ডাকিনি বউ,৭ম পর্ব
লেখক:মাসুদ রানা
আমি মহিলাটির কথা শুনে চমকে উঠলাম! কি বলছেন মহিলাটি এসব! কে ফিরে এসেছে?! তার মানে মহিলাটি এই পরিবারের সকল পাপের কথা এবং কে এই খুন গুলো করেছে তাকে চেনে! এরপর আমি সেই বৃদ্ধা মহিলাটির ঘরে গেলাম এই খুনীর রহস্য জানতে। মহিলাটি প্রথমে কিছু বলতে না চাইলেও পরে বাধ্য হয়েই সে সব ঘটনা আমায় খুলে বলে ! মহিলাটি যা বললো তা শুনে আমি পুরোই অবাক হয়ে গেলাম!! মহিলাটি যা বলেছিলো! তার নিজের ভাষায় বলতে গেলে: .
“এই বাড়িতে এক সময় আমরা ৬ জন বাস করতাম। আমি, আমার স্বামী, আমার দুই ছেলে আর তাদের স্ত্রী। আমার বড় ছেলেটা একটু মানসিক ভাবে অসুস্হ ছিলো। তাই আমরা একটা গরিব কৃষক পরিবারের মেয়ের সাথে তার বিয়ে দেই। মেয়েটার নাম ছিলো জুলেখা। মেয়েটা একটু শান্তশিষ্ট এবং বোকা ধরণের ছিলো। আর আমার ছোট ছেলে বেশ ভালো ছিলো। তাই তার বিয়ে হয় এক ধনী পরিবারের মেয়ের সাথে। যদিও রুপে,গুনে আমার ছোট ছেলের বউ থেকে বড় ছেলের বউটাই বেশি ভালো ছিলো। আমাদের পরিবার ভালোভাবেই চলছিলো। কিন্তু একটা সমস্যা হলো আমাদের পরিবারে নতুন কোন বংশধর জন্মাচ্ছিলো না। আমরা আমাদের নাতি বা নাতনিকে দেখার জন্য প্রায় পাগল হয়ে গিয়েছিলাম। প্রায় ২ বছর পর আমার বড় ছেলের বউ অন্তরসত্তা হয়। এই বিষয়টা নিয়ে আমাদের বাড়িতে একটা আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। কিন্তু আমার ছোট ছেলের বউ ছিলো হিংসুক প্রকৃতির। তার কোন সন্তান হচ্ছিলো না। তাই সে এই বিষয়টা নিয়ে বেশ হিংসা করতো আমার বড় ছেলের বউকে। সেই সময় আমাদের এলাকায় এবং আশেপাশের সব এলাকায় ইশ্বর ছাড়া অন্য কিছুর পুজো করা ছিলো নিষিদ্ধ এবং এর একমাত্র শাস্তি ছিলো মৃত্যুদন্ড! আমার ছোটছেলের বউ এর ইশ্বরে বিশ্বাস একটু কমই ছিলো। তাই সে ডাকিনী পুজো শুরু
করে। সে ডাকিনী দেবীর কাছে একটা সন্তান ভিক্ষা চায়। সে বাড়ির সবাইকে লুকিয়ে রোজ ডাকিনী পুজো করতো। এইদিকে দেখতে দেখতে আমার বড় ছেলের বউ ৮ মাসের অন্তরসত্তা হয়ে গিয়েছিলো। আর কয়েক মাস পরেই তার কোল আলো করে একটা ছেলে বা মেয়ে আমাদের পরিবারে আসতে চলেছিলো। জুলেখা আগে থেকেই আমাদের বলতো যে তার একটা মেয়ে সন্তান