শেষটা ছিলো অন্যরকম,পার্টঃ2

শেষটা ছিলো অন্যরকম,পার্টঃ2
লেখক_সাব্বির আহাম্মেদ

বর্ণ একের পর এক বই ছুড়ে মারলো মায়ানের গায়ে । মায়ান হকচকিয়ে উঠে বললো কি হয়েছে ??

– বর্ণঃ এই বাসায় এতো সময় কেউ ঘুমায় না । আর আপনি কোনখানের জমিদার যে এতো বেলা করে ঘুমাচ্ছেন উঠেন জলদি না হলে পানি ঢেলে দিবো ।

বর্ণের কথা শুনে মায়ান শোয়া থেকে উঠে ওয়াসরুমে চলে গেলো ।

– মায়ান ওয়াসরুমে গিয়ে মনে মনে বলছে আল্লাহ কোন যামানায় ফেললা আমাকে আমারে‌ তো এই‌ মেয়ে মেরে ফেলবে মনে হচ্ছে । এই মেয়ে থেকে আপতত এখন আমাকে বাচিয়ে দেও..

– অনেক্ষণ ধরে মায়ান বের হচ্ছে না দেখে

বর্ণ চিৎকারে বললো এই যে জমিদার আপনি ওয়াসরুমে এতোক্ষণ কি করেন । দ্রুত বের হন??

মায়ান পদ্যুওরে বললো আপনি এখানে কি করেন । আমার যখন ইচ্ছা বের হবো আপনার কি ??

বর্ণঃ- আপনি বের হবেন না ।
মায়ানঃ- না

বর্ণ আর কিছু না বলে চলে গেলো রাগ করে..

মায়ান আস্তে করে দরজাটা খুলে উকি দিয়ে দেখলো বর্ণ আছে কি না । না কোথাও নেই তো যাক বাবা বাচা গেলো ।

– সকালের খাওয়া দাওয়া শেষ করে ফুফু মায়ানকে ডাক দিলো..

এই মায়ান এইদিকে শুনো তো ??
জি ফুফু বলেন.. ফুফু তার হাতে একটা কাগজ ধরিয়ে দিয়ে বললো এটা নেও আর বর্ণের ভার্সিটিতে গিয়ে তাকে দিয়ে আসো..

মায়ানঃ- ওকে !!

রাবেয়া বেগম তাকে ঠিকানা আর আসা যাওয়ার ভাড়াটা দিয়ে দিলো ।

মায়ানের বর্ণের ভার্সিটিতে যেতে সময় লেগেছে দশমিনিট, ভার্সিটির গেটের সামনে ইয়া বড় করে ভার্সিটির নাম লিখা।

-মায়ান গেট দিয়ে ডুকতে যাবে তাড়াহুড়া করে এক মেয়ে মায়ানকে ধাক্কা দিয়ে চলে গেলো । ধাক্কাটা এতো জোরে হয়েছে মায়ান তাল সামলাতে না পেরে পড়ে গেলো । উঠে মেয়েটাকে বকতে যাবে তার মধ্যে মেয়েটি হাওয়া । আর কিছু না ভেবে বর্ণকে খুজতে গেলো সে

– ক্লাস শেষ করে বর্ণ ক্যাম্পাসের মাঠে বসে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে. ‌
তানহাঃ- কিরে শুনলাম তোদের বাসা নাকি তর কাজিন এসেছে.?

বর্ণঃ- হুম!! আর বলিস‌ না এই বেটাকে দেখে আমার সুবিধার মনে হচ্ছে না কেনো একটা মতলবে এসেছে আমার‌ মনে হচ্ছে !!

মিলিঃ- হতোও পারে আবার নাও হতে পারে তুই এতটা শিউর হলি কিভাবে ।
বর্ণঃ- আরে বেটাকে দেখে বুজা যায় ।

সাকিলঃ- ওকে আবার দেখিস ওই‌ বেটার প্রেমে টেমে পড়ে যাইস না কিন্তু এই বলে সবাই হেসে উঠলো..

