স্যার_I_Love_You,পর্ব_০৭,০৮

#স্যার_I_Love_You,পর্ব_০৭,০৮
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা (লেখিকা)
#পর্ব_০৭

মুন্নী রুবেল আব্রু মিম নাঈম— কুছ কুছ হোতা হে ইয়ার..
তারপর রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে ওদেরকে ওদের বাড়িতে ড্রপ করে দিয়ে নিজের বাড়ি চলে এলাম!
রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে নিলাম–
আম্মু– আয় মা খেয়ে নে এত লেইট করলি যে আজ?
আমি– আমি আর আমরা সব ফ্রেন্ডস রা বাহির থেকে খেয়ে আসছি!
আম্মু– বাহির থেকে খেতে গেলি কেনো আমাকে একটা কল দিয়ে বলতে পারতি মা আমি সব রান্না করে রাখতাম বাড়িতে নিয়ে আসতি ওদের সাথে আমিও একটু গল্প করতাম!
আমি– আম্মুকে জড়িয়ে ধরলাম আরে আমার লক্ষী আম্মু নেক্সট টাইম নিয়ে আসবো ওকে.!
আম্মু চলে গেলো!
আর কিছুক্ষণের মধ্যেই স্যারের আসার সময় হয়ে যাবে!
স্যার কি আসবে নাকি আসবে না!
স্যারের আসার সময় হয়ে গেছে কিন্তু স্যার এখনো আসছে না আমার তো খুব ভয় করছে যদি আর না আসে ভাবতে ভাবতে বারান্দায় গেলাম!
ধুর এখনো কেনো আসছে না!

আবার রুমে এসে পড়ার জন্য বই খুলে বইয়ের সামনে বসে পড়লাম! কিছুতেই মন লাগছে না শুধু কালকের স্যারের বলা কথা গুলো মনে পরছে!
উফফ ভাল্লাগে না

বইটা বন্ধ করে উঠে দাঁড়ালাম পিছনে ঘুরতেই দেখি.

স্যার দরজা দিয়ে ডুকছেন!
(আমি তো অভাক আমি কোই ভাবছিলাম উনি আসবেন না কিন্তু উনি তো আমার সামনেই)

স্যার– মিস ইতি! কোথায় হারিয়ে গেছেন?

আমি– ও জি স্যার! (স্যারের ডাকে ধ্যান ভাঙলো)

স্যার– চেয়ারে বসুন! দাঁড়িয়ে আছেন কেনো?

আমি– ওও জি স্যার!

স্যার– আইএম সরি!

আমি– স্যার আপনি সরি কেনো বলছেন?

স্যার– আমার আসতে ৩০মিনিট লেইট হয়ে গেলো তাই!

আমি– ওওও ইট’স ওকে! ( এবার আমার সরি বলার পালা উফফ) কেমনে যে বলি!

আমি– Sir! I’m Really very Sorry for Everything!

স্যার– ইট’স ওকে! আমি আসার সময় আপনার পূর্বের স্যারদের সাথে রাস্তায় হঠাৎ করেই দেখা হয়েছিল,, আর সবাই বললো আপনি তাদের কাছে তাদের বাড়িতে গিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন! তারা খুবই খুশি হয়েছে আপনার এই ব্যবহার! কখনো কাউকে ছোটো করবেন না বা কষ্ট দিবেন না আপনার অন্যের সাথে যেমন ব্যবহার করবেন তেমন ব্যবহার প্রকৃতি আপনাকে ফিরিয়ে দিবে! তাই চেষ্টা করবেন সবাইকে সবার প্রাপ্প সম্মান টুকু দেওয়ার সে যেমনই হোক ধনি গরিব ছোটো বড়… আই হোপ আপনি বুঝতে পেরেছেন!

আমি হা করে তাকিয়ে আছি…
বাহ কি সুন্দর করে বুঝিয়ে বললো পুরাই ফিদা!

স্যার– মিস ইতি! বুঝতে পেরেছেন?
আমি– জি জি জি স্যার!

স্যার– ওকে তো পড়া শুরু করা যাক!
স্যার পড়াচ্ছে আর আমি স্যারকে দেখছি

স্যার– আমার দিকে না তাকিয়ে থেকে বইয়ের কলম আর খাতার দিকে তাকান তাহলেই পড়া বুঝবেন!

