ঘৃণার মেরিন part : 2

ঘৃণার মেরিন
part : 2
writer : Mohona

চৌধুরী বাড়িতে…..
নতুন বউ নিয়ে নীড় ফিরলো। দোরের কাছে নীলিমা বরনডালা নিয়ে দারিয়ে আছে। গাড়ি থামতেই নীড় মেরিনকে ফেলেই হনহন করে ভেতরে যেতে নিলে নীলিমা বাধা দিলো।
নীলিমা: ভেতরে ঢুকছো কেন?
মেরিন: সেটাই তো…. বউ রেখে কেউ একা একা বাড়িতে ঢোকে…..
নীড়: মামনি ও আমার নিরা না… ও ….
নীলিমা: মেরিন…..
নিহাল:তুমি কি করে জানলে?
নীলিমা:ভুলে গেছো নাকি যে বাসায় TV আছে..??
নীড়: দেখি মামনি সরো…. ভেতরে যেতে দাও।
নীলিমা:না…. যেভাবেই হোক বিয়েটা হয়েছে। আর চৌধুরী বাড়ির বউ হিসেবে আমার কিছু দায়িত্ব আছে। তাই আমি তোমাকে এভাবে ঢুকতে দিতে পারিনা।
নিহাল: নীলিমা..
নীলিমা: ঘরের কর্ত্রী আমি….তাই আমার সংসার আমাকে সামলাতে দাও। ওদের ২জনকে বরন করতে দাও।
নীড়: মামনি আমি ওকে বউ বলে মানিনা….
নীলিমা: তাতে কিছু করার নেই…. সারাদেশের লোক দেখেছে যে তোমাদের বিয়ে হয়েছে। ৩কবুল বলে বিয়ে হয়েছে।
নিহাল: এটা…..
নীলিমা: চুপ।
নীলিমা ২জনকে বরন করলো।
নীলিমা: নীড় এবার মেরিনকে কোলে নিয়ে বাড়িতে ঢোকো ।
নীড়: impossible … কখনোই না……..
মেরিন: আমি যদি উনার কাধে করে ঢুকি হবে?
বলেই মেরিন লাফ দিয়ে নীড়ের পিছনে গলা ধরে ঝুলে পরলো। নীড় মেরিনকে নামিয়ে দিলো।
নীলিমা: বিয়ের পর বউকে ১ম কোলে তুলে বাড়িতে ঢুকতে হয়। এটাই চৌধুরী বাড়ির নিয়ম।
নীড়: মামনি….. তুমিকি পাগল হয়ে গেছো???
নীলিমা নীড়কে একটু আলাদা ডেকে নিলো।
নীড়: মামনি তুমি……
নীলিমা: ঠিক করছি… কাটা দিয়ে কাটা তুলতে হয়। এই মেয়েকে আমাকে আমার মতো সামলাতে দাও। ওই মেয়েকে তোমার ঘার থেকে আমি নামিয়েই ছারবো। ওর জীবন যদি ছারখার না করেছি তো আমিও…… উল্টা পায়ে দৌড়ে পালাবে….. দেখিস….
নীড়: মানে??
নীলিমা: দেখে যাও….. আমি মলমও লাগাবো আবার ক্ষত গভীরও করবো। তোমার অমঙ্গল হোক সেটা আমি কখনোই চাইবো না। তোমার ভালোর জন্য আমি সব করতে পারি বাবা….
নীলিমার কথায় নীড় মেরিনকে কোলে তুলে বাড়িতে ঢুকলো।

.

