ভালোবাসার টান
Part :19,20
Writer:Tanzidaa Jannat
19
ইফতি লক খুলে দেওয়ার সাথে সাথে,,মিসকা গাড়ির দরজা খুলে নামতে গেলো,,,,,হঠাৎ হোচট খেয়ে পরে গেলো,,,,,,
মিসকাঃ আ,,,,,হ( চিৎকার দিল)
মিসকার চিৎকারের শব্দ পেয়ে ইফতি তাড়াতাড়ি গাড়ি থেকে নেমে ওর সামনে গিয়েই জোরে জোরে হাসতে লাগলো,,,,,,
ইফতিঃ একদম ঠিক আছে,,সব কিছুতে এতো পাকনামি করলে এমনই হয়,,,( হাসছে আর বলছে)
(মিসকা হা করে ইফতির দিক তাকিয়ে আছে,,,,,,)
মিসকাঃ স্যার,,,,,, হাসছে তাও আবার প্রান খুলে,,,।স্যার তো বেশি হাসেন না তাহলে??
ইফতি পেট ধরে হেসেই যাচ্ছে,,,,
মিসকাঃ এতো হাসির কি হলো হ্যা,,,,,,বজ্জাত একটা আমি পরে গেছি আমাকে একটু সাহায্য করবেন তা না হেসে যাচ্ছেন
ইফতিঃ কি করবো বলো,,,,,ধুলা দিয়ে তো সারা শরীর মেখে ফেলেছো,,,,,তোমাকে একটা জোকারের মতো লাগছে
মিসকাঃ কি বললেন আপনি
ইফতিঃ ওকে বাবা সড়ি,,,এবার হাতটা দাও,,,,
মিসকা মুখটা একটু বাকা করে অন্য দিক তাকিয়ে আছে,,,,🙄
ইফতি ওকে কোলে তুলে নিয়ে পাশের বেঞ্চে বসিয়ে দিলো,,,,,,
মিসকাঃ আরে কি করছেন,,,,( মিসকা যত ইফতিকে দেখছে ততই অবাক হচ্ছে। সত্যি লোকটা অদ্ভুত।)
ইফতিঃ নাও এবার ধুলোবালি ঝেড়ে নাও,,,,,
মিসকা জামা কাপড় ঝাড়ছে তার সাথে সাথে বিরবির করে ইফতির চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করছে,,,,,
মিসকাঃ বদমাস,হনুমান,বজ্জাত, গোমড়ামুখো,সবসময় আমার সাথে এমন করে,, কথা শুনাবে না হয় আমাকে কস্ট দিবে।আবার হাসছে,,,,,ইচ্ছে করছে পঁচা ডোবায় চুবিয়ে দিই,,,,বজ্জাত ডেভিল,,,
ইফতিঃ মুখ চেপে হাসছে,,,,আর ওর দিকে তাকিয়ে আছে,,,,,( বিরবির করেই যাচ্ছে পাগলি একটা,,,,, )
মিসকাঃ হ্যা,,,, চলুন আমার হয়ে গেছে,,,,
ইফতিঃ দাড়াও,,,,,,
মিসকাঃ আবার কি??
ইফতি পকেট থেকে একটা রুমাল বের করে মিসকার গাল পরিস্কার করে দিচ্ছে,,,,,,
মিসকাঃ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে,,,,,ওর যেন চোখে নেশা ধরে যাচ্ছে। হার্টবিট বেড়ে যাচ্ছে,,,,,
ইফতিঃ নাও এবার চলো,,,,মুছে দিয়েছি,,,,
মিসকাঃ মাথা নাড়িয়ে হ্যা সুচক সম্মতি জানায়,,,,,( আমার হার্টবিট কেনো বেড়ে যায় যখন উনি কাছে আছে।আগে তো কখনও এমন হয় নি,,,
দুজনে ভিতরে যায়,,,,,গিয়ে দেখে হিয়া বসে আছে,,,,
মিসকাঃ হিয়া,,,,,
হিয়াঃ আন্টি!! ( বলে দৌড়ে আসছে)
মিসকাঃ আস্তে পরে যাবে তো
হিয়া দৌড়ে এসে মিসকাকে জড়িয়ে ধরলো,,,,,মিসকাও দুগালে চুমু দিল,,,,,,
মিসকাঃ কেমন কাটলো দিনটা আজ,,,,,,??