আমি– উনি কি করে বুঝলেন যে আমি উনার দিকে তাকিয়ে দিলাম চোখ কি আরও চার পাঁচটা আছে নাকি.
কোই না তো চোখ তো দুইটাই তাও আবার সামনেই তাহলে! (মনে মনে বললাম আর কি)

স্যার– মিস ইতি! (একটু রেগে গেলেন)

আমি– জ..জ.. জি স্যার! (একটু তোতলাতে তোতলাতে বললাম)

স্যার– আপনি তোতলাতেও পারেন! ( বলে হাহাহা করে হাসছে)

আমি– মোটেও আমি তোতলাইনি! (বলে রাগি লুকে ওনার দিকে তাকালাম) ফুল ক্রাস
(হাসলে কত কিউট লাগে)
(আব বাসবি কার পাগলে আব মেরি জান লোগে
কেয়া)

খালেদা আন্টি স্যারের জন্য কফি নিয়ে আসছে!!

খালেদা আন্টি– আসবো স্যার?

স্যার– হ্যা হ্যা আসুন না প্লিজ!

খালেদা আন্টি– স্যার আপনার কফি! (কফির মগটা দিয়ে খালেদা আন্টি চলে গেলো)

স্যার কফির মগে চুমুক দিচ্ছে আর শব্দ হচ্ছে!
আমি তো শব্দ শুনে কয়েকবার উনার দিকে আড় চোখে তাকালাম

স্যার তা লক্ষ্য করে বললো–

স্যার– কি কফি খাবে? (কফির মগটা আমার দিকে একটু এগিয়ে দিয়ে)

আমি– শয়তান কুত্তা হারামি ফাজিল আফ্রিকান বান্দর উগান্ডার ভূত মনে মনে ১০০ গালি দিলাম!

আমি– না স্যার আপনিই খান আমি কারো মুখের টা খাইনা!

স্যার– তো তাকিয়ে ছিলেন কেনো? নজর লাগলে আমার পেট খারাপ হবে না বুজি! (একটা শয়তান মার্কা হাসি দিয়ে)

আমি– এ হালায় বলে কি ইচ্ছা তো করতাছে একটা ঘুসি দিয়া নাকটা চেপ্টা করে দেই বেশি লম্বা হইয়া গেছে শুধু ভালো হইয়া গেছি বলে কিছু বললাম না। আগের আমি থাকলে এতক্ষণে দাঁত একটাও থাকতো না গুন্ডি নাম্বার ওয়ান মনে মনে বললাম!

আমি আর স্যারকে উদ্দেশ্য করে কিছু বললাম না!
এইভাবেই কেটে গেলো কয়েকদিন!
সবাই তো অভাক একদিন রাতে!
আব্বু– ইতি আগের থেকে অনেক পাল্টে গেছে!

আম্মু– হ্যা যা বলেছো সব হয়েছে ওই শাওন ছেলেটার জন্য ওও আসার পর থেকে ইতিকে পুরাই পাল্টে ফেলছে! ভাড়ি মিষ্টি ছেলে!

আব্বু– তুমি ঠিক বলেছো! এখন আসো ঘুমাই সকালে অফিস যেতে হবে!

পরেরদিন কলেজের মাঠে বসে আছি সবাই—

মুন্নী মিম আব্রু– কি ব্যাপার জানু কি চলছে?

আমি– কি চলছে মানে?

নাঈম রুবেল– কি চলছে মানে বুঝিস না! না নেকা!

সবগুলা একসাথে চিৎকার দিয়ে– তোর আর স্যারের সাথে কি চলছে?

আমি– উফফ কানটা আমার ঝালাপালা করে দিলি তো তোরা!

মুন্নী– এখন বল!!

আমি কি বলবো?

মিম– আমার মাথায় একটা টোকা দিলো!বুঝিস না তুই আমরা কি বলছি নাকি ইচ্ছে করে এমন করছিস?

আমি— মাথায় হাত দিয়ে উফফ এত জোরে কেউ টোকা দেয়! ডাইনী

নাঈম রুবেল– কেউ আমারে একটা বাঁশ আইনা দে ওরে পিটাই..

আমি আবার কি করলাম…

আব্রু– উফ তোরা কথা ঘোরাচ্ছিস কেনো সোজা সোজা বললেই পারিস!

সবাই তুই বল আব্রু কে বললো.
আব্রু ওকে বলছি..

আব্রু– সত্যি করে বলবি কিন্তু ইতি তোর আর স্যারের মধ্যে কি কিছু চলছে নাকি? মানে প্রেম টেম ভালোবাসা এমন কিছু…

আমি যেনো আকাশ থেকা পড়লাম…

কি বললি এমন কিছুই নেই..

