মায়াবিনী মানবী,পর্ব_১৬,১৭

মায়াবিনী মানবী,পর্ব_১৬,১৭
হুমাশা_এহতেশাম
পর্ব_১৬

ওপাশ থেকে কল রিসিভ হতেই জায়েফ বলতে লাগলো…

— কি মাম্মাস বয়?কল্পনার জুলিয়েটকে নিয়ে কতদূর আগানো হলো?

ওপাশ থেকে শান্ত গলায় জবাব আসলো…

–পড়েছিস তাহলে?

জায়েফ বলতে লাগলো…

–মোস্ট এলিজ্যাবল,হ্যান্ডসাম ব্যাচেলর রাইটার আলআবি মাশরুখের লেখা না পড়লে তো এ শহরের রমনীগণের রাতে ঘুম ই আসে না।তাই আমি পড়ে দেখলাম লেখার মধ্যে কোন ঘুমের মেডিসিন টেডিসিন দেছ নাকি?

–এই রাত ২ টা বাজে তুই আমার বই পড়ছ ক্যান?তোর ওই রিনা,মিনা, টিনা, ঝিনারা কই?(আলআবি)

–মাম্মা তুমি যেভাবে আমার রমনীদের নাম মনে রাখছ আমি তো ওইভাবে গানের লিরিক্সও মনে রাখি না।আচ্ছা শোন ওইসব টিনা, মিনা বাদ।কথা হলো এওয়ার্ড ফাংশনে কি এবার আপনার পদধূলি পড়বে?(জায়েফ)

–তুই আছোস কি করতে?আমার তরফ থেকে তুই যাবি।(আলআবি)

–তোর ফাংশন তুই ই যা ভাই।ওইবার তোর খপ্পরে পইড়া কতগুলা সুন্দরীর সাথে ফ্লার্টই করতে পারি নাই।এবার গেলেও আমি আর তোর সাথে নাই।(জায়েফ)

–আরে শালা যা।ওইবার এর মতো এইবার তো নাও হতে পারে।(আলআবি)

–আমি তোর ফাংশনে গেলে আমি কি পাব?(জায়েফ)

–আমার বাসায় আম্মুর কাজে হেল্প করতে যে শামীমা আসে ওর সাথে তোর লাইন লাগাইয়া দিব।(আলআবি)

ফোনের মধ্যে ই আলআবির অট্টহাসির আওয়াজ পেল জায়েফ।জায়েফ তীক্ষ্ণ কন্ঠে বলল…

–তোর মতো বন্ধু থাকতে ও যে আমার কপালে গার্লফ্রেন্ড জোটে এইতো বেশি।

পরমুহূর্তেই জায়েফ আবার গলার স্বর নরম করে বলে উঠলো…

–দোস্ত তোর কাজিন রেনুমার বড় বোন টোন নাই?

–থাকলেও তোর সাথে প্রেম করতে দিব না।(আলআবি)

–তাইলে তুমি ই যাও তোমার ফাংশনে আমি নাই।(জায়েফ)

–তাও চলবে।অন্য কাউরে ম্যানেজ কইরা নিব।থাক তোর যাওয়া লাগবে না।(আলআবি)

জায়েফ ব্যস্ত হয়ে বলতে লাগলো…

–এইই!না!না! না! তোর কোন বোন লাগবে না।ফাংশনে কতো সুন্দরী আমার অপেক্ষায় আছে। ইশ! ওরা অপেক্ষা করতে থাকবে আমার আর এদিকে আমি কষ্ট পাব।এতোগুলা রমনীকে কষ্ট দেয়া কি উচিৎ হবে তুই ই বল?

–তুই শালা আর শুদ্ধ্রাবি না।ফোন রাখ কাজ আছে। কালকে যাওয়ার আগে একবার দেখা করে যাইছ।(আলআবি)

আলআবি ফোনটা কান থেকে নামিয়ে কেটে দিল কলটা।জায়েফ এর কথা মনে হতে ই কিঞ্চিৎ হেসে উঠলো।

লেখালেখির জগতে আজ ৭-৮ বছর হয়ে গেছে আলআবির।বেশ যশ-খ্যাতিও কামিয়েছে।এই শান্তশিষ্ট স্বভাবের ব্যাক্তিটা সোশ্যাল মিডিয়ায় এক্টিভি থাকলেও লাইভ ইভেন্ট গুলো থেকে নিজেকে খুব দূরে ই রেখেছে।তবে অন্যদিকে তার বন্ধু জায়েফ এহমাদ, যে কিনা বর্তমানের বিখ্যাত গায়ক।সে বেশির ভাগ ফাংশনেই প্রেসেন্ট থাকে।

