সুখের_অ-সুখ,পর্বঃ৮,৯

#সুখের_অ-সুখ,পর্বঃ৮,৯
#মম_সাহা
পর্বঃ আট

~”প্রতিদিন তো মরছে কত মানুষ
আমিও নাহয় গেলাম সেই মিছিলেই,,
জীবন সমীকরণে কূল না পেলে
হারাতে হয় এমন অচিরেই।”

সুখ অবাক হয়ে বেশ শৌখিন অক্ষর গুলোর দিকে তাকিয়ে রইল, কী সুন্দর লিখা!নিজের মৃত্যুর কথা এত সুন্দর ভাবে কেউ ছন্দ বসিয়ে লিখে যেতে পারে এ চিঠি না দেখলে জানতোই না সুখ।চিঠিটা মোট দুই পৃষ্ঠা জুড়ে কিন্তু কোনোরূপ নাম না বলেই বেশ গুছিয়ে নিজের ভিতরের ভয়ঙ্কর আর্তনাদের কথা বলেছে কলম কালির মাধ্যমে পুঁথি করে।সুখ হাত বুলিয়ে নিচে তাকাতেই দেখলো আরও দুই লাইনে গুছিয়ে লেখা

~”বহু নারীতে আসক্ত হওয়া,কিছু পুরুষের রোগ,,
এই রোগে মরে কন্যার সুখ, মেয়েরা হয় ভোগ।
পুরুষ মানুষ শশ্মানে গেলো,প্রাণহীন তার দেহ,,
নারীর প্রতি রয়ে যায় লোভ,দেখতে পায় না কেহ,
অসৎ পুরুষের বেঁচে থাকার চেয়ে,মৃত্যু’ই শ্রেয়।”

সুখ বিষ্মিত হয়,তার শরীরের প্রতিটি লোমকূপ দাঁড়িয়ে যায় জেনো।পুরুষ মানুষের প্রতি এতটা ক্ষোভ, এতটা ধীক্কার কে জানিয়েছে? এত শৌখিন হাতের লেখায় কার এত আর্তনাদ লুকানো!

এখন প্রায় মধ্যরাত বললেও পারা যায়।হুটহাট দূর থেকে কুকুরের ডাক ভেসে আসছে।সুখ যখন চিঠির ভাষাতে গভীর মগ্ন তখন হঠাৎ তার ঘাড়ে কারো উষ্ণ স্পর্শে ছিটকে উঠে সে।পিছে ঘুরে অবাক কন্ঠে বলে
-‘লীলা তুই? তুই এখনও ঘুমাস নি? এত রাত অব্দি জেগে আছিস কেনো? ভয়ই তো পাইয়ে দিয়েছিলি।’

-‘তুমিও তো এত রাতে জেগে আছো আপাই,কী দেখছিলে যে আমি আসাতে ভয় পেয়ে গেলে? গোপন কিছু কী?’

সুখ মাথা নাড়িয়ে হাতে থাকা চিঠিটা লীলার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল
-‘না রে লীলা,অনেকদিন হলো বাবার লাইব্রেরীটা তে আসি না।আজ বাবাকে বড্ড মনে পড়ছিলো বিধায় এখানে এসেছিলাম কিন্তু এসে দেখি লাইব্রেরীর অবস্থা ভীষণ করুণ তাই পরিষ্কার করা শুরু করে দেই।তখনই কোনায় শোকেসের ভিতর থেকে একটা ধূলোমাখা বইয়ে এই চিঠিটা পাই।ঠিক চিঠি বললে ভুল হবে।কেবল দুই তিন লাইনে জীবনের সব অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ বলা চলে।বেশ পুরোনো চিঠি।তাই দেখছিলাম।’

লীলা আপাই এর হাত থেকে চিঠিটা নিলো।বেশ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে প্রতিটা অক্ষর পড়লো।একটা লাইনে গিয়ে তার চোখ আটকে গেলো। “অসৎ পুরুষের বেঁচে থাকার চেয়ে মৃত্যুই শ্রেয়”। লীলা অবাক কন্ঠে বলল
-‘এটা কার লেখা আপাই? আমাদের বাড়ির সবার হাতের লেখা তো পরিচিত কিন্তু এটা তো বেশ ভিন্ন লেখা।’

সুখ ঠোঁট উল্টালো।যার অর্থ সে জানেনা কার হাতের লেখা এটা।লীলাবতী কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে তারপর কিছু একটা ভেবে হুশিয়ারী কন্ঠে বলে
-‘আপাই যেহেতু এই চিঠিটা এত কোণায় ছিলো তাও পুরোনো একটা বইয়ের ভিতরে তারমানে কেউ এটা গোপনই রাখতে চেয়েছে।তাই আমার মনে হয় কাউকে এটার ব্যাপারে জানতে না দেওয়াই উচিৎ। আমরা বরং লুকিয়ে লুকিয়ে এ চিঠির ব্যাক্তিটাকে খোঁজার চেষ্টা করি।আমাদের বাড়িতে কার হাতের লেখা এমন সেটা খুঁজে বের করলেই তো বাকিটা জানা যাবে।তুমি কী বলো?’

