শেষ_বিকালের_আলো (পর্ব ১৪)

শেষ_বিকালের_আলো (পর্ব ১৪)

সাদিয়া আর রুদ্র বাগান বাড়ির কাছে যেতে যেতে তাদের দুজনের জীবনের গল্প করলো! এই স্পেস্টাই তারা মনে মনে চাচ্ছিলো।তাদের খুব অল্প সময়ের মধ্যেই দুজনের প্রতি ভালোলাগা তৈরি হয়েছে।যেটা তাদের দুজনের সাথে সাথে অরণ্যও বুঝতে পেরে গিয়েছে।

রুদ্র এবার বিদেশ থেকে ঠিক করেই এসেছে এবার দেশে এসে বিয়ের কাজটা সম্পন্ন করবে। বাবা মা অনেকদিন ধরেই বলে যাচ্ছিল। আরও কিছুদিন পরে আসবে ভাবলেও অবনী আপুর কথা শুনে আগেই চলে এসেছে।

দেশে এসে কিছু ঘটনা সাদিয়ার কাছ থেকে আর কিছু কথা লিনসার কাছ থেকে শুনেছে।এখন যতটুকু বাকি আছে তা অবনী আপুর কাছ থেকে শুনবে।

রুদ্র বাগান বাড়ির দরজায় নক করলো। সুমন মিয়া এসে দরজা খুলল। রুদ্র অবনী আপুর কথা জিজ্ঞেস করতেই এই বাড়ির উপরতলা দেখিয়ে দিলো।

রুদ্র সাদিয়াকে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে বলে ভিতরে ঢুকলো। অসম্ভব সুন্দর একটা বাড়ি। যে কেউ এই বাড়ির প্রেমে পরে যাবে।

রুদ্র সুমন মিয়াকে তার পরিচয় দিয়ে অবনীর আসা থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত সব কিছু জানতে চাইলো এই বাড়ি সম্পর্কে। তার সাথে এই বাড়ির ফ্যামিলি মেম্বার সম্পর্কেও।সুমন মিয়া গ্রামের সহজ সরল মানুষ। রুদ্র যা যা প্রশ্ন করলো তা তার মত করে সব অকপটে বলে গেলো।

এবার রুদ্র একদম ভালো করে শিউর যে অবনী আপুর এখানে কোন ঝামেলা নেই। রুদ্র সুমন মিয়াকে ধন্যবাদ জানিয়ে উপরে উঠতে যাবে এরমধ্যেই আকাশের সাথে দেখা হয়ে গেলো।

আকাশকে দেখে রুদ্র বুঝতে পারলো অরণ্য ভাইয়া কেন অবনী আপুকে ভুল বুঝেছে। রুদ্র নিজেও আকাশ ভাইয়ের ব্যাপারটা জানতো।

রুদ্র অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে! আকাশ ব্যাপারটা বুঝতে পেরে রুদ্রকে জিজ্ঞেস করলো… কেমন আছে?কতক্ষণ হলো এসেছে!

রুদ্র বললো, এইতো মিনিট দশেক হবে। আমি তাহলে একটু অবনী আপুর সাথে দেখা করে আসি ভাইয়া।

আকাশ বলল, হুম যাও দেখা করে এসো। আকাশকে দেখে রুদ্ররও কেমন যেন ভালো লাগেনি।এতটা কাকতালীয় ব্যাপারও হয়, যে অবনী আপু না জেনে শেষ পর্যন্ত আকাশ ভাইয়ের বাড়িতেই উঠবে!!!

অরণ্য কেন!… যে কেউ এই সিচুয়েশনে এসে ভুল বুঝতে বাধ্য।
যাই হোক বাইরে আবার সাদিয়া একা দাঁড়িয়ে, তাড়াতাড়ি দেখা করে বের হতে হবে আবার। রুদ্র উপরের দরজার কড়া নাড়লো।কেউ দরজা খুলছেনা কিন্তু রুদ্র ভিতরে লিনিয়ার কান্না শুনতে পাচ্ছে।

এবার জোরে কড়া নাড়লো রুদ্র। একটু পরে দরজা খুলে দিলো অবনী। অবনী ভুত দেখার মত চমকে উঠলো, কিরে তুই কোথা থেকে এলি ভাই? বিদেশ থেকে কবে এলি? এই বলেই রুদ্রকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো অবনী।

রুদ্র অবনীকে বলল,ঘরে আসতে বলবিনা? অবনী রুদ্রকে ঘরে নিয়ে এলো।অবনী তখনও ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদেই চলেছে।

রুদ্র লিনিয়াকে কোলে তুলে নিলো।লিনিয়াও কান্নাকাটি করছে! কিরে আপু তোর এই অবস্থা ক্যান,কি হয়েছে বলতো! চল বাসায় চল…আমি তোকে নিতে এসেছি।

অবনী এবার কান্না থামিয়ে স্ট্রংলি বলল…না আমি কোথাও যাবোনা। রুদ্র বলল,তাহলে এখানে কি করবি?

