সূর্যোদয় #পর্ব_১৫ #কারিমা_দিলশাদ

#সূর্যোদয়
#পর্ব_১৫
#কারিমা_দিলশাদ

রাতে খাবার টেবিলে বসে গুটগুট করে গল্প করছে স্মৃতি এবং জয়। গল্প করছে না একে অন্যের সাথে ঝ’গড়া করছে ওরাই জানে। স্মৃতির থেকে জয়ের বয়সের দূরত্ব অনেক তারপরও একজন আরেকজনের পিছনে সারাক্ষণ লেগে থাকবে। ইলোরা ইয়াসমিন এসে বসার সাথে সাথে সবাই খাবার নিয়ে খাওয়া শুরু করে।

খাওয়ার এক পর্যায়ে জয় গলা খাঁকারি দিয়ে তার মায়ের উদ্দেশ্য বলে,

“মা তোমার সাথে আমার একটা জরুরি কথা ছিল।”

“হুমম বলে ফেল।”

“আসলে মা স্মৃতি তো নাচ শিখতে চাইছিল। বিষয়টা নিয়ে আমি ভেবে দেখলাম ও চাইলে শিখুক। বাচ্চা মানুষ শখ করেছে। অপূর্ণ রাখার দরকার নেই। এখন পূরণ করবে না তো কখন করবে বলো। তাই ভাবলাম একটা নাচের ক্লাসে ভর্তি করে দেই। আমার চেনাজানা এক পরিচিতও আছে। কোনো সমস্যা হবে না। তুমি কি বলো?”

ইলোরা ইয়াসমিন কিছু না বলে চুপ করে রইলেন কিছুক্ষণ। আর এদিকে স্মৃতির জান যায় যায় অবস্থা। একটু পর ইলোরা ইয়াসমিন বললেন,

“ এখন নাচ শিখলে তাহলে পড়াশোনার কি হবে?”

“ আমি ওকে প্রমিজ করিয়ে নিয়েছি। ও পড়াশোনায় কোনো ফাঁকিবাজি করতে পারবে না, রেজাল্ট খারাপ করতে পারবে না৷ আর ও সেটা মেনেও নিয়েছে। ”

এবার উত্তেজনা কন্ট্রোল না করতে পেরে স্মৃতি ফট করে জবাব দেয়,

“ হ্যা আম্মু আমি একদম রেজাল্ট খারাপ করবো না, ফাঁকিবাজি করবো না।”

এবার ইলোরা ইয়াসমিন খাওয়া রেখে মেয়ের দিকে তাকালেন। এরপর ছেলের দিকে তাকালেন। দুজনেই উত্তরের আশায় তার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। তিনি মাথা নিচ করে আবার খেতে খেতে বললেন,

“ করো… তবে রেজাল্ট খারাপ হলে কিন্তু আমি এসব একদম এলাউ করবো না বলে দিলাম দুজনকেই।”

এবার স্মৃতি খুশি খুশি উত্তর দেয়,

“ঠিকাছে আম্মু।”

ইলোরা ইয়াসমিনের জবাবে স্মৃতি আর জয় দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে হাসিমুখে চোখে চোখে কথা বলে নেয়। ইলোরা ইয়াসমিন ছেলে-মেয়ের দিকে একনজর তাকিয়ে আবার খাওয়ার দিকে নজর দেয়। সবকিছু জেনেও তিনি এমন প্রিটেন্ড করলেন যেনো তিনি কিছুই জানে না। করুক না বাচ্চাগুলো একটু নিজের মনমতো। মাঝেমধ্যে বাচ্চাদের কথাও শুনতে হয়, তাদের মনমর্জি শখ আহ্লাদ প্রশ্রয় দিতে হয়।

———————-

নতুন ঘরের কিছু কেনাকাটা করার জন্য মার্কেটে গিয়েছিল ঐশী সেখান থেকে আশার বাসায় গিয়ে আশাকে দেখে আসে সে। এখন আবার নতুন ডান্স ক্লাসে যাচ্ছে। যা যা কিনেছে তা দিয়ে ঘরটা গুছাতে হবে। চারদিন পরে আবার সবগুলো ব্যাচ শুরু করবে। এই কয়দিন রুম শিফট করার জন্য বন্ধ রেখেছে। আশা সুস্থ থাকলে ওকে নিয়ে কেনাকাটাগুলো ভালো করে করা যেত। সাথে একজন থাকলে তার দামাদামি করতে একটু সুবিধা হতো। তবে ব্যাপার না। একা একা করার মাঝেও একটা শান্তি আছে, মজা আছে।

