জ্বীন রহস্য(love story)❤,Part 14,15

জ্বীন রহস্য(love story)❤,Part 14,15
Writer Maishara Jahan
Part 14

মুগ্ধ আমার কোলে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে আছে, আমি ওর চুলে হাত রেখে ওর দিকে তাকিয়ে আছি।

অনেক খন হয়ে গেছে আমরা এভাবেই বসে আছি,হঠাৎ করে মুগ্ধ বলে উঠে,,,

,,,,,,, চলে যাও বাসায়, এখানে তোমার একা থাকা ঠিক হবে না।

,,,,,,,,, কেনো তুমি তো আছো,, তুমি আমার পাশে থাকলে আমার কোনো চিন্তা নেয়।

,,,,,,,,,, এতো বিশ্বাস কারো উপর করা ঠিক না।

,,,,,,,,, কারো উপর না শুধু তোমার উপর বুঝলে।

,,,,,,,, হুম,,, যাও এখন।

,,,,,,, তোমার কি মন খারাপ,, কিছু হয়েছে।

,,,,,,,, না কিছু হয়নি,,, যাও গিয়ে ঘুমাও

,,,,,, তুমি দিয়ে আসবে না।

,,,,,, আসলে আমার একটু কাজ আছে,, তুমি যাও।

মুগ্ধ আমার কপালে কিস করে চলে যেতে বললো, আমিও চলে আসলাম।

এসে বিছানায় শুতেই ঘুমের রাজ্যে চলে গেলাম।

সকালে উঠে দেখি ফারা রোহান রিয়াদ এসেছে। আমি নিচে যেতেই সবাই আমাকে জরিয়ে ধরলো।

মা,,,,,, কি ব্যাপার সবাই এতো ইমোশনাল হচ্ছো কেনো।

রিয়াদ,,,,,,, এতো দিন পড়ে দেখলাম তো তাই।

আমি রিয়াদকে একটা চিমটি দিলাম।

,,,, আআআ

মা,,,,,, কি হলো।

,,,,, কিছু না আন্টি মশা কামর দিছে মনে হয়।

মা,,,,, ওও আর অনেক দিন পড়ে দেখলা মানে ও তো প্রতিদিন কলেজে যায়।

যীন্নাত,,,,,,, না মা আসলে রিয়াদ এতো দিন অসুস্থ ছিলো তো তাই ও এতো দিন কলেজে যায় নি।

পিছন থেকে রিয়াদের বাবা বলে উঠে।

,,,,,, কি ওতো প্রতিদিন ঘর থেকে বলে বের হয় কলেজে যাওয়ার নাম করে। কিরে রিয়াদ তুই কই যাস প্রতিদিন। 🤬

যীন্নাত,,,,,,,,, (খায়ছে) আংকেল আপনি এখানে।

,,,,,, ওদের আমিই এখানে গাড়ি করে নিয়ে এসেছি তাই ভাবলাম তোমার মা বাবার সাথে দেখা করে যায়। কিন্তু এখানে এসেতো অন্য কিছুই শুনছি।

রিয়াদ,,,,,, বাবা

,,,, চুপ তুই আজ বাড়ি ফির তোর একদিন কি আমার একদিন৷

,,,,,,,,, বাবা আমি কি করলাম

,,,,, কি করলি মানে,,, প্রতিদিন কই যাস।

,,,,,, বাবা আমি কলেজে যায়। যীন্নাত যায় না।

মা,,,,,, কিয়য়য়য়

যীন্নাত,,,,,,, না মা ও মিথ্যা কথা বলছে, আমি প্রতি দিন কলেজে যায়। ও যায় না আমরা কতো বলি কলেজে আসতে কিন্তু শুনেই না। গার্লফ্রেন্ডের সাথে ঘুরতে যায়।

রিয়াদ,,,,,,, তবা তবা কি বলে,, মারবি নাকি আজকে আমারে,, না বাবা বিশ্বাস করো।

যীন্নাত,,,,,,,, আমার কথা বিশ্বাস না হলে ফারা আর রোহানকে জিজ্ঞেস করো,, কিরে ঠিক বলছি না আমি।

