শেষটা_ছিলো_অন্যরকম,পার্টঃ5,6

শেষটা_ছিলো_অন্যরকম,পার্টঃ5,6
লেখক_সাব্বির আহাম্মেদ
পার্টঃ5

বর্ণ একের পর এক কল দিতে থাকলো মায়ানকে, কিন্তু ওইদিকে মায়ানের রিসিভ করার কেনো খবর নেই, থাকবে কি করে ফোনটা তো ব্যাগে ফেলে রেখেছে, আর ব্যাগটা তো বর্ণদের বাসায় ।

আজ দুই দিন হয়ে গেলো গ্রামে এসেছে মায়ান,
তার বাবা আগের থেকে কিছুটা সুস্থ, মায়ানের সেবায় ।

– যাক অনেক দিন পর আদরের সন্তানকে কাছে পেয়ে সুখের কেনো শেষ নেই মায়ানের বাবার । মায়ান গ্রামে গিয়ে সবার সাথে দেখা করলো । অনেকদিন পর পুরো গ্রামটা ঘুরলো সে, ছোট বেলার বন্ধুদের কাছে পেলো অনেকদিন পর তাদের সাথে আড্ডা দিলো ।

এইসব কিছুতে মায়ান বর্ণের কথা পুরাপুরি ভুলে গেছে । আর থাকবে কি করে বর্ণ আর তার মধ্যে তো কেনো সম্পর্ক নেই ।

অন্যদিকে বর্ণ আগের থেকে খুব শুকিয়ে গেছে । ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া করে না । ভার্সিটিতে গিয়েও চুপচাপ থাকে ।

ক্যাম্পাসের এক কোণে উদাসীন মনে বসেছে বর্ণ । মায়ান চলে যাওয়ার পর থেকে, বর্ণ তেমন কারো সাথে কথা বলে না, ভার্সিটিতে এসে ক্লাস করে তারপর সোজা বাসায় চলে আসে এটাই ছিলো নিত্যদিনের রুটিন তার ।

এরিই মধ্যে বর্ণের দিকে একটা হাত বাড়িয়ে দিলো কেউ
– হাই আমি মাহিন,
বর্ণের এখন কেনো ইচ্ছা‌ নেই কারো সাথে কথা বলার । সে উঠে চলে যেতে লাগলো । পিছন থেকে আবার ছেলেটা তাকে ডাক দিলো, এই যে মিসস, আমি আপনার সাথে কথা বলতে চাচ্ছি আপনি চলে যাচ্ছেন কেনো..

– বর্ণের এইবার প্রচুর রাগ উঠলো কোনোমতে রাগকে কন্টোল করে সে ছেলেটাকে কিছু বলতে যাবে, তবে সে তা করলো না । তার মাথায় অন্য বুদ্ধি আসলো । সে ছেলেটার সাথে কিছুক্ষন কথা বললো , যাওয়ার সময় বর্ণ ছেলেটাকে বললো ওকে কালকে দেখা হবে এখন যাই বায় !!

– সপ্তাহ খানেক পর মায়ানের আব্বু তাকে বললো
দেখ মায়ান অনেকদিন হলো শহর থেকে গ্রামে এসেছিস । ওইদিকে শুনলাম তর ফুফুর শরীরটাও তেমন ভালো নেই আমি বলে কি তুইইই একবার তর ফুফুকে দেখে আয় ।

– মায়ান প্রথমে আপওি করলো কিন্তু পরে বাবার জোরাজোরিতে রাজি হতে হলো তাকে । ওই বাসায় যাওয়া মানে জল্লাদ খানায় যাওয়া ।

পরের দিন,
হেই বর্ণ কেমন আছো ( মাহিন.)
হুম ভালো তুমি কেমন আছো..

আচ্ছা চলো ওইদিকটা গিয়ে বসি । মিলি তানহা তো পুরা অবাক । মিলি বর্ণের কাছে গিয়ে বলে কিরে ব্যাপার কী রে
ইদানিং ভার্সিটিতে তুই আসলে কথা বলতি না । আমাদের এড়িয়ে চলতি । কিন্তু আজ এতো খুশি কেনো আবার সাথে মাহিনও আছে ব্যাপার কি ??

