তপ্ত ভালোবাসা #লিখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ_০৩

#তপ্ত ভালোবাসা
#লিখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_০৩

.
🍂
রাস্তার পাশ কার্নিক ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছি আমি,,, চোখে মুখে হালকা বিরক্তি,, আর আমার এই বিরক্তি কারণ হলো আমার পঁঞ্চ বান্ধবীরা,,, আজ শিলার জন্মদিন, তাই আজ আমি সহ বাকি চার বান্ধবী মিলে ওকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে এ যাব, পরে সেখান থেকে ঘুরাঘরি তো থাকবেই এটা আমাদের প্লেয়িং ছিল,,, সাথে ছিল ষষ্ঠ বান্ধবীরা এক সাথে শাড়ি পরবো শাড়ির কালার থাকবে সিঁদুর লাল,,, সবিই ঠিক আছে শাড়িও পড়েছি,,, কিন্তুু আমার গুনধর বান্ধবীরা এখনো আসা নাম নিচ্ছে না,, আর আমি সেই কখন থেকে পাঁজি মেয়েদের জন্য অপেক্ষা করছি সেই দিকে কারো কোনো খেয়ালই নেই,,, সবাইকে সকাল ১০ঃ০০ দিকে থাকতে বালা হয়েছে অথচ এখন আমি আর শিলা ছাড়া বাকি সব হাওয়া হয়ে গেল,,,

.
একঝাক রাগ নিয়ে রাস্তার পাশে দাড়িয়ে আছি আমি আরও শিলা,, খানিক বাদে এক এক করে হাজির হতে থাকে আমার অতি গুনধর বান্ধবীরা,, ওদের দেখেই মেজাজ খারাপ হয়ে যায় আমার,, আমি কপাট রাগ দেখিয়ে বলে উঠি,,,,

.
—” সেই আপনারা এসে ধন্য করেছেন আমাদের,,, না আসলে কি করা থাকতো আমাদের,,, আমরা অতি ধন্য আপনাদের পেয়ে,,, (দাঁতে দাঁত চেপে)

.
আমার এমন রেগে যাওয়াতে,, মুহূর্তেই সবার চোখে মুখে অপরাধী ও অসহায় বোধটা ফোটে উঠে,,, কি করেছে বুঝতে পেরে এক পলক শিলার দিকে তাকিয়ে আমাকে উদ্দেশ্য করে রুপা বলে উঠে,,,,

.
—” সরি রেরর বুঝতে পারিনি এতটা লেইট হয়ে যাবে,, প্লিজ প্লিজ ক্ষমা করে দে আর রাগ করে থাকিস না জানু প্লিজ,,,

.
বলেই রুহি সহ বাকি সবাই জাপ্টে ধরে আমাকে আর শিলাকে,,, নিজের রাগটা আর ধরে রাখতে না পেরে পঁঞ্চ বান্ধবীর সাথে মেতে উঠলাম আনন্দে,, পরে এক সাথে বেড়িয়ে পরলাম গন্তব্য হীন মঞ্জিলের,,,

.

.

🍁
খাওয়া-দাওয়া আড্ডায় মেতে উঠেছি আমরা ষষ্ঠ বান্ধবীরা, গুলশান দুই নাম্বার সেক্টরে একটা রেস্টুরেন্টে আমাদের এই আড্ডার আসর জমে উঠেছে,, আমাদের সেই আড্ডায় আমরা সবাই মন্ত হয়ে আছি,,, আর আমাদের সেই আড্ডা ব্যাঘাত ঘটে পাশ থেকে কেউ চেয়ার টেনে বসে পরায়,,, চেয়ার এর শব্দ কানে আসতেই সবাই চমকে পাশ ফিরে তাকায়, তখনই চোখে পড়ল জিসান ভাইয়া হাসিমুখ,,, উনি হাসিমুখে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে,,, উনাকে এখানে দেখে আমরা সবাই সাথে সাথে থমথমে খেয়ে গেলাম,, কারণ জিসান ভাইয়াকে এ মূহুর্তে এখানে মোটেও আশা করিনি আমরা কেউ,,,

