প্রেম_ফাল্গুন #পর্ব_২৯,৩০

#প্রেম_ফাল্গুন
#পর্ব_২৯,৩০
#নিশাত_জাহান_নিশি

“নড়াইল পাঠিয়ে দিচ্ছি এক্ষনি। সারা জীবন বাপের বাড়িতেই থাকবে। রিফাতকে সেকেন্ড বিয়ে করে ঐখানেই সেটেল্ড হয়ে যাবে। একদম এই বাড়িতে ব্যাক করবে না। একদম না।”

লিলি দ্বিগুন ক্ষিপ্র হয়ে ববির পাশে দাঁড়িয়ে বলল,,

“হ্যাঁ দিন না পাঠিয়ে দিন। সারা জীবনের জন্য বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দিন না। আমি না ফিরলে তো আপনার জন্যই ভালো হবে। শান্তিতে থাকতে পারবেন আপনি, শান্তিতে।”

লিলির দিকে খড়তড় দৃষ্টি নিক্ষেপ করে ববি তেজর্শি স্বরে বলল,,

“বিফাতকে বিয়ে করার খুব শখ তোমার তাই না? ঐ স্ক্রাউন্ডেলটার ওয়াইফ হওয়ার খুব শখ?”

লিলি ডান হাতের তর্জনী আঙ্গুলটা ববির মুখের কাছে তাক করে তেজী স্বরে বলল,,

“মুখ সামলে কথা বলুন ববি। আপনি আমাকে দয়া করছেন বলে আমার চরিএ সম্পর্কে যা ইচ্ছে তা বলতে পারবেন তা কিন্তু মোটে ও হবে না। আমি কিন্তু কিছুতেই টলারেট করব না!”

বেডের কর্ণারে সজোরে লাথ মেরে ববি দ্বিগুন চেঁচিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ চোখে বলল,,

“আমি তোকে দয়া করছি না? এই আমি তোকে দয়া করছি?”

“হ্যাঁ করছেন ই তো। তাই তো আমার চরিএ সম্পর্কে যা নয় তাই বলছেন। বিন্দু পরিমাণ ও ছাড় দিচ্ছেন না!”

লিলির তর্জনী আঙ্গুলটা হালকা বাঁকিয়ে ববি চোয়াল শক্ত করে বলল,,

“ওকে ফাইন। তুমি যদি রিফাতকে বিয়ে ই করতে না চাও, তাহলে নড়াইল যাওয়ার জন্য এতো পাগল হচ্ছিলে কেনো? ইউ নো দেট? ঐ খানে তোমার আশিক অল টাইম উৎ পেতে বসে আছে। তোমাকে হাতের নাগালে পাবে তো চূড়ান্ত একটা ক্ষতি করে ছাড়বে। আমি নিজেই তো অনেকটা ভয়, ভীতি নিয়ে ঐ গ্রামে গিয়েছিলাম। ভাগ্যিস রিফাত জানতে পারে নি আমি নড়াইল গেছি, জানতে পারলে নিশ্চয়ই আমার একটা ক্ষতি করে এরপর ক্ষান্ত হতো। শত্রুকে হাতের কাছে পেয়ে নিশ্চয়ই সে হাত গুটিয়ে বসে থাকত না! যেখানে আমি নিজেই সন্দিহান ছিলাম, নিজেকে সেইফ করতে পারব কিনা সেই টেনশানে ছিলাম, সেখানে আমি তোমাকে কিভাবে সেইফ করতাম? রিফাতের ভয়াল থাবা থেকে কিভাবে তোমাকে সেইফ করতাম বলো? ঐ এলাকাটা নিশ্চয়ই আমার বাপের ছিলো না? যে ক্ষমতা খাঁটিয়ে, জোর দেখিয়ে ওখান থেকে তোমাকে নিয়ে অক্ষত অবস্থায় ফিরে আসব!”

লিলি হাতের ব্যাথায় কুঁকিয়ে চোখের জল ছেড়ে মাথা নিচু করে বলল,,

“আমি তো ঐখানে থাকার জন্য বাহানা করতাম না ববি। আপনার সাথেই ফিরে আসতাম। আম্মু, আব্বুকে অন্তত একবার চোখের দেখা দেখে আসতাম। সেই স্কোপটা ও তো আপনি দিলেন না আমাকে। একা নিজেই চলে গেলেন।”

লিলির হাতটা ছেড়ে ববি ভীষণ রাগান্বিত হয়ে চেঁচিয়ে বলল,,

“আবারো একই কথা রিপিট করছ? গতকাল থেকে তোমার ঘ্যান ঘ্যান সহ্য করছি লিলি। এবার কিন্তু সবটা আমার ধৈর্য্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। গাঁয়ে হাত তুলতে কিন্তু আমি দ্বিধাবোধ করব না।”

