প্রিয়_অভিমান 🥀🥀পর্ব-২০

প্রিয়_অভিমান 🥀🥀পর্ব-২০
#ফাবিহা_নওশীন

||

আহিল রেস্টুরেন্টে বসে দু কাপ কফি শেষ করে তৃতীয় বারের মতো কফিতে চামচ নাড়ছে। আর বারবার দরজার দিকে তাকাচ্ছে। অধীর আগ্রহে রুহানির জন্য অপেক্ষা করছে। আহিল চামচ রেখে হাত ঘড়িতে সময় দেখল অলরেডি ৩৫ মিনিট চলে গেছে কিন্তু রুহানির আসার নাম নেই। কল করেও পাচ্ছে না। ফোন সুইচড অফ বলছে।

আহিল আবারও রুহানির নাম্বারে ডায়েল করল। কিন্তু কর্কশ কন্ঠে একজন মহিলা বারবার একি কথা বলায় আহিল বেশ বিরক্ত হলো।
রুহানি দরজার সামনে এসেই বরাবর টেবিলে আহিলকে দেখতে পেল। দাঁড়িয়ে মুচকি হেসে ভেতরে গেল৷ রুহানি হন্তদন্ত হয়ে এমন ভাবে ভেতরে ঢুকল যেন এক প্রকার দৌড়ে এসেছে। আহিল রুহানিকে দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিল।

রুহানি চেয়ার টেনে বসে নেকামো করে বলল,
“সরি সরি একটু লেট হয়ে গেল। আসলে এত জ্যাম ছিল।”

আহিল মুচকি হেসে বলল,
“ইট’স ওকে। তেমন লেট হয় নি।”

রুহানি মনে মনে বলছে,”প্রায় চল্লিশ মিনিট লেট করেছি তবুও বলছে তেমন লেট হয় নি। ন্যাকা।”

“কি খাবে বলো?”

“আমার কিছু খাওয়ার ইচ্ছে নেই। তবে কফি খেতে পারি।”

“আচ্ছা, অর্ডার করছি।”
আহিল কফির অর্ডার করে দিল। রুহানি চুপ করে বসে আছে। আহিল ওর দিকে চেয়ে আছে। রুহানির কেমন অস্বস্তি লাগছে তাই মাথা নিচু করে বসে আছে। নখ দিয়ে নখ খুটছে। দুজনেই চুপ।

আহিল নীরবতা ভেঙে বলল,
“তুমি কি আমার উপর রেগে আছো?”

রুহানি চোখ তুলে বলল,
“কেন বলুন তো?”

আহিল ছোট্ট করে শ্বাস ফেলে বলল,
“আমি জানি তুমি আমার উপর অসন্তুষ্ট। এই যে আমার সাথে ঠিক মতো কথা বলছো না। ওইদিন তোমাদের বাড়িতে গেলাম সেদিনও কথা বললে না। আমি তোমাদের বাড়িতে গিয়েছি কিন্তু তোমার মধ্যে কোন উচ্ছলতা নেই, চুপচাপ নিজের রুমে চলে গেলে তারপর আর বের হলে না?”

রুহানি তাচ্ছিল্য হেসে বলল,
“উচ্ছলতা প্রকাশ করার কি কথা ছিল? উচ্ছলতা প্রকাশ করার মতো কি করেছেন?”

আহিল থমকে গেল। তারপর নিজেকে সামলে বলল,
“তুমি, তোমার পরিবার অনেক খারাপ সিচুয়েশনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছো। সে সময় আমার তোমার পাশে থাকা উচিত ছিল কিন্তু আমি থাকতে পারি নি। রুহানি আমি এসবের কিছুই জানতে পারি নি। আমি যখন জানতে পেরেছি তখন জাস্ট স্তব্ধ হয়ে গেছি। কিছু ভাবতে পারছিলাম না। অনেক কষ্ট হচ্ছিল, আপসোস হচ্ছিল। তবুও তোমার আমার উপর রাগ-অভিমান করা স্বাভাবিক।”

