#বউ চুরি
সিজন-২
পর্ব ঃ ১০
লেখিকা ঃ জান্নাতুল নাঈমা
পুরো বাড়ি থমথমে হয়ে রইলো। প্রত্যেকটা ব্যাক্তিই মুখ ভাড় করে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করলেন। নিপু বেশ রেগে আছে তার মা চাচীদের ওপর। মুসকানের রুমের সামনে গিয়ে খুব ডেকেছে কিন্তু লাভ হয়নি। মুসকান দরজা খোলে নি। মোতালেব চৌধুরী ঝুমুরকে কড়া গলায় বেশ কয়েকটা কথা বললেন। সেই সাথে প্রত্যেকটা ছেলের বউদের ওপর ই রাগ ঝাড়লেন।
নিয়ম-কানুন তোমরা মেনে চলবে সেটাতে কারো আপত্তি নেই। সামাজিক নিয়মনীতি, বয়জেষ্ঠ্যদের সকল উপদেশ মেনে চলবা বেশ ভালো কথা।
কিন্তু তোমরা এতোটা অজ্ঞানী সেটা আমার জানা ছিলো না। তোমাদের উচিত ছিলো আগে থেকেই এ বিষয়ে সতর্ক করে দেওয়া। মুসকানের সামনে এভাবে বলাটা একদম উচিত হয়নি। একজন মা হয়ে আরেকজন সন্তান হারা মা কে কষ্ট দেওয়াটা কি আমাদের সমাজের নিয়মের মধ্যে পড়ে। মুসকান তো কোন পাপ করে সন্তান হারায়নি তাহলে কেনো ওর হলুদ লাগালে অমঙ্গল হবে।
আর যদি এটাই ধারনা হয়ে থাকে তোমরা আগে থেকে সতর্ক করতে ভালোভাবে বুঝিয়ে।
ইরাবতীসহ সকল বৌ মা রাই মাথা নিচু করে রইলো।
মোজাম্মেল চৌধুরী সব শুনে লজ্জিত হলো। সকলেই ঝুমুর কে বকা ঝকা করতে লাগলো।
দিপান্বীতা বললো ইমন এসব শুনলে কি হবে ভাবতে পারছো তোমরা ছেলেটা এখানে হয়তো থাকবেই না।
মুসকান কে নিয়ে ঠিক ঢাকায় ফিরে যাবে।
মোতালেব চৌধুরী বললেন বড় বৌ মা এখুনি আমার গিন্নির কাছে যাও যেভাবে হোক তাকে বোঝাও তোমরা। ইমন আসার আগে মুসকান কে আমার সামনে নিয়ে আসবে তোমরা।
ইরাবতী জি বাবা বলে মুসকানের রুমের দিকে পা বাড়ালেন। পিছন পিছন দীপান্বিতা, রূপালী,এশা,আর মিম ও গেলো।
দুবার মুসকান বলে ডাকতেই রূপম আর ইমন বাড়ি ঢুকলো। ওঠোন থেকেই রুমের সামনে ভীড় দেখে দ্রূত এগিয়ে গেলো ইমন।
রূপম আর ইমন কে দেখে রিপা এগিয়ে এলো। ভয়ে ভয়ে রূপমের দিকে তাকাতেই রূপম বুঝলো কিছু একটা হয়েছে। রূপ ছুটে গিয়ে রূপম কে জাবটে ধরে বললো বাবাই বাবাই মুসু মাম দরজা লক করেছে,,,
ইমন কথাটা শুনতেই কঠোর গলায় বললো এখানে কি হচ্ছে। নিশ্চয়ই আবার কোন গন্ডগোল ঘটিয়েছে মুসকান তাই তো,,, বলেই একহাত শক্ত মুঠ করে দরজায় দিলো এক ঘুষি।
ইরাবতী সহ সবাই খানিকটা কেঁপে ওঠলো। দিপক এসে বললো ভাইয়া তুই যা ভাবছিস তা না। ইমন দিপকের দিকে তাকিয়ে বললো- বোনের হয়ে কথা বলতে আসবি না।
এশা বললো ভাইয়া কথাটা শুনুন।
ইমন বললো ব্যাস কারো কথা শুনতে চাই না। এসব নাটক আর দেখতে চাইনা বলেই আরেক ঘুষি দিলো ইমন।
দীপান্বিতা বললো ইমন কিছু না শুনে মেয়েটার ওপর রাগারাগি করো এটা চাই না আমি।
