বজ্জাত স্যার,পর্ব–৫,৬,৭,৮
শ্রেয়া
পর্ব–৫
গাড়িটা পার্কিং সাইড রেখে, এয়ারপোর্টের ভিতরে যাখনই ঢুকলাম মনে হলো কে যেনো আমায় উড়ে এসে জরিয়ে ধরেছে।এবার লক্ষ্য করে দেখলাম কে আমাকে এভাবে জরিয়ে ধরে আছে,হ্যা তুসাই__
!
জিহাদ:: তুসা এটা কোন ধরনের ফাইজলামি এভাবে এতো মানুষের সামনে জরিয়ে ধরেছিস কেন!! ছাড়!!
তিসা:: উমমম( জরিয়ে ধরে) আর ছাড়ছি না।এতো দিন তোমার অপেক্ষায় ছিলাম, কবে দেখা পাবো!!
জিহাদ:: হোয়াট!! আমার দেখা পাবি মানে!! কি সব বলছিস।
তুসা::(দূর এটা কি বলে ফেললাম
)না না আসলে কিছু না,কত বছর দেখা তো তাই বলেছি।তুমি কেমন আছো!! আগের থেকে কতো হ্যান্ডসাম হয়ে গেছো!! চিনাই যাচ্ছে না।
জিহাদ:: থাম!!! তোর বলা শেষ হয়েছে! আমি ভালো আছি(ঘড়ির দিকে তাকিয়ে) ওহ নো! ১০টা বেজে গেছে!তাড়াতাড়ি চল।
তুসা:: (গর্ধব একটা এখনো বুঝে না,ওকে আমি কত ভালোবাসি।আর না!! এবার নিজের করেই নিবো) হ্যা চলো।জিহাদ আমাকে তো মনে হয় তোমার ভার্সিটিতে ভর্তির কথা ছিলো,মামা বলছিলো!
জিহাদ:: ফুফির দিকে তাকিয়ে, ফুপি তুমি গাড়ি করে যাও।আমি আর তুসা না হয় রিক্সা করে চলে যাবো।
ফুপি:: আচ্ছা বাবা দেখে শুনে যাস।
জিহাদ: ঠিক আছে! আসি তাহলে।(বলে একটা রিক্সা নিয়ে তুসা আর জিহাদ ভার্সিটির দিকে যায়)
______
এদিকে মুক্তা আর আমি পৌছে গেলাম ভার্সিটিতে।পুরো ভার্সিটি সাজানো হয়েছে ফুল দিয়ে নতুন দের নবীনবরন করা হবে,আর নবীন বরন করবে সিনিওররা!! মুক্তা আর ঝিনুক সামনে গিয়ে দুটো চেয়ার নিয়ে বসে,আর তাদের কয়েকজন ফ্রেন্ড যোগ দেয়___
নিশি:: কিরে পুরো ফাটিয়ে দিয়েছিস তো!!
দিয়া:: দেখতে হবে না ফ্রেন্ড গুলো কার!! দেখিস কেউ আবার তোদের প্রেমে না পরলেই হয়।
রিদয়:: আমি তো অলরেডি গোলাপবানুর উপর ফিদা হয়ে গেছি
আমি:: গোলাপ বানু আবার কে রে!!
রিদয়:: তোর সাথের টারে!! গোলাপ বানু,দেখছিস কি সাজটা দিয়েছে!! গোলাপ গোলাপ লাগছে!!
মুক্তা:: আমাকে গোলাপ বানু বলার তুই কে!! তোকে তো ছাগল ছাগল লাগছে আবার ছাগল দাড়ি রেখেছিস!! ছাগলের সাথে যে তোকে বেধে রাখেনি এাটা বল
রিদয়:: আমাকে ছাগলের মতো লাগে!! দারা আজকে!! (সবাই হাসাহাসি করতে থাকি)
এর মধ্যে একটা ছেলে আছে,আর বলতে থাকে আমাদের মাঝখানে__
ছেলেটি:: হায়,আমি পিয়াস।তুমি??
আমি::(শুনেও না শোনার ভান ধরে অন্য দিকে তাকিয়ে আছি)…….
ছেলেটি:: হ্যালো মিস, আপনাকে কিছু বলেছি!!
আমি::………….
ছেলেটি::কিছু তো বলো।।
আমি:: আজব তো!! কি বলবো।।কি বলছেন আপনি!!
ছেলেটি::আমি পিয়াস,তোমার নাম কি বিউটি কুইন!
আমি:: কি পিয়াজ
পিয়াস: না আই মিন পিয়াস,ভুল শুনেছো
আমি :: হ্যা বুজেছি পিয়াজ,তোহ কি ভাজি করবো!!
পিয়াস:: না আসলে তোমার নামটা__
আমি:: আমার নাম মরিচ,((ওকে আরো কিছু বলতে যাব তখনই মুক্তা ডাকে)))
কিরে এতো কিসের কথা বলছিস ঐ ছেলের সাথে,,
আমি :: আরে কিছু না,ফালতু প্যাচাল পারতে আসে!!
((তখনই মুক্তা বলে উঠে দোস্ত স্যার কে কি দারুন লাগছে রে, আই এম ক্রাস))
আমি:: আর কত ক্রাস খাবি,সালমান খানের উপর ক্রাস,আমির খানের উপর ক্রাস শেষে স্যারের উপরেও।বাহ বাহ অস্কার পুরুস্কারটা তোর উপরই বরদ্দ
মুক্তা:: হোপপ!! কিসব বলিস,,ঐগুলা ফেক ক্রাস,কিন্তু তোর সাথে ভালে মানাবে রে
আমি:: শোন তোর ভালো লাগে তুই কাধে নিয়া ঘুর, আমাকে টানিস না
মুক্তা::এর মধ্যে বলে উঠে দেখ স্যারের সাথে মেয়েটা ক্যা রে, স্যারের সাথে একেবারে লেগে আছে।চল তো দেখি ওখানে কি করছে,এতো ভিড় জমছে কেনো!!
আমি:: তুই যা, আমি যাব না, আমার ভালো লাগছে না।।এই ঠ্যাডা পরা গরম!! উফপ!!
