সুখের_অ-সুখ,পর্বঃ৬,৭

#সুখের_অ-সুখ,পর্বঃ৬,৭
#মম_সাহা
পর্বঃ ছয়

ভেজা রাস্তায় সাবধানে পা ফেলে একটু একটু রাস্তা পিছে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে সুখোবতী। শুক্রবার হলেও আজও টিউশন করাতে বের হতে হয়েছে।আজকাল সময়টাই এমন,যে নরম তাকে সবাই খামচি দিবে।টাকার জন্য মানুষের ছেলেমেয়ে পড়ানো লাগে আর তখন বাচ্চা গুলোর গার্ডিয়ানরা ভাবে তারা যেনো শিক্ষকদের ক্রয় করে ফেলেছে যখন যা বলবে তা-ই মানতে হবে।

ঝিরঝির বৃষ্টি পড়ছে।সময়টা ঠিক দুপুরের পরের ভাগ।আকাশে ধূসর রাঙা মেঘ উড়ছে।রাস্তায় তেমন মানুষজনও নেই।এই বৃষ্টিমাখা দিনে কাঁদায় চিপ চিপে রাস্তায় কারই বা থাকতে ভালো লাগে? এর চেয়ে বারান্দায় বসে প্রিয় সঙ্গী বা পরিবারের সাথে তুখোর আড্ডা আর গরম গরম চায়ে মেতে উঠার মজাই আলাদা।কিংবা নরম বিছায়া গা এলিয়ে কম্বলের নিচে নিজেকে গুটিয়ে রাখতেও বেশ পছন্দ করে মানুষ।তার মাঝে কেউ কেউ এই বৃষ্টিপাতেও থেকে যায় রাস্তায়, কাঁদা চিপচিপে রাস্তায় মাইলের পর মাইল হাঁটে কেবল নিজের উদর পূর্ণ করার তাগিদে।নিজের আপন মানুষের চাহিদা পূরণের ব্যস্ততায়।

যেখানে একটা স্বচ্ছল পরিবারের বাবা ছুটির দিনে বৃষ্টিময় আবহাওয়ায় বিকেলে চায়ের সাথে স্ন্যাকস চায় সেখানেই আরেকজন অর্থের দিক থেকে অস্বচ্ছল বাবা নিজের সন্তানের মুখে দুইটা অন্ন দেওয়ার প্রয়াসে ঝড়বৃষ্টি না মেনে ছুটে চলে অবিরাম পথ।একটা কথা আছে না “ক্ষুদার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়,পূর্ণিমার চাঁদ যেনো ঝলসানো রুটি”। পেটে ক্ষুদা থাকলে আবহাওয়াও শরীরকে বিলাসিতা দিতে পারে না।

সৃুখের নীল রঙের জামাটা ঝিরঝির বৃষ্টিতেও বেশখানিকটা ভিজে গেছে।তার নিজের বাসা থেকে টিউশনির বাসাটা বেশ খানিকটা দূরে।রিক্সা বা অটোরিকশা করে গেলে একটু দ্রুত যাওয়া আসা করা যায় কিন্তু বৃষ্টির কারণে ভাড়া দ্বিগুণ যার জন্য সুখের হেঁটেই বাসা অব্দি যেতে হচ্ছে।

সুখের পাশ কেটে দুই তিনটা গাড়ি গেলো তার মাঝে একটা বিয়ের গাড়ি রজনীগন্ধ্যা ফুল দিয়ে সাজানো বাকি দুইটা গাড়ি হয়তো বরযাত্রীর।বিয়ের গাড়িটার দিকে তাকিয়ে সুখ তপ্ত শ্বাস ফেললো। এমনই একটা দিনে তারও বিয়ের গাড়ি এসেছিলো,সেজেছিলো তার ঘরবাড়ি আলোকসজ্জায় কিন্তু সেই বাড়ি হঠাৎ ঝড়ে মরা বাড়িতে রূপ নিবে কেউ ভাবতে পেরেছিলো? আবার বাবার মৃত্যুর এক মাস হতে না হতে আবারও নাকি বিয়ের আসরে তাকে বসানো হবে।দাদীজানের তীব্র ইচ্ছায় নিজের সবটুকু খারাপ লাগা,বিষাদ মাটি চাপা দিয়ে সে রাজি হয়েছে বিয়েতে বসার জন্য। আচ্ছা এবার বিয়েটা স্বাভাবিক হবে তো? নাকি ভাগ্য খেলবে নতুন খেলা?