লীলার যুক্তিটা অর্থবহ মনে হলো সুখের।ও মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো।

তারপর চিঠিটা আলগোছে রেখে দুই বোন বের হয়ে গেলো লাইব্রেরী থেকে। তারপর লীলাকে ঘুম পাড়িয়ে সুখ নিজের রুমে চলে যায়। দাদীজানকে না ধরে ঘুমালে তার যে ঘুম হয় না,দাদীটা যে তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।আজ রাতটা জেগেই কাটাতে হবে।তার উপর চিঠির ভাবনা।

______
সকালে ঘুম থেকে উঠেই ঘরের যাবতীয় কাজ শেষ করলো সুখ।তারপর চা তৈরী করে সবার রুমে রুমে দিয়ে আসলো।গতকাল সন্ধ্যা বেলা লীলাবতীর মামা এসেছিলো কয়েকদিন থাকবে বলে।যথারীতি সুখ তার জন্যও চা তৈরী করেছে।নিজেকে বেশ সুন্দর করে ঢেকে চা নিয়ে হাজির হয় লীলাবতীর মামা মনির হোশেনের রুমে।

মনির হোশেন সুখকে দেখে বেশ হাসি দিয়ে মিষ্টি স্বরে বলল
-‘আরে সুখ যে? তা কেমন আছিস? বেশ সুন্দর হয়েছিস দেখি। এ রূপের রহস্য কী পেটের নাজায়েজ বাচ্চা টা নাকি? ইশ্ রে কত সুন্দর মেয়েটার কী ক্ষতি টাই না করলো অমানুষটা।’

মামার এহেন ধরনের কথায় সুখ একটু মূর্ছা যায়।কোনোমতে চা টা টেবিলের উপর রেখে চলে আসতে নিলে মনির হোশেন সুখের হাতটা চেপে ধরলো।সুখ আৎকে উঠে হাতটা ছাড়ানোর চেষ্টা করে চোখ মুখ কুঁচকে বলল
-‘মামা হাত ছাড়েন এ কী অসভ্যতা করছেন। ছাড়েন হাতটা।’

মানুষ রূপী পশুটা জেনো জেগে উঠেছে মনির হোশেনের।সে আরও জোড়ে হাতটা শক্ত করে ধরে বলল
-‘হাতটা কাউকে ধরতে দে নাহয় তো ভেসে যাবি নর্দমায়। মসৃনের থেকে আমরাও কিছু কম জানিনা।’

মনির হোশেনকে আর কিছু বলতে না দিয়ে ভীষণ জোড়ে চড় লাগায় তার গালে।বয়সের পার্থক্য হয়তো দশ বছরেরও বেশি কিন্তু জানোয়ারদের বয়স মানার প্রয়োজন নেই।সব কিছুর উর্ধ্বে সে একজন জানোয়ার।

ধস্তাধস্তির শব্দে রীতিমতো সবাই সেই ঘরে হাজির হয়।সুখের শরীর ভীষণ কাঁপছে।সানজিদা বেগম নিজের ভাইকে গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে এগিয়ে যায় ভাইয়ের দিকে।ভাইয়ের গালে হাত দিয়ে গদোগদো কন্ঠে বলে
-‘কী হয়েছে ভাই? কী হয়েছে তোর?’

মনির হোশেনও চাপা রাগ থেকে ন্যাকা স্বরে নিজের বোনকে অভিযোগের স্বরে বলল
-‘দেখ না দিদি তোর এই সৎ মেয়েকে দেখে আমি আফসোসের স্বরে বললাম মসৃন নামের ছেলেটা কাজটা ঠিক করে নি। তখন সে আমায় বললো আমি জেনো তার সঙ্গী হই।মসৃন যাওয়ার পর তার দিন খুবই খারাপ যাচ্ছে তাই আমাকে সে চাচ্ছে।আমি প্রতিবাদ করে না করাতে আমায় চড় বসিয়ে দিলো।’

সুখ ছিঃ করে উঠলো।সানজিদা বেগম তেড়ে গিয়ে ঠাস করে ভীষণ ভারী একটা চড় বসিয়ে দিলে সুখের গালে।মহিলার হাতে থাকা আংটির পাথর ঠোঁটের কোণে লেগে ঠোঁটাও ফেটে যায়।সুখের জেনো মনে হচ্ছে গালটা ফেটে গেছে।আগুন লাগলেও বোধহয় এতটা জ্বলতো না যতটা এখন জ্বলে যাচ্ছে।