বর্ণঃ- ব্যাপারটা তেমন কিছু না । সময় হলে সব বুজতে পারবি !!

পরের দিন সকাল বেলা কলিংবেলের আওয়াজে বর্ণের ঘুম ভেঙ্গে গেলো, চোখ কচলাতে কচলাতে দরজাটা খুলে তো সে শকড হয়ে গেলো ।‌ মূহর্তের মধ্যে চোখের ঘুম ভেনিস হয়ে গেছে তার, মায়ান তার সামনে দাড়িয়ে আছে । আগে যেমন ক্ষ্যাত দেখা যেতো কিন্তু এখন তা দেখা যাচ্ছে না । একদম অন্যরকম লাগছে মায়ানকে । মায়ান বর্ণকে দেখে কিছু বলতে যাবে এর মধ্যে বর্ণ চলে গেলো কেনো কথার সুযোগ না দিয়ে মায়ানকে,

– বর্ণের এমন অচারণে মায়ান একটু বিস্মিত হয় !!

– আরে মায়ান কখন আসলে, ( ফুফু)
এইতো এখুনি ( আমি )
ফ্রেশ হয়ে টেবিলে আসো আমি খাবার বাড়ছি, ( ফুফু.)

মায়ান ফ্রেশ হয়ে টেবিলে বসলো, বর্ণ আসছে না দেখে মায়ান ফুফুকে জিজ্ঞাসা করলো সে আসবে না ফুফু,

– আরে তার কথা বইলো না, তুমি যেইদিন চলে গেছো সেইদিন থেকে খাওয়া দাওয়া কমিয়ে দিয়েছে সে , আর কেমন জানি চুপচাপ হয়ে গেছে !!

– তুমি একটু বিষয়টা দেইখো তো ন বাবা !!

– মায়ানের মনে বিষয়টা একটু নাড়া দিলো, বর্ণ মেয়ে হিসাবে রগচটা, একটু বদমেজাজি, তবে তার মনটা ভালো, ভালোবাসার হাতছানি দেয় কারো জন্য.!!
– তাহলে কি সব আমার জন্য হয়েছে !!

মায়ান খাবারটা শেষ করে নিজের রুমে গেলো, সে যখন বাসায় গিয়েছিলো তখন রুমটা অপরিষ্কার ছিলো আগোছোলো ছিলো !! তবে রুমটা এখন পরিপাটি এবং সুন্দর করে গোছানো রয়েছে …

– ব্যাগটা খুলে দেখে ফোনটা, ফোনটা অন করতেই বর্ণের কল, টেক্সট, মেসেজ সব কিছুতে ভরপুর । মায়ান এখন বুজতে পারছে ফোনটা না নিয়ে সে কত বড় ভুল করছে ।

ভাবলো রাতের খাবারের সময় বর্ণ আসবে, কিন্তু আসে নি !!
খাওয়াটা শেষ করে বর্ণের রুমে গেলো মায়ান । কিন্তু সেখানে নেই বর্ণ তাহলে কোথায় ?? ছাদে হতে পারে…

এইবার মায়ানের অনুমানটা সত্য হলো, ছাদের এক কোণে দাড়িয়ে বর্ণ আকাশের চাদঁটা দেখছে আর তার পছন্দের গান শুনছে

“” মনের জোড়ে চলছে দেহ,
দেহের ভিতর মন,
সে মনে আজ লাগছে ভালো রুপমনির কাষ্ণন,
” সে তো আসে যায়, সে তো আসে যায়,
যার জন্য চান্দে চান্দে এতো চন্দ্রগ্রহণ..

এইটুকু শুনার পর পরল বর্ণকে মায়ান ডাক দিলো.. বর্ণ.!!
বর্ণ মায়ানের ডাক শুনে পিছনে তাকিয়ে বললো কিছু বলবেন,
মায়ানঃ- হুম..
বর্ণঃ- তো বলেন??
মায়ানঃ- কেমন আছেন.
বর্ণঃ- ভালো !!
শুনলাম আপনি ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করছেন না কিন্তু কেনো !!

বর্ণ. এটা কারো অজানা নয়, কিন্তু আপনি আমাকে এইসব জিজ্ঞাসা করছেন কেনো, আপনাকে তো আমি আর প্যারা দিচ্ছি না আপনি আপনার মতো যতদিন ইচ্ছা থাকুন কেউ না করবে না ??