অবনী বলল,কেন এতক্ষণে শুনিসনি যে এখানে আমার সংসার আছে! রুদ্র বলল…ঠিক আছে অরণ্য ভাইয়ের কাছে না যাস,আমাদের বাসায় চল।সেখানেতো কোন সমস্যা নেই।

অবনী বলল,সময় হলেই যাবো তবে এখন না। রুদ্র বুঝতে পারলো অরণ্যের কথাই ঠিক।সে আর বেশি জোরাজোরি করলোনা।

রুদ্রর হাতে থাকা খাবারের ব্যাগগুলো অবনীর হাতে দিয়ে বলল,বিকাল হয়ে গেছে কিছু খাসনি মনে হয়। এখানে খাবার আছে মা দিয়ে দিয়েছে। লিনিয়াকে নিয়ে খেয়ে নে।

অবনী জিজ্ঞেস করলো লিনসার কি অবস্থা? রুদ্র বলল, লিনসা তোর সাথে কথা বলতে চেয়েছে। মোবাইলটা খোলা রাখিস।

আমি যাই তাহলে আমার অনেক কাজ আছে। অবনী বলল,আর একটু থেকে যেতে পারতি! রুদ্র বলল, নারে! বাইরে সা……সাকিব দাঁড়িয়ে আছে। ওকেও নিয়ে আসতি তাহলে! অবনী বলল…

রুদ্র তাড়াহুড়ো করতে লাগলো, না ও আসবেনা।আমি আবার পরে আসবো।ভালো থাকিস। এই বলে রুদ্র তাড়াহুড়ো করে বাইরে বেরিয়ে গেলো।

অবনী পিছন পিছন গেলো। দরজা আটকাতে যাবে তখন দেখলো গেইটের বাইরে সাকিব নয়,রুদ্র একটা মেয়ের সাথে হেঁটে যাচ্ছে। যেহেতু অবনী উপরতলায় থাকে তাই এখান থেকে বাইরের অনেকদূর পর্যন্ত দেখা যায়।

অবনী একটু অবাক হয়ে গেলো। রুদ্র তো অবনীকে সবকিছু বলে তাহলে সাকিব বলল কেন! এই মেয়েটাই বা কে! কাউকে যদি পছন্দ করেই থাকে তাহলে মিথ্যা বলারই কি আছে!

অবনী,তার মা বাবা রুদ্রকে অনেক দিন যাবতই বিয়ের কথা বলে যাচ্ছিলো। এও বলেছিলো পছন্দ থাকলেও যাতে জানায়। রুদ্রই এতদিন রাজি হচ্ছিলোনা।

অবনী মন খারাপ করে দরজা আটকিয়ে দিলো।সবার জন্য খুব খারাপ লাগছে! কি করবে এখন সে!

অবনী ঠিক করলো এখানে আর থাকবেনা সে। চলে যেতেই হবে যেহেতু আকাশ এখানে থাকে।

অবনীর প্রচন্ড ক্ষুধা লেগেছে। লিনিয়াকেও আজ খেতে দেয়নি তেমন কিছু।সকালের ঘটনার পরে অবনীর মনের অবস্থা খুবই বিক্ষিপ্ত ছিলো। তাই কিছু রান্নাও করেনি।

মা হয়তো বুঝতে পেরেই রুদ্রকে দিয়ে এগুলো পাঠিয়েছে।রুদ্র আসার পরে অবনীর কিছুটা ভালো লাগছে কিন্তু একটু সময় না দিয়েই চলে গেলো রুদ্রটা।

অবনী টিফিন ক্যারিয়ার দেখে তাকিয়ে রইলো।এই টিফিন ক্যারিয়ার তো অবনীর বাসার। অরণ্য গতবছর এটা ইন্ডিয়ার রাজস্থান থেকে নিয়ে এসেছিলো।

অবনীর খুব পছন্দ হয়েছিলো ৩ বাটির এই টিফিন ক্যারিয়ার টা। বাটিগুলোর রঙ রুপোর মত আর বাইরে খুব সুন্দর রাজস্থানি নকশা করা।

