ভালোবাসার টান
part:11,12
Tanzidaa Jannat❤Jannatul Ferdousy
11
মিসকা অফিসের ম্যানাজারকে ফোন দিলো,,,,,,
ম্যানাজারঃ আমি আপনাকেই ফোন দিতে যাচ্ছিলাম,,,,,,
মিসকাঃ কেনো?? কিছু হয়েছে কি?
ম্যানেজারঃ আসলে স্যার সকালে ফোন দিয়ে বলছিলো আপনার ছুটি দিয়েছেন কিছু দিনের জন্য। তাই আপনাকে আসতে হবে না।
মিসকাঃ ও আচ্ছা ঠিকাছে,,,,( ইশশশ এখন যেন দরদ উতলিয়ে পড়ছে হাহ!!!)
রুমাঃ আফামুনি সকাল থিকে তো কিছুই খান নি।খাবারটা কি এইখানেই দিয়া যামু? নাকি,,,,,,,
মিসকাঃ না আমি নিচে গিয়েই খেয়ে নিবো,,,,
রুমাঃ আচ্ছা। তাহলে তাড়াতাড়ি আসেন।
মিসেস নিলুফাঃ হ্যা,,,মা তুই গিয়ে খেয়ে নে। আমি আছি দাদুভাইয়ের কাছে।
মিসকাঃ আচ্ছা,,,,,,,বলে চলে যেতে নিলে,,,,সামনে গিয়ে দাড়িয়ে যায়,,,,,( ইফতি এদিক আসছিলো আর মিসকা নিচের দিকে যাচ্ছিলো।মিসকা এদিকে সরে দাড়ালে ইফতিও সরে দাড়া আবার ওদিকে দাড়ালে ও দ ওদিকে যায়।এদিকে মিসকা চোখে চোখ মিলাতে পারছে না। আবার ভয়েও হাত পা কাঁপছে,,,,,
ইফতিঃ ওয়েট,,,,,,বলে মিসকার দু কাধ বরাবর হাত রেখে দাড় করায় আর এদিক হয়ে একটা মুচকি হাসি দিয়ে চলে যায়,,,,,,
মিসকাঃ সারা শরীর ঠান্ডা হয়ে গেছে। বুকের ভেতরটা কেমন যেনো করছে,,,,মনে হচ্ছে হার্টবিট বেড়ে গেছে।কই আগে তো কখনও এমন হয় নি।😵 এই গোমড়ামুখো টার সাথে কতই তো কথা হয়েছে। তাহলে,,,,,,,,,কিন্তু হ্যা আজ গোমড়ামুখো একটু হেসেছে।বেস ভালই লাগছিলো দেখতে
মিসকাঃ নিচে গিয়ে ব্রেকফাস্ট করে নিলো।
ওপরে উঠতে যাবে তখন দেখলো বজ্জাত গোমড়ামুখো টা নামছে। তাই মিসকা নিচেই দাড়িয়ে অন্য দিকে ফিরে রইল।
ইফতি চলে গেলে মিসকা উপরে উঠে আবার হিয়ার আর মিসেস নিলুফার সাথে গল্প করছে
এদিকে ইফতি ড্রাইভ করছে আর ভাবছে ওরা কি আমায় ক্ষমা করবে না? আচ্ছা আমি যদি ছড়ি বলি? আমি কাল না চাইতেও যেই কাজ করেছি শুধু ছড়ি বললে কি ওরা আমায়??আমি এতোদিনেও হিয়ার জন্য যতটুকু ভালোবাসা ফিল করেছি। তার থেকে হাজার গুন মিসকা ভালোবাসে হিয়াকে। এটার কি নাম দেওয়া যায় এটাই কি তবে #ভালোবাসার টান,,,,,,,,
মিসকা গিয়ে হিয়ার পাশে বসলে হিয়া হেসে বলে জানো আন্টি বাবাই আমার কাছে এসেছিলো😎
মিসকাঃ ও তাই!!!(কিছুটা অবাক হয়ে)
হিয়াঃ হ্যা,,,,তো!!! আমি তো প্রথম ভয় পেয়ে গেছিলাম। কিন্তু বাবাই আমার কাছে এসে আমার কপালে, গালে তিনটা পাপ্পি দিয়েছে।ইয়ে আন্টি তুমি কত্ত ভালো
মিসকাঃ আমি আবার কি করলাম?? ওর কথা শুনে মনে হচ্ছে ও স্বপ্ন দেখছে 😱
হিয়াঃ তুমি ম্যাজিক করে সব ঠিক করে দিচ্ছ।আজকে বাবাই আমাকে এতো আদর করলো তুমি ম্যাজিক করেছো বলেই তো
মিসকাঃ না হিয়া এসব একদম ঠিক না। আমি সত্যিই কিছু করি নি। কে বলেছল তোমায় এসব কথা??
