ভালোবাসার টান Part:21,22

ভালোবাসার টান
Part:21,22
writer:Tanzidaa Jannat

21

ইফতিঃ কখন ফোন করেছি এখনও আসছে না,,,,,,কি এতো কথা ওদের দুজনের,,,

মিসকাঃ এসে দরজায় নক করলো,,,,,

ইফতি ঃ শুনতে পেলো কিন্তু কোনো শব্দ করলো না,,,,,লেপটপ নিয়ে বসে বসে কাজ করছে

মিসকাঃ কি হলো এখনও কোনো সারা নেই,,,,,কতক্ষণ ধরে নক করেই যাচ্ছি 😠।আচ্ছা আমি কি ভিতরে ঢুকবো,,,,না বাবা আবার সেদিনকার মতো করলে,,,,,মেজাজ টা এতো খারাপ হচ্ছে ইচ্ছে করছে রাক্ষস টার মাথাটা ফাটিয়ে ফেলি😬

ইফতি ঃ এখন কেমন লাগে দেখো,,,,এতক্ষণ দেরী করে এসেছ এর সাজা ভোগ করো এবার😂

মিসকা কখন থেকে দাড়িয়ে আছে সবাই তাকিয়ে দেখছে মিসকার ব্যপারটা ভালো লাগছে না,,,,,, কি লজ্জা জনক পরিস্থিতি
পুরো ৩০ মিনিট পর ইফতি আসতে বললো,,,,,মিসকা রাগে লাল হয়ে গেছে। গোলাপি মুখটা লাল হয়ে গেছে,,,,মনে হচ্ছে সুযোগ পেলেই ইফতিকে কেটে কিমা বানিয়ে খেয়ে ফেলবে,,,,,😠

মিসকাঃ এই নিন আপনার ফাইল,,,,বলেই চলে যাচ্ছিলো,,,,

ইফতিঃ দাড়াও,,,,,,এতো তাড়া কিসের?? বাকি সবার সাথে তো ভালই হেসে হেসে কথা বলো,,,,তখন তো সেখান থেকে আসতেও ইচ্ছা করে না,,,,

মিসকাঃ কি বললেন আপনি??দেখুন সবসময় আমাকে কথা না শোনালে কি আপনার ভালো লাগে না,,,,কিন্তু মনে রাখবেন আমারও কিন্তু সহ্যের সীমা আছে,,,,

ইফতিঃ বসা থেকে উঠে দাড়ালো,,,,কি বললা তুমি?? আমি সবসময় কথা শুনাই??😬

মিসকাঃ তা নয় তো কি?? সবসময় মুখটা গোমড়া করে রাখেন আর কথা শোনতেই থাকেন। একদম ডেভিল মনে হয়,,,,,মনে হয় এই বুঝি মেরে ফেলবেন

ইফতি মিসকার দিকে রাগি লুকে তাকিয়ে আছে,,,,,

মিসকা ঃ আমি কি কিছু ভুল বলেছি। আল্লাহ এতো আমার দিকেই আসছে,,,,উফফ এতো বার বার বলি এই ডেভিল টার সামনে কোনো কথা বলবো না তবুও বলতে হয়,,,,, আজ আমাকে কেউ বাঁচাতে পারবে না,,

ইফতি এক দৃষ্টিতে মিসকার দিক তাকিয়ে এগুতে লাগলো। মিসকা ভয়ে চোখ বন্ধ করে শক্ত হয়ে দাড়িয়ে আছে,,,

ইফতি ওর খুব কাছাকাছি চলে এলো,,,,মিসকার নিঃশ্বাস আরো ভারি হতে থাকলো,,,,,

ইফতি মিসকার খুব কাছ হয়ে ঘেঁষে টেবিল থিকে একটা লেটার এগিয়ে দিলো,,,

ইফতিঃ এই টা নাও,,,,,

মিসকাঃ চোখ খুলে হা করে তাকিয়ে আছে,,,( এটা কি হলো আজ ডেভিলটা আমায় কিছু বললো না যে)

ইফতিঃ মিসকাকে এই অবস্থায় দেখে একটু হেসে বললো মুখ বন্ধ করো মশা যাবে,,,,,

ইফতির কথায় মিসকা স্বাভাবিক হয়ে দাড়িয়ে,,,,

মিসকাঃ কি এটা,??