ইমন কিছু একটা ভেবে বললো সবাই এখান থেকে যাও এতো ভীড় ভালো লাগছে না। দিপু কোথায় দিপুকে পাঠিয়ে দাও আর সবাই যাও।
ইরাবতী সবাইকে চলো যেতো বললো সবাই চলেও গেলো।
বাবা যা হয়েছে সব শুনে তুই দয়া করে কারো উপর রাগ ঝারিস না। এখানে কারো কোন দোষ নেই। আমি চাইনা এসব নিয়ে তুই কোন ঝামেলা কর। গ্রামে এসেছি দুদিন পর চলে যাবো তাই এখানে কোন ঝামেলা হোক চাইনা বলেই ইরাবতী চলে গেলো।
এবার ইমন শান্ত গলায় বললো মুসকান দরজা খোল। নয়তো আমি কিন্তু বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাবো। হাজার বলেও আর এখানে আনতে পারবে না আমায়।
কিছুক্ষন পর দরজা খুললো মুসকান। ইমন রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে পিছন ঘুরতেই মুসকানের বিধ্বস্ত মুখ দেখতে পেলো।
বুকের ভিতরটা ছেঁত করে ওঠলো ইমনের।
আহত গলায় বললো মুসকান,,,
মুসকান আচমকাই ইমনকে খুব শক্ত করে জাবটে ধরলো। হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করলো।
মুসকানের কান্নায় যে তীব্র যন্ত্রনা ছিলো তা বুঝতে বাকি রইলো না ইমনের।
বুকে মুখ গুজে কেঁদেই চলেছে মুসকান। ইমন সহ্য করতে না পেরে মুসকানের দুকাঁধে ধরে ঝাকুনি দিয়ে বললো কি হয়েছে??? আমাকে বলো কি হয়েছে।
মুসকান কাঁদতে কাঁদতে অস্থির হয়ে পড়লো। বুকে ঢলে পড়ে এক নাগারে বলতে লাগলো তার চোখ বেয়ে অনবরত পানি ঝরে পড়ছে। ইমনের শার্ট ভেদ করে বুকে শীতলতা অনুভূত হচ্ছে সেই সাথে হচ্ছে রক্তক্ষরন যন্ত্রণা।
আমি অশুভ,,, আমার জন্য নিপু ভাইয়ার অমঙ্গল হবে,,, সত্যি তো যে কিনা নিজের সন্তান কে পৃথিবীর আলো দেখাতে পারেনি সে তো অশুভ হবেই। আমার অশুভ ছায়ায় সবার ক্ষতি হবে। আমি খুব খারাপ একটা মেয়ে খুব খারাপ একজন মা যে কিনা নিজের সন্তান কে বাঁচাতে পারিনি। নিজের সন্তান কে পৃথিবীর আলো দেখাতে পারিনি। আমি এখানে থাকবো না,,, চলে যাবো আমি আমার জন্য সবার অমঙ্গল হবে। আমাকে দূরে কোথাও নিয়ে চলো না,,, কাঁপা কাঁপা গলায় কথা গুলো বলে থেমে গেলো মুসকান। ইমনের বুক থেকে ওঠে ইমনের দিকে তাকালো।
ইমন মুসকানের কথা গুলো শুনে স্তব্ধ হয়ে বসে রইলো।কানদুটো তার একদম লাল হয়ে গেলো। চোখ দুটোও লালচে বর্ন ধারন করেছে।
মুসকান কে কিছু বলতে যাবে তার আগেই মুসকান কিছুটা পিছিয়ে গেলো ইমনের থেকে।
আর অদ্ভুত আচরন করতে শুরু করলো।
নিচের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো -ওওও তুমি
