ওগো_প্রণয়ের_নিমন্ত্রণ🌼 #লেখিকা:-Nowshin Nishi Chowdhury #৩য়_পর্ব

#ওগো_প্রণয়ের_নিমন্ত্রণ🌼

#লেখিকা:-Nowshin Nishi Chowdhury

#৩য়_পর্ব

— ভিতরে আসতে পারি।

পরিচিত এক মিষ্টি কণ্ঠস্বর কানে পৌঁছাতেই মাইশা চোখ তুলে তাকালো দরজার দিকে। চোখে চশমাটা ঠিক করে ঝলমলে হেসে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে এগিয়ে এসে বলল,

— আরে আয় আয় ভেতরে আয়।এ কাকে দেখছি আমি?

মাইশার কথা বলতে দেরি কিন্তু আগুত্তক মেয়েটির দৌড়ে এসে মাইশাকে জড়িয়ে ধরতে দেরি নেই। দুজন দুজনকে নিবিড় ভাবে জড়িয়ে ধরে রাখল কিছুক্ষণ।

তারপর মেয়েটির মাথা তুলে মাইশার গালে একটা চাপড় মেরে বলল,

— শালা বিলেতি বিলাই। লন্ডনে যাইয়া আমারে তো একেবারে ভুলেই গেছোস। অনেক বড় ডাক্তারনি হয়ে আসছো তাই না।এখন তো আর আমার মত এমন ছাপোসা মানুষকে আর পাত্তা দিবানা।

মাইশা কুটিল হেসে মেয়েটির গাল দুটো খুব শক্ত করে চেপে ধরে বলল,

ওরে আমার প্রাণপ্রিয় বান্ধবী অথৈ রানী। তোরে ভুলি কি করে? তুইতো আমার হৃদপিন্ডের উপর ঘাপটি মেরে বসে আছিস। চাইলেও তো নামাতে পারিনা।

অথৈ মাইসার গালে টোকা মেরে বলল,

— তুই নামাতে চাইলেও নামবো না। তোর হৃদপিন্ডের উপরে ফাউন্ডেশন দিয়ে বাড়ি তৈরি করব। সেই বাড়িতে আমি রাজ করব।

মাইশা এবার অথৈয়ের ঘাড় ধরে সামনে রাখা চেয়ারে বসিয়ে দিয়ে নিজে মুখোমুখি চেয়ারে বসে বলল,

— তা করিস বরং। এবার বল তোর কি খবর? আমি যে দেশে এসেছি খবর পেলি কি করে?

অথৈ চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে টেবিলের উপরে আঙ্গুল নাচাতে নাচাতে বলল,

— তোর খবর আঙ্কেলের কাছ থেকে পেয়েছি। আঙ্কেল বলল তুই নাকি আলাদা ফ্লাট নিয়ে থাকছিস এই হাসপাতালের এদিকের এলাকায়। তা বিদেশ থেকে ডাক্তারি পড়ে এসে টাকা কি বেশি হয়ে গেছে তোর।মা বাবার অত বড় আলিশান বাড়ি ছেড়ে দিয়ে এখানে এসে ফ্ল্যাট কিনে নিয়ে থাকছিস।

মাইশা চেহারাটা কিছুটা মলিন হয়ে গেল। মলিন কণ্ঠে জবাব দিল,

— বিগত পাঁচ বছর ধরে একা একাই তো আছি। একা থাকাতেই অভ্যস্ত হয়ে গেছি। এখন আর অত কোলাহলপূর্ণ পরিবেশ ভালো লাগেনা।

ওসব কথা বাদ দে।কত দিন পরে তোকে সামনে থেকে দেখলাম। বিয়ে-শাদী করেছিস নাকি? তোর তো আবার জীবনে একমাত্র স্বপ্ন ছিল ” বিয়ে করা”।

কথাটা বলে মাইশা আর অথৈ একসাথে জোরে হেসে উঠলো।

অথৈ চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল,

—আহ্ বিয়ে! আরে চাইলে কি আর বিয়ে করা যায়!বিয়ে করতে গেলে একটা হ্যান্ডসাম জামাইয়ের দরকার হয়। সেই হ্যান্ডসাম জামাই খুঁজতে খুঁজতে এখনো আবিয়াত্তা হয়ে বসে আছি। মাস্টার্স কমপ্লিট করে এখন একটা প্রাইভেট জব করতেছি। পাশাপাশি নিজের একটা ছোটখাটো বুটিকস নিয়ে ব্যস্ত আছি।