ওদের ইশারা করে বললাম,,,

ফারা,,,,,, ঠিক বলছে যীন্নাত, রিয়াদ বেশি কলেজে আসে না।

রোহান,,,,,,, হ্যাঁ আংকেল ওর তো দেখায় পাওয়া যায় না। কি যানি কোথায় কোথায় যায় কাদের সাথে মিশে কি করে। ওর ব্যবহার ও চেন্স হয়ে গেছে।

রিয়াদ,,,,,,,, আল্লাহ গো কি কই।

বাবা,,,,,,, আজ তুই ঘরে আয়,,,, আর আমার টাকা দিয়ে তুই এসব করোস তোর ১ মাসের হাত খরচ বন্ধ,,, তোর শরীরে হাড় কয়টা আছে আজ আমি সব গুনমু।

রিয়াদ,,,,,,, গুনা লাগবো না সবার শরীরে ২০৬ টা থাকে।

বাবা,,,,,, দেখমু তোর বেশি আছে নাকি কম, আয় তুই।

বলেই হন হন করে চলে গেলো।

,,,,,, কসম লাগে আমি কিছু করি নাই বিশ্বাস করো।

রিয়াদ চুপচাপ দাড়িয়ে আছে এতো নিরাবতা আমার সন্দেহ হচ্ছে। হঠাৎ নিরাবতা কাটিয়ে রোহান বললো,,

,,,,, ভাই তুই ঠি,,,,,

,,,,,, সালা

বলেই আমাদের দৌড়াতে থাকে আমরা দৌড়ে আমার রুমি চলে আসি।আর কিছু পাইছে না তাই ঝাড়ু দিয়ে মারতাছে আর বকতাছে,,,

,,,,, সালা কুত্তা, সবাই মিলে আমার ১৩ টা বাঝিয়ে দিছে, ঘরে গিয়া মাইর কি তোর বাপে খায়বো। ১মাসে কোনো টাকা দিবো না আমার এতো গুলা গার্লফ্রেন্ড না খায়া মইরা যাইবো, ওদের খাওন কি তোরা দিবি। আমার ঘরে যাও একটু ইজ্জত আছিলো তাও তোরা কাইরা নিলি,,, তোরা দোস নামে কলঙ্ক।

, ফারা,,,,,,, কুত্তা আর মারবি না ব্যাথা লাগছে।

রোহান,,,,,,, ঝাড়ু থো কইতাছি

,,,,,,,, তরেতো মারতে মারতে রোহান ভর্তা বানামু,, আমার কবরে যাওয়ার রাস্তা তো অনেক সুন্দর বানাইছো।

যীন্নাত,,,,,,,,,, ভাই না ভালো ঝাড়ু থো।

রিয়াদ,,,,,,, তোরে কি করা যায় ক আমারে সব নষ্টের গোড়া তো তুই।

যীন্নাত,,,,,, কান ধরতাছি থাম ভাই থাম।

রিয়াদ,,,,,,,, ঠিক আছে মাফ করলাম।

ওদের সাথে কতো খন কথা বলে রেডি হয়ে নিলাম ওদের সাথে এক সাথে বের হবো না হলে মা সন্দেহ করবে।

মা,,,,,,, খেতে আয় সবাই।

আমরা সবাই খাবার খাচ্ছি,,,

মা,,,,,,,, রিয়াদ বাবা ঠিক মতো পড়াশোনা করো তোমার বাবা মার কতো স্বপ্ন তোমায় নিয়ে।

মা কতো খন জ্ঞান দিলো রিয়াদকে, আর রিয়াদ বার বার আমাদের দিকে তাকাচ্ছিলো,, ভাবছিলো আমরা কেও কিছু বলবো কিন্তু আমারা কিছুই বলিনি।

