তুমি_আমার_অনেক_শখের(০৫/শেষ পর্ব) #লেখনীতেঃসুমাইয়া_ইসলাম_জান্নাতি

#তুমি_আমার_অনেক_শখের(০৫/শেষ পর্ব)
#লেখনীতেঃসুমাইয়া_ইসলাম_জান্নাতি

“মাশা আল্লাহ আমার প্রজ্ঞা দাদু ভাইকে একদম পরির মত লাগতেছে! কারো নজর না লাগুক।”

“একদম হক কথা কইছেন দাদিজান। প্রজ্ঞা আপারে অনেক সুন্দর লাগতেছে। একদম পরির মতন।”

দাদিজান আর মর্জিনা মুখ থেকে এমন প্রশংসাবার্তা শুনে প্রজ্ঞা আরও একদফা লজ্জায় মিইয়ে গেল। মুখে ফুটে উঠে লজ্জা রাঙা একটু টুকরো হাসি।
প্রজ্ঞার শরীরে লাল রঙের বেনারসি হালকা সাজ আর লম্বা লাল ঘোমটা দ্বারা আবৃত। হলদে ফর্সা প্রজ্ঞাকে বিয়ের সাজে মারাত্মক সুন্দর লাগছে। বিয়ের দিনে সব মেয়েকেই সবচেয়ে বেশি সুন্দর লাগে। কিন্তু প্রজ্ঞাকে আরও বেশি সুন্দর লাগছে। যে মেয়েগুলো খুব একটা সাজগোজ করে না হঠাৎ সাজে তাদের বেশি সুন্দর লাগে। প্রজ্ঞার ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে।
বাইরে থেকে উচ্চ আওয়াজে কথা বলতে শোনা যাচ্ছে। নানান মানুষের আগমনে প্রজ্ঞাদের বাড়ি আজ মুখরিত। প্রজ্ঞার কাছে ওর দাদিজান, মর্জিনার আর ওর ছোট মামি বসে আছেন। মাঝেমধ্যে দাদিজানের দুষ্টু কথায় মেয়েটা লজ্জায় পড়ছে। কখনও বা মর্জিনার রসালো কথায় ফিক করে হেসে ফেলছে। আবার কখনও মামির থেকে দায়িত্ব কর্তব‍্যের কঠিন কথা শুনে নিজেকে মানসিকভাবে সেভাবে তৈরি করার চেষ্টা করছে। এককথায় প্রজ্ঞা এখন মিশ্র অনুভূতির মানবি।

বর বেশে তার প্রিয়তমাকে নিজের একান্ত আপন সঙ্গী করে নিয়ে যেতে এসেছে আজরাফ। চোখে মুখে খুশির ঝিলিক। যেন মহামূল‍্যবান কিছু পেতে চলেছে সে। আরেকদফা হইহুল্লোড়ে মেতে উঠলো বাড়ির প্রাঙ্গন। সকলে ব‍্যস্ত হয়ে পড়েছে বর এবং বরযাত্রী আপ‍্যায়নে। মর্জিনা রুম থেকে ছুটে বেরিয়ে গেল। উদ্দেশ্য বর দেখা। বর পক্ষের মেয়েরা এক এক করে প্রজ্ঞাকে দেখে গেল। সবার মুখে এক কথা, আজরাফ একটি সুন্দর পরির মত বউ পেতে চলেছে।

বেলা বেজেছে প্রায় দুপুর দুইটা। এরমধ্যে প্রজ্ঞার বাবা মা হাতেগোনা দুই একবার এসে দেখে গিয়েছেন। তাদের আজ ব‍্যস্ততার শেষ নেই। একমাত্র কন‍্যার বিয়ে বলে কথা। প্রজ্ঞার বাবা বাইরের দিকটা সামলাতে ব‍্যস্ত আর তার মা অন্দরের দিক। প্রজ্ঞার মন হু হু করে উঠলো। এইতো কিছু সময়ের মধ্যে অন‍্যের ঘরে গিয়ে উঠবে। শেষ সময়টুকু মা-বাবার সাথে কাটাতে পারলো না সে। চোখ দুটো ছলছল করে উঠলো প্রজ্ঞার। তা দেখে প্রজ্ঞার দাদিজানে সসেন্থে নাতনিকে বুকে জড়িয়ে নিলেন। মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। মুখে তেতো কথা শুনালেও একমাত্র নাতনিকে সে খুবই ভালোবাসে। তাইতো সব ছেলেমেয়ের বাড়ি রেখে এই এক ছেলের বাসায় পড়ে থাকেন সবসময়।