নতুন রুমে গিয়েই আগে একটু পানি খেল ঐশী। এরপর রুমটাকে ভালো করে দেখে নিল। প্ল্যান করে নিচ্ছে কোথায় কি কি করবে। রুমটা বেশ অনেক বড়। সেই হিসেবে দামটা রিজেনেবল আছে।

কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে কাজ শুরু করে দেয়। কাজ করতে তার বেশ ভালো লাগছে। তার খুব শখ নিজের একটা ছোট্ট বাসার। সব মেয়েদেরই হয়তো এমন একটা শখ থাকে। যেখানটাকে নিজের পছন্দমতো সাজাবে, গুছাবে। ঐশীরও তেমন শখ আছে। তবে মেয়েদের নিজস্ব কোনো জায়গা হয় না। বিয়ের আগে বাপের বাড়ি বিয়ের পর শশুরবাড়ি। ঐশীর এই শখ পূরণ হবে কি না যেহেতু তার জানা নেই, তো এখন যখন নিজের একটা কিছু হচ্ছে সেটাকেই সে নিজের সবটা দিয়ে সাজাতে চায়।

এরমধ্যেই তার ফোনে কল আসে। ভাবলো হয়তো বাসা থেকে ফোন এসেছে। কিন্তু ব্যাগ থেকে ফোন বের করে দেখে একটা আননোন নাম্বার। আগে আননোন নাম্বার থেকে কল এলে কল ধরতো না। তবে এখন ধরতে হয়। তাই এতকিছু না ভেবে সে কলটা রিসিভ করে। বলে,

“ হ্যালো আসসালামু আলাইকুম। কে বলছেন?”

“ ওয়ালাইকুম আসসালাম। ঐশী আমি ডা. জয় বলছিলাম। আপনি কি ব্যস্ত?”

নামশুনে ঐশী ফোনটা কান থেকে সরিয়ে চোখের সামনে এনে ধরে। জয়?! সে আবার ফোনটা কানের কাছে ধরে এবং বলে,

“ ডাক্তার সাহেব? আপনি হটাৎ আমাকে ফোন দিলেন যে? কেমন আছেন? ”

“ জ্বি। আমি ভালো আছি। ফোন দেওয়ার কারণটা বলছি। তার আগে বলুন আপনি ফ্রী আছেন?”

“ হ্যা হ্যা আমি ফ্রী আছি।”

“ আসলে আমার বোন স্মৃতি তো আপনার ডান্স ক্লাসে জয়েন করতে চাচ্ছে। আমি সেটা নিয়েই কথা বলতে চাই। ও কি এখন জয়েন করতে পারবে?”

“ হ্যা তা পারবে। সামনের মাস থেকেই আমি নতুন আরেকটা ব্যাচ ওপেন করছি। ওখানে চাইলে সে জয়েন করতে পারবে। বাট আপনারা সিওর তো? এই সময়……. ”

“ হ্যা আমরা সিওর। আসলে কেউ একজন বলেছিল লাইফে ব্যালেন্স করে চলতে হয়। ও নাহয় একটু ব্যালেন্স করে চললো।” — বলেই হালকা হাসলো জয়। জয়ের কথায় ঐশীও একটু হাসলো। খানিকটা লজ্জাও পেল।এরপর জয় বললো,

“ তাহলে কবে আসবো?”

“ আমমম। এই মাসের তো আর কেবল চারদিন বাকি। আর আপাতত ক্লাস বন্ধ রেখেছি। আপনারা এক তারিখেই আসুন তাহলে?”