“আমি আপনার উপর রাগ-অভিমান কিছুই করি নি। যখন আমাদের নিজের লোক পেছনে থেকে ছুরি মেরেছে সেখানে তো আপনার কিংবা আপনার পরিবারের সাথে আমাদের তেমন সম্পর্ক গড়ে উঠে নি। হ্যা একটা সম্পর্ক গড়ার কথা ছিল কিন্তু হয় নি।”

“হয়নি হবে। রুহানি, আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করব সব ঠিক করার। আমার উপর ভরসা রাখো।”
আহিলের কথা শেষ হতেই কফি চলে এলো। রুহানি কোন উত্তর দিতে পারল না।

রুহানি কফিটা হাতে নিয়ে এক চুমুক দিল। অপেক্ষা করছে সঠিক সময়ের।
রুহানি কিছু বলতে চাইছে সেটা আহিল খেয়াল করছে।
“রুহানি যা বলতে চাও নির্দ্বিধায় বলতে পারো।”

রুহানি আহিলের চোখের দিকে তাকাল। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল,
“আমি এই কয়েক মাসে জীবনের অনেক কঠিন সময় দেখেছি। জীবন কি বুঝতে পেরেছি। যা কখনো করি নি তাই করেছি। ভেঙে চুরমার হয়ে গেছি। এতটা খন্ড তৈরি হয়েছে নিজেকে খুঁজে পাই নি। পুরনো রুহানি কোথাও হারিয়ে গেছে। সেই আমি আর নেই। তাই আমার স্বপ্নগুলোও আগের মতো নেই। আমার সবটা জুড়ে এখন আমার পরিবার। তাই আমি বিয়ে করতে চাই না।”

রুহানির শেষ লাইন শুনে আহিল স্তব্ধ হয়ে রইল। রুহানি চোখ তুলে আহিলের দিকে তাকাল। আহিলের চোখগুলোও যেন থমকে গেছে।

আহিল নিজেকে স্বাভাবিক করে ঢোক গিলে বলল,
“তুমি যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গিয়েছো আর এখন যে পরিস্থিতিতে আছো তাতে তোমার এমন ভাবনা স্বাভাবিক কিন্তু এখানে আমার দোষটা কোথায়? রুহানি তুমি বর্তমান অবস্থা ভাবছো, ভবিষ্যত ভাবছো না। সব সময় পরিস্থিতি এক থাকবে না। তাই প্লিজ এসব বলো না। আমার বাবা-মা খুব শীঘ্রই তোমাদের বাসায় যাবে বিয়ের তারিখ দিতে।”

.

আহিল রুহানিকে গেটের সামনে নামিয়ে দিতেই রুহানি ভেতরে গিয়ে দাঁড়াল। আহিল যাওয়ার কিছুক্ষণ পরে রুহানি বাইরে বের হলো। রুহানির বাড়িতে যেতে ইচ্ছে করছে না। বাড়িতে গেলেই হাজারো প্রশ্ন করবে যে কারণে রুহানির বিরক্ত লাগছে। এতশত প্রশ্নের সম্মুখীন হতে চায় না।
রুহানি রাস্তা দিয়ে হাঁটছে। সন্ধ্যা নেমে আসছে তাই রাস্তা অন্য সময়ের চেয়ে যথেষ্ট নীরব। হালকা বাতাস বইছে। রুহানির জামার সাথে খোলা চুলগুলো উড়ছে। রুহানি চুল বেঁধে নিয়ে ধীরে ধীরে হাঁটছে।
মানুষের কিছু কষ্ট থাকে, যা কাউকে বলা যায় না, বললেও বুঝে না। সে কষ্টগুলো বুকের ভেতর চেপে রাখতে হয়। তা একান্তই ব্যক্তিগত কষ্ট। রুহানি যেন সে কষ্টগুলোই স্নিগ্ধ বাতাসের সাথে উড়িয়ে দিচ্ছে।
রুহানি ফুটপাতের ওপর গিয়ে বসল। আনমনে কিছু ভাবছে। আহিলকে বিয়ে করার ব্যাপারটা ওর মন মানছে না। রুহানি একা একা বসে আছে। সময় সময়ের মতো বয়ে চলেছে। হটাৎ পায়ের শব্দ পেয়ে হুড়মুড়িয়ে দাঁড়িয়ে গেল ও।