হঠাৎ সুখ অনুভব করলো তার আশেপাশে ঝিরঝির বৃষ্টিটা বেশ বড় আকারে রূপ নিয়েছে। আকাশের ধূসর মেঘ কালো বর্ণ ধারণ করেছে কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে তার শরীরে বৃষ্টি পড়ছে।সুখ চমকে যেতেই পাশ থেকে একটা গম্ভীর মিষ্টি কন্ঠ ভেসে আসলো
-‘চমকানোর কিছু নেই অপরিচিতা। আপনার মাথার উপর মস্ত বড় এক ছাতা আছে যার কৃতজ্ঞতা স্বরূপ আপনার শরীরে বৃষ্টি পড়ছে না।’

সুখ দ্রুত তার ডানদিকে ফিরে তাকায়। তার পাশে বলিষ্ঠ দেহের এক সুপুরুষ দাঁড়িয়ে আছে। মানুষটা তার অচেনা না,এ’নিয়ে তৃতীয় সাক্ষাত হবে।প্রথম বার সিএনজিতে, দ্বিতীয় বার বাস স্ট্যান্ড আর আজ তৃতীয়বার।

সুখ অস্বস্তি অনুভব করে সড়ে যেতে নিলেই সাথের মানুষটা ব্যতিব্যস্ত স্বরে বলল
-‘আরে বোকা মেয়ে নাকি! দেখছেন কতটা বৃষ্টি হচ্ছে? ছাতার নিচ থেকে বের হলে তো ভিজে চুপসে যাবেন।এখানে থাকুন, ছাতার নিচে।’

সুখ সড়লো না বরং রাস্তার একপাশে দাঁড়ালো সেই ছাতার নিচে।আশেপাশে কোনো যাত্রী ছাউনি নেই।খোলা রাস্তায়, তুমুল বৃষ্টিপাতে কোথাও যাওয়ার উপায় নেই।

পাশের লোকটা বেশ নরম কন্ঠে বলল
-‘আমি মেঘ,মেঘ আহমেদ।’

সুখ লোকটার মুখপানে চাইলো।লোকটা নিজের নাম বললো কেন? পরিচিত হতে চাচ্ছে নাকি? ছেলেদের স্বভাবই এটা।পরক্ষণেই আবার নিজেই নিজের মনকে বলল, লোকটাকে দেখে তো তেমন ফালতু মনে হচ্ছে না বরং বেশ সাহায্য করছেন তাকে সেই প্রথম দিন থেকে।এখন কি লোকটার পরিচয় এর বিপরীতে তাকেও নিজের পরিচয় দিতে হবে? দশ রকমের ভাবনা ভেবে সুখ অবশেষে মুখ খুললো
-‘আমি সু,,,,’

আর কাছে বলতে না দিয়ে লোকটা সুখকে থামিয়ে দেয়। চুখ ড্যাবড্যাব চোখে তাকিয়ে রয়।পরিচয় জানার জন্যই তো নিজের নামটা বললো তাহলে তাকে থামিয়ে দিলো কেন?

মেঘ হয়তো বুঝতে পারে সুখের মনোভাব তাই মুচকি হাসি বজায় রেখেই বলল
-‘আপনি অপরিচিতা।আপনার নাম আমি রেখে দিছি।আর আপনি তো আমার নাম রাখবেন না তাই নিজের নামটা বলে দিছি।তা কোথায় গিয়েছিলেন এই বৃষ্টিমাখা দিনে?’
-‘এইতো টিউশন করাতে গিয়েছিলাম।আসলে কয়েকদিন বন্ধ হয়েছিলো তাই ছুটির দিনেও পড়িয়ে সেই বন্ধ পুষিয়ে দিচ্ছি।’

সুখের সহজ সরল কথা বেশ মিষ্টি লাগলো মেঘের।ততক্ষণে বৃষ্টি প্রায় থেমে গেছে।একটা রিক্সা আসতেই সুখ সেটাকে থামিয়ে দিলো।ঝটপট রিক্সায উঠে বসলো।মেঘ শান্ত কন্ঠে বলল
-‘তাহলে ভালো থাকবেন অপরিচিতা।’

সুখ মাথা নাড়ল বলল
-‘আপনিও ভালো থাকবেন মেঘ সাহেব।আবারো কোনো আকষ্মিক সমস্যায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েন।ধন্যবাদ।’

মেঘ হাসিমুখে ঘাড় কাত করতেই রিক্সা চলতে শুরু করলো আপন গতিতে। মেঘ হাত নাড়িয়ে বিদায় জানালো।রিক্সাটা চোখের অগোচর হতেই মেঘের৷ গাড়িটা মেঘের সামনে এসে দাঁড়ালো।মেঘের পিএ দরজা খুলে দিতেই মেঘ ভিতরে গিয়ে বসলো।মেঘের পিএ ইউসুফ মেঘের দিকে তাকিয়ে নিচু কন্ঠে বলল
-‘এই বৃষ্টির মাঝে হঠাৎ গাড়ি থেকে নেমে এতটা না ভিজলেও পারতেন স্যার। বরং মেমকে গাড়িতে তুলে নিতেন।’
-‘ইউসুফ আমি মানুষদের বড্ড সহজেই চিনি।আর এই অপরিচিতাকে মনে হয় বেশিই জানি।সে কখনোই একটা আগন্তুকের গাড়িতে বসতো না।ওসব তুমি বুঝবে না।তুমি গাড়ি স্টার্ট দেও।’