১ঘন্টাপর…..
মেরিনকে নীড়ের কাজিন ভাবিরা রুমে রেখে গেলো। সারা রুম ফুলের বাগান হয়ে আছে। খুবই সুন্দর করে। কিন্তু খাটে N❤N দেখে মেরিনের মাথা খারাপ হয়ে গেলো। ও ছুরি দিয়ে পরের N টাকে নষ্ট করে নতুন করে N❤M লিখলো।
মেরিন: নীড়ের পাশে কেবল আর কেবল মেরিন থাকবে।
এরপর মেরিন দারিয়ে গেলো। রুমের চারপাশটা দেখতে লাগলো। সব জায়গায় নিরার ছবি আর নিরার ছবি…..
মেরিন হাতের ছুরিটার দিকে তাকিয়ে devil smile দিলো। তখনই নীলিমা রুমে এলো।

নীলিমা: মামনি… কিছু তো মনে হয় খাওয়া হয়নি তোমার। এখন কিছু খেয়ে নাও। আমি নিজে খাইয়ে দিচ্ছি তোমায়। এসো।
মেরিন নীলিমাকে টেনে সোফায় বসিয়ে। হাত থাকা ছুরিটা দিয়ে নীলিমার গাল ছুইয়ে ঘোরাতে ঘোরাতে আকিবুকি করতে করতে
বলল: পেছন দিয়ে সাধারন কাটার আঘাতের থেকে সামনাসামনি গুলি করা আমার বেশি পছন্দ।
নীলিমা: মমমানে?
মেরিন:কাটা দিয়ে কাটা তুলতে হয়। এই মেয়েকে আমাকে আমার মতো সামলাতে দাও। ওই মেয়েকে তোমার ঘার থেকে আমি নামিয়েই ছারবো। ওর জীবন যদি ছারখা না করেছি তো আমিও….. ও উল্টা পায়ে দৌড়ে পালাবে…. কি তাইতো???
নীলিমার চোখ চরকগাছ।
মেরিন: কি নিখুত অভিনয়…. যে neurologist নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন চৌধুরী পর্যন্ত তোমার অভিনয় ধরতে পারলোনা।😁😁😁
নীলিমা: ধরবে কি করে… পরিচালনাতে যে মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী ছিলো।😏😏😏।
বলেই ২জন হা হা করে হাসতে লাগলো। মেরিন নীলিমাকে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন: মামনি… what an acting …. u r too good….
নীলিমা: যার এমন ১টা কুটুপুটু বউমা আছে তাকে তো too good হতেই হবে। তবে তোমার লেখা এই dialogue টার জন্য আমি কিভাবে যে practice করেছি তা কেবল আমি জানি।
মেরিন:🤣🤣🤣। ভীষন ক্ষুধা লেগেছে।
নীলিমা: এখনই দিচ্ছি।
নীলিমা মেরিনকে খাইয়ে দিচ্ছে আর মেরিন অদ্ভুদ দৃষ্টিতে নীলিমার দিকে তাকিয়ে আছে।
নীলিমা: কি দেখছো?
মেরিন: মমতা।
নীলিমা: মানে?
মেরিন: মানে কিছুনা। আর শোনো পরশু তোমাকে কি করতে হবে?

.

