মায়াজাল,পর্ব-২
লামিয়া আক্তার রিয়া
“কীর্তিপাশা জমিদার বাড়ি” এটি বরিশাল বিভাগের ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার কীর্তিপাশা ইউনিয়নে অবস্থিত।মূল যে জমিদারবাড়ি সেটা জঙ্গলে জরাজীর্ণ হয়ে আছে।দিনের বেলায়ও ওখানে গা-ছমছমে নিরবতা বিরাজ করে।
এই জমিদারবাড়ি নিয়ে অনেক ভৌতিক কথা প্রচলিত।তবে “বায়েজি কক্ষ” নিয়েই বেশি সমালোচনা হয়।রাতে ওখান থেকে নাচের আওয়াজ আসে বলেই অনেকের দাবি।এছাড়াও এক জমিদারপুত্রকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়।সম্পূর্নটাই আমি গুগলে জেনেছি।
এবার আসি মূল কথায়, আমি ভৌতিক কিছু নিয়ে গল্প লিখতে চেয়েছি আর সেটা জমিদারবাড়ি নিয়ে।গুগলের সুবাদে যা পেয়েছি তাতে ঝালকাঠি জমিদারবাড়ি আমার পছন্দ হয়েছে।উপরে যা তথ্য দেয়া আছে তা আমি গল্পের জন্য ভাবিনি।তাই “কীর্তিপাশা জমিদারবাড়ি” নামটা এখানে ব্যবহার করা হলেও গল্পের থিম পুরোটাই আমার কল্পনা।
গল্পের সার্থে এই জমিদারবাড়ির নাম ব্যবহার করেছি আর যদি মনে হয় তবে গুগল থেকে পাওয়া তথ্য গল্পে যোগ করতেও পারি।সেটা সময়ের উপরে নির্ভর করবে।তবে মেইন থিম ভিন্ন।তাই উপরের কথাগুলো ছাড়া বাকিটা আমার কল্পনা হিসেবেই নিবেন।
কথাগুলো পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।এবার গল্পে ফেরা যাক।😊]
>>>
দুপুরের খাওয়ার পরে রেস্ট নিয়ে বিকেলে ইদ্রিস মিয়াকে নিয়ে ওরা ৪ জন বাড়ির আশেপাশে ঘুরতে বের হলো।বাড়ির আসেপাশে জনবসতি নেই।বাড়ি থেকে প্রায় আধঘন্টা দূর থেকে জনবসতি শুরু হয়।
বাজারে এসে ওরা রান্নার জন্য ইদ্রিসমিয়াকে জিজ্ঞাসা করে করে বাজার করতে লাগলো।ইদ্রিস মিয়ার আচরন কেমন উদ্ভট লাগছে তাদের।
ইমু: চাচা?কোনো সমস্যা হচ্ছে?
ইদ্রিস: ন না।কিন্তু এহন আমগো বাড়িত যাওয়া দরকার।সন্ধ্যা হইয়া যাইতাছে।
সামু: এখনো দেড়ি আছে চাচা।
ইদ্রিস: তোমরা বুঝতে পারতাছোনা কেন?যাইতে যাইতে সন্ধ্যা হইয়া যাইবো।আর সন্ধ্যার পরে বাড়ির বাইরে না আহনই ভালা।
উমা: কিন্তু-
ইদ্রিস: দয়া কইরা চলো আম্মাজানরা। আবার কালকে আইবানে।
ইদ্রিস মিয়ার করুন মুখ দেখে ওদের কষ্ট আর খটকা দুটোই লাগলো।কিন্তু ওরা ইদ্রিসের কথামতই বাড়ির পথে রওনা দিলো।
বাড়িতে এসে ফ্রেস হতেই নিচ থেকে ইদ্রিস মিয়ার ডাক এলো সন্ধ্যার খাবারের জন্য।ওরা নিচে নেমে এলো।চারজনের মুখই থমথমে।ইমুই কথা শুরু করলো।
ইমু: চাচা আপনার সাথে কথা আছে।যা জানতে চাইবো দয়া করে জানাবেন।
ইদ্রিস: আমি জানি মা।এইবাড়ি লইয়া তোমগো অনেক কৌতুহল।কিন্তু আমি এহন তোমগো কিছু কইবার পারুমনা।শুধু সন্ধ্যার পরে বাড়ির বাইরে আর রাইতে ঘরের বাইরে পা রাখবানা।তাইলেই তোমগো ক্ষতি হইবোনা।
ইমু: এটা কোনো কথা না চাচা।আমি বুঝতে পারছি কোনো সমস্যা হচ্ছে কিন্তু আমাদের তো জানতে হবে কার থেকে আমরা পালাচ্ছি?কাকে ভয় পাচ্ছি?