ইফতিঃ না ধরলে কিভাবে বুঝবে এটা কি,,,,,নাও আগে হাতে নাও,,,,

মিসকাঃ হাতে নিয়ে বললো খুলবো??

ইফতিঃ হুম খুলতে পারো,,,,

মিসকাঃ খামটা খুলে চোখ বড়ো বড়ো করে তাকিয়ে আছে,,,, একি!!!

ইফতিঃ কি হলো এভাবে তাকিয়ে আছো মনে হচ্ছে ভুত দেখলা।

মিসকাঃ আমি আপনার পার্সনাল এসিস্টেন্ট!!! মানে কি এগুলোর??

ইফতিঃ সব কিছুতে তোমার মানে লাগবে??

মিসকাঃ আমি এখানে জয়েন করেছি ১-২ মাস হবে এর মধ্যে সাধারণ এমপ্লয়ি থেকে পার্সনাল এসিস্টেন্ট 😵

ইফতিঃ এটা আমার ইচ্ছা আমি কাকে কি করবো,,,,,,তোমার থিকে আশা করি আমার শিখতে হবে না,,,,

মিসকাঃ কিছু বলতে নিয়েও বললো না,,,,,,

ইফতিঃ এবার তুমি আসতে পারো,,,,,,আর হ্যা যে প্রজেক্টা দিয়েছিলাম কমপ্লিট করেছো তো,,,,??

মিসকাঃ হ্যা,,,,,, স্যার

ইফতিঃ গুড,,,,,,,আমাকে মেইল করে পাঠিয়ে দাও,,,,

মিসকাঃ হুম ( রুম থেকে চলে গেলো)

মিসকা যাচ্ছে সবাই কেমন কানাঘুষা করছে,,,,আবার ওর দিকে তাকিয়ে আছে,

মিসকা চুপচাপ নিজের কেবিনে গিয়ে প্রজেক্টা পাঠিয়ে দিলো,,,,আর ভাবনা জগতে চলে গেলো,,কেনো করছেন এসব আমার সাথে প্রথম দিন থেকে এখন পর্যন্ত সব কল্পনা করছে,,, আচ্ছা আমি শুনেছি স্যার এমন ছিলেন না,,,তাহলে কি এমন ঘটেছে তার জীবনে। সে এতোটা চেঞ্জ হয়ে গেলো,,,,নিলা কি আদৌ বেঁচে আছে??।নাকি মৃত??।আর মৃত হলে তো ঘৃনা করতো,,,,,,??আর বেঁচে থাকলে কেনোইবা চলে গেলো,,, এমন তো না মি. ইফতির কম কিছু আছে। সম্পত্তি, বাড়ি,গাড়ি সব আছে তাহলে?? নাকি নিলাকে মি. ইফতি কস্ট দিয়েছে,,,,৷ উফফ কোথায় গেলে কার কাছে গেলে এর উত্তর গুলো পাবো,,,,এসব ভাবতে ভাবতে মিসকা কারো ডাকে ঘোর কাটলো,,,,

আবিদঃ এই মিসকা তোকে কতক্ষণ ধরে ডাকছি

মিসকাঃ ওহ শুনতে পাই নি

আবিদঃ কি এমন ভাবছিস যে শুনতেই পাস নি??

মিসকাঃ ক,,,কই তেমন কিছু না// তুই আমায় কেনো ডাকছিস সেটা বল,,,,( কথা ঘুড়িয়ে ফেললো)

আবিদঃ শুনলাম তোর নাকি প্রমোশন হয়েছে??