২ ঘন্টাপর….
নীড় রুমে ঢুকলো। ঢুকে অবাক হয়ে গেলো। কারন রুমে আগুন জ্বলছে।
নীড়: এ কি??
মেরিন: ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমি ধরিয়েছি । কিছু আবর্জনা পুরাচ্ছি।
নীড় দেখে বুঝতে পারলো যে কোনো ছবি পুড়ানো হচ্ছে। ১টা ছবি side এ পরলো। ছবিটা দেখে নীড় বুঝলো যে সেটা নিরার ছবি। কিন্তু মুখটা বিকৃত। নীড় রুমে চোখ বুলিয়ে দেখলো যে রুমে নিরার কোনো ছবিই নেই।
নীড়: এই এই …. তোমার সাহস কি করে হয় নিরার….
মেরিন: আমার সাহসের প্রমান ৪ঘন্টা আগেই পেয়েছেন।
নীড়: এই ছবি পুরিয়ে কোনো লাভ নেই মেরিন….. নিরার ছবি আমার বুকের মধ্যিখানে আকা আছে। আমার মন থেকে নিরাকে তুমি কখনোই নিরাকে সরাতে পারবে না।
মেরিন:আমি চাইলে নিরাকে দুনিয়া থেকে সরাতে পারি। আর আপনার মন থেকে পারবোনা?…..
আমি যদি চাইতাম তবে আপনার নিরাকে ছলে বলে কৌশলে আপনার সামনে জঘন্য প্রমান করতে পারতাম। এরপর কল্প লোকের কোনো কল্প লতা হয়ে আপনার সামনে নিজেকে উপস্থাপন করে আপনার মনে আমার জন্য ভালোবাসার ফুল ফোটাতে পারতাম। কিন্তু আমি তা করিনি। আমি , আমি হয়েই আপনার সামনে নিজেকে তুলে ধরেছি। কারন মেরিন ছলনা করতে জানেনা।
নীড়: হামম। ছলনা করতে জানেনা। ধংব্স করতে জানে….. কেরে নিতে জানে……
মেরিন: হামম। but u know what? i love you..
নীড়: & i hate you….
মেরিন: ভালো…. মিথ্যা ভালোবাসার থেকে সত্যিকারের ঘৃণা অনেক ভালো।
বলেই মেরিন নীড়কে সালাম করতে গেলো। নীড় পিছে সরে গেলো।
নীড়: আমি তোমাকে বউ হিসেবে মানিনা। so এই বউগিরি করবানা……
বলেই নীড় চলে যেতে নিলে মেরিন ধাক্কা দিয়ে নীড়রে সোফায় ফেলে নীড়ের পা ধরে সালাম করলো।
মেরিন: আপনার মানাতে কিছু যায় আসেনা। আমি আপনার বউ। সেটা আমি মানি । দুনিয়া মানে। আমি মানি আমি আপনার বউ। so thats it…. আপনার জীবনের যদি কোনো সত্য থাকে তবে সেটা হলো এই যে আমি আপনার বউ।
নীড়ের চোখে আগুন। মেরিনের গলা চেপে ধরে
বলল: আর তোমার জীবনের বড় সত্য হলো তুমি আমার চোখের কাটা। আজ থেকে আমার সকল অভিশাপে তুমি….

গলা চেপে ধরাতে মেরিনের দম আটকে যাবার অবস্থা। মুখ চোখ লাল হয়ে গেছে। কিন্তু তবুও মেরিন নিজেকে ছারানোর চেষ্টা করছেনা। উল্টো ওর ঠোটের কোনে হাসি। মেরিনের অবস্থা দেখে নীড় নিজেই মেরিনকে ছেরে দিলো। মেরিন কাশি দিতে লাগলো।

স্বাভাবিক হবার পর মেরিন
বলল: আপনার সকল অভিশাপে আমি হলেও আমার সকল আমলে আপনি…. আমার সকল দুআয় আপনি…..

.

নীড় চলে যেতে নিলো। মেরিন নীড়ের হাত টেনে নিয়ে ১টা স্বর্নের bracelet পরিয়ে দিয়ে
বলল: এটা সবসময় হাতে রাখবেন। এটা আমি কাবা শরীফের ওখান থেকে স্বর্নের গিনি কিনে এনে বানিয়েছি। যে গিনিটা কাবা শরীফে স্পর্শ করানো হয়েছে। এই bracelet টা আপনাকে সকল বিপদ আপদ থেকে দুরে রাখবে। ইনশাল্লাহ। আর এটা সেদিনই খুলবেন যেদিন আমি মরে যাবো……
নীড় তখনই ওটা হাত থেকে খুলে ছুরে bed এ ফেলল।
নীড়: তুমি এখনই আমার কাছে মৃত। আজীবন থাকবে। যদি তোমার বদৌলতে আল্লাহর তরফ থেকে আমার ওপর কোনো সোভাগ্য, রহমত নাযিল হয় তবে তার বদলে আমি আল্লাহর অভিশাপ নিতে চাইবো। তোমার বদৌলতে জান্নাতের থেকে জাহান্নাম কে আমি প্রাধান্য দিবো।

নীড়ের কথার জবাবে মেরিন শুধু ১টা হাসি দিলো। এরপর আবার bracelet টা এনে নীড়ের হাতে পরিয়ে দিলো।
মেরিন: ভালোভাবে কোনো কথাই বোঝেন না। পরিয়ে দিলাম। এরপরও যদি এটা কব্জি থেকে খুলে ফেলেন আপনার জানের শরীর থেকেও কব্জিটা কেটে ফেলা হবে। আর আপনি জানেন যে আমি এটা করতে পারবো।

.