রুবেল নাঈম– কিছুই নাই মানে কও আমরা না তোর বেস্ট ফ্রেন্ড আর আমাদের কাছে মিথ্যা বলছিস তুই ইতি…

মুন্নী– ওই তোরা রেগে যাচ্ছিস কেনো?
মিম– কিছু নাই বললে কিভাবে হবে ইতি তুই কি একবারও ভাবছিস? তুই এখনকার তুই আর ৭ দিন আগের তুই এর মধ্যে কত পার্থক্য আর এটা শুধু হয়ে তোর স্যার আসার পর থেকে আর এই ৭ দিনে তুই অন্য কোনো কথা বলিসনি শুধু স্যারের কথা ছাড়া অন্য কথা বললেও তুই ১বার হলেও স্যারের কথা বলিস একটা ১বার হলেও স্যারের কথা বলিস একটা বারও কি ভাবছিস?

আমি আব্রুর ফোন দিয়ে গেমস খেলছিলাম!
ওর কথা শুনে ওর দিকে অভাক হয়ে রইলাম কারণ ওর কথা গুলো একদম সত্যি!

আব্রু– আরে বুঝিস না ইতি প্রেমে পরেছে আমাদের ইতি স্যারের প্রেমে পরেছে!

আমি– একদমই না এই গুলা ভুয়া কথা.

রুবেল– ভুয়া কথা না,, কোই তোর চোখ তো অন্য কথা বলছে!

নাঈম– ইতি তুই যখন স্যারের কথা বলিস তখন তোর মুখে এক বালতি ভর্তি হাসি ফুটে উঠে আর দুই চোখ ভরে স্যারের প্রতি ভালোবাসা সম্মান আর তুই বলছিস ভুয়া কথা!

মিম,, মুন্নী– ইতি তুই কি বুঝতে পারছিস না তুই স্যারকে ভালোবেসে ফেলেছিস!

আব্রু– আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে আমাদের ইতি প্রেমে পরেছে

আমি– ওই ডাইনি তুই প্রেমের কি বুঝিস হ্যা একটাও তো প্রেম করতে পারিস নি এখনে আবার বড় বড় কথা

আব্রু– প্রেম করি নাই তো কি হইছে সব জানি আমি হুহহ সব (চোখ টিপ দিয়ে বললো)
সবাই ওর কথা শুনে হেসো দিলো–

ওদের হাসতে দেখে আমার ম্যাজাজ বিগড়ে গেলো
ওই তোরা যাবি এখান থেকা যা বলছি আর নয়তো পিটাই ভূত বানাই ফেলমু (হেবি রেগে গেছি)
আমাকে রাগতে দেখে ওরা যার যার মতো উঠে চলে যায়! আমি আর দেখিনি ওরা শয়তান গুলা কোনদিক গেছে আব্রুর ফোনটা আমার হাতেই!
ফোনটা হাতে নিয়ে গাছের সাথে হেলান দিয়ে ভাবছি (আমাদের কলেজের মাঠে একটা বড় কৃষ্ণচুড়া ফুল গাছ আছে)
ভাবছি আর বলছি (আশেপাশে কেউ আছে কি না খেয়াল করিনি)

আমি– ওই শয়তান গুলা যা বললো সব কি সত্যি?
মানে কি আমি সত্যি স্যারকে ভালোবেসে ফেলেছি.

গাছের পেছন থেকা সব গুলা বাহির হয়ে আসলো আর চিৎকার করে বললো!!

২টা শয়তান ৩টা ডাইনি– হ্যা রে তুই সত্যিই স্যারকে ভালোবেসে ফেলেছিস ( বলছে আর ফিক ফিক করে হাসছে)

আমি– তোরা যাস নাই গাছের পিছনে লুকাই ছিলো.

সবগুলা– তুই প্রেমে পড়েছিস ইতি

আমি– দাঁড়া তোদের হচ্ছে…
(বলে সবগুলার পিছনে ছুটতে লাগলাম ওরা পাঁচজন পাঁচ দিকে ছুটে বেড়াচ্ছে আর আমি একা কতক্ষণ দৌঁড়ানো যায় উফফ হাঁপাই গেছি রে মাঠের মাঝখানে বসে পড়লাম! আর সব গুলা দৌড়াতে দৌড়াতে কলেজের ভেতরে ডুকে গেছে)

আমি– তোদেরকে তো পরে দেখে নিব শয়তান গুলান..
বসা থেকে উঠতে যাব আর তখনি আর্জিনার ফোনে একটা মেসেজ আসলো মেসেজ টা সিন করতেই যেনো আমার মাথায় পাহাড় ভেঙে পড়লো.
বিশ্বাসই হচ্ছে না! আমাদের সামনে এত সাধু সেজে থাকে আর তলে তলে এত দূর দাঁড়া দেখাচ্ছি তোকে এবার আমার পালা আমাকে এতক্ষণ অনেক কিছু বলছো এবার তোমাকে কে বাঁচাবে বেইবি ডাইনী বুড়ি আসছি আমি রেডি থাকো!(একটা শয়তান মার্কা হাসি দিলাম)