খাওয়া দাওয়া শেষ করে বেরিয়ে আসলাম।

রিয়াদ,,,,,, তোরা অনেক খারাপ।

যীন্নাত,,,,,,, আহারে,,,,, যায় হোক আমাকে এখন যেতে হবে,, তোরা কি করবি।

ফারা,,,,,,, কি আর করবো কলেজে যাবো।

রিয়াদ,,,,,,,, আমি যাতে বাড়ি ফিরতে না পারি তার পুরা ব্যবস্থা করছোস। আমি বাসায় যাবো না।

যীন্নাত,,,,,,, তো কি করবি

রিয়াদ,,,,,,, রোহান ভাই কয়েকদিন আমি তোর বাসায় মেহমান ঠিক আছে।

রোহান,,,,,,,,, ওকে,, বন্ধুর জন্য যে কোনো কিছু ।

রিয়াদ,,,,,,, চুপ থাক ফকিন্নি, তোর জন্যই হয়ছে সব কিছু।

যীন্নাত,,,,,,,,, তোরা দূরে গিয়া ঝগড়া কর আমি যাচ্ছি।

রিয়াদ,,,,,, তুই ঝামেলা বাঝিয়ে এখন তো চলেই যাবি।

যীন্নাত,,,,,,, হিহিহিহি,, বাই বাই

বেশি কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ কেটে পড়লাম। জ্বীন রাজ্যে পৌঁছে আয়োজন দেখে অবাক হয়ে যায়।

এতো সুন্দর করে সাজানো হয়েছে যে বলার মতো না। সবাই অনেক খুশি,, কিন্তু কারনটা কি। সবাইকে দেখছি শুধু মুগ্ধকে ছাড়া।

অনেক খুঁজাখুঁজির পর দেখলাম মুগ্ধ একটা বেঞ্চে মাথা নিচু করে বসে আছে। আমি ওর কাছে গেলাম।

,,,,,, মুগ্ধ এখানে কি করছো।

,,,,,,, কে ও তুমি,, না এমনি বসে ছিলাম।

,,,,, কি হয়েছে, আজ আমাকে নিতে গেলে না যে।

,,,,,,, না এমনি,, এখন তো তুমি একাই আসতে পারবে।

যীন্নাত,,,,,,,,, আচ্ছা এতো সুন্দর করে সব কিছু কেনো সাজানো হচ্ছে।

,,,,,, কারন কাল তোমার সিংহাসনে বসার তারিখ ঠিক করা হয়েছে আর আজ তোমার শক্তি পূণতা পাবে।

,,,,, ওওও ( এতে তো মুগ্ধের সব থেকে বেশি খুশি হওয়ার কথা কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে না )
মুগ্ধ তোমার কি কিছু হয়েছে,তুমি খুশি না।

,,,,, আমার আবার কি হবে, আমি অনেক খুশি। চলো ভিতরে চলো।

,,,,,, হুমম (মুগ্ধকে মনে হচ্ছে খুশি না)

আমি ভিতরে যায় মহলে সবাই অনেক ব্যস্থ সবাইকে খুশি মনে হচ্ছে, কিন্তু কেনো যানি আমি খুশি হতে পারছি না।

আচ্ছা এতো দিন হয়ে গেলো কালের কোনো খবর নেয় কেনো। আগে তো এতো হামলা করতো হঠাৎ এতো ভালো হয়ে গেলো কেনো।

দুররর এখন এই সব না ভাবলেই হয়। আমি এক কাজ করি চারদিকটা একবার ঘুরি।

আমি মনের আনন্দে ঘুরছি কিন্তু আমার চারপাশের লোকগুলো একটু অদ্ভুত। এরা এখানে কাজ করতে এসেছে নাকি আমাকে দেখতে।

আমি খেয়াল করেছি যেদিন থেকে আমি এখানে এসেছি ঐ দিন থেকে মহলের কাজের লোক গুলো অদ্ভুত ভাবে আমার দিকে তাকায়।

মনে হয় কাজের থেকে কে কি করলো তার দিকে বেশি মন তাদের।

আমি এই সব এড়িয়ে হাঁটছি, কাল থেকে সময় পাবো নাকি কে জানে নতুন দায়িত্ব পালন করতে হবে কাল থেকে।