– মায়ানঃ- আমাকে ভালোবাসো তুমি…?? মায়ানের মুখে এই‌ কথা শুনে বর্ণ থমকে যায় কি বলবো বুজতে পারছে না ?
বর্ণঃ- জানি না ।
মায়ানঃ- আমি জানি তুমি অভিমান করছো এবং সেটার পাল্লাটাও ভারি তবে, আমার ফোনটা আমার ব্যাগে… এইটুকু বলতেই মায়ানকে থামিয়ে দিলো বর্ণ‌.

বর্ণঃ- হয়েছে আপনার লেকচার দেওয়া এখন আমি যাই… বায়. !!

বর্ণের এমন ব্যবহারে মায়ান খুব কষ্ট পেলো, বর্ণকে পিছন থেকে ডাক দিলো কিন্তু বর্ণ না শুনে চলে গেলো, আকাশের দিকে তাকিয়ে মায়ান দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো

“” থাক না কিছু কথা মনে, আমার কথা গুলো না বলাই থাক কথা গুলো রেখে দিবো সব অনুভবে !! ..

– বর্ণের চোখে ঘুম নেই চোখের পানিতে বালিশ ভিজে যাচ্ছে তার, মায়ানের ওপর অভিযোগ টা নেই তার তবে অভিমানটা আছে !! এই অভিমানের জেরে মায়ানকে এতোদিন. পর কাছে পেয়েও খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ভালোবাসাটা বলতে পারিনি সে….

~~~~~~~~~~~~~~~
“” পৃথিবীর সব থেকে বেশি দূরত্ব কোনটি জানো??
তা হলো আমি তোমার সামনে থাকি, কিন্তু তুমি তা জানো না আমি তোমায় কতটা ভালোবাসি , “””

– এটাই হলো আমার আর তার ভিতরের দূরত্ব,

সম্পর্কে রাগ বলতে কিছু নেই, যা আছে অভিমান !! বর্ণের হয়তো অভিমানটা বেশি !!
একটা মানুষ কখনো তার প্রিয়জনের ওপর রাগ করে না, যা করে তা হচ্ছে অভিমান!! আর এই অভিমানটা আসে, কিছু না বলা কষ্ট থেকে…!!

চলবে

#শেষটা_ছিলো_অন্যরকম
#লেখক_সাব্বির আহাম্মেদ
#পার্টঃ6

পরের দিন

সকাল থেকে মায়ান বর্ণের পিছু ছাড়ছে না । বর্ণ যেইদিকে যায় মায়ানও সেইদিকে যায়, বর্ণ খানিকটা রাগি লুক নিয়ে পিছনে তাকলে মায়ানও পিছনে ঘুরে যায় ।

– রাবেয়া বেগম তো ওদের কাহিনি দেখে কিছুই বুজছে না ।

সকালে খেয়ে দেয়ে বর্ণ ভার্সিটিতে চলে গেলো । মাহিনকে কল দিয়ে আসতে বললো দ্রুত !!

মায়ানকে তার ফুফু একটা কাজ দিয়েছে তাই সে যেতে পারে নি, বর্ণের সাথে!!

মাহিন বর্ণের কাছে এসে বললো..
– হুম বলো কেনো কল দিছো..
তুমাকে যা যা করতে বলছি ওইদিন মনে আছে তো !!
– হুম মনে আছে, তো আজকে করতে হবে নাকি…
হুম আজকে করতে হবে একটু পর সে এসে পড়বে.. এই বলে তারা দুজন ক্লাসে চলে গেলো !!

– মায়ান কাজটা সেরে দ্রুত বর্ণের ভার্সিটিতে গেলো, ভার্সিটিতে আসলো তবে দারোয়ান ডুকতে দিচ্ছে না কারণ সে বহিরাগত তাই । কি করবো মায়ান বুজতে পারছে না । যেভাবেই হক তাকে ডুকতে হবে । অনেকক্ষণ দাড়িয়ে থাকলো সে দারোয়ানকে বেটাকে অনেক অনুরোধ করলো কাজ হয় নি কেনো ।