নীড় কথা না বারিয়ে fresh হয়ে শুয়ে পরলো। মেরিনও fresh হয়ে change করে খাটে এসে নীড়ের বুকে just মাথা রেখে শুতেই নীড় ১টা ধাক্কা দিয়ে মেরিনকে ফেলে দিলো। bed এর কোনায় লেগে মেরিনের কপাল কোনা কেটে গেলো। মেরিন হাত দিয়ে দেখলো রক্ত পরছে।
নীড়: আগেই বলেছি আমি তোমাকে বউ বলে মানিনা। আমাকে touch করারও সাহস ২য় বার করবা না….. না হলে এর থেকেও বেশি আঘাত পাবে……
মেরিন: shahrukh khan এর দেবদাস ছবিটা দেখেছেন??? সেখানে পার্বতীর নিজের ওপর অনেক গর্ব ছিলো। কারন চাদের গায়ে কলঙ্ক আছে কিন্তু ওর গায়ে নেই। তাই দেবদাস ওর কপালে আঘাত করে। এরপর ১টা গান দেয়। গানে ১টা লাইন আছে।

” যো দাগ তুমনে মুঝকো দিয়া
উস দাগসে মেরা চেহরা খিলা
রাখুঙ্গি ইসকো নিশানি বানাকার
রাখুঙ্গি ইসকো হামিশা সাজাকার”

শরৎচন্দ্র চট্যোপাধ্যায়ের গল্পে দেবদাসের আঘাতে পার্বতীর রুপ সত্যি সত্যি বেরেছিলো কিনা জানিনা কিন্তু আজকে নীড়ের আঘাতে মেরিনের কপালে যে দাগ হলো তাতে অবশ্যই মেরিনের রুপ অবশ্যই বেরে গেলো।
নীড়: যার মন সুন্দরনা তার রুপও সুন্দরনা। তুমি খাটে ঘুমাও আমি সোফায় ঘুমাবো।
মেরিন: এইযে আমি আপনার কাছে কিছু চাইনা।like স্ত্রী মর্যাদা or what… তবে রোজ রাতে আপনার বুকে মাথা রেখে একটু শান্তির ঘুম ঘুমাতে চাই।
নীড়: ভাবলে কি করে যে তোমাকে আমার বুকে মাথা রাখতে দিবো……?
মেরিন: request করছি নীড়।
নীড়: না।
মেরিন: ভালো হবেনা।
নীড়: আর কি খারাপ করবে??
মেরিন:হাহাহাহা….. এই রিমোট টা দেখতে পাচ্ছেন?? এটা normal remote না। এটা press করলে bomb blast হবে……
নীড়: ভয় দেখিয়ে লাভ নেই।
মেরিন: আপনার কি মনে হয় মেরিন ভয় দেখায়?? ভয় তারা দেখায় যারা নিজেরা ভয় পায়।
আপনার ফোনে তো bomb tracker আছে। check করে দেখুন।
নীড় check করে দেখলো যে সত্যি আছে।
নীড়: তুমি এতোটা জঘন্য……..
মেরিন: যতোটা দেখছেন বা ভাবছেন তারথেকেও বেশি জঘন্য আমি।

বাধ্য হয়েই নীড় মেরিনকে বুকে জরিয়ে শুয়ে পরলো। মেরিন ১টা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল।
মনে মনে: জানিনা কতো বছরপর এমন শান্তি পেলাম…… আমার যে মাথা গোজার কোনো জায়গা নেই নীড়…. আজ থেকে পেলাম।

.