হিয়াঃ কেনো দাদীয়াই তো বললো,,তুমি ম্যাজিক করে আমাকে সব ফিরিয়ে দিবে
মিসকা অবাক চোখে মিসেস নিলুফার দিকে তাকালো।
মিসেস নিলুফা ঃ একটু হেসে আমি আজ খুব খুশি মা।তোর মতো মেয়ে যেনো প্রতি ঘরে ঘরে জন্ম নেয়।দেখিস তুই একদিন খুব সুখি হবি।😊
মিসকা বাকরুদ্ধ হয়ে বসে আছে।কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না।মনে মনে ভাবছে আমি এসবের যোগ্য নই।আমি তো কিছুই করি নি।
মিসেস নিলুফা ঃ জানিস তুই যখন নিচে নামলি ঠিক তখনই ইফতি রুমে ঢুকেছে।আমি ওর মুখে সেই আগের ইফতির ছাপ দেখেছি।সেই মায়া ঠোঁটের কোনে সেই হাসি।আমার ইফতিটা হয়তো পাল্টে যাচ্ছে
মিসকাঃ কিছু একটা বলতে গিয়েও বললো না।
ইফতি অফিস এসে বার বার ছটফট করছে।এর আগে তো কখনও এমন হয় নি।তাহলে,,,,,,
ইফতিঃ আমি কি কাউকে মিস করছি।এটা কিভাবে সম্ভব। বার বার মিসকার মুখটা ভেসে উঠছে।কাল রাতে যেভাবে মায়াবী চোখ দুটি দিয়ে রাগি চোখে তাকিয়েছিলো,,,,,,উফফ কিসব ভাবছি,,,,, না না আমি মাত্র ৩,৪ দিন হলো তাকে চিনি। তার উপর কথাও তেমন বলি নি তাহলে আমি তাকে মিস কেনো করবো??একটা ফোন দিবো? যদি রেগে যায়?
মিসকা হিয়াকে কোলে নিয়ে বারান্দায় দোলনায় বসে আছে।এমন সময় মিসকার ফোনটা বেজে উঠলো।,,,,,,ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলো মি. বজ্জাত গোমড়ামুখো স্কৃনে ভেসে উঠলো।কারন এই নামেই মিসকা নাম্বারটা সেইভ করেছে।
মিসকাঃ কি করবো এখন? ফোনটা কি তুলবো?? নাকি তুলবো না?? এই ভাবতে ভাবতেই ফোনটা কেটে গেলো আর ফোন আসলো না।
ইফতিঃ আমার ফোনটা ইচ্ছে করেই ধরা হচ্ছে না তাই তো 😠।না হয়তো হিয়াকে নিয়ে ব্যস্ত।আজকে কিছুতেই কাজে মোন বসাতে পারছে না।উফফ আমি কারো মায়ায় পরতে চাই না।কিন্তু একি হলো আমার?? কেনো আমি মিস করছি।কেনো ঐ চেহারাটা বার বার ভেসে উঠছে,,,,,
ইফতি ম্যানেজার কে ফোন দিলো কেবিনে আসার জন্য।
ম্যানেজারঃ মে আই কামিন স্যার??