হিয়াঃ অনেক অনেক ভালো কেটেছে,,,,,
ইফতি হিয়াকে কোলে নিয়ে বললো চলো আমাদের তো বাসায় যেতে হবে,,,, গাড়িতে বসে সব গল্প হবে,,,,
হিয়াঃ আচ্ছা
ইফতি হিয়াকে নিয়ে গাড়ি পর্যন্ত গিয়ে মিসকাকে গাড়িতে উঠত বলে,,,,মিসকা গাড়িতে উঠলে হিয়াকে ওর কোলে বসিয়ে দেয়,,,,ইফতি ড্রাইভিং করছে আর হিয়ার সাথে কথা বলছে,,,,
হিয়াঃ জানো বাবাই আজকে স্কুলে এসে অনেক মজা করেছি,,,,খেলেছি,,,,
ইফতিঃ ও তাই,,,ও কয়জন বন্ধু বানিয়েছো তুমি??
হিয়াঃ দুজন
ইফতিঃ মাত্র দুজন,,,,
মিসকাঃ একদিন গিয়ে দুজন পরের দিন আবার দুজন বন্ধু হবে,,,,তাই না হিয়া??
ইফতিঃ কার মেয়ে দেখতে হবে না
মিসকাঃ হুম তা তো দেখতেই একটা ডেভিলের একটা কিউটসি পেয়ারীসি প্রিন্সেস
মিসকার কথা শুনে একটু ভ্রু কুচকে ওর দিক তাকিয়ে আবার ড্রাইভিং করতে লাগলো,,,,
মিসকাঃ টিফিনে সব খাবার খেয়ে নিয়েছো তো??
হিয়াঃ তুমি এত্তগুলা খাবার দিয়েছো এগুলো কিভাবে খাবো।তাই ফ্রেন্ডসদেরও কিছু দিয়েছি,,,,,,
মিসকাঃ আমি তো জানতাম তুমি একা খাবে না তাই বেশি দিয়েছি
হিয়াঃ তুমি তো আমার ভালো আন্টি
ইফতিঃ হ্যা সব ভালো তোমার আন্টি,,, আর আমি পঁচা
হিয়াঃ তুমিও ভালো,,,কিন্তু আন্টি তো বেশি ভালো,,,,,
ইফতিঃ হুম তা তো বুঝিই,,,,,,
ওরা বাসায় পৌছে গেলো,,,,,,
ইফতি কলিং বেল দিলে রুমা এসে দরজা খুলে দেয়,,,,, ইফতি উপরে চলে যায়,,,,,
মিসকাও হিয়াকে নিয়ে ওদের রুমে চলে আসে,,,
মিসকা,ঃ হিয়া তাড়াতাড়ি ড্রেস চেঞ্জ করে নাও,,,,,,
হিয়ার ড্রেস চেঞ্জ করে দিয়ে ওকে ফ্রেস করে নিজেও ফ্রেস হয়ে নেয়,,,,,দুজনে নিচে নেমে যায়,,,
মি. মুফতিউর রহমান ঃ তোরা এসে গেছিস আয় এখানে বোস,,
হিয়াঃ দৌড়ে গিয়ে দাদুভাইয়ের কোলে গিয়ে বসলো,,,
মিসকা গিয়ে মিসেস নিলুফা এর পাশে বসলো,,,,,
হিয়া কতক্ষণ দাদুভাইয়ের সাথে টিভি দেখছিলো,,,পরে রিমোট নিয়ে দুজনেই যুদ্ধ শুরু করে দিলো,,,,,মিসেস নিলুফা আর মিসকা দেখছে আর হাসছে,,,,
মিসেস নিলুফা ঃ দেখেছো তো সবসময় এরকম করে দুজন। ওনাকেও বলি বাচ্চা দের কে না চেতানোর জন্য,,,,,, উনিও বাচ্চা হয়ে যায়,,,
মিসকাঃ হাসিখুশি থাকা ভালো,,,আর দাদু নাতনীর এইটুকু খুনসুটি তো থাকবেই
ইফতি ফ্রেস হয়ে বারান্দায় গিয়ে পরীবেশটা উপভোগ করছে,,,,আকাশটা হালকা মেঘলা,,,,, মেঘ ছোটাছুটি করছে,,,,,মনে হচ্ছে তারা তাদের গন্তব্য স্থান পৌছানোর জন্য পাল্লা লাগছে,,,,,এই ওয়েদারে কফি খেলে বেশ লাগবে,,,,,
ইফতি নিচে যাওয়ার সময় ভাবলো ওই দুই পিচ্চি কি করছে একবার দেখে আসি,,,,,,
ইফতি রুমে কারো শব্দ পেলো না,, তাই ভিতরে ঢুকলো,,,,দেখলো কেউ নেই,,,,,মনে হচ্ছে নিচে গেছে ভেবেই বের হওয়ার জন্য পা বাড়ালো,,,এমন সময় ফোনের রিংটোন বাজার শব্দ পেলো,,,,,পিছনে ঘুরে দেখে বিছানার উপর মিসকার মোবাইলটা বাজছে,,,গিয়ে মোবাইল হাতে নিতেই মেজাজটা তিরিক্ষি হয়ে গলো,,,,,
ইফতিঃ মিসকার মোবালে আবিদ ফোন করেছে,,,, আজই তো দেখা হলো কথা হলো,,,,আবার ফোন দিয়েছে কেনো??