আমাকে তো নিবেনা। আমি যদি নিপু ভাইয়ার জন্য অশুভ হই তাহলে তো তোমার জন্যও অশুভ। আমি তো তোমাকে বাবা হতে দেইনি তোমার জীবনেও আমার জন্য অশুভ ছায়া পড়েছে। আমি সবার জন্যই অমঙ্গলকর। সত্যি আমি অশুভ তাই তো জন্মের পর নিজের বাবা মা কে কাছে পাইনি। নিজের স্বামী কে চিনতে পারিনি। নিজের সন্তান কে বাঁচাতে পারিনি। না পেলাম সন্তান না পেলাম স্বামীর ভালোবাসা। তাই তো আমার স্বামীও আমার কাছে আসতে চায় না। না, না আমার থেকে দূরে থাকো চলে যাও, আমার আশে পাশে থেকো না তোমার অমঙ্গল হবে। কথা গুলো বলেই মুসকান ওঠে পড়লো।
ইমনের চোখ দিয়েও দুফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়লো।
সেই সাথে রাগে শরীর কাঁপতে শুরু করলো।
কে মুসকান কে এসব বলেছে কে ভেবেই ওঠে দাঁড়ালো।
মুসকান ইমনের থেকে বেশ দূরে সরে গিয়ে বিরবির করতে লাগলো।
ইমন মুসকানের দিকে একবার তাকিয়ে ভাবলো এই মেয়েটা কে এতো বড় আঘাত কে করলো।এ যে একদম ই অবুঝ শিশুর মতো অল্পতেই অনেকটা ভেঙে পড়ে। এছারা নিজের সন্তানের প্রতি প্রত্যেকটা মানুষ ই খুব দূর্বল আর মুসকান যে আরো অনেক বেশী। একটা সন্তান এর জন্য আঠারো বছর বয়সি একটা মেয়ে এতোই আগ্রহী থাকতে পারে সেটা আমি মুসকানকে না দেখলে জানতামই না। এতটাই পাগল ছিলো যে আমাকে না জানিয়েই কনসিভ করে ফেলেছিলো। কতোটা সাহসীকতা নিয়ে এটা ও করেছিলো এক আমিই জানি। আর সেই সন্তান হারানোর পর কতটা যন্ত্রণা ভোগ করেছি আমরা সে এক উপরওয়ালাই জানে। মুসকান তো কম শাস্তি পায়নি সন্তান হারানোর পর আমিও ওর ভুলের শাস্তি স্বরূপ সবসময় দূরে দূরে থেকেছি। শুধু মাএ ওকে বুঝানোর জন্য কিন্তু আমিতো ওকে কখনো কোন কিছু নিয়ে দায়ী করিনি। মুসকান আমার জন্য শুভ না অশুভ, না মঙ্গল না অমঙ্গল এসবে আমার কিছু জায় আসেনা। এগুলো বলে ওকে কে আঘাত করেছে ইমন দুপা এগিয়ে মুসকানের কাঁধে হাত রেখে বললো কে তোমাকে এসব বলেছে নিপু,,,
মুসকান সরে গেলো ইমন মুসকান কে দেখে বেশ বুঝতে পারলো মুসকান ঠিক নেই। তাই আরেকটু এগিয়ে গিয়ে মুসকানকে সামনে ঘুরালো।
মুসকান ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। ইমন চোখের পানি মুছে দিতে দিতে বললো আমার বউ আমার জন্য মঙ্গল হোক বা অমঙ্গল হোক সেটা আমি বুঝবো।
সেটা আমার বউ বা অন্যকারো বুঝার দরকার আমি মনে করছিনা।
মুসকান ডুঁকরে কেঁদে ওঠলো।
ইমন মুসকানকে একদম বুকের সাথে মিশিয়ে নিয়ে বললো চুপপ,,,একদম চুপপ।
তুমি আমাকে কিছু বলবে নাকি আমিই সব জেনে নিবো।
মুসকান বুক থেকে সরে যেতে নিতেই ইমন আরো শক্ত করে চেপে ধরলো।
এই বুক থেকে সরানোর মতো ক্ষমতা তোমার ও নেই মুসকান,,, আমার ধৈর্যের পরীক্ষা না নিয়ে সব খুলে বলো কে কি বলেছে। নয়তো আমি কি করবো তুমি ভাবতেও পারছো না।