কিছু সময় পরে চলেই এলো সেই শুভক্ষণ। কাজি সাহেব বিয়ে পড়ানো শুরু করলে মা-বাবা নিকটে এসে দাড়ালো মেয়ের। কবুল বলার সময় প্রজ্ঞা শব্দ করে কেঁদে উঠলো। কান্নার রোল পড়ে গেল মা মেয়ের। উপস্থিত অনেকের চোখ ভিজে উঠলো। অন‍্যদিকে আজরাফকে কবুল বলতে বলার সময় সে এক দমে কবুল বলে তারপর থেমেছে। সে নিয়ে এক দফা হাসাহাসিও হয়েছে।

তারপর এলো বিদায় পর্ব। বিয়ের অনুষ্ঠানে কন‍্যা এবং তার পিতামাতার জন্য সবচেয়ে কষ্টের মুহূর্তটা মনে হয় বিদায় পর্বেই হয়। প্রিয় মেয়েকে নতুন জামাইয়ের হাত তুলে দিয়ে মা-বাবা যেমন নিশ্চিত হন তেমনি পূর্বের ন‍্যায় মেয়েটাকে কাছে না পাওয়ার আকুলতাও গ্রাস করে নেয় তাদের। আর নববধূর একদিকে যেমন অনিশ্চিত সুখময় ভবিষ্যত অন‍্যদিকে মা-বাবা চেনা পরিবেশ ছেড়ে শশুরালয়ের অচেনা অজানা পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার আশঙ্কা থাকে। দুঃখ সুখ মিশ্রিত অনুভূতিতে নববধূর অনুভূতি তাৎক্ষণিক তার কাছে অচেনা অজানা লাগে। প্রজ্ঞা কাঁদতে কাঁদতে লুটিয়ে পড়েছে। তাৎক্ষণিক আজরাফ তার পোক্ত বক্ষে আগলে নিয়েছে। অচেতন অবস্থায় প্রজ্ঞাকে কোলে করে বিয়ের গাড়িতে শুয়েই দিয়েছে আজরাফ।

নব শশুরালয়ে নতুন বউ আশায় আনন্দের ধুম পড়ে গেছে। হইহুল্লুড়ে মেতে উঠেছে পুরো বাড়ি। বউকে বরণ করে নেওয়া হলো। হাসি হাসি মুখে প্রজ্ঞার শাশুড়িমা তাকে বরণ করে নিল। প্রজ্ঞার ননদ নেই। আছে সে বাদে আরও তিনটে জা। সে সবার ছোট। মেঝো জায়ের রুমে নিয়ে যাওয়া হলো। কারণ আজরাফের রুমে বাসর ঘর সাজানো হচ্ছে। তা এখনো অসম্পূর্ণ। সম্পূর্ণ হলে নিয়ে যাওয়া হবে।
নানান আনুষ্ঠানিকতা, অচেনা মুখের মানুষদের সাথে আলাপচারিতার মধ্যে দিয়ে কেঁটে গেল অনেক সময়। কিন্তু এতটা সময়ের মধ্যে আজরাফের দেখা পাওয়া গেল না। প্রজ্ঞা মনে মনে কয়েকবার আজরাফকে খুজেছে। পরবর্তীতে মনের আকুলতা সামলেছে, হয়তো ব‍্যস্ত আছে সে। বিয়ে বলে কথা। রাতের খাবারটা সেজো জায়ের হাতেই খেল প্রজ্ঞা। সে পরম সেন্থে খাইয়ে দিয়েছে নিজের ছোট জা কে। মানুষের সঙ্গ প্রজ্ঞার খারাপ লাগছে না। চিরকাল একা একাই কাটিয়ে দিয়েছে। এখন নানান মানুষের কথোপকথনে ভালোই লাগছে তার।

পুষ্পে রঞ্জিত বিছানায় বসিয়ে দিয়ে গেল প্রজ্ঞার জায়েরা। আজরাফ তখনো নিরুদ্দেশ। প্রজ্ঞা ঘুমে ঢুলুঢুলু চোখে তার নব প্রিয় পুরুষটির জন্য অপেক্ষা করছে। ঘড়ির কাঁটা ঠিক যখন বারোটা তখনই হন্তদন্ত পায়ে আজরাফ রুমে ঢুকলো। হাতের শপিংয়ের প‍্যাকেটটা টেবিলের পরে রেখে দ্রুত ওয়াশরুমে ঢুকলো সে। প্রজ্ঞা অবাক নেত্রে দেখছে সব।