ফোনটা কেটে দিয়ে নিচে নেমে গেলো,,,,নিচে গিয়ে দেখলো সবাই চা নাস্তা করছে হিয়া ওর দাদুভাই এর কাছে বসে কার্টুন দেখছে আর মিসকা আর মিসেস নিলুফা গল্প করছে আর খাচ্ছে,,,,
ইফতি নেমে মিসকার হাতে ফোন দিলো,,,,
ইফতিঃ এই নাও তোমার ফোন।হাতের কাছে ফোন রাখতে পারো না,,,,,,, ইমপর্টেন্ট মানুষ ইম্পর্টেন্ট কাজের জন্য ফোনও তো দিতে পারে
মিসকাঃ ফোনটা হাতে নিয়ে ভাবছে এভাবে কেনো বললো কথাটা,,,
ইফতি গিয়ে হিয়ার পাশে বসলো,,,,হিয়াও ওর বাবাইকে পেয়ে মজা করছে হাসছে,,,,,
ইফতি মাঝে মাঝে মিসকার দিকে তাকাচ্ছে,,,,
ইফতিঃ রুমা কফি দে তো,,,
রুমাঃআচ্ছা ছোটসাহেব দিতাছি,,,,,
মিসকা ঃ হিয়া চলো তোমাকে খাইয়ে দিই,,,,,তোমাকে তো তাড়াতাড়ি ঘুমাতে হবে,,,,
হিয়াঃ আরেকটু থাকি না,,,,,,,
মিসকাঃ কাল তো অনেক ভোরে উঠতে হবে,,,,,চলো এখন খেয়ে নেবে
হিয়াঃ ঠিকাছে,,,,,,,,,
মিসকা হিয়াকে কোলে নিয়ে রুমে গেলো আর রুমাকে বললো,,,,,
মিসকাঃ রুমা তুমি হিয়ার খাবারটা উপরে পাঠিয়ে দাও,,,
রুমাঃ ইফতিকে কফি দিয়ে বললো আচ্ছা।
হিয়া সবাইকে গুডনাইট দিলো,,,,,,
মি. মুফতিউর রহমানঃগুড নাইট দাদুভাই,,,,,,
মিসকা রুমে এসে হিয়াকে বিছানায় বসালো,,,,এর মধ্যেই রুমা হিয়ার খাবার নিয়ে রুমে আসলো,,,,,
মিসকাঃটেবিলে রাখো আমি হাতটা ধুয়ে আসি,,,,
রুমাঃ আচ্ছা,,,
মিসকা হাতটা ধুয়ে এসে হিয়াকে খাওয়াচ্ছে।
হিয়াঃ আন্টি আমাকে একটা গল্প শুনাও না
মিসকাঃ হিয়াকে গল্প বলছে আর হিয়া খাচ্ছে,,,,,,
এমন সময় ইফতি মিসকার দরজা নক করলো,,,
ইফতিঃ আসবো,,,,
মিসকাঃ হুম,,, আসুন,
হিয়াঃ বাবাই😊
ইফতিঃ আমি কি আজ হিয়াকে ঘুম পারাতে পারি??