ইফতি ঃ ইয়েস কাম,,,,,যে জন্য আপনাকে ফোন দিয়েছি। আমি বাসায় বসে কিছুদিন কাজ করবে।দরকারি কোনো ফাইল থাকলে বাসায় পৌছে দিয়েন। আর আমার অবর্তমানে কিছু দিন এইখানে আপনি কাজ সামলাবেন।
ম্যানেজারঃ ওকে স্যার,,,,,,আই উইল ট্রাই মাই লেবেল বেস্ট
ইফতিঃ আই নো,,,এটা বলে কাধে হাত রাখলো😊।আমি আপনাকে বিশ্বাস করি।আর আমি আসবো মাঝে মাঝে,,,,,মাত্র তো ৩,৪ দিন,,,,,
ম্যানেজারঃ স্যার,,,,,, একটা কথা বলবো?
ইফতিঃ হ্যা,,,,, বলুন,,,,
ম্যানেজারঃ আমি যখন প্রথম জয়েন্ট মানে আরো চার -পাঁচ বছর আগে,,,,,, আপনি ঠিক এভাবেই সবাইর সাথে হাসিমুখে কথা বলতেন।আজকে আপনাকে সেই আগের মতো মনে হচ্ছে।( বলেই চোখের পানি মুছলো )আমাদের বড় সাহেব এসে আপনাকে দেখলে খুব খুশি হবে।আপনি সবসময় এমনই থাইকেন
ইফতিঃ কাকা বাবু আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন জানি অনেক খারাপ বিহেভ করেছি,,,,,
ম্যানেজারঃ কি বলছেন স্যার,,,, এটা আপনার কর্তব্য। কোম্পানির ভালোর জন্য আপনি যা করার দরকার আপনি তাই করবেন। যতই আমি তোমার বাবার ফ্রেন্ড হই না কেনো সেটা বাইরে এই অফিসে না। অফিসে তুমি আমার বস। আর বসকে সম্মান করা আমার নৈতিক দায়িত্ব। তুমি কোনো চিন্তা করো না। আমি সব সামলে নিবো।
ইফতিঃ ঠিকাছে ম্যানেজার সাহেব এটা বলেই দুজনে হেসে দিলো।
ইফতি বেরিয়ে পরলো।হিয়ার জন্য কতোগুলো খেলনা, চকলেট নিলো।চকলেট টা বেশি করে নিলো।( ভাবলো পিচ্চি তো এখন আর একজন নয় বাসায় আরেকটা পিচ্চি আছে😂) সাথে সবার জন্য খাবার নিয়ে গেলো।
হঠাৎ কলিং বেল বেজে উঠলো।
মিসেস নিলুফা ঃ ইফতি তুই এতু কিছু কার জন্য??
ইফতিঃ উফফ মম আগে ভিতরে তো যেতে দিবে।
মিসেস নিলুফা ঃ( এটা কেমনে সম্ভব।😱 আমি কি আমার ইফতিকে দেখছি। নাকি অন্য কেউ😱মনে মনে)
ইফতিঃ কি হলো মম?
মিসেস নিলুফা ঃনা মানে,,,,, তুই তো এমন সময় মানে বিকেলে আসিস না আর এতো কিছু!!!
ইফতিঃ হুম বুঝেছি,, তুমি রুমাকে বলো প্যাকেট গুলো খুলে রাখতে আমি আসছি ( একটা হাসি দিয়ে,,,, উপরে চলে গেলো)
মিসেস নিলুফা ঃ আল্লাহ আমার ছেলেটা আবার স্বভাবিক ভাবে কথা বলছে হাসছে। ও যেনো এমনই থাকে সবসময়😢
ইফতি উপরে উঠে মিসকার রুমে দিকে যাচ্ছে আর ভাবছে আবার কি রিয়াকশন দিবে মহারানী আল্লাহই জানে।দেখে মিসকা হিয়াকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে।ঘুমন্ত অবস্থায় দুজনকে একেবারে পরীর মতো লাগছে।ইফতি এক দৃস্টিতে ওদের দিক তাকিয়েই আছে।এমন সময় কারো হাতের স্পর্শ অনুভব করলো।পিছনে তাকাতেই বলে মম তুমি??