“মিসেস প্রজ্ঞা! ঘুমিয়ে গিয়েছেন নাকি?” আজরাফ কোমল স্বরে ডাকলো। প্রজ্ঞা আজরাফের জন্য অপেক্ষার এক পর্যায়ে ঘুমিয়ে গিয়েছিল। আজরাফের ডাকে নিদ্রাভঙ্গ হয় তার। পিটপিট করে চোখ মেলে চাইলো। আবিষ্কার করলো আজরাফ তার দিকে ঝুঁকে আছে। তড়িৎ গতিতে উঠে বসলো। তা দেখে আজরাফ হালকা হাসলো।
বলল, “মিস থেকে তো মিসেস হয়ে গেলেন প্রজ্ঞা? এবার কই যাবেন? অবশেষে আপনি আমার হলেন! একান্তই এই আজরাফ ফাহিমের।”

প্রজ্ঞা লাজুক হাসে। মুখে কিছু বলল না। আজরাফ তার ব‍্যবহার আকার ইঙ্গিতে প্রজ্ঞার সাথে সহজ হওয়ার চেষ্টা করছে।

“ওই নরম হাতদুখানা ধরার বৈধতা আগেই পেয়েছি। এখনো কি অনুমতি নিতে হবে?”

প্রজ্ঞা মৃদু স্বরে প্রতিত্তোরে বলল, “না।”

পরম যত্নে প্রজ্ঞার নরম ফর্সা হাতদুটো নিজের হাতের মুঠোয় পুরে নিল আজরাফ। বার কয়েক আস্তে করে হাত বুলিয়ে দিল। প্রজ্ঞা শরীর বয়ে অন‍্যরকম শিহরণ বয়ে গেল। কেঁপে উঠলো কিঞ্চিৎ। প্রজ্ঞার অনামিকা আঙ্গুলে লাভ সেইপের সুন্দর ডিজাইনের একটি আংটি পড়িয়ে দিল আজরাফ। ভালোবাসার ছোট্ট পরশ একে দিলে হাতে। তারপর প্রজ্ঞার উদ্দেশ্য বলল, “ভয় নেই। আমি এর থেকে একচুল বেশি আগাবো না। এই আংটি সবসময় হাতে রেখ। আমি চাই আল্লাহর দেওেয়া ওই নরম মনটাই পৌছাতে। হৃদয়ের সাথে হৃদয়ে সন্ধি হোক। বাকিটা না হয় তোমার ইচ্ছেতেই হবে। সময় নাও। কিন্তু আমাকে ছেড়ে যেও না। তুমি জানো না #তুমি_আমার_অনেক_শখের।”

চোখ ছলছল করে উঠলো প্রজ্ঞার। উপচে পড়ছে জল। আজরাফ মুছে দিল। প্রজ্ঞাকে কিছু বলার সুযোগ দিল না। ফের বলল, “তোমার জন্য একটা ছোট্ট সারপ্রাইজ আছে প্রিয়। এসো!”

প্রজ্ঞা আজরাফের হাত ধরে বিছানা থেকে নেমে আসলো। আজরাফকে অনুসরণ করে এগিয়ে গেল। আজরাফ তার মাঝারি আকারের ব‍্যালকনিতে সুন্দর ডেকরেশন করেছে। এক সাইডে কিছু ফুলের টব, একপাশে একটা সুন্দর দোলনা, আরেকপাশে একটা ছোট্ট বুকশেলফ। সবই প্রজ্ঞার শখের পছন্দের। প্রজ্ঞা মুগ্ধ নয়নে সবটা দেখলো। সে ভাবতেও পারেনি তার শখ গুলো এই পাগল প্রেমিক বাসর রাতেই পূরণ করে ফেলবে। বিস্ময় নিয়ে থাকালো আজরাফের পানে। আজরাফ মুঠোয় পুরে রাখা প্রজ্ঞার হাতটা আরেকটু শক্ত করে ধরলো। বলল, “কিছুটা তোমার দাদিজানের থেকে জেনেছি। কিছুটা তোমার বাবার থেকে জেনেছি। তাছাড়া তোমাকে দেখতে তোমাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম তখন দেখলাম ছাদের এক কোণায় দোলনা, কিছু ফুলগাছ। বই পড়া তোমার খুব পছন্দের তোমার বাবা বলেছেন। আমাদের বাড়ি জয়েন ফ‍্যামেলি। ছাদে মাসহ ভাবিদের কর্তৃত্বও চলে। সেখানে তোমার একার জন্য এভাবে এ‍্যারেঞ্জমেন্ট করা হতো না। যাইহোক তোমার পছন্দ হয়েছে তো? তোমার পছন্দে আমার ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা সফল হবে।”