আমি তো আর তোমার মত বিলেত ফেরত ডাক্তার নই মা। এ বাজারে তোমার মেলা কদর। মুখ ফুটে একবার বল বিয়ে করবো। দেখবে এখনই হাসপাতালের বাইরে ছেলেদের লাইন পড়ে যাবে।

আর এদিকে আমি বিয়ে করবো বলে সারদিন ছেলে খুঁজে মরছি। একটা ভালো ছেলে কি আমার কপালে জুটতে পারে না।

মাইশা হাসতে হাসতে বলল,

— বেশি চুজি মেয়ের কপালে ভালো ছেলে জোটে না। কলেজ লাইফ থেকেই তো দেখছি।তোর কারোর চোখ পছন্দ হলে নাক পছন্দ হয় না। কারোর নাক পছন্দ হলে ঠোঁট পছন্দ হয় না। আর শেষে যদিও চেহারা পছন্দ হয় ও তাহলে বডি পছন্দ হয় না,কথা পছন্দ হয়না।ঢং পছন্দ হয় না

অথৈ ভাব নিয়ে বলল,

— তা কী। আমার একটা মাত্র জামাই হবে সে সবদিক থেকে পারফেক্ট হতে হবে না।

মাইশা হেসে উঠে বলল,

— ওই তো খুঁজতে থাক। হাতের লাঠি উঠে গেলেও তুই তোর ওই এলিয়েন মার্কা জামাই খুজে পাবি না।

চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে কলিংবেল সুইচ টিপলো। তৎক্ষণাৎ রিসিপশনে বসা ছেলেটি দৌড়ে এসে দরজা খুলে দাঁড়ালো মাইশা তাকে দেখতে পেয়ে প্রশ্ন করল,

— বাহিরে কি আর কোন পেশেন্ট আছে রাতুল ?

রাতুল স্মিত হেসে উত্তর দিল,

— না আপু। আর এখন তো লাঞ্চ টাইম। লাঞ্চ কি এখানে নিয়ে আসবো?

কথাটা শুনতেই অথৈ চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলল,

— ওই এবার তোরা আমার বান্ধবীকে একটু খ্যামা দে তো। রোগী দেখতে দেখতে আমার বান্ধবী নিজেই রোগী হয়ে গেছে। চোখে দেখতে পাচ্ছিস না ওর একমাত্র বান্ধবী এসেছে। তুই যা গিয়ে তোর কাজ কর। আজ দুই বান্ধবী মিলে বাহিরে লাঞ্চ করব।

এর কথা শুনে রাতুল কেমন ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল। মাইশার দিকে তাকাতে মাইসা চোখ দিয়ে ইশারা করলো চলে যেতে তাই তাড়াতাড়ি মাথা নাড়িয়ে দরজা লক করে বেরিয়ে চলে গেল রাতুল।

অথৈ হাহুতাশ করে বলল,

— আগে কত গোলুমোলু ছিলি তুই। জড়িয়ে ধরলে কত আরাম পেতাম আমি। গাল গুলো টেনেও কত শান্তি ছিল। আর এখন স্বাস্থ্যের কি হাল বানাইছোস।

দেখতে তো বলিউডের নায়িকাদের মত হয়ে গেছিস। গালে মাংস নাই গায়ে মাংস নাই। খালি হাড্ডি গুড্ডি আর চামড়া। বিদেশে গিয়ে কি মাংস সদকা দিয়ে দেশে আসছোস।

মাইশা অথৈয়ের বাহুতে চাপড় দিয়ে বলল,

— বাজে কথা বাদ দে। এখন যেমন আছি খুব ভালো আছি। আগে একটু বেশি মোটা ছিলাম। এখন একদম ফিট আছি।

অথৈ মুখ ঝামটা দিয়ে বলল,

— হয় আগে তোর শরীরে হাড্ডি খুঁজে পাওয়া যাইত না আর এখন মাংস খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। জড়িয়ে ধরলে হাড্ডির খোঁচা খেতে হচ্ছে।

