#সুখ_পাখি #Ayrah_Rahman #part :-22

#সুখ_পাখি
#Ayrah_Rahman
#part :-22

— বইন তাড়াতাড়ি উঠ না বাবা,,আজ মেডিক্যাল এর প্রথম দিন,,আজই লেট করবি? সেই আধা ঘণ্টা ধরে তোরে ডাকছি,, উঠছিস ও না,, দরজাও খুলছিস না,,এখন কিন্তু আমি তোরে রাইখাই যামু গা পরে ভাল্লাগ বো…..পরে যাইছ কার লগে যাইবি…

সেই আধা ঘণ্টা আগে থেকে দিশা আরুর দরজার সামনে ননস্টপ ডাকাডাকি করছে কিন্তু কার ডাক কে শুনে আরু নিজের মতো কানের উপর বালিস চাপা দিয়ে ঘুমাচ্ছে,,,

এত ডাকাডাকি তে আরুর মুখ বিরক্তির রেস ফুটে উঠলো,, চোখ জোড়া বন্ধ করে ই বলে উঠলো..

আরুঃ- দিশুর বাচ্চা টিসু তুই যাবি এখান তে,,কইছি উঠতাছি তার পরেও ষাঁড়ের মতো ম্যা ম্যা করছিস!!

দিশাঃ- Correction please…. ষাঁড় ম্যা ম্যা করে না,,ম্যা ম্যা করে ছাগল,,আর তুই তো গরুর মতো পইরা পইরা ঘুমাইতাছোস,,
বাজে কইটা সেই খেয়াল কি আপনার আছে? নবাব সিরাজুদ্দৌলার নাতনি?

আরুঃ- কয়টা আর বাজবো,,হয় ৭ টা,,

বলেই আরু বালিশের নিচে থেকে মোবাইল অন করে দেখে ৮ টা ৩৪ মিনিট,, তাদের ক্লাস শুরু ৯ টাই,,

— হায় আল্লাহ,, এত বেলা হয়ে গেলো,,আজ তো সিউর ক্লাস মিস হবে,,মনে মনে কথাটা আওড়ে আরু লাফ দিয়ে বিছানা থেকে উঠে গেলো,,তাড়াতাড়ি ফ্রেস হয়ে কোন মতে রেডি হয়ে নিচে নেমে আসে,, নিচে নামতে নামতে দেখে দিশা সোফায় বসে পাও রুটি তে কামড় দিতে দিতে তারই দিকে কড়া দৃষ্টি নিক্ষেপ করছে,,

আরু বুঝতে পারলো পরিস্থিতি তার অনুকূলে নাই,,তাই সে ভেবলা মার্কা হাসি দিয়ে দিশার পাশে বসে,,

দিশাঃ- আবার বসছিস কেন? উঠ এখন যেতে হবে,,

আরু হাতে একটা পাও রুটি নিয়ে চিবুতে চিবুতে বলল…

আরুঃ- হুুম চল,,আমি কি তোরে ধইরা রাখছি নাকি আজব?

দিশা আরুর দিকে একবার তাকিয়ে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বের হয়ে গেলো,,আরুও সবার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে দিশার পিছনে পিছনে দৌড়…

অবশেষে তাড়া মেডিক্যাল এ এসে পৌছালো,,,

দিশা এবং আরু একই মেডিক্যাল এ পড়লেও তাদের সেক্টর আলাদা,,আরু ফিজিওলজি ও বায়োকেমিস্ট্রি নিয়ে চান্স পাইছে আর দিশা হচ্ছে ডেন্টাল বিভাগে,,

আরু আর দিশা তাদের নির্ধারিত ভবনের দিকে চলে গেলো,,,

আরু দেখতে পেলো,,এক জায়গায় কিছু ছেলে দাড়িয়ে কথা বলছে,,

আরু সেখানে গিয়ে জিজ্ঞাসা করে,,

— ভাইয়া,, প্লিজ কেউ কি আমাকে বলতে পারবেন,,বায়োকেমিস্ট্রির ক্লাস কোন দিকে হয়?

সেখান থেকে একটা ছেলে বলে উঠলো…

— কেন সোনা মনি,,বায়োকেমিস্ট্রির ক্লাস দিয়ে তুমি কি করবা? এটা খেলার জায়গা নয়,,যাও বাচ্চা মানুষ,, তুমি তোমার স্কুলে যাও,,

— excuse me ভাইয়া,,আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে,, আমি কোন স্কুলের স্টুডেন্ট নই,,আমি এই মেডিক্যাল এর স্টুডেন্ট,, ফিজিওলজি বায়োকেমিস্ট্রি ডিপার্টমেন্ট এর,,

— ওও বাবা,,সোনা মনি তো বড় হয়ে গেছে,,তা সোনা মনি তোমার বয়স কত?১০ নাকি ১১
বলেই ছেলেটা হাসা শুরু করলো,,,

আরু ছেলেটা র কথার মধ্যে হাসির কোন ওয়েই পেলো না,,তাহলে ছেলেটা কেন হাসলো?

ছেলেটার পাশে দাড়ানো আরেকটা ছেলে বলে উঠলো,,

— আরিফ তুই কিন্তু আবার জুনিয়র দের সাথে এমন করছিস,, এটাও কিন্তু one kind of ragging,, V.P জানতে পারলে কিন্তু ওই দিনের মতো হ্যাব্বি কেলানি খাবি,,

— Come on.. জয়,, ওই ভিপির বাচ্চা কে এই আরিফ ভয় পাই না,, শালারে যদি একবার বাগে পেতাম না,,,

—-কি করতি? যদি একবার বাগে পেতি তাহলে?

