করে ওঠলো মুসকান। ইমন একটু ঝুকে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো কি হয়েছে,,,
চোখ খুলতেই ইমনকে খুব কাছে পেলো সে। কিছুক্ষন আগে ঘটে যাওয়া ঘটনা মনে পড়তেই শিউরে ওঠলো সে লজ্জায় মিইয়ে গেলো একদম।
বুকটা ধড়ফড় ধড়ফড় করতে লাগলো।
কি করে বোঝাবে সে তাঁর অনুভূতি গুলো। এতো গভীর স্পর্শ যে সে সইতে পারছে না। তাঁর কেমন পাগল পাগল লাগছে লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে করছে যে মৃত্যুর নাম হবে সুখ মৃত্যু, অতি সুখে যে তাঁর মরন হবে।
তাঁর শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ইমনের প্রত্যেকটা স্পর্শ ছেয়ে গেছে প্রথম কোন পুরুষের গভীর ছোঁয়া অনুভব করছে সে। যে ছোঁয়া তে রয়েছে পবিএতা।
এই ছোঁয়ার জন্য কি বেহায়ার মতোই না কাঁদছিলো সে ইশ লজ্জায় চোখ দুটো বুঝে ফেললো।
ইমন মুসকানের মনের অবস্থা বুঝতে পারলো।
প্রথম ফিলিং গুলো বোধ হয় এমনি হওয়া উচিত।
যা প্রত্যেকটা পুরুষের মনেই বড্ড আনন্দ দেয়।
মুসকান বড্ড বেশীই লাজুক, অন্যসব মেয়ের মতো সে স্মার্টলি বিহেইভ করে না। সে যা করে মন থেকে ন্যাচারালি আর এই জিনিসটাই বড্ড ভালো লাগে তাঁর ।
কানের কাছে মুখ নিয়ে মৃদু স্বরে বললো
–“অমন একটা কঠিন সময় এভাবে সেন্সলেস হওয়াটা বড্ড বেমানান” খুব তো অভিযোগ করছিলে,, আমাকে উন্মাদ বানিয়ে নিজে জ্ঞান শূন্য হয়ে পড়লে কেনো? এটুকু সহ্য করতে পারলে না? এখনোতো কিছুই করিনি।
মুসকান চোখ দুটো মেললো ভয়, লজ্জা দুটোই আকড়ে ধরেছে তাঁকে,কান দুটো দিয়ে যেনো গরম হাওয়া বেরুচ্ছে।মুসকানের মুখ ভঙ্গিতে ইমন রহস্যময় হাসি হেসে মুখে গম্ভীর্য ভাব নিয়ে বললো খিদে পেয়েছে খাবাড়ের ব্যবস্থা করো ঠান্ডা খাবাড় খেতে পারিনা সো কাজে লেগে পড়ে অনেক বোঝা হয়েছে আমার, কতোটা কি পারবে বলেই ওঠে পড়লো।

মুসকান কয়েকদফা শ্বাস নিয়ে জগ থেকে গ্লাসে পানি ভরে ঢকঢক করে খেয়ে নিলো।
ইমন শার্ট টা গায়ে চেপে বাথরুম চলে গেলো।
,
খাবাড় গরম করছে আর ভারী শ্বাস ফেলছে কিছুতেই নিজেকে স্বাভাবিক রাখতে পারছে না।
ইমনের সামনে পড়তেও প্রচন্ড লজ্জা লাগছে কিন্তু তাঁর সামনে না গিয়েও তো উপায় নেই।
,
ইমন খাচ্ছে মুসকান সামনে বসে আছে। তাঁর আজ খিদে নেই সে খাবে না।
কিন্তু ইমন অর্ধেক খাওয়া শেষ করে বাকিটা মুসকান কে খেতে বলে চলে গেলো।
মুসকানের খেতে ইচ্ছে না করলেও জোর করেই খাবাড়টা শেষ করলো। একটু স্বাভাবিকতায় এসে গেছে সে। স্বস্থি লাগছে এখন ঘুমটাও পেয়ে বসেছে কেমন।
বেশ কিছুক্ষন অপেক্ষা করলো ইমনের জন্য কিন্তু এলো না। তাই একপাশে চুপটি করে শুয়ে পড়লো।
খানিকবাদে ইমন রুমে ঢুকে সিটকেরী লাগিয়ে দিয়ে বিছানায় এলো তাঁর ও ঘুম ধরেছে কিন্তু আজ সে বালিশে ঘুমাবে না। কারো ছোট্ট হৃদয়ে কান পেতে সারারাত তাঁর হৃদয়ের কথা হৃদস্পন্দন শুনতে শুনতে ঘুমাতে ইচ্ছে হলো। যেই ভাবা সেই কাজ ইমন চৌধুরীর ইচ্ছে পূরন হবে না তাই কখনো হয়।
বিছানায় গা এলিয়ে আলতো করে মুসকান কে টেনে নিলো অনেকটা কাছে। মুসকানের হাত পা আবারো কাঁপতে শুরু করলো।
কিছু বলতে চেয়েও বলতে পারছে না গলাটা যেনো কেউ চেপে ধরেছে।
ইমন ওর মতো মুসকানকে গুছিয়ে তাঁর বুকে মাথা রাখতেই মুসকান শিউরে গেলো একটু সরতে নিতেই ইমন বললো”উহুম ডোন্ট ডিস্টার্ব মি।
দুকোমড় পেঁচিয়ে বুকে মাথা রেখে চোখ দুটো বন্ধ করে ফেললো। দাঁড়ির খোঁচায় হালকা ব্যাথা লাগছিলো তবুও চুপ করে রইলো।এই চুপ করাটায় বরাবর ইমনের রাগের কারন হলেও এবার বেশ মজা পেলো। ঘুমানোর আগে তাঁর মুগ্ধময়ী কে একটু জ্বালানোটা মন্দ নয় ভেবেই খানিকটা দাঁড়ির ঘষা দিলো ইচ্ছে করেই মুসকান আহ করতেই ইমন মুচকি হেসে গভীরভাবে জরিয়ে মুখ গুঁজে রইলো।
পুরো শরীরের ভাড় না দিলেও আর্ধেক ভাড়েই মুসকান অস্থির হয়ে গেছে কিন্তু কিছু করার নেই সারারাত এভাবেই কাটাতে হবে তাঁকে।
,
সাজিয়া বেগমের প্ল্যানটা কার্যকর হলো না।
তাই সে তাঁর দ্বিতীয় পদক্ষেপটা নিবে এবার।
ইভান লন্ডনে গিয়েছে একমাসের বেশী হলো আর তিনদিনপরই ফিরবে আর সাথে আসবে রিতিশা।
তারপর এই মেয়ের ব্যাবস্থা নেওয়া যাবে ভেবেই শয়তানি হাসি হাসলো।