বর্ণের তাদের হাসাহাসি দেখে সহ্য হচ্ছে না । এই তোরা থামতো.

ফাউল কথা নিয়ে মজা করতে হয় না সবসময়ে.. বর্ণের কথায় সবাই চুপ হয়ে গেলো..

– মায়ান অনেক খুজে বর্ণকে দেখতে পেলো কাছে গিয়ে ডাক দিলো এই যে শুনছেন.. বর্ণ মায়ানের আওয়াজ শুনতে পেলো না । বর্ণের ডাক শুনতে পেলো মিলি..

মিলি এমন টাইপের মেয়ে কেনো হ্যান্ডসাম সুন্দর ছেলে দেখলে তার মাথা ঠিক থাকে না । তেমনটি এখন মায়ানকে দেখে হচ্ছে.

মিলি মায়ানের দিকে তাকিয়ে বললো আমাকে বলছেন ‌..
মায়ান হাত দিয়ে ইশারা করে বর্ণেকে ডাকতে বললো…

– এইইই বর্ণ দেখ ওইই মজনুটা তোকে ডাকে..?? বর্ণ মাথাটা ঘুরিয়ে বললো কে??

-দেখলো মায়ান দাড়িয়ে আছে..

বর্ণ এইবার মায়ানের দিকে তাকিয়ে বললো আপনি এইখানে কি করে এখানে আসলেন ?? মায়ান কিছু বলতে যাবে তারে আগে মিলি বললো

মিলিঃ- কে রে তুই চিনিস নাকি!!.
বর্ণঃ- হুম আরে আমার কাজিন বলছিলাম যে গ্রাম থেকে এসেছে আসছে সে ওটা

তানহাঃ- ওয়াও কত হ্যান্ডসাম কি মায়াবি চেহারা ইসস.

বর্ণ তানহার দিকে তাকিয়ে বললো থামবি তুইইই নাকি লাথি খাবি! বর্ণের কথা শেষ না হতেই সাকিল বললো বর্ণ একবার ওইদিকে তাকিয়ে দেখ..

-সিনটা কিন্তু সুন্দর হচ্ছে.??

বর্ণ তাকিয়ে দেখলো এর মধ্যে মিলি মায়ানের সাথে ভাব জমিয়ে ফেলছে‌.. বর্ণ এইবার তার রাগকে কেনো মতে কন্টোল করে মিলিকে ডাক দিলো এইই মিলির বাচ্ছা এইদিকে আয়..

– মিলি বর্ণের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো দাড়া আসছি!!
বর্ণ রাগী লুক নিয়ে বললো তুইই আসবি কিনা নাকি আমি কানের নিচে দিমু তোকে??

– অগত্য মিলি আর উপায় না দেখে মায়ানের কাছ থেকে চলে আসলো..

– বর্ণ মায়ানের দিকে তাকিয়ে বললো আপনি এখানে কেনো এসেছেন, আমি কোথায় যাই কি করি তা দেখতে নাকি..

মায়ানঃ- না তা না..
বর্ণঃ- তাহলে কি??

আসলে ফুফু আমাকে এইটা দিয়ে পাঠিয়েছে, আপনার লাগবে বলে..

বর্ণঃ- ওহ আচ্ছা ঠিক আছে তো এখন এখানে দাড়িয়ে না থেকে বাসায় গিয়ে কাজ করেন যান .

– এরিই মধ্যে মায়ানকে যে মেয়ে ধাক্কা দিলো তখন, সে এসে মায়ানকে এসে সরি বললো..

মেয়েটিঃ- আসলে ভাইয়া তখন তাড়াহুড়া ছিলো তাই বেখায়ালে আপনার সাথে ধাক্কা লেগে গেছিলো আপনি কিছু মনে কইরেন না..
মায়ানঃ- হুম সমস্যা নেই..