আমাদেরকে এভাবে থমথমে খেয়ে বসে থাকতে দেখে নড়েচড়ে বসে জিসান ভাইয়া,, ভাইয়াকে নড়েচড়ে বসতে দেখে শিলা ইতস্তত বোধ করে আমাদেরকে জানায় ওহ নাকি জিসান ভাইয়াকে আসতে বলে ছিল,,, শিলার এই অতি আদিখ্যেতা পছন্দ হলো না আমার, তাই নিজের বিরক্তি ভাবটা মুখে প্রকাশ না করে জিসান ভাইয়াকে সাই জানালাম আমি,,,

.
হাসি ঠাট্টায় গল্পের সময় পার করছি আমরা, তখনই বিকট শব্দ কানে আসতেই, আমার চমকিয়ে পিছন ফিরে তাকায়,, আর সাথে সাথে সবার চোখে মুখে ভয় আর আতঙ্কিত চাপ ফুটে ওঠে,,,

.
কারণ কয়েক জন্য কালো পোশাকদারি লোক, একটা লোককে নিজের ইচ্ছা মতো করে রক্তাক্ত করছে রেস্টুরেন্টে এর ভিতরে, সাথে রেস্টুরেন্টের ভিতরে সবকিছু ভাঙচুরও করছে, তাদের কিছু বলা বা করা সাহস করোও হচ্ছে না,,, সবাই ভয়ে সিটিয়ে আছে, সাথে তরতর করে কাঁপছে সবার হাত পা, তাদের সামনের ব্যাক্তিটিকে দেখে,,, যার যার জায়গায় টায় দাঁড়িয়ে,,, আর তাদের সামনে একটা চেয়ারে আরাম করে পায়ে ওপর পা তুলে বসে আছে তাদের বস, আমরা তাদের পিছনে হওয়ায় বস ফেস দেখতে পারছিনা,,, ব্যক্তিটিকে আরোও কিছু কালো পোশাক দারি বডিগার্ড চারপাশে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে,,, ব্যক্তিটি গম্ভীর ভাবে একহাতে একটা ছোট বল ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখছে, উনার এমন কাজে মনে হচ্ছে এখানে কোনো কিছুই হচ্ছে না, সবটাই স্বাভাবিক,,,,

.
বডিগার্ডদের এই হৃদয় বিহীন মারে, আর রক্তাক্ত ব্যক্তিটি আত্ম চিৎকারে, মূহুর্তের কলিজা কেঁপে কেঁপে উঠছেে আমার,, রুক্তে আমার প্রচন্ড রকম ফোবিয়াঁ আছে, তাই ভয়ে চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে আমার,,, আমার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম বাসা বেঁধেছে,,,

.
হাতের উল্টোপিঠে নিজের কপালের ঘামটা মুছে, দ্রুত এগিয়ে গেলাম সেদিকে,,, সামনে গিয়ে দাড়াতেই চোখে পড়ে আবারও সেই রক্তাক্ত ব্যক্তিটিকে,,,
বডিগার্ড গুলো নিদয় ভাবে মারছে ব্যক্তটিকে,,,,

.
সবটা সবাই দেখো কারো মুখে কোন কথা নেই, আর না আছে কোনো প্রতিবাদ, পরিবেশটা নিরব থমথমে,,, চারদিকে নিস্তব্ধ হয়ে গেছে শুধু রক্তাক্ত ব্যাক্তির আর্তনাদ ভেসে আসছে সবার কানে,,, তখনি চেয়ারে বসে থাকা লোকটি উঠে দাঁড়িয়ে রক্তাক্ত ব্যাক্তিটি দিকে শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে পাশে একহাত বাড়িয়ে দেয়, তখনই পাশ থেকে একজন বডিগার্ড দ্রততার সঙ্গে একটা বন্দুক হাতে ধরিয়ে দেয়,,, বন্দুকটি হাতে পাওয়া সাথে সাথে তাক করে ফ্লোরে পরে থাকা ব্যাক্তিটির দিকে শুট করা জন্য,,, এমন পরিবেশ দেখে ভয়ে হিতাহিত জ্ঞান হারায়ে কাঁপা কাঁপা স্বরে আমি বলে ওঠি,,,,

—” প্লিজ মারবেন উনাকে,,,উনি মরে যাবে তো,,, ছেড়ে দিন উনাকে প্লিজ,,,

.
আমার এমন হঠাৎ কথা বলায় সবাই চমকে আমার দিকে তাকায় চোখ বড় বড় করে,, এই মুহূর্তে আমার এইরকম কথা গুলো বলে তাদের কাজের ব্যাঘাত ঘটানোটা মোটেও ঠিক হয়নি তা সবার ফেস দেখেই বুঝা যাচ্ছে,,, হয়তো আজ আমারও রক্তাক্ত ব্যাক্তিটি সাথে শেষ দিন হবে,,,