হাঁটতে হাঁটতে দেখি একটা সুন্দর পাখি নিচে পড়ে আছে, মনে হয় ব্যাথা পেয়েছে ।

আমি দৌড়ে যায়, পাখিটাকে নিজের হাতে নিয়ে একটা গাছের নিচে বসে দেখতে লাগলাম কোথায় ব্যাথা পেয়েছে।

দেখি পাখিটার ডানায় ব্যাথা পেয়েছে, আমি হাত বুলিয়ে আমার শক্তি দিয়ে ভালো করে দিলাম।

কিছু খন পর পাখিটা চোখ খুলে উড়তে থাকে। তারপর আমার কাছে আসে।

পাখি,,,,,,, রাজ্যর নতুন রানীকে আমার সালাম।

,,,,,, পাখি কথা বলছে।

,,,,, এটা মায়াবী জায়গা এখানে যে কোনো কিছু হতে পারে এতে এতো অবাক হবেন না।

,,,,,, হুমম,,, তোমার নাম কি

,,,,,,,, মৃগী

,,,,, অদ্ভুত নাম।

,,,,,,, জানি,,,, কিন্তু আমার এখন যেতে হবে,, তবে তুমি যেহেতু আমাকে সাহায্য করেছো, তাই একটা কথা বলি৷

,,,,,, বলো

,,,,,,, পরীদের সব শক্তি তার ডানায় থাকে, যেহেতু কাল তুমি রানী হবে তাই আজকের দিনটা তোমার জন্য খুব একটা ভালো না। আর যায় হোক সহজে তোমার ডানা বার করবে না। তোমার ডানার কিছু হলে তোমার মৃত্যুও হতে পারে মনে রেখো।

বলে উড়ে গেলো।

,,,,, আরে শুনো।

কি বললো আজকের দিনটি আমার জন্য ভালো না। এখন কি করবো। দুরর এতো চিন্তা করে লাভ নেয় যেই আসুক না কেনো আমি দেখে নিবো, তাছাড়া মুগ্ধতো আছেই।

ঐ গাছের নিচেই বসে আছি, কেনো জানি ভালো লাগছে না, তাই উঠে চলে গেলাম।

মহলের সামনে আসতেই মুগ্ধ চিন্তিত হয়ে বললো,,,

,,,,, কোথায় গেছিলে।

,,,,,, এখানে আশেপাশে ছিলাম।
মুগ্ধকে কথাটা বলতে গিয়েও বলেনি, চিন্তা করবে তাই।

,,,,,,,,, কতো চিন্তা হচ্ছিল আমার জানো, না বলে কোথাও যাবে না।

,,,,,, ঠিক আছে, এবার চলো।

ভিতরে আসতেই কাল কি হবে কিভাবে হবে সব বলা হচ্ছে। আমি এগুলো শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়েছি, চোখ খুলে দেখি আমি একটা নিরিবিলি জায়গা, সামনে সমুদ্র, আর আমি বালিতে সুন্দর করে বিছানা করা সেখানে শুয়ে আছি।

সামনে তাকিয়ে দেখি কেও বসে আছে দূরে, সূর্য ডুববে ডুববে ভাব। আমি দৌড়ে গিয়ে পিছন থেকে জরিয়ে ধরি।

কারন আমি জানি এটা মুগ্ধ ছাড়া আর কেও না।

,,,,,, উঠে গেছো তুমি।

,,,,, হুমম,,,,, আমাকে এখানে কেনো আনলে।

,,,,,,, তোমার মনটা ভালো ছিলো না তাই ভালো করতে আনলাম। আর আমি জানি সমুদ্র তোমার অনেক ভালো লাগে।

,,,,,,, হুমম thank you

আমরা দুজনে বসে সূর্য ডোবা দেখি, আমি মুগ্ধের হাত ধরে তার কাঁধে মাথা রেখে বসে আছি। কি যে শান্তি লাগছে বুঝাতে পারবো না।

,,,,, যীনু।

,,,,,,,,, হুমম

,,,,,, আমাকে ভালোবাসো তো।

,,,,,,,, নিজের থেকেও বেশি

,,,,,, যাই হোক না কেনো শুধু এটা মনে রাখবে যে আমি তোমাকে নিজের থেকেও অনেক বেশি ভালোবাসি। পিল্জ আমাকে ছেড়ে যেও না।