এটা তো মায়ের বাসায় কখনো নিয়ে যায়নি। এটায় করে সে অরণ্যকে অফিসে লাঞ্চ দিয়ে দিতো।

তাহলে খাবার কি অরণ্য পাঠিয়েছে! কিভাবে সম্ভব! টিফিন ক্যারিয়ার খুলল…এক বাটিতে ভাত,এক বাটিতে অবনীর প্রিয় বড় বড় চিংড়ী ভুনা আর অন্য বাটিতে লিনিয়ার পছন্দের ভুনা খিচুড়ি।

রান্নাগুলো তো তার মায়ের! অবনীর সব গুলিয়ে যাচ্ছে! তাহলে কি মা তার বাসায়! তাই হবে! হয়তো তাদের জন্য অপেক্ষা করছিলো।

অবনী আর দেরি করলো না…লিনসাকে খিচুড়ি দিয়ে সে চিংড়ি ভুনা দিয়ে ভাত খেয়ে নিলো। ইস্ কতদিন মায়ের হাতের রান্না খায়নি…”আজ তার রিজিক অনেক বরকতময়”

অবনী আর লিনিয়ার খাওয়া শেষ হলে অবনী বাসার সব কিছু গুছিয়ে ফেলল।কাল সকালে এই বাড়ি থেকে চলে যাবে। এই বাড়িটার উপরে কেমন একটা মায়া জন্মে গিয়েছে। অল্প ক’দিনেই নিজের বাড়ি ভাবতে শুরু করেছিলো।কিন্তু আকাশকে দেখার পর থেকে সবকিছু এলোমেলো হয়ে গিয়েছে।

অরণ্য ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখলো লিনসা ঘুমিয়ে আছে।অরণ্য লিনসার কপালে আদর করে দিলো! আহা! কতদিন ধরে মেয়ে দুটোর ঘুমন্ত মুখগুলো দেখিনা!

বাসায় ড্রয়িং রুমে এসে তার বাবা আর শ্বশুর শ্বাশুরি কে বলল…আপনাদের আমি একটা প্রস্তাব দিতে চাই কিছু মনে না করলে….

অরণ্যের শ্বাশুরি মা একটু ভয় আর সন্দেহ নিয়েই জিজ্ঞেস করলো…কিসের প্রস্তাব বাবা?

অরণ্য: বিয়ের প্রস্তাব আম্মা…!!!

আম্মা: কি বলছো অরণ্য!!! কার বিয়ের প্রস্তাব?

অরণ্য: আপনার ছেলের জন্য….

আম্মা: কার কথা বলছো… রুদ্র?

অরণ্য: হুম আম্মা…

আম্মা: ওহ্…তাই বলো!

আম্মা যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলেন এটা শোনার পরে…হয়তো দু্:স্চিন্তায় পোড়া মন অন্য কিছু ভেবেছিলো!

অরণ্যের শ্বশুর বলল….অরণ্য একটা ঝামেলাই তো এখনও শেষ করতে পারলাম না,কতদিন ধরে কি যে প্যারার মধ্যে গিয়েছে,এখন মেয়েটাকে পেয়েও পেলাম না তারমধ্যে এসব কি বলছো বাবা!

রুদ্র দেশে যখন এসেছে বিয়ে দেয়াই যাবে কিন্তু আমার মেয়ে আর ছোট নাতনী এই বাড়িতে না আসার আগে আমি এই নিয়ে কোন কথা বলতে চাইনা।

অরণ্যের বাবাও সহমত পোষণ করলেন তার বেয়াইর কথায়।
অরণ্য বলল… আব্বা, আম্মা আমি আসলে খুবই দু:খিত এই ঘটনার জন্য। আপনাদের এতদিনের কস্টের জন্য আমি ক্ষমা চাইছি। আসলে আমার নির্বুদ্ধিতার কারণেই একটার পর একটা ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি ভালো কিছু হবে।

অরণ্যের উপরে অবনীর বাবা মায়ের বরাবরই আস্থা ছিলো। তারা খুব সহজেই অরণ্যের কথা মেনে নিলো।
অবনীর মা বলল,ঠিক আছে বাবা…তাহলে তুমি কি বলতে চাইছো খুলে বলো।

অরণ্য ধীরে ধীরে বলতে লাগলো, রুদ্রকে তো আপনারা অনেকদিন ধরেই বিয়ে করাতে চাচ্ছেন। আর আমার বোন সাদিয়াকেও বাবা বিয়ে করাতে চাচ্ছে তাই বলছিলাম আপনাদের যদি মত থাকে আর ওদের যদি কোন অমত না থাকে এই বিয়েতে, তাহলে আগামীকালই আমি এই বিয়ের আয়োজন করতে চাই।

অরণ্যের বাবা খুশি হয়ে বললেন…আলহামদুলিল্লাহ আমি রাজি আছি।রুদ্রকে ছেলে হিসেবে আমার পছন্দ এখন বেয়াই বেয়াইন কি বলেন!