মিসকাঃ হুম,,,,

আবিদঃ সাধারন এমপ্লয়ি থেকো পার্সনাল এসিস্টেন্ট!!! কি ব্যাপার হুম😂

মিসকাঃ দেখ আমার রাগ বাড়াবি না,,,,,,,কেনো কি কারনে এসব করলো আমি কি করে বলবো,,,

আবিদঃ আচ্ছা বাদ দে এবার বল ট্রিট কখন দিচ্ছিস,,,,,??

মিসকাঃ এখন তো লাঞ্চের সময় হয়ে গেছে,,,, আজকেই দিবো এখনই চল,,,,,

আবিদঃ সত্যি,,,

মিসকাঃ হুম চল,,,,,,(দুজনেই একসাথে বের হলো)

ইফতি ঃ কাজ শেষ করে ভাবছে আজকে মিসকার সাথে লাঞ্চ করবো।ওকে জ্বালাতে বেশ ভালোই লাগে,,,পুরাই লংকা কি রাগ
(এর মধ্যেই ওর ফোনে রিংটোন বেজে ওঠে,,,,,,,)

ইফতিঃ হ্যালো,,,,,, ম্যানেজার সাহেব বলেন,,,

ম্যানেজার সাহেবঃস্যার আজকে যে মিটিং টা হওয়ার কথা ছিলো,,,,ওনারা ৩টার দিকে আসছে,,,,

ইফতিঃ আচ্ছা ঠিকাছে আপনি সব ঠিক করে রাখো। আমি সময় মতো পৌছে যাবো,,,

ম্যানেজারঃওকে স্যার বায়,,,,

ইফতিঃ বায়,,,,

ইফতি ঃহাতে সময় খুব কম যাই লাঞ্চ টা সেরে নিই। কিন্তু মিসকা তো কেবিনে নেই। মিসকাকে বার বার কল দিচ্ছে কিন্তু মিসকা রিসিভ করছে না।ভিষণ রাগ হচ্ছে মেয়েটার উপর। নাবিলাকে ফোন করে কেবিনে ডাকলো,,,

নাবিলাঃ আসবো স্যার,,,,

ইফতিঃ হুম আসুন,,,,

নাবিলাঃ কিছু দরকার স্যার,,,,,,

ইফতিঃ তেমন কিছু না,,,,,, মিসকা ম্যাম কোথায় তুমি জানো??

নাবিলাঃ ম্যাম তো আবিদ স্যারের সাথে লাঞ্চ করার জন্য বের হয়েছে,,,,

ইফতি কথাটা শোনার সাথে সাথে রাগে চোখমুখ লাল করে ফেলেছে,,,,,,

ইফতিঃ তুমি আসতে পারো,,,

নাবিলাঃ ওকে স্যার,,,( বলেই চলে গেলো)

ইফতি লাঞ্চ না করেই বসে আছে আর রাগে ফুসছে,,,,

মিসকা আর আবিদ লাঞ্চ শেষে হাসতে হাসতে অফিসে আসলো,,,,

ইফতি দেখছে আর রাগে হাতের পাশে থাকা গ্লাস টা এতো শক্তভাবে চেপে ধরলো গ্লাস ভেঙে হাত কেটে হাত দিয়ে রক্ত ধরছে,,,,,,

মিসকাঃ নিজের কেবিনে এসে ফোনটা বের করে তো চোখ দুটো চড়ক গাছ,,,,,এতোবার ফোন করেছে।অথচ আমি একবারও টের পাই নি।পাবো কিভাবে ফোনটা তো সাইলেন্ট ছিলো। কিন্তু এসময়১৩ বার কল দিয়েছেন কেনো😟সব কিছু ঠিক আছে তো??
কেনো যেনো এক অজানা ভয়ে মিসকার বুকটা কেপে উঠলো,,,,,দৌড়ে ইফতির কেবিনে নক না করেই ঢুকে পরলো,,,,,,

মিসকাঃ স্যার,,,,,,কিছু হয়েছে?? এতোবার কল করেছেন যে স,,,সব ঠিক আছে তো?