ইউসুফ গাড়ি স্টার্ট দিতেই মেঘ সুখের যাওয়া রাস্তার দিকে তাকিয়ে আনমনেই বলল
~”আমি এক ভারী বর্ষনে দেখেছি অপরিচিতার মুখ,,
সেই মুখে জেনো আছে আমার রাজ্যের সুখ।”

________
“বিয়েটা কেনো করতে চাইছেন রেদোয়ান ভাইয়া?”

সুখের এহেন প্রশ্নে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় নি রেদোয়ানের মনে বরং সে ভীষণ আয়েশে খাটে বসে পা দুলাচ্ছিলো। সুখ আরেকটু গলার স্বর উঁচু করে বলল
-‘ভাইয়া আপনি বিয়েটা কেন করতে চাচ্ছেন একটু বলবেন?তাও আমার মতন মেয়েকে? নাকি রিফিউজ করে ছিলাম বলে প্রতিশোধ নিতে চাচ্ছেন?’

রেদোয়ানের চোয়াল আকষ্মিক শক্ত হয়ে গেলো।কোনোরূপ শব্দ ব্যয় না করে সুখের গাল চেঁপে ধরে দাঁতে দাঁত কিড়মিড় করে বলল
-‘তোমার থেকে প্রতিশোধ নেওয়া লাগবে আমার বিয়ে করে? এর চেয়ে বড় কিছুর জন্যই তোমাকে বিয়ে করছি।সুখের অ-সুখে,আমার অসুখ।’

রেদোয়ান আর এক মুহূর্ত অপেক্ষা করলো না।দ্রুত পা ফেলে সুখের ঘর থেকে প্রস্থান নিলো।সুখ টিউশন করিয়ে এসে তাদের বাসায় রিতীমত রেদোয়ান হাজির।আর রেদোয়ানকে একা পেয়েই জানার আগ্রহ দেখালো কিন্তু এমন কিছু শুনাবে ভাবতে পারে নি।তাহলে সেদিনের চিরকুট রেদোয়ান ভাই ই দিয়েছিলো কিন্তু কেনো?

অন্ধকার রুমে কেউ একজন চরম প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে উঠলো।ঘৃণিত খেলা শুরু হয়ে গেছে আজাদ শেখের বাড়িতে।অন্তরালে লুকিয়ে একজন গভীর ষড়যন্ত্র করছে আর তার অন্তরালে লুকিয়ে সেই ষড়যন্ত্রের বিপরীতে আরেকজন ষড়যন্ত্র করছে।কে জিতবে এ খেলায়? নাকি সব দিক থেকে হার টা সুখের হবে?

__________

দুই সপ্তাহ পর বিয়ের দিন ফিক্সড করা হয়েছে।ঘরোয়া ভাবেই বিয়েটা করানো হবে।

সুখ ধারাবাহিক কার্যক্রম আগের মতনই বজায় রেখেছে।আজ সকালেও ঘুম থেকে উঠে ঘরের যাবতীয় কাজ শেষ করে রেডি হয়ে ভার্সিটিতে চলে গেছে।লীলাবতী আজকাল ঘর থেকে বের হয় না।আনুমানিক তাে এখন তিনমাস চলছে তার গর্ভাবস্থার।শরীরেও ছোট খাটো পরিবর্তন শুরু হয়ে গেছে। যতটা পারে নিজেকে লোকচক্ষুর আড়ালে রাখে।

উত্তপ্ত রৌদ শহরময়। গ্রীষ্মকালের এই এক জ্বালা,কখনো উষ্ণতা আবার কখনো সিক্ততা।সুখ ভার্সিটির থেকে বের হতেই মাথাটা জেনো ঘুরে উঠলো এত রৌদ দেখে।তার সাথে তার বান্ধবী অনু ছিলো।সুখকে মাথা চেপে ধরতে দেখে অনু অবাক কন্ঠে বলল
-‘কিরে সুখ? মাথা ধরে আছিস কেন? মাথা ঘুরছে?’