– দূর থেকে সাকিব মায়ানকে দেখে চিনে ফেললো আর মায়ান ভাই না, কি খবর আর কখন এলেন যে, চলেন ভিতরে চলেন ‌‌..

– এরপর আর দারোয়ান মায়ানকে আটকালো না,

ভাইয়া আপনি এখানে বসেন আমি ক্লাসটা করে আপনার কাছে আসছি !!

মায়ানঃ- ওকে,

সাকিব ক্লাসে ডুকে বললো ওইই বর্ণ মায়ান এসেছে…
বর্ণঃ- কোথায় সে..
মায়ানঃ- গাছ তলায় বসে আছে.. আর ক্লাস শেষ করে বলছে তোকে দেখা করতে তার সাথে…

ক্যাম্পাসের গাছতলায় অনেকক্ষণ বসে রইলো মায়ান , বোরিং লাগছে খুব, কখন যে বর্ণের ক্লাস শেষ হবে সেই অপেক্ষা আছে সে.. এই যে ভাইয়া পরিচিত একটা কন্ঠের ডাকে মায়ান পিছনে ঘুরে তাকালো…

– আরে তুমি কেমন আছো ( ওইদিন ভার্সিটিতে ধাক্কা যে দিলো সেই মেয়েটা.)

মেয়েঃ- জি ভালো আপনি কেমন আছেন ভাইয়া আপনাকে তো দেখা যায় না এতোদিন কোথায় ছিলেন..

মায়ানঃ- গ্রামে ছিলাম আব্বু অসুস্থ তো তাই..
মেয়েঃ- ওহ আচ্ছা..

বর্ণ ক্লাস থেকে বের হয়ে দেখলো মায়ানের সাথে ওই মেয়েটি কথা বলছে, বর্ণের মাথায় চৌএিশ ডিগ্রী সেলসিয়াস রাগ উঠে গেলো । মন চায়তাছে ওই মেয়েকে পানিতে নিয়ে চুবায়তে আর মায়ানকে কষে একটা থাপ্পড় দিতে । রাগ কে কোনো মতে কন্টোল করে ক্যাম্পাসের দিকে হাটা শুরু করলো বর্ণ

– বর্ণকে দেখে মায়ান বর্ণের দিকে ছুটে গেলো..
মেয়েঃ- আরে ভাইয়া কোথায় যাচ্ছেন আমার কথা তো শেষ হয়নি এখনো . ..
মায়ানঃ- পরে আরেক সময়ে কথা বলবো এখন আমায় যেতে হবে,

– বর্ণের কাছাকাছি যেতেই হুট আরেকটি ছেলে বর্ণের হাত ধরে হাটা শুরু করলো, মায়ান থমকে গেলো, ছেলেটা বর্ণের হাত ধরলো অথচ বর্ণ কিছু বলছে না কেনো.. এট দেখে আরো অবাক হচ্ছে মায়ান. বর্ণের কাছে গেলো সে.

মায়ান বললো- এই ছেলেটা কে, আর কেনোই বা তুমার হাত ধরেছে..??

বর্ণঃ- সে কে আপনি জেনে কি করবেন । আর তার আগে বলেন আপনি কেনো এখানে এসেছেন ।

মায়ান বর্ণের কথার জবাব না দিয়ে ছেলেটির দিকে তাকিয়ে বললো এই ছেলে তার হাত ছাড়ো আর এখান থেকে চলে যাও..

মাহিনঃ- কেনো ভাই আমি তার হাত ধরলে আপনার কি সমস্যা আর আপনি কে কোথার থেকে এসে বলছেন তার হাত ছাড়বো হুম.. !!

মায়ানঃ- বেশি কথা বইলো না পরে খারপ হবে কিন্তু..

মাহিনঃ- কি খারাপ হবে এই বলে মায়ানের দিকে আগলো ছেলেটি । মায়ানের মাথায় রক্ত উঠে গেলো সে হাত মুষ্ঠি করে মাহিনের চাপা বরাবর এক ঘুষি মেরে বসলো ।
মূহর্তে মাহিন মাটিতে পড়ে গেলো, মায়ান আর মাহিনের এইরকম হট্টগোলে ক্যাম্পাসের সবাই এসে জড়ো হলো ।