সুখ অবাক হয় তার সৎমায়েরা আচরণে।অন্তত এই বিষয়ে এমন আচরণ আশা করেনি সে।বিষ্ময়মাখা কন্ঠে বলে
-‘আম্মা আপনি আমায় ভুল বুঝলেন? একটা মেয়ে হয়ে অন্তত আরেকটা মেয়ের পাশে দাঁড়াতেন। সৎমা বা বোন সম্পর্ক নাহয় পরে হিসেব করতেন।’

মহিলা আরেকটা চড় উঠানোর আগে লীলাবতী তার মায়ের হাত ধরে ফেলে।সানজিদা বেগম এতে দ্বিগুণ রেগে গিয়ে বলে
-‘তুই আমার হাত ছাড় লীলু।এই মেয়েকে আমি মেরে ফেলবো।আমার ভাইকে কুপ্রস্তাব দেয় আবার চড় দেয়।ওর শরীরের এত জ্বালা হলে পতিতালয়ে চলে যাক।’

-‘এই সেইম কথা টা তুমি তোমার ভাইকেও বলো আম্মা।উনার শরীরে এত জ্বালা থাকলে পতিতালয় চলে যাক।ভদ্র মেয়েদের শরীরে কলঙ্ক লেপে জানোয়ার না হয়ে সেখানে গেলেই পারে।’

নিজের মেয়ের এমন কথায় চমকে যায় সানজিদা বেগম। অবাক কন্ঠে বলে
-‘ও তোর মামা হয় লীলু।কী বলছিস তুই?’

লীলা আর কোনো কথা না বলে সুখকে টেনে নিয়ে সেখান থেকে চলে যায়। সানজিদা বেগম কেবল হা হয়ে তাকিয়ে রয় নিজের মেয়ের এহেন আচরণে।এটা কী তার সেই লীলাবতী যে সুখকে কটু কথা বলতে পেরে সুখী হতো? এতটা বদল কীভাবে সম্ভব?

___________
আজ অনু আর হিমা দুজনের একজনও আসে নি ভার্সিটিতে। হিমা কার বিয়েতে জেনো গিয়েছে আর অনুর মা অসুস্থ। সেই সুবাদে একাই ভার্সিটিতে আসতে হয়েছে সুখের।ক্লাশ শেষ করে টিউশন পড়িয়ে বাড়ির পধে রওনা হলো।আজ সকালে খাবারও জুটে নি তার ভাগ্যে। কোনোরকম লীলাবতীর জন্য ভার্সিটিতে আসতে পেরেছে।দাদী বাড়ি নেই বলেই এসব হয়েছে নাহয় এত কিছু ঘটতো না।দাদী ফুপিদের বাড়ি গিয়েছে।আজ চলে আসার কথা এসেছে কিনা জানা নেই সুখের।

সারাটা দিন ওড়না দিয়ে মুখ ঢেকে ছিলো সে।ডান গালটা ভীষণ বিশ্রী ভাবে ফুলে গিয়েছে, এতটা ফুলে গিয়েছে যে ডান চোখটা অব্দি লাল হয়ে ডেবে গেছে।ফর্সা মানুষ হওয়ায় চড়ের প্রভাব দারুণ ভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।

‘আরে অপরিচিতা না? এই ভর সন্ধ্যা বেলাতে এ রাস্তায়?’

পরিচিত কন্ঠে পরিচিত নামটা শুনে থেমে গেলো সুখ।ঘাঁড় ঘুড়িয়ে পিছে তাকাতেই দেখলো কাঙ্খিত মানুটা দাঁড়িয়ে আছে।সকালের ঘটনার পর থেকে এ অব্দি সুখ একটু হাসে নি কিন্তু মেঘকে দেখে না চাইতেও ভদ্রতার হাসি হেসে বলল
-‘আরে মেঘ সাহেব যে? আজ তো অপরিচিতা বিপদে পড়ে নি তবুও মেঘ সাহেবের দেখা?’

মেঘ সুখের কথা শুনে হেসে উঠলো।দু’কদম সামনে এগিয়ে এসে বলল
-‘আসলেই বুঝি আজ অপরিচিতা বিপদে পড়ে নি? তাহলে দেখা হয়ে কী ভুল হয়ে গেলো?’

সুখ ব্যতিব্যস্ত স্বরে বলল
-‘আরে না আমি মোটেও সেটা বুঝাতে চাই নি।’

মেঘ হা হা করে হেসে উঠলো।তখনই ইউসুফ হাজির হয়ে ব্যস্ত কন্ঠে বলল
-‘স্যার ডিল ফাইনাল চলুন।’

সুখ এবার ইউসুফের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করলো। হাসিমুখে বলল
-‘কেমন আছেন ইউসুফ ভাই?’