কাল সন্ধ্যায় বেস্ট রাইটার এওয়ার্ডের একটা ইনভাইটেশন আছে। দুই বন্ধুর মধ্যে সেই ফাংশন নিয়েই কথা হচ্ছিল। আশ্চর্যের বিষয় হলো এই লেখক বন্ধু আর গায়ক বন্ধুর পরিচয় আগে থেকে থাকলেও দুজনের গভীর সখ্যতা গড়ে ওঠে সেন্টমার্টিনে একটা ট্রিপে গিয়ে।

রাতের সময়টা ঢাকা শহরকে অন্য রকম রূপে সজ্জিত করে।রাতের ঢাকায় ঘুরে বেড়ানোর স্বাদটাই অন্য রকমের।লাল,নীল বাতি আর কোলাহলে থেকে ও ভ্রমণপিপাসুরা রাতের শহরকে আনন্দের সহিত উপভোগ করতে পারে।

কোলাহলের পাশাপাশি নিস্তব্ধতার রাতও মানুষ কে আনন্দ দেয়।হয়তো লেখক টাইপের মানুষ গুলো গভীর রাতকেই পছন্দ করে বেশি।আলআবিকেও ভ্রমণ প্রিয়দের একজন বলা চলে।রাতের শহর তাকেও দেয় মানসিক প্রশান্তি।তবে এই ছেলেটার নিস্তব্ধতার রাতকে বেশ আকর্ষণীয় লাগে।প্রায় প্রতিদিনই রাত একটা দুটোর দিকে বাইরের টঙ দোকান টায় চা না খেলে ঘুম হয় না।লোকে শুনলে হয়তো বলবে পাগল।তবে আলআবির এতে কিচ্ছু যায় আসবে না।তার মতে একেক জনের অভ্যাস একেক রকমেরই হওয়া শ্রেয়।এই যে তার যেমন চা না খেলে ঘুম হয় না তেমনি অন্যদের বেলায় চা খেলে বরং ঘুম হয় না।

আজকেও তার রুটিনের ব্যাতিক্রম হলো না।গায়ের সাদা পাঞ্জাবি টা ছেড়ে একটা টিশার্ট পড়ে নিল। সাদা পায়জামার বদলে একটা টাউজার চাপিয়ে বেড়িয়ে পড়ল বাড়ির বাইরে। কয়েক কদম এগিয়ে চায়ের টঙ্গে বসে পড়লো। চা খেয়ে ধীর পায়ে হেঁটে হেঁটে আবার বাড়ি ফিরল।মনে মনে ভেবে নিল কালকে ফাংশনে যাবে।কারণ কালকে খুব একটা ব্যস্ততা নেই তার।

সকালে মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙ্গে আলআবির।পরিবার বলতে মা, বাবা, বড় ভাই ফারাবী আর ভাবি মিথিলা রয়েছে।সকালে উঠেই মায়ের সেই একই কথা আরম্ভ হয়ে গেল।

–শোন তোর টেবিলে একটা গিফ্ট রেখেছি দেখে নিস কিন্তু। (আলআবির মা)

আলআবি কেবল ওয়াশরুমের থেকে বের হচ্ছিল। মায়ের কথা কর্ণপাত হতেই আলআবি বলল…

–তোমার প্রতিদিনের ওই একই গিফ্ট দিয়ে কি মজা পাও বলতো আম্মু?

–ওত শত বুঝি না এবারের টা ফাইনাল।তোর আব্বু আর আমি বিকেলেই দেখতে যাচ্ছি। (আলআবির মা)

কথা শেষ করেই আলআবির জবাবের আশায় না বসে থেকে দ্রুতপায়ে প্রস্থান করলেন।মিসেস পারভীনের প্রতিদিন গিফ্ট দেয়াটা একটা রুটিন তার গিফ্ট মানেই কোন না কোন মেয়ের ছবি।আলআবি প্রতিদিনই এমন একটা করে গিফ্ট পায়।আর প্রতিদিনই নাকোচ করে দেয়।বিয়ে করানোর জন্য একেবারে উঠে পরে লেগেছে তার মা।ছেলে উনত্রিশ এ পা দিয়েছে কয়েক দিন আগে। তাই মিসেস পারভীন এর চিন্তাও একধাপ বেড়েছে। তবে আজকে তার গলায় অন্য রকমের জোর ছিল। আলআবি বেশি মাথা না ঘামিয়ে নাস্তা করবার উদ্দেশ্যে নিচের দিকে অগ্রসর হলো।

ঘড়ির বড় কাটা টা ঠিক আট এর ঘরে।আলআবি নিজেকে পরিপাটি করে গাড়ি তে এসে বসল।গায়ের শুভ্র বর্ণের পাঞ্জাবির উপরে চাপানো কালো মুজিব কোর্ট থেকে ফোনটা বের করতেই সঙ্গে সঙ্গে কিছু একটা পকেট থেকে বের হয়ে আসলো।আলআবি হাতে নিতে ই বুঝলো এটা একটা ছবি।ছবির উল্টো পাশে গোটা গোটা অক্ষরে তার মায়ের হাতের লেখা নজরে পরলো।