“থেমে আছেন কেনো? তুলুন না হাত। এ তো আর নতুন কিছু না। এর আগে ও তো আপনি একবার আমার গাঁয়ে হাত তুলেছিলেন। তাহলে এখন এতো দ্বিধা কিসের? আবারো রিপিট করুন।”

ববি দাঁত কিড়মিড়িয়ে বলল,,

“মুখে মুখে তর্ক করবে না লিলি। খুব বেয়াদব হয়ে উঠছ দিন দিন। কথায় কথায় তর্ক করছ।”

ববির সম্মুখ থেকে সরে এসে লিলি ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে কানে, গলার অরনামেন্টস গুলো খুলছে আর নাক টেনে কেঁদে বলছে,,

“কোথাও যাবো না আমি। কোথাও না। আপনি যান আপনার পরিবার নিয়ে ঐ বাড়িতে। আমি এই বাড়িতে থাকব। একা একাই থাকব।”

“বেশি বাড়াবাড়ি করছ লিলি। ফর দ্যা গড সেইক আমাকে আর রাগিও না প্লিজ।”

“রাগালে কি করবেন বলুন? আয়রা আপুকে বিয়ে করে নিবেন? আমাকে ডির্ভোস দিবেন?”

ববি তেড়ে এসে লিলির থুতনী চেঁপে ধরে চোয়াল শক্ত করে বলল,,

“বলেছিলাম না, ঐ ছবিটা ইডিট করা ছিলো। আয়রা ইন্টেনশনালি ছবিটা আমার ইনবক্সে পাঠিয়েছিলো। তোমাকে দেখানোর জন্য।তোমার মনে আমার জন্য সন্দেহ তৈরি করানোর জন্য। আমাদের মাঝখানে ডিস্টেন্স ক্রিয়েট করার জন্য, আমাদের সংসারটা ভাঙ্গার জন্য। এতোবার বুঝানোর পরে ও কেনো তুমি বুঝতে চাইছ না? কেনো বার বার আমাকে ভুল বুঝছ, আমাকে ইরিটেট করছ, আমার সাথে অশান্তি করছ?”

তন্মধ্যেই দরজায় ঠকঠক করে টোকা পড়ল। দরজার ঐ পাশ থেকে জিনিয়া আহমেদ উচ্চ স্বরে বললেন,,

“এই লিলি, ববি তোমরা রেডি হয়েছ? বের হয়ে এসো। লেইট হয়ে যাচ্ছে।”

লিলির থুতনীটা ছেড়ে ববি চোখ বুজে পর পর কয়েকটা শ্বাস ছেড়ে রুমের দরজাটা খুলে ম্লান হেসে জিনিয়া আহমেদকে বলল,,

“তোমরা গাড়িতে বসো। আমি আসছি।”

জিনিয়া আহমেদ প্রশ্নবিদ্ধ চোখে বললেন,,

“লিলি কোথায়?”

লিলির নামটা শুনতেই ববির চোয়াল শক্ত হয়ে এলো। তা ও নিজেকে স্বাভাবিক করে ববি ম্লান স্বরে বলল,,

“লিলি যাবে না। তোমরা গাড়িতে বসো৷ আমি আসছি।”

জিনিয়া আহমেদ কপাল কুঁচকে কিছু বলার পূর্বেই লিলি দ্রুত পায়ে হেঁটে ববিকে ক্রস করে রুম থেকে বের হয়ে জিনিয়া আহমেদের পাশে দাঁড়িয়ে মাথা নিচু করে বলল,,

“আমি যাবো মামানী। চলুন গাড়িতে বসি।”

জিনিয়া আহমেদ মুচকি হেসে ববির দিকে তাকিয়ে বললেন,,

“মাঝে মাঝে যা দুষ্টুমি করো ববি। সিরিয়াসলি খুব ভয় পেয়ে যাই।”

ববি রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করে লিলির দিকে তাকিয়ে আছে। লিলি মাথা তুলে এক পলক ববির দিকে তাকিয়ে আতঙ্ক গ্রস্থ হয়ে আবারো চোখ জোড়া নিচে নামিয়ে নিলো। তাড়াহুড়ো করে লিলি জিনিয়া আহমেদকে অনুসরণ করে সদর দরজার দিকে পা বাড়াতেই ববি নরম স্বরে পেছন থেকে লিলিকে ডেকে বলল,,

“শার্টটা নামিয়ে দিয়ে যাও লিলি।”

লিলি ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে দাঁড়িয়ে পড়তেই জিনিয়া আহমেদ পিছু ফিরে ক্ষীণ হেসে লিলিকে বললেন,,

“যাও, শার্টটা নামিয়ে দিয়ে এসো। আমরা গাড়িতে ওয়েট করছি তোমাদের জন্য।”