“ আচ্ছা ঠিক আছে আপনি টাইম আর লোকেশনটা এই নাম্বারেই পাঠিয়ে দিয়েন প্লিজ।”

“ সিওর, সিওর। আমি এক্ষুনি পাঠিয়ে দিচ্ছি। বাকি কথা নাহয় সামনাসামনিই হবে। এখন তাহলে রাখি।”

“ জ্বি অবশ্যই। দেখা হচ্ছে ইনশাআল্লাহ। ”

“ ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ হাফেজ। ”

“ আল্লাহ হাফেজ।”

ফোনটা রেখে ঐশী আবার কাজে লেগে পড়লো। আর ওই দিকে ফোনটা রেখে জয় অযথাই মুচকি মুচকি হাসতে লাগলো। কেন হাসছে সে নিজেও জানে না।

এরমধ্যেই জয়ের কেবিনে ফয়সাল আসে। এসে জয়কে একা একা এমন মুচকি হাসতে দেখে তো সে বেশ অবাক। বাইরে রোগীর লাইন লেগে আছে আর এই ব্যাটা রোগী না দেখে একা একা এমন হাসছে কেন তার মাথায় ঢুকছে না। সে নিরব পায়ে গিয়ে চেয়ারে বসে। এতেও জয়ের কোনো বিকার নেই সে তার মতো ফোনের দিকে চেয়ে হাসছে। তা দেখে ফয়সাল ফোনের দিকে উকি দেয়। কিন্তু ফোনের স্ক্রিন অফ। এবার সে বলে,

“ কিরে ব্যাটা কামের সময় বাইরে রোগীর লাইন রাইখা, তুই ফোনের দিক এমতে চাইয়া চাইয়া ভেটকাইতাছস কেন? কি হইছে?”

ফয়সালের আচমকা কথায় জয় হকচকিয়ে যায়।

“ তুই কখন আসলি?”

“ যহন তুমি ভেটকাইতাছিলা। কি ব্যাপার খুইলা ক তো দেখি। সমস্যা কি? ফোনের দিকে তব্দা খাইয়া চাইয়া চাইয়া শয়তানি হাসি দিতাছিলি কেন?”

“ আরে তেমন কিছু না এমনেই। তা তুই এখন এখানে কেন?”

“ আসছিলাম তো কামে। বাট এহন তুই কেন হাসতাছিলি না কইলে আমি কিছু কমুও না যামুও না। বল হাসতাছিলি কেন? তোর হাসিতে আমি কিছু একটার আভাস পাইতাছি। বলো বৎস বলো… কেস কি?”

“ আরে কিসের কেস… বললাম তো তেমন কিছু না। ওই স্মৃতি ডান্স ক্লাসে জয়েন করতে চাইছে তাই সেটা মেনেজ করলাম আরকি। চেনাপরিচিত ছিল একজন।”

জয়ের কথায় ফয়সাল কিছুক্ষণ বাঁকা চোখে তার দিকে তাকিয়ে রইল। তারপর কি ভেবে যেন বললো,

“ ডান্স ক্লাস! ইন্টারে উঠে?”

“ হ্যা শখ করলো। এখন তো তাও বয়স আছে। ও যখন আমাদের বয়সে আসবে তখন তো আর শিখতে পারবে না। তাই ভাবলাম এখন বয়স আছে, শখ আছে শিখুক।
বাদ দে সেসব। তুই এখন এখনে কেন? এমনেই এলি নাকি কাজে এলি?”

“ ওহহ আজকে একটা মিটিং আছে। চলে যাস না আবার। থাকিস কিন্তু। আর আজকে ডিনারটা সবাই একসাথে করব। ওদের সবাইকে আসতে বলে দিয়েছি।”

“ ওওহ ভালো করেছিস। আমিও ভাবছিলাম কয়েকদিন ধরে। কতদিন সবাই একসাথে বসা হয় না, কথা হয় না বলতো।”

“ তা আর বলতে। একই জায়গায় কাজ করছি তারপরও একজনের সাথে আরেকজনের দেখা সাক্ষাৎ হয় না।”

আরও কিছুক্ষণ কথা বলে ফয়সাল চলে যায়। আর জয়ও রোগী দেখতে শুরু করে।

————————

জয়, ফয়সাল, সিয়াম, নিতু, রুপা সবাই আজ একটা রেস্টুরেন্টে একসাথে দেখা করার উদ্দেশ্য মিলিত হয়েছে। পাচঁজনই ডাক্তার এবং আপাতত একই হাসপাতালে কর্মরত।