মিসেস নিলুফাঃ হুম,,,,, এতোবার ডাকছি তুই তো কোনো কথাই বলছিস না। কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলি।বলেই হাসি দিলো।
ইফতিঃ হাসি দেখে ইফতি বুঝতে পারলো,,,,,তাই কোনো কথা না বলে মুচকি একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো,,,,,,
#চলবে,,,,,,,,,,,,,,
#ভালোবাসার__টান,,,,,,,,,,,,😍👸😍
#part:::::::::(12)
#writer:::::::::Tanzidaa Jannat
(ইফতিঃ ওর রুমে এসে,,,,,ফ্রেস হয়ে নিলো,,,, লেপটপ টা হাতে নিয়ে কাজ করছে,,,,,এমন সময় ফোনে রিংটোন বেজে উঠলো)
ইফতিঃ হ্যালো,,,,,,,বাবা। কেমন আছো?
ইফতির বাবাঃ হ্যা,,,,,ভালো।তুই কেমন আছিস?
ইফতিঃ এই তো ভালো।কবে আসছো দেশে??
ইফতির বাবাঃ এই তো কাল ফ্লাইট। আসতে আসতে সন্ধ্যা হবে।
ইফতিঃ ও আচ্ছা,,,,,, ঠিকাছে কয়টায় ল্যান্ড করবে আমাকে টেক্সট করে দিও। আমি তোমায় পিক করতে যাবো। বলে ফোনটা রেখে দিলো।
যাক বাবা তাহলে কাল আসছে😊।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো ৫.২৩ বাজে।উঠে একটু বারান্দায় গেলো।মনে মনে ভাবছে রুমাকে বলি এক মগ কফি বানাতে।কফি খেলে শরীরটা ফ্রেস লাগবে।এই ভেবে নিচে গেলো।
ইফতিঃ রুমা,,,,,,,, কফি দে তো বলে সোফায় বসলো।
রুমাঃ জ্বী দাদা বাবু দিতাছি।
এর মধ্যেই মিসেস নিলুফা আসলো,,,,,,
মিসেস নিলুফা ঃ তোর বাবা ফোন দিয়েছিলো??
ইফতিঃ হ্যা,,,, কথা হলো তো,,, বললো কাল ফ্লইট।
মিসেস নিলুফা ঃ হ্যা,,,,,, আমাকেও বলেছে,,,,,
রুমাঃ নেন দাদা বাবু। আর কিছু দিমু খাইবেন??
ইফতিঃ না,,,, লাগবে না।আচ্ছা মম ঘরটা আজকে নিরিবিলি লাগছে বাচ্চারা কোথায়??
মিসেস নিলুফা ঃ বাচ্চারা!!! (কিছুটা ভ্রু কুচকে)
ইফতিঃ না,, না,মানে,,আসলে,,,,,
মিসেস নিলুফা ঃ জোরে হেসে দিলো আচ্ছা বুঝেছি।মিসকা হিয়াকে নিয়ে বাইরে গেছে।।
ইফতিঃ বাইরে!! কখন গেলো??আর এমন সময় বাইরে গিয়ে কেন গেলো??