তারপর উঠে ক্লাস রুমে গেলাম
আমাকে মুচকি হাসতে দেখে সব গুলা অভাক হলো!
আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করতে আসবে তখনই ক্লাসে স্যার চলে আসলো তাই কিছু বললো না!
আর্জিনা তো ভুলেই গেছে ওর ফোন আমার কাছে

সবগুলা ক্লাস শেষ সবাই মিলা ফুচকা খেতে আসলাম!
ওর এখনও মনে নাই ফোন যে আমার কাছে ওও ভাবছে ওর ফোন ওর কাছেই!
হঠাৎ করেই ফোন খুঁজতে শুরু করলো!
আব্রু– আমার ফোন? আমার ফোন কোথায় অনেক বার বললো আর খুঁজছে তো খুঁজছেই সব ফুচকা খাওয়া বাধ দিয়া ওর দিকে তাকিয়ে আছে!
আমি আজকে আইসক্রিম খাচ্ছি আর ওর কান্ড দেখছি! মুচকি মুচকি হাসছ ইচ্ছা করছে জোরে জোরে হাসতে কিন্তু তা করা যাবে না!

বাকিগুলা– দেখ তোর ব্যাগে আছে কি না!.
আব্রু– নাই কোথাও নাই আমি দেখছি তো..
(ওর মনেই নাই ওর ফোন যে সকালে আমারে দিছিলো যাইহোক এবার আমাকে বলতেই হবে আর নয়তো ডাইনী এখন কান্না করার মতো অবস্থা)

.
.
চলবে????

#গল্প_স্যার_I_Love_You
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
#পর্ব_০৮

আমি: তোর মোবাইল পেয়ে যাবি এত খুঁজিস না! তুই এইটা বল তুই এভাবে পাগলের মতো ফোন খুঁজছিস কেনো? ফোনের মধ্যে কোনো স্পেশাল কিছু আছে নাকি?
আব্রু: না স্পেশাল কে থাকবে? না মানে কি থাকবে!
শুধু একটা মেসেজ করতাম আম্মুকে আর কিছু না!
সবাই খাচ্ছে আর আব্রুকে দেখছে!! এই প্রথম ও ফোনের জন্য এত টেনশন করছে!
আমি: ওও মেসেজ করবি তুই কিন্তু তুই তো কখনো আন্টিকে মেসেজ দিস না ডাইরেক্ট কল দিস?
আব্রু: কিসের মেসেজ কোন মেসেজ আমি কখন মেসেজের কথা বললাম? আম্মুকে কল দিবো তাই খুঁজছি!
আমি: ওও আন্টিকে কল দিবি? আমি তো ভাবছিলাম শ্রাবনকে মেসেজ করবি!
নাঈম: কে শ্রাবন?
মিম, মুন্নী: শ্রাবন মানে,, কে সে?
রুবেল: কিরে বলবি তো শ্রাবন কে?
(সব গুলা খাওয়া বাদ দিয়া অবাক হয়ে আমার মুখের দিকে তাকাই আছে)
সব চাইতে বেশি অবাক তো আব্রু হইছে!
আব্রু: তুই আমার ফোন চেক করছিস!
সবগুলা: কিরে কিছু বলবি তো নাকি কে শ্রাবন?
আমি: ওরে জিগা! (চোখ দিয়ে ইশারায় আব্রু কে দেখালাম)
সবগুলা এক সাথে: শ্রাবন কে?
আব্রু: চুপ করে বসে আছে আর আমাকে বকতেছে!
আমি– হেতি পেরেম করে পেরেম ফেসবুক পেরেম!
২সপ্তাহ ধরে আর আমাদের কিচ্ছু বলে নাই
ওরে কিলা সবাই!
এক এক করে সবাই মিলে ওরে বাসন দিলো!
আমি বাদ যাবো কেন স্যারকে নিয়ে আমাকে হেবি জ্ঞান দিছে আমিও একটু দেই হিহিহি…
আমি: আব্রু তুই আমাদের বললেই পারতি আমরা কি তোরে খাইয়া ফেলতাম আমাদের সবার ব্যাপারে সব জানোস আর তুই তোরটা লুকাইতে পারছি তোর থেকা এটা আশা করি নাই হুহহ এত টাই পর ভাবিস তুই আমাদের বাদ দে।
এই নে তোর ফোন তোর শ্রাবন অনেক গুলা মেসেজ দিচ্ছে।
ওরে ওর ফোন দিলাম ও আইসা আমাদের তিনজনকে জড়াইয়া ধরলো আর কানতে কানতে কইলো সরি রে দোস্ত আর হবে না এমন প্লিজ তোরা মাফ করে দে..
সবাই: যা মাফ করলাম।
আমি: একটা শর্তে মাফ করবো!
শ্রাবন তোর সাথে দেখা করতে চায়! যেদিন দেখা করবি আমরাও যাবো।
আব্রু: তুই জানলি কেমনে মানে তুই সব মেসেজ দেখছোস?
আমি: হো!
আব্রু: ইতি (চিৎকার দিয়ে মুখ অন্য দিকে ঘুরিয়ে নিলো)
সবাই হাসতে হাসতে শেষ!
আমি: আজ সকালেও তো খুব বলছিলি আমাকে এখন নিজেরই তো পল খুলে গেলো না!
আব্রু: আমি তোর শর্ত মানলাম,, তোদের সবাইকে সাথে নিয়ে যাবো ঠিক আছে কিন্তু তোকেও আমার শর্ত মানতে হবে!
আমি: কি শর্ত?
আব্রু: ওদের দুইটার বয়ফ্রেন্ড গুলা তো ওদের লগেই আছে তাই তোকে তোর বয়ফ্রেন্ড ক্রাস বাঁশ যাই ভাবিস তোর স্যারকে নিয়ে আসতে হবে তাহলেই তুই যেতে পারবি!! শেষ কথা।
আমি: কিহহহহ স্যারকে??
সব কয়ডা শয়তান ওর কথার সাথে তাল মিলালো
আমি: ধুর স্যারকে কিভাবে নিবো ভাবতে লাগলাম!
আব্রু: সামনের শুক্রবার মনে থাকে জেনো সবার!
ওকে!
মিম, নাঈম: ওকে!
মুন্নী, রুবেল: ওকে..!
আমি– ঘোড়ার ডিম ওকে…!
এখন স্যারকে কি বলে রাজি করবো ধ্যাত ভাল্লাগে না!
কিছু তো একটা বলে রাজি করাতেই হবে!
বাড়ি গিয়ে ভাববো…