প্রজ্ঞা নিচু গলাই প্রতিত্তোরে বলল,
“মাশা আল্লাহ আমার খুবই পছন্দ হয়েছে। যেন এক টুকরো জান্নাত নেমেছে পৃথিবীতে। জাযাকাল্লাহু খাইরন।”

প্রজ্ঞার থেকে প্রশংসনীয় কথা শুনে সন্তুষ্ট হলো আজরাফ। রাতের নিস্তব্ধ অন্তরিক্ষ উপভোগ করলো দুই নর-নারী। সেখানে ছিল ভালোবাসা আর ভালোবাসার আদান প্রদান। ছিল না কোন কা’মিতা।
প্রজ্ঞা প্রবল সুখের আবেশে আজরাফের বক্ষে মুখ গুজেছিল। আজরাফও আগলে নিয়েছিল নিজের বক্ষে।
________________________

আজ বিয়ের বছর খানিক পরেও বাসর রাতের সুন্দর মুহূর্তের কথা স্বরণ করে সুখ অনুভব করে প্রজ্ঞা। আজরাফ নামক মানুষটা আস্ত একটা সুখ প্রজ্ঞার জন্য। প্রজ্ঞা আজরাফ দম্পতির জন্য আজ বিশেষ একটি দিন। এই দিনেই আজরাফের মনের ঘর আলো করে প্রজ্ঞার আগমন ঘটেছিল। অর্থাৎ আজ তাদের শুভ বিবাহ বার্ষিকী। আজরাফ অফিসে। প্রজ্ঞা ঠিক করেছে আজ আজরাফের পছন্দ মত সাজবে। সংসারিক কাজকর্মের ঝামেলা চুকিয়ে রুমে এসে সাজতে বসলো প্রজ্ঞা। নিল সাদা জামদানির সঙ্গে ম‍্যাচিং জুয়েলারি। ঠোঁটে রঞ্জক। দুহাতে মেহেদী একেঁছে আজ। সবমিলিয়ে প্রজ্ঞাকে অপ্সরি থেকে কম লাগছে না।

টেবিলে নীল কাগজে ছোট্ট চিরকুট। তাতে লিখা,
,,,,”প্রিয় পুরুষ,
গোটা একটা বছর ধরে মন প্রাণ দিয়ে আপনাকে অনুভব করলাম। বুঝতে পারলাম আপনি নামক মানুষটি শুধু আমার জীবনে নয়, আমার অস্তিত্বে মিশে আছেন। আপনিও যে আমার শখের পুরুষে পরিণত হয়েছেন। ভালোবাসি আমার প্রিয় পুরুষ। আজীবন আমার পাগল প্রেমিক হয়ে থাকুন। শুভ বিবাহ বার্ষিকী প্রিয়তম। আর একটা সারপ্রাইজ, দুজন থেকে তিনজন হতে চলেছি ইন শা আল্লাহ।”,,,,,

অফিস থেকে এসে রুমে ঢুকতেই আজরাফের চোখে পড়েছিল চিরকুটটি। শরীরের ক্লান্তি মিলিয়ে গিয়েছে। মন সুখের পবন বইছে। এদিক ওদিক খুজে প্রজ্ঞার দেখা পেল না প্রজ্ঞার। ব‍্যালকনির দিকে পা বাড়ালো। আজরাফের চক্ষু আবিষ্কার করলো তার সুন্দরী বধু লাস‍্যময়ী রূপে সেজে দোলনায় বসে আছে। আজরাফ এগিয়ে গেল। আজরাফের আগমনে লজ্জায় কুকড়ে গেল প্রজ্ঞা। প্রজ্ঞার কানের কাছে মুখ নিয়ে আজরাফ ফিসফিসিয়ে বলল, “কি ব‍্যপার মিসেস আজরাফ! আজ আমায় পাগল করার ধান্দা করেছো নাকি?”