মিসেস নিলুফা ঃ তুই যখন তোর রুমে ছিলি তখনই। তুই তো কাজ করতে বসলে চারদিকের খবর থাকে না। আসলে মিসকা হিয়াকে ডাক্তারের কাছে গেছে।
ইফতিঃ ডাক্তারকে ফোন দিলেই তো চলে আসতো।
মিসেস নিলুফা ঃ মিসকা কোনো রিক্স নিতে চায় না তাই সরাসরি হসপিটালে গেছে।সব ভালোভাবে চেকাপ করার জন্য।
জানিস মেয়েটা খুব লক্ষী। নিজের মেয়ের মতো করে ওকে যত্ন করছে,,,,যে ঘরে বউ হয়ে যাবে সে ঘর আলোতে ভরে উঠবে,,,,,,ইফতি কিছু বলছে না।কথা শুনছে আর কফির মগে চুমুক দিচ্ছে
এমন সময়ই কলিং বেল বেজে উঠলো। মিসেস নিলুফা উঠতে নিলে।ইফতি টি টেবিলের উপর কফির মগটা রেখে।
ইফতিঃ মম তুমি বসো আমি দেখছি।( ইফতি গিয়ে দরজা খুলে দিলো। হিয়া আর মিসকা দাড়িয়ে আছে।ইফতিকে দেখে হিয়া,,,,,
হিয়াঃ বাবাই,,,,বলেই কোলে উঠলো।( আসলে বাচ্চারা এরকমই হয়। একটু আদর করলে সব ভুলে যায়)
ইফতিঃ হিয়াকে কোলে নিয়ে মিসকার দিকে এক নজর তাকিয়ে ভিতরে আসলো।মিসকাও ভিরতে ঢুকে দরজা আটকে দিলো।
মিসেস নিলুফা ঃ মিসকা কি বললো ডাক্তার?? সব ঠিকাছে তো?
মিসকাঃ হ্যা আন্টি আল্লাহর রহমতে সব ঠিক আছে।
মিসেস নিলুফাঃআলহামদুলিল্লাহ,,,,,
এদিকে হিয়াকে কোলে নিয়ে ইফতি আদর করছে।ওর সাথে হাসছে,,,,, হিয়াও ইফতিকে চুমু দিচ্ছে ওর সাথে হাসছে,,,,( মনে হচ্ছে এই আদর টুকু পাওয়ার জন্য কতো পিপাসা ছিলো হিয়ার আজ তা ও জয় করেছে)
ইফতিঃ হিয়াকে আদর করছে আর কতক্ষণ পর পর আড় চোখে মিসকাকে দেখছে,,,,,
মাগরিবের আযান পরলে মিসেস নিলুফা নামাজ আদায় করতে তার রুমে চলে যায়।
মিসকাঃ ওর রুমে দিকে যাচ্ছে আর ভাবছে হিয়াটা আজ কতো খুশি আমার আজ খুব আনন্দ হচ্ছে। মি.ইফতির সাথে সেদিনকার ব্যাবহারের জন্য কি ছড়ি বলবো? কিন্তু আমার তো সামনে গিয়ে দাড়ানোর সাহসই নাই।সেদিন রাগের মাথায় কি কি করেছি ভাবলেও ভয় লাগে।এমন সময় মিসকার ফোনে রিংটোন বেজে উঠলো📲
মিসকাঃ আসসালামু আলাইকুম আম্মু তুমি?? কেমন আছো?
মিসকার আম্মু ঃ ভালো তুই কেমন আছিস?
মিসকাঃ এই তো ভালো।
মিসকা ওর আম্মুর সাথে অনেকক্ষণ কথা বললো।কথা বলা শেষ হলে ও ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে নিলো।বারান্দায় গিয়ে এক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে আকাশের দিকে।আকাশ দেখতে ওর বরাবরই ভালো লাগে।তারউপর মৃদু বাতাস বইছে ওর খোলা চুলগুলো হালকা উড়ছে,,,ওর বেশ ভালোই লাগছে,,,,,,
হিয়াঃ আন্টি,,,,,,আন্টি ডাকতে ডাকতে রুমে ঢুকলো।
মিসকাঃ কি হয়েছে আমার লিটল প্রিন্সেস এর।বলে বারান্দা থেকে রুমে আসে)
হিয়াঃ দেখ বাবাই আমাকে কতো খেলনা দিয়েছে!!
মিসকাঃ ওয়াও,,,,,এত্তগুলা খেলনা তোমার??