মিসকাঃ হুম ( একটু মুচকি হেসে)
ইফতি ও কতক্ষণ ওদের সাথে মজা করছে হাসাহাসি করছে,,,,দুজনেই একসাথে দুপাশ দিয়ে হিয়ার দুগালে চুমা দিলো,,,,দুজনেই হিয়াকে একসাথে চুমু দেওয়ায় দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে,,,,
মিসকাঃ( লজ্জায় চোখটা তাড়াতাড়ি সরিয়ে নিলো,,,),কি হলো এটা আল্লাহ
ইফতিঃ লজ্জা পেলে ওকে অসম্ভব সুন্দর লাগে ( মনে মনে)
হিয়াঃ ওফফ আমার যে কি আনন্দ হচ্ছে দুজন এক সাথে আমাকে পাপ্পি দিয়েছে,,,( হাত তালি দিয়ে)
মিসকাঃ( হিয়ার মুখ ধরে) আস্তে মামুনি সবাই শুনতে পাবে তো।প্লিজ লক্ষিটি আর জোরে জোরে বলো না
হিয়াঃ মাথা নেড়ে হ্যা বললো,,,,
ইফতিঃ ওদের দুজনকে দেখছে আর হাসছে,,,,,,
#চলবে,,,,,,,,,,,,
#ভালোবাসার__টান,,,,,,,😍👸😍
#Part ::::::::::::(20)
#writer::::::::::Tanzidaa Jannat
ইফতিঃ হয়েছে,,,, দুজনের??
মিসকা আর হিয়া দুজনেই ইফতির দিকে তাকালো,,,,,
ইফতিঃ কি ব্যাপার!!! আমি কি ক্রিমিনাল নাকি দুজনে এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছো কেন??
মিসকাঃ আপনি যেভাবে কথাটা বললেন মনে হচ্ছে আমরা মার পিট করছি,,,,,,,তাই তো ওভাবে তাকালাম। 🤐
হিয়াঃ আচ্ছা দুজনে থামো তো,,,, আমার ঘুম পাচ্ছে আমি ঘুবাবো। তোমরা পরে যত ইচ্ছা ঝগড়া করো,,,,,,🙄🙄
মিসকা, ইফতি দুজনেই হিয়ার কথায় অবাক,,,,,
মিসকাঃ লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে,,,,
ইফতি ঃ ওরে আমার পাকনি বুড়ি,,,, চলো এবার ঘুম পাড়িয়ে দিবো,,,,( বলে কোলে নিয়ে চলে যাচ্ছিল)
মিসকাঃ ওকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন??
ইফতিঃ ছাদে,,যাবে??
মিসকাঃ এতো রাতে ছাদে,,,,,আঙ্কেল আন্টি কিছু বললে,,
ইফতিঃ কি বলবে( একটু ভ্রু কুচকে)
মিসকাঃ না মানে এতো রাতে ওকে নিয়ে ছাদে যাবেন,,,,আমি বলছিলাম কি ,,,,, এতো রাতে ওকে ছাদে নেওয়া ঠিক হবে??
ইফতিঃ তুমি কি ঐসব জিনিস বিশ্বাস করো??
মিসকাঃ বুঝলাম না ঐসব জিনিস মানে??
ইফতিঃ ভুত প্রেতের কথা বলছি।এটা তো গ্রামে বিশ্বাস করে অনেক,,,,
মিসকাঃ দেখুন এটা বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের নয়। আমি এতো রাতে ওকে নিয়ে ছাদে যেতে দিবো না,,,আমি ওকে নিয়ে কোনো রিক্স নিবো না
ইফতিঃ একটু হাসলো ( এতটা ভালোবাস হিয়াকে,,,,,, মনে মনে)
আচ্ছা আমি তোমার মেয়েকে কোথায়ও নিচ্ছি না,,,,,, ও আমার কোলেই ঘুমিয়ে পরেছে,,,,,এবার বলো কোথায় ঘুম পারাবো,,,,
মিসকা দেখলো ইফতির কোলেই হিয়াটা ঘুমিয়ে গেছে,,,,,,তাড়াতাড়ি বালিশ ঠিক করে দেয়,,,,