আব্রু– কি নিয়ে আসতে পারবি তোর স্যারকে..
সবগুলা আমার দিকে তাকাই আছে আর মুচকি মুচকি হাসছে!
আমার তো খুব রাগ হচ্ছে…
আমি– আমি স্যারকে নিয়ে আসবো আগা মাথা ঘোড়ার ডিম একটা বুঝিয়ে কিন্তু কথা দিতে হবে আমি যে স্যারকে ভালোবাসি তোরা উনাকে কিছু বলবও না আর তেমন কোনো ইশারাও করবি না উনি আমার সাথে আমার স্যার হয়ে আসবে ওকে.
রুবেল– আগে তুই তোর স্যারকে রাজি তো করা (বলেই ৩২টা দাঁত বের করে হাসছে ওর সাথে মুন্নী নাঈম মিম আব্রু ও হাসছে)
আমি– থাক তোরা আমি গেলাম! (দাঁতে দাঁত চেপে)
উঠে আসলাম ওদের কাছ থেকে কিছুক্ষণের মধ্যে বাড়িতেও চলে আসলাম!
বাড়িতে এসে কলিং বেল চাপতেই আম্মু এসে দরজা খুললো।
আম্মু– ইতি আজ এত দেরি হলো কেনো?
আমি– আম্মু ওই বন্ধুদের সাথে ফুচকা খেতে গিয়েছিলাম তাই..
আম্মু– আচ্ছা যাও ফ্রেশ হয়ে আসো! লাঞ্চ করে নাও!
আমি– ওকে আম্মু.!
তারপর রুমে আসলাম ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমে চলে গেলাম!
ফ্রেশ হলাম নিচে গেলাম খেলাম তারপর একটা কফির মগ হাতে নিয়ে বারান্দায় বসে বসে ভাবতে লাগলাম কি বলবো স্যারকে স্যার কিভাবে নিবে রাজি হবে কি না!
এত ভাবলাম তারপরও মাথায় কিচ্ছু আসছে না!
কিছুক্ষণ পর স্যারও চলে আসবে!
আমিও পড়তে বসে পড়লাম আজ খুব সুন্দর করে পড়লাম কোনো বার্তি কথা বলি নাই যা বলেছে তাই করেছি শুধু…
স্যার অনেক অবাক এত উন্নতি বাহ…
স্যার পড়ানো শেষ হলে চলে যায়!
এই ভাবেই দিন চলে যায়..!
আজ বৃহস্পতিবার আর কালকেই শুক্রবার আজ কলেজ গেলেই সবাই প্রশ্ন করবে উফফ তারপরেও যেতে তো হবেই!
বিছানা থেকে উঠে সোজা ওয়াশরুমে চলে গেলো ইতি.!
ফ্রেশ হয়ে রেডি হলো নাস্তা করে বেরিয়ে পড়লো!
কলেজ এর মাঠে!
মুন্নী আর রুবেল পাশাপাশি বসে আছে–
মিম আর নাঈমও দুজনে দু’জনের কাছাকাছি বসে আছে!
আব্রু ফোনে শ্রাবনের সাথে প্রেম করছে!
বলতে গেলে 3 Love Birds—-
মিম– ওই তো আমাদের গ্রুপের ভদ্র মেয়ে আসছে!
রুবেল মুন্নী নাঈম আব্রু মিমের কথা শুনে কলেজ গেইটের দিকে তাকালো!
ভদ্র মেয়ের মুড অফ নিশ্চয়ই স্যারকে বলতে পারে নাই আর নয়তো স্যার রাজি হয় না-ই! (সবগুলা এই বলে হাসতাছে)
আমি ওদের মাঠে দেখে ওদের সামনে গেলো—
ইতি– কিরে তোরা সবাই এত হাসছিস কেনো?
মুন্নী– কিরে তোর মুড অফ কেনো?
আব্রু– স্যার নিশ্চয়ই যাবে না বলছে হাহাহা
মিম– স্যারের এত বড় সাহস তোকে না করে (রাগে মুখ লাল হয়ে গেছে)
রুবেল– তুই কি আদোও বলছিস স্যারকে নাকি বলিস নাই..