আমার এমন কথায় সামনে থাকা ব্যাক্তিটি ঘাড় ঘুরিয়ে আমার দিকে তাকাতেই আমি মূহুর্তের শক্ট খেয়ে পাথর মুর্তি মতো দাড়িয়ে রইলাম,,, কারণ আমার সামনে রিদ খান দাঁড়িয়ে আছে হাতে বন্দুকটা রক্তাক্ত ব্যাক্তির দিকে তাক করে,,,, উনি আমাকে এখানে এই মূহুর্তের দেখবে হয়তো আশা করেনি তাই আমাকে দেখার সাথে সাথে কঁপাল কুঁচকে এলো উনার, পরে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে ওপর থেকে নিচ পযন্ত চোখ বুলিয়ে আমাকে দেখে নেন উনি,,,, আর আমি ফ্রিজ হয়ে দাঁড়িয়ে আছি উনার সামনে,,,, রিদ খানকে আমি ভাইয়ার বিয়ের পরে আর দেখিনি একটা মূহুর্তের জন্যও,,,, ভাইয়ার বিয়ের হয়েছে আজ এক মাসের বেশি হবে, সবটাই স্বাভাবিক আছে কিন্তুু আবারও রিদ খানের সামনে দাঁড়িয়ে পড়বো কখনো ভাবিনি আমি,,,, এভার কি হবে আমার কে বাঁচাবে এই রিদ নামক ভয়ানক ব্যাক্তি থেকে,,,,

.
আমি উনাকে এমনত অবস্থা দেখে মুহূর্তেই আমার ভয় লাগার ধাপটা কয়েক গুন বেড়ে যায়,,,, কারণ উনার ভাষ্য মতো যদি পরে কখনো উনার সামনের আমি পরি তো সেই দিন হবে আমার শেষ দিন,,,, আর আজকে উনাকে আমি এই রুপে দেখবো ভাবতেও পারিনি,,, উনাকে দেখে আমার কপাল বেয়ে ঘাম ঝড়তে লাগে, পরে টলমলে চোখে এক পলক ফ্লোরে পরে থাকা ব্যাক্তিটাকে দেখে আবারও উনার দিকে তাকায়,,,,

.
উনি তখনও শান্ত দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল,, উনাকে এমন করে আমার দিকে তাকাতে দেখে আমি বার বার কেঁপে কেঁপে ওঠছি,,,, আমাকে কাঁপতে দেখে জিসান ভাইয়া পাশ থেকে আমার দু বাহু চেপে ধরে শক্ত করে,,, পরে আমাকে নরমাল করার জন্য জিসান ভাইয়া এখান থেকে নিয়ে যাওয়া জন্য আমাকে হালকা নড়াতেই , মূহুর্তের উনি (রিদ) চোখ মুখ শক্ত করে রেগে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে পর পর ছায় ছয়টা গুলি বসায় রক্তাক্ত ব্যাক্তিটির কঁপাল বরাবর,,, রক্তে ছিটা ভেসে যায় পুরো ফ্লোর,, সাথে গড়াগড়ি খাচ্ছে রক্তাক্ত ব্যাক্তিটি নিত্যান্ত দেহটি,,,, পরে সাথে সাথে উনি রেগে টগবগে রক্ত লাল চোখে আমার দিকে হাতে থাকা বন্দুকটা তাক করে,,, উনার আমার ওপর এমন হঠাৎ রাগের কারণ বুঝতে পারছি না,,, তাই টলমলে চোখ উনার দিকে তাকিয়ে রইলাম,,,, মূহুর্তেই আমি রক্ত আর ভয় দুটোতেই প্রচন্ড উত্তেজিত হয়ে আর কিছুই নিতে পারিনি, ঝাপসা হয়ে এলো আমার চোখে টলমলে চোখে উনার দিকে তাকিয়ে থেকে ঢলে পরি ফ্লোরে,,,,

গল্পের পেইজ লিংক
https://www.facebook.com/profile.php?id=100069402592136

চলবে…………….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here