ইফতিঃ ওকে সোয়ায় দিয়ে হিয়ার গালে একটু চুমু একে দেয়,,,,,(গুড নাইট হিয়া কানের কাছে আস্তে বলে) তারপর চলে যায়,,,,
মিসকা এসে হিয়ার পাশে সুয়ে থাকে,,,,হিয়া মিসকার দিকে ফিরে ওকে জড়িয়ে ধরে বুকের সাথে লেপ্টে আছে,,,,মনে হচ্ছে এটাই ওর আশ্রয় স্থান পরম সুখের স্থান। মিসকা হিয়ার গালে একটা চুমু দিয়ে ওর গায়ে চাঁদরটা ভালো করে দিয়ে। লাইটা অফ করে,,,,,হিয়া জড়িয়ে ঘুমিয়ে পরে,,,
ইফতিঃ রুমে গিয়ে লেপটপ নিয়ে বসে,,,,, কিন্তু কাজে মোন বসছে না,,,,তাই বারান্দায় গিয়ে হাত দিয়ে গ্রিল ধরে বাহিরের দিকে মুখ করে চোখ বন্ধ করে আসছে,,,,বাহিরের মৃদু বাতাস তার শরীর সুয়ে যাচ্ছে ভালোই লাগছে তার,,,,,,চোখে ভেসে আসছে মিসকার চেহারা,,,তাদের প্রথম দেখা,,,প্রতিটা মুহুর্ত, মিসকার রাগি মুখটা,,,ভয় পাওয়া,,,,সাহস করে কথা বলা৷ আর হিয়াকে নিয়ে ওর যতো চিন্তা,,,,এসব ভাবছে আর নিজে নিজে ব্লাসিং হচ্ছে,,,,,,
হঠাৎ চোখ খুলে 👀আমি মিসকার ব্যাপারে এতো ভাবছি কেনো?? মাত্র কয়েকদিন হলো আমি ওকে চিনি,,,তাহলে আমি কি ওর উপর দুর্বল হয়ে যাচ্ছি কিন্তু এসব কি করে সম্ভব??🤔নিলা আমার জীবন থেকে চলে যাওয়ার পর আমি তো অনেক মেয়েদের সাথে কথা বলেছি,,,, এক সাথে কাজ করেছি কিন্তু এমন অনুভুতি কখনও হয় নি,,,,,,আমি কি ওকে ভালোবেসে ফেলেছি
কিন্তু নীলা আমার সাথে যেটা করেছে তারপর কি আমার আবার একই ভুলটা করা ঠিক হবে,নাহ আমি কিছু ভাবতে পারছি না আর ভাবতে চাইও না,,,,,
ইফতি ইজিচেয়ার এ বসে সারারাত একই কথা ভাবছে,,,ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছে তা সে নিজেই জানে না,,,,,,,
সকালে চোখে আলো পরতেই ইফতি চোখ খুলে,,,,,,, একি আমি এই জায়গায় ঘুমিয়ে ছিলাম,,,ওফফ বুঝতেই পারি নি ইফতি উঠে ওয়াশরুমে চলে গেলো,,,,
মিসকাঃ ঘুম থেকে উঠে আগে নিজে ফ্রেস হয়ে নিলো,,,, নিচে গিয়ে হিয়ার টিফিন বক্স রেডি করে,,,,,,,রুমে গেলো,,,
মিসকাঃ হিয়া,,,,,হিয়া দেখো সকাল হয়ে গেছে,,,,এবার উঠতে হবে তো,,
হিয়াঃ আরেকটু ঘুমাই না,,,,
মিসকাঃ স্কুলে দেরী হয়ে যাবে তো,,,,উঠো বলেই টেনে কোলে তুলে নিলো,,,,,,
হিয়া ঘুম ঘুম চোখে তাকাচ্ছে আবার ঢলে পরে যাচ্ছে,,,
মিসকা ওকে ফ্রেস করে রেডি হয়প নিচে নামলো,,,,
মিসকাঃ কি খাবে বলো,,,,
হিয়াঃ নুডলস
মিসকাঃ এই নাও,,,
হিয়াঃ একি এটা কখন বানালে
মিসকাঃ আমি জানতাম তুমি এটার কথাই বলবে তাই আগেই রেডি করে রেখেছি,,,,
হিয়াঃ আন্টি ইউ আর দ্যা গ্রেট
ইফতি নিচে নেমে দেখলো হিয়াকে নুডুলস খাওয়াচ্ছে,,,,
ইফতিঃ গুড মর্নিং মাই বেবি,,,
হিয়াঃ গুড মর্নিং
রুমাঃ ছোট সাহেব কি দিমু??