নাঈম– আমি সিউর ওও স্যারকে বলে নাই তাই তো চুপ করে আছে!
ইতি– আসলে আমি বলতে পারি নাই…
আব্রু মুন্নী মিম– তুই আর বলতে পারিস নাই আমরা কি ঠিক শুনছি শয়তানের নানী ও সামান্য একটা কথা বলতে পারে নাই।
রুবেল নাঈম– তুই কি স্যারকে ভয় পাস?
ইতি– না কিন্তু উনি যদি আমাকে ভুল বুঝে আর যেতে রাজি না হয় অথবা আমাকে যদি আর পরাতে না আসে তখন তাই ভেবেই বলতে পারছি না।
মুন্নী– ইতি!
আব্রু– ভালোবাসিস আর বলতে পারিস না…
মিম– তোর হইছে টা কি তুই তো এমন ছিলি না!
নাঈম– তোমরা একটু চুপ থাকবে!
রুবেল– ইতি সত্যি সত্যি স্যারকে ভালোবেসে ফেলেছে তাই ইতি চায় না ওর কোনো কথায় স্যার রাগ করে চলে যাক!
আর আমার কাছে একটা প্ল্যান আছে যাতে লাঠিও না ভাঙে আর সাপও না মরে ( কি না কি বললাম কেডা জানে)
সব গুলা রুবেল কে বললো কি প্ল্যান রুবেল সবাইকে বললো আর সাথে ইতিকে খুব ভালো করে বুঝিয়ে বললো!
সবার রুবেলের প্ল্যানটা ভালো লেগেছে!
ইতি– প্ল্যানটা কাজ করবে তো?
সবগুলা এক সাথে চিল্লানী দিয়া– Definitely করবে
রুবেল– প্ল্যান কাজ করবে তুই শুধু সুন্দর করে গুছিয়ে স্যারকে বলতে পারলেই হবে.
ইতি– পারবো! হইছে সবাই এখন ক্লাসে চল
সবাই ক্লাসে চলে যায়!
এইভাবে ক্লাস সব গুলো শেষ হলো সবাই কলেজের গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে যার যার গাড়ির জন্য
আব্রু– ইতি স্যার রাজি হলে কল দিস আমাদের ওকে?
ইতি– ওকে আর রাজি না হলে দিবো না! তখন তোরা বুঝে নিস আমি আসবো না!
সবগুলা- দেখিস স্যার রাজি হবে!
আচ্ছা আল্লাহ হাফেজ কাল পার্কে দেখা হবে।
আব্রু– পার্কে যাওয়ার আগে আমরা সবাই একসাথে লাঞ্চ করবো ওকে। বাই মাথায় রাখিস সবাই
ইতি– ওকে!
নাঈম মিম– ওকে..
রুবেল মুন্নী–আচ্ছা ওকে!
ইতি চলে গেলো ওর গাড়িতে করে!
আব্রু চলে গেলো ওর স্কুটি দিয়ে!
নাঈম মিমকে ড্রপ করে দিবে ওর বাড়ির সামনে বলে গাড়িতে উঠে চলে গেলো!
রুবেল– বাবু কি ভাবছো তোমাকে ড্রপ করে দিবো নাকি আমি!
মুন্নী– না আমি চলে যেতে পারবো কিছুক্ষণের মধ্যে আমার গাড়ি চলে আসবে!
রুবেল– ওই আমি থাকতে তুমি এখানে দাঁড়িয়ে থাকবে আর আমি চলে যাবো? ভাবলে কি করে
চলো উঠো গাড়িতে…
মুন্নী– চুপচাপ গাড়িতে উঠে পরে,, জানে এখানে কিছু বললে হাত ধরে টেনে গাড়িতে উঠাবে কলেজের গেইটের সামনে টানাটানি করলে মান সম্মান সব যাবে তাই উঠে চুপ করে বসে আছে!
আর মনে মনে ধ্যাত গেলো আমার ফুচকা খাওয়ার প্ল্যান বেসতে.
রুবেল– জানি বেবি তুমি কি ভাবছো! (মনে মনে)
কিছুক্ষণ পর–
রুবেল– ড্রাইবার গাড়ি থামাও..!