ফালাক চোখ লাল করে দাঁড়িয়ে আছে। ওর চোখগুলো যেন জ্বলন্ত আগুনের লেলিহান শিখা। চুলগুলো এলোমেলো। কেমন বিধ্বস্ত লাগছে৷ ঘনঘন নিশ্বাস নিচ্ছে। মনে হচ্ছে ওর সামনে ওর চিরশত্রু দাঁড়িয়ে আছে। যাকে খুন করতে এসেছে।

রুহানি ফালাকের অবস্থা দেখে ভেতরে ভেতরে ভয় পেলেও দু পা এগিয়ে জিজ্ঞেস করতে গেলে কি হয়েছে কিন্তু তার আগেই ফালাক রুহানির কপালে পিস্তল ঠেকাল। রুহানি স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে গেল। নড়তে পারছে না। কিছু বলতেও পারছে না। কথাগুলো গলায় এসে আঁটকে আছে। বের হচ্ছে না। শুধু ঢোক গিলছে। কপালে চিকন ঘামের রেখা ফুটে উঠেছে। চোখ বন্ধ করে নিল।

ফালাক রুহানির কপালে আরেকটু শক্ত করে ধরে ভাঙা গলায় বলল,
“কেন রুহানি, কেন? এত বড় ধোঁকা কেন দিলে? আমার অপরাধটা কোথায় ছিল?”

রুহানি স্থির ভাবে দাঁড়িয়ে কাঁপা গলায় বলল,
“কি করেছি আমি?”

ফালাক রুহানির কথা শুনে ক্ষেপে গিয়ে ওকে রাস্তার ধারের দেয়ালে চেপে ধরে বলল,
“আবার বলছো কি করেছো? তুমি জানো না কি করেছো? তুমি কি ভেবেছো আমি তোমার কোনো খোঁজ রাখি না?”

রুহানির তখন মাথায় একটা কথায় এলো ফালাক হয়তো আহিলের কথা জেনে গেছে।

“আমাকে কুকুরের মতো তোমার পেছনে ঘুরিয়েছো। কাউকে কখনও ভালোবাসবে না, বিয়ে করবে না এসব বলে এভয়েড করেছো। আমি সারাক্ষণ চেষ্টা করে গেছি তোমার মনে আমার জন্য অনুভূতি তৈরি করার জন্য। আর তুমি তলে তলে অন্য একজনকে নিয়ে সংসার গড়ার স্বপ্ন বুনে যাচ্ছো? কেন করলে এটা তুমি? তুমি যদি বলতে ফালাক আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি, বিয়ে করব তাহলে কষ্ট হলেও মেনে নিতাম কিন্তু তুমি এতদিন আমার সাথে যা করলে তা আমি কি করে ভুলব? তোমার প্রতি রোজ একটু একটু যে ভালোবাসা বেড়েছে তার কি করব?”

ফালাক কাঁদতে কাঁদতে রুহানির কপাল থেকে পিস্তল সরিয়ে নিল। রুহানি চোখ খুলে ফালাকের দিকে তাকাল। ফালাক চোখের পানি মুছছে।
“ফালাক আমি মিথ্যা কিছু বলি নি। তখন ওর সাথে আমার কোন সম্পর্ক ছিল না। আর এখনো নেই। আহিলের সাথে ফ্যামিলি থেকে বিয়ের কথাবার্তা হচ্ছে।”

ফালাক রুহানির দিকে চেয়ে শক্ত কন্ঠে বলল,
“মানলাম তখন কিছু ছিল না। কিন্তু বলেছিলে তো বিয়ে করবে না কোনদিন। তাহলে এখন? এখন কেন ফ্যামিলির কথায় বিয়ে করতে রাজি হলে? আমি তো তোমাকে বিয়ের কথাই বলেছিলাম তখন আমাকে কেন রিজেক্ট করলে? উত্তর দেও রুহানি।”

রুহানি মাথা নিচু করে বলল,
“বিয়ে তো আমি এখনো করতে চাই না কিন্তু ফ্যামিলির কথা ভেবে হয়তো বিয়েটা আমাকে করতে হবে।”