,,,,,,,,, এভাবে বলছো কেনো আমি তোমাকে ছেড়ে যাবো কেনো।

,,,,, আচ্ছা বাদ দাও এসব কথা কিছু খাবে চলো।

,,,,,, এখানে

,,,,, হুমম ঐ দেখো

পিছনে তাকিয়ে দেখি একটা টেবিলে খাবার রাখা উপরে সাদা কাপড় দিয়ে সাদ বানানো।

আমি আগে দৌড়ে যায় কারন অনেক ক্ষুধা লেগেছে দুপুরে কিছু খায় নি।

বেশ ভালো ভালো খাবার,,, আমি খেতে বসে পড়ি।

,,,,, তুমিও আসো খাও।

,,,,,,, না আমি খাবো না,, আমার খিধে নেয়, তুমি খাও।

মুগ্ধের মুখে হাসি কিন্তু চোখ অন্য কিছু বলছে।

,,,,, তুমি কি কিছু লুকাচ্ছো।

,,,,, কি লুকাবো খাবারের সময় এতো কথা বলে না খাও চুপচাপ।

আমি চুপচাপ খেয়ে নিলাম।
খেয়ে বসে আছি।

যীন্নাত,,,,,, মুগ্ধ আমার বাসায় যেতে হবে আজ এমনি দেরি হয়ে গেছে।

,,,,,,, আমার কাছে এসে বসো, একটু পড়ে যাবে।

,,,,,কিন্তু

,,,, আসোনা।

আমি মুগ্ধের পাশে গিয়ে বসি।

মুগ্ধ,,,,,,, যীনু

,,,,হুমমম

,,,, তোমার ডানা দুটো বের করোতো

,,,,,,, কেনো।

,,,,,,, ডানা দুটোই তুমি আরো বেশি সুন্দর লাগো,, তুমায় আমার এভাবে দেখতে ইচ্ছে করছে।

,,,,,,, কিন্তু

,,,,,,, আমার এই ইচ্ছে পূরণ করবে না।

,,,,, ( আমি তো মুগ্ধের সাথেই আছি তো এখন আমার কিসের ভয় )

ঠিক আছে, আমি আমার ডানা মেলায়।

মুগ্ধ কিছু খন আমার দিকে তাকিয়ে থাকে ওর চোখ যেনো কিছু বলতে চাইছে, আমার ডানায় হাত বুলাচ্ছে।

,,,, এখন ডানা ভিতরে নিয়।

,,,,, থাক না কিছু খন। আমার কাঁধে মাথা রাখো।

,,,,,,,, আমি মাথা রাখি, কিছু খন পর আমার যেনো কেমন লাগছে, রাজ্যের ঘুম চলে আসে আমার চোখে। আমি ঘুমিয়ে পড়ি।

অনেক খন পর ঘুম ভাঙে,,, আমি খুব কষ্টে চোখ খুলি, আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে, ব্যাথায় উঠতে পারছি না। অনেক ব্যাথা করছে কোনো মতে উঠে বসি, ভালো করে তাকিয়ে দেখি আমার শরীর রক্তে মাখানো।

আমার পাশে চোখ যেতেই মাথা ঘুরে গেলো,, আমার দুটো ডানা কাটা অবস্থায় পড়ে রয়েছে, আমি চিৎকার করে মুগ্ধকে ডাকছি কিন্তু কেও নেয়।

আমি উঠে দাঁড়াতে পারছি, যন্ত্রণায় আমার শরীর কাঁপছে। আমার কোনো শক্তি কাজ করছে, ডানার সাথে সাথে আমার শক্তি ও চলে গেছে।

চলবে,,,,,,,

জ্বীন রহস্য (love story) ❤
Writer Maishara Jahan
Part 15

আমি উঠে দাঁড়াতে পারছি না,, যন্ত্রণায় আমার শরীর কাঁপছে। আমার কোনো শক্তি কাজ করছে না। মনে হয় ডানার সাথে সাথে আমার শক্তিও চলে গেছে।