মুসকান আবারো ডুঁকরে কেঁদে ওঠলো।
শরীর অবশ হয়ে এলো তার শরীর ছেড়ে দিচ্ছে বুঝতেই ইমন মুসকান কে ধরে বিছানায় বসিয়ে দিলো। একহাতে মুসকানকে জরিয়ে অন্যহাত ফোন বের করে কল দিলো দিপুকে। দিপু ফোন কেটে দরজায় নক করলো।
মুসকান কে বসিয়ে দরজা খুলে দিলো ইমন।
দিপু রুমে আসতেই ধমকে ওঠলো ইমন।
মুসকানকে দেখিয়ে বললো এসবের মানে কি দিপু,,,
দিপু আমতা আমতা করে বললো আসলে ভাইয়া,,,
আসলে, নকলে আমাকে বুঝাতে আসবিনা তোরা কেউ জাষ্ট ঘটনা টা কি ঘটেছে সেটাই শুনতে চাচ্ছি আমি।
দীপান্বিতা ছুটে এলো রুমে দীপান্বিতা বললো ইমন আমি বলছি তোমায় দিপু সেখানে ছিলো না। তাই আমি বলছি।
হ্যাঁ কাকি আমি জানতে চাই এমন কি ঘটেছে। আমি আর ওয়েট করতে পারছিনা আমাকে বলো তোমরা।
দীপান্বিতা পুরো ঘটনা ইমনকে খুলে বললো।
ইমন সব শুনে আরো দ্বিগুন রেগে গেলো,,,
হোয়াট,,,এসবের মানে কি? এমন লেইম মন মানসিকতার মানে কি। আমি ঝুমুর কাকির সাথে কথা বলবো বলেই ইমন বের হতে নিতেই দীপান্বিতা থামিয়ে দিলো।
ইমন দয়া করে তুমি কিছু বলোনা ভাবীকে। ওনাকে যথেষ্ট বলা হয়েছে। বাবা ভাইয়েরা এমনকি তার ছেলেরাও তাকে কম কথা শুনায় নি। দেখো এটা গ্রাম, গ্রামের মানুষ রা এমন অনেক কুসংস্কার ই মেনে চলে। তাদের বুঝিয়েও লাভ নেই তারা বুঝবে না। তারা ভুল ধারনাগুলো নিয়ে বেঁচে থাকবে। শুধু শুধু আর অশান্তি করোনা। মুসকান কে একটু বুঝাও বাড়ির বউদের এমন অনেক কথাই শুনতে হয় এটুকুতে এতটা ভেঙে যেনো না পড়ে। যা হয়েছে খারাপ হয়েছে আমরা সবাই জানি ভুলটা আমাদেরই। ওকে এমন আঘাতের মুখোমুখি হতে দেওয়া ঠিক হয়নি। তুমি ওকে বুঝিয়ে নাও আমি জানি তুমি পারবে।
আমি আমার বউকে ঠিক বুঝিয়ে নিবো কিন্তু এই কুসংস্কারের জন্য আমার বউ এতোবড় আঘাত পেলো আর আমি এটা মেনে নিবো।
ঝুমুর কাকিকে বুঝতে হবে এটা জাষ্ট কুসংস্কার। মানুষের মনের ভুল ধারনা মাএ।
সে তুমি বুঝিও কিন্তু এখন না। তোমার মাথা গরম এখন। এখন কোন দরকার নেই। এমনিতেই সবার মন টা নষ্ট হয়ে গেছে। নিপুর বিয়ে আর ছেলেটা মন খারাপ করে বসে আছে। এই দিকে আমার মেয়েটা কেঁদে কেঁদে অস্থির হয়ে পড়েছে। তুমি আমার মেয়েটাকে এখন সামলাও আর কোনদিক নিয়ে ভাবতে হবে না।
ইমন প্রচন্ড রাগ নিয়ে জোর গলায় বললো –
“আমার বউ অশুভ না,,,,
আমার বউ এর জন্য কারো অমঙ্গল ও হতে পারে না,,,
রাএের নিস্তব্ধতায় পুরো কথাটা যেনো চার দেয়াল ভেদ করে পুরো বাড়ি কাঁপিয়ে তুললো।
মুসকানেরও কান্নার বেগ কিছুটা থেমে গেলো।
দিপু আর দেরী না করে সরে গেলো।
