প্রাইভেট টিচার,Part :-1

প্রাইভেট টিচার,Part :-1
Writer :-Ananta Sanny

অনন্ত রাস্তা দিয়ে আনমনে তার গন্তব্যে যাচ্ছে হঠাৎ হোচট খায় সে…
-ও মা রেএ….
দেখে তার জুতাটা ছিড়ে গেছে। তার একটাই জুতা। এর পেছনে কিছু কারন আছে সেটা হলো….এখন থেকে ৫ বছর আগে সে লেখাপড়ার জন্য গ্রাম থেকে শহরে আসে। গ্রামে তার কাকা আছে সেখানেই সে বড় হয়। মা বাবা দুইজন দুইদিকে। পরিবারের এ অশান্তির কারনে তার কাকা ছোট বেলায় তার কাছে রেখে দেয়। এখন বাবা মা হিসেবে তার কাকা কাকী কেই চেনে। তো গ্রামের স্কুলের পড়া যখন শেষ হয় তখন সে শহরে এসে একটা কলেজে ভর্তি হতে চায়। টাকা পয়সা তেমন না থাকায় তার কাকা রাজি হয় না। আর অনন্তকে বলে দেয়। তুই যদি কষ্ট করে চালিয়ে নিতে পারিস তো পড়। আমি টাকা দিতে পারবো না। তবুও অনন্ত শহরে এসে ইন্টারমিডিয়েট ১ম বর্ষে ভর্তি হয় আর এখন সে অনার্স ৩য় বর্ষে। তার পাঁচটি বছর অনেক কষ্টে গিয়েছে। প্রথম প্রথম লেখাপড়ার খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হইছে। এখন ৪ টা প্রাইভেট পড়ায় তবুও খরচ চালাতে হিমশিম খায়। তো জুতাটা ছিড়ে যাওয়ায় অনন্ত খুবই টেনশনে পড়ে। জুতাটা চামরার ছিলো অনেক কষ্টে এটা ৪ বছর এ নিয়ে গেছে…….জুতাটা হাতো নিয়ে ভাবছে মাস তো শেষের দিকে কাছে আছে ১০ টাকা জুতা সারাতে হবে। আবার কাছে টাকা না থাকলে তাও বিপদ এদিকে জুতা ছাড়া পড়াতে যাবো কিভাবে! হঠাৎ কে যেনো ডাকে তাকে….
-এই যে মিষ্টার (একটা মেয়ে)
অনন্ত মেয়েটাকে দেখে জুতা হাত থেকে ফেলে পায়ে পড়ে নেয়….
-জ্বি বলেন (অনন্ত)
-জুতা তে এত মোনোযোগ দিয়ে কি দেখছিলেন ১০ মিনিট ধরে(মেয়েটি)
-….. (১০ মিনিট ধরে দেখছিলাম! অনন্ত মনে মনে বলল)
-এই হ্যালো হারিয়ে গেলেন নাকি??
-ক ক কই না।
-তো কি দেখছিলেন??
-না মানে
-হ্যা মানে
-আমার জুতাটা ছিড়ে গেছে
-তাই বলে ওভাবে দেখতে হবে
-হুমম আপনি কে??
-ইকরা
-আমি তো চিনি না
-কিন্তু আমি আপনাকে চিনি
-কিভাবে??
-আমার সাথে একটু হাটেন বলতেছি
-হাটতে তো পাড়ব না
-ওহ হো। জুতাটা দেন তো
-কেনো??
(ইকরা জুতাটা নিয়ে দূরে ফেলে দিলো)
-ই আল্লাহ কি করলেন আপনি (অনন্ত)
-বাব্বাহ কি করলাম(ইকরা)
-ফেলে দিলেন কেনো?? ওটা আমার লাগবে
-আচ্ছা লাগবে ওখান থেকে পড়ে নিয়ে নিয়েন
-কেউ নিয়ে যাবে তো
-এহহহ যে জুতা। ওটা আবার কেউ নিয়ে যাবে! হাটেন এখন
হাটতে হাটতে ইকরা বলল
-আপনার নাম অনন্ত তাই না! (ইকরা)
-হুমমম (অনন্ত)
-এবার অনার্স ৩য় বর্ষে পড়েন
-হুমমম
-৫ বছর আগে গ্রাম থেকে এসেছেন এখানে
-আপনি জানলেন কিভাবে??
-আমি ৫ বছর ধরেই আপনাকে চিনি
-কিভাবে??
-সেটা পড়ে বলছি। আগে দরকারি কথা টা সেড়ে নেই। আমার আপনাকে দরকার
-কি জন্য!!(অবাক হয়ে)
-আমাকে পড়াবেন। আর আপনি যে বিষয় নিয়ে পড়েন আমিও তাই।
-তাহলে তো লাগবে না….
-লাগবে। আমি আপনার ১ বছর এর ছোট
-আমার যে সময় নেই??
-আছে
-না সত্যি নেই। ৪ টা প্রাইভেট পড়াই
-তাই?
-হুমমম
-মেয়ে আছে কয়টাতে??
-২ টাতে
-কোন ক্লাস??
-দুইটাই নাইন এ পড়ে
-হুমম ওই দুইটা বাদ। কাল থেকে আমাকে পড়াবেন
-না পাড়ব না
-পাড়বি না মানে?? ওই দুইটার সাথে লাইন মারিস নাকি??
-ছি ছি না কি বলেন এসব
-হুমম ঠিকিই বলি
-লাইন মারতে যাবো কেন?? আমি শুধু পড়াই
-গুড বয়। তো কালকে থেকে ওরা বাদ। আমার টা শুরু কেমন?
-না