হিয়াঃ আরো আছে,,,,দেখ তোমাকে আর আমাকে এই বক্সগুলো দিয়েছে।বাবাই বলেছে এগুলো আমাদের দুজনের জন্য এই প্যাকেটগুলো দিয়েছে।
মিসকাঃ আমাকেও!!!আচ্ছা দাও তো দেখি কি আছে,,,,,,খুলেই দেখে সবগুলো বক্সে চকলেট। এত্তগুলো চকলেট।আমি তো বিশ্বাসই করতে পারছি না
হিয়াঃ আন্টি কি ভাবছো।খাবে না?
মিসকাঃ হ্যা,,,, খাবো তো। আমারও চকলেট ভিষন পছন্দ।
দুজনে চকলেট খাচ্ছে। মিসকাও হিয়ার সাথে বাচ্চা হয়ে গেছে।
এদিকে ইফতি দরজার আড়ালে দাড়িয়ে সব দেখছে।
ইফতিঃ এজন্য ই তো চকলেট এনেছি।আমি ঠিক বুঝতে পারছিলাম যে মেয়ের বাচ্চামির সভাব এখনও যায় নি সে মেয়ের চকলেট পছন্দ না করে পারে না।চকলেট খাচ্ছে কিভাবে গালে ঠোঁটে লাগিয়ে একদম বাচ্চাদের মতো লাগছে ইফতি ওখান থেকে রুমে চলে আসে।এসে লেপটপ নিয়ে আবার কাজে লেগে পড়ে।
এর মধ্যেই ওর ফোনের রিংটোন বেজে ওঠে,,,
ইফতিঃ হ্যালো ,,,, ম্যানেজার সাহেব বলেন।
আচ্ছা ঠিকাছে ফাইলটি পাঠিয়ে দিয়েন আমি চেক করে নিবো।বলে ফোনটা রেখে দেয়। কিছুক্ষণ কাজ করে নেয়। বারান্দায় গিয়ে দাড়ায় আজকে আকাশটা দেখতে ওর ভালোই লাগছে।আগে কতো আকাশ দেখেছে তবে তখন ওর সব কিছু জুরে অন্য কেউ ছিলো।তাকে নিয়ে কল্পনার সাগরে ডুব দিতো এই চাঁদ দেখতে দেখতে।তবে আজ অনেক দিন পর ইফতি মুগ্ধ হয়ে চাঁদ দেখছে।
রুমাঃ দাদাবাবু নিচে খেতে আসেন।
ইফতিঃ সবাই গিয়েছে,,,,,,,
রুমাঃ খালাম্মা বসে আছে। হিয়ামুনিরে এক গ্লাস দুধ দিয়া আসছি। আর মিসকা আফামুনি কইলো তার ক্ষুধা নাই।
ইফতিঃ ও আচ্ছা আমি আসছি।( কি এমন খেয়েছে রাতে না খেয়ে ঘুমাতে হবে.।আজব কিছু মেয়েরাই থাকে রাতে না খেয়ে শরীরের করুন অবস্থা করে)
এসব ভাবতে ভাবতে ধাক্কা খেয়ে পরে যেতে নিলে তাল সামলিয়ে দাড়িয়ে যায়।what theeeeeদেখে মিসকা নিচে পরে আছে,,,,,,,,
মিসকাঃ দেখে চলতে পারেন না,,,,,, আমার কোমরের বারোটা বাজিয়ে তো দিলেন।
ইফতিঃ তুমি তো ঘুমিয়ে ছিলে এখানে আসলে কেমনে?
মিসকাঃ মানে কি,,,,,,,, কিসব আজে বাজে বলছেন?
ইফতিঃ না কিছু না,,,,,,, তোমার চোখ কোথায় ছিলো হ্যা??
মিসকাঃ আমার চোখ আমার সাথেই ছিলো। ঘুমিয়ে গিছিলাম তখন মনে পড়লো রুমে পানি নেই,,,তাই তো পানি আনতে যাচ্ছিলাম ( চোখ কচলাতে কচলাতে)
ইফতিঃ তা কি এখানেই থাকবে নাকি??উঠছো না যে??