মাইশা চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে নিজের ক্যারিব্যাগে সবকিছু ঠিকঠাক করে নিতে নিতে বলল,

— তাহলে এক কাজ কর। আমাকে জড়িয়ে ধরে যখন আর শান্তি পাচ্ছিস না তখন গোলগাল ভুড়িওয়ালা দেখে একটা ছেলেকে বিয়ে কর আর সারাদিন তাকে জড়িয়ে ধরে বসে থাক ‌। মেলা শান্তি পাবি‌।

অথৈ নিজের সাইট ব্যাগ নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলল,

— হুম। আমিও তাই ভাবতেছি।

________🌼_________

মিথিলার বাবা সন্দিহান কণ্ঠে ফালাককে প্রশ্ন করলেন,

— কি সেই দুটো শর্ত?

ফালাকের মুখ থেকে যেন হাসি সরছে না। ঠোঁটের কোনে লেগে থাকা মুচকি হাসিটা আর একটু প্রসারিত করে বলল,

— অনেকক্ষণ দাড়িয়ে আছেন আঙ্কেল চলুন না বসে কথা বলি। আসুন।

বলে পাশাপাশি সোফা সেটে মিথিলার বাবাকে বসিয়ে নিজে বসলো ফালাক। মিথিলার বাবা দেখে কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে থেকে ঝরঝরে গলায় বলল,

— এটা কোন অন্যায় আবদার নয় আংকেল। খুব মনোযোগ দিয়ে শুনুন আপনি। তারপরে সিদ্ধান্ত নিন এর পরে আপনি কি করবেন।

১/ আমার প্রথম শর্ত হচ্ছে আপনার মেয়ে বিয়ের পরে এই খান বাড়িতে রানীর মতো থাকবে এটার নিশ্চয়তা আমি আপনাকে দিচ্ছি আঙ্কেল।

আমার বেডরুম থেকে শুরু করে এই খান বাড়ির প্রত্যেকটা কোনা তার জন্য বরাদ্দ থাকবে ঠিকই কিন্তু আমার মনটা তার জন্য বরাদ্দ থাকবো না। সে কখনো আমার কাছে থেকে স্ত্রীর অধিকার চাইতে পারবে না।

এই বাড়িতে সে তার মত থাকবে আর আমি আমার মতো।এর জন্য আমি কাউকে কৈফিয়ার দিতে বাধ্য থাকবো না।

এই এক নাম্বার শর্তই পুরো খান বাড়ির পায়ের তলার মাটি কাঁপিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। মিথিলা কাঠের পুতুলের মতো শক্ত হয়ে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। নড়াচড়াও করছে না , কথাও বলছে না চুপচাপ শুধু শুনে যাচ্ছে।

মিথিলার বাবা থম মেরে বসে আছে। চেহারা স্পষ্ট রাগের আভাস। ভদ্রতার খাতিরে কিছু বলতে পারছেন না সেটা তার চেহারা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। পাশে মিথিলার মা দাঁড়িয়ে আছে স্বামীর কাঁধে হাত রেখে।

আর সামনের সোফাগুলোতে বসে আছে খান বাড়ির প্রত্যেক সদস্য। তারা এই দৃশ্যের নিরব দর্শক। শুধু বসে বসে তাদের ছোট ছেলের কথা শোনা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। অনেক বড় ত্যাগ স্বীকার এর ফল আজ তাদের সেই হাসিখুশি ছেলেটাকে এখানে এনে দাঁড় করিয়েছে। তার মুখের উপর কিছু বলার ভাষা খান বাড়ির কারোর মুখে নেই।

ফালাক কথা থামিয়ে মিথিলার বাবার দিকে তাকিয়ে বলল,

— আমি কি আমার কথা কন্টিনিউ করব নাকি এখানেই থেমে যাবো আংকেল।

মিথিলার বাবা মিথিলার দিকে তাকিয়ে বলল ,

— হ্যাঁ অবশ্যই তুমি তোমার কথা শেষ কর। এখানে একজন নির্বোধ মানুষের ভুল ভাঙার খুব দরকার আছে।

ফালাক মিথিলার বাবার দৃষ্টি অনুসরণ করে পেছনে মিথিলার দিকে তাকালো। তার দিকে তাকিয়ে থেকে বলল,