উমা: এএই ইমু?ক কি বলছিস এসব?মানে সত্যিই এখানে?না না বাবা আমি কালকেই চলে যাবো।লাগবেনা আমার এখানে থাকা।
লিয়া: আহ্ উমা চুপ করতো।
ইদ্রিস: আম্মা দয়া কইরা যাইওনা।তোমরা গেলেও সমস্যা তোমগো পিছ ছাড়বোনা।ভাগ্য ঠিকই তোমগো টাইনা আনবো।
ইমু: চাচা?এখানের কিছুর সাথে কি আমরা কোনোভাবে জড়িয়ে আছি?আমার জানামতে আমি এখানে কখনো আসিনি।
ইদ্রিস: আইছো মা।সব জানবা।কিন্তু এহন সঠিক সময়না।সময় হইলে সব জানবা।
উমা: থাক তোরা এই লোকের সাথে।আমি এখনি যাবো।থাকবোনা আমি।
এই কথা বলেই উমা নিজের রুম থেকে ওর ব্যাগ নিচে নিয়ে এলো।
ইমু: উমা কি করছিস?রাত হয়ে গেছে উমা।প্লিজ এখন বের হোসনা বোন।
উমা: তোরা মরার জন্য এসেছিস এই বাড়ি আর আমাকেও এনেছিস।আর একমিনিটও না।
লিয়া: উমা পাগলামি করিসনা।
উমা: তোরা কেউ যাবি আমার সাথে?
সামু: উমা প্লিজ বোন আজকের রাতটা থাক।
উমা: ওকে ফাইন।আমি একাই যাবো।তোরাই থাক এই বুড়োর সাথে।
ইদ্রিস: জোসে হুস খোয়াইতাছেো আম্মা।এহন বাইরে গেলে তোমার বিপদ হইবো।রাগ আমার উপর বুঝলাম কিন্তু এহন বাইরে গেলে বাঁইচা থাকতে পারবা না।রক্তের নেশা জাগাও না আম্মা।
উমা: কি মনে হয় আপনার?আপনার এসব কথায় ভয় পেয়ে থেকে যাবো?মরলে বাইরে যেয়েই মরবো তাও এই ভুতের আস্তানায় থাকবোনা।
ইমু: উমা উমা শোন।
উমা বেরিয়ে গেলো।ইমুও পেছনে পেছনে দৌড়ে যেতে চাইলেই ইদ্রিস তার হাত চেপে ধরে দরজা লাগিয়ে দেয়।
ইদ্রিস: যাইওনা আম্মা।এই দরজার বাইরে পা দিবা না।
লিয়া: কিন্তু উমা-
ইদ্রিস: উনি যে ভুল করছে তার ক্ষমা নাই মা।উনি আর বাঁইচা থাকবোনা।
সামু: পাগল হয়ে গিয়েছেন আপনি?আমাদের উমাটা চলে যাচ্ছে।যেতে দিন আমাদের।(কাঁদতে কাঁদতে)
ইদ্রিস: আমি পারুমনা মা।তোমরা তোমগো ঘরে যানগা।আমি রাইতের খাবার ঘরেই দিয়া আমু।আর আইজ তিনজন একঘরেই থাহো।
ইমু: আপনি যেতে না দিলে আপনার নামে পুলিশ কেস করবো।
ইদ্রিস: ওহ্ ভুইলাই গেছি।পরশু এনে একজন পুলিশও থাকবো।থানার বড়বাবু আইতাছে।হের নাকি জমিদারবাড়িই পছন্দ হইছে।তাই হেয় এনেই থাকবো।
লিয়া: যে থাকার থাকবে কিন্তু আমরা থাকবোনা।দরজা খুলুন।
ইদ্রিস: তোমরা এহন চাইলেও বাইরাইতে পারবা না আম্মারা।উমা মায় হেগো নজরে পইরা গেছে।এহন যতক্ষন না হেরা চায় এইদরজা খুলবোনা।
এটুকু বলেই ইদ্রিস রান্নাঘরের দিকে পা বাড়ালো।ইমু,লিয়া আর সামু অনেক চেষ্টা করেও দরজা খুলতে না পেরে দরজার সামনেই বসে রইলো।
✳✳✳✳✳✳✳✳✳