নিজের নাম শুনে ইউসুফ তড়িৎগতিতে তাকালো।সামনে যে সুখ দাড়িয়ে ছিলো সে খেয়ালই করে নি।এতে ভীষণ লজ্জিত হয়ে লজ্জা মিশ্রিত কন্ঠে বলল
-‘আরে মেম আপনাকে আমি খেয়ালই করি নি, সরি।আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।আপনি কেমন আছেন?’

-‘এই তো ভাইয়া ভালো আছি।আপনারা এখানে কাজে এসেছিলেন বুঝি?’

-‘জ্বি মেম।অফিসের ডিলের জন্য এসেছিলাম একটা মিটিং এ।’

সুখের আর ইউসুফের কথাবার্তায় নিরব শ্রোতা হয়ে দাঁড়িয়ে রইল মেঘ।শ্রোতা বললেও ভুল হবে কারণ সে শুনছে কম দেখছে বেশি। হঠাৎ কিছু একটা খেয়াল হতেই সে ভ্রু কুঁচকে বলল
-‘অপরিচিতা, আপনার মুখ এমন ফুলে আছে কেনো? আর উড়না দিয়ে ডান সাইট ঢেকে রেখেছেন কেনো?’

মেঘের আকষ্মিক এমন প্রশ্নে ভড়কে যায় সুখ।আমতাআমতা করে বলে
-‘ও তেমন কিছু না।এমনেই।’

ইউসুফও এবার খেয়াল করলো।আৎকে উঠে বলল
-‘মেম আপনি উড়না টা সড়ান তো।আপনার ডান চোখটাও তো লাল হয়ে আছে।স্যার দেখুন।’

মেঘ এবার ভীষণ চোখ রাঙাতেই সুখ ঘোমটাটা সড়ালো।ইউসুফ আর মেঘ রীতিমতো অবাক হয়ে গেলো।মেঘ আৎকে উঠে বলল
-‘এভাবে কে মেরেছে আপনাকে? পুরো গাল লাল হয়ে গেছে।ঠোঁটের কিনারায় কালো হয়ে গেছে,চোখটাও তো লাল হয়ে গেছে।কে মেরেছে?’

সুখের জেনো লজ্জায় মাটির সাথে মিশে যাওয়ার উপক্রম।কোনো রকম একটা রিক্সা থামিয়ে উঠে গেলো।আর নিচু স্বরে বলল
-‘পাপে কামড়িয়েছে। সেড়ে যাবে।ভালো থাকেন।’

সুখের এমন কান্ড তাজ্জব বনে গেলো ইউসুফ আর মেঘ।ইউসুফ মেঘের দিকে তাকিয়ে অদ্ভুত স্বরে বলল
-‘স্যার মেম কার কাছে থাকে? এমন অদ্ভুত জীবনের গতিধারা?’

মেঘ চলন্ত রিক্সার পানে তাকিয়ে রইল কেবল।সে কী বলবে বুঝে পারছে না।এমন রাগ তার মাথায় চড়েছে মনে হচ্ছে ধ্বংস করে দিবে সব।তার অপরিচিতার শরীরে এমন ভয়ানক আঘাত করার সাহস কীভাবে হলো কারো!

______

বাসায় এসে সুখ শুনে দাদী ফুপির বাসা থেকে চলে এসেছে।রেদোয়ান ভাই নিয়ে এসেছে।সে দ্রতই হাত মুখ ধুঁতে চলে গেলো।আহ্,দাদী ছাড়া দিন খুবই খারাপ যায়।হাত মুখ ধুঁয়ে বের হতেই সুখের রুমের পাশ থেকে বীভৎস চিৎকার ভেসে আসলো।সুখ দ্রতই পাশের রুমে যেতেই দেখল মনির হোশেন বিছানায় গড়াগড়ি খাচ্ছে আর চিৎকার করছে।সুখ আরেকটু এগিয়ে যেতেই দেখলো মনির হোসেন ডান হাতটা কেমন ঝলসে গেছে।কেমন রক্তাক্ত হয়ে আছে।

সানজিদা বেগম ভাইয়ের পাশে বসে ব্যতিব্যস্ত স্বরে বলছে
-‘কী হলো ভাই? কী হলো তোর? এমন কী করে হলো?’