লিলি অস্থির চোখে হ্যাঁ সূচক মাথা নাঁড়ালো। ববি রুমে প্রবেশ করে লিলির অপেক্ষায় রাগে ফুসফুস করছে। লিলি ধীর পায়ে হেঁটে রুমে প্রবেশ করতেই ববি ভীষণ ক্ষিপ্ত হয়ে লিলিকে দরজার সাথে চেঁপে ধরে ভয়ঙ্কর স্বরে বলল,,

“বেঁচে গেলে। যদি ঐ বাড়িতে যেতে রাজি না হতে না? এই নির্জন বাড়িতেই তোমাকে একা ছেড়ে চলে যেতাম। তখন বুঝতে জেদ দেখিয়ে কতোটা ভুল করেছিলে।”

লিলি কাঠ কাঠ গলায় বলল,,

“ছাড়ুন। শার্ট টা নামিয়ে দিই।”

“অবশ্যই ছাড়ব। তবে এর আগে একটা কন্ডিশান আছে!”

“কিকিকি কন্ডিশান?”

“নেক্সট টাইম ঠুনকো কোনো বিষয় নিয়ে আমাকে কোনো রূপ ভুল বুঝা যাবে না। হান্ড্রেড পার্সেন্ট বিশ্বাস রাখতে হবে আমার উপর। সেই বিশ্বাস থেকে এক চুল পরিমাণ ও বিশ্বাস যেনো না ছুটে। আস্থা, ভরসা, বিশ্বাস এসব ছাড়া একটা সংসার টিকিয়ে রাখা কোনো ভাবেই সম্ভব না। আর আমি কখনো পার্সোনালী চাইব না, আমাদের মাঝে কোনো রূপ বিচ্ছেদ আসুক, দূরত্ব বাড়ুক, অহেতুক ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হোক, বাক, বিতন্ডা হোক। আফটার অল, আমি কখনোই চাইব না, এসবের প্রভাবে আমাদের সম্পর্কটা নষ্ট হয়ে যাক।”

লিলি কম্পিত চোখে হ্যাঁ সূচক মাথা নাঁড়ালো। লিলির দিকে সন্দিহান দৃষ্টি নিক্ষেপ করে ববি দাঁত কিড়মিড় করে বলল,,

“মন থেকে সম্মতি জানাচ্ছ তো? নাকি ভয় থেকে?”

লিলি কম্পিত স্বরে বলল,,

“মমমন থেকে! ট্রট্রাস্ট মি!”

“কনফিডেন্সের ” ক” পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না চোখে, মুখে! ট্রাস্ট করব কিভাবে?”

লিলি রগচটা ভাব নিয়ে বলল,,

“ওকে ফাইন, ট্রাস্ট করতে হবে না। সঠিক সময়ে প্রমাণ সহ দেখে নিবেন!”

ভাবশূণ্য হয়ে লিলিকে ছেড়ে ববি পিছু ফিরে আবার কি যেনো মনে করে পুনরায় লিলিকে দেয়ালের সাথে চেঁপে ধরে ঠোঁটে বাঁকা হাসি ফুটিয়ে বলল,,

“এক কাজ করলে হয় না? মামানী এবং আম্মুকে ঐ বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে আজ আমরা দুজন একটু পার্সোনাল টাইম স্পেন্ড করি!”

লিলির ঠোঁটের দিকে অগ্রসর হয়ে ববি ঘোর লাগা স্বরে বলল,,

“আই মিন, একটু রোমান্স করি!”

লিলি এক ঝটকায় ববিকে তার সামনে থেকে সরিয়ে দ্রুত পায়ে হেঁটে রুমে থেকে প্রস্থান নিতেই ববি দ্বিগুন জোরালো ভাবে লিলিকে পুনরায় দরজার সাথে চিপকে ধরে বলল,,

“এতো ছটফট করছ কেনো? গোটা একদিন, এক রাতের রিভেঞ্জ নিবো এখন! স্যরি টু সে দেট লিলি, ববি ছাড় দিতে একদম জানে না। উল্টে কড়া গন্ডায় নিজের দিকটা উসুল করতে নিতে জানে।”

লিলি হাঁসফাঁস করে বিরক্তি মিশ্রিত স্বরে বলল,,

“আপনার কি মিনিমাম কমনসেন্স টুকু নেই? গাড়িতে আম্মু এবং মামানী বসে আছেন। আর এই দিকে আপনি রুমে বসে আমার সাথে ধস্তাধস্তি করছেন!”