ড্রাইবার গাড়ি থামালো–
মুন্নী– এখানে গাড়ি থামাতে বললে কেনো আমার বাড়ি তো এখনো অনেক দূরে তাহলে (রুবেলের মুখের দিকে তাকিয়ে)
রুবেল– এই ভাবে তাকিয়ে থেকো না বেবি আমার লজ্জা লাগে! (বলে দুই হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলে)
মুন্নী- অসভ্য ফাজিল শয়তান কুত্তা উগান্ডা ইসস লজ্জায় মরি মরি অবস্থা! (মনে মনে গালি দিলো)
রুবেল– হইছে হইছে আর গালি দিতে হবে না! এখন নামো গাড়ি থেকে
মুন্নী– ওকে নামছি তো!
দুজনে গাড়ি থেকে নামে।
রুবেল– ড্রাইবার তুমি গাড়ি পার্ক করো আমাদের আসতে একটু দেরি হবে!
ড্রাইবার– ওকে স্যার!
রুবেল– চলো আমার সাথে!
মুন্নী– কোথায়? আমি যাবো না কোথাওআপনার সাথে?
রুবেল মুন্নীর হাত ধরে ছিলো তাই হাত একটু চেপে ধরে বললো!
রুবেল– কেনো যাবে না তুমি কি আমাকে ভয় পাও নাকি…
মুন্নী– ন.. না মানে! (কাঁপা গলায় বললো)
রুবেল– না মানে কি তুমি কি ভাবছো আমি তোমার সাথে উল্টা পাল্টা কিছু করবো ছিহ তুমি আমাকে ওইরকম ভাবতে পারলে?
( রুবেল আজ পর্যন্ত মুন্নীকে টাচ করে নাই শুধু হাতে ধরা ছাড়া)
কিভাবে ভাললে তুমি তোমাকে আমি ভালোবাসি নোংরামি করার কোনো ইচ্ছা রুচি আমার নাই মুন্নী এই চিনলে তুমি আমাকে!
(রুবেলের চোখ লাল হয়ে আছে রাগে)
আশেপাশের মানুষ রুবেলের চিৎকার শুনে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে!
মুন্নী দাঁড়িয়ে থেকে কান্না করে দেয় সত্যিই তো কিভাবে ভাবলো ও এইসব!
রুবেল মুন্নীর হাত ছেড়ে দিয়ে বললো।
রুবেল– চলো তোমাকে বাড়িতে ড্রপ করে দিয়ে আসি!
মুন্নী কাঁদছে রুবেল দেখেনি!
রুবেল– কি হলো চলো! (চিৎকার দিলো রুবেল অন্য দিকে ঘুরে ছিলো)
মুন্নী ধমক শুনে রুবেল হাত ধরলো–
মুন্নী– তুমি যেখানে বলবে আমি যাবো চলো!
রুবেল– হাত ছাড়ো বলছি আমার কোথাও যেতে হবে না!
মুন্নী– না আমি ছাড়বো না! (বলে কান্না করেই যাচ্ছে)
রুবেল পিছনে ঘুরলো হাত ছাড়ানোর জন্য—
রুবেল- মুন্নী হাত ছাড়ো বলছি.
(রুবেল আর কিছু বলার আগেই দেখতে পেলো ওর মুন্নী কাঁদছে)
রুবেল মুন্নীর চোখের পানি গুলো মুছে দিলো আর বলতে লাগলো–
কাঁদছো কেনো বেবি আইএম সরি প্লিজ কান্না থামাও তুমি কাঁদলে যে আমার কষ্ট হয় প্লিজ কান্না করো না আমি আর কখনো তোমাকে কষ্ট দেবো না প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও আর কখনো বকবো না তোমাকে প্লিজ! (রুবেল পাগলের মতো করছে)
মুন্নী — এক শর্তেই কান্না থামাবো.
রুবেল– বলো কি করতে হবে আমাকে আমি করবো কান ধরে উঠবো বসবো বলো যা বলবে তাই করবো!