ওদিকে……
নিহাল: এসবের মানে কি?
নীলিমা: কোন সবের?
নিহাল: তুমি ভালো করেই জানো কিসের কথা বলছি? তুমি ওই মেয়েকে বউ বলে কিভাবে মেনে নিতে পারো? ওই অসভ্য বেয়াদব বেলাগাম মেয়েকে বউ হিসেবে কিভাবে মেনে নিতে পারো? এখন বলোনা যে নীড়কে বলা কথা আমি বিশ্বাস করবো। ওই মেয়েটা কতোটা খারাপ তুমি জানো? কি করেছে আজকে? তুমি কিছু বলছোনা কেনো?
নীলিমা: তুমি তোমার মনের ভাব প্রকাশ করো। কারন আজকের পর থেকে আমি আমার মামনির নামে কোনো বাজে কথা শুনবো না।
নিহাল: মামনি? তুমি কি পাগল হয়ে গেছো?
নীলিমা: না। আমি একদম ঠিক আছি। তোমাদের বাবা ছেলের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। কারন আমার ছেলের পাশে কেবল মেরিনকেই মানায়। নিরা নয় মেরিনই আমার ছেলেকে সত্যিকারের ভালোবাসে। অকারনে ভালোবাসে। মেরিন নীড়ের জন্য perfect … রুপে, গুনে, যোগ্যতায়, বংশ পরিচয়, সবটায় ।
নিহাল: কি আবোল তাবোল বলছো? কোন জমানার মতো করে কথা বলছো?
নীলিমা: ঠিকই বলছি। আর শুরু থেকেই নিরাকে আমার পছন্দ ছিলোনা। কারোন যার বাবার ৩বিয়ে করা মা ২-৩ বিয়ে করা সে মেয়ে আর কতো ভালো হতে পারে?
নিহাল: নীলা….
নীলিমা: চিল্লাইও না। ঠিকই বলেছি। ওই মেয়েরও চরিত্র শুরু থেকেই আমার ভালোলাগেনি। যতোই ভালো হবার নাটক করুক না কেন… শুধু খান বাড়িতে থাকলেই খান বাড়ির শিক্ষা পেলেই সে খান বাড়ির মেয়ে হয়ে যায়না। খান বাড়ির রক্ত হয়ে যায়না। বিষবৃক্ষ কখনো আম গাছ হয়না
নিহাল: আর ওই মেয়েটা বুঝি ভালো?
নীলিমা: ওই মেয়েটার নাম আছে। আর সে তোমার মেয়ের মতো। সম্মান দাও।
নিহাল: তো? এই মেয়েটা সবার সাথে সবসময় খারাপ ব্যাবহার করে, মারামারি করে, ছেলেদের পোশাক পরে,…. এই মেয়ে এতোটাই খারাপ যে নিজের আপন মা-বাবা তাকে মেয়ে হিসাবে মানেনা…..
নীলিমা: এটা মা-বাবার কলঙ্ক। সন্তান খুনি, জঘন্য খারাপ হলেও মা-বাবা সন্তানকে ফেলে দেয়না। এনারা ফেলেছে।
নিহাল: তুমি যাই বলোনা কেন……
নীলিমা: আগে থেকেই মেরিনকেই আমার পছন্দ ছিলো।
নিহাল: তুমি ওকে কবে দেখলে?
নীলিমা: গতবছর। যখন আমি নিরাকে ঈদের জামা দিতে যাই। মেরিন বাড়িতে ঢুকলো। হাত থেকে অনেক রক্ত ঝরছিলো। তবুও কনিকা উঠে গেলোনা। সে নিরাকে কোন পোশাকে দেখতে ভালো লাগবে সেটা দেখতে ব্যাস্ত। পরে মেরিনের দাদু দৌড়ে এসে হাতে ব্যান্ডেজ করে দিলো। মেরিন ১বার আমার দিকে তাকালো। কি অদ্ভুদ সেই চাহনী। কি মায়া সেই চোখে মুখে। কোনো কাজল কোনো লিপস্টিক ছিলোনা তার মুখে। কুদরতের সাজে সজ্জিত সে। যখন জানতে পারলাম যে কনিকা ওর মা। তাও আপন মা তখনই ভেবে নিয়েছিলাম যে কোনো ঘাপলা আছে। ভাবছিলাম যদি মেরিনই নীড়ের বউ হতো। কিন্তু নীড় তো নিরা নিরা বলে অজ্ঞান। কিন্তু ভাবতেও পারিনি যে মেরিন নীড়কে ভালোবেসে ফেলবে…. আর এতে আমার থেকে খুশি কেউ না।। কারন মেরিন নীড়কে সত্যিকারের ভালোবাসে ।
নিহাল: ঘাপলা টা কি??
নীলিমা: দারাও…. সবে তো গল্পের শুরু….
নিহাল: যাই হোকনা কেন….. নীড় মেরিনকে সারাজীবন ঘৃণা করবে। কোনোদিন ভালোবাসবেনা।
নীলিমা: বাসবে।
নিহাল: impossible …
নীলিমা: বাজী….
নিহাল: what???
নীলিমা: হামম। বাজী। চলো বাজী লাগি নীড়ের কাছে কি কখন মেরিন #ঘৃণারমেরিন থেকে ভালোবাসার মেরিন হতে পারবে কিনা?
নিহাল: ok… লাগলাম বাজী….. আমি বললাম কখনোই নীড়ের কাছে মেরিন #ঘৃণারমেরিন ভালোবাসার মেরিন হতে পারবে না।
নীলিমা: আমি লাগলাম। হতে পারবে। আজকে মেরিন নীড়কে যতোটা ভালোবাসে তার থেকে হাজারগুন বেশি নীড় মেরিনকে ভালোবাসবে। তখন মেরিন নীড়কে ছারলেও নীড় মেরিনকে ছারবেনা।