লিলির ঠোঁট জোড়া মুহূর্তের মধ্যে দখল করে ববি অস্পষ্ট স্বরে বলল,,

“তোমার জন্যই তো এতোটা সময় ওয়েস্ট করতে হলো। ধীরে, সুস্থে আমাকে জাস্ট দু মিনিট সময় দিলেই হতো। সো এখন চুপ থাকো। আমার কাজ শেষ হলে আমি নিজেই ছেড়ে দিবো।”

লিলি অপারগ হয়ে পুরো স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কিছু সময়ের মধ্যেই ববি লিলির ঠোঁট জোড়া ছেড়ে কাবার্ড থেকে ব্রাউন কালার একটা শার্ট বের করে গাঁয়ে জড়াচ্ছে আর ব্যতিব্যস্ত স্বরে চোখ রাঙ্গিয়ে থাকা লিলিকে উদ্দেশ্য করে বলছে,,

“বের হও তাড়াতাড়ি। গাড়িতে গিয়ে বসো। আমি আসছি।”

লিলি কাপড়ের আঁচল দিয়ে সিক্ত ঠোঁট জোড়া মুছে ভীষণ রাগ দেখিয়ে রুম থেকে প্রস্থান নিলো। সাপের মতো চ্যালচ্যালিয়ে হেঁটে লিলি সশব্দে গাড়িতে বসে পড়ল। গাড়ির দরজা লাগানোর উচ্চ শব্দে সাহেরা খাতুন এবং জিনিয়া আহমেদ থতমত খেয়ে লিলির দিকে তাকালেন। সিট বেল্ট লাগিয়ে লিলি মুখ ফুলিয়ে পেছনের সিটে তব্দিত হয়ে বসে থাকা সাহেরা খাতুনকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলার পূর্বেই সাহেরা খাতুন নীরবতা ভেঙ্গে উল্টে লিলিকে প্রশ্ন ছুড়ে বললেন,,

“কি হলো? এতো তেজ দেখাচ্ছ কেনো?”

লিলি গম্ভীর স্বরে বলল,,

“আপনার ছেলে আমাকে বাপের বাড়িতে নিয়ে যায় নি তাই।”

সাহেরা খাতুন বিরক্তি নিয়ে বললেন,,

“বাপের বাড়ি যাওয়ার হলে একবারে চলে যাও না। কে মানা করেছে?”

লিলি ঝগড়ুটে ভাব নিয়ে বলল,,

“বাঃহ আম্মু বাঃহ! আপনি ও আপনার ছেলের মতোন আমাকে বাড়ি থেকে তাড়ানোর জন্য হাঁসফাঁস করছেন? অথচ আপনি একটা জিনিস ভুলে যাচ্ছেন আপনার এই মেয়েটা না থাকলে রোজ আপনার টাইমলি মেডিসিন নেওয়া হারাম হয়ে যাবে। সেবা যত্ন ও লাটে উঠবে। তখন নিরুপায় হয়ে কিন্তু এই লিলিকে খুঁজবেন!”

“তুমি যখন ছিলে না তখন আমি মেডিসিন খেয়ে বাঁচি নি? সেবা এবং যত্নের অভাবে মরে গেছি?”

লিলি ম্লান হেসে বলল,,

“তখন অন্য ব্যাপার ছিলো। এখন তো আমি আপনার অভ্যেস হয়ে গেছি না? আমাকে ছাড়া এক দন্ড ও আপনি থাকতে পারবেন না আম্মু। কখনো হয়তো আমার অনুপস্থিতিতে আপনি ঠিক আমার গুরুত্ব বুঝতে পারবেন আম্মু, রিয়েলাইজ করতে পারবেন, এই মেয়েটার সাথে আপনি কতোটা জড়িয়ে পড়েছিলেন!”

সাহেরা খাতুন চোখে, মুখে ঘোর আতঙ্ক নিয়ে কাঠ কাঠ গলায় বললেন,,

“কোকোকোথায় যাবে তুমি?”

লিলি মায়াবী দৃষ্টিতে সাহেরা খাতুনের দু চোখে নিজেকে নিবন্ধিত করে ম্লান হেসে বলল,,

“আপনার চোখে, মুখে আমি ঠিক এই আতঙ্কটাই দেখতে চেয়েছিলাম আম্মু। আমার বুঝা হয়ে গেছে আসলে, আপনি আমাকে কতোটা ভালোবাসেন!”

সাহেরা খাতুন থতমত খেয়ে চোখ জোড়া সরিয়ে নিলেন। তন্মধ্যেই ববির আগমন ঘটল। ড্রাইভিং সিটে বসে ববি সিট বেল্ট লাগিয়ে ব্যাক সিটে একবার ঝিমিয়ে বসে থাকা জিনিয়া আহমেদ এবং থম মেরে বসে থাকা সাহেরা খাতুনের দিকে তাকিয়ে কপাল কুঁচকে বলল,,

“কি হয়েছে তোমাদের? এতো ডাল দেখাচ্ছে কেনো?”

