জ্বীনের_প্রেম #পর্ব_০২

#জ্বীনের_প্রেম
#পর্ব_০২
লেখিকাঃ #সাবরিন_খান

মেঘলা জানতে পারে তার শরীরের ভেতর বসবাস করছে অন্য আরেকজন আত্মা।
তার দেহের উপর এখন আরেকজনের দখল।
সে ব্যাপারটা কিভাবে নিবে তা বুঝতে না পেরে তার মায়ের কাছে দৌড়ে গিয়ে সব খুলে বলে।

মেঘলার মায়ের জন্য তা ছিলো এক বিরাট ধাক্কা। তার মা ভাবে শেষ পর্যন্ত তার মেয়ের উপর জ্বীনের আসর।
মেঘলার মা মেঘলার ভয় কাটানোর জন্য বলে এসব কিছুনা।

আর এই কথাটা কেউকে বলবিনা।
মেঘলা বুঝতে পারে যে সবসময়ের মতোই তার মা এই ব্যাপারটাও সবার থেকে ঢাকতে চাইছে।
সে আর বেশি কিছু না বলে তার রুমে চলে যায়।

তার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে হাজারো প্রশ্ন যেগুলোর উত্তর অজানা।
সে শুয়ে শুয়ে ভাবতে থাকে তার সাথে ঘটে যাওয়া বিগত সব ঘটনাগুলো, যেগুলো সে এরিয়ে গেছে।তাহলে কি সত্যি তার আশে পাশে কেউ ছিলো?

এসব প্রশ্নের ভিড়ে যখন সে হারিয়ে গেছে তখনি তার মা তার ঘরে ঢুকে, হাতে ছিলো একটি বড় তাবিজ আর এক বোতল পরা পানি।

মেঘলা তার মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে একটু অবাক দৃষ্টিতে জিজ্ঞেস করে এগুলো কিসের জন্য আম্মু?
তার মা বলে তাবিজ টা গলায় পরে নে আর পড়া পানিটা প্রতিদিন সন্ধায় খাবি।
মিস যাতে না হয় আর আজকে রাতের থেকে আমার সাথে ঘুমাবি।

মেঘলা একটু অবাকই হয় তবে একটা বিষয়ে তার দারুণ লেগেছে কোনো জ্বিনের কারনে তার মায়ের আদরটা মনে হয় একটু বেশি পাবে।
তবে মায়ের কথার একটুও সে কানে তুলেনা তাবিজে তার বিশ্বাস বরাবর কখনোই ছিলো না।

সেগুলোকে নিয়ে মেঘলা টেবিলের ওপর রেখে দেয়।
রাতে তার মা যখন গভির ঘুমে তখন মেঘলার চোখে এক ফোটা ঘুম নেই।
মেঘলার মনে আসছে বারবার প্রতি রাতে পাওয়া সেই সুগন্ধির কথা যা আজকে সে আর পাচ্ছেনা।ছটফট করতে করতে মেঘলা ঠিক করলো নাহ আজকে যত ভয়ই লাগুক সে তার রুমে গিয়েই ঘুমাবে।

মেঘলা আস্তে আস্তে তার মায়ের পাশে থেকে উঠে তার রুমের দিকে গেল।রুমে যেতে না যেতেই সে বুঝতে পারলো আজ শুধু বারান্দাতেই নয় তার পুরো রুমে সেই সুগন্ধিতে মাখামাখি।

সে বুক ভরে সুগন্ধিতে নিশ্বাস নিলো কিন্তু সে বুঝতে পারলো না হঠাৎ কেন এত শান্তি অনুভব হচ্ছে।
বিছানায় শুতে যাবে এমন সময় তার চোখ পড়লো রুমের জানালায়,কে যেনো বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে।

মেঘলা সেই আবছা অন্ধকারে জানালা দিয়ে দেখতে পেলো সেখানে কোনো ছেলের প্রতিবিম্ব। প্রথমত মেঘলা একটু ভয় পেয়ে গেলো, সে ভাবতে থাকলো সে কি চিৎকার করবে নাকি চুপ করে থাকবে?

তা ভাবতে ভাবতেই চোখের পলকে সেই প্রতিবিম্বটা জানালার সামনে থেকে সরে গেলো।

মেঘলা দৌড়ে বারান্দায় গেলো সেখানে কেউ নেই সাথে সাথে সেই সুগন্ধি টাও উধাও হয়ে গেলো।
সে বুঝতে পারলো তার আশে পাশে যখন কেউ থাকে যাকে সে চোখে দেখেনা ছুতে পারেনা তখনই শুধু সে সুগন্ধি পায়।

সেদিন রাতেই মেঘলা সিধান্ত নিলো সেই প্রতিবিম্বের সাথে তাকে কথা বলতে হবেই।সে সাহস জিজ্ঞেস করতে চায় যে তার কাছে সে কি চায়।

পরের রাতে যেনো মেঘলার সময়ের কাটা ঘুরছে না।সে অপেক্ষায় আছে আজকে কথা বলার জন্য কিন্তু সে আজ পাচ্ছেনা সেই সুগন্ধি যা তাকে মুগ্ধ করে।
ঘড়ির কাটা ঘুরতে ঘুরতে যখন রাত ৩টা হঠাৎ মেঘলা অনুভব করে তার শরীর ঘেঁষে ছুয়ে গেলো এক ঠান্ডা বাতাস সাথে সাথে ঘরে ছড়িয়ে পড়লো সেই মাতাল করা ঘ্রান।

মেঘলা সাথে সাথে তাকায় জানালার দিকে, দেখতে পায় ঠিক কালকের জায়গায় দারিয়ে আছে একজন।
মেঘলার মনে প্রশ্ন জাগে তাহলে কী সে উঠে যাবে এখন তার কাছে কথা বলতে?

মেঘলা তার বিছানা থেকে উঠে টিপ টিপ পায়ে এগিয়ে যেতে লাগলো বারান্দার দিকে….

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here