মিসকাঃ দেখতে পাচ্ছেন না উঠতে পারছি না😒একটু সাহায্য করবে তা নয় খালি ধমকে যাচ্ছে। মানুষ তো না মনে হলো একটা গাছের সাথে ধাক্কা খেলাম,,,,,,
ইফতিঃ এই তুমি কি বললে??
মিসকাঃ যা বলছি একদম ঠিক বলেছি। বার বার উঠতে চেস্টা করছে কিন্তু পারছে না,,,,,,
ইফতিঃ হাতটা ধরো,,, বলে হাতটা বাড়িয়ে দিলো,,,,,কিন্তু মিসকা ধরলো না,,,,
ইফতি বসে বললো কথা তো শুনলে না এবার দেখ কি হয় বলেই কোলে তুলে নিলো
মিসকাঃ😱একি করছেন।
নামান বলছি ভালো হবে না,,,কিন্তু,,,,😡😠
ইফতিঃ হিশশশশশশ🤐,একটা আওয়াজ করবে না। বেশি চ্যাচা মিচি করবে আছাড় দিবো,,,,,😉
মিসকাঃ এ্যা,,,,,,,,,,,,,,,,,,!!
ইফতিঃ এ্যা,,,,,,,নয় হ্যা।তুমি এই কয়েকদিনে বুঝে গেছো আমি যা বলি তাই করি,,,,, ভালো চাইলে চুপ করে থাকো।🤓
মিসকাঃ কোনো কথা বলছে না। তবে মনে মনে ইফতির চৌদ্দ গোষ্ঠীকে বকে উদ্বার করে দিলো।বজ্জাত একটা গন্ডারের মতো শরীর, রাক্ষস একটা
ইফতি রুমে এসে মিসকাকে রুমি বসিয়ে দিলো।
ইফতিঃ কি বকাবকি শেষ হয়েছে মহারানীর??😅
মিসকাঃ একি সব শুনে ফেললো নাকি না মানে,,,,,,,,
ইফতিঃ থাক আর মানে মানে না করে মুখটা বুজে রাখো। মসা ঢুকবে।তো মিস মসা ফার্স্টএইড বক্স কোথায়??
মিসকাঃ এই আপনি আমাকে কি নামে ডাকলেন??
ইফতিঃ আপনি আপনার নাম জানেন না নাকি??
মিসকাঃ কিন্তু আমি তো শুনলাম,,,,,,
ইফতিঃ মসা!!! 😂আমি তো এই নামে ডেকেছি।
মিসকাঃ চোখ বড় বড় করে চেয়ে আছে ইফতির দিকে👁👁মনে হচ্ছে খেয়ে ফেলবে ইফতিকে।
ইফতিঃ এই তো পেয়েছি।একি আমাকে তো খেয়ে ফেলবেন মনে হচ্ছে মিস মসা
মিসকাঃ ভালো হচ্ছে না কিন্তু আমার নামটা ঠিক করে বল্লে বলেন না বল্লে বলার দরকার নাই
ইফতি একটু হেসে মিসকার পাসে বসে।আর মিসকার পায়ে হাত দিয়ে বলে কোন পায়ে ব্যাথা পেয়েছো??
মিসকাঃ আমার পা কেনো ধরছেন?
ইফতিঃ কথা কম বলে বলো কোন পায়ে ব্যথা??
মিসকাঃ আপনি কি করে জানলেন আমার পায়ে ব্যথা।
ইফতিঃ পায়ে ব্যথা পেয়েছো বলেই উঠে দাড়াতে পারো নি।না হলে এটলিস্ট হেটে রুমে আসতে পারতে।
এবার বলো কোন পায়ে ব্যথা পেয়েছো বলো।
মিসকাঃ বাম পা দেখিয়ে দিলো।
ইফতিঃ আচ্ছা তুমি এমন কানার মতো সবসময় চলো কেনো বলোতো।মিসকা তো রেগে আগুন হয়ে যা আসছে মুখে তাই বলছে এদিকে মিসকার পা ধরে ইফতি পা ধরে জোরে একটা দিলো মোচড়।
চলবে,,,,,,,,