লিলি গলা খাঁকারি দিয়ে ম্লান স্বরে বলল,,

“কিছু না। আপনি গাড়িটা স্টার্ট করুন।”

মনে অধিক কৌতুহল নিয়ে ও ববি গাড়িটা স্টার্ট করে দিলো। নিউ মার্কেটের কাছাকাছি এসে গাড়িটা ববি ফুটপাতের সাইড ঘেঁষে পার্ক করে সুইটস এবং বিভিন্ন ধরনের ফ্রুটস কিনে পুনরায় গাড়িতে উঠে বসল। ১৫/২০ মিনিটের মধ্যে হেমাদের বাড়ির পার্কিং লনে গাড়িটা পার্ক করল। সাহেরা খাতুন এবং জিনিয়া আহমেদ দ্রুত পায়ে গাড়ি থেকে নেমে বাড়ির ভেতর প্রবেশ করলেন। তন্মধ্যেই চারদিকে মাগরিবের আযান পড়ল। সিটবেল্ট খুলে লিলি গাড়ি থেকে নামতেই ববি পেছন থেকে লিলিকে ডেকে বলল,,

“লিসেন লিলি, আয়রার আশেপাশে কম ঘেঁষবে। আয়রা কিন্তু বিয়ে সম্পর্কিত যাবতীয় ব্যাপারগুলোতে ভীষণ ডিস্টার্বড। ছেলে পক্ষের সামনে ও বসতে চাইছিলো না। আঙ্কেল, আন্টি, জিজু প্রেশার ক্রিয়েট করে দেন আয়রাকে রাজি করিয়েছে। ভীষণ রেগে আছে আয়রা পরিবারের সবার উপর পাশাপাশি তোমার এবং আমার উপর তো আনলিমিটেড রেগে আছে। কখন আক্রমনাত্নক হয়ে তোমার ক্ষতি করে বসে তুমি কিন্তু টের ও পাবে না। তাই বারংবার বলছি, যথেষ্ট ডিস্টেন্স মেন্টেইন করে চলবে।”

“ওকে, ফাইন। তবে আমার ও একটা শর্ত আছে!”

ববি কৌতুহলী দৃষ্টিতে বলল,,

“কি?”

ডান হাতের তর্জনী আঙ্গুলটা লিলি ববির মুখের কাছে তাক করে বলল,,

“আপনি ও কিন্তু আয়রা আপুর থেকে যথেষ্ট দূরে থাকবেন। একদম উনার কাছাকাছি ঘেঁষবেন না। আপনাকে উনার পাশে আমার মোটে ও সহ্য হয় না।”

লিলির দিকে জিগ্যাসু দৃষ্টি নিক্ষেপ করে ববি ভ্রু যুগল কুঁচকে বলল,,

“বাট হোয়াই? আমাকে কেনো আয়রার পাশে তোমার সহ্য হয় না?”

লিলি সাবলীল স্বরেই বলল,,

“আয়রা আপু যে কারণে আপনার পাশে আমাকে সহ্য করতে পারেন না, আমি ও ঠিক সেই কারণেই আয়রা আপুর পাশে আপনাকে সহ্য করতে পারি না!”

লিলি হন্তদন্ত হয়ে গাড়ি থেকে প্রস্থান নিয়ে বাড়ির ভেতর ঢুকে পড়ল। ববি মৃদ্যু হেসে গাড়ি থেকে নামছে আর আনমনা হয়ে বলছে,,

“তবু ও ডিরেক্টলি “ভালোবাসি” বলবে না। এতো উইয়ার্ড কেনো মেয়েটা ভালোবাসার ব্যাপার গুলোতে?”

,
,

সন্ধ্যা ৭ টা। পাএ পক্ষ মাএ এসেছে। পাএের মা, বাবা এবং বড় বোন পাএের দুপাশে বসে আছেন। লিলি এবং হেমা কিচেন রুমে চা, নাশতার যোগাড় করছে। পাএ পক্ষের পাশে হেমার শ্বশুড়, শ্বাশুড়ী, আতিক, সাহেরা খাতুন এবং জিনিয়া আহমেদ হাসি মুখে বসে আছেন। নিজেদের মধ্যে কৌশল বিনিময় করছেন। ঐদিকে ববি এবং আফনান ছাঁদের রেলিংয়ে পা ঝুলিয়ে বসে স্মোকিং করছে। দুজনের হাতেই দুটো জ্বলন্ত সিগারেট। রাতের হিমেল বাতাসে দুজনেরই সামনের চুল গুলো হালকা উড়ছে। ভাব ভঙ্গি তাদের বড্ড উদাসীন। দুজনই নিজেদের মধ্যে ভীষণভাবে মগ্ন। কোনো গভীর ভাবনা চিন্তায় তারা দুজনই ডুবে আছে।

মৌণতা ভেঙ্গে আফনান সিগারেটে লাস্ট ফুঁক দিয়ে পাশ ফিরে ববির দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ একটা শ্বাস ছেড়ে বলল,,

“আয়রার জন্য খুব টেনশান হচ্ছে ববি। পাএ পক্ষের সামনে কোনো সিনক্রিয়েট করে না বসে!”