হবে। আর তার নাম হবে মুশকান। এইদিকে আমার ছোট ছেলের বউ সন্তান প্রাপ্তির লোভে আরো বেশি নির্মম আর ভয়ংকর হয়ে উঠে। সে ডাকিনীকে তুষ্ট করতে একেক দিন একেকরকম কাজ করতো। কিন্তু ডাকিনী দেবী কিছুতেই তার প্রতি তুষ্ট হতো না। অবশেষে সে সিদ্ধান্ত নেয় যে, সে ডাকিনী দেবীর মুর্তির সামনে একটা তাজা প্রাণের বলি দিবে! এরপর সে বলি দেওয়ার জন্য অনেকগুলো মানুষকে খুজতে থাকে। কিন্তু সে কৌশলে কাউকেই এই বাড়িতে নিয়ে আসতে পারছিলো না। এরপর সিদ্ধান্ত নেয় যে সে আর কাউকে না, এই পরিবারেরই বড় ছেলে মানে তার বাসুরকে বলি দিবে। কারণ সে মানসিক ভাবে অসুস্হ্য ছিলো। তাকে খুন করলে মানুষ তাকে একটু কমই খুঁজবে! আমার বড় ছেলে বেশির ভাগ রাতেই বাড়ির উঠানে ঘুমিয়ে পড়তো। এরপরে এক আমাবস্যা রাতে আমার ছোট ছেলের বউ আমার বড় ছেলেকে বোকা বানিয়ে দুতালার ঘরটাতে নিয়ে যায়।
এরপর তাকে বশে করে ফেলে তন্ত্র বলে এবং এরপর তাকে বলি দিয়ে দেয় দেবীর সামনে। একটা ধারালো ছুরি সোজা চালিয়ে দেয় আমার বড় ছেলের গলায়। এরপর তার রক্ত গিয়ে পড়ে ডাকিনী মুর্তির শরীরে।পুজো তখনো সম্পন্ন হয়নি। এমন সময় আমার বড় ছেলের বউ হঠাৎ কোথা থেকে শব্দ পেয়ে সেই দুতালার ঘরে চলে যায়। জুলেখাকে হঠাৎ দেখে আমার ছোট ছেলের বউ ভয়ে আৎকে উঠে। নিজের স্বামীকে এই রক্তাক্ত অবস্হায় দেখে জুলেখা আরো বেশি ভয় পেয়ে যায়। সে সাথে সাথে কাঁদতে কাঁদতে চিৎকার করে বাড়ির সবাইকে ডাকতে থাকে! মধ্যরাত বাড়ির সবাই তখন ঘুমাচ্ছিলো। তাই ডাক শুনে আসতে সবার কিছুটা দেরী হলো। আমার ছোট ছেলের বউ শয়তানী শক্তির পুজারী ছিলো। তাই সে অনেক চালাক এবং দুষ্টুবুদ্ধীর অধিকারী ছিলো। সে জানতো যে এখন যদি সবাই জেনে যায় যে সে ডাকিনী পুজারী। তাহলে সবাই মিলে তাকে মৃত্যুদন্ড দিবে। কিন্তু সে কিছুতেই এতো দ্রুত ধরা পড়তে চায় না। জুলেখা যখন তার স্বামীর লাশটা ধরে প্রায় পাগল হয়ে কাঁদছিলো তখন ছোট বউ এর মাথায় একটা দুষ্টু বুদ্ধী এলো। সে ভাবলো জুলেখা সহজ সরল বোকা মেয়ে। তাহলে তাকে ফাসিয়ে দিলে কেমন হয়!! এরপর জুলেখা যখন তার স্বামীকে বাঁচিয়ে রাখতে ব্যাস্ত তখন বাড়ির ছোট বউ দ্রুত দৌড়ে দুতালা থেকে উঠানে নেমে আসে!