— আর আমার দ্বিতীয় শর্ত হচ্ছে, আমার প্রথম ওয়াইফ যেদিন আমার জীবনে ফেরত আসবে, সেদিন আপনার মেয়েকে তার কাবিনের টাকা ও খোরপোষ সহ আপনার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে আঙ্কেল। আর কোন সম্পর্ক থাকবে না আপনার মেয়ের সাথে।

মিথিলার নিটোল গাল বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ল। তা দেখে ফালাক মুচকি হেসে মিথিলার বাবার দিকে তাকিয়ে বলল,

— মাত্রই এই দুটি শর্ত আঙ্কেল। মেনে নিলে আপনার মেয়ে আর কিছুদিনের মধ্যেই খান বাড়িতে বউ হয়ে আসবে। আর না রাজি থাকলে সসম্মানে আপনি আপনার মেয়ের হাত ধরে এই বাড়ি থেকে বেরিয়ে চলে যান।

এর পরে হয়তো সৌজন্য সম্মানটাও আর আপনাকে দেখাতে পারবো না।

মিথিলার বাবা উঠে দাঁড়ালেন স্ত্রীর দিকে এক পলক তাকিয়ে মিথিলার কাছে গিয়ে তার হাত ধরে বললেন,

— আশা করছি লজ্জা থাকলে আর এ বাড়ির মুখো হবে না তুমি । তুমি আমার মেয়ে। এটুকু লজ্জা বোধ আমি তোমার কাছে আশা করতে পারি।

তারপর কারো সাথে কোন রকম কথা না বলে মেয়ের হাত ধরে হিড় হিড় করে টেনে বেরিয়ে গেলেন খান বাড়ি থেকে। পেছনে খান বাড়ির দু একজন সদস্য তাদেরকে থামাতে উদ্যত হয়েও সদর দরজা পর্যন্ত গিয়ে থেমে গেল।

🤎

ফালাক আয়েশী ভঙ্গিতে সোফা সেটের ওপরে বসে আছে। কিছুক্ষণ আগে এত বড় একটা কান্ড ঘটানোর পরও তার মধ্যে বিন্দুমাত্র অনুশোচনা নেই। ফালাকের দাদীমা সোফা সেটের উপর ধপ করে বসে পড়লেন। সারা মুখ জুড়ে বিষাদের হাতছানি। এত ভালো একটা মেয়ে এভাবে হাতছাড়া হয়ে গেল এটা যেন তিনি মেনে নিতেই পারছেন না।

ফালাক ঘাড় ঘুরিয়ে দাদিমার দিকে তাকালো। দাদীর দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে কিটকিট করে হেসে উঠলো ফালাক।

সবাই তার দিকে তাকিয়ে থাকলো। এ হাসির কোন প্রাণ নেই। ফালাকের রাগ লাগলেও হাসে। দুঃখ পেলেও হাসে। ফালাককে প্রাণ খোলা হাসতে তার পরিবার অনেকদিন দেখেনা।

তার দাদি তার দিকে তাকিয়ে আক্রোশের সাথে বলল,

— তুই যার জন্য অপেক্ষা করে তোর জীবনটা নষ্ট করছিস না দাদুভাই, গিয়ে খবর নিয়ে দেখ সে হয়তো এতদিনে বিয়ে-শাদী করে ছেলে-মেয়ের মা ও হয়ে গেছে। একটা মেয়ের জন্য নিজের জীবন নষ্ট করতে এই প্রথম আমি তোকে দেখলাম।

— এই দাদুভাই। আমি কি তোর খারাপ চাই বল। আমি তো শুধু আমার নাতিটার একটা সুন্দর জীবন দেখতে চাই। এটা কি আমার অন্যায়। তোর মায়ের দিকে একবার তাকিয়ে দেখ।তোর টেনশনে টেনশনে চেহারার কি অবস্থা হয়েছে দেখ। তুই যদি সময় মতো বিয়ে করতিস এতদিনে নাতি নাতনিতে ভরে যেত এই বাড়িতে। সংসারে সুখ সমৃদ্ধির শেষ থাকত না।