মুক্তা:: গরম না ছাই!! চল।
(বলেই আমাকে টানতে টানতে নিয়ে গেলো)
[[সেখানে গিয়ে দেখি স্যার জি যেনো বলছে]]
জিহাদ:: তোমাদের ১ম বর্ষের নিউ ফ্রেন্ড,ওর নাম তুসা! আমার ফুফাতো বোন।তোমরা ওর সাথে ফ্রি হয়ে যাও। কথা বার্তা বলো
তুসা:: আমাকে রেখে যেও না ভয় করছে।
জিহাদ::ইটস ভার্সিটি, ডোন্ট ইউর হোম।এখানে আপনি করে বলবে।আর স্যার বলে সম্বোধন করবে(এটা বলে সামনের দিকে তাকাবো দেখি মুক্তা আর ঝিনুক কে ঝিনুকের থেকে তো চোখই ফেড়ানো যাচ্ছে না এতো সুন্দর লাগছে,এক পলক দেখেই চলে গেলাম অফিসরুমে)
মুক্তি:: দোস্ত স্যার তোর দিকে এমন করে তাকিয়ে ছিলো কেনো!! কুছ তো ঘারবার হে
আমি:: শোন তোর ফালতু কথা রাখ তো।বলে চলে আসি।
( আসতে আসতে সবাই চলে আসে,তারপর প্রিন্সিপাল স্যার বক্তৃতা দেয়। আরো কিছু স্যাররাও বক্তৃতা দেয়, এর পর নবীন করার জন্য আমাদের সকলকে জড়ো করে,এক এক করে সবাইকে একটা করে ডায়েরি আর ফুল দেওয়া হয়, সিনিউররা ফুল গুলো আমাদের হাতে দেয় বাট পুয়াস ফুল হাতে নিয়ে আছে, অবশেষে আমার আর মুক্তার পালা আসে,আমি ফুল নিতে যাবো হুট করে পিয়াস আমার ধরে তারপর ফুল দেয়, ব্যাপারটা আমার কাছে খারাপ লাগে বাট ফুল নিয়ে চলে আসি)
((বাট আসার পথে হঠাৎ এক ইটের সাথে উস্টা খেয়ে পায়ের সাথে শাড়ি আটকে কুচি খুলে যায়, কোনো মতে শাড়ি ধরে চেয়ারে এসে বসি))
এরপর মুক্তা এসে বলে কিরে চলে আসলি যে ওয়েটও করলিনা।
আমি:: চুপ থাক দোস্ত আমি তো শেষ!
মুক্তা:: শেষ মানে কি হয়েছে!! বল আমায়!!কি হয়েছে!
আমি:: আমার শাড়ির কুচি খুলে গেছে, কি করবো এখন কুত্তু এতো কথা না বলে চুপ থাক এখন
মুক্তা:: হায় রে কেমনে খুললো,কোনো মতে ধরে উঠ,পারবি তো
আমি: হ্যা,পারবো।
মুক্তা:: চল ঐদিকে দেখা যাক।
আমি:: শাড়িটা ধরে পিছনের শিড়ির দিয়ে গেলাম দুজন।
মুক্তা:: ঐখানে স্টোর রুম কেউ আসবে না তুই গিয়ে ঠিক কর।আমি বাহিরে আছি।
আমি:: আচ্ছা, বাট তুই দারিয়ে থাকবি ওকে।
(পরে আমি স্টোর রুমে ডুকে গেট টা আস্তে করে চাপিয়ে রেখে, পুরো শাড়িটা খুলে আবার পরতে শুরু করলাম , বাট পিন তো নাই কিভাবে আটকাবো))
আমি:: মুক্তা আছিস তুই,দোস্ত পিন লাগবে। এনে দে।
মুক্তা:: ওকে, তুই ওয়েট কর আমি নিয়ে আসছি।
আমি: আচ্ছা।
( আর এদিকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জিহাদ আমার সাথে ঘটা কাহিনীগুলা পর্যবেক্ষন করে অনেকটা রেগে যায়,চারোদিকে তাকিয়ে খুজতে থাকে গেলো কোথায় দুজন।খুজতে খুজতে পিছনের শিড়ি রাস্তা দিয়ে হাটতে হাটতে স্টোর রুমের দরজার সামনের দিয়ে যেতে নিলে দু কদম হেটে আবার সামনে এসে থমকে দারায় ))
[কি ব্যাপার, ভিতরে গুন গুন আওয়াজ আসে কিসের, স্টোর রুমে এই সময়ে কে!! বলে গেট খুলতে যাবে___
তখনই ভিতর থেকে দৌড়য়ে আসি,, আর তেলাপোকা!!তেলাপোকা!!! আয়য়য়য়য়াাাাাাাাা!!! বলেই যখনই বের হতে নেই হঠাৎ কারো সাথে ধাক্কা লাগে আর ধপাস করে মাটিতে পড়ে যাই))
আমি তো ভাবছি মনে হয় আমার কোমড় শেষ।।আর এদিকে স্যার আচমকা টাল সামলাতে না পেরে মাটিতে পড়ে যায় আর আমি তার উপর পড়ে যাই। আমি চোখ ওফ করে ফেলি।
(( কিছুক্ষন চোখ বন্ধ করে রাখার পর আস্তে আস্তে আোখ খুলে তাকিয়ে দেখি স্যার আমার দিকে চেয়ে আছে,একদৃষ্টিতে))
(আর এদিকে জিহাদ হা করে আছে, ঝিনুককে এতো সুন্দর লাগছে।জোড়া ভ্রু এর মধ্যে কাজল দেওয়া চোখ,হালকা লিপিস্টিক চুল খোলা
এতোটা কাছে দেখা হয় নি তার,আজ চোখই সরাতে পারছে না।জিহাদের যেনো নেশা ধরে যায়,মনে হয় সে কোনো ঘোরের মধ্যে আছে।আচমকা স্যারের এক হাত দেখি আমার কোমড় জরিয়ে ধরে,আমার পুরো শরীর কেপে উঠে!! আমি কিছু বলার শক্তি হারিয়ে ফেলছি, কি বলবো!! ভেবেই পাচ্ছি না।মাথা ঝিমঝিম করছে!!তার ঠোট থেকে আমার ঠোটেঁর দূরত্ব ২ইন্চি ফাক হবে,তার ঘন ঘন নিশ্বাস এসে পড়ছে আমার মুখে,আস্তে আস্তে সে তার ঠোট আমার ঠোটের দিকে দিতেই ___
মুক্তি চিৎকার দিয়ে বলে, ঝিনুকককককককককক।
(তখন আমার ঘোর কাটে, ধড়পড়িয়ে উঠতে নিলে আমার গলার চেন স্যারের শার্টে বোতামের সাথে আটকে যায়।আহ খুলছেও না, কেমন টা লাগে))