ববি নাক দিয়ে ধোঁয়া বের করে আফনানের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে ম্লান স্বরে বলল,,

“আমি ও তাই ভাবছিলাম আসলে। আয়রা যে পরিমাণ ক্ষিপ্র হয়ে আছে, তার ইফেক্ট আবার পাএ পক্ষের উপর পড়বে না তো?”

“আব্বু কিন্তু আয়রার জন্য বেস্ট কাউকেই সিলেক্ট করেছেন। ছেলেটা একজন নামকরা হার্ট সার্জন। দেখতে, শুনতে ও অতোটা ও খারাপ না৷ সমস্যা একটাই ছেলেটা হাইটে মেবি আয়রার সেমই হবে৷ মানে, সব দিক থেকে যে পার্ফেক্ট হতে হবে এমন তো কোনো বাধ্য বাধকতা নেই। এক দিক না এক দিক থেকে তো ছাড় দিতেই হবে।”

“আই গেইস সমস্যাটা এই জায়গায় না, সমস্যাটা আসলে আমাকে নিয়ে। আমার জন্যই আয়রা এতোটা ক্ষিপ্ত হয়ে আছে!”

আফনান অল্প সময় মৌণ থেকে পুনরায় বলল,,

“ভুল বলো নি কিছু। তবে আয়রার এখন এটা বুঝতে হবে, “তুমি বিবাহিত।” বউ, সংসার, পরিবার সব আছে তোমার। তুমি যেমন নতুন ভাবে সব কিছু শুরু করেছ, তেমনি আয়রার ও উচিত নতুন ভাবে সব কিছু শুরু করা। নিজেকে স্বাভাবিক করে তোলা। অতীতের না পাওয়া নিয়ে এতোটা পজেজিভ না হয়ে লাইফে আরো একবার ঘুড়ে দাঁড়ানো, নতুন ভাবে নিজেকে আরো একবার সুযোগ দেওয়া।”

“আয়রাকে এসব বুঝাবে কে বলো? সে তো এখন নিজের মধ্যে নেই। খুব হিংস্র আর আক্রমনাত্নক হয়ে আছে। নিজে যা ভালো মনে করবে, তাই করবে।”

ইতোমধ্যেই পেছন থেকে মেহেরের কান্নার স্বর ভেসে এলো। আফনান ভীষণ পেরেশান হয়ে পিছু ফিরে তাকালো। মেহেরকে ক্রন্দনরত অবস্থায় দেখে আফনান ছাঁদের রেলিং থেকে লাফিয়ে নেমে চোখে, মুখে আতঙ্ক নিয়ে মেহেরের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বলল,,

“কি হয়েছে? তুমি কাঁদছ কেনো?”

মেহের হেচকি তুলে কেঁদে চোয়াল শক্ত করে বেশ ক্ষিপ্ত স্বরে বলল,,

“তোকে একটা গুড নিউজ দিতে এসেছি। আ’ম ডেম সিউর নিউজটা শুনলে তুই ভীষষণ খুশি হবি!”

ববি মাএ ছাঁদের রেলিং থেকে নেমে আফনানের পাশাপাশি দাঁড়িয়ে বলল,,

“তোমরা কথা বলো আফনান। আমি আসছি।”

প্রস্থান নিলো ববি। নতুন একটা সিগারেট ধরিয়ে ববি ছাদের অন্যপাশটায় দাঁড়ালো। আফনান উদ্বিগ্ন চোখে মেহেরের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে কম্পিত স্বরে বলল,,

“কিকিকি গুড নিউজ? কিকি হয়েছে?”

মেহের তেড়ে এসে আফনানের শার্টের কলার চেঁপে ধরে তেজী স্বরে বলল,,

“আগামী সপ্তাহে আমাকে পাএপক্ষ দেখতে আসবে চূড়ান্তভাবে। পছন্দ হলেই আংটি পড়িয়ে যাবে। এক সপ্তাহ পরে আমার এনগেজমেন্ট বুঝেছিস? তুই তো এটাই চাইতিস তাই না? আমার অন্য কোথাও বিয়ে যাক!”

আফনান রক্তিম দুটো চোখে একবার মেহেরের দিকে তাকিয়ে আচমকা মেহেরের ঠোঁট জোড়া আঁকড়ে ধরে অস্পষ্ট স্বরে বলল,,

“তুমি শুধু আমার হবে মেহের। শুধু আমার। এনগেজমেন্ট তোমার আমার সাথেই হবে। অন্য কারো সাথে ভুলে ও নয়।”

মেহের দুহাত দিয়ে আফনানের শার্টের কলার চেঁপে ধরে বলল,,

“কি করবে তুমি হুম? কি করবে?”

“আজই বাড়িতে আমাদের সম্পর্কের বিষয়টা জানাবো৷ আই প্রমিস ইউ, এক সপ্তাহের পূর্বেই তোমার পরিবারে আমাদের বিয়ের প্রস্তাব পৌঁছে যাবে!”