অবনীর মা সাদিয়াকে যতটুকু দেখেছে তাতে ভালোই লেগেছে।নম্র,ভদ্র…দেখতেও সুন্দরী আছে।এমন একটি ছেলের বউ মনে মনে খুঁজেছে।আর অরণ্যের বোন হলে তো আর কথাই নেই।

অবনীর বাবা বললেন, যারা বিয়ে করবে তাদের আপত্তি না থাকলে আমাদেরও কোন আপত্তি নেই কিন্তু অবনীকে ছাড়া এই বিয়ে কিভাবে হবে!

কি যে বলেন বাবা!!! এই বাড়ির বস না থাকলে কি এই বিয়ে সম্ভব!!! অবনী সঠিক সময়ে চলে আসবে চিন্তা করবেন না আপনি।

কথা শেষ হতে না হতেই সাদিয়া আর রুদ্র ঘরে ঢুকলো…রুদ্র অবনীর কথা সবটা জানালো।

এবার অরণ্য বলল, তোমরা ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নাও তারপরে ছাদে আসো…কথা আছে তোমাদের সাথে…আমি যাচ্ছি।

এই বলে অরণ্য রাহেলা খালাকে ছাদে চা নিয়ে আসতে বলে চলে গেলো।
রাহেলা খালাও খুব খুশি…অবনী আফায় আসবো…আজ সারাদিন রাহেলা খালা অবনী আসার অপেক্ষা করে আছে।

অরণ্য ছাদে আসতেই তীব্র ঘ্রাণ নাকে এসে লাগলো। ইহা অবনীর প্রিয় দোলনচাঁপা ফুলের পাগল করা ঘ্রাণ। অরণ্য দোলনচাঁপা ফুলের ঝাড়ের কাছে গিয়ে দাঁড়ালো। কয়েকটা দোলনচাঁপার থোকা ফুটেছে,আরও কয়েক থোকা ফোটার অপেক্ষায়।

১০-১৫ মিনিটের মধ্যেই সাদিয়া আর রুদ্র ছাদে হাজির, সাথে লিনসাও আছে। এত দ্রুত আসবে অরণ্য আশা করেনি। অরণ্য বুঝলো তার সাথে তাদের মনেরও বেশ তাড়া আছে তাহলে!

অরণ্য রুদ্র আর সাদিয়াকে বসতে বলল…এরমধ্যে রাহেলা খালাও চা নিয়ে হাজির।

অরণ্য লিনসাকে কাছে ডাকলো…মামনী এদিকে এসো।
লিনসা কাছে গেলো বাবার…তোমার কি আম্মুর জন্য খারাপ লাগছে বাবা?
হ্যাঁ বাবা…খুব খারাপ লাগছে…

অরণ্য মেয়েকে বুকে জড়িয়ে ধরে আদর করে দিয়ে বলল…তোমার আম্মু আগামীকালই চলে আসবে…বাবা কথা দিচ্ছি। খুশি এবার?….. হাসো তাহলে…

লিনসা বাবার গলা জড়িয়ে ধরে বলল…”আই লাভ ইউ বাবা”
আচ্ছা মা…এবার তাহলে বাগানের কাজ করো…তোমার যত্ন না পেয়ে সব গাছের মন খারাপ…লিনসা হেসে ফেলল। তারপর বাগানের ছোটখাটো কাজ করতে শুরু করলো।

অরণ্য তাকিয়ে দেখলো সাদিয়া আর রুদ্র মুচকি মুচকি হাসছে আর কথা বলছে। অরণ্য কাছে যেতেই তাদের কথা,হাসি সব উবে গেলো।

অরণ্য বসে তাদের প্রশ্ন করলো…তোমরা কি আঁচ করতে পেরেছো আমি তোমাদের কি জন্য ডেকেছি।

রুদ্র খুব সিরিয়াস হয়ে বললো, জ্বী ভাইয়া বুঝতে পেরেছি অবনী আপুকে কিভাবে বাসায় ফিরিয়ে আনা যায় সেই ব্যাপারে।

অরণ্য বলল, তোমার মাথা বুঝছো শালা! এই মাথা নিয়ে সফটওয়্যার কোম্পানিতে চাকরি করো কিভাবে! তবে তাও ঠিক অবনীকে বাসায় ফিরিয়ে আনাও একটা উদ্দেশ্য।

রুদ্র একটু থতমত খেয়ে বুঝতে পারলো অরণ্য ভাইয়া আসলে কি বলতে চাচ্ছে!