মায়ান মেয়েটির সাথে কথা বলতে লাগলো এটা দেখে বর্ণ বললো কি হলো আপনাকে না বাসায় যেতে বললাম আপনি এই মেয়ের সাথে কি কথা বলছেন । আর এই মেয়ে তুমার কি ক্লাস নেই ক্লাসে যাও.

– মেয়েটি বর্ণের দিকে খানিকটা রাগী চোখে তাকিয়ে বললো ভাইয়া চলেন তো আমরা ওইদিকে গিয়ে কথা বলি…

– বর্ণ কিছু বলতে যাবে তানহা থামিয়ে দিয়ে বললো, কিরে ওই মেয়ে কথা বলছে তাতে তর সমস্যা কি হুম!! তর‌‌ এতো ফাটছে কেনো.

– বর্ণ আর কিছু বললো না

কিছুক্ষণ পর পর বর্ণ মায়ানের দিকে তাকাচ্ছ রাগী চোখে আর মনে মনে বললো বেটা খচ্ছর আমি বাসায় যেতে বললাম তা না করে সে মেয়েটার সাথে কথা বলছে ।

– দাড়া দেখাবো তোকে তর কথা বলা বাসায় গিয়ে দেখ একবার.. সব কথা বলার শখ মিটিয়ে ফেলবো..

রাতের খাবার খেয়ে মায়ান ছাদে এসে চাদ দেখছে, গ্রামের‌ কথা মনে পড়ছে তার.!!

বর্ণ প্রথমে তার ঘরে গিয়ে তাকে না পেয়ে বললো

-বেটা খচ্ছর কোথায় গেলো ছাদে এসে দেখে মায়ান ছাদে রোলিংয়ে বসে চাঁদ দেখছে বর্ণ মায়ানের কাছে গিয়ে বললো
আপনাকে তখন আমি বললাম বাসায় যেতে । আপনি বাসায় না গিয়ে ওই মেয়েটার সাথে কি কথা বলছেন..

– মায়ান বর্ণের দিকে তাকিয়ে আবার চাদের তাকালো..

এইবার রাগীস্বরে বললো কি হলো কথা কানে যাচ্ছে না ।

মায়ানঃ- কানে যাচ্ছে কিন্তু কথা না মনে হচ্ছে বাশি বাজছে কানে !! আচ্ছা আজকে চাদটা কত সুন্দর না..??

বর্ণঃ- আমি আপনাকে কি বলছে । আপনি আমাকে চাদের কথা বলছেন কেনো..? আচ্ছা আপনি এখানে কেনো এসেছেন চাকরি করতে না ?? কই আপনাকে তো একবারো পড়তে দেখলাম না । আপনার মতলবটা কি ??

মায়ান বর্ণের কথার জবাব না দিয়ে চলে যেতে লাগলো. এই মেয়ের সাথে শুধু শুধু তর্ক‌ করে লাভ নেই । তার চেয়ে রুমে গিয়ে ঘুমানো ভালো.

– বর্ণ মায়ানের পিছে পিছে আসলো এই আপনি আমার কথার জবাব না দিয়ে কোথাও যেতে পারবেন না । দাড়ান বলছি

– মায়ান রুমে এসে বর্ণের মুখের সামনে দরজটা লাগিয়ে দিলো, ওহ একটুর জন্য বর্ণের নাকে দরজাটা লাগে নি ।

– বর্ণের এখন রাগটা চরম লেভেলে পৌছেয়ে গেছে কত বড় সাহস তার বাসায় তার সাথে এমন আচারণ করছে.. সে রাগে ফোস ফোস করে সেখান থেকে চলে গেলো এই বেটাকে কালকে দেখে নিবো…যার জন্য খচ্ছরটা একবারে বাসা থেকে বাপ‌ বাপ করে চলে যাবে.

মায়ানঃ- যাক বাবা বাচা গেলো । এই মেয়ের খপ্পরে পড়লো আমার জানটা চলে যাবে… আর কিছু না ভেবে মায়ান ঘুমিয়ে গেলো..

চলবে.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here