ইফতি কোনো কথা না বলে দাড়িয়ে মিসকার দিকে এগুতে লাগলো,,,,,মিসকা দেখলো ইফতি রাগে রীতিমতো কাঁপছে,,,, মিসকা ভয়ে পিছুতে লাগলো,,,,পিছুতে পিছুতে দেয়ালে ঠেকে গেলো,,,,,,ইফতি একদম মিসকার কাছে চলে গেলো।এতোটা কাছেই এসেছে একজনের হার্টবিটের শব্দ আরেকজন শুনতে পাচ্ছে।

মিসকাঃ হায় আল্লাহ মনে হচ্ছে ভিষণ রেগে আছে কি থেকে কি করে বসে হঠাৎ মিসকার চোখ ইফতির হাতের দিকে গেলো,,,,,

মিসকাঃ আরে স্যার আপনার হাত থেকে রক্ত পড়ছে,,,,,

ইফতিঃ উশশশশ এক দম কথা বলবে না,,,,,,,, ঠোঁটের উপর এক আঙ্গুল দিয়ে বললো,,,,

মিসকাঃ ইফতির চোখে দিকে তাকালো,,,,

ইফতি যেনো এক অজানা ঘোরের মধ্যে আছে,,,,,

মিসকাঃ কিন্তু স্যার,,,,,,,আপ( বলার আগেই পেট ধরে কাছে এনে ইফতি মিসকার ঠোঁট নিজের আয়ত্তে নিয়ে নিলো)

মিসকাঃ চোখ দুটো বড় বড় করে তাকালো,,নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেস্টা চালালো,,,,,কিন্তু লাভ হলো না
মিসকার চোখ বেয়ে পানি পরল,,,,,

অনেক্ষণ পর ইফতি মিসকাকে ছাড়লো,,,,,মিসকা রীতিমত হাঁপাচ্ছে,,,,,

ইফতিঃ আমাকে না বলে কোথাও যাওয়ার আগে এই মুহুর্তের কথা স্বরন রেখো,,,,,বলেই চলে গেলো,,,

মিসকা হাটু গিরে বসে পড়লো,,,,,মিসকা কল্পনাতেও ভাবে নি এমন কিছু একটা হতে পারে,,,,,মিসকার মনে হলো ওনার তো হাত থেকে রক্ত পরছিলো কোথায় গেলো??

#চলবে,,,,,,,,,,,,,,

#ভালোবাসার__টান,,,,,,,,😍👸😍

#part::::::::::(22)

#writer::::::::::Tanzidaa Jannat

মিসকাঃ কোথায় খুজবো এখন ওনাকে?? ম্যানেজার কাকাকে জিগ্যেস করি,,,,

মিসকা ম্যানেজারকে ফোন দিলো,,,,

মিসকাঃহ্যালো ম্যানেজার কাকা,,,,,

ম্যানেজার সাহেবঃ হ্যা মিসকা মা বলো,,,,,

মিসকাঃ আসলে,,,বলছিলাম যে স্যার কি কোথায়ও গিয়েছে?? আপনি কি জানেন কিছু??

ম্যানেজার সাহেবেঃ আজকে একটা মিটিং হওয়ার কথা কিন্তু তা তো এখন নয় আরো পরে,,,,কেনো ইফতি নেই ওর কেবিনে??

মিসকাঃ ইয়ে,,,না মানে দেখছি না তো( একটু ইতস্তত বোধ করে বললো)

ম্যানেজার সাহেব ঃ আচ্ছা আমি দেখছি,,,,,,,

মিসকাঃ আচ্ছা ঠিক আছে,,,,,

উফফ এতো কেয়ার লেস হাত দিয়ে কি পরিমান রক্ত পরেছে,,,, পুরো ফ্লোর কাচের টুকরো আর রক্ত । কি করে হলো এসব??