“সিউর তো?”

“প্রমিস করলাম তো!”

মেহের মুচকি হেসে আফনানের ঠোঁট জোড়া তীব্রভাবে আঁকড়ে ধরল।

,
,

রাত ৮ টা। আয়রার রুমে লিলি প্রচন্ড ভয়, ভীতি এবং উদ্বিগ্নতা নিয়ে ধীর পায়ে হেঁটে প্রবেশ করল। আয়রা ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে বেশ ব্যস্ত ভঙ্গিতে কানে বটেল গ্রীণ রঙ্গের পাথরের এক জোড়া দুল পড়ছে। আয়রা নিজে ও আজ বটল গ্রীণ রঙ্গের শাড়ি পড়েছে। আয়রাকে যথেষ্ট প্রাণোচ্ছ্বল, চনমনে এবং স্বাভাবিক দেখে লিলির ভ্রু যুগল কুঁচকে এলো। ধীর পায়ে হেঁটে লিলি আয়রার পিছনটায় দাঁড়াতেই আয়রা চোখ তুলে লিলির প্রতিবিম্বের তাকালো। এক গাল হেসে আয়রা লিলির প্রতিবিম্বের দিকে তাকিয়ে বলল,,

“কি লিলি? কেমন লাগছে আমাকে?”

লিলি জোরপূর্বক হেসে বলল,,

“দারুন লাগছে। তুমি বরাবরই খুব সুশ্রি আপু।”

পরমুহূর্তে আয়রা কপাল কুঁচকে প্রশ্নবিদ্ধ চোখে বলল,,

“তোমাকে এতো আপসেট দেখাচ্ছেে কেনো লিলি? কি হয়েছে?”

লিলি উল্টে আয়রার দিকে প্রশ্ন ছুড়ে বলল,,

“তুমি এই বিয়েতে মন থেকে রাজি তো আয়রা আপু?”

“বিয়ে হচ্ছে কোথায়? আমাকে তো জাস্ট দেখতে এলো। দেখতে এলেই যে বিয়ে হয়ে যাবে এমন তো কোনো কথা নেই!”

লিলি ক্ষীণ হেসে বলল,,

“তা অবশ্য ঠিক। তবে, ছেলে পক্ষ যদি তোমাকে পছন্দ করে, তখন তুমি বিয়েতে রাজী হবে তো আপু?”

আয়রা টলমল চোখে পিছু ফিরে লিলির দিকে তাকিয়ে ক্ষিপ্ত স্বরে বলল,,

“রাজি হবো না কেনো? অবশ্যই রাজি হবো! আমি কেনো প্রতারকদের জন্য নিজেকে কষ্ট দেবো, প্রতিনিয়ত যন্ত্রণার আগুনে দ্বগ্ধ হবো, তাকে মনে করে বুক ভাসিয়ে কাঁদব, সারাক্ষন তার বউয়ের ক্ষতি করার জন্য ছোট্ট একটা সুযোগ খুঁজব? আমি কেনো এসব ভুলে সুস্থ, স্বাভাবিকভাবে, অন্য কারো ভালোবাসা নিয়ে বাঁচতে পারব না বলো কেনো?”

লিলি অশ্রুসিক্ত চোখে আয়রার কাঁধে হাত রাখতেই আয়রা এক ঝটকায় লিলির হাতটা সরিয়ে ফুফিয়ে কেঁদে বলল,,

“আমাকে যে ছেলেটা দেখতে এসেছে না? সে ছেলেটা তোমার হাজবেন্ড “ববির” চেয়ে ও উচ্চ শিক্ষিত, একজন হার্ট সার্জন, দেখতে ও বেশ সুদর্শন, টাকা, পয়সা, বাড়ি, গাড়ি, পরিবার, সয়- সম্পত্তি সব আছে তার, সব। ববির কোনো যোগ্যতাই নেই সেই ছেলের “সমান সমান” হওয়ার। তোমার চেয়ে ও আমি বেশি ভাগ্যবতী বুঝলে? খুব বেশি ভাগ্যবতী!”

লিলি চোখে জল নিয়ে ম্লান হেসে বলল,,

“আমি চাই আপু তুমি নিজেকে যতোটা ভাগ্যবতী বলে দাবী করছ, তুমি এর চেয়ে ও বেশি ভাগ্যবতী হও। খুব হাসি, খুশি থাকো, নতুন জীবন এবং সংসার নিয়ে। খুব সুখে থাকো, খুব।”

“তুমি না বললে ও আমি সুখে থাকব বুঝেছ? ববির থেকে আমি যতোটা সুখ এক্সপেক্ট করেছিলাম, তার চেয়ে ও দ্বিগুন সুখ আমি নতুন কাউকে নিয়ে নতুন জীবনে পাবো। জাস্ট সি ওকে? তখন আমার সাথে হিংসে করতে এসো না প্লিজ!”