যদিও নিতু, রুপা এতদিন অন্য জায়গায় ছিল। তবে রিসেন্টলি তারা এখানে ট্রান্সফার হয়েছে। জয়, ফয়সাল, সিয়াম এরা তিনজন শুরু থেকেই একসাথে। সেটাও অবশ্য জয়ের জন্য। জয়ের তখনকার মানসিক অবস্থার জন্য সিয়াম এবং ফয়সাল অনেক কাঠখড় পু’ড়িয়ে এখানে সেট হয়েছে।

আজকে এতদিন পর সবাই একসাথে হয়েছে। সবাই হাসাহাসি নিয়ে ব্যস্ত। জীবনের একেকটা স্তরের একেকধরনের ফ্রেন্ডশিপ হয়। প্রতিটা ফ্রেন্ডশিপের সৌন্দর্য একেকরকম।

কথায় কথায় জয়ের বিয়ে নিয়ে কথা উঠে। মেয়ে দেখার কথা উঠলে একপর্যায়ে ঐশীকে নিয়েও কথা উঠে। তখন সবাই তো সেটা নিয়েই পড়ে। সিয়াম আর ফয়সালই তাদের প্রথম দেখাটাকে আরও রং মশলা লাগিয়ে নিতু এবং রুপার সামনে প্রেজেন্ট করে। কথার একপর্যায়ে সিয়াম বলে,

“ যে যাই বল ভাই। আমার কিন্তু মেয়েটার কথাবার্তা শুনেই দারুণ লেগেছে। এত কম বয়সে এত রিয়েলিস্টিক চিন্তাভাবনার মানুষ খুব কম। তার উপর আবার সেদিন শুনলাম মেয়েটা নাকি নিজের চেষ্টায় একটা ডান্স ক্লাসও শুরু করে দিয়েছে। মেয়েটার মাঝে দম আছে বলতে হবে।”

সিয়ামের কথায় ফয়সাল খাওয়া থামিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে বলে,

“ কি বললি? ডান্স ক্লাস? কিসের ডান্স ক্লাস?”

“ আরে ওই মেয়েটার নাকি একটা ডান্স ক্লাস আছে। জয়ই তো বললো। স্মৃতির কলেজে নাকি দেখা হয়েছিল। এসে বললো তো আমায়।”

ফয়সাল সবশুনে জয়ের দিক এমন ভাবে তাকালো। যার মানে হলো তলে তলে এসব করে তুমি আবার ব্যাটাগিরি করো….. আর ব্যাচারা জয়। এতোক্ষণ এই ভয়টাই পাচ্ছিল। কলেজে ঐশীর সাথে দেখা হওয়ার পর বিষয়টা জয় সিয়ামের সাথে শেয়ার করেছিল। আর আজকে তার হাসা নিয়ে ফয়সাল এমনভাবে তাকে পাকড়াও করেছিল যে তখন যদি ঐশীর কথা বলে দিত তাহলে নিশ্চিত তাকে নিয়ে মজা উড়াতো। এই ভেবে আর বলা হয় নি। তবে এখন কেসটা আরও গুবলেট হয়ে গেল।

জয় ফয়সালের দিকে তাকিয়ে একটু মেকি হাসি দিল। ফয়সাল জয়ের থেকে চোখ ফিরিয়ে সিয়ামের দিকে তাকিয়ে বলে,

“ তারপর?? ”

“ তারপর আর কি, এতটুকুই।”

“ তুই জানস ব্যাটা তলে তলে কতদূর ট্যাম্পু চালাইতাছে? ”

“ মানে?” — সিয়াম আবার প্রশ্ন করলে জয় বিষয়টা কাটিয়ে দিতে বলে,

“ আরে কি তখন থেকে তোরা এক জিনিস নিয়ে পড়ে আছিস বলতো। অন্য আলাপ করনা, কতদিন পর দেখা হলো বলতো।”

“ এই তুই থাম তো। কিছু একটা তো আছে। এই ফয়সাল তুই বল তো কি হইছে? এমন চোখমুখ করেছিস কেন?” — এবার নিতু বলে।

“ আমি আজকে ওর কেবিনে গিয়া দেখি ব্যাটা বাইরে রোগী রাইখা ফোনের দিকে তাকিয়ে মিটমিটাইতাছে। আমি গিয়া তার সামনে বসলাম। তারপরও তার কোনো হেলদোল নাই। পরে আমি জিগাইলে বলে স্মৃতিরে নাচ শিখানোর জন্য নাকি ডান্স ক্লাস মেনেজ করতাছে। চেনা পরিচিত। অথচ একবারো কইলো না।”