“আমি আমার ছেলেকে হাড়ে হাড়ে চিনি।জানতাম তুই ছবি দেখবি না। তাই তোর পকেটে গুঁজে দিয়েছি।এই মেয়েই তোর জন্য ফাইনাল। ”

আলআবি ছবিতে থাকা মেয়ে টাকে খুঁটে খুঁটে দেখতে লাগলো।বেশ কিছুক্ষণ পরে আলআবির ঠোঁটের কোণে হাসির ঝিলিক দেখা গেল।অস্পষ্ট ভাবে বলে উঠলো…

–হান্ড্রেড পার্সেন্ট ফাইনাল।

আলআবি ফোনের ডায়ালে গিয়ে ”ফ্লার্টবয়” নামে সেভ করা নাম্বারে কল লাগালো। ওপাশ থেকে রিসিভ হতেই আলআবি বলল…

–আমি ফাংশনে আসছি।ফ্লার্ট করতে মন চাইলে আসতে পারছ।

ওপাশ থেকে জায়েফ বলল…

–তুই না বললেও আসতাম। এই জায়েফ এহমাদ সুন্দরীদের ওয়েট করানো মোটেই পছন্দ করে না।

দুই বন্ধু ই হাসতে লাগলো।

চলবে………….

#মায়াবিনী_মানবী
#হুমাশা_এহতেশাম
#পর্ব_১৭

কৃত্রিম আলোতে চারপাশ আলোকিত হয়েছে। চাকচিক্য আষ্টেপৃষ্টে ঘিরে ধরেছে চারিপাশ। মানুষ ছোটাছুটি করছে।কেউ ছুটছে মাইক্রোফোন হাতে,কেউ ছুটছে কাধে ভারী ক্যামেরা বহন করে। একে একে পরিচিত সব মুখ, পরিচিত সব লেখক লেখিকারা আসতে লাগলো।লেখক লেখিকাদের মাঝে কিছু কিছু আর্টিস্টও এসেছে। বাড়তে লাগলো কোলাহল। এই কোলাহলের মধ্যে ই আলআবির গাড়ি থামলো।গাড়ি থেকে নামতেই ইন্ট্রেন্স সাইডে জটলা পেকে গেল। ক্যামেরার ফ্ল্যাশ লাইট এসে পড়লো আলআবির মুখমন্ডলে সেই সাথে কর্ণপাত হলো ক্যামেরার ক্যাচ ক্যাচ করে ছবি তোলার শব্দ।

আলআবি ভক্তরা ছুটে আসলো তার একটা স্বাক্ষর এর জন্য।যাকে সবাই অটোগ্রাফ বলে।ইন্ট্রেন্স এরিয়া পাড় করে ভিতরে প্রবেশ করে আলআবি। গিয়ে প্রথম সারির একটা সিটে বসে পড়ে।চারপাশে একবার ভালো করে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিয়ে পরখ করে নেয়। হাতে মোবাইল ফোন টা নিয়ে জায়েফ কে একটা ম্যাসেজ সেন্ট করে…

–তোর ওই রমণীগণের সাথে দেখা করা শেষ হলে আমার পাশে এসে বস।কথা আছে।

জায়েফের ম্যাসেজ টোন বেজে উঠতেই সামনের মেয়েটির হাত ছেড়ে দিয়ে বলল…

–ওয়েট অ্যা মিনিট বেবি।

ম্যাসেজ টা চেক করে তার সাথে থাকা মেয়ে টা কে উদ্দেশ্য করে বলল…

–আই হেভ টু গো।আবার জলদি এসে পড়ব।ডোন্ট ওয়ারি।

মেয়েটাকে একটা ফ্লাইং কিস ছুঁড়ে দিয়ে চোখ টিপ দিল।মেয়ে টার খুশি দেখে কে! নীল আর্মস্ট্রং ও চাঁদে গিয়ে মনে হয় এতো খুশি হন নি।

জায়েফ এসে আলআবির পাশে ধপ করে বসে পড়ে।আলআবি জায়েফ এর দিকে তাকিয়ে দেখে না।জায়েফ আলআবি কে কিছু কথা বলতে না দেখে জিজ্ঞেস করে…

–ভাই আমাকে কি একটু প্রেমটাও শান্তি মতো করতে দিবি না?প্রেম ছাড়া কি আছে জীবনে?