চারদিকে অন্ধকার বেশি দেখা যাচ্ছে না, আমি উঠে দাঁড়াতে পারছি না। আমার বিন্দু মাত্র শক্তি নেয় নড়াচড়া করার মতো। মুগ্ধকে এতো ডাকছি কিন্তু কোনো খবর নেয়।

ওর কিছু হলো নাতো, কিন্তু আমার সাথে এটা কিভাবে হলো, আমি কোনো কিছু বুঝতে পেলাম না কেনো।

ঐ খাবার গুলো খাওয়ার পর আমার সাথে এমন হয়েছে, তার মানে খাবারে কিছু ছিলো। কিন্তু খাবারে কিছু থাকলেও সেটা তো শুধু আমি খেয়েছি মুগ্ধ তো খায়নি।

আমি অজ্ঞান হয়ে গেলেও মুগ্ধের তো জ্ঞান থাকার কথা। তার মানে কি মুগ্ধ আমার সাথে এমন করেছে।

না না এ আমি কি ভাবছি মুগ্ধ এমন করতেই পারে না। হয়তো ও আমাকে বাচানোর চেষ্টা করেছে কিন্তু পারেনি। মুগ্ধের কিছু হয়নি তো।

অজরে কান্না আসছে, আমার কারনে হয়েছে সব কিছু। কান্না করতে করতে আবার অজ্ঞান হয়ে যায়।

সকালে চোখ খুলে, ব্যাথা এখনো আছে কিন্তু এবার একটু নড়াচড়া করতে পারছি।

কোনো মতে পাথর ধরে উঠে দাঁড়ালাম। হাঁটতে পারছি না, বার বার পড়ে যাচ্ছি, মুগ্ধ মুগ্ধ করে ডাকছি। জোরে ডাকার শক্তি নেয় আমার।

আশেপাশে একটু দেখার পর মুগ্ধের ছুরি পেলাম, আমি তাড়াতাড়ি ছুরি হাতে নিলাম এই আশায় হয়তো এবার মুগ্ধকেও পেয়ে যাবো।

কিন্তু ছুরিতে রক্ত ছিলো আর আমার কিছু ছোট পাখ ও ছিলো। আমি নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছি না। আমি নিচে বসে পড়লাম।

তার মানে আমার ডানা মুগ্ধ কেটেছে কারন মুগ্ধের ছুরি ও ছাড়া আর কেও চালাতে পারবে না। এক মূহুর্তে সব উল্ট পাল্ট হয়ে গেলো।

আমি কিছু অনুভব করতে পারছি না। কাকে এতো বিশ্বাস করলাম আমি, কাকে ভালো বাসলাম। কেনো করলো মুগ্ধ এটা। আমার রানী হওয়াতে কি ও খুশি ছিলো না।

শুধু মাত্র রাজা হওয়ার জন্য এটা করেছে। আরে আমাকে বললে আমি হাসতে হাসতে দিয়ে দিতাম।

চিৎকার করে কাঁদছি, আমি কখনো ক্ষমা করবো না তোমায়, এর শাস্তি তুমি অবশ্যই পাবে। কোনো দিন ক্ষমা করবো না, কোনো দিন না।

আমার দূর্বলতার সুযোগ নিয়েছো, তোমাকে আমি ছাড়বো না। যতটা ভালো তোমায় বাসতাম তার থেকে অনেক বেশি ঘৃণা করি৷

আমি ঐখানেই পড়ে থাকি, কাঁদতে থাকি।

আমার ডানা কাটা গেছে আমার তো বেঁচে থাকার কথা না, তাহলে আমি বেঁচে আছি কিভাবে। হয়তো প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য।

কিন্তু আমি আছি কোথায়, আর যাবোই বা কিভাবে। যে করেই হোক আমাকে এখান থেকে যেতেই হবে।