মিসকার একদম ভালো লাগছে না ইফতিকে একবার দেখার জন্য মোনটা কেমন যেনো করছে,,,,,,

মিসকাঃ কেন হচ্ছে আমার এরকম?? কেনো এতো কষ্ট হচ্ছে ওনার জন্য?? আমাদের মাঝে তো তেমন কিছু নেই তাহলে??( এসব ভাবতে ভাবতে মিসকা কেবিন থেকে বের হয়ে হাটছে পাশে কি হচ্ছে কিছুর দিকে খেয়াল নেই)

আবিদঃ মিসকা,,,,,এই মিসকা,,,

মিসকাঃ হুম,,,, কিছু হয়েছে??(একটু অন্য মনস্ক ভাবে)

আবিদঃ এই একই প্রশ্ন তো আমারও,,,,, কি হয়েছে??

মিসকাঃ কোথায় কিছু হয় নি তো,,,,

আবিদঃ তোর সাথে ধাক্কা লাগলো, আমি তোর সাথে কথা বলছি। কিন্তু তুই এমন ভাবে চলে যাচ্ছিস যেন তুই কিছু শুনিস নি,, কি নিয়ে ভাবছিস এতো??কি হলো দুলাভাই ঠিক করে ফেললি নাকি??

মিসকাঃ দেখ একদম ফাইজলামি করিস না।ভালো লাগছে না পরে কথা হবে বায়। ( বলেই চলে গেলো)

আবিদঃ এই মাত্র ই তো ঠিক ছিলো আবার কি হলো,,,,,এই মেয়েটাকে বুঝা একেবারেই অসম্ভব। কখন কি কারনে যে মুড চেঞ্জ হয় ও ছাড়া কেউ জানে না,,,,

এদিকে ইফতি কেবিন থেকে বেড়িয়ে বাইরে গিয়ে দাড়ায়,,,,,আর ভাবছে

ইফতিঃ আজকে কি হলো আমার?? হঠাৎ এমন করলাম কেনো,???আমি তো মেয়েদের থেকে দূরে থাকতে চেয়েছি।ভেবেছি আর কারো সাথে নিজেকে আর জড়াবো না,,,, তাহলে মিসকার জন্য আমার এ অনুভুতি কেনো,?? ওকে অন্য কারো সাথে দেখলে আমার কেনো সহ্য হয় না,,,, কেনো এতো রাগ হয়,,,,,, 😑😑

( এর মধ্যেই ইফতির ফোনটা বেজে ওঠে,,,,)

ইফতিঃ হ্যালো নাবিলা বলো,,,,

নাবিলাঃ স্যার আপনি কোথায়??

ইফতিঃ বাগানের সাইডে আছি।

নাবিলাঃ আপনি ওখানে থাকুন আমি এখনই আসছি,,,,,,,

নাবিলা এসে ইফতির সাথে মিটিং এর ব্যাপারে কথা বলছে,,, হঠাৎ নাবিলা বলে উঠলো,,,

নাবিলাঃ একি স্যার আপনার হাত দিয়ে এভাবে রক্ত,,,, ওহ মাই গড

নাবিলার কথা শুনে ইফতির খেয়াল হলো,,,,ওর হাত দিয়ে রক্ত পড়ে শার্ট প্যান্ট সব তলিয়ে গেছে,,,,,

নাবিলা ঃ চলুন স্যার বলেই ইফতির হাত ধরে অফিসের একটা রুমে এনে বাসালো।

দাড়ান স্যার আমি ফাস্টএইড বক্স নিয়ে আসি,,,,,,বলেই নাবিলা ফাস্টএইড বক্স নিয়ে ইফতির পাশে বসলো,,,

নাবিলা ইফতির হাতের কাঁচ গুলো তুলছে আর ইফতি বার বার ব্যাথায় শব্দ করছে,,,,,,এমন সময় মিসকা খুজতে খুজতে ঐ রুমটাতে ঢুকলো,,,,

মিসকাঃ নাবিলাকে ইফতির পাশে দেখে ভিষণ রাগ হলো,,,,,

নাবিলা তুমি এখানে কি করছো??