আমি’:: চেন টান দেই খুলে না, বার বার টান দিতে দিতে বিরক্ত হয়ে চেন ছিড়েই উঠে দারাই।আর উঠেই তাড়াতাড়ি আমার শাড়ি ঠিক করে ফেলি।(আর স্যার তাকিয়েই আছে,আমি তো লজ্জায় যায় যায় অবস্থা )
মুক্তা:: তুই ঠিক আছিস তো কিভাবে কি হলো!! পরলি কিভাবে আর স্যার বলার আগেই।
(কোথা থেকে যেনো তুসা চলে আসে))আর বলতে থাকে,
তুসা:: জিহাদ কি হয়েছে পড়লে কিভাবে!! ঠিক আছো তো!!আর এখানে আসছো কেনো।।
জিহা: (উঠে দারিয়ে) আমার দিকে তাকিয়ে, না না আই এম ওকে।কোনো সমস্যা না।
( এদিকে তুসা জিহাদপর দিকে তাকিয়ে দেখছে মিট মিট করে হাসছে আমার দিকে তাকিয়ে,, আর তুসা ভাবছে, আমার ধারনাটাই ঠিক, আমার তখনই মনে খটকা লাগছিলো এই মেয়ের সাথে কোনো কিছু আছে,যা ভাবার তাই হলো।করাচ্ছি ফাইজলামি দারা))
এবার তুসা আমার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো__
তুসা’:: লজ্জা সরম নেই,হ্যা স্যারের উপর এসে শুয়ে পড়ো!! লজ্জা থাকা দরকার এসব মেয়েদের জন্যেই টিচাররা তাদের সম্মান হারায়।নোংরা চরিত্রের মেয়ে।লজ্জা থাকলে আর কখনো সামনে আসবে না।
((এটা বলার পরই আচমকা একটা ঠাসসসসসস করে চড় দেওয়ার শব্দ আসে))
চলবে__
,
# বজ্জাত_স্যার_
# শ্রেয়া____
!
!
পর্ব—৬
!
আচমকা ঠাসসসস করে শব্দ আসে।আমি তুসাকে থাপ্পরটা দিলাম।আর বললাম___
আমি:: ঐ তুই কে হ্যা!! তুই দেখছিস আমি স্যারের সাথে কি করেছি না!! শাকচুন্নি ব্যবহার ভালো করিস আর নয়তো(বলে যখন আরেকটা থাপ্পর দিতে যাব তখনই স্যার আমার হাত ধরে ফেলে)
জিহাদ:: এখানে যে টিচার দাড়িয়ে আছে দেখেছো।আমাকে কিভাবে সম্মান করলে??আমি সামনে থাকা সত্ত্বেও আরেক স্টুডেন্টকে মারলে।এতো সাহস তোমার, এর শাস্তি তোমাকে পেতেই হবে ঝিনুক(দাতে দাত চেপে বললাম)
আমি:: স্যার হ্যা আপনি তো সামনেই ছিলেন কি করতেই বা পারছেন!!এতো গুলো কথা শুনালো। আপনি তো নিরব দর্শক ছিলেন।আর কি বলার বাকি রাখছে আপনার প্রানপ্রিয় বোন।আমাকে যখন নোংরা বলল,তখন আপনি কোথায় ছিলেন!! তখন কথা ফুটে নি,আপনি তো___
(বলার আগে ঠাসসসস করে একটা থাপ্পর দেয় আমার গালে।আমি অবাক হয়ে স্যারের
দিকে তাকিয়ে আছি।আর ঐ দিকে তুসা ন্যাকা কান্না করছে আর বলছে___)
তুসা:: ভাইয়া ভালো করেছো।অনেক বেড়ে গেছে মেয়েটা।কত গুলো কথা শুনালো তোমায়!! কাউকে সম্মান করতে হয় কিভাবে তা জানেই না।তুমি যে টিচার সে গননাই করে না।তোমার সামনে আমাকে কত জোরে থাপ্পরটা
দিলো(কান্না করতে করতে)
জিহাদ:ব্যাস অনেক হয়েছে তোদের নাটক,তুই যা এখন থেকে। তোর চেহারা আর দেখতে চাই না।এক সেকেন্ডও তুই দাড়াবি না।
তুসা:: (যাবো যাবো,আজ বাসায় যেয়ে নেই তোমার জন্য কত বড় ব্লাস্ট রেডি আছে তা জানো না।)যাচ্ছি,তু তুমি কখন যাবে??
জিহাদ: আমি যখন মন চায় যাবো,আমাকে নিয়ে তোর ভাবতে হবে না।আজই তুই রিটার্ন ব্যাক করবি।
তুসা:: হুম ওকে যাচ্ছি,
!
!
{{আর আমি থাপ্পর খেয়ে গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছি।স্যার আমাকে মারতে পারলো এতোটা নিষ্ঠুর কিভাবে হলো!! আমি কি অপরাধ করেছি আমকে কেউ কখনো মারে নি,আর উনি ))
!
জিহাদ:: (হঠাৎ ওর দিকে তাকাল দেখি গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে,কিন্তু আমি পরোয়া করলাম না সেদিকে)রাগে আমার সমস্ত শরীর কাপছে,ওর এক হাত ধরলাম (আর ও আমার দিকে তাকিয়ে আছে)স্টোর রুমের দিকে নিয়ে গেলাম।
!
আমি:(স্যার আমাকে স্টোররুমে নিয়ে যায় কেন!! থাপ্পর দিয়েও কি মন ভরে নি কুত্তা, বাদর, ফাজিল,বজ্জাত মার্কা স্যার আমিও দেখে নিবো,মনে মনে বললাম)আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন।প্লিজ হাত ছাড়েন।আর ভুল হবে না,প্লিজ স্যার
!
জিহাদ:: (আমি ওর কোনো কথা শুনলাম না,স্টোর রুমে ভিতরে ডুকিয়ে দিয়ে বাহিরে গেট আটকিয়ে দিলাম)আজ পুরো অনুষ্ঠান তুমি স্টোর রুমের ভিতরে থাকবে এটা তোমার শাস্তি।
!
আমি:: প্লিজ স্যার এই কাজ কইরেন না, আমার এমনি তেলাপোকা অনেক ভয় করে এ্যাাাাাাাাাাাা। স্যার দরজা খুলেন প্লিজ স্যার।
!