ইফতিঃ আপাতত কফি দিলেই হবে। নাস্তা পরে করবো,,,
মিসকা হিয়াকে খাইয়ে দিয়ে তাড়াতাড়ি বের হয়ে পরলো,,,
হিয়াঃ টাটা বাবাই,,,
ইফতিঃ টাটা,,,,,
মিসকা আর হিয়া দুজনেই বেরিয়ে গেলো,,,,,
ইফতি কফিটা নিয়ে উপরে গিয়ে লেপটপ নিয়ে বসেছে,,,,,
মিসকা হিয়াকে স্কুলে পৌছে দিয়ে সরাসরি অফিসে চলে যায়,,,,,কাল ইফতি ওকে একটা ফাইল দিয়েছিলো,,,,তা অবশ্য ও ঠিক করে নিয়েছে তবুও ও কাজে কোনো কমতি থাকা চলবে না। ইফতির কাছে ওকে আর হেনস্তা হতে কিছুতেই দেবে না,,,,
মিসকা অফিসে গিয়ে নিজের কেবিনে যেতেই,,,,
নাবিলাঃ ম্যাম আপনি ঐ দিকে কেনো যাচ্ছেন??
মিসকাঃ কেনো আমার কেবিনে যাচ্ছি ( কিছুটা অবাক হয়ে)
নাবিলাঃ ম্যাম আপনার কেবিন চেঞ্জ করা হয়েছে,,,
মিসকাঃ কেনো??
নাবিলা ঃ জানি না কাল স্যার আপনার কেবিন চেঞ্জ করতে বললো,,,,,তাই করা হয়েছে,,,
মিসকাঃ ওহ,,,,,তা এখন কোন দিক যাবো??
নাবিলাঃ আমার সাথে আসুন,,,,,
মিসকা নাবিলার পিছনে যাচ্ছে,,,,
নাবিলাঃ এটা আপনার কেবিন।
মিসকাঃ এটা( এতো সুন্দর ডেকোরেট করা আর সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হচ্ছে ইফতির কেবিনের সামনে,,,,,,সব কিছু দেখা যায়,,,,,
নাবিলাঃ ম্যাম,,, আমি আসছি,,,,
মিসকাঃ হ্যা,,,এসো,,,,( মিসকা ভেবে পাচ্ছে না হঠাৎ এই রুমে তাও আবার ইফতির কেবিনের পাশে,,,,,,) বুঝেছি আমাকে চোখে চোখে রাখবে কোনো ভুল করলে সায়েস্তা করার আরেকটা পদ্ধতি বের করেছে বজ্জাত গোমড়ামুখো টা ( ভাবতেই মোনটা খারাপ হয়ে গেলো)
কি আর করা মিসকা লেপটপ টা চালু করে প্রজেক্ট টা রেডি করে ফেললো,,,,
ইফতি একটু দেরী করেই আজ অফিসে এসেছে,,,,ইফতি এসে নিজের কেবিনে গেলো,,,,,
ইফতিঃ কি কাজ করছে মেয়েটা এতক্ষণ ধরে,,,,,??
মিসকাঃ উফফ এতক্ষণে কাজটা কমপ্লিট হলো,,,,,,যাই আবিদ কে দেখিয়ে নিই একবার,,,,, স্যারের কাছে জমা দেওয়ার আগে,,,,,,,
(,,মিসকা উঠতে নিলেই আবিদ নক করে)
আবিদঃ আসবো???
মিসকাঃ হ্যা এসো,,,,,আমি তো তোমার কাছেই যাচ্ছিলাম তুমি এসে ভালোই করলে,,,,,,,,
আবিদঃ ও তাই,,,,,,তো কি জন্য বলতো? তুই তো আবার প্রয়োজন ছাড়া কারো কাছে যাস না
মিসকাঃ সবসময় খোচা না মেরে কথা বলতেই হবে??