নাবিলাঃ দেইতেই তো পাচ্ছো,,,( ভ্রু কুচকে)

ইফতি মিসকার কথায় ওর দিকে তাকালো,,

মিসকাঃ তুমি তোমার কাজে যাও আমি দেখছি,,,,,

নাবিলা একটু বিরক্ত হয়ে চলে গেলো,,,,,,

মিসকা ইফতির পাশে বসে কাঁচ গুলো তুলছে,,,,,, আর বকবক করছে

মিসকাঃ এখন তো আপনি আর ছোট বাচ্চা নন।কথায় কথায় রাগ দেখাবেন,,,,, নিজের হাত পা কেটে বসে থাকবেন আন্টি বা আঙ্কেল যদি এই অবস্থা দেখে কি হবে। আর হিয়া কতোটা কষ্ট পাবে,,,,,তাতে অবশ্য আপনার কি??

ইফতি এক ধ্যানে মিসকার দিকে তাকিয়ে আছে,,,,,মিসকার চুলগুলো বাতাসে উড়ছে। আর বার বার কপালে এসে আছরে পড়ছে,,,,,,

ইফতিঃ কি মায়া এই মেয়ের মাঝে কে জানে!!! ইচ্ছে করছে একটু ছুঁয়ে দিই,😌ভালোবাসার পরশ একে দিই কপালে

মিসকাঃ ড্রেসিন করে মলম লাগিয়ে দিয়ে ব্যান্ডেজ করে দিলো,,,,

মিসকা খেয়াল করলো ইফতি তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,,,,,মিসকা একটু লজ্জা পেয়ে চোখটা নামিয়ে নিলো😌

ইফতির ফোনের রিংটোন বেজে উঠলো,,,,,

ইফতিঃ হ্যালো ম্যানেজার কাকা বাবু,,,,

ম্যানেজার সাহেবঃ তুমি ঠিক আছো বাবা??

ইফতিঃ হ্যা একদম ঠিক আছি। কেনো কিছু বলবে??

ম্যানেজার সাহেবঃ না আসলে তুমি তোমার কেবিনে নেই এজন্য আর কি

ইফতিঃ ও আচ্ছা,,,,, আমি এখনই আসছি। ( পিছনে ফিরে দেখে মিসকা নেই চলে গেছে)ইফতি নিজের কেবিনেট দিকে গেলো

মিসকা নিজের কেবিনে চলে আসলো,,,,,

মিসকাঃ আল্লাহ কি হচ্ছে আমার সাথে?? নাবিলাকে ওনার পাশে দেখে আমার কেনো খারাপ লাগছিলো??😨।আমার মাথায় তো কিছুই খেলছে না,,,,ধুরর কিসব ভাবছি,,,,,নাহ সবসময় বজ্জাত টার কথা ভাবি দেখে হবে হয়তো,,,,,এসব কিছু না মিসকা তুই তোর কাজের দিক ফোকাস কর,,,,,( বলেই লেপটপ নিয়ে কাজে লেগে গেলো),,,,,,

প্রায় আধা ঘন্টা পর,,,,,মিসকার ফোনের রিংটোন বেজে উঠলো,,,,,একি মি. বজ্জাত টা আবার ফোন কেনো দিলো??

মিসকাঃ হ্যালো,,,,,

ইফতিঃ ঘুমাচ্ছিলে??এতক্ষন লাগে ফোনটা রিসিভ করতে??