জিহাদ:: না,শাস্তি তোমাকে পেতেই হবে।(বলে চলে আসতে নিলাম।দেখি অনেক ছেলে মেয়ে দাড়িয়ে আছে।কয়েকজন ভয়ে কাপাকাপি করা শুরু করে দিছে)
!
[[যাও, যাও অনুষ্ঠান এ সবাই যাও।এখানে কি তোমাদের!! এখানে কি সুটিং চলছে,যে এতো জমাট বেধে দাড়িয়ে আছো।যাও।আর কেউ যেনো ভুলেও স্টোর রুমের দাড়ের কাছে না আসে।যদি কাউকে দেখি ওর শাস্তি কি হবে সে ভাবতেও পারবে না।বলতে বলতে দেখি কেউ নাই সব চলে গেছে শুধু মুক্তা দাড়িয়ে আছে)
!
জিহাদ:: কি তুমি এখনো দাড়িয়ে কেনো!! তোমারও কি বান্ধবির সাথে রেখে দিতে হবে নাকি একসাথেই থাকতে চাচ্ছো।বলো না হয় তোমাকেও ডুকিয়ে দেই।
!
মুক্তা:: না স্যার তেমন কিছু না,আসলে ঝিনুক একা অনেক ভয়—-
!
জিহাদ: অনুষ্ঠানে এটেইন করো।এখানে না দাড়িয়ে থেকে(বলে চলে আসলাম,দেখি মুক্তারও আমার পিছনে পিছনে আসছে।))
((আর এদিকে আমার জীবন যায় যায় অবস্থা।।কেন যে শাড়ি পরছিলাম আর কেন যে স্টোররুমে আসছিলাম
আল্লাহ!!আমারে উঠাইয়া লইয়া যাও।আরে ঐটা কি ।।স্টোররুমে অনেক ময়লা, অনেকদিন ধরে পরিষ্কার করে না কেউ।কাশতে কাশতে আমার ধম বন্ধ হয়ার উপক্রম।কোনো কিছু ধরলেই পোকা,পিপড়া বের হয়।।হঠাৎ মনে হলো একটা বড় পোস্টারের নিচে কি যেনো!! পোস্টার টা উঠিয়ে দেখি মানব কঙ্কাল। এমনি অনেক ভিতু আমি!! এই সময়ে এটা দেখে আআআআআআআআআআআআআআআ
আআআআআআ বলে একটা চিৎকার দেই পড়ে আর আমার কিছু মনে নাই))
!
[[আর এদিকে অনুষ্ঠান প্রায় শেষ। সবাই যার যার মতো চলে যাচ্ছে,জিহাদ এখনো যায় নি।কারন তার কিছু কাজ বাকি আছে।অফিসের কম্পিউটারে বসে কাজ করছে।কিন্তু তার মনেই নেই যে কোন সকালে ঝিনুককে স্টোররুমে রেখে আসছে সে নিশ্চিন্তে বসে বসে কাজ করছে।।]]
!
((আর এদিকে মুক্তা ভাবছে,আর কত টাইম মেয়েটাকে আটকিয়ে রাখবে।।না জানি কি করছে একবার স্টোর রুমের দিকে যায় আবার স্যারের রুমের সামনে যায়।সাহস করে এবার স্যারের রুমের সামনে দাড়িয়ে)
!
মুক্তা::স্যার আসতে পারি।
জিহাদ:: ————–
মুক্তা:: হায় আল্লাহ , স্যার শুনে না কেন।স্যার আসবো?
জিহাদ:: ওহ কে!! মুক্তা!! এখনো যাও নি।।সবাই চলে গেছে!!
মুক্তা:: স্যার আসলে ঝিমুক তো স্টোর রুমে,ওকে রেখে ____
জিহাদ:: ওহ মাই গড!! তুমি আগে বলবে না।আমি তো কাজ করতে করতে ভুলেই গেছি
তাড়াতাড়ি চলো।
!
মুক্তা: (হ রে বেটা এখন মনে পড়ছে,এতোক্ষন ধরে ডাকতেছি শুনেই না) হ্যা চলেন।
(তাড়াতাড়ি স্টোর রুমে দিকে গেলাম আমরা দুজন)
!
জিহাদ:(আমি তাড়াতাড়ি স্টোর রুমে গিয়ে দরজা খুলে দেখি ঝিনুক মাটিতে পড়ে আছে
)ঝিনুকককককককক বলে তাড়াতাড়ি ওকে জড়িয়ে ধরলাম
ওর মাথাটা আমার হাতের উপর রেখে, নাকের সামনে হাত দিয়ে দেখি না শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে।তার মানে ঘুমে আছে এখন।ইসস গালে চড়ের দাগটা আছে,হালকা করে গালটা ছুয়ে দিলাম।আর মুক্তা কে ডাক দিলাম,এই মুক্তা মুক্তা পানি নিয়ে আসো শিগশিগর
!
মুক্তা:: স্যার ঝিনুক মাটিতে কেনো।কি হয়েছে ঝিনুকের!! আমি পানি আনছি। দাড়ান স্যার!
!
জিহাদ:: এখন কথা বলার সময় না পানি আনো(( ইসস মেয়েটা কি হাল করছে চেহারাটার,কাজল লেপ্টে গেছে চুল এলোমেলো,আমি ওর সামনের দিকে আসা চুল গিলো ফু দিয়ে উড়িয়ে দিলাম,আর কিছু চুল কানের পিছে গুজে দিয়ে কপালে একটা চুমো খেলাম।আসলে আমি সত্যি সরি ঝিনুক।আমি বুঝতে পারিনি আমার একটু রাগের জন্য তোমার এতো কিছু হয়ে যাবে।
প্লিজ মাফ করো আমায়,আমি সত্যি অনেক বড় অপরাধ করে ফেলছি।তার মধ্যেই মুক্তা ডাক দেয়__)
!
মুক্তা:: স্যার পানি এই নিন।
স্যার :: দাও( নিয়ে ওর মুখে ছিটিয়ে দিলাম।আর সাথে সাথে চোখ খুলে)
!
আমি::((চোখ খুলে তো আমার চোখ কপালে উঠে যায়। আমি স্যারের পায়ের উপর কেনো!! আর এখানেই বা কেনো আমি। আস্তে আস্তে সব মনে পড়ে কিভাবে স্টোর রুমে এলাম
,আর স্যারের পায়ের উপর থেকে সরে দাড়িয়ে পড়ি)
!