এবার চারটা প্রাণী একসাথে জয়ের দিকে তাকিয়ে রইলো। কি মুশকিল। এমন হবে জানলে জয় আগেই সব এদের বলে দিত। জয় বলে,

“ কি আজব! তোরা এমনভাব করছিস যেন আমি কোনো অ’ন্যায় করে ফেলছি। আরে বিষয়টা তোরা যেমন ভাবছিস তেমন না।”

এবার সিয়াম বলল,

“ আমি তো ওইদিনও তোরে জিজ্ঞেস করলাম ওর সাথে তোর কথাবার্তা হয় কি না। তুই তো আমারে বললি যে তোদের কোনো কথা হয় না। এখন পানি এতদূর গড়ায় গেছে! ”

“ উফফ তোরা বিষয়টা শুধু শুধু এতদূর টানতেছিস। এমন কিছুই না। ওকে লিসেন……….”

এরপর জয় সবকিছু তাদেকে খুলে বলে। সবশুনে রুপা বলে,

“ সত্যি বলতে কি। মেয়েটার কোয়ালিফিকেশন, ব্যাকগ্রাউন্ড সবশুনে আমার মনে হয়েছিল আন্টি পাগল হয়ে গেল নাকি। জয়ের সাথে এরকম একটা মেয়ে। বাট এখন তোদের কাছে সবশুনে মেয়েটাকে আমার ভালোই লাগছে। দেখতে ইচ্ছে করছে। জয় রে একদিন দেখাস তো মেয়েটাকে।” — জয় কেবল অসহায়ভাবে তাকিয়ে আছে। এরপর নিতু বলে,

“ শোন যা করবি সাবধানে। এসব মেয়েরা প্রথম দিকেই কেবল মুখে মধুর মধুর কথা বলে। পরে এসমস্ত মেয়েরাই সংসারে সূচ হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বের হয়। বি কেয়ারফুল এরা……….” — নিতুকে কথা শেষ না করতে দিয়েই সিয়াম বলে,

“ এই বিবাহিত মহিলা চুপ করতো। সবসময় সব জায়গায় খালি কুট’নীতি করিস না। আরে ভালোও তো হতে পারে। তোদের খালি নেগেটিভ চিন্তা। দেখ না আগে কি হয়।”

এবার জয় অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। সে বিরক্তি নিয়ে বলে,

“ ভাই থাম তোরা। কি একটা জিনিসরে তোরা কোথায় থেকে কোথায় নিয়ে গেলি। আমি ক্যাজুয়ালি স্মৃতির জন্য ফোন দিয়েছিলাম। এটাই ফাস্ট। আর তোরা সেটাকে সংসার অবধি টেনে নিয়ে গেছিস।”

এতকিছুর মাঝেও ফয়সাল জয়ের দিকে তাকিয়ে আছে। এবার জয় কাঁ’টাচামচ ফয়সালের দিকে তাক করে বলে,

“ তুই এখনও যদি এভাবে তাকিয়ে থাকিস না তাহলে এটা তোর চোখে ঢুকিয়ে দিব বলে দিলাম।”

“ তুই যাই বলিস। তোর চোখেমুখে আমি মুগ্ধতা দেখছি ওই সময়। একটা প্রেম প্রেম ভাব দেখছি। আমার চোখরে তুমি ধোঁ’কা দিতে পারবা না। ”

জয় এবার আফসোস মিশ্রিত একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। তার বুঝা হয়ে গেছে এগুলোকে কিছু বলেও সে বুঝাতে পারবে না। তবে ফয়সালের কথাটা তাকে ভাবাচ্ছে। ‘মুগ্ধতা’ ‘ প্রেম প্রেম ভাব’?? সত্যি কি তাই?? আবারও কি সম্ভব? ওহুম মোটেই না। একজনকেই সে সব দিয়ে দিয়েছে। আর কিছুই তো নেই। কিচ্ছু না। এসব ভেবে ভিতরে ভিতরে আরও একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে জয়।

#চলবে…………….
( কপি করা নিষেধ। তবে শেয়ার করতে পারেন।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here