সুখ দু-হাত মাথা চেপে মাথা ডানে বামে নাড়িয়ে না বললেও তার মাথা আবার ঘুরে উঠে।অনু আর সুখ ব্যাতিত তাদের বান্ধবী হিমা এখানে উপস্থিত ছিলো।সে দ্রুত নিজের বোতল থেকে পানির বোতল বের হরে দিয়ে সুখের দিকে এগিয়ে দিলো।মধ্য দুপুর দেখে এ সময় রাস্তাঘাট জনশূন্য। মাঝে মাঝে কয়েকটা গাড়ি যাচ্ছে।

হিমা রাস্তায় হাত দেখাচ্ছে গাড়ি থামানোর জন্য। কিন্তু বরাবর তার গাঁ ঘেষে চলে যাচ্ছে সব গাড়ি।একটা কালো রাঙা গাড়িও তার পাশ কেটে চলে গিয়ে একটু দূরে গিয়ে দাঁড়ালো।হিমা দৌড়ে গিয়ে কিছু বলার আগেই গাড়ির ভিতরে তাকিয়ে অবাক হয়ে রইল সাথে মুগ্ধ।

অনু হিমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অদ্ভুত স্বরে বলল
-‘এই সুখ হিমা কী আবার ক্রাশ টাশ খেয়ে ফেলল নাকি? ওর তো ঠুসঠাস ক্রাশ খাওয়ার স্বভাব।’

সুখ অসুস্থতার মাঝেই ফিক করে হেসে উঠলো।অনু গলা তুলে হিমাকে ডাক দিয়ে বলল
-‘দেখিস হিমা গিলে ফেলিস না।’

হিমা তাড়াতাড়ি মাথা নাড়িয়ে গাড়ির ভিতরে থাকা মানুষটাকে বলল
-‘ভাইয়া আমার ফ্রেন্ড একটু অসুস্থ একটু হ্যাল্প করুন না।আমাদের একটু ওর বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে যান।’

গাড়ির ভিতরের মানুষটা হিমার দৃষ্টি অনুসরণ করে তার বান্ধবীর দিকে তাকিয়ে চমকে উঠে।দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে গটগট পায়ে এগিয়ে যায় সুখদের কাছে ব্যতিব্যস্ত স্বরে বলল
-‘অপরিচিতা কি হয়েছে আপনার?’

সুখ এতক্ষণ অনুর সাথে হেলে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে থাকলেও এখন পরিচিত কন্ঠে চোখ মেলে তাকালো।সামনের মানুষটার দিকে তাকিয়ে অবাক কন্ঠে বলল
-‘আরে মেঘ সাহেব আপনি এখানে? আজও আমার সমস্যায় সমাধান হয়ে আপনিই আসলেন?’

মেঘের কপালে চিন্তার ভাজ পড়েছে।তার সামনে থাকা ফর্সা লাল হয়ে যাওয়া গোলগাল মুখটার দিকে তাকিয়ে ভাজটা আরো গাঢ়ো হলো।বুঝাই যাচ্ছে মেয়েটা ভীষণ অসুস্থ।

মেঘকে নেমে আসতে দেখে তার পিএ ইউসুফ ও নেমে এসেছিলো।অকাঙ্খিত সময়ে কাঙ্খিত মানুষটাকে দেখে ইউসুফের হাসি চওড়া হলো।তার স্যার বড্ড বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলো এই মানুষটাকে দেখার জন্য অবশেষে দেখা মিললো।

মেঘ ব্যতিব্যস্ত স্বরে বলল
-‘চলুন আমার গাড়িতে আপনারা।আমি পৌঁছে দিচ্ছি।’

হিমা অবাক কন্ঠে বলল
-‘আপনি সুখকে চিনেন?’

মেঘ ভ্রু কুঁচকালো পরক্ষণে মনে হলো তাহলে তার অপরিচিতাই সুখ।তখন হেসে মাথা নাড়ালো।সুখ অনুর হাত ধরে ধীরে ধীরে গাড়িতে গিয়ে বসলো।মেঘও যেতে নিলো ইউসুফ ডাক দিয়ে বলল
-‘স্যার শুনেন।’
-‘হ্যাঁ ইউসুফ বলো?’
-‘এই উত্তপ্ত গরমেও আমি কারো মাঝে শীতলতা দেখতে পারছি।সেটা কেনো?’

মেঘ কতক্ষণ তাকিয়ে থেকে হেসে দিলো।ইদানীং গম্ভীর মানুষটা হুটহাট হেসে দিচ্ছে এ কী গভীর প্রনয়ের সূচনা?

মেঘ গাড়িতে বসা অসুস্থ মানুষের দিকে তাকিয়ে বলল
~”আমার শীত,গ্রীষ্ম,বর্ষা
অপরিচিতাই এখন ভরসা।”

#চলবে

#সুখের_অ-সুখ
#মম_সাহা

পর্বঃ সাত

আকষ্মিক একটা কথা শুনে হতবাক মেঘ,সাথে ইউসুফও অবাক হয়ে গাড়ির ব্রেক কষলো।মেঘ পিছনের সিটে তাকিয়ে অবাক কন্ঠে বলল
-‘কী বলছেন? এই মাত্র কী বললেন? উনি অসুস্থ হয়েছে কেন?’