জিহাদ:: কি হলো দাড়িয়ে পড়লে কেনো!! তোমার শরীর ভালো না।
!
আমি:: আপনার এসব আদূরে কথা, আপনার কাছে জমা রাখেন!! সারাটাদিন স্টোর রুমে রেখে এখন আদর দেখাতে আসছে
!
জিহাদ::দেখো এসব কথা পড়ে,আহে তুমি আমার কথা শুনো……
আমি:: আর শুনতে হবে না,অনেক শুনছি মুক্তা চল তো।ভালো লাগছে এমনি। সামনের দিকে যাবো।তখনি মাথাটা কেমন যেনো করে উঠে,মনে হয় পুরো পৃথিবীটা ঘুরে গেলো।আমি চুপ করে দাড়িয়ে রইলাম গেটের সামনে মাথাটা ধরে
!
মুক্তা:: কি হয়েছো রে!! দাড়িয়ে পরলি মাথা ধরছে নাকি!! আস্তে আস্তে হাটতো
জিহাদ::( আমি দেখলাম চুপ করে দাড়িয়ে আছে, বুঝলাম হাটতে হয়তো কষ্ট হচ্ছে) হাটতে সমস্যা হচ্ছে,হেটে যেতে হবে না।আমার সাথে চলো ড্রাইভ করে দিয়ে আছি।
!
আমি:: আপনি যান না কেনো।এমনি ভালো লাগছে না, আর আপনি কাহিনি বানাচ্ছেন।
!
জিহাদ::(ওহ বুঝছি মেডাম অনেক রাগ হয়ে আছে,দাড়াও রাগ কমাচ্ছি,
বলেই ঝিনুককে কোলে তুলে নিয়ে হাটা শুরু করলাম)
!
আমি:: আর সময় হলো না, এই অসময়ে মাথাটা পেইন দিচ্ছে কেনো
( তখনই দেখলাম স্যার আমাকে তার কোলে নিছে
আর সামনের দিকে এগোচ্ছে(মেজাজটা আরো খারাপ হয়ে গেছে )
!
আমি:: সমস্যা কি আপনার, আমার পিছন ছাড়েন না কেনো!! আমার কি হাত-পা নেউ, একা চলতে পারবো না।আপনার আশায়,নামান নামান বলছি!!
!
জিহাদ:: হুসসসস চুপ করে থাকো,নয়তো হাত ছেড়ে দিবো।কোমড় ভেঙ্গে গুড়া হয়ে যাবে।
!
আমি:: দূর ছাই,(আর কিছু বললাম না রাক্ষটা আসলেই ফাযিল)
[[[কোলে করে নিয়ে আমার গাড়িতে বসালাম, আর মুক্তাকেও বললাম বসতে।ওদের বাসায় এগিয়ে দিবো।]]
!
আমি: আপনার গাড়িতে বসালেন কেন!! আমরা রিক্সা করে যেতে পারবো।অযথা….
!
জিহাদ:: চুপ করে বসে, থাকো!! এতো কথা বলো কেনো।আমি তোমার বাসায় পৌছে দিয়ে আসবো।ওকে
(( আর কথাই বললাম না।এমনি মাথাটা অনেক পেইন দিচ্ছে।আর কথা বাড়ালাম না))
[[মেয়েটা এতো কথা বলে কেন! গাড়িতে গেলে কি বা হয়েছে।নামার জন্যে উঠে পড়ে লাগছে,আর কথা বাড়ালাম না,আমিও গাড়ি স্টার্ট দিয়ে চালাতে লাগলাম,কিন্তু সাড়াটা রাস্তা একটা কথাও বলেনি, অন্যদিকে মুখ করে তাকিয়ে ছিলো।. এসব ভাবছিলাম,,,তখনই ঝিনুক বলে উঠলো]]
!
আমি:: স্যার এদিকেই গাড়ি রাখেন, আর সামনে যেতে হবে না।ঐ নীল বিল্ডিংটাই আমাদের।
!
জিহাদ:: আমিও গাড়িটা ব্রেক করলাম, ঝিনুক আর মুক্তা নেমে গেলো।
আমি:: দূর থ্যাক্স দিতে পারবো না।আমাকে এমন হস্তনস্ত করেছে,তারও ভুগতে হবে। এসব ভেবে বাসার দিকে হাটা ধরলাম।
মুক্তা::স্যার থ্যাংকস!!
!
জিহাদ:: ওহ ওকে নো প্রবলেম, এটা আমার কর্তব্য ছিলো।আসো তাহলে(বলেই গাড়িটা মোড় ঘুড়িয়ে বাসার দিকে গেলাম।আর ভাবতেছি না কাল সরি বলে দিবো।রাগটা কন্ট্রোলে আনতে পারিনি,আমার জন্যে মেয়েটা কথাও শুনলো থাপ্পরও খেলো।আজ বাসায় গিয়ে নিই তুসার খবর আছে,অনেক বেড়ে।।তুমি করে বলা,নাম ধরে ডাকা মনে হয় আমি তার ছোট।দেখি বাড়ির সামনে চলে আসছি।গাড়িটা ব্রেক করে নেমে গেলাম।আর দরজার সামনে গিয়ে কলিং বেল বাজালাম,গেট খুলতেই দেখি তুসা সেজেগুজে আছে)
!
আমি:: কি রে সেজেগুজে কোথা যাবি!!
তুসা::: তেমন কিছু না জাস্ট সিম্পল।ভিতরে গেলেই বুঝতে পারবে।
!
আমি::(এবার রাগে আমার মাথা ফেটে যাচ্ছে,আবার তুমি করে বলছে) রুমে ডুকতে ডুকতে বললাম আমাকে আর তুমি করে বলবি না, আর নাম ধরে ডাকবি না!! তোর ছোটো না আমি।আপনি করে বলবি, আর ভাইয়া….
!
বাবা;; আরে, কাকে ভাইয়া বলবে।তুই তো ওর হবু জামাই।
!
জিহাদ:: (বাবা যখন এই কথা বললো আমি এবার মাথা উঠিয়ে দেখলাম,এতোক্ষন শার্টের হাতার বোতাম খুলছিলাম)কিহ!!! (তুসার দিকে তাকিয়ে দেখছি হাসতেছে)
!
বাবা:: আমি চাচ্ছি আগামী মাসে তোর আর তুসার বিয়েটা হয়ে যাক।
!