চেনা কন্ঠ শুনতে পেয়ে আরু পিছনে তাকালো,,সাথে ওই ছেলে গুলোও,,,

শুভ্র হেটে হেটে ঠিক সেই ছেলেটার সামনে এসে দাড়ায়,,

— তো কি বলছিলি জানি? একবার বাগে পেলে কি করতি আমাকে?

শুভ্রের কথার মধ্যে দিয়েই আরু বলে উঠলো,,

— আরে না,, আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে,, ও তো আপনাকে বলে নাই,,ও তো এই ক্যাম্পাসের ভিপি কে বলছে!!

শুভ্র আরুর দিকে একবার তাকিয়ে পুনরায় আবার ছেলেটার দিকে তাকালো,,,

— বল,,চুপ করে আছিস কেন,,কি করবি আমাকে( অনেকটা চিৎকার করে)

শুভ্রের চিৎকারে আরু বেচারির তো প্রান যায় যায়,,আরু পিছন দিক থেকে মানে মানে কেটে পড়তে নিলেই,,শুভ্র খপ করে আরুর হাত চেপে ধরে,, এবার বেচারি তো ভয়ে কেঁদেই দিলো বলে,,

ছেলেগুলো ভয়ে একদম সিটিয়ে গেলো,,,

— তোদের তো আমি পরে দেখে নিচ্ছি .. বলেই শুভ্র আরুর হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো,,,

আরু চারপাশে তাকিয়ে দেখে সবাই তাদের দিকে বিশেষ করে তার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে,, তাদের তাকানো দেখে মনে হচ্ছে তারা পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য দেখছে,,,

শুভ্র আরুকে নিয়ে একটা ক্লাসের সামনে যায়,,,

আরু যখন আসে ততক্ষণে ক্লাস শুরু হয়ে গেছে,,

শুভ্র পারমিশন নিয়ে ভেতরে ঢুকে,,, শুভ্রের পিছনে পিছনে আরু ও ঢুকে,,
শুভ্র.. স্যারের সাথে হ্যান্ড সেক করে

স্যারঃ– আরে শুভ্র যে,,কি ব্যাপার বাবা,,তুমি তো কখনো কারণ ছাড়া জুনিয়র দের ক্লাসে আসো না,,

শুভ্রঃ– কারন তো অবশ্যয় আছে স্যার.. এই হল আপনার নতুন ছাত্রী,,

স্যারঃ– কি নাম তোমার?

আরুঃ- আসসালামু আলাইকুম স্যার,,আমি আইরাহ রাহমান,,

স্যারঃ– গুড,, আইরাহ টেক ইউর সিট,,

আরুঃ- ওকে স্যার,,

বলেই আরু ২ য় সাড়ির একটা মেয়ের পাশে বসে পড়ে,,

আরুকে বসতে দেখে,,
শুভ্র স্যারের সাথে কথা বলার জন্য বাইরে যায়,,তার ঠিক ৫ মিনিটের মাথায় স্যার ক্লাসে প্রবেশ করে,,

আরু পড়া বাদ দিয়ে স্যার কে পর্যবেক্ষন করতে ব্যস্ত,,

স্যারের বয়স মুটামুটি ৪০ কাছাকাছি,, মাথার চুলগুলো ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে,,আর বছর ৩ এর মধ্যে স্যার টাকলা হয়ে যাবে সে বিষয়ে গ্যারান্টি আছে,,

এসব ভাবতে ভাবতে আরু খেয়াল করলো স্যার পড়ানোর ফাকো ফাকে তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে,,,

ব্যাপার টা কি? রহস্য জনক তো!!

____________________________

অপর দিকে,,

শুভ্র মেডিক্যাল থেকে বের হয়ে একটা ক্যাফে তে ঢুকে পরে,,,

দুরে বসে থাকা এক মাঝ বয়সি লোককে দেখে শুভ্রের ঠোটের কোনে হাসির রেখা দেখা গেলো…

— কেমন আছেন হাসান আঙ্কেল?

— আলহামদুলিল্লাহ বাবা,,তোমরা কেমন আছো? ভাই ভাবি ওনারা কেমন আছে?

— জি আঙ্কেল ভালো,,তো ওই খানকার খবর কি? আপনি যে বললেন জরুরি কথা,,কোন সমস্যা হয় নি তো আবার?

শুভ্রের কথা শুনে মিস্টার হাসান দীর্ঘ শ্বাস ফেললেন…

— সমস্যা হয়নি,,তবে হবার আশঙ্কা করা যাচ্ছে!

— যেমন?

— এতদিন যেই গ্যাং গুলো ধরেছো বা ধরার চেষ্টা করছো,,তারাও কিন্তু আরেক্টা বড় গ্যাং এর আদেশে ই কাজ করছে।

— মানে? তাদের ও লিড করা হচ্ছে?

— হ্যা বাবা,,যতদুর জানতে পেরেছি তারা নারী পা*চার মা*দক ব্যবসা সহ আরো একটা কাজে যুক্ত!

— কি সেটা?

— জঙ্গিবাদ,,

— You mean terrorism? Oh no…

— এবং খুব শিগ্রয় তারা বোমা হামলা সাথে আরো কিছু করতে পারে,,,তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে,,

শুভ্র কে অন্য মনস্ক দেখে হাসান বলে উঠলো,,,

— I Trust you my boy…আমি জানি তুমি যা করবে ভেবে চিন্তে করবে,,আজ আসি,,,

বলেই হাসান ক্যাফে থেকে বের হয়ে চলে গেলো…

আর শুভ্র সেখানেই বসে রইলো….

চলবে…..

[ 📌রিয়েক্ট প্লিজ,, আমি বুঝতে পারছি না গল্প টা সবার কেমন লাগছে,,আপনাদের যদি ভালো লাগে তবে গল্প টা কন্টিনিউ করবো আর নয় এখানেই শেষ করে দিবো]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here