সে পুরো একটা গল্প নিজের মতো করে সাজায়! সে জুলেখাকে পুরোপুরি ফাসিয়ে দেয়। নিজে যে ডাকিনী পুজারী এটা না বলে জুলেখাকে সবার সামনে ডাকিনী পুজারী হিসাবে উপস্হাপন করে। সবাইকে এটা বিশ্বাস করাতে বাধ্য করে যে জুলেখা ডাকিনী দেবীকে তুষ্ট করার জন্য নিজের স্বামীকে বলি দিয়েছে। আর জুলেখার গর্ভে যে সন্তান এটা এই বাড়ির বড় ছেলের সন্তান না। এটা ডাকিনী দেবীর দেওয়া সন্তান। বাড়ির ছোট বউয়ের ডাকে সবাই উঠানে আসলো। এরপর ছোট বউ বানিয়ে বানিয়ে জুলেখা সম্পর্কে ঐ মিথ্যা কথাগুলোই বললো। বাড়ির সবাই দুতালার ঘরে ডাকিনী মুর্তির সামনে জুলেখাকে তার স্বামীর রক্তাক্ত লাশের সাথে বসে থাকতে দেখে বাড়ির ছোট বউয়ের কথাটা বিশ্বাস করতে বাধ্য হয় । তারা জুলেখাকে ধরে টানতে টানতে বাড়ির উঠানে নিয়ে আসে। জুলেখা সত্য কথাটা বলতে চায় যে, সে এই খুনটা করেনি। খুনটা করেছিলো এই বাড়ির ছোট বউ। সেই ডাকিনী পুজারী। কিন্তু কেউ তার কথা শুনেনি। তারা একের পর এক জুলেখাকে আঘাত করে যাচ্ছিলো। জুলেখা চিৎকার করে বলছিলো “আমাকে এইভাবে মারবেন না! আমার পেটে আমার মেয়ে রয়েছে। সে কষ্ট পাচ্ছে। তার অস্তীত্ব নষ্ট হয়ে যাবে। হে ইশ্বর! আমায় সাহায্য করো।” কিন্তু কেউ তার কথা শুনেনি। । সবাই তাকে ডাইনী নামে আখ্যায়িত করে। এইদিকে এই বড় বিপদ থেকে বেঁচে নিজের চোখের কাটাকে একটা উপর্যুক্ত শাস্তি দিতে পেরে একটা পৈশাচিক হাসি হাসলো বাড়ির ছোট বউ। আমার স্বামী আর ছোটছেলে ভালো করেই চিনতো এবং জানতো জুলেখাকে। তারা জানতো যে এ কাজ মোটেও জুলেখা করতে পারে না। সে ইশ্বরভক্ত এক মানুষ। এছাড়া সে তার স্বামীকেও অনেক ভালোবাসতো। আমার স্বামী আর ছোট ছেলে সব কিছু বুঝেও যেনো না বোঝার অভিনয় করলো। কারণ তারা এরকম একটা সুযোগই খুচ্ছিলো জুলেখার প্রতি তাদের ক্ষোভ আর লালসা মেটাতে। আগেই বলেছিলাম যে জুলেখা দেখতে অনেক সুন্দরী ছিলো। তার শরীরের প্রতি আমার বৃদ্ধ স্বামী আর ছোট ছেলের লালসা ছিলো অনেক আগে থেকেই। তারা যেনো বাড়ির ছোট বউয়ের ষড়যন্ত্রে এর একটা সুবর্ন সুযোগ পেয়ে গেলো!! তারা জানে এখন এটা প্রমাণিত হয়ে যাবে যে জুলেখা একটা ডাইনী। সে ডাকিনী পুজা করে। তাই তার কোন অভিযোগ আর সমাজ শুনবে না। তাই শাস্তির নামে জুলেখাকে তারা একটা ঘরে নিয়ে গেলো! এরপর বাপ-ছেলে মিলে জুলেখার শরীর ভোগ করতে লাগে। জুলেখার আর্তনাদের শব্দে সেদিন যেনো এই বাড়ির ধুলাকণাগুলোও প্রতিবাদ করছিলো। শুধু এই আর্তনাদ পৌছেনি এই নরপশুগুলোর কানে। দেহ ভোগের পর জুলেখাকে ডাইনী প্রমাণিত করতে তারা যেনো মানুষের সামনে একটা নাটকের মঞ্চ সাজালো। সেই সময়ে এই এলাকায় কোন