তবুও তুমি কান্না থামাও!
মুন্নীর এখনের কথা শুনে অনেক হাসি পাচ্ছে তবুও হাসি আঁটকিয়ে বললো!
মুন্নী– তুমি যেখানে নিয়ে যেতে চেয়েছিলে সেখানে নিয়ে যেতে হবে!
রুবেল– মাথা নিচু করে আছে! কিছুক্ষণ পর
আচ্ছা চলো দু’জন হাঁটছে!
মুন্নীর অনেক ইচ্ছে হচ্ছে রুবেল ওর হাতটা ধরুক কিন্তু রুবেল মাথা নিচে করে শুধু হেঁটেই যাচ্ছে!
কিছুক্ষণ পর দুজনে পৌঁছে গেলো!
মুন্নী তো অবাক!
সামনে একটা ঝিল! ঝিলটার আশপাশে কত সুন্দর ফুলের বাগান এবং ওর সামনেই রাখা আছে একটা টেবিল আর দু টো চেয়ার টেবিলের উপর রাখা আছে ফুচকা ৪/৫ প্লেট সাজিয়ে রাখছে কিছু লোক পাশেই ফুচকাওয়ালা আর তারচেয়ে বড় চমক হচ্ছে টেবিলে প্লেটের মাঝখানে রাখা মুন্নীর পছন্দের বেলী ফুল!
মুন্নী অবাক দুই নয়নে দেখে যাচ্ছে কি সুন্দর
মুন্নী– এই সব রুবেল আমার জন্য করেছে আর আমি
রুবেল– তোমার ভালো লেগেছে? তুমি আজ ভার্সিটি শেষে ফুচকা খেতে যেতে তাই আমিই এই প্ল্যানটা করেছি তোমার ভালো লেগেছে?
মুন্নী পেছনে ঘুরেই রুবেল কে জড়িয়ে ধরলো আর ও অনেক খুশি এত খুশি বলে বোঝানো যাবে না!
রুবেল মুন্নীকে খুশি দেখে বললো–
তোমার যে ভালোলেগেছে আমি ধন্য তোমাকে খুশি করতে পেরেছি (এই বলে মুন্নীর কপালের চুল গুলো সরিয়ে ওর কপালে আলতো করে একটা চুমি দিলো)
মুন্নী লজ্জা পেয়ে রুবেলের বুকে মুখ লুকালো! রুবেলও বুঝতে পেরে মুন্নীকে জড়িয়ে ধরলো!
তারপর দু’জনে একসাথে ফুচকা খেলো মুন্নী রুবেলকে আর রুবেল মুন্নীকে খাইয়ে দিল!
রুবেল — চলো তোমাকে এখন বাড়িতে ড্রপ করে দিয়ে আসি!
মুন্নী– এক মিনিট! (বলে টেবিলের উপর রাখা বেলি ফুলগুলো নিজের হাতে নিলো আর ফুলগুলো নাকের কাছে নিয়ে ঘ্রান শুখতে লাগলো তারপর ফুলের উপর কিস করলো)
রুবেল– বাহহহ কখনো তো আমাকে এভাবে কিস করলে না আর ফুলকে.
মুন্নী– বেলি ফুল যে আমার খুব প্রিয়!
রুবেল– মুন্নীর দুই গালে ধরে বললো ওরে আমার বাবু তোমার পছন্দ বলেই রেখেছি!
তারপর পিছনের হাত সামনে এনে একটা গিফট এর বক্স মুন্নীর হাতে দিলো!
মুন্নী– এটা কি?
রুবেল– সারপ্রাইজ! বাড়িতে গিয়ে খুলবে আর এখন চলো!
মুন্নী আবারও রুবেলকে জড়িয়ে ধরলো।
মুন্নী– সরি তখন তোমাকে ওইভাবে বলার জন্য
রুবেল– ইট’স ওকে বাবু তুমি না বললে আর কে বলবে এখন চলো গাড়িতে উঠো মুন্নী গাড়িতে উঠে পড়ে তারপর রুবেল মুন্নী ওর বাড়ির সামনে ড্রপ করে চলে যায়!

.
.
.
চলবে….?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here