আমি:: আমার পক্ষে এখন সম্ভব না।জবটা শুরুও হলো না, উঠে পড়ে লেগে গেলো।আর কি মেয়ে নাই দেশে তুসাকেই বিয়ে করতে হবে!!
!
বাবা:: কথা ঠিক করে বলো! আমি তোমার বাবা!! লিমিট ক্রস করে ফেলছো!! এটাই ফাইনাল আাগামি মাসের ১৩ তারিখে বিয়ে।আর দুদিন পর এঙ্গেজমেন্ট তোমার!! আমি তোমার খারাপ চাই না।
!
জিহাদ:: আমি বিয়ে করতে পারবো না,আমি একজন কে পছন্দ করি।((এটা বলায় দেখি ড্রয়িং রুমে সবাই আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে)
চলবে__
(ভুল- ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)
#বজ্জাত_স্যার
#শ্রেয়া_____
!
!
পর্ব—-৭,৮
জিহাদ: বাবা আমি বিয়ে করতে পারবো না।আমি একজন কে
পছন্দ করি(বলার সাথে সাথে দেখি সবাই আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে) তাকিয়ে থাকারই কথা,আজ পর্যন্ত আমি কোনো মেয়ের দিকে তাকাইনি।আর আমার মেয়ের মানুষের সংস্পর্শও পছন্দ না, আমি ভালো মতো তুসার সাথেও কথা বলতাম না। আর আজ ____
বাবা:: মেয়ে কি করে?? নাম কি??কোথায় থাকে!!গম্ভীর গলায়)
জিহাদ:: বাবা ও আসলে–(বলতে যাব তখনই তুসা বলে)
!
তুসা:: আঙ্কেল কোথায় আর থাকবে! ঐ যে হাই স্কুল আছে না, স্কুলঘেষা ভাঙ্গাচুরা বাড়িটা ওদের,ওর বাবা ঠেলাগাড়ি চালায় আর ওর মা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভুয়াগিরি করে!! ছোটোলোকের বাচ্ছা!! দেখেছে হ্যান্ডসাম ছেলে আবার কলেজের প্রফেসর পটাতে পারলে সব কিছু তার হয়ে যাবে!!তাই আঙ্কেল আমি চাই কি তাড়াতাড়ি আমাদের বিয়ে টা হয়ে যাক।
!
জিহাদ::সমস্ত শরীরের রক্ত আমার উঠে গেছে এতো পরিমান রাগ হচ্ছিলো।ঠাসসসস করে একটা থাপ্পর দিলাম।আর বললাম, আজ ঝিনুকের ব্যাপারে এতো কিছু বলেছিস আরেকদিন বললে ঘাড় ধরে বাসা থেকে বের করে দিবো!!
!
(সবাই বসা থেকে দাড়িয়ে গেছে)
!
তুসা:::আহহহহহ,জিহাদ তুমি আমাকে মারলে, সবার সামনে!! সামান্য এই কথার জন্য! আঙ্কেল দেখছেন এই মেয়েটা জিহাদের মাথাটা পুরো খেয়ে ফেলছে!! সামান্ মেয়ের কথায় আমাদের বের করে দিতে চাইছে। (মায়া কান্না করে) আঙ্কেল আজই একটা ফয়সালা করুন।
!
!
জিহাদ:: জিহাদ একদম চুপ তুই,, বাবার মাথাটা তুই নষ্ট করেছিস__বাবা আমি এই বিয়ে করবো না, যদি বেশি জোরাজোরি করো আমি চলে যাব বাসা থেকে (বলেই চলে আসলাম নিজপর রুমে)
!
তুসা:: দেখলেন আঙ্কেল দেখলেন!! আপনার সামনে কিভাবে থাপ্পর দিলো! আমি কি ভুল কিছু বলেছি।
!
জিহাদের বাবা:: তুসা মা থাম, তুই চিন্তা করিস না মা, সব ঠিক হয়ে যাবে আমি বুঝিয়ে বলবো রাতে।তুই রুমে যা।
!
তুসার আম্মু:: না, আমরা থাকবো না এই বাসায়,ব্যাংকক ব্যাক করবো!! তোর ছেলের এতো বড় বড় কথা সহ্য হয় না।কোলে সাথে করে বড় করেছিলাম এসব কথা শুনার জন্য, আজই চলে যাব।এই তুসা,ব্যাগ রেডি কর।যা.
!
তুসা’:: আমি যাব না,এতো বছর ওয়েট করেছি!! চলে যাবার জন্যে। ওকে আমি আমার করেই নিবো।আর আমি না পেলে কেউ পাবে না ওকে।।
!
তুসার মা;;; তুই যা ভালো মনে করিস।করতে থাক।
!
জিহাদের বাবা:: রিলাক্স মা,শান্ত হোও। তোমার জিহাদ তোমারই থাকবেজাস্ট ওপেক্ষা করো।আমি কথা দিয়েছি তুসাকে জিহাদের বিয়ে দিবো,কথা রাখবো(বলে উনি চলে গেলেন)
!
তুসা:: ঝিনুক আমিও দেখে নিবো তেমায়, কি করে আমার জিহাদকে তুমি পাও।
________________
এদিকে আমার বাসায় ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা ৬টা বেজে যায়।বাসায় গিয়ে দেখি দরজা খোলা। তাড়াতাড়ি বাসায় ডুকে সোজা আমার রুমে গিয়ে ব্যাগটা রেখে সাওয়ারে যাই,জানি আজ আমার ১২টা বাজবে
!
(সাওয়ার শেষ করে রুমে ডুকে চুল আচরাচ্ছি বাবার ডাক পড়লো,ঝিনুক ঝিনুক এই দিকে আয় তো কথা আছে))
!
আমি:: হে বাবা আসছি, (আল্লাহ জানে কপালে কি লেখা আছে)বলে গেলাম ড্রয়িং রুমেম,দেখি বাবা বসে আসে।
!
আমি’:: বাবা কেমন আছো তোমায় খুব মিস করি।।
বাবা:: ভালো তো,তাই লুকিয়ে লুকিয়ে বাসায় আসিছ,,আজ এতো লেট হলো কেন আসতে?
!
আমি:: বাবা জানোই তো অনুষ্ঠান ছিলো।তাই লেট হয়ে গেছে।বাবা কান ধরছি আর লেট হবে না সরি প্লিজ
!