হিমা আবারও মেঘের দিকে হা করে তাকিয়ে রইল।মেঘ এতে বেশ বিব্রত বোধ করলো।অনু ব্যাপার টা বুঝতে পেরে বলল
-‘হিমা দেখিস গিলে ফেলিস না।’

হিমা দ্রত চোখ নামিয়ে ফেলল।অনুর দিকে চোখ রাঙানি দিয়ে মুচকি একটা হাসি দিলো।মেঘ নিজেকে সামলে গম্ভীর কন্ঠে আবার বলল
-‘বললেন না তো অপরিচিতা অসুস্থ কেন? কি হয়েছে? কী বললেন একটু আগে আপনারা?’

অনু আমতা-আমতা স্বরে কিছু বলার আগেই হিমা দ্রুত গতিতে দ্বিগুণ উৎসাহে বলল
-‘আরে সুখ তো প্রেগন্যান্ট তাই হয়তো শারীরিক পরিবর্তনের কারণে এসব হচ্ছে।’

হিমার কথা থামতেই অনু দুম করে কিল বসালো হিমার পিঠে। মেঘের জেনো বিনা বৃষ্টিতে বজ্রপাতের মতন মনে হলো কথাটা। অপরিচিতা তাহলে অন্য কারো!

ততক্ষণে সুখের মাথাটা হেলে পড়ে গেছে।সবাই সুখের দিকে তাকাতেই দেখে সুখের কোনো হুঁশ নেই।সে জ্ঞান হারিয়েছে।মেঘ নিজের বোতলটা থেকে একটু পানি নিয়ে সুখের মুখে ছিটা মারলো এতেও কোনো কাজ হলো না।মেঘ বেশ ভিতরে ভিতরে রাগ নিয়ে বলল
-‘উনি এ অবস্থায় এসেছে কেনো তাহলে বাহিরে? আর উনার হাসবেন্ডও বা এত দায়িত্ব জ্ঞানহীন কেন? মেয়েটাকে একা ছেড়ে দিছে কেমন মানুষ সে!’

-‘ওর তো হাসবেন্ড নেই।ওরে ধোঁকা দিয়ে বিয়ের আসর ছেড়ে চলে গেছে সেই কাপুরুষ।’

হিমার কথা শুনে মেঘ বিষ্ময়ে হতবাক।যতটুকু মনে হয়েছে অপরিচিতা মেয়েটা বেশ শান্ত স্বভাবের। তার সাথে কেউ এমন কেন করলো?মেঘ আর কিছু না বলে ইউসুফকে দ্রুত গাড়ি চালানোর নির্দেশ দিলো।গাড়িটা কাছেই হসপিটালের সামনে নিতে বলে মেঘ।

সুখ এখনো হসপিটালের বেডে শুয়ে আছে।জ্ঞান ফেরার আগেই তাকে ঘুমের ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিলো তাই এখনও ঘুমাচ্ছে।এর মাঝেই সুখের শরীরের নানা রকম টেস্ট করানো হয়েছে।হসপিটালের করিডোরেই অপেক্ষারত আছে হিমা,অনু,ইউসুফ,মেঘ।

বেশ খানিকটা পর ডাক্তার রিপোর্ট নিয়ে আসে।মেঘ এগিয়ে গিয়ে ব্যতিব্যস্ত স্বরে বলল
-‘কী হয়েছে ডাক্তার? বেবি টা ঠিক আছে তো?’

মেঘের এহেন প্রশ্নে ডাক্তার ভ্রু কুঁচকালো সন্দিহান কন্ঠে বলল
-‘বেবি? কিসের বেবি?’

মেঘ অবাক হয়ে বলল
-‘কেনো অপরিচিতা তো গর্ভবতী।’

ডাক্তার অদ্ভুত স্বরে বলল
-‘আরে মিস্টার কী বলছেন এসব? পাগল টাগল হলেন নাকি? উনার ঠিক মতন খাওয়া দাওয়া না করার কারণে প্রেশার কমে গিয়েছে যার জন্য সেন্স লেস হয়ে গিয়েছিলো।কেনো প্রেগন্যান্সির ব্যাপার না এটা।’

ডাক্তার চলে যেতেই একজন আরেকজনের মুখ দেখা দেখি শুরু করলো।মেঘ প্রশ্নাত্মক দৃষ্টিতে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল
-‘আপনার আমার সাথে মজা করলেন?’

হিমা আর অনু দ্রুত মাথা নাড়িয়ে বলল
-‘না ভাইয়া মজা করি নি সত্যিই বলেছিলাম।বিশ্বাস না হলে আমাদের এলাকায় গিয়ে ওর কথা জিজ্ঞেস কইরেন সবাই কী বলে শুইনেন।তাহলে সুখও জানে ও প্রেগন্যান্ট না কিন্তু তাহলে ও এমন মিছে কলঙ্ক মাথায় নিয়ে ঘুরছে কেন?’