মনির হোশেন কেবল আর্তনাদ করে যাচ্ছে।ঘরের এক কোণায় দাড়িয়ে কেউ একজন বলছে “এমন পুরুষের বেঁচে থাকা অপেক্ষায় মৃত্যু শ্রেয়।”

#চলবে
#সুখের_অ-সুখ
#মম_সাহা

পর্বঃ নয়

মনির মামাকে হসপিটাল নেওয়া হয়েছে সেই ভর সন্ধ্যা বেলাতেই।তারপর থেকে বাড়ি নিবিড়,নির্জন।কারো মুখে কোনো কথা নেই।রেদোয়ানও তার পরপরই চলে গেছে।এরপরেই ফুপির বাড়ি থেকে ফোন এলো,দুই সপ্তাহ পর হওয়া বিয়েটা এই সপ্তাহেরই শুক্রবারে হবে।রেদোয়ান আর অপেক্ষা করবে না।খুব দ্রুতই সে বিয়েটা সম্পূর্ণ করতে চাইছে।তারপর হতে এ অব্দি আর কোনোরূপ কথা হয় নি।যে যার রুমে নিরবতা পালন করছে।

সুখ জানালার কিনারে দাঁড়িয়ে আছে।হসপিটালে যাওয়ার আগে আম্মা বেশ চিৎকার চেঁচামেচি করেছে।সে নাকি তার মায়ের মতনই চরিত্রহীনা। তার মা পালিয়ে যাওয়ার সময় কেনো তার গলাটা টিপে মেরে ফেলে রেখে গেলো না সেটা নিয়েও আক্ষেপ করেছে সৎমা।

সুখ বাহিরের দূর আকাশে তাকিয়ে আছে।মনের মাঝে অভিমানের পাহাড়। মা নামক শব্দটা যেখানে সবার কাছে কোমলতা সেখানে তার কাছে জীবনের ভীষণ কালো অধ্যায় এ শব্দটা।পাঁচ মাসের ছোট্ট সুখকে রেখে,সুন্দর সংসার রেখে এক রাতে নাকি সুখের মা পালিয়ে যায়। তারপর সময় পেরিয়ে যায়, ঘরে নতুন মা আসে সাথে বদলে যায় ছোট্ট সুখের জীবন গল্প।

‘কীগো মাইয়া কী ভাবো?’

নিজের দাদীর কন্ঠে ফিরে তাকায় সুখ।চোখের কোণে জমা বিন্দু অশ্রুকণা গুলো আঙ্গুল দিয়ে মুছে মাথা নাড়িয়ে বলল
-‘নাহ্ দাদীজান কিছু না।’
-‘তাহলে কান্দো কেন?’

দাদীর প্রশ্নে হকচকিয়ে যায় সুখ।কিন্তু শেষমেশ নিজেকে সংযত রাখতে না পেরে বলেই ফেলে
-‘দাদীজান,জন্ম আমার এমন বৃথা না হলেও পারতো।’

দাদী বুঝতে পারে সুখের মনোভাব। একটু এগিয়ে এসে সুখের মাথায় হাত বুলিয়ে বলল
-‘তোমার বাবা মায়ের সংসারটা বড্ড সুখের আছিলো।তুমি হওয়ার পর সুখ তো জেনো ধরে না।তারপর হঠাৎ একদিন শুনি তেমার বাবা মায়ের মাঝে কথা কাটাকাটি হচ্ছে।তারপর ঝগড়া,হৈচৈ, চিৎকার চেঁচামেচি। একদিন বাড়ির সবাই বিয়ে খেতে গেলাম তোমার এক চাচার,তুমি আর তোমার মা বাড়ি ছিলে, তুমি ছোট বইলা তোমার মা যায় নি।বিয়া খাইয়া আইসা দেহি ছোট্ট তুমি খাটের উপর হাত পা নাড়িয়ে চিৎকার করে কান্না করতাছো কিন্তু পুরো বাড়ির কোথাও তোমার মা নাই।কেবল আলমারি থেইকা গহনা উধাও।

তারপর কী,পাড়া প্রতিবেশী সবার মুখে মুখে রটলো আমার বাড়ি সবচেয়ে ঠান্ডা ভদ্র বউ কুহেলিকা সোনার সংসার ভাইঙ্গা পলাইছে নতুন মানুষের লগে।’

সুখ দু’কদম পিছিয়ে যায়। সবসময় শুনতো তার মা চরিত্রহীন কিন্তু আসলে কতটুকু চরিত্রহীন সে বুঝতে পারে নি। মায়েরাও বুঝি এমন হয়? একবারও বুক কাঁপে নাই পাঁচমাসের সুখরে ছেড়ে যেতে?