বাবা:: ওকে যা খেয়ে নে।আর শুন তোর মা শপিং এ গেছে।আমরা গ্রামে যাবো কাল দিন পর।তাই কিছু শপিং করতে এতো টাইম ওয়েট করেছে ওরা।তুই তো লেট করে আসলি!! যদি কিছু লাগে তুই পরে গিয়ে নিয়ে আছিস!!
!
আমি:: আচ্ছা।।যাবো নে।এখন যাই খেয়ে আসি(বলে খেয়ে চলে গেলাম)
___________
বেলকুনিতে দাড়িয়ে আছে আর গভীর চিন্তা করছে।হঠাৎ পিছন থেকে ওর মা বলছে,জিহাদ বাবা…
!
জিহাদ:: হ্যা মা বলো।কিছু বলবে….
!
মা:: সেই কখন থেকে দাড়িয়ে আছি তোর পিছনে, তোর খেয়াল নেই।কি ভাবছিস এতো!!
!
জিহাদ:: মা তেমন কিছু না। বাদ দাও।আগে বলো তোমার শরীরের অবস্থা কেমন!!
!
মা:: আমি জানি তোর মনের অবস্থা কি করবো বল!! তোর বাবা তো একচটে লোক যা বলবে তাই!! তুই মন খারাপ করিস না আমি আছি তোর সাথে।
!
জিহাদ:: হুমমমমম আমি জানি তো (মাকে জড়িয়ে ধরে বললাম) সবাই আমার বিপক্ষে গেলেও তুমি যাবে না।
!
মা:: আমি কেনো যাবো বলতো।।আমার আর কে আছে তুই ছাড়া।তোকে তো আমি আগলে রেখেছি তোর বাবা আর কত সময়ই দিয়েছে, সারাজীবন শুধু টাকার পিছনেই ছুটছে(কান্না করতে করতে)
!
জিহাদ:: আহহা মা,আমি তো আছি। কোথাও যাই নি তো।।রুমে চলো, আর এখন তুমি আমার মাথায় বিলি কেটে দিবা,অনেক দিন ধরে দাও না।
!
মা:: আচ্ছা দিচ্ছি। চল রুমে।।
চলবে______,
,
# বজ্জাত_স্যার
# শ্রেয়া____
!
!
পর্ব–৮
!
মা:আচ্ছা দিচ্ছি, চল রুমে।
!
জিহাদ:: ওহহো মা, আমি ভুলেই গেছি সেদিন আসার পথে নিয়ে আসছিলাম,তোমায় বলবো বলবো ভুলে গেছি।(বলেই উঠে আলমিরা থেকে শাড়িটা বের করে আনলাম)
!
[[দেখো তো মা, পছন্দ হলো কিনা]]
মা:: বাহ!! চয়েজ তো ভালোই করেছিস।যাক ভালো করেছিস।
!
জিহাদ:: তোমার পছন্দ হলেই হলো।মা ঘুমাবো এখন,, কাল আবার তাড়াতাড়ি ক্লাসে যেতে হবে।
!
মা:: ঘুমাবি যে, রাতের খাবার খেয়েছিস।দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছিস।
!
জিহাদ:: মা পেট ভরাই আছে, আর পেটে কুলাবে না।তুৃমি যাও শাড়িটা নিয়ে কাল সুযোগ পেলে পইড়ো।
!
মা:: আচ্ছা।যাচ্ছি টেনশন করিস না।ঘুমিয়ে পড়
!
!
______________
পরের দিন সকালে….
((ঘড়ির এলার্ম বাজে, আমি তাড়াতাড়ি উঠি, দেখি ১০টা মিসকল।৮ টা বাজে,,, কল টা নিয়ে দেখি মুক্তা কল দিছে,,দূর তুই মর!! আমি আগে ফ্রেস হয়ে রেডি হয়ে নেই।ভার্সিটি গিয়ে না হয় কথা হবে। ওয়াস রুমে চলে গেলাম))
!
আমি::(গতকাল থেকে কথা হয় না,একটু মজা নেই না হয় আম্মুর সাথে
))
!
আম্মু তুমি কই!! কতকাল ধরে তোমাকে দেখি না,প্রানটা আনচান করছে দু পলক দেখার জন্য।।
!
আম্মু::………….
!
আমি:: আমি জ্ঞান হারাবো, মরেই যাবো,যদি কথার সাড়া না দাও (এবার চিল্লিয়ে উঠছে আম্মু)
!
আম্মু:: কি হয়েছে, এতো সকাল সকাল চিল্লাচ্ছিস কেন!! আল্লাহের নাম তো নিতে পারিস নাকি!!সকাল সকাল আল্লার বান্দা গান শুরু হয়ে যায়।উফ, আর পারি না এদের নিয়ে।
!
আমি:: হয়েছে হয়েছে,এবার তো ওফ যাও!! রেডি হয়ে আম্মুর কাছে গেলাম।মা,আজ খাওয়া হবে না।দেরী হয়ে যাচ্ছে। মুক্তা হয়তো ওয়েট করছে!!
!
আম্মু:: এই জন্যই বলি,এতো রং তামাশা করছে কেনো!! খেয়ে যা,নয়তো রোগে ধরবে,,এবার রোগে ধরলে আর ওষুধ আনবো না!! বিছানায় ফেলে রাখবো।।
!
আমি:: বের হতে হতে আচ্ছা রাইখো।পরে নিজেই কান্না কাটি করবা।যাই এখন।।বায় আম্মু(বলেই বাসা থেকে বের হতেই দেখি খালি রিকসা যাচ্ছে,উঠে গেলাম।আজ মনটা অনেক ফুরফুরে।ভালোই লাগছে!! মন ভালো থাকা মানে সব ভালো থাকা!! বাট জানতাম না কত বড় শক আমার জন্য ওয়েট করছে))
!
!
[[[রিকসা থেকে নামলাম, দেখি ক্যাম্পাসে সবাই কেমন উৎসুক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে,কয়েকজন নাক ছিটকাচ্ছে আমায় দেখে!! আজিব তো।।এমন করার কি হলো, কি করলাম আমি!! কয়েকজন সামনে দিয়ে যাচ্ছিলো আর বলছিলো,,
!
মেয়েগুলো:: ছি!ছি! কিভাবে আবার ভার্সিটিতে আসছে মুখ দেখাতে। লজ্জা সরম বলতে কেনো চিহ্ন ফোটাও নেই।ছি!!
!