মিসকাঃ না আসলে কাজ করছিলাম এজন্য,,,,,,

ইফতিঃ আচ্ছা ঠিক আছে ,,,,,, আমার কেবিনে আসো,,,,,

মিসকাঃ কেনো??

ইফতিঃ তোমার সাথে ডান্স করবো

মিসকাঃ এ্যা,,,,

ইফতিঃ এ্যা নয় হ্যা তাড়াতাড়ি আসো কাজ আছে,,,,,,

মিসকাঃ ফোনটা না কেটেই ব্যাগটা হতে নিয়ে ইফতির কেবিনে আসলো,,,,,

ইফতিঃ কতোবার বলেছি কেবিনে আসার আগে নক করে আসবে,,,,,

মিসকাঃ না আসলে আপনিই তো আসতে বললেন এজন্য তো

ইফতিঃ হ্যা তাই বলে বলা নাই কওয়া না হুট করে ঢুকে পড়বে,,,,,,এটা কি তোমার স্বামীর বাড়ি পেয়েছো,,,,,,

মিসকাঃ এ্যা,,হ কি বলছেন এসব

ইফতিঃ যাও,,,,বাইরে গিয়ে নক করো আবার

মিসকাঃ বজ্জাত হনুমান, হাতি,গন্ডার রাক্ষস, বজ্জাত একটা ইচ্ছা করছে জাতা কলে পিসিয়ে মারি( মনে মনে)

ইফতিঃ কি হলো কি বললাম কানে যায় নি

মিসকাঃ যাচ্ছি

ইফতিঃ পাগলিটাকে রাগাতে ভিষণ ভালো লাগে। এক অদ্ভুত ফিলিংস কাজ করে,,,,,,রেগে গেলে মহারানী কে যা লাগে

মিসকাঃ দরজা নক করে আসবো??

ইফতিঃ হুম এসো,,,,মসা এখানে বসো

মিসকাঃ এই কি বললেন আপনি আমাকে??

ইফতিঃ কেনো তোমার নাম

মিসকাঃ তাহলে আমি কি ভুল শুনলাম ( আস্তে আস্তে বললো)

ইফতিঃ মিস মসা আপনার বিরবির করা বন্ধ হলে ঐ সিট টায় বসুন,,,,,কাজ আছে,,,,

মিসকাঃ তার মানে আমি ঠিক শুনেছি আপনি আমাকে মসা বলছেন

ইফতিঃ হ্যা,,,,,,,সারাদিন তো মসার মতোই ভনভন করো,,,,,আর উড়ে বেড়াও তাই এই নামটা রাখছি
ভালো না বলো

মিসকাঃ 😡😡😡😡

ইফতিঃ যাই হোক কাজের কথায় আসি,,,,,,,,, আজ তিন জন ক্লাইন্ট আসবে,,,,,,

মিসকাঃ তো?? আমি কি করবো??

ইফতিঃ কি করবা মানে??তুমি আমার পার্সোনাল এসিস্টেন্ট,,,,, তোমাকেও থাকতে হবে আমার সাথে

মিসকাঃ আপনার কি মাথা ঠিক আছে?? হিয়ার স্কুল ছুটি হবে কয়টায় আপনার খেয়াল আছে??

ইফতিঃ তোমার চিন্তা করার দরকার নাই,,,,,

মিসকাঃ দরকার নাই মানে??

ইফতিঃ এই মেয়ে তোমার সমস্যা কি হ্যা??কথা পুরা শেষ করার আগেই মুখের কথা কেড়ে নিয়ে ঝগড়া করো

মিসকাঃ কি বললেন আপনি? আমি ঝগড়া করি

ইফতিঃ চুপ একদম চুপ

মিসকাঃ ওকে
(একটু ভয় পেয়ে)

ইফতিঃ আমি বাবাকে ফোন করে দিয়েছি। হিয়াকে বাবা আজ নিয়ে যাবে,,,,

মিসকাঃ ওহ,,,,,

চলবে,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here