দাদী সুখের মাথা বুলিয়ে দিলো।সুখ দাদীর হাত ধরে যখনই অভিযোগের তীড় ছুঁড়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো তখনই সুখের অন্য দিকে নজর যায়। ভ্রু কুঁচকে ফেলে আপনা-আপনি। দাদীর কুঁচকে যাওয়া চামড়ার বৃদ্ধা হাতটা কতক্ষণ নেড়েচেড়ে দেখে অবাক কন্ঠে বলল
-‘হাতটা পুড়লে কীভাবে দাদীজান! কতখানি পুঁড়ে ফেললে! দেখি এখানে আসো, খাটে বসো তো।’

দাদী বৃদ্ধা শরীরটা দুলিয়ে খাটে গিয়ে বসলো।সুখ দ্রুতই ড্রয়ার থেকে একটা মলমের কৌটা বের করে এনে দাদীর পাশে বসে পুঁড়ে যাওয়া জায়গায় লাগাতে লাগাতে বলল
-‘সদ্য পুঁড়ে যাওয়া চিহ্ন এটা।তুমি রান্নাঘরে গিয়েছিলে? আমাকে বলতে কোনো প্রয়োজন হলে তাহলেই তো হতো।আগুনের কাছে গেলে কেনো?’

দাদী রহস্যময় এক হাসি দিয়ে বলল
-‘আগুনে পুড়েনি গো সুখোবতী।’

সুখ অবাক হয়।অবাক কন্ঠে বলে
-‘তাহলে কীভাবে পুড়েছে দাদীজান?’

-‘মামার হাতে এসিড ঢালতে গিয়ে হয়তো পুড়িয়েছে। অন্ধকারে এতবড় কাজ করতে কেন গিয়েছিলে দাদীজান?’

হঠাৎ এমন কথায় দাদীসহ সুখ অবাক হয়ে যায়। সুখ বিষ্ময়ে বসা থেকে দাঁড়িয়ে যায়। দরজার সামনে দাঁড়ানো লীলার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে অবাক কন্ঠে বলে
-‘কীহ্? দাদীজান মামার হাতে এসিড ঢেলেছিলো? কী বলছিস তুই এসব?’

লীলাবতী সুখদের কাছে এগিয়ে আসে।আরাম করে সুখের বিছানায় বসে তারপর দাদীর দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসি দিয়ে বলল
-‘দাদীজান আমি ঠিক বলেছি কি না বলো?’

দাদীজানও একটু ভড়কে যায়। কারণ এ বাড়িতে লীলাবতী আর তার মা এক রকমের বদমাশ। এটা নিয়ে যে বড় একটা কেলেঙ্কারি হবে সেটা বেশ ভালোই বুঝা যাচ্ছে। তবুও বৃদ্ধমহিলা ভয় পায় না।বরং বেশ তীক্ষ্ণ কন্ঠে প্রশ্ন ছুঁড়ে মারে
-‘তুই কীভাবে জানলি এসব আমি করেছি? প্রমাণ কী?’

লীলাবতী দাদীর প্রশ্নে হা হা হেসে বলল
-‘পাড়ার রাসেল ভাইকে দিয়েই তো এই ধ্বংসকারী তরল পদার্থ টা আনিয়েছিলে? উনিই তোমার খুচরো টাকা গুলো ফিরিয়ে দিয়ে গেলো আর বলে গেলো এটা যেনো কেউ না জানে।’

এই বলেই লীলা নিজের হাতে থাকা খুচরা টাকা গুলো দাদীর দিকে এগিয়ে দেয়।দাদী বিনাবাক্য ব্যয়ে টাকা গুলো নিয়ে নিজের আঁচলের এক কোণায় বেঁধে ফেললেন।এই বয়স্ক মহিলাটির চোখে এখন আগের ন্যায় ভয় বা বিষ্ময় ভাবটা নেই।সে এতটুকু বুজে গেছে আর যায় হোক লীলাবতী এই কথা গুলো ফাঁশ করবে না।তাই আরাম করে খাটে বসে পানের বাটা থেকে পান সাজিয়ে ধীরে মুখে পুরে নিলেন।সুখ কেবল দাঁড়িয়ে সবটা চুপচাপ লক্ষ্য করলো।

দাদী আঙ্গুলের মাথায় থাকা চুনটা মুখে নিয়ে সুখকে নিজের সাথে বসালেন।লীলাবতীও বিছানার এক কোনায় বসে রইল।দাদী এবার বেশ আয়েশে বললেন
-‘সুখোবতী আর লীলাবতী তোমাগো রে আইজ গল্প শুনামু।এক শয়তানের গল্প।শুনবা তোমরা? ছোটবেলায় যেমন শুনতা?’