কিছু খন পর কিছু লোক দেখলাম ছোট জাহাজ নিয়ে আসছে। অনেক কষ্টে ডাকলাম। মনে হয়না এতো দূরে আমার ডাক শুনতে পাবে কিন্তু তাও ওরা এদিকেই আসছে৷

দুজন লোক টলারে, তাদের কাছে সাহায্য চাইলাম লোকালয়ে পৌঁছে দেওয়ার জন্য।

আমাকে টলারে উঠালো, আজব ব্যাপার আমার গায়ে এতো রক্ত তাও লোক গুলো কোনো কিছু জিজ্ঞেস করছে না। কিভাবে হলো, কি হয়েছে কিছু না, একদম চুপচাপ।

এতে আমারি ভালো,, আমি অনেক কষ্টে কথা বললাম।

,,,,,, এই যে শুনুন আপনার মোবাইলটা দিবেন একটা কোল করবো।

কোনো কথা না বলে মোবাইলটা বের করে দিয়ে দিলো।

আমি রোহান কে ফোন করি।

রোহান,,,,,, হ্যালো কে

,,,,, রোহান আমি যীন্নাত ( কাঁদতে কাঁদতে )

,,,,,,,, কোথায় তুই কাল বাড়িতে যাসনি, আন্টি কল করছিলো আমরা কোনো মতে সামলে নিয়েছি। কোনো প্রবলেম হয়েছে।

,,,,,, অনেক বড়ো,, এখন বলতে পারবো না। তরা আমাকে নিতে আয়।

,,,,,, নিতে আসবো কিন্তু কোথায়। এটা কোন জায়গা আমি জানি না।

,,,,, আগে তুই কান্না থামা। আশেপাশে কেও থাকলে ফোনটা দে আমি জেনে নিয়।

,,,,,, এই যে শুনুন,, আপনার সাথে আমার বন্ধু কথা বলবে।

লোকটি রোহানকে সব বলে দেয় কোথায় আছি আমি। আমি একটা আইল্যান্ডে আছি।

রোহান আর রিয়াদ আসছে,, আসতে নাকি দুপুর হয়ে যাবে, এখন সকাল ৮ এা বাঝে।

অনেক খন পর আমি লোকালয় দেখতে পারছি, যেখানে মানুষ আছে।

আমি নেমে পড়ি,, টলারটি আবার চলে যায়, অদ্ভুত ধন্যবাদ বললাম তাও কোনো উত্তর নেয়।

সবাই আমার দিকে অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে আছে। তাকিয়ে থাকারি কথা। আমি সবার আড়াল হয়ে একটু দূরে গিয়ে বসে আছি যাতে রোহান রিয়াদ আসলে তাদের দেখতে পাই।

আমি ওড়না গাঁয়ে পেচিয়ে বসে আছি, আর ভাবছি কি থেকে কি হয়ে গেলো। চোখ বন্ধ করে বসে আছি, মুগ্ধের গায়ের ঘ্রাণ পাচ্ছি। চোখ খুলে কাওকে দেখতে পারছি না।

কিন্তু আমার মনে হচ্ছে ও এখানে কোথাও আছে, ওকে অনুভব করতে পারছি।

একবার হলেও ওর সাথে দেখা করতে চাই জিজ্ঞেস করতে চাই কেনো করলো এটা সে। আর কি দেখতে এসেছে আমি মরেছি কি না।

দুপুর হয়ে গেছে,, রোহান আর রিয়াদ আসছে, এসে আমাকে ডাকছে আমি কোনো মতে দৌড়ে যায়। ওরা আমাকে দেখে তাড়াতাড়ি দৌড়ে আসে।

রিয়াদ,,,,,,,, যীন্নাত তোর কি হয়েছে,, তোর এ অবস্থা কে করেছে তাকে আমি ছাড়বো না।

রোহান,,,,,, কে করলো এমনটা,, এতো রক্ত কেনো তোর গাঁয়ে।

আমি রোহান রিয়াদকে জরিয়ে ধরে জোরে কান্না করতে থাকি।

,,,, আগে আমাকে এখান থেকে নিয়ে চল, আমি আর এখানে থাকতে চাই না।

রোহান আর রিয়াদ আমাকে ধরে নিয়ে গাড়িতে বসায়। আমি শুধু কান্না করছি। বলে না আপন মানুষ দেখলে মনের কষ্টটা বেশি করে প্রকাশ পায়।