রুদ্র সেটা প্রকাশ না করে বলল, ভাইয়া বলেন তাহলে কি বলতে চান!
অরণ্য খুব সিরিয়াস হয়ে তাদের প্রশ্ন করলো তোমরা কি দুজন দুজনকে বিয়ে করতে রাজি আছো? আই মিন আমার দুই পক্ষের অভিভাবক দের সাথে কথা বলা হয়ে গিয়েছে। এখন তোমরা রাজি থাকলেই বিয়ে হতে পারে।

সাদিয়া তার ভাইয়ের এমন অকসাৎ কথায় একটু লজ্জা পেয়ে গেলো। তারপরও সে বলল, ভাইয়া এই অবস্থায়!!!

অরণ্য বলল,তোমরা রাজি থাকলে আগামীকালই বিয়েটা হবে,আমি কি করতে চাচ্ছি তোমাদের খুলে বলছি…

সাদিয়া আর রুদ্র সম্মতি জানালে অরণ্য সবকিছু তাদের বুঝিয়ে বলল যে এখন কি করতে চায়!

সাদিয়া আর রুদ্র অরণ্যের প্লানে রাজি হয়ে গেলো…অবনী আপুকে ওখান থেকে যত দ্রুত সম্ভব ফিরিয়ে আনতেই হবে।

অরণ্য বলল, তাহলে কাজে লেগে পরো শালা বাবু! তুমি আর সাদিয়া তাহলে বিয়ের শপিং আজ রাতের মধ্যে সেরে ফেলো। বিয়েটা ঘরোয়া ভাবেই হোক।

তারপর মহারাণী ঘরে ফিরলে নাহয় বাকি প্রোগ্রামগুলো ধুমধাম করে করা যাবে।

সাদিয়া আর রুদ্র বিয়ের শপিংয়ে চলে গেলো। লিনসা তার বাবাকে এসে প্রশ্ন করলো। বাবা… মামা যদি ফুপীকে বিয়ে করে তাহলে আমি মামী আর ফুপা কাকে ডাকবো!

অরণ্য হেসে ফেললো লিনসার কথায়। অরণ্য লিনসাকে বলল…এটা তো কঠিন প্রশ্ন মামনী।

তোমাকে নাহয় ভেবেচিন্তে উত্তর দেবো।এবার নিচে চলো আমরা বিয়ের জন্য প্রস্তুতি নেই।

অরণ্য নিচে এসে তার বাবা আর অবনীর বাবাকে বলল,আপনারা তাহলে বাজারে চলে যান,আগামীকালই বিয়ে হবে। আম্মার কাছ থেকে লিস্ট নিয়ে যান।আমি কাজি ঠিক করতে যাই তাহলে।

রাহেলা খালাকে বলল, খালা তুমি অবনী না আসা পর্যন্ত থাকতে পারবা নাহ! রাহেলা খালা বলল, পারুম না মানে একশবার পারুম।

আচ্ছা তাহলে তুমি তাহলে বাসাটা ভালোভাবে ক্লিন করো। অবনী না থাকার কারণে বাসার অবস্থা খুব খারাপ।

ঘর পরিস্কার হলে আম্মার সাথে রান্নার কাজে সাহায্য করবা। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে সাথে আর একজনকে নিয়ে নিতে পারো।

অরণ্য লিনসাকে ডেকে বলল, মামনি তুমি যতটুকু পারো ঘর গুছাতে থাকো আমি আসতেছি।

লিনসা বলল…ওকে বাবা…বাই বাই
চলবে….
লেখনী: #নুসু
বি:দ্র: শুধু লিখেই যাচ্ছি, গত ৩ পর্ব ধরে বলতেছি শেষ পর্ব দেবো কিন্তু গল্পটাকে শেষ করতেই পারছিনা। এবার কিছুই বলবো না। হুট করেই শেষ পর্ব দিয়ে দেবো🙂

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here