আইন-আদালত ছিলো না। সমাজপতিরা যা বলতো তাই করা হতো। তাই তারা সমাজের গন্যমান্য লোক এবং সমাজে যারা বিচার শালিস করেন তাদের এই বাড়িতে ডাকলেন। এরপর তাদের সামনে সেই ডাকিনী মুর্তি এবং রক্তে মাখা আমার বড় ছেলের লাশ প্রদর্শন করে। সমাজের লোকেরা কেউ জুলেখার কথা শুনেনি। সবাই তাকে ডাইনী বলতে থাকে এবং কোন সাক্ষী ছাড়াই এটা প্রমাণিত হয় যে জুলেখা একজন ডাইনী এবং তার একমাত্র শাস্তি এখন মৃত্যুদন্ড। জুলেখা তাদের সামনে হাত জোড় করে নিজের জীবন ভিক্ষা চায়। সে বলে তার কোনো দোষ নেই। তাও যদি তারা শাস্তি দিতে চায় তাহলে আর একটা মাস পর যেনো তার মৃত্যুদন্ড দেয়। তার সন্তান যাতে পৃথিবীর আলোটা দেখতে পারে! কিন্তু সেই মানুষরুপী জানোয়ার গুলো তার আর্তনাদ শুনেনি। অন্তরসত্তা থাকা অবস্হাতেই তার মৃত্যুদন্ডের রায় দেয় তারা! কিন্তু সেই সমাজের বিচারক গুলোও কম খারাপ ছিলো না। তাদের চোখও এড়ায়নি জুলেখার শরীরের সৌন্দর্যতাটা। তারাও জুলেখাকে বিচারের নামে তার দেহ ভোগে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে। এরপর জুলেখাকে বাড়ির সেই দুতালার ডাকিনী মুর্তির ঘরটাতে ৪ দিন তালা দিয়ে আটকে রাখা হয়। এই চারদিনে তাকে খাবারতো দুরের কথা এক ফোটা পানিও দেওয়া হয় না।
সেই ঘর থেকে ৪ দিন পর জুলেখাকে বের করা হয় এবং চাবুক দ্বারা আঘাত করতে করতে তাকে হত্যা করা হয়! জুলেখা মৃত্যুর আগে এই বাড়ির সবাইকে অভিশাপ দিয়ে গিয়েছিলো। সে বলেছিলো এক জনকেও সে ছাড়বে না। আবার সে ফিরে আসবে এই বাড়িতে। তার মেয়ে তাকে ফিরিয়ে আনবে। সে তার মেয়ের ভেতরেই বেঁচে থাকবে। এরপরেই জুলেখা আর চাবুকের আঘাত সহ্য করতে না পেরে মারা যায়। অবাক করার বিষয় ছিলো সে মারা যাওয়ার পরে তার গর্ব থেকে বেরিয়ে আসে একটা ফুটফুটে বাচ্চা মেয়ে। কিছু লোক বলেছিলো এই মেয়েটা হয়তো ডাকিনী কন্যা। একে এর মায়ের সাথে কবর দিয়ে দাও। কিন্তু বাচ্চা মেয়েটার চোখে এক ধরণের অদ্ভুত মায়া ছিলো তাই সেই বাচ্চা মেয়েটাকে কবর দিতে পারেনি লোকগুলো। সমাজপতিরা সেই বাচ্চা মেয়েটার দায়িত্ব এই পরিবারের উপরেই চাপিয়ে দেয়। এরপর থেকে সেই বাচ্চা মেয়েটার নাম দেওয়া হয় মুশকান। আর অনিচ্ছাসত্যেও সবাই মুশকানের দেখাশোনা করে বড় করতে থাকে। কারণ এই পরিবারে আর কোন উত্তরাধীকার জন্মাবে না। জুলেখা এই অভিশাপটাই যাওয়ার আগে দিয়ে গিয়েছিলো! এরপর থেকে এই পরিবারের ধ্বংস শুরু হয়। আমাদের সম্পদ ধীরে ধীরে কমতে থাকে! আমার মনে হয় মুশকানের মাধ্যমে জুলেখা আবার ফিরে এসেছে। সে এবার কাউকে ছাড়বে না। এই গ্রামের বাকি পাপীদেরো খুন করে ফেলবে!!”
.
.