লীলা আর সুখ দুজন দুজনের মুখের পানে তাকিয়ে তারপর মাথা নাড়ালো। দাদী উঠে গিয়ে লাইট টা বন্ধ করে দক্ষিণের দিকে জানালা টা খুলে দিলো।বাহিরে ভরা পূর্নিমা। সেই আলোয় আধার ঘরটারও আধাঁরটা হালকা হয়ে গেলো। দাদী এবার আধাঁরে বসে থাকা দুই যুবতীর দিকে তাকিয়ে বলা শুরু করল
-‘আমি যেই শয়তানের গল্পটা বলমু,সেটা হলো তোমার দাদা।হেই হলো শয়তান। হেরে শয়তান কইলে শয়তানও নারাজ হইবো। আমি যহন বিয়া কইরা আসি এ বাড়িতে তখন বয়স মাত্র পনেরো হইবো।জামাই বুঝার আগেই বিয়া হইয়া গেলো।শ্বশুরবাড়িতে আসার পর পনেরো বছরের দৌড়ঝাঁপ করা মাইয়াডা শান্ত হইয়া গেলাম।আমার ছোট্ট মন তহন বুইজা গেছিলো শ্বশুর বাড়ি আর যমের বাড়ি সমান।বিয়ার এক বছরের মাথায় বিধবা শ্বাশুড়ি মারা যায়। ভাসুর,জা আর স্বামী নিয়ে হইলো আমার সংসার। কিন্তু দিন যত যায় তত বুঝতে শিখি স্বামী কি জিনিস,ভালোবাসা কী জিনিস।আর বুঝতে শিখি বেডা মানুষের চরিত্র কী জিনিস।যখন প্রথম সুখের বাবা পেটে আইলো তখন মাঝ রাইতে উইঠা দেখতাম স্বামী আমার ঘরে নাই।প্রায়ই এমন দেখতাম।একদিন দেখলাম আমার যে মেঝ জায়ের জামাই শহরে থাকতো হেই জায়ের ঘর থেইকা আমার স্বামী বাইর হইতাছে।তহনই যা বুঝার বুইজা লাইছি।পাশাপাশি গেরাম আছিলো আমাগো।আমার শ্বশুরবাড়ি থেইকা জামাইয়ের বাড়ি পনেরো মিনিট রাস্তা আছিলো। সবাই চিনতো তোমার দাদারে। সবার মুখে মুখে তার প্রশংসা হুইনাই আমারে তার কাছে বিয়া দিছিলো।তারপর এ নিয়া তোমার দাদার লগে আমার বেশ ঝগড়া ঝামেলা হয়,পাঁচ মাসের পোয়াতি বইলা ছাড় পাই নাই,মাইর খাইছিলাম তার হাতে।চঞ্চল আমি স্বামীর এমন আচারণে চুপ হইয়া গেলাম ভয়ে। তারপর দেখলাম সে নিষিদ্ধ মাইয় মানুষের কাছেও যাইতো।আমি খালি সব সহ্য করলাম।তিন ছেলের পর যখন মাইয়া লিলুয়া হইলো তখনও দেখলাম তার নোংরামি বন্ধ হয় নাই বরং আরও বাইড়া গেছিলো।ভাবছিলাম ছেলে মেয়ের মুখ দেখে পাষাণ নরম হইবো কিন্তু তা হইলো না।একদিন সকালবেলা উইঠা শুনি কামের মাইয়ার লগেই জোড়াজুড়ি করার চেষ্টা করছে।কামের মাইয়া আমার কাছে গড়াগড়ি কইরা কানছে।তারপর আমি তারে কিছু টাকা দিয়া এই বাড়ি থেইকা বিদায় করলাম।হেইদিন আমার কি হইলো জানিনা, কামের মাইয়ার আহাজারিতে আমার নরম মন অনেক শক্ত হইয়া গেলো।হেইদিন অনেক ঝগড়া ঝামেলা কইরা সিদ্ধান্ত নিলাম আর না,এমন চরিত্রহীন বেডার সাথে থাকার চেয়ে সারাজীবন ছেলে মেয়ে লইয়া একলা থাকুম তাও ভালো। এরপর ছেলেমেয়ের হাত ধইরা বাপের বাড়িত চইলা আইলাম চিরকালের জন্য। এর পরের দিনই হেই মানুষ মারা যায়।’

সুখ আর লীলা এতক্ষণ নিশ্চুপ শ্রোতা হয়ে ছিলো।দাদীর জীবনে দাদার যে এহেন অবদানের কথা জেনো ভাবতে পারে নাই।

নিরবতা ভেঙে মনোয়ারা বেগমই বলে উঠলো
-‘তোমাগোরে আরেকটা সত্যি কথা কই? এ জীবনে যেই সত্যি কেউ জানেনাই।’

সুখ আর লীলা আধাঁরের মাঝে দাদীর প্রতিচ্ছবির দিকে তাকিয়ে বলল
-‘হ্যাঁ দাদীজান বলো।’