ফালাক রুহানির কথা শুনে হেসে ফেলল। আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে হাসছে। রুহানি বিস্ময় নিয়ে ফালাকের দিকে চেয়ে আছে।
ফালাক হাসি থামিয়ে বলল,
“আহিল! নামকরা ব্যবসায়ী। একবার বিয়ে করে নিলে তোমার পাশাপাশি তোমার ফ্যামিলির লাইফ সেট। তাই তো তোমার আর তোমার ফ্যামিলির বিয়ের জন্য এত তোরজোর। টাকার জন্য? সুখ-শান্তির জন্য? আত্মসম্মান নিয়ে না বড্ড বড়াই করতে? আজ কি হলো রুহানি? টাকার কাছে হেরে গেল তোমার আত্মসম্মান? যদি টাকাই মেইন ইস্যু হয় তবে আমাকে বলতে রুহানি। তোমার জন্য সব ছেড়ে দিতাম।”

“ফালাক, তুমি এসব কথা কি করে বলছো? টাকার কাছে আমি নিজেকে বিক্রি করে দিচ্ছি?”

ফালাক চেঁচিয়ে বলল,
“হ্যাঁ, টাকার কাছে তুমি নিজেকে বিক্রি করে দিয়েছো। টাকার জন্য তুমি হুট করে বিয়ের প্রতি পজেটিভ ধারণা এনে ফেলেছো ভাবা যায়? তোমাকে আমি সবার চেয়ে আলাদা ভেবেছিলাম বাট তুমি টাকার জন্য যেকোনো কাজ করতে পারো। হোটেলে গিয়ে নাচতে পারো, কারো সাথে থাকতেও পারো।”

রুহানি ফালাকের কথা শুনে চোখ বন্ধ করে নিল। ওর কান ঝিম ধরে যাচ্ছে। ফালাক ওর সম্পর্কে এমন কথা বলতে পারল? ওর চোখ বেয়ে পানি পড়ছে।

ফালাক রুহানির দুবাহু চেপে ধরে বলল,
“কত টাকা চাই তোমার? আমাকে বলো আমি সব দেব। তবুও আমার তোমাকে চাই। টাকার জন্য যেখানে আহিলের সাথে থাকবে সেখানে না হয় আমার কাছে থাকবে। ভালো নাহয় নাই বাসলে। আমার টাকাকেই ভালোবাসলে। বলো কত টাকা চাই?”

রুহানি ঝারা দিয়ে ফালাককে সরিয়ে দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলল,
“আমাকে তোমার নষ্ট গলির মেয়ে মনে হচ্ছে? টাকা দিয়ে আমার দর দাম করছো? তুমি আমাকে এই ভালোবেসেছিলে?”
রুহানির কান্নার কারণে হেঁচকি উঠে যাচ্ছে।

“ভালোবাসার কথা তোমার মুখে মানায় না। তুমি শুধু টাকার ভাষা বুঝো, তাই টাকার ভাষায় তোমাকে চাইছি। কি করব ভালোবেসে ফেলেছি খুব। তাই তুমি যে ভাষা বুঝো সে ভাষায় তোমাকে নিজের করতে চাইছি।”

রুহানি ফালাকের কথা শুনে বসে পড়ল।
“আমি এই কয়েক মাস অনেক কষ্ট করেছি। কিন্তু কখনো কারো কাছে মাথা নত করি নি। নিজের সম্মান বিসর্জন দেই নি। আর তুমি বলছো আমি টাকার কাছে নিজেকে বিক্রি করে দিচ্ছি?”

“তো কি করেছো বলো? তোমার বাবা-মা আহিলের টাকার জন্য তোমার বিয়ের জন্য অস্থির হয় নি? তুমি ডেটে যাও নি আহিলের সাথে? আমাকে কেন ফিরিয়ে দিয়েছিলে? কারণ আমি ভালোবাসার কথা বলেছিলাম তোমার ফ্যামিলির সব সমস্যা, দুঃখ লাঘব করব বলি নি। টাকার কথা বলি নি। তাই তোমার আমার চেয়ে আহিলকেই ব্যাটার মনে হয়েছে।”

রুহানির দম বন্ধ হয়ে আসছে।

অতিরিক্ত কান্নার জন্য হিঁচকি এখন খিঁচুনিতে রুপ নিচ্ছে৷ শ্বাস নিতে পারছে না। শ্বাসকষ্ট হচ্ছে খুব। রুহানি টেনে টেনে শ্বাস নিচ্ছে। ফালাক রুহানির এই অবস্থা দেখে ঘাবড়ে গেল। রুহানি ব্যাগ থেকে পানি বের করার চেষ্টা করছে কিন্তু হাত কাঁপছে।

ফালাক বিচলিত কন্ঠে বলল,
“রুহানি কি হলো তোমার? এমন করছো কেন?”