– বর্ণের এই মূহর্তে মাথায় কিছু ধরছে না । সে কি ভাবছে আর কি হয়ে গেলো । সে এইরকম চাই নি সে চেয়েছে মায়ানকে একটু জোলাস ফিল করাতে । আর তা যে বিরাট বড় ক্যাচাল হয়ে যাবে সে ভাবতে পারিনি ।

– মাহিন উঠে মায়ানকে মারতে যাবে তার আগেই সাকিব মাহিনের হাত ধরে ফেললো, কি শুরু করছিস পিন্সিপাল আসছে ।

পিন্সিপাল এসে বলো এই এখানে কি হয়েছে এতো হট্টগোল কেনো । আর মায়ানের দিকে তাকিয়ে বললো এই ছেলে তুমি কে তুমি তো আমাদের ভার্সিটির নও । দাড়াও আমি পুলিশকে কল করছি, ভার্সিটিতে মারামারির অভিযোগে তুমাকে নিয়ে যেতে
মায়ান পিন্সিপালের কথার জবাব না দিয়ে বর্ণের দিকে চেয়ে রইলো !!

– বর্ণ এই‌ মূহর্ত কি করবে বুজতে পারছে না । কেনো মতো মুখটা খুলে বললো আসলে স্যার হয়েছে কি??

– সাকিবকে ইশারা করলো মায়ানকে এখান থেকে নিয়ে যেতে, সাকিব মায়ানকে সেখান থেকে নিয়ে গেলো । একটা রিক্সা ডেকে মায়ানকে উঠিয়ে দিলো আর বললো সোজা বাসায় যেতে বললো..

– মায়ানের এখনো রাগ কমেনি । ওই ছেলের থেকে বর্ণের উপর তার রাগ উঠছে খুব । বর্ণ সেখানে থেকোও কিছু বললো না,

বর্ণঃ- আসলে স্যার এইখানে সমান্য ভুল বোঝাবোঝিতে ঝামেলাটা হয়েছে । আপনি এতো সিরিয়াস হবেন না প্লিজ ।

পিন্সিপালঃ- ওকে ঠিক আছে আমি তুমার কথা শুনে ক্ষান্ত হলাম পরবর্তীতে এমন ঝামেলা কেউ করলে আমি তাকে ভার্সিটি থেকে বের করে দিবো কিন্তু ।

এই বলে পিন্সিপাল হন হন করে হেটে চলে গেলো ।
এতোক্ষনে বর্ণ হাফ ছেড়ে বাচলো..পিন্সিপাল চলে যাওয়াতে বর্ণকে সবাই ঘিরে ধরলো মিলি তানহা সাকিব..

মিলি বলো এটা কি হলো, তুই কি করছিস কিছুই তো বুজতে পারলাম না । সেইদিন জিজ্ঞাসা করছিলাম তুই বলছত সময় হলে সব বুজমু তাহলে কি এটাই দেখার কথা ছিলো নাকি..??.
বর্ণ মিলির কথার জবাব না দিয়ে সাকিবের কাছে গিয়ে বললো সরি দোস্ত আমার জন্য তোকে কষ্ট পেতে হলো !! আর আমি তোকে কি বলছিলাম আর তুই কি করছিস হুম ।
মাহিন বললো আরে আমি কি করবো তর হিরোই তো আমার গায়ে হাত তুললো । এর শোধ আমি তুলবোই দেখে নিস ।

ভুলোও ওইরকম কাজ করতে যাবি না তার আগে একটা আচড় পড়লো তর সাথে খারাপ হবে ওকে । যা তরে ট্টিট দিবো । ( বর্ণ)

আর ট্টিট ( মাহিন)

বর্ণ এইবার মিলির দিকে তাকিয়ে বললো এতো দোষ না খুজে আপনারা একটু সহযোগিতা করে তাকে কেন্টিনে নিয়ে যাবেন আমার সাথে…

হুম শিউর এই ধর ধর.. ( তানহা )

অনেক ঝড়ঝামেলা ফেলে বর্ণ ভার্সিটিতে থেকে বাসায় আসলো..

বাসায় আসতেই মার অসহ্য প্রশ্নবিদ্ধ কথা তার ভালো লাগে না
কিরে তর আজকে এতো দেরি হলো কেনো..( রাবেয়া বেগম )