লিলি চোখের জল মুছে খিলখিল করে হেসে বলল,,

“কোনো চান্স ই নেই আপু৷ আই প্রমিস ইউ, তোমার নতুন জীবন নিয়ে আমি একটু ও হিংসে করব না। উল্টে ছোট বোন হিসেবে ভীষষষণ খুশি হবো।”

ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে আয়রা চোখের জল মুছে মাথা নিচু করে লিলিকে উদ্দেশ্য করে ক্ষীণ স্বরে বলল,,

“খোঁপাটা বেঁধে দাও। একটু পরেই হয়তো আমার ডাক আসবে।”

লিলি বেশ উৎসুক হয়ে খুব সুন্দর এবং নিঁখতুভাবে ভাবে আয়রার খোঁপাটা বেঁধে দিলো। দরজায় আড়ি পেতে এতক্ষণ সবটা দেখছিলো ববি। লিলি এবং আয়রার স্বাভাবিক আচরণে ববি ভীষষষণ খুশি। গলা ঝাঁকিয়ে ববি দরজায় দাঁড়িয়ে লিলিকে পেছন থেকে ডেকে বলল,,

“লিলি, কাম হেয়ার ফার্স্ট।”

লিলি পিছু ফিরে তাকানোর পূর্বে আয়রা অশ্রুসিক্ত চোখে পিছু ফিরে তাকালো। ববিকে এক নজর দেখে আয়রা দৃষ্টি সংযত করে পুনরায় অগ্রে তাকালো৷ লিলি দ্রুত পায়ে হেঁটে এসে ববির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে প্রশ্নবিদ্ধ চোখে বলল,,

“কি হয়েছে? ডাকছেন কেনো?”

ববি পেছনের চুল টেনে বলল,,

“পাশের রুমে এসো।”

“আপুকে সাজাচ্ছি তো!”

“পাঁচ মিনিট সময় নিবো। জাস্ট ফাইভ মিনিটস!”

ববি প্রস্থান নিয়ে পাশের রুমে চলে এলো। ববিকে অনুসরণ করে লিলি ও পাশের রুমে প্রবেশ করল৷ মিটমিটে অন্ধকার রুমের দরজাটা আটকে ববি অকসম্মাৎ লিলিকে দেয়ালের সাথে চেঁপে ধরল। লিলি পর পর কয়েকটা শ্বাস ফেলে কপাল কুঁচকে ববির দিকে তাকিয়ে বলল,,

“হয়েছেটা কি? এভাবে চেঁপে ধরেছেন কেনো? মানে, আপনার কি কোনো কাজ কর্ম নেই? যখন তখন, যেখানে সেখানে চেঁপে ধরছেন!”

ববি বাঁকা হেসে বলল,,

“আমাদের রাস্তা এখন পুরোপুরি ক্লিয়ার লিলি৷ সেই খুশিতে মনটা তোমার এক্সট্রা আদর চাইছে!”

লিলি প্রশ্নবিদ্ধ চোখে বলল,,

“মানে? কিসের রাস্তা ক্লিয়ার?”

“আয়রা আমাদের মাঝখান থেকে সরে দাঁড়িয়েছে! সেই খুশিতে!”

“মানে সব শুনে নিয়েছেন আড়ি পেতে?”

“রুমের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম, হঠাৎ তোমাদের কথা বার্তা কানে এলো তাই শুনতে বাধ্য হলাম।”

“হ্যাঁ তো? এখন কি হয়েছে? ছাড়তে বলছি, ছাড়ুন।”

লিলিকে আরো কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ববি লিলির ঘাঁড়ে মুখ ডুবিয়ে ঘোর লাগা স্বরে বলল,,

“ছাড়তে মন চাইছে না একটু ও। তোমার মুখ থেকে স্পেশাল কিছু একটা শুনতে মন চাইছে লিলি!”

“স্পেশাল কিছু কি শুধু আপনারই শুনতে মন চায়? আমার শুনতে মন চায় না?”

ববি অকস্মাৎ লিলির কানে ফিসফিসিয়ে বলল,,

“লাভ ইউ লিলি।”

লিলি স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে উত্তেজিত স্বরে বলল,,

“কি বললেন? আবার বলুন?”

লিলির ঘাঁড় থেকে মুখ তুলে ববি লিলির দুচোখে তাকিয়ে বলল,,

“ভালোবাসি লিলি। প্রচন্ড রকম ভালোবাসি। বেশিদিন মনের কথাটা চেঁপে রাখতে পারছিলাম না আসলে। এদিকে তোমার দিক থেকে ও কোনো সাড়া পাচ্ছিলাম না। বাধ্য হয়ে আমাকেই প্রথমে বলতে হলো!”

#চলবে….?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here