দীপান্বিতা মনে মনে খানিকটা খুশি হয়ে বললো বাবা সেটা আমি জানি এবার তোমার বউ কে কিছু খাবাড় খাওয়াও আর তুমিও খাও। আমি খাবাড় নিয়ে আসছি। ইমন বললো তার আগে আমি সবার সাথে কথা বলে নেই। দীপান্বিতা ইমনের হাত আটকে বললো বউ আগে না রাগ আগে। যেটা আগে সেটাই করো। কাকি না শাশুড়ির আদেশ ভেবে আর এক পাও বাইরে যাবে না।
ইমন মুসকান কে এক নজর দেখে আর কিছু বললো না। রাগটা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলো।
খাবাড় মেখে মুসকানের সামনে ধরলো ইমন মুসকান কোন রেসপন্স করলো না।
ইমন খানিকটা রেগে গেলো কিন্তু সেটা প্রকাশ না করে বুঝিয়ে শুনিয়ে খাওয়ালো। কিন্তু মুসকান বেশী খেতে পারলো না। সেটাই স্বাভাবিক এমন মনের অবস্থায় খাওয়া যায় না। মুসকানকে খাওয়িয়ে ইমন নিজেও খেয়ে নিলো।
বিছানার একপাশে গুটিশুটি মেরে শুয়ে রইলো মুসকান। ইমন লাইট টা অফ করে মুসকানের পাশে শুয়ে একটানে কাছে নিয়ে নিলো মুসকানকে।
বুকে এক ফোঁটা পানি পড়তেই ইমন বুঝতে পারলো মুসকান এখনো কেঁদেই চলেছে।
ইমন খানিকটা ওঠে মুসকানের ওপর ঝুঁকে দুহাতে মুসকানের মুখ তার মুখ বরাবর করে ধরলো।
আবেগ মাখা গলায় বললো তোমার স্বামী তোমায় ভালোবাসে না,,,এই জন্য কাঁদছো এইভাবে।
তোমার সন্তান হারিয়ে গেছে তাই কাঁদছো। তোমার জন্য আল্লাহ হয়তো আরো অনেক ভালো কিছু রেখেছে তাই ওকে কেড়ে নিয়েছে। ওর জন্য কষ্ট তোমার হয় আমারো হয়। কিন্তু তোমার স্বামী তেমাকে ভালোবাসে না এটা ভেবে তুমি কাঁদছো এটা না ইমনের ঠিক হজম হচ্ছে না। অবুঝ বউ কে বুঝাতে গিয়ে শেষ মেষ এটাই শুনতে হলো যে আমি তাকে ভালোই বাসিনা।
ইমন কথা গুলো বলতে বলতে মুসকানের ঠোঁটে আলতো করে ঠোঁট ছুইয়িয়ে দিলো।
মুসকান চোখ দুটো বন্ধ করে ডুঁকড়ে কেঁদে ওঠলো।
ইমন ভারী আওয়াজে চুপপ বলেই একহাতে কোমড় জরিয়ে আরেক হাতে মাথা চেপে ধরে ঠোঁট জোরা আঁকড়ে ধরলো।
মুসকান কান্নার সুযোগ আর পেলো না। ঠোঁট জোরা ছাড়তেই বুঝতে পারলো মুসকানের শ্বাস ঘন হয়ে এসেছে। দুহাতে আঁকড়ে ধরেছে তার শার্ট।
মুখ উঁচু করে চোখের পাতায় চুমু খেয়ে নিলো।
ভারী আওয়াজে বললো ভালোবাসার গভীরতা বুঝাতে যদি ভালোবাসার চরম সীমানায় যেতে হয় তবুও আমি রাজি। এই পাগলের ভালোবাসা আজো বুঝলে না। এ পাগলের তো ভালোবাসারই স্বভাব তবে যে কাউকে নয় শুধু মুসকানকে।
পাগলের মতো আদর করতে লাগলো ইমন মুসকান কে।
আজ মুসকানের কান্না কতোটা যন্ত্রণা দিয়েছে।
কতোটা আঘাত করেছে ইমনের বুকে তা মুসকান ঠিক বুঝতে পারলো। ইমনের প্রত্যেকটা আদরমাখা স্পর্শই সেই জানানই দিয়ে দিচ্ছে।
চলবে………..
গল্পটা কেমন হলো জানাবেন। ভুলত্রূটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ সকলকেই।