–ছেলের বউ থাকতে কাজের লোকের কাছে চা,কফি খেতে হয় আমার এর থেকে বড় দুঃখ আর কি হতে পারে।

মুসকান দাদীকে পান বানিয়ে দিচ্ছিলো এমন সময় সাজিয়া গলা বাজিয়ে কথাগুলো বললো।
দাদী বললো– যা তো কফি বানিয়ে খাওয়িয়ে আয়।
মুসকান খুব খুশি হলো যাক তাঁর শাশুড়ী মা তাকে ছেলের বউ হিসেবে স্বীকার তো করেছে।
কফি বানিয়ে খুব উৎফুল্ল হয়ে শাশুড়ী কে দিলো মুসকান। সাজিয়া পেপার পড়ছিলো কফিটা হাতে নিয়ে পেপার টা পাশে রাখলো।
মুসকান চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।
সাজিয়া কফিতে চুমুক দিয়ে আবারো পেপার দেখায় মনোযোগ দিলো।
মুসকান বোঝার চেষ্টা করছে কফিটা সাজিয়ার কাছে কেমন লেগেছে সে তো ইমনের জন্য যেভাবে বানায় সেভাবেই বানিয়েছে। অভ্র এই কফি খেয়ে তো খুব প্রশংসা করেছে তাই শাশুড়ীর কাছেও প্রশংসা পাওয়ার জন্য মনটা উৎসুক করতে লাগলো।

–মা কফিটা ঠিক হয়েছে??
সাজিয়া মুসকানের মুখে মা ডাক শুনে প্রচন্ড রেগে গেলো। তাঁর জন্য ইভানের খাওয়া মার গুলোর কথা মনে পড়তেই মনের ভিতর কেমন হিংস্রতা কড়া নাড়লো। কফির মগটা সোজা মুসকানের গায়ে ছুঁড়ে বললো খুবই বিশ্রি হয়েছে একটা কফিই বানাতে পারিস না। ছোটলোকের বাচ্চা।
গরম কফি শরীরে পড়তে মুসকান চাপা আর্তনাদ করে ওঠলো সাজিয়া সেই আর্তনাদে তোয়াক্কা না করে হনহন করে চলে গেলো।

–দাদী বললো কিরে কি হলো।
মুসকান একহাতে নিজের মুখটা চেপে নিঃশব্দে কাঁদতে লাগলো।
দাদী যদি জানতে পারে খুব অশান্তি করবে। আর ইমনের কানে গেলে আর রক্ষে থাকবে না। তাই সে কাঁপা আওয়াজে বললো কিছু না দাদী পায়ে একটু হোচট খেয়েছি তুমি পান খাও আমি পড়তে বসবো এখন।
তাঁর জন্য আর কোন অশান্তি হোক এ বাড়িতে সেটা সে চায় না।নিজের যন্ত্রণা গুলো একান্তই নিজের করে নিয়ে উপরে চলে গেলো সে।

বাথরুমে ঢুকে পাগলের মতো পানি দিতে লাগলো শরীরে। বুকের অনেকটুকুই পুরে গেছে মূহুর্তেই ফোস্কা পড়ে গেছে পানি দেওয়ায় ভালো লাগছে না দিলেই যন্ত্রণা হচ্ছে।
প্রচন্ড কাঁদছে সে, খুব কষ্ট হচ্ছে চাপা আর্তনাদ গুলো বাথরুমে গিয়ে যে গলা ফেটে বেরিয়ে আসতে চাইছে।

মনের ভিতর ভয় জমলো ইমন দেখে ফেলবে না তো বুঝে ফেলবে না তো??
–নাহ কিছুতেই বুঝতে দেওয়া যাবে না। ওনার সামনে স্বাভাবিক থাকলেই চলবে। কিন্তু যদি,,,আমার কাছে আসে। নাহ আসবে না।
মনে মনে আল্লাহ কে ডাকতে লাগলো। যাতে ইমন কোনভাবেই বুঝতে না পারে।
,

“সবার থেকে আড়াল করতে পারলেও সে কি ইমন চৌধুরীর থেকে আড়াল করতে পারবে তাঁর ব্যাথা তাঁর যন্ত্রণা”???

চলবে……
ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here