মেঘ আর ওদের সাথে কিছু না বলে দ্রুত সুখের কেবিনে চলে গেলো। মেঘের পিছে পিছে সবাই ই কেবিনে হাজির হলো।ততক্ষণে সুখের ঘুম ভেঙে গিয়েছে।হাতে স্যালাইন লাগানো ছিলো বিধায় সে ধীরে ধীরে উঠে বসার চেষ্টা করছিলো।

সুখকে উঠে বসতে দেখে অনু এগিয়ে গিয়ে সুখকে ধরে বসালো।সুখের চুল গুলো কানের পিঠে গুঁজে দিয়ে অদ্ভুত স্বরে প্রশ্ন করলো
-‘কিরে সুখ আমাদের মিথ্যে কেন বলেছিলি? তুই তো প্রেগন্যান্ট না।’

আকষ্মিক এমন কথায় হকচকিয়ে গেলো সুখ।রুমে যে তার বান্ধবী ছাড়া আরও দু’জন আছে অপরিচিত মানুষ।তাদের সামনে এসব কথা বলার মানেই হয় না।সুখ অনুকে চোখ রাঙিয়ে সাবধান করার আগেই মেঘ প্রশ্ন ছুঁড়লো
-‘কেনো মিথ্যে খবর ছড়িয়েছেন অপরিচিতা? নিজের নামে এমন কলঙ্ক লেপন করতে একমাত্র আপনাকেই দেখলাম।কোনো সমস্যা হলে আপনি আমাদের সাথে শেয়ার করুন।’

সুখ যা বুঝের বুঝে গেলো। তার বান্ধবীগন যে সব তথ্য ফাঁশ করে দিয়েছে সেটা বুঝাই যাচ্ছে।সুখ তপ্ত শ্বাস ফেলে নিজের বান্ধবীদের দিকে তাকিয়ে বলল
-‘আমি কখনো বলেছিলাম আমি প্রেগন্যান্ট? তাহলে কীভাবে মিথ্যে খবর ছড়ালাম?যাইহোক,এই খবরটা আমরা অব্দিই জেনো সীমাবদ্ধ থাকে।যদি ঘুণাক্ষরেও কেউ টের তাহলে মনে রাখবি তোদের সাথে আমার সম্পর্ক অতটুকু অব্দিই।’

হঠাৎ শান্ত অপরিচিতাকে এমন তীক্ষ্ণ রূপে দেখে অবাক মেঘ সাহেব আর ইউসুফও।তাদের মনোভাব হয়তো বুঝতে পারে সুখ তাই খুব বিনীত স্বরেই বলে
-‘মেঘ সাহেব আর ইউসুফ ভাইয়া আমি আশারাখি আপনারাও এ কথাটা ভুলে যাবেন।যখন এ টপিক নিয়ে আলোচনা করার মতন সময় আসবে তখন আমিই নিজে থেকে সবটা বলবো এর আগে এই কথা জেনো কেউ না জানে।’

মেঘ কেবল মাথা নাড়িয়ে সাঁই জানালো।হঠাৎ ঠান্ডা সুখের উষ্ণ আচরণে ভড়কে যায় সবাই।তারপর হসপিটালের সব ফর্মালিটি শেষ করে আবারও মেঘের গাড়িতে গিয়ে বসে তারা।সুখকে বাড়ি অব্দি পৌঁছে দিতে মেঘ নাছোড়বান্দা। পথিমধ্যে সুখ একবার গাড়ি থামিয়ে কিছু আঁচাড় কিনে নেয়।তারপর আবারও গাড়ি চলতে শুরু করে।ততক্ষণে বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যা নেমেছে চারপাশে।খোলা রাস্তায় গাড়ি চলছে দ্রুত গতিতে। কেউ কোনোরূপ কথা বলছে না।সব নিবিড়।এলাকার কাছাকাছি গাড়ি আসতেই সুখ মুখ খুলল
-‘ভাইয়া গাড়িটা সাইডে দাঁড় করান।’

সুখের কথা শেষ হওয়ার সেকেন্ড এর মাথায় গাড়িটা থামিয়ে দিলো ইউসুফ। সুখ মেঘের দিকে তাকিয়ে বলল
-‘ধন্যবাদ মেঘ সাহেব।আমাদের নেমে যেতে হবে এই মোড়ে।এলাকা অব্দি গাড়ি গেলে আমার চরিত্রে লেপন করা কালিটা আরও গাঢ়ো হবে সাথে কালির ছিটা লাগবে আপনাদের শরীরেও তাই এ অব্দি পথচলা থামুক।’