আমি রিয়াদকে ধরে কান্না করছি আর বলছি

,,,, ও কিভাবে পারলো এটা করতে, নিজের থেকে বেশি ভালোবেসেছি ওকে। কিভাবে করলো আমার সাথে এটা, আমি ওকে ছাড়বো না, সার্থবাদী, ঘৃণা করি আমি ওকে।

বলতে বলতে অজ্ঞান হয়ে যায়। চোখ খুলে দেখি আমি বিছানায় শুয়ে আছি, আমার গাঁয়ে রক্ত কিছু নেয়, জামা অন্যটা।

একটু ভয় লাগলেও পড়ে দেখি ফারা আসছে।

ফারা,,,,, এখন কেমন লাগছে।

,,,, ভালো আমার জামা।

,,,,,, আমি ভালো করে গরম পানি দিয়ে তোর গাঁ মুছিয়ে জামা পাল্টিয়ে দিয়েছি।

,,,,,,,, ওও

,,,,,,,, একটা কথা বল, আমি যখন তোর গাঁ মুছলাম একটা ক্ষত দেখলাম না তো এতো রক্ত।

আবার আমার সব মনে পড়ে যায়, চোখে পানি চলে আসে। কিন্তু আর কোথাও ক্ষত না থাকলেও পিঠে তো থাকার কথা।

,,,,,, কিরে বল।

,,,,, হুম

রোহান আর রিয়াদ ও চলে আসে। সবাই জিজ্ঞেস করছে কি হয়েছে৷

আমি তাদের সবটা বলি,, ফারা আমাকে ধরে কান্না করতে থাকে। রোহান আর রিয়াদের চোখেও পানি আর রাগ ও।

রিয়াদ,,,,,,, ঐ মুগ্ধকে পেলে আমি জানে মেরে দিবো ওর সাহস কি কর হলো তোর সাথে এমন করার।

রোহান,,,,,,,,,, মুগ্ধকে আজি ওর বাড়ি থেকে বের করে মারবো ওর সাহস কি করে হয়।

,,,,, এই ভুল করিস ভুলে যাস না ও মানুষ না।

রিয়াদ,,,,,,, ও জ্বীন তো কি হয়েছে, অনেক বড়ো বড়ো হুজুর রয়েছে ওকে ধরার জন্য।

রোহান,,,,,,,, মারতে না পারলেও শান্তিতে থাকতে দিবো না।

,,,,,,,, পিল্জ তোরা কিছু করিস না, তোদের কিছু হয়ে গেলে আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারবো না।
যা করার আমিই করবো।

,,,,,, তোর পাশে আমরা সবসময় আছি। বন্ধুর জন্য যেকোনো কিছু।

তোদের মতো বন্ধু পাওয়া ভাগ্যের বেপার।

ফারা,,,,, চুপ থাক,,, আগে এই সুপটা খেয়ে নে।

,,,,, আমার ভালো লাগছে না।

,,,,,, খেতে বলছি খা।

জোর করে খায়িয়ে দেয়। রাত হয়ে গেছে তাই আমি শুয়ে আছি ফারা আমার পাশে অর্ধেক শুয়া অবস্থায় আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।

চোখ বন্ধ করে রাখলেও ঘুম নেয় আমার চোখে। চোখটা একটু লেগে আসতেই কারো স্পর্শে আমার ঘুম ভেঙে যায়।

চোখ খুলার সাথে সাথে কেও চলে গেলো মনে হলো।

আমি উঠে জালানার কাছে গেলাম, যার আশপাশে থাকার অনুভব হচ্ছে তাকে আমি কোনো ভাবেই অনুভব করতে চাই না। তাই জোরে জালানা লাগিয়ে দিলাম।

চাই না ওকে অনুভব করতে, চাই না ওর চেহেরা দেখতে, চাই না ওর কথা মনে করতে।

চলবে,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here