.

সকালে…….
মেরিনের আগে ঘুম ভাঙলো। দেখলো যে ও এখনো নীড়ের বুকেই ঘুমিয়ে আছে। নীড়ের বুকে ১টা চুমু একে দিলো। এরপর নীড়ের ঠোট জোরা দখল করে নিলো। ঘুমের মধ্যে নীড়ের মনে হলো দম নিতে কষ্ট হচ্ছে। চোখ খুলে দেখে কাহিনি কি…. মেরিন ছেরে দিলো।
নীড়: এসবের মানে জানতে পারি???
মেরিন:good morning kiss….

সন্ধ্যায় রিসিশনের পর নীড়-মেরিন খান বাড়িতে গেলো। দাদুভাই নিজেই বরন করে নিলো । নীড়কে দেখেই নিরা দৌড়ে এলো জরিয়ে ধরতে। কিন্তু পারলোনা। মেরিন সামনে দারালো।
মেরিন: নিরা আপপু….. অন্যের বরকে এভাবে জরিয়ে ধরতে এসোনা। মানুষ বলবে তোমার নজর খারাপ। খাটি বাংলায় কি বলে জানো….
নিরা আঙ্গুল তুলে বলল মেরিন….

সাথে সাথে মেরিন নিরার আঙ্গুল এমনভাবে মোচর দিলে যে নিরার আঙ্গুল ভেঙে যায়যায়।
মেরিন: সাহস কিভাবে হয় আমাকে আঙ্গুল দেখানোর?😤😤😤।
নীড়: আরে ছারো ওকে……
মেরিন ছেরে দিলো।
মেরিন: আপনার না হওয়া বউকে বলে দিন যেন ভুলেও আমার আপনার সামনে না আসে তবে এই দুনিয়া থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে। আর হ্যা… খান বাড়িতে শেষ ১০ সেকেন্ড গুনে নাও।
নিরা: মানে??
মেরিন: মানে get out from my house .. নিজের ভিখারী বাপের বাড়িতে যাও। get out..
কবির: তুমি ওকে বাড়ি থেকে বের করার কে??
মেরিন: বাড়ির মালিক….. কেন ভুলে যান mr. khan…. এখন নিরা বানু আপনি চলে যান এখান থেকে।
নীড়: ত….
মেরিন: বাড়ি থেকে বের করছি। দুনিয়া থেকে না।
নিরা: খালামনি….
কনিকা: চিন্তা করিসনা মা। তুই তো আমার সোনামা। লক্ষি মা। তোর জন্য তো সবার মনের দুয়ার খোলা। এর মতো অপয়া না।
মেরিন: হয়ে গেছে..? শেষ? আরো কিছু বলার আছে। নিরা… don’t waste my time… তোমার খালামনি হাজার চেষ্টা করলেও তোমাকে এই বাড়িতে রাখতে পারবেনা। so out.