— তোর কাছে আমি হাত জোড় করছি তোর দাদী হয়ে তোর পাও ধরবো আমি। তুই দয়া করে একটা বিয়ে কর। মরার আগে তোর বউ দেখে যেতে চাই। শুধু এই আশাটুকু আমার পূরণ কর দাদুভাই। আমি এই সংসারে সুখ শান্তি দেখেই তারপরে মরতে চাই।

ফালাক সোফা সেট এর ওপরে সোজা হয়ে বসে দু হাতে তালু দিয়ে মুখ ঘষে বলল,

— আমি তো তোমার দুটো ইচ্ছাই পূরণ করেছি দাদিমনি। তোমাকে নাতবৌ এর মুখ ও দেখিয়েছে । পাশাপাশি বাড়ির সংসারের সুখ শান্তি ও ঠিক রেখেছি।তোমাদেরকে সুখে রাখতে গিয়ে আমি আমার সুখপাখিটাকে হারিয়ে ফেলেছি। আর কি সুখে থাকতে চাও তোমরা।

দাদীমা অধৈর্য হয়ে বলল,

— কি সুখে থাকার কথা বলছিস তুই? এটাকে কি সুখে থাকা বলে? কারোর মনে কোন শান্তি নেই। একই ছাদের নিচে থেকেও একজন আরেকজনের থেকে বিচ্ছিন্ন। বাড়ির ছেলে যদি ভালো না থাকে কেউ কি ভালো থাকতে পারে?

কেন ভালো থাকতে পারবে না তোমরা? আমি আমার সুখ বিকিয়ে তোমাদের ভালো থাকা নিশ্চিত করেছি। আজ যদি আমি সুখে থাকতাম তাহলে তোমরা কেউ সুস্থ স্বাভাবিক থাকতে না।

• আসলে এখানে তোমাদের কারোর দোষ নেই। না তোমাদের দোষ আছে না আমার পুতুল বৌয়ের দোষ ছিল। দোষ তো আমার ভাগ্যের ছিল।

— কিন্তু আমার একটা বিশ্বাস আমার মধ্যে এখনো আছে। ভাগ্য একদিন আমার সহায় হবে।

কথা বলা শেষ করে উঠে দাঁড়ালো ফালাক।পরনের কুঁচকে যাওয়া কালো টি-শার্টটা ঠিক করে সিঁড়ির দিকে হাঁটা দিল। প্রথম সিঁড়িতে পা রেখে কি মনে করে আবার পেছনে ঘুরলো ফালাক।

দেখতে পেলো দাদীমা রাগী মুখ নিয়ে সোফার হাতল ধরে বসে আছে। ফালাক ঠোঁট বাঁকিয়ে হেসে হঠাৎ বলল,

— কুটনি বুড়ি..!

ড্রয়িং রুমের উপস্থিত সবাই চমকে উঠলো। আর দাদীমা তো এতটাই চমকেছেন যে নিজের আসন ছেড়ে দাঁড়িয়ে পড়লেন। ফালাকের দিকে নজর যেতেই ফালাক মুচকি হেসে বলল,

— আমার পুতুল বউটা তোমাকে এই নামেই ডাকত তাই না দাদী মনি! যথার্থ নাম দিয়েছিল তোমায়। সত্যিই তুমি ওর সংসারটা ভাঙার জন্য কুটনামি করছো। ও যদি জানতে পারে তোমার কিন্তু খবর আছে। একেবারে কোমরে হাত গুঁজে দাঁড়িয়ে তোমার সাথে ঝগড়া করবে।

কথাগুলো শেষ করার আগেই ফালাকের চোখ জোড়া ছল ছল করে উঠলো।তারপর খুলে রাখা সদর দরজার দিকে ছল ছল চোখে তাকিয়ে থেকে বিড়বিড় করে বলল,

— পাগলি বৌ আমার, কবে আবার দেখা পাব তোমার ।

চলবে….🤎

[বেশ বড় একটা পর্ব দিয়েছি।
ঈদ উপলক্ষে সারাদিন অনেক ব্যস্ত ছিলাম তার মধ্যেও সময় বের করে আপনাদের জন্য অনেক কষ্ট করে এতটা লিখেছি। সবার কাছ থেকে গল্প সম্পর্কে বড় বড় মন্তব্য আশা করছি। যারা যারা পড়বেন সবাই রেসপন্স করবেন। ☺️]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here