-আর একবার না করলে তুই আমার বাড়ির সামনে দিয়ে যাস ওখান দিয়ে যেতে পারবি না।
-কেনো??
-যেতে দিবো না মাইর খাওয়াবো
-আমি কি করছি?
-কিছু করেন নাই আমাকে পড়াতে হবে এটাই ফাইনাল। না হয় শহর ছাড়া করব আপনাকে
-………….
-কি হলো কি ভাবছেন??
-কিছু না
-টাকার কোনো সমস্যা নেই। যা লাগে দিবো।
-সেটা না
-তাহলে কোনটা??
-আসলে…
-থামেন। আগে আপনার জুতটা টা কিনে নেই। এই যে ভেতরে একটা বড় শপিং মল আছে ওখান থেকে
-না টাকা নেই আমার কাছে
-আমার কাছে তো আছে
-আপনি দিবেন কেনো??
-প্রাইভেট যে পড়াবেন তার অগ্রিম এইটা। আর এত বেশি প্যাচাল পাড়েন কেনো??
-হুমমমম
জুতটা কিনে বাইরে আসে দুজন। অনন্ত ইকরার দিকে এখন পর্যন্ত ভালভাবে তাকায় নাই। তাকিয়ে দেখে তো অনন্ত খুবই অবাক এত্ত সুন্দরী একটা মেয়ে!
-এই তাকিয়ে কি দেখেন (ইকরা)
-কই কিছু না (অনন্ত)
(ভাল করে দেখতেও পাড়লো না)
-তো স্যার আপনার নাম্বার টা দেন(ইকরা)
-নাম্বার দি…
-ফোন দিবো ফোন
-ওহহ
-হুমম। আর যে জায়গায় আপনা জুতাটা ছিঁড়ছে তার ডানদিকে ৪ তালা বাসা টা আমাদের। আর না চিনলে ফোন নাম্বার তো আছে
-হুমমম
-তো স্যার বায় এখন
-ওকে
অনন্ত তার হোষ্টেলে চলে আসলো। রুমে এসে তার নতুন জুতাটা দেখছে আর ভাবছে কোথা থেকে একটা পরি থুক্কু মেয়ে এসে জুতা কিনে দিয়ে গেলো! ভাবতেই কেমন যেনো লাগছে….তো অনন্ত পরদিন ইকরার দেওয়া সময় মত তার বাসার নিচে যায়। সে ইকরাদের বাসার দিকে তাকাতেই দেখে ইকরা তার দিকে হাত তুলে ইশারা দিয়ে ডাকছে…
-ওই এইদিকে(ইকরা)
-আপনি নিচে আসেন(অনন্ত)
-ওকে দাড়ান আসছি
ইকরা নিচে এসে বলল
-কি হয়েছে ভেতরে আসছেন না কেনো??
-প্রাইভেট যে ঠিক করলেন আপনার বাবা মা যানে??
-হুমম জানবে না কেনো??
-জানে?
-হ্যা আসেন
-হুমম চলেন
অনন্ত ভেতরে গিয়ে ইকরার বাবা মার সাথে কথা বলল। তারপর ইকরার রুমে গেলো পড়াতে…তারপর ইকরা বলল
-স্যার আজ তো পড়া হবে না (ইকরা)
-কেনো??
-আজ প্রথম দিন পরিচয় পর্ব হবে
-আপনি তো আমাকে ৫ বছর ধরে চিনেন। আর কি পরিচয় হবেন??
-আনুষ্ঠানিক ভাবে তো হয় নাই
-হুহ শুরু করেন
-আমি ইকরা
-আমি অনন্ত
-আমার মা বাবা আর পরিবারে(সব কিছু বলল)
-(অনন্গ তার পরিবার সম্পর্কে সব কিছু বলল)
-আপনার জি এফ আছে??
-হুমম আছে
-আপনার বি এফ আছে??
-জানি না
-তো পরিচয় পর্ব শেষ এখন পড়া শুরু করি
-………..
-প্রথমে আমাদের সিলেবাস সম্পর্কে জানতে হ…
-সত্যি কি আপনার জি এফ আছে??
-আচ্ছা নেই পড়েন এখন
-না সত্যি বলেন
-হুহ নেই
-ইয়েএএএএএএএএএএএ উম্মাম্মাম্মাহহহহহহহহহহহহ(ইকরা খুশিতে অনন্তকে একটা কিস করে)
-এই এটা কি করলেন??(অনন্ত)
-কই কিছু না
-না এগুলা কিন্তু ঠিক না
-আমি ইচ্ছা করে করি নাই তো (নরম হয়ে বলল)
-এমন করলে আজই শেষ
-না কখনও আর এমন করব না প্রমিস
-হুমম পড়েন এখন
-কিছু খাবেন??
-পড়তে বলছি
-আমি খুব খুশি হইছি
-আমি কি চলে যাবো??
-না থাকেন
-উল্টা পাল্টা কিছু না বলে পড়েন
-ওকে…..ইহহহ আসছে আমায় শাসন করতে কয়েকদিন যাক চান্দু বুঝতে পারবেন(ইকরা মনে মনে বলল)
-বির বির করে কি বলা হচ্ছে??
-না কিছু না
-হুমম
-আপনার প্রিয় রং কি??
-হুহ গেলাম
-না শোনেন আপনার আগে ইন্টারভিউ নিবো তারপর পরবো
-না আমি গেলাম
-তুই এক পা এগিয়ে দেখ কি করি
-কি করবেন??(ভয় পেয়ে)
-এক পা এগিয়ে দেখ আগে
-না
-এখন না করিস কেন????

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here