দাদী জেনো দক্ষিণা জানালার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো।তারপর কেমন অদ্ভুত আর তেজী কন্ঠে বলল
-‘আমি বুঝতে পারছিলাম এমন পুরুষ মানুষ বাইচ্চা থাইকা কোনো লাভ নাই বরং মাইয়া মাইনষের ক্ষতি।তাই তার বাড়ি ছাইড়া বাপের বাড়ি চইলা আইছিলাম ঠিকই।কিন্তু পরের দিন মধ্যরাইতে যহন পাড়া প্রতিবেশী সবাই ঘুমে বিভোর আমি গ্রামের জঙ্গলের পথ ধইরা তার বাড়িতে ঢুকেছিলাম সবার অগোচরে। তারপর ঘুমন্ত মানুষটার হাত পা বাইন্ধা ঘুমের মাঝেই বালিশ চাঁপা দিয়া মাইরা ফেলছি।দুষ্ট গরুর চেয়ে শূণ্য গোয়াল ভালা।এমন বেডা মানুষের বাঁইচা থাকার অধিকার নাই।সে কেবল বিয়ার মাধ্যমে আমার শরীরের মালিকানা পাইছিলো কিন্তু কহনো আমার স্বামী হইতে পারে নাই।তাই এমন জানোয়ার পৃথিবী ছাইড়া চইলা যাওয়াই ভালো।’

অন্ধকারে ঠিক বোঝা গেলো না কিন্তু সুখ আর লীলা জেনো চরম অবাক হয়েছে।তাদের মনে হয়েছে ষাটোর্ধ্ব নারীটার মাঝে যেই প্রতিবাদী তেজটা সেটা এখনকার উনবিংশের কিশোরীর মাঝেও নেই।নারী হতে হলে এমন প্রতিবাদী হতে হবে।নরম আর ক’দিন?

______
গ্রীষ্মের রৌদ্র তপ্ত আকাশ।ভার্সিটির ছুটির পর যথারীতি তিন বান্ধবী দাঁড়িয়ে আছে গেইটের সামনে গাড়ির আশায়।আজ বুধবার আর একদিন পরই শুক্রবারে সুখের বিয়ে।

সুখের মন একবারেই সাঁই দিচ্ছে না বিয়ের জন্য কিন্তু দাদীর শেষ ইচ্ছে পূরণের জন্য রাজি হয়েছে।মে লীলাবতীকে কথা দিয়েছে মসৃনের খোঁজ ঠিক বের করবে।কিন্তু এত মানুষের ভীড়ে আদৌও তাকে পাওয়া সম্ভব? যে নিজে ইচ্ছায় লুকিয়ে থাকে তাকে খোঁজা যায়?

শুকনো রাস্তায় ধূলো উড়িয়ে কালো গাড়িটা সুখদের সামনে এসে দাঁড়ালো।হঠাৎ গাড়ি ব্রেক কষায় তিনজন দু’কদম পিছিয়ে যায়।

গাড়ি থেকে মেঘ হাসিমুখে নেমে আসে।তিনজনের দিকে তাকিয়ে হাসিটা চওড়া করে বলল
-‘আরে আপনারা? বাহ্ আজও দেখা হয়ে গেলো।’

মেঘকে দেখে বরাবরের মতন হিমা হা হয়ে গেলো।হিমার এমন কান্ডে অনু আর সুখ দুজনের দিকে তাকিয়ে দুজন হেসে ফেলল।দুই বান্ধবীর হাসি শব্দে ধ্যান কাটলো হিমার। লজ্জা মিশ্রিত হাসি দিয়ে বলল
-‘আরে ভাইয়া আপনি এখানে? কেমন আছেন?’
-‘এই তো আপু ভালো।আপনারা কেমন আছেন?’

হিমা কিছু বলার আগেই অনু হাসি দিয়ে বলল
-‘এইতো ভাইয়া ভালো। কাজে যাচ্ছিলেন নাকি?’

মেঘ মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ জানালো।এর মাঝেই হিমা বলে উঠলো
-‘সুখ ভাইয়াকে দাওয়াত দিয়েছিলি? শুক্রবারের?’

হিমার কথায় সুখ চমকে গেলো।মেঘ ভ্রু কুঁচকে বলল
-‘কিসের দাওয়াত?’

হিমা গদোগদো কন্ঠে বলল
-‘ওমা শুক্রবারে তো সুখের বিয়ে। ওর ফুপাতো ভাইয়ের সাথে। বিয়েটা দু সপ্তাহ পরে হওয়ার কথা থাকলেও তা এগিয়ে আনা হয়েছে।আসবেন কিন্তু।’

মেঘ জেনো ভুল কিছু শুনে ফেলল।অপরিচিতার বিয়ে আর একদিন পরই?

এর মাঝেই সুখের ফোনটা উচ্চস্বরে বেজে উঠলো। ফোনটা রিসিভ হতেই অপরপাশের ব্যাক্তিটা বলে উঠলো
-‘আপু আমি মসৃনের রুমমেট।আপনি মসৃনের খোঁজ চেয়েছিলেন না? পাওয়া গেছে খোঁজ।দেখা করে সব বলবো।’

সুখ অবাক হয়ে রইল।অবশেষে সত্যি কী সবার সামনে আসতে চলেছে?

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here