আলআবি জায়েফের উদ্দেশ্য শান্ত কন্ঠে বলল…

–তোরে প্রেম করতে দেখলে প্রেমিক পুরুষ কম জোকার বেশি লাগে।

জায়েফ কিছু বলার আগেই স্টেজে একজন নারী দাঁড়িয়ে বলল…

–গুড ইভনিং লেডিস এন্ড জেন্টেলম্যানস।

জায়েফ আলআবির দিকে তাকিয়ে বলল…

–তোরে পড়ে দেখে নিব আগে স্টেজ সাজানো দেখে নেই।

–তুই যে কোন স্টেজ দেখবি তা ভালো করেই জানি।

আলআবির কথাটা শেষ হতেই আবারও স্টেজে দাঁড়ান শাড়ি পরিহিত মেয়ে টা বলতে লাগলো…

–ওয়েলকাম টু দ্যা “বেস্ট রাইটার এওয়ার্ড – টুয়েন্টি টুয়েন্টি ওয়ান”। ইন দিজ সুইট ইভনিং উই আর গোয়িং টু স্টার্ট আওয়ার এওয়ার্ড ফাংশন বাই সিংগিং আওয়ার “ন্যাশনাল এনথেম”।

জাতীয় সংগীত এর পর অনেক মুহূর্ত আর অনেক সময় পার হয়ে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ আসলো।সবাই উৎসুক হয়ে দৃষ্টি রাখলো স্টেজে। স্টেজ থেকে একটি মেয়ে আর একটি ছেলে একসঙ্গে গলা মিলিয়ে বলে উঠলো…

–আওয়ার বেস্ট রাইটার এওয়ার্ড টুয়েন্টি টুয়েন্টি ওয়ান গোজ টু “আলআবি মাশরুখ” ফর “নিভৃতে প্রস্থান”।সো প্লিজ গিভ অ্যা বিগ হ্যান্ড।

করতালি তে মুখরিত হলো পুরো হল রুম।প্রত্যেকের মুখে হাসির ছাপ। জায়েফ গা ছাড়া ভাব নিয়ে বলল…

–এহ্ জীবনে একটা প্রেম করছ নাই কিন্তু প্রেম কাহিনী লিখে এওয়ার্ড পেয়ে গেলি।

তখন আবার স্টেজে থাকা ছেলেটা বলে উঠলো…

–আলআবি মাশরুখ প্লিজ কাম টু দ্যি স্টেজ।

আলআবি সিঁড়ি পেরিয়ে স্টেজ এ উঠে এওয়ার্ড গ্রহণ করলো।মাইক্রোফোনে আলআবি ধন্যবাদ জ্ঞেপন করে স্টেজ থেকে নামতে নিলে পিছনের থেকে ছেলেটা বলে উঠলো…

–স্যার অডিয়েন্সরা কিছু জানতে চায়।একটু সময় দেয়া যাবে?

আলআবি ঘুরে বলল…

–শিওর!

আলআবি আবার মাইক্রোফোন হাতে দাঁড়িয়ে পরলো। একজন জিজ্ঞেস করলো…

–ভাইয়া উপন্যাসের আলআবি চরিত্র আর আমাদের বাস্তব আলআবির মধ্যে মিল কতখানি?

আলআবি শান্ত ভঙ্গিতে জবাব দিল…

–আকাশ পাতাল তফাৎ।

আরেক জন জিজ্ঞেস করলো…

–ভাইয়া আপনার লেখা সব বইয়ের কাভার পেজ সাদা রঙের হয় কেন?

আলআবি মুচকি হেসে বলল…

–ইট’স অ্যা সিক্রেট!

একজন তরুণী দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করলো…

–স্যার আপনার সব উপন্যাসের পরিণয় সুখের হলেও “নিভৃতে প্রস্থান” কেন বেদনাময় হলো?

আলআবি বলতে লাগলো…

–জীবনে সব কিছুর আকটু আকটু এক্সপেরিয়েন্স থাকা দরকার। শুধু মিষ্টতায় জীবন চলে না।খেয়াল করে দেখবেন ঔষধ এর বেলাতেও তিক্ততা মিষ্টতা উভয়ই রয়েছে।

ওই একই তরুণীর পাশের সারি থেকে আরেক জন তরুণী দাঁড়িয়ে পরলো। আলআবি কে জিজ্ঞেস করলো…

–স্যার #মায়াবিনী_মানবী কি আপনার কল্পনা? নাকি সত্যি সে আছে?

আলআবি এক রহস্যময়ী হাসি দিয়ে বলল…

–আছে আবার নেই।ইটস ভেরি কম্পলিকেটেড।

আলআবি কে আরও প্রশ্ন করতে চাইলে আলআবি আর উত্তর দেয় না।জায়েফের সঙ্গে বাইরে বের হয়ে আসে।গাড়ি তে উঠে আলআবি জায়েফ এর সামনে সামনে একটা ছবি তুলে ধরে।জায়েফ বিস্ময় নিয়ে জোরে বলে উঠলো…

–হাউ ইজ দিজ পসিবল ম্যান?

চলবে………….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here