বর্ণঃ- একটা কাজ ছিলো তাই দেরি হয়ে গেছে ( তুমার আদরের ভাইয়ের ছেলে যা করেছে তা তুমি তো জানো না জানলে চোখ কপালে হবে..)

– কিরে কি হলো বললল.. ( রাবেয়া বেগম..)

– আরে বলছি না একবার কতবার বলবো এখন যাও জলদি খাবার বাড়ো খুব ক্ষুধা লাগছে ( বর্ণ.)

রাতে খাবারের সময় মায়ান চুপচাপ খেয়ে চলে গেলো একটি কথা বললো না ।

কিরে মায়ানের কি হয়েছে রে যখন থেকে বাসায় আসলো তখন থেকে কেনো কথা বলছে না সারাক্ষণ চুপ চাপ আছে কি হয়েছে তার তুই কি কিছু জানিস নাকি… ( রাবেয়া বেগম..)

বর্ণঃ- আমি কি করে জানবো তুমি তাকে গিয়ে জিজ্ঞাসা করো

রাবেয়া বেগম আর কিছু বললো না । বুজতে পারলো বর্ণের সাথে কিছু হয়েছে । খাবারটা শেষ করে বর্ণ মায়ানের রুমে গেলো দেখলো সেখানে মায়ান নেই, কোথায় গেলো হয়তো ছাদে আছে ।.

– ছাদে গিয়ে দেখে মায়ান চুপ করে বসে আছে । বর্ণকে দেখে উঠে চলে যেতে লাগলো, এই দাড়ান বলছি বর্ণ বললো

মায়ানঃ- কি ??

বর্ণঃ- আজকে ভার্সিটিতে গিয়ে এমন কাজ করছেন কেনো ??
মায়ানঃ- জানি না !!
বর্ণঃ- খুব হিরো হয়ে গেছেন হুম, যেখানে ইচ্ছা মারামারি শুরু করে দিবেন ।

মায়ান আর কিছু না বলে বর্ণের দিকে তাকিয়ে বললো, আমাকে নিয়ে এতো ঝামেলা আপনার । আর আজকে ভার্সিটিতে না গিয়ে দেখতে পারতাম না আপনার বফকে যাক ভালো লাগলো, যাক শুভকামনা আপনাদের নতুন সম্পর্কে ।
আমি আর কখনো আপনাদের মাঝে বাধা হয়ে দাড়াবো না ।

– বর্ণ তো মায়ানের কথায় হতবাক । এটা কি হলো, তবে বুজতে পারলো মায়ান বড্ড অভিমান করেছে । তবে মায়ান যা বলে তা করে, ভয় করছে সে কি মায়ানকে আবার হারিয়ে ফেলবে নাকি ?? বড্ড ভয় লাগছে তার, সেই ভয়টা হলো মায়ানকে হারানের ভয় । মানুষ সবচেয়ে বেশি কাদে প্রিয়জনকে হারানের ভয়ে ।

কালকে যেভাবেই হক মায়ানকে আটকাতে হবে । বড্ড ভালোবাসে ফেলেছে মায়ানকে ।

– মায়ান চলে যাবে বুকের মধ্যে পাড় ভাঙ্গার শব্দ শুনলোবর্ণ””

পরের দিন সকালে উঠে মায়ান ব্যাগ গুছাতে লাগলো উদ্দেশ্য আর থাকবে না সে । মিথ্যা শহরে থাকার চেয়ে তার গ্রামে থাকা ভালো !! বাবাকে বুজিয়ে বললে বাবা মেনে নিবে তার কথা । বর্ণ যদি তাকে ছাড়া ভালো থাকতে পারে তাহলে থাকুক । আমি চাই সে ভালো থাকুক সেটা হয় আমাকে ছাড়া বা আমাকে নিয়ে । তবে বর্ণের ভালোর জন্য হলোও আমাকে এখান থেকে চলে যেতে হবে ।

– ফুফুকে অনেক ম্যানেজ করে চলে যাবো এমন সময় বর্ণ চলে আসলো ।

– এই মেয়েটাও আর আসার সময় পেলো না ।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here