.

নিরা চলে গেলো। মেরিন fresh হতে গেলো। নীড় বাগানে দারিয়ে আছে। কনিকা নীড়কে কফি দিলো।

নীড়: আরে খালামনি।
কনিকা: no worry। তুমি কালই ওই মেয়ের থেকে মুক্তি পাবে। কথা দিলাম।

.

সকালে…..
নীড় এখনো ঘুমাচ্ছে। মেরিনকে তমা(servant) এসে বলল যে নিচে office maneger এসেছে। মেরিন নিচে গেলো।

ম্যানেজার: hello mam… good morning …
মেরিন: good না bad সেটা তোমার এখানে আসার কারন শোনার পর decide করবো। বলে ফেলো।
ম্যানেজার: ম্যাম এই কাগজগুলোতে আপনার signature লাগবে?
মেরিন: কেন? কার বিয়ে লাগসে?
ম্যানেজার: না মানে ম্যাম এগুলো…
মেরিন: yeah… whatever . give me….
মেরিন ১বস্তা বিরক্তি নিয়ে পেপারগুলা পড়ছে। আর sign করছে। হঠাৎ মনে হলো কাগজটার মাঝে কিছু গন্ডগোল আছে। হামম। মাঝখান থেকে লুকানো divorce paper বের করলো।

মেরিন: কনিকা খান….. মিসেস কনিকা খান।
মেরিনের আত্মা কাপানো কন্ঠে নীড়ের ঘুম ভেঙে গেলো। সবাই দৌড়ে নিচে এলো। মেরিনের রাগান্বিত কন্ঠে আজকে পুরা খান বাড়ি কেপে উঠলো।

.

মেরিন: এসবের মানে কি?? বলবেন….
কনিকা: যেটা দেখছে সেটাই….. divorce paper.. তোমার আর নীড়ের….
এটা শুনেই মেরিন টেবিলে পরে থাকা ছুরি নিয়ে কনিকাকে দেয়ালে ঠেকিয়ে ছুরিটা গলায় ধরলো।
মেরিন: কি বললেন আরেকবার বলেন… বলেন..
কবির-নীড় মিলেও সরাতে পারলোনা। পরে দাদুভাই এসে সরালো।
নীড়: তুমি কি পাগল? নিজের মায়ের গলায় কেউ ছুরি ধরে.?
মেরিন: আমি ধরি….. আর unfortunately এই মহিলা আমাকে জন্ম দিয়েছে। আর তাই সে এখনো জীবিত আছে। না হলে আমার আর উনার divorce এর কথা উচ্চারন করার জন্য এতোক্ষনে উনার গলাটা শরীর থেকে আলাদা হয়ে যেতো।
বলেই মেরিন হাতে থাকা ছুরিটা ছুরে মারলো। যার handle টা গিয়ে লাগলো দাদুভাইয়ের পায়ে দাদুভাই আহ বলে উঠলো। মেরিন দৌড়ে দাদুভাইয়ের কাছে গেলো। তেমন ব্যাথা পায়নি তবুও মেরিন অস্থির হয়ে গেলো।

নীড় মনে মনে: এই মেয়ে এমন কেন?? নিজের মায়ের গলায় ছুরি ধরে…. অথচ দাদুভাইয়ের সামান্য ব্যাথায় অস্থির ……

বিকালে ওরা ২জন চৌধুরী বাড়ি পৌছালো।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here