মহিলাটির মুখ থেকে এই কথাগুলো শুনে আমি পুরো নির্বাক হয়ে গেলাম! এই যুগেও বুঝি মানুষেরা এতোটা নির্মম আর নিষ্ঠুর হয়! নিজের বাবার মতো শশুর,নিজের ভাইয়ের মতো দেবরো এতোটা নিষ্ঠুরতা আর পশুত্বতা দেখাতে পারে!! জুলেখার কষ্টের কথা মনে হতেই চোখের এক কোণে পানি এসে পড়লো । কিন্তু বৃদ্ধা মহিলাটির কথা বলার ধরণটা আমার কাছে বেশ অদ্ভুত লাগে। মহিলাটি দৃশ্যগুলোর বর্ননা এমনভাবে করেছিলো যে মনে হচ্ছিলো সে দৃশ্যগুলো নিজের চোখের সামনে দেখেছে! তাহলে সে এর প্রতিবাদ করলো না কেনো?! এরপর আমি বৃদ্ধা মহিলাটিকে প্রশ্ন করি:
-আচ্ছা! যাকে সেদিন খুন করা হয়েছিলো। সেতো আপনার নিজের আপন ছেলে ছিলো?! আর জুলেখাতো আপনার ছেলের বউ ছিলো। আপনার চোখের সামনে এতোকিছু ঘটে গিয়েছিলো তখন আপনি বিন্দুমাত্রও প্রতিবাদ করেননি কেনো?
-এই ঘটনাগুলি আমি নিজের চোখে দেখিনি। এই ঘটনাগুলো যখন এই বাড়িতে ঘটে তখন আমি অসুস্হ অর্থাৎ পেরালাইসড অবস্হায় ছিলাম। (বৃদ্ধা)
-তাহলে এতো সুস্পষ্টভাবে আপনি ঘটনাগুলো বর্ননা করলেন কিভাবে?!
-আমাকে এইসব কিছু মুশকান বলেছে!
-মুশকান?!! কোন মুশকান?! সেই বাচ্চা মেয়েটা?! আপনি আমার সাথে মজা করছেন?! সে এসব জানবে কিভাবে?!
-সে জানে। সে সবকিছু জানে।
জুলেখা আগে প্রতি রাতে তার স্বপ্নে আসতো। জুলেখাই তাকে সব কথা খুলে বলেছে। আর মুশকান সেই কথাগুলো আমাকে বলেছে। মুশকানই আমাকে প্যারালাইসড জীবন থেকে উদ্ধার করেছে।
.
মহিলাটির এই কথাটা শুনে আমি আরো অবাক হয়ে গেলাম। মুশকানতো বাচ্চা মেয়ে! সে এতোসব কথা জানলো কিভাবে?! আর সে যদি সত্যিই এইসব কথা জেনে থাকে তাহলেতো তার মনেও এই পরিবার আর সমাজের জন্য অনেক ক্ষোভ রয়েছে!!
.
এরপরেই আমি সেই বৃদ্ধার ঘর থেকে বেরিয়ে আসি। আমার মনে হচ্ছিলো যে আমি জুলেখাকে চিনি! অনেক কাছে থেকে চিনি! জুলেখা আর কেউ না! আমার ইয়েজেরিনই জুলেখা! সে ছদ্ম চেহারা ধারণ করে আমার সাহায্য নিয়ে আবার এই বাড়িতে ফিরে এসেছে!! আমি জানি ইয়েজেরিন এখন দুতালায় রয়েছে। সাথে মুশকানো! তাদের কাছ থেকে আমার অনেক কিছু জানার আছে! আমি এখনি দু’তালায় যাবো! যেই দুতালায় যাবো। হঠাৎ বাড়ির দরজার সামনে সাদা কাপড় পরা একটা মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম। প্রথমে দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম এবং চিন্তে পারিনি। পরে ভালো করে চেহারা দেখে চিনলাম। আরে!এটাতো সেই বনের সাধু বাবাটা। সে এখন এখানে কেনো এসেছে?! তাহলে কি সে ইয়েজেরিনকে এই দুনিয়া থেকে ধ্বংস করার উপায় জানতে পেরেছে!! আর এখন আমায় সাহায্য করতে এসেছে!!. আমি দ্রুত দৌড়ে তার কাছে গেলাম!!
চলবে