মেঘ আর কিছু বলে নি।কেবল ঘাঁড় কাত করো সম্মতি দিলো।অপরিচিতার ভাবনা চিন্তায় সে সত্যিই মুগ্ধ। আজকাল কার মানুষ খারাপ বৈ ভালো তো ভাবতে পারে না।এর চেয়ে সামান্য পথ নাহয় অপরিচিতা একা হাঁটুক আজ।একদিন এ গাড়ি দিয়েই বাড়ি অব্দি যাবে।

সুখ আর তার বান্ধবীরা গাড়ি থেকে নেমেই বিদায় জানিয়ে হাঁটা শুরু করলো নিজেদের গন্তব্যে। ইউসুফ মেঘের দিকে তাকিয়ে বলল
-‘স্যার মেমের হাবভাব বেশ সন্দেহের। সে গর্ভবতী না কিন্তু সবাই জানে গর্ভবতী। আবার সে আচারও কিনে নিলো।আমার মিথ্যে টাও বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে মাথা পেতে নিচ্ছে।কলঙ্ক লেপন করে ঘুরে বেড়াচ্ছে।কিছু কী গোপনে আছে?’

মেঘ মাথা নাড়িয়ে বলল
-‘আমাদের অজানা অনেক কিছুই গোপনে আছে তবে এটা সিউর অপরিচিতার সাথে কেউ বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।আর সেই সূত্র ধরেই এমন মিছে কলঙ্ক।দেখা যাক সত্যি টা কতটুকু জানতে পারি।এখন থেকে মাটি কামড়ে পরে থাকবো উনার পিছে।’

ইউসুফ আর কিছু না বলে গাড়ি স্টার্ট দিলো।স্যার না বললেও ইউসুফ এতক্ষণে বুঝে গেছে যে তার স্যার এ জনমে মেমকে ছাড়বে না।

মেঘ যতদূর অপরিচিতার ছায়া দেখা যাচ্ছে ততদূর অব্দি পলকহীন চোখে তাকিয়ে রইল আর মনে মনে বলল
~”সেদিন বরষায়,ভেজা রাস্তায়,সিক্ত অপরিচিতার দেখা,
তারপর গেলো দিন,ভীষ রঙিন,স্মৃতিচারণে সে যত্নে রাখা।”

_______

সুখ বাড়ি এসেই জামাকাপড় বদলানোর জন্য ওয়াশরুমে চলে গেলো।বেশখানিকটা সময় ফ্রেশ হয়ে বের হতেই তার রুমে বসা মেয়েটাকে দেখে চমকে উঠে।আজকাল লীলাবতী ঘর থেকে বের হয় না বললেই পারা যায়। আগে সবসময় সে সুখের পিছে পরে থাকতো কিন্তু এখন তেমন কিছুই করে না।

লীলাবতীকে দেখে সুখ বেশ অবাক হলো।অবাক ভাবটা প্রকাশ না করে মুচকি হাসি দিয়ে বলল
-‘আরে লীলা তুই এখানে? কিছু বলবি?’

লীলা গভীর ধ্যানে মগ্ন ছিলো তখন।সুখের কথায় ধ্যান ভাঙতেই মাথা ডানে বামে ঘুরিয়ে বলল
-‘নাহ্ কিছু বলবো না তোমার খাবার নিয়ে এসেছি।সেই সকালে তো না খেয়ে বের হয়েছো তাই খাবার এনেছি। দাদী তো বাড়িতে নেই,খাবার না আনলে অভুক্ত থাকতে হতো।এ বাড়ির যে মানুষজন।’

সুখ এগিয়ে এসে বোনের পাশে বসলো।হঠাৎ করেই তার চঞ্চল বোনটা কেমন ঠান্ডা হয়ে গেলো। কাটখোট্টা স্বভাবের মানুষটার এমন পরিবর্তন সত্যিই মানা যায় না। ছোট্ট মানুষটার হাসি খেলা কেমন ভাবে কেড়ে নিলো অমানুষটা।

সুখ নিজের ব্যাগ থেকে আচারের প্যাকেট গুলো বের করে বোনের হাতে দিয়ে স্নেহ মাখা কন্ঠে বলল
-‘এই নে তোর জন্য এনেছি।এখন তো নিশ্চয়ই এসব খেতে ইচ্ছে করে তাই না? তোর কিছু হবে না দেখিস।আমি আছি তোর সাথে। এই বাচ্চাটা সুন্দর ভাবেই পৃথিবীর আলো দেখবে।’

-‘এর পৃথিবীতে এসে কি লাভ আপাই? নোংরা পৃথিবীতে আসার চেয়ে না আসাই ভালো। কলঙ্কের বোঝা মাথায় বহন করে কীভাবে চলবে ও?’