রুহানি অস্ফুট স্বরে বলল,
“পানি!”

ফালাক রুহানির খোলা ব্যাগে পানির বোতল দেখতে পেয়ে তাড়াতাড়ি রুহানিকে খাইয়ে দিল। অন্য সময় পানি খাওয়ার পর আস্তে আস্তে ঠিক হলেও এখন হচ্ছে না। ফালাক রুহানির অবস্থা দেখে দ্রুত উঠে গিয়ে গাড়ির দরজা খুলল। রুহানির কাছে এসে রুহানিকে কোলে তুলে গাড়ির দিকে দ্রুত গতিতে যাচ্ছে। রুহানি ওর কোলে জ্ঞান হারাল।

.

ফালাক চিন্তিত মুখে দাঁড়িয়ে আছে। ওর প্রাণ যেন বেরিয়ে আসছে। রুহানির মা আর ভাইও চলে এসেছে। রুহানির ফোনে কল করায় ফালাক রিসিভ করে সব জানিয়েছে। কিছুক্ষণ পরে আহিলও চলে এলো। আহিলকে দেখে ফালাক কেমন করে তাকাচ্ছে।
আহিল চিন্তিত ভঙ্গিতে রুহানির মা’কে বলল,
“কি হয়েছে আন্টি? রুহানির হুট করে কি হলো?”

” আসলে বাবা ও অতিরিক্ত কান্নাকাটি করলে কিংবা স্ট্রেসে থাকলে এমন হয় কিন্তু আজ কি হয়েছে জানি না।”

ফালাক সবটা বলে নি শুধু বলেছে ওর এমন অবস্থা দেখে হসপিটালে নিয়ে এসেছে।

কিছুক্ষণ পরে রুহানির জ্ঞান ফিরলে আহিল ওর পাশে বসে বলল,
“সব ঠিক হয়ে যাবে রুহানি। আমি তোমাকে ভালো ডক্তর দেখাব।”

“আমি বাসায় যাব আহিল।”

“আচ্ছা, এখুনি আমরা তোমাকে বাসায় নিয়ে যাব।”

ফালাক দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে রুহানির দিকে চেয়ে কয়েক পা পিছিয়ে ঘুরে বের হয়ে গেল রুম থেকে। রুহানি ফালাকের যাওয়ার সময় পেছনের অংশ দেখল।

.

রুহানি দুদিন পর ভার্সিটিতে গেল। দূর থেকে ফালাককে দেখতে পেল। ফালাকের বলা কথাগুলো মনে পড়ল। ফালাক তখনও ওকে দেখে নি। রুহানি দাঁড়িয়ে আছে। ফালাকের চেহারা যেন দুদিনেই বদলে গেছে। কেমন হিংস্র হিংস্র ভাব। শুভ রুহানিকে দেখে ফালাককে বলল,
“রুহানি আমাদের পেছনে দাঁড়িয়ে আছে। এদিকেই দেখছে।”

ফালাক চোখ মুখ শক্ত করে বলল,
“আজকের পর থেকে ওর নাম আর আমার সামনে নিবি না।”

সোহান হালকা হেসে বলল,
“রাগ করছিস কেন? ভালো বাসিস তো।”

“কিসের ভালোবাসা? আমি ওকে ভালোবাসি না। এতদিনের ভুল শোধরে নিয়েছি।” সোহানকে ধাক্কা মেরে বারান্দা থেকে বের হয়ে গেল। রুহানি সবটাই দূর থেকে দেখল।

ফালাক রুহানির দিকে না চেয়েই ওকে পাশ কাটিয়ে গাড়ির দিকে গেল। গাড়ির দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে গাড়ি স্টার্ট দিল।

চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here