আবিদঃ খোচা মারলাম কোথায়?? যা সত্যি তাই বলেছি,,,,,
মিসকাঃ হ্যা তুই তো সত্যবাদী জতিষ্ঠি। এবার দেখতো কাজটা কি ঠিকঠাক হয়েছে কি না,,,,,
আবিদঃ কি মিথ্যা বললাম?? এখনই কাজ ধরিয়ে দিলি,,,,
মিসকাঃ উফফ কথা না বাড়িয়ে দেখ তো,,,,,, কখন আবার স্যার ডেকে পাঠায়( লেপটপটা এগিয়ে দিয়ে)
আবিদঃ হুম,,,,দে দেখছি,,,,
ইফতিঃ এতোক্ষন ধরে কি কথা হচ্ছে দুজনের। বাহ দুজনে তো ভালই হেসে হেসে কথা বলছে,,,,আজকে মুডটা ঠিক করে বাসা থেকে বের হয়েছি। আবার নষ্ট করে দিলো
ইফতি মিসকাকে কল দিলো,,,,,
মিসকাঃ ইয়েস,,,,,
ইফতি ঃ এখনই আমার কেবিনে আসো,,,,,,,
মিসকাঃ জ্বী স্যার আসছি,,,,,,,(বলেই ফোনটা রেখে দিলো,,,,,)
বলেছিলাম না রাক্ষস টা ডেকে পাঠাবে,,,,, কিরে তোর দেখা হলো,,
আবিদঃ হুম নে যেটুকু ভুল ছিলো সব ঠিক করে দিয়েছি,,,,,
মিসকাঃ আচ্ছা ধন্যবাদরে,,,,,আমি এখন যাই পরে কথা হবে,,,,,,,
কখন ফোন করেছে কতটা দেরী হয়ে গেলো আজ আমার রক্ষা নাই( বলেই কেবিন থেকে দৌড়ে বাইরে গেলো)
আবিদঃ আরে শো,,,,,,,,ন( কথাটা বলার আগেই মিসকা বের হয়ে গেলো)ওকি কখনও আমার মনের কথা শুনবে না,,,,, আমি কি কখনও ওকে আমার মনের কথাটা বলতে পারবো না,,,,,,,ওকে যতটা ধরতে যাই মনে হচ্ছে ও আরো তত দূরে সরে যাচ্ছে,,,,,,, আবিদ কল্পনায় ডুবে গেলো,,,,,,,সেই প্রথম দিন থেকে আবিদ ওকে পছন্দ করে।সেদি মিসকা ভার্সিটিতে প্রথম আসে।লাল রংয়ের একটা থ্রিপিছ পরা চুলগুলো ছাড়া কপালে একটা ছোট্ট টিপ,,ঠোঁটে হালকা করে লিপস্টিক,,,,,অসম্ভব সুন্দর লাগছিল ওকে,,,,,, ওর পাশ কাটিয়ে যখন যাচ্ছিল তখন আবিদের মনে হচ্ছিল ওর মোনটাকে ওর সাথে নিয়ে গেছে,,,,,পরে জানতে পারে ওর সাথে একই ডিপার্টমেন্টে পড়ে।মিসকার সাথে বন্ধুত্ব করা এতো সহজ ছিলো না,,,,,,,, কারন ও প্রয়োজন ছাড়া কোনো ছেলেদের সাথে কথা বলতো না,,,,,,,কোনো আড্ডা দিত না,,,,অনেকেই ওকে পছন্দ করতো কিন্তু ওর সামনে গিয়ে বলার সাহস কেউই পায় নি,,,,আবিদ ওকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখেই যেতো,,,,ওর সাথে কথা বলার সাহস করে উঠতে পারে নি।একদিন আবিদ রাস্তা দিয়ে কলেজে যাচ্ছিল। তখন মিসকাকে দেখলো ওর বান্ধবীদের সাথে হেসে হেসে কথা বলছে আর ফুচকা খাচ্ছে। ওকে দেখে আবিদ তাকিয়েই থাকে পাশে কি হচ্ছে না হচ্ছে ওর কোনো খেয়ালই নেই। হঠাৎ একটা গাড়ি এসে ধাক্কা😞ভাগ্যিস গাড়িটা থামিয়ে দিয়েছিলো তা না হলে সোজা উপরে,,,মিসকা দৌড়ে এসে আবিদকে ধরে উঠালো।মিসকা ব্যাগ থেকে স্যাভলোন বের করে কাটা যায়গায় পরিস্কার করতে লাগলো।আর বকতে লাগলো,,,,,, মিসকাঃ দেখে শুনে হাটতে পারেন না আজ গাড়ি টা না থামালে কি হতো??একের পর এক বকেই চলেছে। আর আবিদ ওর দিকে তাকিয়েই ছিলো।ওর মনে হচ্ছিলো এই সময়টা যদি থমকে যেতো,,,,,এসব ভাবতে ভাবতেই আবিদ হেসে দিলো,,,,ওর ঘোর কাটলো ফোনের রিংটনে,,,,,,,,
আবিদঃ হ্যালো,,,,,,,মেনেজার সাহেব বলুন,,,,, আচ্ছা আমি এখনই আসছি,,,,
উফফ ওর কথা ভাবতে গেলে সব কেমন এলোমেলো হয়ে যায়😌😌( বলেই কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলো)
চলবে,,,,,,,