#শেষ_বিকালের_আলো (৩য় পর্ব)
অবনী এখনও ভেবে পাচ্ছেনা কোথায় যাবে! বাবার বাসায় গেলে তাকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে অরণ্যের কাছে দিয়ে আসবে। তারা আবার তাদের জামাইয়ের থেকে ভালো ছেলে আর দ্বিতীয়টি চোখে দেখে না। নাহ্ কিছুতেই সে অরণ্যের কাছে ফিরবে না,অনেক সহ্য করেছে অরণ্যের অবহেলা।এবার যা করেছে তা মেনে নেয়া আর সম্ভব হচ্ছেনা অবনীর।
এখন অন্য যার কাছেই যাবে সেখানেও অবনীকে হাজারটা প্রশ্ন করা শুরু করবে। অবনীর কারও সাথে কোন কথা এখন আর বলতে ইচ্ছে করেনা।
অনেকক্ষন ধরে ব্যাগ আর বাচ্চা নিয়ে হাটতে হাটতে অবনীর পা আর চলছিলো না।পাশেই একটা পার্ক দেখতে পেয়ে সেখানে ঢুকে একটা বেঞ্চে বসলো।এর মধ্যে লিনিয়া ঘুম থেকে উঠে গিয়েছে।অবনী মোবাইলে সময় দেখলো সকাল ৭.৩০ এবং অরণ্যের ৩ টা মিসড কল উঠে আছে।
অরণ্য অনেক ব্যস্ত মানুষ তাই বেশি কল করার সময় পায়নি হয়তো।অবনী রাগে ক্ষোভে মোবাইলের সুইচ অফ করে দিলো।লিনিয়া আর লিনসা অলরেডি পার্কে খেলাধুলা শুরু করে দিয়েছে।
এভাবে অগোছালো চিন্তা করতে করতে হঠাৎ তার চোখ গেল একটা বিদ্যুৎ এর খুঁটির দিকে।সেখানে একটা সাদা কাগজে কালো কালি দিয়ে মোটা অক্ষরে লেখা(To LET)
নিচে ছোট অক্ষরে বাংলায় লেখা আছে(ছোট ফ্যামিলির জন্য,২ রুম,১বাথরুম, ১ বারান্দা ও কিচেন সাথে মোবাইল নাম্বার দেয়া)
অবনীর বিক্ষিপ্ত মন মোবাইল অন করে সেই নাম্বারে কল করলো…বাড়িওয়ালার সাথে কথা বলে জানতে পারলো এটা একটা টিনশেড বিল্ডিং (উপরে টিন,পাশে দেয়াল ও ফ্লোর পাকা)বাড়িটি একটু ভেতরে,মেইন রাস্তায় আসতে ৩০ মিনিটের মত লাগবে।বাড়ি ভাড়া ৩ হাজার টাকা।বিদ্যুৎ, পানি গ্যাস সব আলাদা বহন করতে হবে।
অবনীর নিজের বাসা থেকে এই বাসার দূরত্ব ২ ঘন্টার মত হবে কিন্তু এই পথে অবনীর কখনও আসা হয়নি।অবনী আবার মোবাইল অফ করে ব্যাগ আর বাচ্চাদের নিয়ে পার্ক থেকে বের হয়ে একটা রিকশা নিলো।রিকশায় যেতে যেতে অবনীর মনে হলো সে শহর থেকে ধীরে ধীরে একটা গ্রামের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে।পথ মনে হয় শেষ হচ্ছে না….
চলবে…
লেখনী: #নুসু