দশতালা বিল্ডিংয়ের ছাদে রেলিং ধরে দাড়িয়ে আছে আদ্র।পুরো নাম সাফওয়ান আদ্র।রাতটা ওর কাছে দারুন প্রিয়।রাত মানেই নিস্তব্ধতা। রাত মানেই শান্ত পরিবেশ। রাত মানেই নিজেকে নিজের মতো রাখা।তবে আদ্র শহরের রাত দেখতে দেখতে ক্লান্ত।রাতেও এখানের পরিবেশ একদম নিরিবিলি থাকেনা।গাড়ির আওয়াজ আসেই।কিছুক্ষন আগেই মায়ের সাথে চেচামেচি করে এখন ছাদে এসে দাড়িয়েছে।ভাবছে থানা থেকে আসার পরে কি কি হলো।
–
–
–
থানা থেকে এসেই গোসল করে নিলো আদ্র।সারাদিনের পরিশ্রমে কাহিল সে।গোসল করে বেরিয়েই মায়ের হাতের মশলা চা না খেয়ে শরীর কেমন ম্যাজ ম্যাজ করে তার।টি-শার্ট আর একটা জিন্স পরে ডাইনিংয়ে এলো আদ্র।আদ্র আসা মাত্রই আদ্রের হাতে চা ধরিয়ে দিলেন আসমা বেগম(আদ্রের মা)।একটা চুমুক দিয়েই প্রশান্তির নিশ্বাস ফেললো আদ্র।
আদ্র: আহ্ মা,কি শান্তি তোমার হাতের চা খেয়ে।
আসমা: এবার আমাকেও একটু শান্তি দাওতো।আর পারছিনা একা হাতে পুরো সংসার সামলাতে।
আদ্র: (চা খেতে খেতে) বাবাকে বলো আরেকটা বিয়ে করতে। তাহলেই হয়।
আসমা: এই হতচ্ছাড়া ছেলে আমি তোর বিয়ের কথা বলছি।বয়স তো কম হলোনা। ৩০ পরলো।এরপর তোকে কে বিয়ে করবে শুনি?
আদ্র: কে আবার?তোমার বৌমা।
আসমা: আদ্র আমি সিরিয়াস।তোর বাবাও কালকে বলছিলো।কয়েকটা মেয়েও দেখেছি।
আদ্র: বাবা কোথায়?
আসমা: ওইযে আসছে।
আদ্র: কি ব্যাপার? সানভির জারিফের নাকি বিয়ে করার শখ জেগেছে?
সানভির: (আদ্রের কানে ধরে) বাবা হই আমি তোর।কি অসভ্য আমায় নাম ধরে ডাকছে।
আদ্র: আরে লাগছেতো মিস্টার সানভির।আচ্ছা আপনিই বলুন আপনি বিয়ে করতে চান না?আসমা বেগমেরও নাকি কাউকে লাগবে।এসব কাজ একা সামলাতে পারছেনা।
সানভির: হুম তা অবস্য ঠিক বলেছিস।( আদ্রের কান ছেড়ে সোফায় বসে) দেখেছো আসমা আমাদের ছেলে আমাদের কষ্ট বোঝে।
আসমা: তারমানে তুমি বিয়ে করতে চাও তাইনা?বুড়ো বয়সে বিয়ের শখ হয়েছে?(দাঁতে দাঁত চেপে)
সানভির: আরে ধুর না না।আমি তো তোমার সঙ্গি মানে তোমার হেল্পের জন্য।না মানে তুমি বললে কাজের লোকও রাখতে পারি হেহে(ক্যাবলা হাসি দিলো)
আসমা: তোমাকে তোওও….
আদ্র: থামো থামো।আগে ডিনার করে নেই।
সানভির: হুম আমারো পেটে ইদুর দৌড়াচ্ছে।
খাওয়ার পরে সবাই আবার ড্রয়িংরুমে বসলো।
আদ্র: একটা দরকারি কথা বলার আছে।
আসমা: কোনো মেয়ে আছে পছন্দের?
আদ্র: ধুর মা কি শুধু বউ বউ করো।কথা বলতে দাও।
সানভির: কি বলবি বাবা?
আদ্র: বাবা আমার পোস্টিং ঝালকাঠি হয়েছে।সেখানের থানায় আমাকে ট্রান্সফার করা হয়েছে।
আসমা: মানে!!
আদ্র: মানে আমি পরশুই ঝালকাঠি যাচ্ছি।
সানভির: কিন্তু এতদূরে কেন?
আসমা: তোমার ছেলে ইচ্ছে করে করেছে এসব।সবটা নিজের ইচ্ছেয় করছে।যাক না যাক আমি মরে গেলে কার কি আসেযায়?