“অসভ‍্য পুরুষ।”

“মেয়ে তুমি আমায় অসভ‍্য বলো? সভ‍্য হলে কি আর আমার বাচ্চার মা হতে পারতে সভ‍্য মেয়ে!”

প্রজ্ঞা আজরাফের ক্রমাগত লাগামহীন কথায় কান চেপে ধরে। দাঁতে দাঁত চেপে বলল, “থামুন। সত্যিই পাগল হয়ে গিয়েছেন। ভালো মানুষ এমন কথা বলে না।”

“পাগল হব না? কি বলো? আমি বাবা হচ্ছি আমার তো খুশিতে নাচতে ইচ্ছা করছে।”

“খুশিতে নাচতে হবে না। শোকরানা নামাজ পড়ুন। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমরা সন্তানের পিতামাতা হতে চলেছি। এর চেয়ে সুখের আর কি হতে পারে? আমি সিউর হবার পরে নামাজ আদায় করেছি। আপনিও ফ্রেশ হয়ে এসে ওয়াক্তের নামাজের শেষ দু রাকআত নফল নামাজ আদায় করিয়েন। ঠিক আছে?”

আজরাফ প্রতিত্তোরে সুবোধ বালকের ন‍্যায় বলল,
“ঠিক আছে রাব্বাতুল বাইত।”
যাওয়ার আগে আবারও প্রজ্ঞার কানে ফিসফিসিয়ে বলল, “তুমি_আমার_অনেক_শখের প্রিয়তমা। ভালোবাসা, ভালোবাসা অবিরাম।”

প্রজ্ঞা প্রতিবারের ন‍্যায় এবারও নিশ্চুপে অনুভব করলো আজরাফের সুখ বার্তা। পরম আবেশে চোখ বুজে ফেলল। দুফোটা নোনা জল গড়িয়ে পড়ল চোখের কার্ণিস বেয়ে। এ অশ্রু সুখের, ভালোবাসার। আজ তার পরম প্রাপ্তির। সন্তান আগমনের সংবাদ যেকোনো মায়ের জন্য পরম সুখের। এসে****ক্সুয়াল নামক রোগে অবুঝ প্রজ্ঞা সিদ্ধান্তই নিয়ে ফেলেছিল বিয়ে করবে না। করবে না সংসার। আজরাফ নামক মানুষটার আগমন ঘটলো আর জীবনের পুরোনো ধূসর ছন্দের পতন ঘটিয়ে নতুন রঙিন ছন্দের সূচনা ঘটিয়েছিল। পরিচয় হয়েছে নতুন অনুভূতিসহ নতুন পরিবেশ মানুষদের সাথে। প্রজ্ঞার এখন চিৎকার করে বলতে ইচ্ছা করে, “দুনিয়া বাসি শুনে যাও দুঃখের এই শহরে আমি এক সুখী মানবী। আমার এখন শখের পুরুষ আছে। যে কিনা আমার দুঃখগুলো তার ভালোবাসার বিনিময়ে শুষে নিয়েছে। আমি সুখী। আমি পুরুষের সন্তানের মা হতে চলেছি। আর কি চাই এই নশ্বর দুনিয়ায়!”

প্রজ্ঞার নিরব বাক‍্য শুধু সৃষ্টিকর্তা ছাড়া কেউ জানে না আর না বুঝতে পারে। হয়তো আজরাফ নামক মানুষটা কিছুটা অনুভব করতে পারে।
থাকুক কিছু অজানা কথা অজান্তেই।
পৃথিবীর সব শখের মানুষগুলো একে অন‍্যের হোক। ভালোবাসাই মুড়িয়ে রাখুক তাদের সুন্দর বন্ধনকে। পরিশেষে সবাই সবার প্রিয় মানুষটিকে যেন বলতে পারে #তুমি_আমার_অনেক_শখের।

সমাপ্ত

আসসালামু আলাইকুম।
খুবই দুঃখিত। আমি অসুস্থ ছিলাম এজন্য গল্প দিতে দেরি হলো। শেষ পর্বে গঠনমূলক মন্তব্য করবেন। এবার অনেক দিনের জন্য বিদায় নিচ্ছি ইন শা আল্লাহ। আল্লাহ হাফেজ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here