সদ্য কিশোরীর এমন কথায় চুপ হয়ে যায় সুখ।তবুও বোনকে স্বান্তনার স্বরে বলে
-‘তুই একদম এসব নিয়ে ভাবিস না।ওর জন্য আমি আছি।ভরসা রাখিস।’

লীলাবতী আর কোনো কথা বলে না।সুখকে খেতে বলে উঠে চলে যেতে নেয়। দরজা অব্দি গিয়ে কি মনে করে জেনো দাঁড়িয়ে যায় তারপর অদ্ভুত কন্ঠে বলল
-‘আপাই তুমি বড্ড সহজেই মানুষকে বিশ্বাস করে ফেলো।কিন্তু মানুষ এতটা বিশ্বাসের যোগ্য না।আমিও তো তোমার সাথে এত ভালো আচরণ করি নি কখনো তাহলে আমাকে কেনো বিশ্বাস করছো? এমনও হতে পারে আমি খাবারের সাথে বিষ মিশিয়ে তোমায় দিয়েছি।’

লীলাবতীর এহেন কথাতেও চমকায় না সুখ।ধীরে সুস্থে থালা থেকে এক লোকমা ভাত মুখে নিয়ে চিবাতে চিবাতে বলল
-‘বিশ্বাসের বিষও হজম হয়ে যায়। বিশ্বাসে মিলয় বস্তু তর্কে বহুদূর।’

লীলা একটা তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে চলে যায়। আচ্ছা তাচ্ছিল্য টা কাকে জানালো? সুখকে নাকি নিজেকে?

_______

বাবার লাইব্রেরীটাতে ধূলো জমেছে খুব।এই একমাস এ দিকে কেউ আসে নি।মানুষটার বড্ড স্বাধের জায়গা ছিলো এই লাইব্রেরী রুম।মানুষটাও নাই স্বাধের লাইব্রেরী রুমও ধূলোমাখা।আজ অনেকদিন পর সুখ লাইব্রেরী টা পরিষ্কার করতে আসছে।এতদিন রুমটার দিকে তাকালো বুকের ভিতর হাজারে খানেক শূণ্যতা অনুভব হতো তাই তো এইখানে পা দেয় নি আজ হঠাৎ করেই রাত বিরাতে পা দেওয়ার ইচ্ছে হতেই ছুট লাগায় লাইব্রেরীতে।মনে হচ্ছে বাবা জেনো আশেপাশে আছে।আজাদ শেখ মানুষটা কোনো কালে একটা খারাপ কাজ করেছেন বলে সে খারাপ হতে পারে কিন্তু বাবা নামক মানুষটা তো খারাপ ছিলো না।

লাইব্রেরীতে এসেই ধূলোমাখা বই দেখে আফসোস আর অনুশোচনা হলো সুখের।বাবা নেই বলেই বুঝি বাবার জিনিসের এত অবহেলা? দ্রুতই সে পরিষ্কার করা শুরু করলো রুমটা।

একবারে কোনায় একটা শোকেসে ঝাড় দেওয়ার সময় একটা বইয়ের দিকে নজর যায় সুখের।পুরোনো হয়েছে বইটা।অনেক বেশিই পুরোনো।ধূলি জমে জমে যেনো পাহাড় হয়েছে।এত কোণায় তো বাবা বই রাখেন না।কৌতূহল বশত বইটা হাতে নিয়ে ঝাড়া দেওয়ার সময় বইয়ের ভেতর থেকে হালকা হলদেটে রঙের কাগজ মাটিতে পড়লো।সুখ দ্রুত কাগজটা উঠালো।বুঝায় যাচ্ছে সাদা কাগছে খুব শৌখিন করে একটা চিরকুট লেখা।যা সময়ের বিবর্তনে ধূলো ময়লা পড়ে হলদেটে রঙ ধারণ করেছে।

মানুষের গোপন জিনিসের প্রতি কৌতূহল সবসময় বেশি।সেই সূত্রে সুখেরও কৌতূহল জাগা টা স্বাভাবিক। আর সেই কৌতুহল বশেই চিঠিটা খুলল সে।চিঠিটা খুলতেই খুব নিঁখুত ভাবে লেখা তিনটা গভীর মর্মার্থের লাইন ভেসে উঠলো,

“আপন মানুষ ঠকায় খুব বাজে ভাবে।বিশ্বাসঘাতকরাও আপন মানুষের শ্রেণীর।কখনো সম্পর্ক ঠিক রাখতে মুখ বুঝে সহ্য করতে হয় অনেক কিছু।কেবল ভয় হয় পৃথিবীটা ছেড়ে চলে যেতে হবে খুব দ্রুত।মানুষ গুলো আমার লাশ খুঁজে পাবে তো?”

এমন প্রশ্নমাখা চিরকুট দেখে ভীষণ অবাক হয় সুখ। বাবার এ লাইব্রেরীতে সে ছাড়া কেউ আসে না।তাহলে এই ধুলোমাখা বইয়ে একরাশ ব্যথিত প্রশ্নমাখা চিরকুট রাখলো কে?কার লাশের আত্মকাহিনী এই চিরকুটের মাঝে?

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here