আমি::(প্রচন্ড রাগ হচ্ছে) এই সমস্যা কি আপনাদের, কি হয়েছে কি করেছি!! যে নাক ছিটকাচ্ছেন।যান এখান থেকে! ফাইজলামি পেয়েছেন।আরো বলতে নিবো।তখনই আমার মুখ কে যেনো চেপে ধরে টেনে একাবারে ক্যাম্পাসের শেষে নিয়ে যায়,
!
আমি::: হুমমমমমম হুমমমমম(হাত সরানের চেষ্টা করছি)
(( মুখ থেকে হাত সরিয়ে দেয় আর আমি জোরে জোরে শ্বাস নিতে থাকি।ঘুরে দেখি মুক্তা,রাগ আরো চরমে উঠে যায়))
!
আমি:: সমস্যাটা কি!! বুঝতেছি।।সবাই আজে বাজে কথা বলছে!! তুই এখানে টেনে আনলি!! কি হয়েছে!! কে মরছে!!
!
মুক্তা:: তুই কিছু জানিস নাহ!!
!
আমি:: অদ্ভূদ তে! জানলে কি তোকে জ্ঞিগাসা করি।
!
মুক্তা:: গতকালের ঘটনা নিয়ে সবাই সমালেচনা করছে,,তাই ওরা সবাই।।
!
আমি:: গতকাল কি এমন হয়েছে!! যে সবাই আমাদের নিয়ে ফালতু কমেন্ট করবে।চল ক্লাসে…তুই তো আরেক চিজ”!
!
মুক্তা:: তুই তো আমার কথা শুন ফুল্লি আগে…পরে যাই
!
.
আমি:: চুপ থাক চল…
(সিড়ি দিয়ে উপরে উঠছি তখন ম্যামের সাথে দেখা, আমাকে দেখে মনে হয় ভূত দেখার মতো চমকে ওঠে,আর এক রাশ বিরক্তি নিয়ে বলে)
!
ম্যাম:: ছি: ঝিনুক তোমার দ্বারা এমন জগন্য কাজ হবে আশা করিনি,,এতো নীচ স্বভাবের মেয়ে তুমি!! অবশেষে স্যারের সাথে প্রেমলীলায় জড়িয়ে পড়লে!!
!
আমি::(ম্যামের মুখে এমন কথা শুনে আর নিজেকে আটকাতে পারি নি,চোখ দিয়ে অজান্তেই পানি পরতে থাকে))ম্যাম আপনি হয়তো ভুল শুনেছেন।আর যা ভাবছেন তেমন কিছুই না ম্যাম।
!
ম্যাম:: দেখো ঝিনুক, আমরাও এই লেভেল পার করে এসেছি।এই সময়ে প্রেমে পড়ে ঠিক,স্যারকে ভালো লেগেছে,পছন্দ হয়েছে বা হতেই পারে তাই বলে ভার্সিটির স্টোর রুমে এমন কাজ করবে,সত্যি আনবিলিভল(বলেই ম্যাম চলে গেলো)
!
আমি:: (সেখানেই বসে পড়লাম।কি থেকে কি হয়ে গেলো!! বাবা কত স্বপ্ন, ইচ্ছা ছিলো যেনো জীবনে কিছু করতে পারি!! আর আমি কি করলাম ছি!! বাবার সামনে কিভাবে যাব!! বলেই কান্না করতে থাকলাম) মুক্তার দিকে চেয়ে বললাম, তুইও কি আমায় ভুল বুঝবি!!
!
মুক্তা: দেখ ঝিনুক এতো দিন গোর পাশে ছিলাম! তোকে জানি চিনি আর আমি সব দেখছি তোর কোনো ভুল নেই,মানুষের কাজই তিল থেকে তাল বানানো!! বাদ দে।ক্লাসে যাবি!!
!
আমি:: নারে যাব না।আমি বাসায় যাব।
!
মুক্তা:: এখন তো আর বের হতে দিবে না।লাইব্রেরীতে চল ওখানে যাই।
!
আমি:: হুম
!
(লাইব্রেরীতে গিয়ে বসি। আর ভালো লাগছে!! সব ঐ#বজ্জাত স্যারটার জন্য হলো।সবাই আমাকে খারাাপ ভাবছে!!পাজি বদমাইশ,রামছাগল,বেজি আমার লাইফটা হেল করে দিলো। আমার কি দোষ ছিলো!!))
!
[[[এদিকে জিহাদ ভার্সিটিতে ডুকে দেখে কেমন যেনো সবাই হাসাহাসি করছে তার দিকে তাকিয়ে।সে তেমন কিছু না ভেবে অফিস রুমে চলে যায়।অফিসরুমে গিয়ে বসতে না বসতেই পিয়ন এসে বলে]]
!
পিয়ান::স্যার আপনাকে প্রিন্সিপাল স্যার ডাকছে।
!
জিহাদ:: আমাকে!! এই অসময়ে ডাকবে কেনো!! আমি ভালো করে শুনে এসেছেন তো!!
!
পিয়ন:: জি,স্যার আপনাকেই ডাকছে!!
!
জিহাদ::হ্যা,আসছি,আপনি যান!!বলে স্যারে রুমে গেলাম।
!
______
জিহাদ:: স্যার আসবো!!
!
প্রিন্সিপাল স্যার:: হ্যা আসো।
!
জিহাদ:: ওকে,বলে ভিতরে গেলাম।
!
প্রিন্সিপাল স্যার:: দারিয়ে আছো কেনো, বসো!!
!
জিহাদ:: হুম,স্যার কি বলবেন যেনো!!
!
প্রিন্সিপাল স্যার:: তোমার সাথে ঝিনুকের কি সম্পর্ক!! তোমার সাথে ঝিনুকের এসব কি শুনছি এগুলো কি সত্যি!!তুমি একজন প্রফেসর হয়ে কিভাবে স্টুডেন্টের সাথে এসব করো!! ভাবতেই পারছি না আমি!!
!
জিহাদ:: (ওহ এই ব্যাপার, তাই তো বলি সবাই এমন করে কথা বলছে কেনো, আবার হাসাহাসি করছে,অনেক রাগ উঠে গেলো,সামান্য একটা বিষয় নিয়ে এতো কিছু!! রাগের মাথায় বলে ফেললাম,,ঝিনুক আমার বউ হয়!!কিছুদিন আগে বিয়ে করেছি!! আমি আমার ওয়াইফের সাথে যা খুশি করতেই পারি।
চলবে____