আদ্র: মা শোনো তো-
আসমা: কি শুনবো হ্যা?পুলিশের চাকরি না করলে কি তোর খাবার জুটবেনা?না খেয়ে মরতে হবে?নিজের বাবার সাথে ব্যাবসায় হাত লাগাতে পারিস।তা না করে উনি যাবে নদী পেরিয়ে সেই কোন ঝালকাঠি।যা যা আমি মরলেও আসবিনা তুই।ভালোইতো বাসিস না আসবি কে-
আদ্র- স্টপ(চিৎকার করে) ভাবো কি আমাকে?সবসময় তোমাদের সব কথা শুনি।পুলিশের চাকরি নেয়া ছাড়া আর কোনো কথা অমান্য করেছি?আমার জ্বর হলে তুমি আমার পাশে থাকতে এটা ভালোবাসা।আর তোমার অসুস্থতায় আমি তোমার পাশে থাকলে সেটা ভালোবাসা না?আমি একটু ফ্রেশ এয়ার চাই।ঢাকা শহরে আমার দমবন্ধ লাগছে।হ্যা আমি ইচ্ছে করেই নিজের ট্রান্সফার করিয়েছি।আমি এখানে আছি বলে তুমিও বাবার সাথে লন্ডন যাচ্ছোনা ডক্টর দেখাতে।কি ভেবেছো আমি কিছু জানিনা?কিছু বুঝিনা?আমি যাবো মানে যাবোই।কেউ আটকাতে আসবেনা।
এসব বলেই গটগট করে দরজা খুলে ছাদে চলে এলো আদ্র।এখন তার খারাপ লাগছে।
আদ্র: মাকে ওভাবে না বললেও পারতাম।কিন্তু মা আমার জন্য ডক্টর দেখাতে দেশের বাইরেও যাচ্ছেনা।এমন না করলে মা মানতোনা।নাহ্ মায়ের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
আদ্র বাসায় এসে বাবা মায়ের রুমে উকি দিলো।”মা খাটে ঘুমাচ্ছে।বাবা পাশে নেই।কোথায় গেলো?”এসব ভাবতে ভাবতেই পেছন থেকে আদ্রের কাধে হাত পরলো।আদ্র মুচকি হাসলো।
সানভির: চল তোর রুমের বারান্দায় যাই।
আদ্র বাবার সাথে নিজের বারান্দায় এলো।সানভির বারান্দায় রাখা সোফায় বসতেই আদ্র সানভিরের কোলে মাথা রেখে শুয়ে পরলো।সানভিরও ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
সানভির: মায়ের কথায় কষ্ট পাসনা বাবা।মা তোকে নিয়ে একটু বেশিই চিন্তা করে।জানিসইতো তোকে কত ভালোবাসে।
আদ্র: কিন্তু বাবা মায়ের এখন উচিৎ তোমার সাথে লন্ডন যাওয়া।মা এখানে আমাকে একা রেখে যেতে চায়না কেন?
সানভির: জানিনারে বাবা।তবে তুই অন্যভাবে বোঝালেও পারতি।এতদূর চলে যাবি?
আদ্র: বাবা আমি একটু মুক্ত বাতাস চাই।একটু স্নিগ্ধ পরিবেশে থাকতে চাই।তাই ওখানে বলেছি।তাছাড়া ওখানে নাকি জমিদার বাড়ি আছে।সেখানেই থাকার ব্যবস্থা করতে বলেছি।
সানভির: আমি তোকে যেতে বারন করবোনা।তবে তোর সমস্যা হলে চলে আসবি।প্রমিস কর।
আদ্র: প্রমিস বাবা।
সানভির: দেটস লাইক মাই বয়।
আদ্র: কিন্তু সকালে মায়ের সাথে কথা বলতে হবে।তোমরাও লন্ডন যাবে।
সানভির: তোর মা রাজি হলে আমার তো সমস্যা নেই।
আদ্র: আমি রাজি করাবো মাকে।
সানভির: তাহলে দেখ কথা বলে।যত দ্রুত যাওয়া যায়।
আদ্র: হুম।এবার যাও ঘুমাও।
সানভির: চল তোকে আজ ঘুম পারিয়ে দেই।
আদ্র: রিয়েলি বাবা?আগের মতো গান গেয়ে?(এক্সাইটেড হয়ে)
সানভির: বুড়ো হয়েছি তাতে কি আমার কন্ঠস্বর খারাপ হয়ে গিয়েছে নাকি?আমি এখনো যথেষ্ট ভালো গান করি।
আদ্র: হ্যা গানের ফাঁদেই তো ফেলেছো আমার মাকে।
সানভির: ফাঁদে??(ভ্রু কুচকে)
আদ্র: আব না না তুমি তো আমার কিউটি বাবা।উফ্ বাবা আমার না হেব্বি ঘুম পেয়েছে।চলো চলো বিছানায় যাই।ঘুম পারিয়ে দাও।
সানভির:(আদ্রের মাথায় আলতো থাপ্পর দিয়ে) মুখের কি ভাষা হয়েছে তোর?চল বিছানায় শুয়ে পর।আমি মাথায় হাত বুলিয়ে গান গেয়ে ঘুম পারিয়ে দিচ্ছি।
আদ্র আর সানভির হাসতে হাসতে ঘুমের উদ্দেশ্যে বেডরুমে পা বাড়ালো।
চলবে………